#আড়াল_কথা
#গুঞ্জন_চৈতি
#পর্ব_২৬
আড়াল মনোযোগ দিয়ে বিস্মিত হয়ে তার চাচার কথা শুনছিলো। হটাৎ ঘরের ভেতর বি’ক’ট শব্দ করে ওঠে। ঘর যেনো মাথার ওপর ভে’ঙে পড়লো বলে। সবাই আঁ’ত’কে ওঠে দরজার দিকে চেয়ে। প্রথম বারের মতো আবারও ঝং’কা’র করে ওঠে দরজায় গায়ে। এবার আর সগৌরবে দাড়িয়ে রইতে পারলো না দরজার কপাট জোড়া। খুলে পড়ে গেলো নিচে, শব্দ হলো তুমুল। দরজার কপাট দুটো ভেঙে নিচে পড়ে যেতেই দৃ’শ্য হলো চি’ন্তিত দু’খানা মুখ। শুদ্ধ আর আসিফ সাহেব দরজা বরাবর দাড়িয়ে, পেছনে আছে আশেপাশের দু তিনজন লোক। কৌতুহলী তাদের দৃষ্টি। বাপ ছেলে হুরমুরিয়ে ঘরে ঢুকে এলে আড়াল গিয়ে দুজনের সামনে দাড়ায়। শঙ্কিত তার মুখের আদোল। আসিফ সাহেব তার ভাগনীকে অ’ক্ষ’ত অবস্থায় দেখে বুক ভরা স্বস্তি নিয়ে দম ফেলেন। শুদ্ধ পরিবেশ বোঝার জন্য সবার মুখের ভঙ্গিমা খেয়াল করে। আবিষ্কার করে টুসুর অশ্রুছড়ানো মুখমণ্ডল। টুসুকে দেখে চরম পর্যায়ে অবাক হয় শুদ্ধ। এ ক’দিন কতো খোঁজ করা হলো মেয়েটার কিন্তু কোন হদিস মিললো না। শেষমেশ এখানে এভাবে দেখা মিললো। তার মানে শপিংমল থেকে দেখা সিসিটিভিতে যেই ওরনা মোড়ানো মেয়েটাকে দেখা গেলো সে টুসু ছিলো। তাই আড়াল কোন উচ্চবাচ্য না করে সিএনজিতে বসে গেছিলো। শুদ্ধ সাত্তারের দিকে তীর্যক দৃষ্টিতে তাকায়, যার জন্য এতো ভয় সে তো বিছানায় শুয়ে বিহ্বলিত দৃষ্টি ফেলে তাকিয়ে আছে। যেনো চাইতেই পারছে না চোখ মেলে। চোখ জোড়া বন্ধ হয়ে আসছে বারবার। পরিবেশটা কোনভাবেই বিপ’দ্যু’ক্ত মহল মনে হচ্ছে না। উল্টে সবার চোখেই অশ্রু খেলা করছে। এতোক্ষণ যা জেঁকে বসেছিলো শুদ্ধের মনে এখন সব ধোঁয়াশা হয়ে উড়ে গেলো। বি’প’দের আ’শ’ঙ্কা’য় এতোক্ষণ দম নিতে বড্ড ক’ষ্ট হচ্ছিলো তার, এবার তার অবসান হলো। কিন্তু আসলে হলো টা কি? ওদের এখানে এভাবে আসার মানে টা কি? শুদ্ধের মনের প্রশ্নগুলো শব্দ দিয়ে তুলে ধরার সুযোগ পেলো না তার আগেই আড়াল বলে ওঠলো,
‘আপনারা এখানে কিভাবে এলেন? খোঁজ পেলেন কি করে আমার? আমি এখানে স্বইচ্ছায় এসেছি কেউ জোর করেনি কিন্তু আমায়। শুদ্ধ এদিকে আসুন আপনি চাচাকে দেখুন না, চাচার খুব কষ্ট হচ্ছে। দেখুন না কিভাবে ব্লি’ডিং হচ্ছে। কিছুক্ষণ আগে একটা পেইন কিলার খেয়েছিলো, এখন বোধহয় ব্যাথা খানিক কমেছে কিন্তু ব্লি’ডিং তো হয়েই যাচ্ছে একটুও কমছে না। আপনি প্লিজ চাচাকে হসপিটালে নেওয়ার ব্যাবস্থা করুন।’
টুসু শুদ্ধের দিকে এগিয়ে এসে হাত জোর করে বলে,
‘প্লিজ বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে চলুন। বাবার খুব কষ্ট হচ্ছে, কেমন যেনো নেতিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। এতোক্ষণ তাও কথা বলছিলো এখন তো তাও বলছে না। বলেছিলাম আগে হাসপাতালে যেতে তারপর আড়ালের সাথে দেখা করা যাবে। আমার কথাই শুনলো না। আড়ালের সাথে কথা বলার জন্য একাই রওনা হয়েছিলো সিএনজি নিয়ে। আমি আলাদা সিএনজি নিয়ে গিয়েছিলাম আপনাদের বাড়ি পর্যন্ত। আপনার যা যা জানার আছে আর বলার আছে গাড়িতে বসে জেনে নেবেন এখন চলুন।’
টুসুর মুখে সাত্তারকে বাবা সম্বোধন শুনে শুদ্ধ বিস্মিত হয়। ভাবে ভুল শোনেনি তো? টুসু বোধহয় বুঝলো শুদ্ধের মনের অবস্থা তাই আবারও বলে ওঠলো,
‘আমি জানি আপনার মনে অনেক প্রশ্ন। এখন সময় নষ্ট না করে দয়া করে বাবাকে নিয়ে চলুন। আমি গাড়িতে বসে সব বলছি।’
শুদ্ধ তার বাবার সাহায্যে সাত্তারকে নিয়ে গাড়ির পিছনের সিটে শুয়িয়ে দেয়। টুসু তার বাবার মাথা নিজের কোলে উঠিয়ে নিয়ে বসে আর আড়াল বসে পায়ের কাছটাতে। শুদ্ধ গাড়ী স্টার্ট দিয়ে এগোতে থাকে হসপিটালের উদ্দেশ্যে। এতোক্ষণ আড়ালকে সাত্তারের বলা প্রতিটা কথা টুসু আবারও বলতে শুরু করে প্রথম থেকে। শুদ্ধ আর আসিফ সাহেব মন দিয়ে শোনে টুসুর সব কথা। আড়াল চুপচাপ জানালার দিকে ফিরে বসে আছে। ভেবে যাচ্ছে কিছু একটা গভীর ভাবে মগ্ন হয়ে। টুসু কথা শেষ করে কেঁদে ওঠে ঝমঝমিয়ে। শুদ্ধের কাছে জানতে চায় গতকাল রাতে কি হয়েছিলো। আড়ালকে আনতে যাবে করে সুস্থ অবস্থায় বেরোলো, সকালে ফিরলো র’ক্ত’মাখা ব্যান্ডেজ নিয়ে। শুদ্ধ তৎক্ষনাৎ উত্তর দিতে পারলো না। অপরাধ বোধ হলো মনে। খুলে বললো গতকাল রাতের ঘটনা। ক্ষমা চাইলো টুসুর কাছে। আড়াল ফিরে চাইলো শুদ্ধের দিকে, টুসুর হয়ে জবাব দিলো,
‘আপনি আপনার জায়গায় ঠিক ছিলেন। চাচাও চাচার জায়গায় ঠিক ছিলো। এসব আর আলোচনা না হোক।’
তখনই গাড়ি থেমে যায়, হাসপাতালে পৌঁছে গেছে তারা। সাত্তারকে নিয়ে যাওয়া হয় ভিতরে, তৎক্ষনাৎ চিকিৎসাও শুরু হয়। কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার জানায় খালি পেটে অতি মাত্রার ক্ষ’মতা’সমপন্ন ওষুধ খাওয়ার কারনে শরীর অ’স্বা’ভাবিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। ব্লি’ডিং ও থামানো যাচ্ছে না। শে’লা’ই ছুটে গিয়ে কান আবারও ঝুলে গেছে। আবারও অপারেশন করাতে হবে এক্ষুনি। দেরি হলে হয়তো ব্রেইনেও স’ম’স্যা দেখা দিতে পারে। যাবতীয় ফর্মালিটি শেষ করে শুরু হয় সাত্তার এর অপারেশন। চারজন মানুষ অধীর আকাঙ্খা নিয়ে বসে আছে সাত্তার এর সুস্থতার জন্য।
কিছুক্ষণ পর আড়াল উঠে যায় শুদ্ধের পাশ থেকে। হাসপাতাল থেকে বেড়িয়ে আসে রাস্তায়। শুদ্ধ ও পিছু পিছু এসে দাড়ায় আড়ালের পাশে। আড়াল পাশ ফিরে তাকায় না। শো শো করে চলা রাস্তার গাড়ী গুলোর দিকে চোখ রেখেই বলে ওঠে,
‘সালাউদ্দিন সাহেবকে এই অসুস্থ অবস্থায় নিশ্চয়ই জে’লে রাখা হয়নি। কোথায় আছেন উনি?’
শুদ্ধের মনে হলো আড়ালের গলা ভীষণ কাপছে। এমন একটা সময় এমন প্রশ্ন শুনে বেশ অবাকও হলো। তবে উত্তরটা এড়িয়ে গেলো না।
‘তোমার বাব.. মানে সালাউদ্দিন আহমেদ এর বি’রু’দ্ধে আমিনা বেগম বলেছিলো কোন এক বে’আ’ইনি কাজের সাথে নাকি সে জড়িত। ঠিক কি ধরনের বেআইনি কার্যকলাপ এর সাথে তিনি জড়িত তা ঠিক করে বলতে পারে নি। আমিনা বেগমের বড় ভাই জহির এসব সম্পর্কে মোটামোটি জানতো। সেই বুদ্ধি দিয়েছিলো তোমাকে, টুসুকে আর সালাউদ্দিন কে মে’রে ফেলতে। কিন্তু তাকে এখনো ধরা যায়নি সে এখনো পলাতক। খুব তাড়াতাড়িই ধরা হবে তাকে। পালিয়ে আর যাবে কোথায়? কিন্তু সালাউদ্দিন আহমেদ এর বে’আ’ইনি কার্যের সাথে সং’যু’ক্ততা নিয়ে, কোন প্রমাণ ছাড়া শুধুমাত্র আমিনা বেগমের কথার ওপর ভিত্তি করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়নি কেসটা। ওপর মহল থেকে ভীষণ চা’প সৃ’ষ্টি হয়েছিলো। তাই ওনার বি’রু’দ্ধে বে’আ’ইনি বিষয়ক কেসটাকে ক্লোজ করে দেওয়া হয়েছে। তবে ফুপির খু’নের সাথে তার স’ম্পৃ’ক্ত’তা নিয়ে পুলিশ অবিশ্বাস করতে পারেনি। কারণ তারা ফুপির শরীরে সালাউদ্দিন আহমেদ এর হাতের ছাপ এবং র’ক্ত পেয়েছিলো। প্রথমে ভেবেছিলো হয়তো ফুপিকে বাঁ’চা’নোর চেষ্টা করেছিলো বলে এমন হয়েছে। কিন্তু আমিনা বেগমের কথার ওপর ভিত্তি করে এখন নতুন করে এই বিষয়টাকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর তাছাড়াও এখন আমার হাতে যথেষ্ট প্রমাণ আছে ওনার বি’রু’দ্ধে। প্রমাণগুলো সাবমিট করলে ফুপির খু’নে’র সাথে তার স’ম্পৃ’ক্ত’তা ও মাদক সি’ন্ডি’কে’টের সাথে তার জড়িত থাকা নিশ্চিত করবে ও যথাযথ শা’স্তি পাবে ওই লোকটা।’
‘এখন কোথায় আছে?’
‘পুলিশের দায়িত্বে সরকারি হাসপাতালে রাখা হয়েছে। সেদিন বেশ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলো তাই তৎক্ষণাৎ ভর্তি করা হয়েছিলো।’
‘আমাকে সেখানে নিয়ে চলুন।’
শুদ্ধ পারলোনা জোর খাটিয়ে কিছু বলতে। আড়ালের কন্ঠে এক অদ্ভুত প্রবলতা শোনা গেলো। যা দমিয়ে দিলো শুদ্ধকে। ওখানে দাড়িয়ে থেকেই আসিফ সাহেবকে একটা টেক্সট করে দিয়ে রওয়ানা হলো আড়ালকে নিয়ে।
‘আমাদের বিয়ের কাবিনে মোহরানা কত ছিলো?’
শুদ্ধ থতমত হয় আচমকা এমন প্রশ্নে। বৈ’ক্ল’ব্য দৃষ্টিতে ঘার ঘুরিয়ে তাকায় আড়ালের দিকে। আড়াল বসে আছে নি’র্বি’কার হয়ে। দৃষ্টি তার সামন বরাবর। শুদ্ধ গলা খেঁ’কি’য়ে বলে ওঠে, ‘দশ লাখ’।
‘পরিশোধ করেছেন?’
শুদ্ধ এবার আরও এক ধাপ বেশি নাকাল হলো। যথাযথ উত্তর তার কাছে আছে। টাকা দেওয়াটাও কোন সমস্যা নয়। কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে এমন প্রশ্নগুলো বেশ ভাবাচ্ছে তাকে। বেশ নড়েচড়ে বসলো শুদ্ধ, কিছু একটার পূর্বাভাস পাচ্ছে সে।ভাবলো সরাসরি জিজ্ঞেস করবে কিন্তু করলো না। চিন্তা ভাবনা করে স্থির করলো আড়ালের কথার সোজা জবাব দিয়ে যাবে। দেখা যাক কি হয়।
‘না করিনি। পরিস্থিতি তেমন ছিলো না।’
‘আমার আজকেই দেনমোহর এর টাকা চাই। আপনার সামর্থ্য আছে বলেই নিশ্চয়ই এতোগুলো টাকা মোহরানা দিয়ে বিয়ে করেছেন। আপনাকে তো আর কেউ জোর করেনি এতো টাকা মোহরানা দিয়ে বিয়ে করতে। সম্পূর্ণ লাগবে না, এক লাখ হলেই যথেষ্ট। কতটা সময় পেলে যোগাড় করতে পারবেন?’
শুদ্ধ নিজের দূরকল্পনা বাদ দিয়ে উত্তর দেয়, ‘আধ ঘন্টা’।
‘আধঘন্টার মধ্যে লাগবে না, আজকের মধ্যে যেকোন সময় পেলেই হবে। এখন আপাতত হাসপাতালে চলুন।’
.
হাসপাতালে আসার পর আড়াল দূর থেকে এক পলক দেখে বাবা নামক অমা’নু’ষ’টাকে। কাছ ঘেঁষে না এক মুহুর্তের জন্যও। তারপর আশেপাশে ঘুড়ে দেখে কিছুক্ষণ। কয়েকজন নার্স এর সাথেও আগ বাড়িয়ে কথা বলে। প্রায় আধ ঘন্টা সময় কাটায় এদিক সেদিক করে। আধ ঘন্টা পর শুদ্ধকে নিয়ে ফিরে যায়, যেখানে তার চাচার অপারেশন হচ্ছে।
____________
রাতের আকাশ এর বুক দখল করে আছে শত সহস্র তারা। অথচ হাজারো তারাদের ভীরে একাই নজর কারছে অর্ধ চন্দ্রিমার মোহময়ী রুপ। কি শুভ্র তার রুপ। কোটি কোটি নজর ধরে রাখার জন্য এই একটা চাঁদই যথেষ্ট। তার কোন সহচরী প্রয়োজন হয় না। ঠিক তেমন সালাউদ্দিন আহমেদ ও একাই সবার জীবন ধ্বংস করে গেছে। সবার জীবনে তার কলুষিত ছাপ রেখেছে একাই। নিজের স্বার্থ সিদ্ধি করতে আপন পর বলতে কিছু মনে করে নি। সে এইটুকু শাস্তি প্রাপ্য নয়। আরও অনেক বড় শাস্তি প্যাপ্য সে।
শুদ্ধের ডাকে হুঁশ ফেরে আড়ালের। শুদ্ধ চিন্তিত কন্ঠে বলে ওঠে,
‘কি হয়েছে তোমার? পুরো বাড়ি খুঁজে এলাম তোমায় কোথাও পেলাম না। ছাঁদে এসে দেখি আকাশের দিকে অপলক তাকিয়ে আছো। কতগুলো ডাক দিলাম। উত্তরই দিলে না।’
‘বলুন কি বলবেন।’
‘তোমার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে এসেছিলাম। এই নাও, টাকা পুরোটাই আছে। তোমার যেভাবে খুশি খরচ করবে। প্লিজ হিসেব দিতে এসো না কখনো।’
আড়াল টাকাটা হাতে নিয়ে নেমে যায় নিচে। দাঁড়ায় না এক মুহুর্তও। টাকাটা নেওয়ার সময় আড়ালের নজর ঝুঁকে গেছিলো। শুদ্ধ খেয়াল করেছে সেটা। কিছুক্ষণ ছাদের মুক্ত বাতাসে দাড়িয়ে মনটাকে হালকা করে নিয়ে, নেমে যায় নিচে। নামতে নামতে কল করে রিয়াদ এর কাছে। সে এখন টুসুর সাথে হসপিটালে আছে। সাত্তার আহমেদ এখন বি’পদ’মুক্ত আছেন। কয়েকদিন এর ভেতর সুস্থ হয়ে যাবেন। বড় কোন ক্ষতি হয়নি তার। শুদ্ধ সিড়ির নিচে দাড়িয়ে কথা শেষ করে নিজের রুমের দিকে যায়। যাওয়ার পথে আড়ালের রুমে উকি দিয়ে দেখে যায় কিছু একটা লেখালেখি করছে আড়াল।আড়ালকে দেখে শুদ্ধ নিজের রুমে গিয়ে কিছু কাগজপত্র নিয়ে বসে, ঘাটাঘাটি করতে। ঘন্টাখানেক পড় আলো বেগম এসে শুদ্ধকে বলেন, আড়াল কে সারা বাড়িতে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। ছাঁদ থেকে শুরু করে প্রতিটা ওয়াশরুম পর্যন্ত খোঁজা হয়েছে কিন্তু কোথাও দেখা মেলেনি আড়ালের। খাবারের জন্য ডাকতে গেছিলেন। তখন দেখেন আড়াল রুমে নেই। শুদ্ধ তার মায়ের কথা শুনে হন্তদন্ত হয়ে বেড়িয়ে যায় আড়ালের খোজ করতে। আসিফ তার ভাগ্নির নিখোঁজ হওয়ার কথা শুনে পাগল প্রায় হয়ে যান। সবাই মিলে সারারাত খোজ করে সম্ভাব্য জায়গা গুলোতে।
শুদ্ধ আশেপাশে খোঁজ করে কিছু একটা মনে করে গাড়ি ঘোরায় হাসপাতালের দিকে। যেখানে আড়ালের বাবা ভর্তি রয়েছে। ভেতরে গিয়ে দেখে আড়ালের বাবা আর বেঁচে নেই তাকে পা থেকে মাথা অবধি ঢেকে নামানো হচ্ছে বেড থেকে। পাশে কয়েকজন নার্স, একজন ডাক্তার আর একজন কনস্টেবল রয়েছে। জিজ্ঞেস করলে জানা যায় হটাৎ করে কেমন হাসফাস করছিলো, তারপরেই বন্ধ হয়ে যায় হৃৎস্পন্দন। ডাক্তার বলছে ব্রেন স্ট্রোক করেছিলো। কিন্তু শুদ্ধর মন বলছে অন্যকিছু। মনটা বড্ড কু গাইছে তার। সব ঘটনা গুলো এক হয়ে ইঙ্গিত করছে কিছু একটা। শুদ্ধ কিছুক্ষণ ভেবেচিন্তে রওনা হয় আড়ালের মাকে যেইখানে রাখা হয়েছে সেখানে। সেখানে যাওয়ার পরেও ফলাফন শুন্য, কেউ কোথাও নেই। ফিরে আসার সময় দেখা হয় সেখানকার আঞ্চলিক নাইট গার্ড এর সাথে। যে রাতের বেলায় ঘুড়ে ঘুড়ে টহল দিয়ে থাকে আশেপাশে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় বারোটার দিকে একটা মেয়ে ক’ব’র’স্থা’নের দেয়ালের এপাশে দাড়িয়ে খুব কান্নাকাটি করছিলো। সে কাছে এসে দাঁড়াতেই মেয়েটা চলে যায়। শুদ্ধ নিজের ফোন বের করে আড়ালের একটা ছবি দেখায়। আড়ালকে অজ্ঞান অবস্থায় গাড়ি করে নিয়ে যাবার সময় তুলেছিলো এটা। ছবিটা দেখে নাইটগার্ড সহমত জানিয়ে বলে এই মেয়েটাই তখন কাদছিলো। সোজা গিয়ে ডানদিকের রাস্তা ধরে হেঁটে গেছে মেয়েটি। শুদ্ধ বুঝে যায় আড়াল ওদের বাড়ি গেছে। গাড়ী ঘুড়িয়ে রওয়ানা হয় আড়ালদের বাড়ির উদ্দেশ্যে। মনে মনে প্রার্থনা করে আড়াল যেনো ও বাড়িতেই থাকে। পথিমধ্যে আসিফ সাহেব ফোন করেন। আড়ালের রুমে একটা চিঠি পেয়েছেন তিনি। চিঠিটার ছবি তুলে পাঠিয়ে দেন শুদ্ধকে। শুদ্ধ পড়তে শুরু করে চিঠিটা..
#চলবে