#মন_নিয়ে_খেলা(২১)
************************
মা-ছেলে মিলে দুপুরের খাবার খেতে বসেছে। সাদমান তার পছন্দের ইলিশ-পটলের তরকারি দিয়ে ভাত মাখিয়ে মুখে দিল। ফাহমিদা ইলিশের ভাজা ডিম ছেলের পাতে তুলে দিলেন। সাদমান ডিমটা ফাহমিদার প্লেটে দিয়ে বলল, এটা আজকে তুমি খাও। আমি তো সবসময়ই খাই। তুমি সবসময় ছোটো একটু ভেঙে নাও। আজ তোমার এই পুরো ডিমটা খেতে হবে।
ফাহমিদা ডিমের এক কোনা ভেঙে নিয়ে ডিমটা আবারও ছেলের পাতে দিয়ে বললেন, ইলিশের ডিম তোমার খুব পছন্দ। এটা তুমি খাও। ডিম আমার এতটা ভালো লাগে না। ভালো লাগলে তো খেতামই।
সাদমান মাছের কাঁটা বাছতে, বাছতে বলল, আচ্ছা মা, তোমার আর বাবার যখন বিয়ে হয়েছিল, তখন তোমাদের দু’জনের বয়স কত ছিল?
হঠাৎ তোমার এটা জানতে ইচ্ছা করল কেন?
এমনি ইচ্ছা করল। বলো না মা।
বিয়ের সময় আমার বয়স ছিল চব্বিশ বছর৷ আমি এমএ পরীক্ষা দিলাম। রেজাল্ট হওয়ার আগেই আমার বিয়ে হয়ে গেল। তোমার বাবার বয়স তখন কতো হবে? আটাশ বা ঊনত্রিশ হতে পারে। তোমার বাবা মাত্রই তখন চাকরিতে জয়েন করেছে। তাঁর প্রথম পোস্টিং ছিল জয়পুরহাট। বিয়ের পরপরই ঢাকা ছেড়ে চলে গেলাম। নতুন সংসার, সবকিছুই নতুন। কী যে আনাড়ি ছিলাম আমরা দু’জনই! কথাটা বলে ফাহমিদা হাসলেন। যেন তাঁর চোখের সামনে সেই দিনগুলো আবারও ভেসে উঠল।
সাদমান বলল, মা আমার তো আর কিছুদিন পরই রেজাল্ট বের হবে।
হুম।
আমি চিন্তা করছি, রেজাল্ট বের হওয়ার পর…. সাদমান কথাটা শেষ করতে পারল মা। আসলে শেষ করার সাহস পেল না।
ফাহমিদা বললেন, কী হল, থামলে কেন? রেজাল্ট বের হওয়ার পর কী, বলো?
এমএসসিটা একবারে করেই ফেলব।
তা তো করতেই হবে। এখানে ভাবাভাবির কী আছে?
কথাটা গলার কাছে এসেও আবার নীচে নেমে যাচ্ছে। সাদমান কিছুতেই কথাটা বলতে পারছে না।
ফাহমিদা বললেন, আরেক টুকরো মাছ দেবো?
উঁহু। মা শোনো….
কী?
আমি ভাবছি বিয়ে করে ফেলব।
ফাহমিদা খাওয়া থামিয়ে ছেলের মুখের দিকে তাকালেন। সাদমান হাসতে, হাসতে বলল, কী হল? এমন করে তাকিয়ে আছ কেন?
তুমি আমার সঙ্গে মজা করছ?
সাদমান হেসে বলল, মজা কেন হবে? আমি তো বড়ো হয়ে গেছি৷
তোমার বিয়ের বয়স হয়েছে?
মা, বিয়ের বয়স তো একুশ বছর আর আমার তো চব্বিশ হবে কিছুদিন পর।
ফাহমিদা হাসতে, হাসতে বললেন, আগে লেখাপড়া শেষ হোক, চাকরি হোক, তারপর তোমার বিয়ের কথা চিন্তা করব।
মা, ওগুলো হতে এখনও অনেক দেরি। আমি এখনই বিয়ে করতে চাই।
ফাহমিদা ভ্রু কুঁচকে ছেলের দিকে তাকালেন, কী ব্যাপার, তুমি এত বিয়ে বিয়ে করছ কেন? তোমার সমস্যা কোথায়?
মা, অরণীর বাসা থেকে ওকে বিয়ে দেওয়ার জন্য প্রেসার দিচ্ছে।
প্রেসার দেবে কেন? ওরও তো পড়া শেষ হয়নি।
ওর মা চাচ্ছেন….
কী? তুমি কথা শেষ করছ না কেন?
সাদমান আসলেই কথা শেষ করতে পারছে না। নিজের বিয়ের কথা বলতে গিয়ে সে ভীষণ বিব্রত বোধ করছে৷ এভাবে নিজের বিয়ের কথা বলা তো সত্যি ভীষণ অস্বস্তিকর ব্যাপার! ফাহমিদা বললেন, অরণীর বাসায় তোমার কথা জানে?
জানে কিছুটা।
কিছুটা মানে কী?
মানে, ওর বাবা-মা আমার কথা জানেন। আংকেলকে দেখতে আমরা কিছুদিন আগে ওদের বাসায় গিয়েছিলাম।
তারপর?
আংকেল আমার সঙ্গে অনেক কথা বলেছেন। আংকেলের আচরণে মনে হল, উনি আমাকে পছন্দ করেন; কিন্তু আন্টি……
আন্টি কী?
আন্টি আমাকে পছন্দ করেন না।
কী করে বুঝলে?
অরণীর কথায় বুঝেছি, আন্টির আচরণে বুঝেছি।
তুমি তো শুরুতেই একটা ভুল করেছ সাদমান। ক্লাসমেইটের সঙ্গে রিলেশন করা তোমার উচিত হয়নি। আমাদের দেশে তেইশ-চব্বিশ বছর বয়সে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়; কিন্তু এই বয়সের কয়টা ছেলের বিয়ে হতে দেখেছ তুমি?
সাদমান আমতা আমতা করে বলল, আমি না হয় এই বয়সে বিয়ে করলামই।
ফাহমিদা এবার সিরিয়াস হয়ে বললেন, সাদমান সবকিছু নিয়ে মজা করবে না। তোমার বাবা এই কথা শুনলে রাগ হয়ে যাবেন।
ফাহমিদা রেগে যাচ্ছেন বুঝতে পেরে সাদমান বলল, আমি এমনিই বলছিলাম, মা। আমি দেখলাম তুমি কী বলো।
এখন বিয়ে-শাদির চিন্তা বাদ দিয়ে, আসল কাজ নিয়ে চিন্তা করো। বিয়ের সময় আসলে, আমরা নিজেরাই কথা বলব৷
সাদমান তার মা’র মনোভাব বোঝার জন্যই বিয়ের কথা তুলেছিল। সে জানতো ফাহমিদা এমন কিছুই বলবেন। ফাহমিদা ঠিক ঐ কথাগুলোই বললেন। অরণী সেদিন বিয়ের কথা এমনি এমনিই বলেনি। কিছু একটা তো হয়েছেই। সাদমান বুঝতে পারছে, অরণীর মা ভীষণ ঝামেলা করছেন। এই ঝামেলা থেকে অরণীকে উদ্ধার করার কোনও উপায় সে খুঁজে পাচ্ছে না। পড়া শেষ করে যদি বুয়েটে ঢুকতে পারে, সেটার এখনও অনেকদিন বাকি। এই সময়ের মধ্যে যদি আন্টি কিছু একটা করে ফেলেন? সাদমানের এখন বড্ড অসহায় লাগছে। সে যে কী করবে, মাথায় কিছুই আসছে না।
———————–
সিনথি আর লাবনী আজ পূনমের বাসায় এসেছেন। সিনথি কিছুতেই পূনমকে বোঝাতে রাজি হচ্ছিলেন না। তিনি বললেন, এত বোঝাবুঝির কী আছে? তাছাড়া বোঝাতে যদি হয়ই, তাহলে আমরা অরণীকে বোঝাচ্ছি না কেন? পূনম তো কোনও ভুল করছে না। ভুল করছে অরণী। এটা কী কোনও ছেলেখেলা নাকি?
ছেলেখেলা না বলেই তো ছোটাপুকে বোঝাতে চাইছি। এখন আর আগের সেই দিন নেই বড়পু। আমি অরণীর সঙ্গে কথা বলেছি। অরণী, ছেলেটা অনেক ভালোবাসে। বাচ্চাদের পছন্দ-অপছন্দের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
আমি বাবা এতসব বুঝি না। আমি পূনমকে কোনোকিছু বোঝাতে পারব না। ও যা বদমেজাজী, কখন আবার উল্টোপাল্টা কী বলে বসবে, কে জানে?
ঠিক আছে বড়পু, তোমার কিছু বলতে হবে না। আমিই সব কথা বলব। তুমি শুধু ছোটাপুর সাইড নিয়ে কথা বলো না। তুমি চুপচাপ থেকো আর আমার কথার সঙ্গে সম্মতি জানিয়ো। অরণীর সঙ্গে কথা বলে, আমার ভীষণ খারাপ লেগেছে। আমি চাই না মেয়েটা আরও কষ্ট পাক।
সিনথি অনিচ্ছা সত্ত্বেও, হ্যাঁ বললেন।
পূনম ফোনে কথা শেষ করে বোনদের আড্ডায় যোগ দিলেন। তিনজন মিলে নানা রকম গল্পের ডালা সাজিয়ে বসেছেন৷ পূনম আজ খুব ফুরফুরে মেজাজে আছেন৷ সুযোগ বুঝে লাবনী বললেন, ছোটাপু, তোমরা কী অরণীর বিয়ে নিয়ে কিছু ভেবেছ?
ওহ, তোমাকে তো বলাই হয়নি, দিনার ভাসুরের ছেলে অর্ণব। ওর সঙ্গে অরণীর বিয়ে কথা ভাবছিলাম। দিনারা মানে অর্ণবের বাবা-মা খুব আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
কিন্তু আপু, অরণীর তো পছন্দ আছে। ও তো সাদমানকে ভালোবাসে।
এইসব ভালোবাসা-টাসা নিয়ে আমাকে বলতে এসো না লাবনী। আমি ওখানে মেয়ের বিয়ে দেবো না।
কেন দেবে না? সমস্যা কোথায়?
ছেলেটাকে আমার ভালো লাগেনি।
কিন্তু অরণী তো ওকে ভালোবাসে। ওর কথাটা একবার চিন্তা করো আপু।
এইসব মিডল ক্লাস লোকজনকে কেন জানি আমার সহ্য হয় না। আমি চাই না আমার মেয়ে এমন কোনও ফ্যামিলিতে যাক।
তোমাদের দুই মেয়ে। তোমাদের সম্পত্তির কোনও অভাব নেই। একসময় তো অরণী আর নীলোর্মিই সবকিছু পাবে। তুমি মধ্যবিত্ত নিয়ে টেনশন করছ কেন? ছোটাপু তুমি দেখো, ওরা একদিন আরও ভালো অবস্থানে পৌঁছে যাবে।
কেউ একদিন ভালো অবস্থানে পৌঁছাবে, তারচেয়ে এখন যে ভালো অবস্থানে আছে, তাকে বেছে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ না? তুমি কী বলো লাবনী? আপু তুমি কী বলো?
সিনথি বলতে চেয়েছিলেন, “অবশ্যই বুদ্ধিমানের কাজ” ; কিন্তু লাবনীকে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন, লাবনী, তুমি কী বলো?
লাবনী বললেন, অবশ্যই বুদ্ধিমানের কাজ; কিন্তু বিষয়টা যখন মনের, তখন চুল চেরা বিশ্লেষণ করা সম্ভব না। করা উচিতও না। টাকা অনেক বড়ো জিনিস; কিন্তু টাকা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস না, ছোটাপু। টাকাই যদি সব হতো, তাহলে প্রেম, ভালোবাসা, আবেগ, হাসি-কান্না, এই বিষয়গুলো একেবারে মূল্যহীন হয়ে পড়ত। প্লিজ ছোটাপু, তুমি একটু ঠান্ডা মাথায় ওদের বিষয়টা বুঝতে চেষ্টা করো।
ঠান্ডা মাথায়, মানে কী? তুমি কী বলতে চাচ্ছ, আমি সবসময় মাথা গরম করে থাকি?
সিনথি বললেন, থাক লাবনী, এখন অন্য কথা বলো।
আমি কেন অন্য কথা বলব বড়পু? আমার কথা শেষ করে তবেই আমি যাব। ছোটাপু শোনো, আমি তো বলিনি, তুমি সবসময় মাথা গরম করে থাকো। তোমার সমস্যা হল, তুমি হুট করে রেগে যাও। তুমি একবার একটা ডিসিশন নিয়ে নিলে, সেখান থেকে তোমাকে একচুল নাড়ানো যায় না। তোমার কী কখনও মনে হয়নি, এইগুলো কিছুটা অস্বাভাবিকতার লক্ষ্মণ?
পূনম ঝাঁঝিয়ে উঠলেন, লাবনী তুমি কী আমাকে কিছু ইঙ্গিত করছ? অস্বাভাবিকতা মানে কী? তুমি কী বলতে চাও, আমি পাগল?
লাবনীর ভীষণ মেজাজ খারাপ হচ্ছিল; কিন্তু অরণীর মুখটা মনে করে আর স্বামীর অনুরোধের কথা মনে করে তিনি ধৈর্যহারা হলেন না। পূনমের হাতটা ধরে বললেন, তুমি পাগল হবে কেন? ছোটাপু, একটা কথা বলি, রাগ করো না প্লিজ। আমাদের শরীরে যেমন অসুখ হয়, মনেরও কিন্তু অসুখ হয়। এটা তো স্বীকার করো? কী, করো না?
পূনম কথার উত্তর না দিয়ে, বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলেন।
ছোটাপু শোনো, আবার বলছি, রাগ করো না, ফাহাদ ভাই কিন্তু অনেকবার চেষ্টা করেছেন; কিন্তু তুমি ওনাকে একবারও সহযোগিতা করোনি। আমাদের সবারই তো বয়স হচ্ছে। বয়সের সঙ্গে, সঙ্গে মন-মেজাজ আরও তিরিক্ষি হয়ে যায়। তোমার এই হঠাৎ রেগে যাওয়া, যখন-তখন মুড সুইং, হুট করে কাউকে সহ্য করতে না পারা, এসব কিছু কিন্তু এক ধরণের মানসিক অবসাদ। লাবনী ইচ্ছে করেই “মানসিক সমস্যা বা মানসিক অসুস্থতা” কথাটা উল্লেখ করলেন না।
পূনম বললেন, আমার কোনও মানসিক অবসাদ নেই।
সেটা তুমি বুঝতে পারছ না। আমরা যাঁরা সামনে থেকে তোমাকে দেখছি, তাঁরা বুঝতে পারছি। একবার নিজের জেদ থেকে সরে এসে দেখো, পৃথিবীটা অনেক সহজ মনে হবে তোমার কাছে। একবার নিজের রাগটা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে দেখো, সামনের মানুষগুলোকে তখন আর এতটা অসহ্য ঠেকবে না। প্লিজ আপু, একবার চেষ্টা করো।
বোনের কথা শুনে পূনম হঠাৎ শান্ত হয়ে বললেন, আমি নিজেও বুঝি না, কেন যে মাঝে মাঝে এমন পাগলা জেদ ওঠে মাথায়! তখন কেউ যদি আমার কথা অমান্য করে, আমার সবকিছু ধ্বংস করে দিতে মন চায়।
লাবনী বললেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই মনে করে, মানসিক সমস্যা মানেই বুঝি পাগলের লক্ষ্মণ। এটা ভীষণ ভুল ধারণা। তুমি একজন মনোবিদের সঙ্গে কথা বলে দেখো, তিনি তোমাকে খুব ভালোভাবে সাহায্য করতে পারবেন, এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। তোমার কত সুবিধা, তোমার তো ঘরেই সাইক্রিয়াটিস্ট রয়েছে। তৃপ্তি ভাবীই তোমাকে সবচেয়ে ভালো হেল্প করতে পারবেন।
তৃপ্তির নাম মুখে নিয়ো না। ওর কথা শুনলে আমি স্থির থাকতে পারি না।
ছোটাপু শোনো, এখন তৃপ্তি ভাবী তোমাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করতে পারবেন। শরীরের সঠিক অসুখটা যেমন শুধু ডাক্তারই ধরতে পারেন, তেমনি মনের সঠিক সমস্যাটাও তৃপ্তি ভাবীই বুঝতে পারবেন। তাঁরা তো এই বিষয়ে কতো পড়াশোনা করেছেন৷ তৃপ্তি ভাবীর সঙ্গে কথা বলো ছোটাপু। দেখো, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
পূনম বারকয়েক না, না করলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর জা’র সঙ্গে কথা বলতে রাজি হলেন এবং দিনাকেও আপাতত অরণীর বিয়ের ব্যাপারে, না করে দেওয়া হবে, সেটাও বললেন।
বোনের বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার সময় লাবনীর খুব ভালো লাগল। বহুদিন পর, তার ছোটাপু, তাঁর সঙ্গে মন খুলে কথা বলেছে। কোনোরকম দাম্ভিকতা দেখায়নি।
————————
তৃপ্তি কনফারেন্সে যোগ দিতে দেশের বাইরে আছেন বলে পূনম তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তৃপ্তি দেশে ফিরলে, মুখোমুখি বসে তিনি সমস্ত সমস্যা খুলে বলবেন। দিনাকে ফোন দিই, দেবো করতে করতে, পূনম শেষ পর্যন্ত ফোনই করলেন না। এতদূর কথা এগিয়ে নেওয়ার পর ফোন করে কী করে না করবেন, এটা পূনম বুঝতে পারছিলেন না।
পূনম ফোন না করলেও, দিনা ঠিকই ফোন করলেন। দিনা কথা শুরু করলেন অনুযোগের সুরে, কী ব্যাপার পূনম, তোর যে কোনও সাড়াশব্দ নেই! আমি দুইদিন ফোন করলাম, তুই রিসিভ করলি না, কলব্যাকও করলি না। কী হয়েছে তোর, ভালো আছিস তো?
হুম ভালো আছি।
আচ্ছা শোন, ভাবী তোর সঙ্গে কথা বলতে চাচ্ছিল। অর্ণব তো এখন দেশে আছে। ও তো বেশিদিন থাকবে না। কবে দেখা করা যায়, কোথায় দেখা করবি, এসব নিয়ে কথা বলার জন্যই আমি ফোন দিচ্ছিলাম। আমি কনফারেন্স কল করব? ভাবীকে নিয়ে নিই সাথে?
পূনম ইতস্তত করে বললেন, দিনা শোন, আমি আসলে বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করে দেখলাম….
কোন বিষয়?
বিয়ের বিষয়টা। মানে আমি চাচ্ছিলাম, এত তাড়াহুড়ো না করে, মানে ছেলেটা লেখাপড়া শেষ করে আসুক….
লেখাপড়া শেষ করে, মানে কী? পিএইচডি শেষ হতে তো কয়েক বছর সময় লাগবে। অরণী বিয়ের পর, অর্ণবের কাছে চলে যাবে। সমস্যা কোথায়? দেখ ভাই, তোর আবার মুড সুইং হয়ে যায়নি তো? আমি কিন্তু বাবা তোকে এবার আগে থেকেই সাবধান করে দিয়েছিলাম, ঠিকমতো সিদ্ধান্ত নিয়েই সামনে এগোতে বলেছিলাম। হ্যালো পূনম শুনছিস?……………………….