#খুনসুটি_প্রেম

writer : সুরমা
part: 4

-শোনো টুনির বাবা এই সব প্যাঁচাল বাদ দিয়ে কাজের কথা শুনো।কাল থেকে কি কি কাঁচা বাজার লাগবে সেটা শোনো।এখন থেকে সব তুমি একাই করবে।

-কিহহহহহহহহহহহহ!!!!!!!!!!আমাকে বাজার করতে বলছো?
-হু,এখানে তো তুমি ছাড়া আর কেউ নেই যে আমি অন্য কাউকে বলবো।

-আল্লাহ সকালে ঘুম থেকে উঠে এই ভীড় ঠেলে বাজার করতে জঘন্য লাগে মধুর মা।আমি করতে পারবো না গো।
-তুমি ছাড়া কে করবে বাজার?
-আমি জানি না।তবে আমি বাজার করতে পারবো না,
-তুমি তাহলে বাজারটা করবে না??
-না,

-ঠিক আছে।তাহলে আমিই যাবো বাজার করতে।তোমাকে করতে হবে না।তুমি বরং অফিসে যাও।

-এই না না।মেয়েদের এই সব বাজারে যেতে নেই।এতো পুরুষের মাঝে মেয়েরা গেলে ধাক্কা খেতে হয়।আমার বউয়ের শরীরে অন্য কারো টার্চ লাগুক আমি তা চাই না।বাজারটা আমিই করে দিচ্ছি।
-হু
-টুনির মা,তুমি আমাকে দিয়ে আর কতো কাজ করাবে?

-টুনির বাবা,তুমি কি ভুলে গেছো?বিয়ের আগে বলে ছিলে বিয়ের পর সব কাজ তুমি নিজে করবে।এমনকি ব্রেকফাস্ট তুমি বানাবে। অথচ তুমি সকালে দিব্যি ঘুমাও।আর আমি ব্রেকফাস্ট তৈরি করি।

-খাবার পুড়ে যায় বলেই তো তুমি ব্রেকফাস্ট বানাতে বারন করেছো।ভুলে গেছো টুনির মা?
-তুমি বলেছিলে বিয়ের পর আমাকে নিয়ে দেশের বাহিরে সব জায়গা গুলো ঘুরে দেখাবলে।তুমি তার একটা কথাও রাখনি।দেশের বাহিরে তো দূর।দেশের ভেতরেও কোথাও নিয়ে যাও নি।

-তুমি সব কিছু ভুলে যাও টুনির মা।আম্মু আমাকে নিজের থেকে দূরে দিতে চায় না বলেই কোথাও যাওয়া হয় নি।কিন্তু আমি তোমাকে নিয়ে যে প্রতি সপ্তাহে ঘুরতে যাই তা তো একবারো বলো নি টুনির মা।

-টুনির বাবা,তুমি ইদানিং আমার সাথে খুব ঝগড়া করো।আমি আর তোমার সাথে কথা বলবো না।
-আমি মোটেও ঝগড়া করিনা।তুমি আমার সাথে ঝগড়া করো।

-তুমি কি বলতে চাও?আমি ঝগড়ুটে?
-এটা বলার মতো সাহস আমার নেই টুনির মা,
-দূর ভাল্লাগে না তোমার সাথে কথা বলতে।সব সময় তুমি আমায় রাগাও।তোমার সাথে আমি একটাও কথা বলবো না।আজ থেকে তোমার সাথে আড়ি।

কথাটা শেষ করে মিতু শাশুড়ি মায়ের রুমে চলে আসে।রাকিব রেডি হয়ে নিচে আসে নাস্তা করতে।নাস্তা শেষ করে এদিক ওদিক মিতুকে খুঁজতে থাকে।কিন্তু কোথাও মিতুকে দেখতে পাচ্ছে না।যা,বেচারা একটু আগে ঝগড়া করে এখন অফিস যাওয়ার আগে মিতুকে দেখতে পেলো না।মনটাই খারাপ হয়ে গেলো রাকিবের।

অফিস যাওয়ার আগে বাজারটাও করে দিয়ে গেলো।বেচারার অবস্থা আজ শেষ।বাজারে এতো মানুষের প্যারায় জীবনটা তেজপাতা হয়ে গেলো।অফিসে অনেক কাজ থাকার কারনে সারাদিনে মিতুর সাথে কথাও বলতে পারে নি।

অফিসের সব কাজ শেষ করে একেবারে রাতে বাসায় ফিরলো রাকিব। রাত প্রায় ১০টার দিকে বাসায় পৌঁছালো রাকিব।রুমে গিয়ে দেখে মিতু রুমে নেই।

রাকিব ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলে মা রাকিবকে খাবার দেয়।রাকিবের চোখ চার দিকে ঘুরছে।কিন্তু কোথাও কাউকে দেখতে পাচ্ছে না।রাকিব মায়ের কাছে মিতুর কথাও জিজ্ঞাসা করতে পারছে না লজ্জায়।রাকিবের মা খেয়াল করলো রাকিব বার বার এদিক ওদিক করছে,,

-কিরে,তুই কি কাউকে খুঁজতেছিস?
-না,আমি কাকে খুঁজবো
-ও আচ্ছা,তাহলে তুই খা,

রাকিব খাচ্ছে আর ভাবছে মিতু কোথায়।একটি বারের জন্যও তো তাকে দেখতে পারছে না।আবার তার মাও তো কিছু বলছে না।তাই বাধ্য হয়ে অবশেষে মায়ের কাছে জিজ্ঞাসা করেই ফেললো,,,

-আম্মু মিতু…..
-মিতু অনেক আগেই খেয়ে আমার রুমে শুয়ে পড়েছে।
-তোমার রুমে!!!!
-হ্যাঁ,বলছিল আজকে আমার সাথে থাকবে।একটু আগে খেয়ে শুয়ে পড়েছে।তুই খেয়ে গিয়ে শুয়ে পড়।
-ওও,,,,
-হু

মায়ের কথা শুনে রাকিবের মনটা খারাপ হয়ে গেলো।সকাল বেলায় অফিস যাওয়ার সময় মিতুর মুখটাও একটু দেখে যেতে পারে নি।সারাদিন কথাও হয়নি।এখন এসেও দেখতে পেলো না।আবার নাকি মায়ের সাথে থাকবে।

মনে মনে মিতুর উপর প্রচুর রাগ উঠছে রাকিবের।রাকিব খেয়ে নিজের রুমে গিয়ে পাইচারি করতে থাকে আর মিতুকে বকা দিতে থাকে।

-ফাজি মেয়ে।সারাদিন আমার সাথে দেখা হয় নি একবারো।এখন যে আমি বাসায় আসবো এটা জানার পরও আমার সামনে এলো না।আবার নাকি আম্মুর সাথে আম্মুর রুমে থাকবে।আমি যে এখন একা এটা একবারো চিন্তা করলো না?একবারো তার বরের কথা মনে পড়ছে না।

এখন যদি এই মেয়েকে সামনে পেতাম তাহলে মাথায় তুলে একটা আছাড় মারতাম।সে কি জানে না,তাকে ছাড়া আমার রাতে ঘুম হয়না।আমি এখানে চটপট করছি আর সে নাকি ঘুমাচ্ছে।

একা একা রুমে পাইচারি করছে আর বকবক করছে রাকিব।তারপর নিজের রুম থেকে বের হয়ে মায়ের রুমে গিয়ে দেখে মা আর মিতু দুজনেই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।

রাকিব আস্তে দরজাটা একটু খুলে ভেতরে ডুকে আস্তে করে মিতুকে কোলে তুলে নিয়ে মায়ের রুম থেকে বের হয়ে আসে।হঠাৎ মিতুর মনে হচ্ছে তাকে কেউ তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

মিতু চোখ বন্ধ করেই একটা চিৎকার দিতে গেলে রাকিব তার হাত দিয়ে মিতুর মুখ চেপে ধরে।

-হুস,আমি।চিৎকার করো না।

রাকিবের কথা শুনে মিতু চোখ খুলে দেখে রাকিব তাকে নিয়ে যাচ্ছে।

-তুমি এখানে কি করছো?আর আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছো??
-হুস,এখন একটাও কথা না।চুপ করে থাকো।রাকিব মিতুকে নিজের রুমে নিয়ে আসে।মিতুকে সোফায় বসিয়ে দেয়,,,
-আমাকে এখানে নিয়ে আসলে কেন?
-তোমার এতো বড় সাহস আমাকে একা রেখে আম্মুর সাথে ঘুমাতে গেছো?একবারো আমার কথা মনে হলো না আমার কেমনে কাটবে রাতটা?

-আমি তোমার কথা কেন ভাবতে যাবো?তুমি সব সময় আমার সাথে ঝগড়া করো।আমাকে একটুকুও ভালোবাসো না।
-তাই?কে বললো আমি তোমাকে ভালোবাসি না?
-আমি বুঝিতো,
-কি বুঝো?
-এটাই যে তুমি এখন আর আমাকে আগের মতো ভালোবাসো না।বিয়ের আগে বলেছিল বাহিরে ঘুরতে যাবে।কিন্তু এখনো পর্যন্ত একটা জায়গাও আমাকে নিয়ে যাও নি।
-তাই বুঝে গেলে আমি তোমাকে ভালোবাসি না,
-হু
-আরে পাগলি,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি।আগে যেমন বাসতাম,তেমনি এখনো ভালোবাসি।ভবিষ্যৎতে এভাবেই ভালোবাসবো।
-থাক আর বলতে হবে না।আমার জানা আছে তোমার ভালোবাসা।অভিমানী কণ্ঠে কথাটা বলে মিতু চলে আসে বেলকুনিতে।রাকিব বেলকুনিতে এসে মিতুকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে,,,,,
-আরে পাগলীটা,এতো রাগ করছো কেন?এতোটা রাগ করতে হয়??
-ছাড়ো আমার ভালো লাগছে না।
-আচ্ছা আমি চিন্তা করছি কাল যদি তোমাকে নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাই তাহলে কেমন হবে???
-সত্যি(অনেকটা খুশি হয়ে)
-হু,
-আমরা কোথায় যাবো?
-তোমার স্বপ্নের কোয়াকাটা,,
-সত্যি বলছো তো?
-তিন সত্যি,,

রাকিবের কথা শুনে মিতু খুশিতে আত্মহারা,একমতো নাচানাচি শুরু করে দিয়েছে,।রাকিব মিতুকে পেছন থেকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে কোমরটা জড়িয়ে ধরে।

-খুশি হয়েছো
-হু,অনেক খুশি,

রাকিব নিজের নাকটা মিতুর নাকের সাথে একটু ঘষে দিয়ে,,,

-“I love u Janpakhi ”
-“I love u too Pranpakhi ”
-হু,তবে আজ শুধু Love u দিয়ে কাজ হবে না।আমারর আরো কিছু লাগবে।
-আমার কাছে তো কিছু নেই,কি দিবো
-বেশি কিছু লাগবে না।শুধু আদর দিয়ে আমাকে ভরিয়ে দাও।তাহলেই হবে,
-যাহ,,,,,,শয়তান।সব সময় বাজে কথা বলে,,
-যাহ্ বাবা।এখানে বাজে কি বললাম।বলেছিতো আমাকে আদর করার কথা,
-আমি পারবো না,
-ঠিক আছে,তোমাকে পারতে হবে না।আমিই আমার জিনিস বুঝে নিচ্ছি।কথাটা বলেই রাকিব মিতুকে কোলে তুলে নেয়। রাকিব মিতুকে নিয়ে রুমে চলে আসে।মিতুকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে নিজের শরীরের সবটা ভর মিতুর উপর ছেড়ে দেয়।

-প্লীজ ছাড়ো,মামুনি যদি জেগে দেখে আমি পাশে নেই তাহলে কি মনে করবে।ছাড়ো আমি যাবো,
-যাবে তো যাও।আমি কি তোমাকে মানা করেছি,,

কথাটা বলে রাকিব মিতুর দুটি হাত বিছানার সাথে চেপে ধরে এক নেশা ভরা দৃষ্টিতে মিতুর দিকে তাকিয়ে থাকে।রাকিবের এমন চাহনি দেখে মিতু লজ্জা পেয়ে একটা হাসি দিয়ে চোখ দুটি বন্ধ করে মুখটা অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেয়।

রাকিব মিতুর গালে একটা কিস করে।তারপর মিতুর গলায় একটা কিস করতেই মিতু রাকিবের হাত দুটি চেপে ধরে।রাকিব তার হাতের স্পর্শ মিতুর সারা শরীরে পৌঁছে দিতে থাকে।

রাকিবের প্রতিটা স্পর্শে মিতুর নি:শ্বাস ক্রমশ ভারী হতে থাকে।রাকিব মিতুর বুকে এক হাত দিয়ে জোরে জোরে চাপ দিতে থাকে।আর পাগলের মতো মিতুর শরীরে কিস করতে থাকে। রাকিবের যেন কোনো হুশ নেই।নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে ভালোবাসার এক অন্য রাজ্যে।

রাকিব নিজের মাথাটা একটু তুলে তাকিয়ে দেখে মিতু এখনো চোখ দুটি বন্ধ করেই রেখেছে।মিতুর গোলাপি ঠোঁট দুটি কাপছে।মনে হয় রাকিবকে নিজের দিকে আকর্ষণ করছে।রাকিব মুহুর্তেই ডুব দেয় মিতুর ঠোঁটে।

মিতু রাকিবের চুল গুলো শক্ত করে মুঠো করে নেয়।রাকিব মিতুর ঠোঁটের স্বাদ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।দুজন দুজানে মগ্ন হয়ে পড়ে।কারো কোনো হুশ নেই।হঠাৎ মিতু রাকিবকে জোরে ধাক্কা দিলে তাল সামলাতে না পেরে রাকিব বিছানা থেকে ফ্লোরে পড়ে যায়।

মিতুর এমন আচমকা এভাবে ধাক্কা দেওয়ার কারন রাকিব কিছুতেই বুঝতে পারলো না।রাকিবের রাগ উঠে যায়।কিন্তু হঠাৎ মিতুর একটা আর্তনাতের শব্দে রাকিব তাড়াতাড়ি ফ্লোর থেকে উঠে মিতুর কাছে চলে আসে।এসে দেখে মিতু চটপট করতে থাকে।মিতুর এমন অবস্থা দেখে রাকিব নার্ভাস হয়ে যায়।রাকিব একটু এগিয়ে গিয়ে মিতুর পাশে বসে মিতুর হাতটা ধরে।মিতুও খুব জোরে রাকিবের হাত কামছে ধরে।

-জানপাখি,কি হয়েছে তোমার?এমন করছো কেন?কি হয়েছে তোমার?প্লীজ বলো কি হয়েছে,,
-পেইন,
-পেইন?কোথায়,
-পেটে

হঠাৎ করে শুরু হওয়া পেইনের জন্য মিতু চটপট করতে থাকে।মিতুর এতো চটপটানি দেখে রাকিব খুব অস্তির হয়ে উঠে।কি করবে কি না করবে কি না করবে বুঝতে পারে না।রাকিব দৌঁড়ে গিয়ে ওষুধের বক্স বের করে একটা টেবলেট নিয়ে মিতুকে খাইয়ে দেয়।দুমিনিট পর মিতুর ব্যথাটা কমে যায়।রাকিব একটা স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলে।

-এখন কেমন লাগছে ময়না পাখি,,
-ভালো,
-হঠাৎ করে এমন পেইন কেন?
-জানিনা,
-ঠিক আছে এবার চলো,
-কোথায়
-ডাক্তারের কাছে
-ডাক্তারের কাছে কেন?এখন তো পেইন নেই।
-না থাকলেও চলো।আমি কোনো রিক্স নিতে চাইনা।হঠাৎ করে কেন এমন হলো জানতে হবে।চলো
-তোমার কি মাথা খারাপ?দেখছো কয়টা বাজে,এতো রাতে ডাক্তারের কাছে যাবো?
-এতো রাত তো কি হয়েছে?
-এখন তো আর পেইন নেই।তুমি অযথাই চিন্তা করছো।
-আমি এতো কিছু শুনতে চাই না।এখন তুমি ডাক্তারের কাছে যাবে ব্যস
-প্লীজ,এখন আমি ঘুমাবো।আর এখন তো আমার কোনো সমস্যা হচ্ছে না।তুমি অযথাই এতো টেনশন করছো।
-একবার ডাক্তারের কাছে গিয়ে চেকাপ করিয়ে রাখলে তো কোনো সমস্যা নেই।আর তুমি এমন করছো কেন?
-প্লীজ আমি ঘুমাবো।আমি একদম ঠিক আছি।তুমি চিন্তা করো নাতো।বলেই মিতু এসে রাকিবকে জড়িয়ে ধরে।রাকিবও আর কোনো কথা বাড়ায় নি।মিতুকে নিজের বুকে নিয়ে শুয়ে পড়ে।

মিতু রাকিবের বুকে মাথা রেখেই ঘুমিয়ে পড়ে।রাকিব মিতুর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে আর মিতুর হঠাৎ এমন পেইন হওয়াটা নিয়ে চিন্তা করতে থাকে।একসময় রাকিবও ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে যায়।

খুব সকালে মিতু ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে যায়।তাকিয়ে দেখে রাকিব তখনও ঘুমিয়ে আছে।মিতু এসে রাকিবের হাত ধরে টানতে শুরু করে,,

-উঠো না।অনেক ঘুমিয়েছো আর কতো?এবার উঠো।দেখ কতো বেলা হয়ে গেছে।

মিতুর টানাটানিতে রাকিব হুরমুর করে উঠে বসে।
-কি হয়েছে,আবার পেইন লাগছে?
-না,
-তাহলে এভাবে টেনে তুললে কেন?
-আমরা বের হবো কখন?
-ও,আচ্ছা তুমি বসো আমি দুমিনিটে ফ্রেস হয়ে আসি।রাকিব ওয়াশরুম ডুকে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নেয়।
-চলো আমি রেডি
-হু,চলো।
রাকিব মিতুর আগে আগে হাটতে থাকে।হঠাৎ মিতুর ডাকে রাকিব পেছন ফিরে তাকায়,,

-কি হয়েছে,ডাকছো কেন?
-ব্যাগ গুলো নিচ্ছো না কেন?
-কিসের ব্যাগ?
-কিসের ব্যাগ মানে?কাপড়ের ব্যাগ।আমরা তো কুয়াকাটা গিয়ে থাকবো কয়দিন।কাপড় নিতে হবে না?
-কুয়াকাটা কে যাচ্ছে?
-কেন, আমরা?
-আমরা এখন মোটেও কুয়াকাটা যাচ্ছি না।আমরা এখন ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি।
-না আমি ডাক্তারের কাছে যাবো না।আমি কুয়াকাটা যাবো।
-আগে ডাক্তারের কাছ যাবো।তার পর যদি দেখি তুমি সুস্থ আছো তাহলে পরে কুয়াকাটা যাবো
-না,আমি এখনি কুয়াকাটা যাবো।আমি ডাক্তারের কাছে যাবোই না,

রাকিব মিতুকে অনেক বুঝাতে চাইলেও মিতু বুঝতে চাইছে না।রাকিব আর কোনো উপায় না পেয়ে মিতুকে কোলে তুলে নেয়।রাকিবের কোলে উঠে মিতু বাচ্চাদের মতো লাফালাফা শুরু করে দেয়।

-টুনির মা,তুমি বাচ্চাদের মতো কি করছো?পড়ে যাবে তো
-আমাকে নামাও আমি কুয়াকাটা যাবো
-বলছি তো নিয়ে যাবো।কিন্তু আগে ডাক্তার দেখাবো তার পর।
-না,আমি এখনি যাবো।বলে হাত পা ছুড়াছুড়ি করতে থাকে।
-এখন যদি শান্ত না হও তাহলে কিন্তু আমি তোমাকে মাথায় তুলে একটা আছাড় মারবো বলে দিলাম।
-ভ্যা ভ্যা ভ্যা
-অহ,এখন আবার কান্না করছো কেন বাচ্চাদের মতো?
-তুমি আমাকে মিথ্যা কথা বলেছো।আজ ঘুরতে নিয়ে যাবা বলে এখন যেতে চাইছো না।আবার এখন তুমি আমাকে মারার কথা বলছো?ভ্যা ভ্যা ভ্যা
-ও আল্লাহ,আমি কেমনে বুঝাই এই মাইয়ারে,চুপ কর।আমি তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো প্রমিজ।কিন্তু আগে ডাক্তার দেখিয়ে নেই।
-না,আমি যাবো না।আমাকে কোল থেকে নামা বলছি।কথাটা বলে মিতু রাকিবের বুকে কামছি দিতে শুরু করে।
-আহ!!,জানপাখি,কি করছো?ব্যথা পাচ্ছি তো।
-আমাকে ছাড়,আমি তোর সাথে কোথাও যাবো না।

মিতুর কান্নার শব্দ শুনে রাকিবের মা নিজের রুম থেকে বের হয়ে ওদের কাছে আসে।এসে দেখে মিতু রাকিবের কোলে।

-কিরে,তুই মিতুকে এভাবে নিয়ে কোথায় যাচ্ছিস।আর মিতু কান্না করতেছে কেন?

রাকিব তার মাকে দেখে মিতুকে কোল থেকে নামিয়ে দেয়।মিতু তার শাশুড়িকে জড়িয়ে ধরে ন্যাকা কান্না করতে থাকে।

-কি হয়েছে? কাঁদছিস কেন?আমাকে বল কি হয়েছে?
-তোমার ছেলে কাল আমাকে বলেছে আজ আমাকে নিয়ে কুয়াকাটা যাবে।কিন্তু এখন যেতে চাইছে না।

-রাকিব,তুই সব সময় মেয়েটাকে এভাবে কাঁদাস কেন বলতো?
-আম্মু,আমিতো বলছি নিয়ে যাবো কয়দিন পর।
-না,কাল বলেছিল আজ নিয়ে যাবে।আর আমি আজকেই যাবো।
-আচ্ছা।আজকেই যাবি।এবার চোখ গুলি মুছে যা রেডি হয়ে নে।
-আম্মু তুমি তো সবটা শুনোই নি।আগে আমার কথাটা তো শুনো

-আর কোনো কথা না।বিয়ের পরে তো মেয়েটাকে নিয়ে কোথাও যাসনি।এখন যখন বলেছিস তাহলে যা ঘুরে আয়।ভালো লাগবে।এবার যা।দুজনেই রেডি হয়ে নে।

চলবে😍😍

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here