_মায়ার_বাধঁন
২২তম পর্ব (শেষ পর্ব)
লে#খনিতে-জান্নাত_রুবি

২২. ★★★★
দিন চলছে তার আপন গতিতে।আলহামদুলিল্লাহ আমার জীবনেও অমাবশ্যার ঘোর অন্ধকার কেটে গিয়ে সেখানে উঁকি দিয়েছে সূর্য্যের সোনালী আভা।
আমার ভালোবাসা আর দেখানো আলোর পথে সায়ানের জীবনে যেন নতুন মোড় নিয়েছে।সায়ান এখন পুরোপুরি বদলে গেছেন।
কিছু হাসি-কান্না,কিছু রাগ-অভিমানে আর ভালোবাসায় কেটে গেছে আরো চারটি বছর।আমি আর সায়ান এখন তিন সন্তানের বাবা-মা।আমার বড় মেয়ে ‘সারা’র এখন চার বছর বয়স।গতবছরে আমার কোল আলো করে জমজ দুজন আসে!এক ছেলে ‘সাদ’ আর এক মেয়ে ‘জারা’ এই তিন সন্তানকে নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ আমরা দুজন ভালোই আছি।
আজকে রাতে আমার শশুর আর শাশুড়ী মা হজ্জ করার উদেশ্য বের হবেন।এজন্য বাবা-মাকে দেখতে অনেক মেহমানও এসেছেন।আমি যথাসম্ভব উনাদের আপ্যায়নের চেষ্টা করছি।কারন মেহমানের সমাদর করা আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) এর একটা সুন্নত।আর মুমিন তো তার প্রিয় নবী (সাঃ) এর সুন্নত সৌভাগ্য মনে করে পালন করবে।
মেহমান যা কিছু গ্রহণ করে সেটা তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকেই নির্ধারিত রিজিক।আমাদের এটাকে সৌভাগ্য মনে করা উচিত যে এই শ্রমের বিনিময়ে তিনি আমাদেরকে অশেষ নেকী দান করবেন।
কলিং বেলের শব্দ শুনে আমি দরজা খুলতে এগিয়ে গেলাম!দরজা খুলে দেখি আমার ভাইয়া আর ভাবি উনার ছেলে ওমরকে নিয়ে এসেছেন!আমি উনাদেরকে সালাম দিয়ে ভেতরে নিয়ে এলাম।ওহ আপনাদের তো বলাই হয় নি?আমার ভাইয়া আর ভাবিও বদলে গেছেন।আমার মেয়ে জন্মের পরই ভাইয়া দেশে এসেছিলেন!তাই আমার খবর পেয়েই ভাবিকে নিয়ে ছুটে আসেন আমাকে দেখতে!আমার ওরকম বিপদের দিনে উনারা দূরে থাকতে পারেন নি ।আমিও ওদেরকে ফিরিয়ে দেই নি!ভাবি উনার ব্যবহারের জন্য আমার হাত ধরে সেদিন অনেক কেঁদেছেন।আমি খুশি মনে সবাইকে আপ্যায়ন করছি!ইদানিং রামিসা ভাবিও অনেকটাই চেন্জ
হয়ে গেছেন!এখন আমার সাথে উনি সব সময় ভালো ব্যবহার করেন।আমার কাজেও সাহায্য করেন।আজকে তো পুরো রান্নার দায়িত্বে উনি!উনি নিজ থেকেই এ দায়িত্ব নিয়েছেন!অন্যদিন হলে উনি ঘর মাথার উপর করে রাখতেন কিন্তু আজ উনি সবার সাথে হাসি মুখেই কথা বলছেন।ভালোই লাগছে এখন সংসারে আর আগের মত অশান্তি নেই!বাবাও এখন জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করেন।সিয়াম, কিয়াম তো এখন অনেক বড় হয়ে গেছে!ওরা এখন হোস্টেলে থাকে!বাড়িতে যখন আসে ওদের সামনে আমি পর্দার সহিত চলাফেরা করি।
রুমে এসে দেখি সায়ান উনার ছোট্ট
রাজপুত্র আর রাজকন্যাকে নিয়ে খেলা করছেন।আমি উনাকে গোসল করার জন্য পাঠিয়ে দিলাম।তারপর জারা আর সাদকে কিছুক্ষন ফিডিং করিয়ে ওদেরকে বাইরে নেয়ার জন্য রেডী করলাম।
সারাকে আগেই রেডী করে ওর দাদা-দাদীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।
সায়ান গোসল করে বের হলে আমি জারা আর সাদকে নিয়ে উনাকে নিচে আসার কথা বলে চলে আসছিলাম!এমন সময় উনি আমার আঁচলে ধরে আমাকে আটকালেন!আমি পেছনে ফিরে চাইলাম!
উনি আমাকে উদেশ্য করে বললেন,
-একটু অপেক্ষা করলে কী এমন ক্ষতি হয়ে যায়!সারাক্ষণ কাজ আর কাজ!দুজনকে নিয়ে তুমি নিচে থাকতে পারবে!দুজন তো তোমাকে সারাক্ষন জ্বালাবো!তার চেয়ে আমার জন্য একটু ওয়াইট করো!
আমাদের কথার মধ্যেই হঠাৎ করে
সাদ কান্না জোরে দিলো।আমি জারাকে রেখে সাদকে সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।কিছুক্ষণ পর উনি জারাকে নিয়ে বাইরে চলে গেলেন।আর আমি সাদকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে নিজেও ঘুমিয়ে পড়লাম!
ঘুম ভাঙলো কারো হাতের স্পর্শে!চোখ মেলে দেখি সায়ান আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে আমার দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।
আমি উঠে বসে বললাম,
-সরি কীভাবে যে চোখটা লেগে গিয়েছিলো!বুঝতে পারি নি!
উনি আমার কথা শুনে বললেন,
-ঘুমিয়ে পড়েছো ভালো কথা এর জন্য সরি বলতে হবে নাকি!সারা রাত ওরা দুজন তোমাকে ঘুমাতে দেয় নাকি!বিশেষ করে তোমার আদরের দুলাল ‘সাদ’তো তোমাকে সব সময় জ্বালায়!আমার মেয়ে দুটো তো কত শান্ত!
আমি মুচকি হেসে বললাম,
– হুম দেখতে হবে না কার মেয়ে!
উনি বলললন,
-হুম মেয়ে দুটো তো তোমার মতই শান্ত হয়েছে! আর ছেলেটা তো আমার মতই তোমাকে সব সময় জ্বালায়।
আমি মুচকী হেসে বললাম,
-মোটেও এরকম নয়!বাচ্চারা তো এরকম একটু-আধটু করবেই।
আর আপনার কথা বলছেন! আপনি তো এখন পুরোপুরি বদলে গেছেন আলহামদুলিল্লাহ ।
উনি আমার কথা শুনে বললেন,
-হুম তোমার সাহায্যে!
উনার কথা শুনে আমি বললাম,
-হেদায়েতের মালিক তো আল্লাহ! আমি তো উসিলামাত্র!আরো কিছুক্ষণ দুজনে গল্প করে নিচে চলে আসলাম!মেহমানরা সবাই বিকেলেই চলে যান।
সন্ধ্যার পর রান্নাঘরের সবকিছু গুছিয়ে আমি রুমে চলে আসি।তারপর
এশার নামাজ আদায় করে কুরআন মাজীদের সুরা মুলক অর্থসহ তেলাওয়াত করে নেই।
প্রতিদিনই এশার নামাযের পরে আমি সুরা মুলক তেলাওয়াত করার চেষ্টা করি।কারণ-
‘যে ব্যক্তি নিয়মিত সুরা মূলকের আমল করবে, সে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাবে’।
(তিরমিজি-২৮৯০, মুসতাদরাকে হাকেম)।
হাদীসে আছে;
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোনো রাতে সুরা মূলক না পড়ে ঘুমাতেন না।
(তিরমিজি-২৮৯২, হিসনে হাসিন)।
তিলাওয়াত শেষ করে উঠে কুরআন এবং জায়নামাজটা নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেই।এমন সময় সায়ান সারাকে নিয়ে রুমে আসেন।সারা ঘুমিয়ে পড়েছে।সাদ আর জারা ওর দাদা-দাদীর কাছে আছে।
তারপর ডিনার শেষ করে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাবা-মা বেড়িয়ে পড়লেন।যাওয়ার সময় শাশুড়ি মাকে জড়িয়ে ধরে আমি কেঁদে দিলাম!এই বাড়িতে আসার পর থেকে এই প্রথম বাবা-মা এতোটা সময়ের জন্য কোথাও যাচ্ছেন!আগেরবার আমি যখন বাবার বাড়ি চলে গিয়েছিলাম তখনও মা সব সময় আমার সাথে ফোনে কিংবা সরাসরি আমার সাথে যোগাযোগ করতেন।এখন তো কত দূরে চলে যাচ্ছেন!
মা আমার মাথায় হাত রেখে বললেন, -বোকা মেয়ে!এভাবে কান্নার কি আছে? আমরা তো কয়েকদিন পরই চলে আসবো!তুই নিজের খেয়াল রাখিস আর আমার নাতি-নাতনীদেরও খেয়াল রাখিস!
আমি চোখের পানি মুছে বললাম,
-আপনারা বাড়ির চিন্তা করবেন না!ইনশাআল্লাহ ভাবি,সায়ান আমরা সবাই মিলে ওদের খেয়াল রাখবো।
আর বাবা-মা আপনাদের যানবাহনে উঠার দোয়া মনে আছে তো?
বাবা মুচকি হেসে বললেন,
-সুবাহানাল্লাযি সাখখারা লানা হাযা ওয়ামা কুন্না লাহু মুকরিনীনা ওয়াইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনকালিবুন’।
অর্থ: পবিত্রতা ঘোষণা করছি সেই সত্ত্বার, যিনি এইসব কিছুকে আমাদের নিয়ন্ত্রণে এনে দিয়েছেন। অন্যথায় আমরা এসব আয়ত্বে আনতে পারতাম না। আর নিশ্চয়ই আমরা সকলে মহান প্রভূর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।
বাবার কথা শুনে আমি বললাম,
-মাশাআল্লাহ! আর যানবাহন থেকে নামার সময় কি দোয়া পড়তে হয় সেটা মা বলুন তো।
– রাব্বি আনযিলনী মুনযালাম মুবারাকাও অআনতা খাইরুম মুনযিলীন’।
অর্থ: প্রভূ আমার! তুমি আমাকে বরকতের স্থানে অবতীর্ণ কর। তুমিই উত্তম অবতীর্ণকারী।
সায়ান বাবা-মাকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত এগিয়ে দিতে উনাদেরকে নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন।
আমি আমার ছেলে মেয়েকে নিয়ে রুমে চলে আসলাম।

একদিন মাঝ রাতে হঠাৎ আমার ঘুম ভেঙ্গে যায়।ঘুম থেকে উঠে দেখি জারা আমাকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে আছে!সারা তো ওর বড় মার কাছেই ঘুমায়।কিন্ত সায়ান আর সাদ গেলো কোথায়!জারাকে আমার কাছ থেকে আলতো করে সরিয়ে আমি উঠে বসি!হঠাৎ বারান্দার কাছ থেকে কারো সুরেলা কন্ঠ ভেসে আসে!হ্যা এই সুরের সাথে আমি পরিচিত! এই গজলটিও আমার খব প্রিয়!আমার মন খারাপ হলে আমি প্রায়ই ইসলামিক গজল শুনি!এতে মুহূর্তেই আমার মন ভালো হয়ে যায়।এই
গজলটি সবুজ কুঁড়ির শিল্পী মিছবাহ উদ্দীনের গাওয়া “দিওয়ানা ” নবী প্রেমের গজল!সায়ান প্রায়ই এ গজলটা গেয়ে আমাকে শুনান।উনার গলার সুরও খুব সুন্দর।আমি ওয়াশরুম থেকে ওজু করে বের হয়ে বারান্দার দিকে যাই।গিয়ে দেখি সায়ান সাদকে কোলে নিয়ে হাঁটছেন আর গজলটা গেয়ে যাচ্ছেন!আমি উনার পাশে গিয়ে দাঁড়াতেই উনি আমার দিকে তাকিঁয়ে মুচকি হেসে গজলটা গেয়ে শেষ করলেন।সাদ ঘুমিয়ে পড়েছে।আমি উনার বা হাতটা ধরে উনার কাঁধে মাথা রাখলাম।কিছুক্ষণ দু’জনেই নিরবতা পালন করে শেষ রাতের এই সুন্দর মুহূর্তটা উপভোগ করলাম।
তারপর নিরবতা ভেঙে উনিই কথা বললেন,
-এত তাড়াতাড়ি উঠে গেলে যে!আরেকটু ঘুমাতে!সাদের কান্না শুনে আমার ঘুম ভেঙে যায়!তাই আমি ওকে নিয়ে এখানে চলে আসি! যাতে তোমাদের দু-জনের ঘুম নষ্ট না হয়।এরি মাঝে ছেলে আমার গজলের ভক্ত হয়ে গেছে।দেখো গজল শুনতে শুনতে আবার ঘুমিয়ে পড়েছে।
আমি উনার কথা শুনে মুচকি হেসে বললাম,
-ওদের তিনজনকে আমি এখন থেকেই ইসলামি শিক্ষায় গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।আর আপনি প্লিজ আমাকে বাধা দেবেন না!আমি আমার দু-মেয়ের মধ্যে এখন থেকেই পর্দার অভ্যাস গড়ে তুলতে চাই।
উনি আমার কথা শুনে বললেন,
-ভালো কথা বলেছো।বড় হওয়ার পর হঠাৎ করে ওদের ওপর কিছু ছাপিয়ে দিলে ওরা তা ইগনোর করবে।
উনার কথা শুনে আমি বললাম,
-হুম পর্দার অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই করাতে হয়।যেসব বাচ্চারা হাত পা পেট পিঠ বের করা অদ্ভুত পোষাক পড়ে বড় হয় তারা একটু বড় হলে তার কাছে ডাকা কাপড় দেখলে কষ্ট বা অস্বস্তি হবে!কারন ওর চোখের লজ্জা তো ছেলে বেলাতেই নষ্ট হয়ে গেছে।তখন সে পর্দা মেনে চলাটাকে ঝামেলা মনে করবে।আর বড় হয়ে আল্লাহর বিধানটাকে পাশ কাটিয়ে চলবে আর এর শাস্তি আপনাকে এবং আমাকে ভোগ করতে হবে!
উনি আমার কথা শুনে বললেন,
-হুম তুমি ঠিক কথাই বলছো!দূরের কারো দিকে নয় সানার দিকেই তাকাও!তোমার বাবা-মা ছোটবেলায় ওকে আদর করে বড় করেছেন!মনে করেছেন বড় হলে ঠিক হবে কিন্ত
বড় হয়ে ও ওর ইচ্ছে মতো উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপন করেছে?ওর
ঐ উচ্ছৃঙ্খল জীবন-যাপনের কারনেই তো আমাদের সুখের সংসারে আগুন লেগেছিলো!ওর মোহে পড়েই তো আমি একটি সন্তানের আশায় ওকে বিয়ে করি।কিন্ত ও আমার অজান্তে এভর্সন করে আমার বাচ্চাটাকে মেরে ফেলে।
আল্লাহ তাকে এই পাপের শাস্তি দিয়েছেন।
আমি উনার কথা শুনে বললাম,
-ও মারা গেছে!ওর সম্পর্কে এসব বলা ঠিক না!ওর জন্য দু’আ করুন! আল্লাহ যেন তাকে মাফ করে দেন।
সায়ান আমার কথার কোনো জবাব দিলেন না।তারপর দু-জন রুমে চলে আসি।উনি সাদকে বিছানায় রেখে শুয়ে পড়ছিলেন আমি উনাকে তোলে ওজু করার জন্য ওয়াশরুমে পাঠালাম!উনি ওজু করে এলে দু-জনে তাহাজ্জুদের নামায আদায় করে নেই।
এভাবেই কেটে যাচ্ছে আমাদের দিনগুলো।আল্লাহর হুকুমে আমার ওসিলায় আমার এত যত্নে গড়া #মায়ার_বাঁধন এর প্রতিটা সদস্য আলহামদুলিল্লাহ এখন খুব ভালো আছে।সবাই এখন দ্বীনের পথের নতুন পথিক।
আমার মত আপনিও চেষ্টা করে দেখুন না!ইনশাআল্লাহ আল্লাহ আপনাকে পথহারাদের অন্তর্ভুক্ত করবেন না।
সারাজীবন ধরে কীসের পেছনে দৌড়াচ্ছেন!নিরবে বসে একবার ভাবুন!জীবনের অর্ধেকেরও বেশী সময় হয়তো পেছনে ফেলে এসেছেন!আপনিও জানেন না আমিও জানি না আর কত সেকেন্ড সময় আমার জন্য অবশিষ্ট আছে। তবুও ছুটে চলেছি এই এক জীবনের সুখ সংগ্রহে।
অথচ ভাবছি না মৃত্যুর পরের সেই অন্তহীন জীবনের কথা!
খুব শীঘ্রই হয়তো আমরা মিলিত হতে যাচ্ছি আমাদের রবের সাথে!
আমাদের প্রশ্ন করা হবে, জেনে শুনে আমরা কি আমল করেছি?
যৌবনের শক্তি-সামর্থ্য কোন কাজে ব্যয় করেছি?
কি উত্তর দিবেন সেদিন?
কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি?
যতটুকু আমল এই যাবৎ করেছি তা কি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যথেষ্ট? জান্নাত পাওয়ার জন্য যথেষ্ট?
জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ট?
জাহান্নামীদের গ্রাস করার জন্য জাহান্নাম এত বেশী তর্জন-গর্জন করছে যে ৭০ হাজার ফেরেশতা ৭০ হাজার সেঁকল দিয়েও তাকে বেঁধে রাখতে পারছে না।
” মুমিনগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই অগ্নি থেকে রক্ষা কর,
যার ইন্ধন হবে মানুষ ও প্রস্তর, যাতে নিয়োজিত আছে পাষাণ হৃদয়, কঠোর স্বভাব ফেরেশতাগণ।
তারা আল্লাহ তায়ালা যা আদেশ করেন,
তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয় তাই করে।”
-(সূরা তাহরিমঃ ৬)
তাই আসুন না এই মিছে দুনিয়ার মায়াজালে না পড়ে পরকালের জন্য কিছু সন্ঞয় করে রাখি!সৎ পথে চলতে তো বাধা আসবেই!এসব বাধা পেরিয়ে আমাদের এগিয়ে চলতে হবে!আর সব সময় মনে রাখত হবে আমাদের প্রিয় নবী সাঃ এর বানী!যখন কষ্টে যখন আপনি জর্যরিত! হতাশা যখন আপনাকে গ্রাস করে ফেলে একবার পড়ে দেখুন না নবীজি সাঃ এর জীবন কাহিনী! কত কষ্টই না করেছেন আমাদের মায়ার নবীজি (সাঃ),সে তুলনায় আপনার আমার কষ্ট কত নগন্য!উনি আমাদের জন্য কত কষ্ট করে গেছেন!আর আমরা সব কিছু ফ্রিতে পেয়ে নামে মাত্র মুসলমান হয়ে আছি!আমাদের বিবেক আর কবে জাগ্রত হবে?তাই আসুন না আজ থেকেই আমরা নবীজি (সাঃ)এর দেখানো পথে চলতে শুরু করি!আল্লাহ যেন আমাদের সবাইকে বোঝার তৌফিক দেন।
আমিন।

★★★★★সমাপ্ত★★★★★

(গল্প সম্পর্কে কিছু কথাঃএই গল্পটাতে আমার দূর সম্পর্কের এক ফুপির জীবন কাহিনী তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।যদিও গল্পের সৌন্দর্যের জন্য কিছুটা কল্পনা থেকেও নিয়েছি।আমাদের সমাজে শালি -দোলাভাইয়ের মধ্যে যে হাসি-ঠাট্টার সম্পর্ক রয়েছে এর পরিনাম কী হতে পারে তা আমরা অনেকেই কল্পনা করি না।আশা করি এই গল্পের মাধ্যমে অনেকেই সচেতন হবেন!ইসলামিক দিক নির্দেশনাগুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন।আর হ্যা
মাদ্রাসা লাইনে পড়ার সৌভাগ্য আমার হয় নি!যা বা কুরআন মাজীদ শুদ্ধ করে পড়ার জন্য দারুল কিরাতে ছাদিছ পর্যন্ত পড়েছি।তাই দ্বীনের ব্যাপারে খুব বেশি জানি না!নিজে যা জেনেছি আপনাদেরও তা জানাতে চেষ্টা করেছি।এর মধ্যে যদি কোন ভুল হয়ে থাকে দয়া করে আমাকে জানাবেন।আর এখন আমাকে আপনাদের ভাল লাগা,খারাপ লাগা জানিয়ে উপকৃত করবেন যাতে পরের বার গল্পে আমার ভুলগুলো শুধরে নিতে পারি।
ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!
জাযাকুমুল্লাহু খাইরন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here