#মন_নিয়ে_খেলা(২০)
************************

সাদমান বলল, আংকেলকে আমার খুব ভালো লেগেছে। উনি কেমন মায়া করে সবার সঙ্গে কথা বলেন।

হুম। আমার বাবা এমনই। বাবা সবার সঙ্গেই এভাবে কথা বলেন। আমাদের অফিস আর ফ্যাক্টরিতে যত কর্মী আছেন, সবাই বাবাকে অনেক পছন্দ করেন। শ্রমিক অসন্তোষ বা শ্রমিকদের কর্মবিরতি, এগুলো আমাদের ফ্যাক্টরিতে কখনও হয়নি, জানো। বরং কখনও কোনও বিরূপ পরিস্থিতি তৈরি হলে, কর্মীরাই সেটার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।

এটা তো বিশাল ব্যাপার। আংকেল হচ্ছেন ঠান্ডা মাথার জ্ঞানী মানুষ। ওনার সঙ্গে কথা বলে আমার মনে হল, উনি সবকিছুই খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেন; কিন্তু সামনের মানুষকে সেটা বুঝতে দেন না। তুমি কিন্তু আংকেলের মতো হয়েছ।

বাবাকে একবার দেখেই তুমি এতকিছু বুঝে গেছ?

হুম। বুঝে গেছি। আংকেলকে না হয় একবার দেখেছি; কিন্তু তোমাকে তো এত বছর ধরে দেখছি। আচ্ছা আংকেল যে আমাকে ওনার অফিসে যেতে বললেন, আমি কী অফিসে যাব?

অবশ্যই যাবে।

তুমি যাবে আমার সঙ্গে?

যেতে পারি, সমস্যা নেই।

সাদমান জিজ্ঞেস করল, আন্টি কিছু বলেছেন আমার কথা? আন্টির কথা তো কিছু বললে না?

উঁহু, আম্মু কিছুই বলেননি।

কিছুই না!

না। আমিও ভেবেছিলাম, আম্মু হয়তো কিছু একটা বলবেন; কিন্তু আম্মু বিষয়টাকে খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিয়েছেন।

আন্টি যেভাবে প্রশ্ন করতে শুরু করেছিলেন, আমি তো ভয়ই পেয়ে গিয়েছিলাম।

অরণীর এখন পূনমের বলা কথাগুলো সাদমানকে বলতে ইচ্ছে করছে না। ঐ কথাগুলোতে তার ভীষণ মন খারাপ হয়েছে। এখন সাদমান শুনলে, সে-ও অনেক মন খারাপ করবে। তার মা কেন যে এমন অদ্ভুত আচরণ করছেন, অরণী এটা কিছুতেই বুঝতে পারছে না। সাদমানকে তো সে কিছুতেই ছাড়বে না। দুনিয়া উলটে গেলেও না; কিন্তু পূনমকে কী করে রাজি করানো যায়, সেই উপায়ও তার মাথায় আসছে না। অরণীর ভেতর থেকে একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল। আজ কতোদিন হয়ে গেল, তার আম্মু তার সঙ্গে একটু ভালোভাবে কথা বলে না। এই দমবন্ধ পরিস্থিতি থেকে কী করে মুক্তি পাওয়া যাবে, তার কোনও কুল-কিনারা সে করতে পারছে না। তাদের খালামনিরা মনে হয় না কোনোরকম হেল্প করবেন। বড়ো খালামনি তো করবেনই না। তিনিই তো দৌড়ে, দৌড়ে এসে সাদমানের কথাটা বলে দিয়েছিলেন। ছোটো খালামনির সঙ্গে তার আম্মুর সম্পর্কটা কেমন যেন! ছোটো খালামনি আম্মুর মুখের ওপর তাঁর ভুলগুলো ধরিয়ে দেন, তাই আম্মু তাঁকে পছন্দ করেন না। যে আম্মুর ভুল ধরবে, আম্মুর চোখে সে-ই খারাপ হয়ে যাবেন। এই কথাগুলো ভাবতে, ভাবতে অরণীর যে হঠাৎ কী হল, আগ-পিছ কিছু চিন্তা না করেই সে হুট করে বলে ফেলল, সাদমান, চলো আমরা বিয়ে করে ফেলি।

সাদমান চা’য়ে চুমুক দিতে যাচ্ছিল। অরণীর কথা শুনে কাপটা মুখের কাছ থেকে সরিয়ে নিয়ে বলল, কী করে ফেলব! বিয়ে?

হুম, বিয়ে। এত অবাক হচ্ছ কেন? মনে হচ্ছে বিয়ে নামক শব্দটা তুমি আজই প্রথম শুনলে?

সাদমান কী বলবে ঠিক বুঝতে পারছে না। বিয়ে তো তারা অবশ্যই করবে; কিন্তু এখন, এই মুহূর্তে বিয়ে করার কথা তো তার মাথায়ই আসেনি। এখনও তো বিএসসির রেজাল্টই হয়নি। সামনে এমএসসি করতে হবে। তারপর বুয়েটে জয়েন করার ইচ্ছা। তারপর না গিয়ে বিয়ের চিন্তা করবে। অরণী হুট করে এখনই কেন বিয়ের কথা বলল? ও কী মজা করছে?

অরণী বলল, কী হল, সাদমান? কথা বলছ না কেন?

কী বলব?

আমার কথার উত্তর দাও।

সাদমান, অরণীর দিকে তাকিয়ে বলল, মজা করছ?

মজা? মজা করব কেন!

মানে তুমি সিরিয়াস?

তোমার কাছে কেন মনে হচ্ছে, আমি মজা করছি? তুমি চা খাচ্ছ না কেন? চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে।

অরণী হঠাৎ গম্ভীর হয়ে যাওয়ায়, সাদমানও একটু নড়েচড়ে বসল। কাপের চা এক চুমুকে শেষ করে, কাপটা বিন এ ফেলে দিল। তারপর বলল, তুমি এমন হঠাৎ করে বিয়ের কথা বললে তো, তাই ভাবলাম, মজা করছ।

না, মজা করিনি। সিরিয়াসলি বলেছি। এবার উত্তর দাও। করবে বিয়ে?

এভাবে হুট করে বিয়ে করা যায়? এখন বিয়ের কথা আসছে কেন? আমাদের তো এখনও পড়াই শেষ হয়নি। তাছাড়া আমি বাসায় এই কথা বলব কেমন করে? অরণী, তোমার হঠাৎ কী হল?

অরণী নিজেও জানে না, তার হঠাৎ কী হল? কেন সে বিয়ের কথা তুলল? সে শুধু এটুকু বুঝতে পারছে, ভেতরে, ভেতরে সে ভীষণ অসহায় বোধ করছে। তার কেবলই মনে হচ্ছে, সামনে তার জন্য কোনও একটা ঝামেলা অপেক্ষা করে আছে। সেটা কী ধরণের ঝামেলা হতে পারে, অরণী অনুমান করতে পারছে না বলেই, আরও বেশি বিরক্ত লাগছে।

——————–

সিনথী আর লাবনী ফোনে কথা বলছেন। সিনথী বললেন, গতকাল রাতে পূনমের সঙ্গে কথা হয়েছে। তোমার সঙ্গে ওর কথা হয়েছে নাকি?

আমার সঙ্গে গতকাল সকালে কথা হয়েছিল।

পূনম কিছু বলল তোমাকে?

কিসের কথা আপু?

অরণীর কথা কিছু বলেনি? ঐ ছেলেটা তো বাসায় এসেছিল।

যার সঙ্গে অরণীর সম্পর্ক আছে?

হুম। ছেলে সরাসরি বাসায় এসে হাজির। আজকালকার ছেলেমেয়ে কত স্মার্ট, দেখেছ?

বাহ, ভালো তো।

লাবনী, তুমি ভালো বলছ! পূনম তো রেগে আগুন।

ছোটাপু তো সবকিছুতেই রেগে আগুন হয়ে যায়। মেয়ে পছন্দ করেছে, ছেলেটা বুয়েটে পড়ছে, এখানে আমি তো খারাপ কিছু দেখছি না। রেগে আগুন হওয়ার কী আছে?

পূনম পুরো একঘন্টা মনের রাগ মিটিয়ে আমার কাছে দুঃখের কথা বলল। অরণী ইদানিং ভীষণ তর্ক করে ওর সঙ্গে। পূনমের অবস্থা তো তুমি জানোই। ওর তো ক্লাস নিয়ে একটা প্রবলেম সবসময়ই ছিল। ও তো সবার সঙ্গে মিশতে পারে না। এটা তো আর আজকে থেকে হয়নি। এটা তো ওর ছোটোবেলার অভ্যাস।

হুম সেটা তো জানিই। ওর এই বদ স্বভাবটা কোনোদিন আর পালটাবে না। শোনো বড়পু, এত অহংকার ভালো না, বুঝলে? আজকালকার বাবা-মা আমাদের আব্বা-আম্মার মতো এত কঠিন না। আজকাল বাচ্চারা বাবা-মাকে নিজেদের বন্ধু মনে করে। ছোটাপুর উচিত রাগারাগি না করে, বিষয়টা নিয়ে সহজভাবে চিন্তা করা। আচ্ছা তুমি আমাকে বলো তো, আপুর সমস্যা ঠিক কোন জায়গায়? ছেলে, নাকি ছেলের ফ্যামিলি?

মনেহয় দু’টোই। পূনম মনে মনে অন্য কোনও ছেলেকে পছন্দ করে রেখেছে।

কোন ছেলে? আমরা চিনি?

ছেলেকে চিনি না। দিনার কে যেন হয়।

আপুর ফ্রেন্ড দিনা আপু?

হুম। পূনমের কথা হচ্ছে, সারাজীবন এত কষ্ট করে, যত্ন করে বাচ্চাদের বড়ো করল আর আজকে এসে জীবনের এতবড়ো একটা সিদ্ধান্ত অরণী একা নিয়ে নেবে? তা-ও যদি সেটা পূনমের মন মতো হত, তাহলে একটা কথা ছিল।

লাবনী হেসে বলল, ছোটাপুর মনের মতো হওয়ার জন্য ছেলেটাকে আরও কয়েকবার জন্ম নিতে হবে। অরণীর জন্য আমার খারাপই লাগছে। নীলোর্মির বুয়েটে ভর্তি নিয়েও আপু একটা ঝামেলা বাধলো। মেয়েটা কত মন খারাপ করে আর্কিটেকচারে ভর্তি হল। ছোটাপুর যন্ত্রণায় বাচ্চাদুটো আর শান্তি পেল না আর ফাহাদ ভাইয়ের কথা তো বাদই দিলাম। বেচারা সহ্য করে জীবন পার করল। থাক ওসব কথা বলে আর লাভ নেই। বড়পু, আমি কালকে বিকালে তোমার বাসায় আসছি।

ঠিক আছে। কাল দেখা হচ্ছে। এখন রাখছি।

লাবনী ফোন রেখে বিছানায় এসে বসলে, তাঁর বর সাজ্জাদ জিজ্ঞেস করলেন, কী হল, কী নিয়ে কথা বলছিলে?

বড়পুর সঙ্গে কথা বলছিলাম, ছোটাপুকে নিয়ে।

ছোটো আপুর আবার কী হল?

কী আর হবে? এতদিন ফাহাদ ভাইয়ের পেছনে লেগে থাকত আর এখন মেয়ে দু’টোকে নিয়ে পড়েছে। অরণীকে নিয়ে বাসায় ঝামেলা শুরু করেছে। অরণী ওর এক ক্লাসমেটকে পছন্দ করে। ছেলেটা সেদিন বাসায় এসেছিল। ব্যস, তাতেই ছোটাপুর মাথা গরম।

কোন ছেলেকে পছন্দ করেছে? ছেলে কী করে?

ওরা একসঙ্গে বুয়েটে পড়ছে।

ছোটো আপু এত রাগ করছেন কেন, সমস্যা কোথায়?

তার যে আসলে কোথায় সমস্যা, সেটা একমাত্র সে-ই ভালো জানে। আমার সঙ্গে তো এসব বিষয়ে কথা কম হয়। আমি সবকিছু বড়পুর কাছ থেকেই শুনি।

ইনি তোমাদের চার ভাইবোনের মধ্যে একটু আলাদা। পূনম আপু মনে হয় কারও সঙ্গেই স্বাচ্ছন্দ নিয়ে মিশতে পারেন না।

হুম। ওর কাছে মনে হয়, ও নিজে সবার সেরা, ওর সিদ্ধান্তগুলো সবচেয়ে নির্ভুল। অবশ্য এটাতে ওর চেয়ে আমাদের দাদির দোষ অনেক বেশি। তুমি তো আমার দাদিকে দেখোনি। আমার দাদি ছিলেন জাঁদরেল মহিলা। আমরা সবাই দাদিকে ভয় পেতাম আর ছোটাপুর বেলায় ছিল ঠিক তার উলটোটা।

কেমন?

তুমি তো ওকে কত বছর ধরেই দেখছ। ও আর এখন কতটা সুন্দর, ছোটোবেলায় এরচেয়েও অনেক সুন্দর ছিল। আমরা তিন ভাইবোন হয়েছি দেখতে একরকম আর ছোটাপু হয়েছে কিছুটা দাদির মতো। দাদিও খুব সুন্দরী ছিলেন। সেই হিসেবে ওকে তো মহা সুন্দরী বলা যায়। টিনএজের সময় ওকে দেখে, ছেলেদের মাথা ঘুরে যেত। এই সৌন্দর্যের কারণে ওর সব অন্যায় আবদার, দাদির প্রশ্রয়ের কারণে মেনে নেওয়া হত। ও যখন যা চেয়েছে, সেটা সঙ্গে, সঙ্গে হাজির হয়ে গেছে। দাদির আস্কারা পেয়ে সে নিজেকে সবসময় বিশেষ কেউ মনে করত। আম্মা যতই ওকে শাসন করার চেষ্টা করুক না কেন, দাদির কারণে কখনোই ওকে শাসনে রাখতে পারতেন না। আব্বা নিজের ব্যবসা আর রাজনীতি নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকতেন। আম্মা, দাদির ভয়ে আব্বার কাছে কিছু বলতেও পারতেন না। কারণ আব্বা ছিলেন মা অন্তঃপ্রাণ। আব্বার কাছে দাদির নামে কিছু বলে বিশেষ সুবিধাও পাওয়া সম্ভব না। ছোটাপু এই বিষয়টারই সুযোগ নিত সবসময়। দাদির আহ্লাদ পেয়ে ও দিন দিন আরও স্বেচ্ছাচারী, আরও অহংকারী হয়ে উঠছিল। একটা সময় এমন হল, আমরা যে ওর আপন ভাইবোন, ও যেন এটাও ভুলে যাচ্ছিল। বড়পুর সঙ্গে ততটা না করলেও আমার আর রূপমের ওপর সবসময় শাসনের ছড়ি ঘোরাতো। তুমি অবস্থাটা বুঝে দেখো, একদিকে সে আম্মার কোনও কথা শুনছে না, আবার অন্যদিকে আমাদের দুইজনকে তা শাসনে থাকতে হবে! কতটা স্বৈরাচারী মনোভাব, একবার চিন্তা করে দেখো।

আম্মা না হয় ওনাকে কন্ট্রোল করতে পারেননি; কিন্তু আব্বাও কী কখনও কিছু বলেননি?

আব্বা বলবে কী করে? সে তো আব্বারও অনেক আদরের মেয়ে ছিল। ছোটাপু কত চমৎকার করে মন ভোলানো কথা বলতে পারে, জানোই তো। আব্বাও ওকে খুব আদর করতেন। আব্বা আমাদেরকেও অনেক আদর করতেন। সমস্যা কখন হল জানো? যখন দাদি মারা গেলেন। তখন আম্মার সঙ্গে সারাক্ষণ ওর খটমট লাগতে শুরু হয়ে গেল। ততদিনে বড়পুর বিয়ে হয়ে গেছে। ছোটাপু আম্মার হাত থেকে বাঁচার জন্যই বিয়েতে রাজি হয়ে গেল। ওর বিয়ের প্রস্তাব তো সারাক্ষণ আসতেই থাকত। এত, এত বিয়ের প্রস্তাব থেকে ও কিন্তু নিজেই পছন্দ করে ফাহাদ ভাইকে বিয়ে করল। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ি গিয়ে শুরু হল নতুন অশান্তি।

আবার কী অশান্তি?

ফাহাদ ভাইয়ের সঙ্গে যখন বিয়ে হল, তখন ওনাদের ফ্যামিলির অবস্থা ভালো ছিল; কিন্তু আমাদের মতো এত ভালো ছিল না। ছোটাপু শ্বশুরবাড়িতে যেতে না যেতেই শুরু হয়ে গেল মনমালিন্য। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা হয়তো আপুর কাছ থেকে একরকম আশা করছে; কিন্তু আপু করছে অন্যকিছু। ছোটোখাটো সব বিষয় নিয়ে দিনদিন সম্পর্কের তিক্ততা বাড়ছিল। ছোটাপু বোধহয় সব মিলিয়ে সাত/আট মাস ছিল শ্বশুরবাড়িতে। তারপর থেকে ওরা আলাদা থাকা শুরু করল। ওরা আলাদা হয়ে গেলে, ফাহাদ ভাইয়ের আব্বা-আম্মা ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলেন। খালু ফাহাদ ভাইকে তাঁর ব্যবসার অংশ দিয়ে দিলেন। এরপর তো ব্যবসায় ওনার শুধু উন্নতিই হয়েছে। আজকে তো দেখতেই পাচ্ছ, উনি ব্যবসাকে কোন পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। ছোটাপুর ধারণা, ওর ভাগ্য জোরেই ফাহাদ ভাইয়ের আজ এত উন্নতি।

ছোটো আপুর তো দেখছি সিরিয়াস মানসিক সমস্যা।

এটা আমরা সবাই বুঝতে পারি। কেবল সে-ই বুঝতে পারে না।

ওনাকে তো বুঝাতে হবে। এভাবে চলতে পারে নাকি, আশ্চর্য! ওনার কারণে তো… কী যে বলব, বুঝতে পারছি না।

ফাহাদ ভাইয়ের ছোটো ভাইয়ের বউই তো সাইক্রিয়াটিস্ট।

হুম, তৃপ্তি ভাবী।

তৃপ্তি ভাবী তো কয়েকবার চেষ্টা করলেন। লাভ তো হলই না, বরং দুই জা’য়ের সম্পর্কই নষ্ট হয়ে গেল। তোমার মনে আছে, একবার ছোটাপুকে না জানিয়েই সাইক্রিয়াটিস্ট এর কাছে নেওয়া হয়েছিল। ঐ যে আমরা সবাই মিলে সিঙ্গাপুর গেলাম যে বার। বারো-তেরো বছর আগে।

হুম, হুম। মনে পড়েছে। আমি তো ঐ ঘটনা ভুলেই গিয়েছিলাম। কী হুলুস্থুলটাই না হল!

হুম। প্রথম সেশনে সে বিষয়টা ধরতে পারেনি। পরের সেশনেই বুঝে ফেলেছিল। বিদেশবিভুঁইয়ে কী হাঙ্গামা হল ওর জন্য। তারপর থেকে মনে হয় ফাহাদ ভাই আর চেষ্টা করেন না। কী করবে বলো? উনিও তো একটা মানুষ। ওনারও তো ধৈর্যের একটা শেষ আছে। মাঝখানে তো কী সব ব্যবসা করে গাদা গাদা টাকাপয়সা নষ্ট করে, কিছুদিন বেশ চুপচাপ ছিল। এখন আবার অরণীর বিষয়টা নিয়ে বাসায় অশান্তি শুরু করেছে।

আমার মনে হয়, তোমরা দুই বোন মিলে, একবার ঠান্ডা মাথায় ওনার সঙ্গে কথা বলো। ওনাকে বোঝাও। সব তো নিজেরা নিজেরাই। নিজের মানুষ খারাপ থাকলে, কীভাবে ভালো থাকা যায় বলো?…………………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here