#_মায়ার_বাধঁন
১৭তম পর্ব
লেখনিতে-জান্নাত_রুবি

১৭. ★★★★
দিনগুলো কেঁটে যাচ্ছিলো নির্বিঘ্নে।
নামায পড়ে বারান্দায় দাড়িঁয়ে আছি।মনে মনে ভাবছি এ দুনিয়ার মানুষ বড়ই সার্থপর!সুখ গুলো সবাই ভোগ করতে চায় কিন্তু দুঃখ,কষ্টগুলো কেউ ভোগ করতে চায় না।দুঃখের সময় আপন মানুষগুলোও নিজের সমস্যার অযুহাত দেখিয়ে
দূরে চলে যায়।এসময় আমাদের একাই লড়াই করে বেচে থাকতে হয় দুঃখ কষ্ট নিয়ে!
এখানে আমার বাবা ছাড়া আমাকে সাপোর্ট করার মত কেউ নেই।এ পরিবারেও আমি আগাছা হয়ে পড়ে রয়েছি।ভাবি তো কথায় কথায় আমাকে খোটা দেয়।
আমার নিজেকে খুব অসহায় লাগে।
আমি পরিবারের বিরক্তির কারন হয়ে দাড়িয়েছি।
মনে মনে প্রতিঙ্গা করলাম!বাবাকে বুঝিয়ে এ শহর থেকে দূরে কোথাও চলে যাবো।এটাই হবে সবার জন্য ভালো।এ শহর থেকে দূরে চলে গেলে চারপাশের মানুষের কথা থেকেও বাচঁতে পারবো।সায়ান নামে যে কেউ আমার জীবনে ছিল তাও ভুলা যাবে!
আর বাকীটা জীবন না হয় আমার অনাগত সন্তানকে নিয়ে কোনোরকমে কাটিয়ে দেবো!আমার জীবনে আর কোন দ্বিতীয় পুরুষের স্থান দেবো না।
পুরুষ মাত্রই ভক্ষক। অবলা নারী ভক্ষক।কেন যেন কান্না এলো দু’চোখ ভরে।পুরুষকে আল্লাহ শক্তিশালী করেছে নারীকে রক্ষা করার জন্য!নারীকে নিরাপত্তা দেয়ার জন্য!নারীকে ভক্ষণ করার জন্য নয়।কিন্তু সেই পুরুষ যদি তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে।তবে সে সর্বোচ্চ ঘৃণার ভাগিদার!অভিশাপের ভাগিদার। নারীকে অসম্মান করার দোষে তাকে এই সমাজ কেনো শাস্তি দেয় না?কেন তার ঘারেই চাপিয়ে দেয় বৈধ লাঞ্ছনার শিকার হতে!
কথাগুলো ভেবে দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।
মনে হয় এই অতীত তো কোন সময় আমার পিছু ছাড়বে না।আমি তো চাই সবকিছু ভুলে আমার অনাগত সন্তানকে নিয়ে নতুন করে বাঁচতে! সবকিছু নতুন করে শুরু করতে!
কিন্তু চাইলেই কি সবকিছু ভুলা যায়!কোন এক গভীর রাতে দীর্ঘশ্বাস হয়ে বেরিয়ে আসে কালো অতীত গুলো!সাথে কিছু সুখময় স্মৃতি।
হ্যা কিছু সুখময় স্মৃতি আমি চাইলেও কখনো ভুলতে পারবো না।আর আমি মনে করি আমার ঐ সুখের সংসারে কারো বদনজর লেগেছে!
বদ নযর কি সত্য? আর যদি বদ নযর লেগেই যায়, তাহলে তা থেকে পরিত্রাণের উপায় কী?
উত্তর : বদ নযর সত্য। মানুষের উপর এর প্রভাব রয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, وَ اِنۡ یَّکَادُ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡا لَیُزۡلِقُوۡنَکَ بِاَبۡصَارِہِمۡ ‘কাফেররা তাদের দৃষ্টির মাধ্যমে আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিতে চায়’ (সূরা আল-ক্বলম : ৫১)। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, বদ নযরের প্রভাব সত্য। কোন জিনিস যদি তাক্বদীরকে অতিক্রম করতে পারত, তাহলে বদ নযর তাকে অতিক্রম করত। তোমাদেরকে গোসল করতে বলা হলে তোমরা গোসল করবে এবং গোসলে ব্যবহৃত পানি দিয়ে রোগীর চিকিৎসা করবে (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৮৮; মিশকাত, হা/৪৫৩১; ইবনু মাজাহ, হা/৩৫০৯; ছহীহুল জামে‘, হা/৫৫৬, সনদ ছহীহ)।
বদ নযরে আক্রান্ত হলে ইসলামী শরী‘আতে তার চিকিৎসা রয়েছে। যেমন-
(১) হাদীছে বর্ণিত দু‘আগুলো পাঠ করে আক্রান্ত রোগীর উপর ঝাড়-ফুঁক করতে হবে। নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, ‘বদ নযর এবং বিচ্ছুর বিষ নামানোর ঝাড়-ফুঁক ব্যতীত কোন ঝাড়-ফুঁক নেই (ছহীহ বুখারী, হা/৫৭০৫; ছহীহ মুসলিম, হা/২২০)। একদা জিবরীল (আলাইহিস সালাম) নবী করীম (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট আগমন করে বললেন, হে মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)! আপনি অসুস্থবোধ করছেন? নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, হ্যাঁ। তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বললেন, بِسْمِ اللهِ أَرْقِيْكَ مِنْ كُلِّ شَىْءٍ يُؤْذِيْكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ اللهُ يَشْفِيْكَ بِسْمِ اللهِ أَرْقِيْكَ ‘আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি প্রতিটি এমন জিনিস হতে, যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং প্রত্যেক জীবের অমঙ্গল হতে ও হিংসুকের বদ নযর হতে। আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন। আমি আপনাকে আল্লাহর নামে ঝাড়-ফুঁক করছি’ (ছহীহ মুসলিম, হা/২১৮৬; তিরমিযী, হা/৯৭২)।
(২) যার বদ নযর লাগছে বলে সন্দেহ করা হয়, তাকে গোসল করিয়ে গোসলের পানি রোগীর শরীরে ঢালতে হবে। যেমনভাবে নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমের বিন রবী‘আকে গোসল করতে বলেছিলেন (ইবনু মাজাহ, হা/৩৫০৯; ছহীহুল জামে‘, হা/৫৫৬, সনদ ছহীহ)। তবে সন্দেহ যুক্ত ব্যক্তির পেশাব-পায়খানা বা অন্য কোন কিছু দিয়ে চিকিৎসা করার কোন দলীল নেই। অনুরূপভাবে তার উচ্ছিষ্ট বা ওযূর পানি ইত্যাদি ব্যবহার করাও ভিত্তিহীন (ফাতাওয়া আরকানুল ইসলাম প্রশ্ন নং-৬৬, পৃঃ ১৩২-১৩৩)।

জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বাইরের ঝুম বৃষ্টি দেখছি।শুধু দেখছি না! মন প্রাণ উজার করে অনুভব করছি এই বাদলধারার প্রশান্তি। একহাত বাড়িয়ে বৃষ্টি ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করলো। প্রকৃতির মতোই বর্ষা মানুষের মনের ভেতরের সকল আবর্জনা দূর করে। দূর করে হীনমন্যতা ও জড়তা। বৃষ্টির এই টুপটাপ ঝরে পড়ার মধ্যে যে ছন্দ আছে,তা যেন প্রতিটি ছন্দপতন মানুষের ভাবনা জাগায় জোর করে ছন্দে ছন্দে বাঁচতে। আমারও ঠিক এই মুহূর্তে ঐ ইচ্ছা জাগলো।বৃষ্টির ছন্দে ছন্দে কাঁদতে!বৃষ্টির ছন্দে ছন্দে মনের সকল অব্যক্ত ব্যথা, বেদন প্রকাশ করতে।
আজ জুমাবার।বাবা মসজিদে জুমার নামায পড়তে চলে গেলেন।আমাকে বলে গেলেন,তৈরী হয়ে থাকতে!আমাকে নিয়ে নাকি উনি ফুপির বাসায় যাবেন।আমি গোসল করে নামায পড়ে নেই।
প্রতি জুমাবারে আমি সূরা কাহফ পড়ার চেষ্টা করি।তাই কুরআন মাজীদ হাতে নিলাম সুরা কাহফ পড়ার জন্য।
জুমাবারে সুরা কাহফ কেনো পড়বেন?না জানলে জেনে নিন!
—–
১: কুরআন কারীম প্রচণ্ড শক্তিধর এক কিতাব। কুরআন কারীমের প্রতিটি শব্দ বাক্য আয়াতে জড়িয়ে আছে অফুরন্ত শক্তি। কুরআন কারীমের প্রতিটি সূরাই স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের অধিকারী। সূরাতুল কাহফ কুরআন কারীমের অন্যতম বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত সূরা। নবীজি প্রতি জুমাবারে সূরাতুল কাহফ পড়তেন। জুমাবারে এই সূরা পড়ার দ্বিবিধ উপকারিতা। ইহকালীন ও পরকালীন। নবীজি বলেছেন,
إِنَّ مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَهُ مِنَ النُّورِ مَا بَيْنَ الْجُمُعَتَيْنِ
জুমার দিন সূরা কাহফ তিলাওয়াত করলে, দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তাকে নূর দান করা হবে (আবু সাঈদ খুদরি রা.। হাকেম ৩৩৯২)।
২. নূর দান করা হবে মানে কী? নূর মানে হেদায়াত হতে পারে। নেককাজের তাওফীক হতে পারে। গায়েবী পথনির্দেশ হতে পারে। আল্লাহর ভালবাসা হতে পারে। সুন্নতের অনুসরণ হতে পারে। নবীজি সা আরো বলেছেন,
مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ، أَضَاءَ لَهُ مِنَ النُّورِ فِيمَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْبَيْتِ الْعَتِيقِ
যে ব্যক্তি জুমাবারে সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, তার জন্য বায়তুল্লাহ ও ঐ ব্যক্তির মধ্যবর্তী স্থানকে নুর দ্বারা আলোকিত করে দেবেন (আবু সাঈদ খুদরি রা, দারেমী ৩৪০৭)।
৩. বায়তুল্লাহ আর আমার মাঝের স্থানকে আলোকিত করে দেবেন। একটা অর্থ কি এমন হতে পারে, আমাকে একসময় বায়তুল্লায় যাওয়ার তাওফীক দেবেন? আরেক বর্ণনায় আছে, নবীজি সা. বলেছেন,
مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ كَمَا أُنْزِلَتْ، كَانَتْ لَهُ نُورًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ مَقَامِهِ إِلَى مَكَّةَ
যে ব্যক্তি সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, যেভাবে নাযিল হয়েছে (সেভাবে), কেয়ামতের দিন তার অবস্থানস্থল থেকে মক্কা পর্যন্ত স্থানকে নূর দ্বারা আলোকিত করে তোলা হবে (আবু সাঈদ খুদরি রা, হাকেম ২০৭২)।
৪. সূরা কাহফের প্রধানতম বৈশিষ্ট্যই হচ্ছে-নূর। জুমাবারে সূরা কাহফ তিলাওয়াত আমার জন্য নূর নিয়ে আসবে। আমার জীবন করে তুলবে নূরানী। আরেক বর্ণনায় আছে, নবীজি সা. বলেছেন,
مَنْ قَرَأَ سُورَةَ الْكَهْفِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَأَدْرَكَ الدَّجَّالَ لَمْ يُسَلَّطْ عَلَيْهِ، -أَوْ قَالَ: لَمْ يَضُرُّهُ
যে ব্যক্তি জুমাবারে সূরা কাহফ তিলাওয়াত করবে, দাজ্জাল তার নাগাল পেলেও, তার উপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারবে না (তার কোনও ক্ষতি করতে পারবে না)। আবু সাঈদ খুদরি রা, বায়হাকী ২৭৭৬।
৫. সূরাতুল কাহফ কুরআন কারীমের অন্যতম ঘটনাবহূল সূরা। এই সূরা তিলাওয়াতের পাশাপাশি অর্থের দিকে খেয়াল করলেও অনেক শিক্ষা অর্জন হয়। প্রতি সপ্তাহে একবার তেলাওয়াত করলে, বছরে বায়ান্নবার। একেকটি শিক্ষা বছরে বায়ান্নবার মাথায় ঘুরপাক খাওয়া মানে, নিজের মধ্যে বিরাট সংশোধনী চলে আসা।
৬. এই সূরার বিস্ময়কর দিক হল, কেউ মুখস্থ করতে চাইলে, দ্রুত মুখস্থ হয়। সবার অভিজ্ঞতা এক নাও হতে পারে। চেষ্টা করে, সূরাটা মুখস্থ করে নিতে পারি। মুখস্থ থাকলে, আসা-যাওয়ার পথেই পড়ে নিতে পারব। এমনকি জুমার আগে মসজিদে বসে বসেও তিলাওয়াত করে নিতে পারি। সম্ভব হলে দুয়েকবার তরজমা ও তাফসীরও পড়ে নিতে পারি। দুনিয়াতেও লাভ, আখেরাতেও লাভ। দুনিয়াতে শিক্ষা দেবে, দাজ্জাল থেকে বাঁচাবে। আখেরাতে নূর দান করবে। দাজ্জাল থেকে বাঁচানোর অর্থ শুধু এই নয়, মূল দাজ্জাল থেকে বাঁচাবে। মূল দাজ্জালের পাশাপাশি দাজ্জালের আনুষঙ্গিক ক্ষতি থেকেও বাঁচাবে।
৭. আরেকটি হাদীসে আছে দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে চাইলে, সূরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত হিফজ করতে হবে। দুই হাদীসের মিলিত রূপ এমন-দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে প্রতি জুমাবারে সূরা কাহফ পুরোটা তিলাওয়াত করতে হবে। পাশাপাশি প্রথম দশ আয়াত হিফজ করে রাখতে হবে। কেন হিফজ করতে হবে? কারণ একটি হাদীসে আছে, কেউ দাজ্জালের মুখোমুখি হলে যেন সূরা কাহফের প্রথম দশ আয়াত দাজ্জালের সামনে তিলাওয়াত করে। মুখস্থ না করলে তিলাওয়াত কীভাবে করবে?
৮. তাই দাজ্জালের ফিতনা থেকে বাঁচতে, প্রতি জুমাবারে আমাকে সূরা কাহফ তিলাওয়াত করতে হবে। প্রথম দশ আয়াত ইয়াদও করে রাখতে হবে। আল্লাহ না করুন, দাজ্জালের মুখোমুখি হয়ে পড়লে যাতে তার মুখে ঝামা ঘষে দেয়ার মতো করে বরকতময় দশটি আয়াত তিলাওয়াত করতে পারি। একটি আমল আরেকটির পরিপূরক। প্রতি জুমাবারে কাহফ তিলাওয়াত করলে, দাজ্জালের মুখোমুখি হলে, দাজ্জালের মুখের উপর তিলাওয়াত করারও সৌভাগ্য হবে। ইনশাআল্লাহ। তবে আয়াত দশটি ইয়াদ থাকতে হবে।রাব্বে কারীম সবাইকে পড়ার তাওফীক দান করুন।

সকালে ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে সায়ানের ভাবনায় মগ্ন থাকা আমার নিত্যদিনের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হঠাৎ বাবার ডাকে ভাবনা থেকে বাস্তবে ফিরলাম।বাবা আমার শরীর ঘেঁষে দাঁড়িয়ে মাথায় হাত রাখলেন। ভীষণ আদুরে গলায় বললেন,
-কী রে মা এভাবে এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?নাস্তা করবি না?তোর ফুপি কখন থেকে তোর অপেক্ষা করছে।
বাবার কথার প্রতিউত্তরে বললাম,
-আমার এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে ভালো লাগছে বাবা।তুমি যাও।আমি পরে নাস্তা করবো ।আমার এখন ভালো লাগছে না।
আমার কথা শুনেও বাবা গেলেন না। তিনিও দাঁড়িয়ে থাকলেন আমার পাশে।
ইদানিং বাবার শরীরও ভালো নেই। আমার চিন্তায় চিন্তায় তিনি আরো বেশী অসুস্থ থাকেন।আমি ফুপির বাসায় আসার পর বুঝতে পারি বাবা আমাকে এখানে কৌশলে নিয়ে এসেছেন।বাবা আমার কষ্ট সহ্য করতে পারছিলেন না!
!
!
চলবে ইনশাআল্লাহ,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here