গল্পঃ:-শান্তির খোঁজে
পর্ব:-১০
Writer:-Hassab bin Ahmed.
আমি বাসায় চলে যাওয়ার জন্য রেডি। হুমাইরা মন খারাপ করে বসে আছে। আমি হুমাইরার কাছে গিয়ে হুমাইরার ঠোঁট আর আমার ঠোঁট এক করে দিয়ে 🙈 প্রায় ৫ মিনিট পর ছেড়ে দিলাম । হুমাইরা আমার দিকে চোক বড় বড় করে চেয়ে আছে আর জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে । ও আসলে কল্পনাও করতে পারে নি, যে আমি এই রকম কিছু একটা করবো।
যাওয়ার সময় সবাই আমাকে বিদায় জানাতে এসেছিল কিন্তু হুমাইরা আসে নি। ভাবলাম একটু দেখে যাই কিন্তু ও এলো না। তারপর গাড়িতে গিয়ে বসে হঠাৎ চোখ পড়লো ছাঁদে কে জানো দাঁড়িয়ে আছে। হুমম ঐটাই আমার মহারানী।
বাসায় ফিরলাম। বিছানায় বসে আছি এমন সময় নাছির কল করলো,
আমি:- আসসালামু আলাইকুম।
নাছির:- ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ। শুন আমি কলেজে কথা বলেছি কোনো অসুবিধা নেই। কাল থেকে ক্লাস নিতে আসবি।
আমি:- আচ্ছা ঠিক আছে ।
( এশার নামাজ আদায় করে হুমাইরা কে কল দিলাম)
হুমাইরা:- আসসালামু আলাইকুম।
আমি:- ওয়ালাইকুম আসসালাম। কি করো?
হুমাইরা:- আপনাকে বলবো না 🤐। আপনি খুব খারাপ ☹️।
আমি:- আমি আবার কি করলাম?🙄
হুমাইরা:- কেনো যাওয়ার সময় কি করলেন । আর একটু থাকলে আমার মৃত্যুও হতে পারতো😒
আমি:- আরে কিছু হবে না আমি আছি না 😆।
হুমাইরা:- হুম হয়েছে 🙄 😒 😒আপনি কি করেন?
আমি:- আমার মহারানীর সঙ্গে কথা বলি।
হুমাইরা:- আজকে আমার মনটা খুব খারাপ ☹️.
আমি:- কেনো?
হুমাইরা:- আমি কখোনো কল্পনাও করি নাই যে আমার বান্ধবীরা এতো খারাপ,অভদ্র, ছোটো লোক।
আমি:- ওকে গালি দিও না।
হুমাইরা:- কেনো?
আমি:- ইসলাম ধর্মে কাউকে গালি দেওয়া বহুত বড় পাপ। এমন কি অমুসলিম দের গালি দেওয়াও বহুত বড় পাপ।
হুমাইরা:- আচ্ছা । তাহলে বহুত জায়গায় দেখা যায় যে একজন অমুসলিম ইসলাম নিয়ে কিছু বললে তাকে মুসলিমরা বহুত খারাপ খারাপ ভাষায় গালি দেয়। এটা কি ঠিক ?
আমি:- না এটা বহুত বড় অন্যায়।দুর্ভাগ্যবশতঃ ফেসবুক বা সামজিক যোগাযোগে যেটা অহরহ দেখা যায় যে, কোনো নাস্তিক বা অমুসলিম ইসলাম বিরোধী কথা বা যে কোনো একটা লিখা দিলে, আর সেখানে শত শত মুসলমানরা গালির পর গালি দিয়ে যান। এছাড়াও মাঝে মাঝে দেখা যায়, কোনো কারণ ছাড়াই একজন মুসলমান অন্য আরেক জন অমুসলমান কে গালি-গালাজ করছে। ইসলাম ধর্মে কোনো মানুষকে গালি দেওয়া বা গালি-গালাজ করা যায়েজ নয়; বরং নিষিদ্ধ এবং হারাম।
ধরে নিলাম অন্য ধর্মের কেউ আপনাকে গালি দিয়েছে তাই আপনিও তাকে গালি দিলেন তাহলে তার আর আপনার মধ্যে পার্থক্য কি?
তোবে কি আমরা ইসলামের সৌন্দর্য ভুলে গেছি । কোরআন হাদিস থেকে আমরা কয়টা পয়েন্ট দেখে নেই।
১.হে মু’মিনগণ! কোন পুরুষ যেন অপর কোন পুরুষকে উপহাস না করে; কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে এবং কোন মহিলা অপর কোন মহিলাকেও যেন উপহাস না করে; কেননা যাকে উপহাস করা হয় সে উপহাসকারিনী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করনা এবং তোমরা একে অপরকে মন্দ নামে ডেকনা। ( সূরা হুজরাত আয়াত নং ১১ )
২.যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদের ইবাদাত (পূজা-অর্চনা) করে তোমরা তাদেরকে গালাগালি করনা, তাহলে তারা অজ্ঞতা বশত আল্লাহকেই গালাগালি দিতে শুরু করবে।( সূরা আল আনআম, আয়াতঃ ১০৮ )
৩. আবদুল্লাহ ইব্নু ‘আম্র ( রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হচ্ছে খাঁটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায়। ১. আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে;
২. কথা বললে মিথ্যা বলে;
৩. অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; এবং
৪. বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীলভাবে গালাগালি করে।
শু‘বা আ‘মাশ ( রহঃ) থেকে হাদীস বর্ণনায় সুফিয়ান ( রহঃ)-এর অনুসরণ করেছেন।
(২৪৫৯,৩১৭৮; মুসলিম ১/২৫ হাঃ ৫৮, আহমাদ ৬৭৮২) ( আধুনিক প্রকাশনীঃ ৩৩, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৩৩ )
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৪
৪.ইয়াদ ইবনে হিমার ( রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! এক ব্যক্তি আমাকে গালাগালি করে। নবী ( সাঃ) বলেনঃ যারা একে অপরকে গালি দেয় তারা দুইটি শয়তান, তারা বাজে কথা বলে এবং তারা মিথ্যুক (ইবনে হিব্বান)।
আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং ৪২৮
৫.আর রহমানের বান্দা তারাই যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে। { সূরা আল ফুরকান, আয়াতঃ৬৩ }
আশা করছি বুঝতে পেরেছো গালি দেয়া ইসলাম ধর্মে কতো বড় অপরাধ।
হুমাইরা:- হুম। আল্লাহ আমাকে মাফ করো 😣 আমি কখনো কাউকে গালি দিবো না ইনশাআল্লাহ।
আমি:- হুম 🤗
হুমাইরা :- বল্লেন না তো কি করেন?
আমি:- কথা বলি
হুমাইরা:- কার সাথে?
আমি :- একটা মেয়ের সাথে।
হুমাইরা :- কে সে?
আমি:- তুমি ছাড়া আর কে 🙂
হুমাইরা :- হি হি হি 😁 😋
আমি:- এখন বলো নামাজ পড়ছো?
হুমাইরা :- না
আমি:- কেনো?
হুমাইরা:- ভালো লাগে নাই 🙄
আমি :- বাই ভালো থাকো।
হুমাইরা :- ওই
আমি :- . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
হুমাইরা :- ওই
আমি :- . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . .
কিছুক্ষণ পর–
হুমাইরা:- আসসালামুয়ালাইকুম
আমি :- ওয়ালাইকুম আসসালাম
হুমাইরা :- নামাজ পড়ছি কিন্তু 🙄
আমি :- আগে পড়লে সমস্যাটা কি হত?
হুমাইরা:- _ আপনার বকা শুনতে পারতাম না।
আমি:- তুমি একটা পাগলি . . . . . . . .
হুমাইরা :- হুমম আপনারি তো। জানেন কালকে ছোট মামার বিয়ে।
আমি :- তো?? 🙄
হুমাইরা:- আমি যাব?
আমি :- যাওয়াটা কি অনেক দরকার?
হুমাইরা :- হুমমম
আমি :- আমার থেকে বেশি?
হুমাইরা :- না
আমি :- তাহলে যেতে হবে না।
হুমাইরা :- ঠিক আছে . . 😞
নিশ্চুপ
আমি :- এই যে
হুমাইরা :-………..
আমি :- শুনতে পারছো না?
হুমাইরা :- হুমম বলেন
আমি :- মন খারাপ??
হুমাইরা:- না
আমি :- আচ্ছা ঠিক আছে বিয়েতে যাইও
হুমাইরা :- না বিয়ে খাওয়ার জন্য আপনাকে হারাতে পারবো না।
আমি :- পাগলি হারাতে হবে না আমি পারমিশন দিচ্ছি।
হুমাইরা :- সত্যি!!
আমি :- হা তবে কিছু শর্ত আছে . . . . .
হুমাইরা:- কি শর্ত বলেন? 🙂
আমি :- শাড়ি পড়া চলবে না, সাজতে
পারবে না, বোরকা হিজাব পড়ে থাকতে হবে পারবে?
হুমাইরা :- আপনার জন্য সব পারবো
আমি:- হুমম। তাহলে কাল কলেজে যাবে না?
হুমাইরা:- যাবো তো । কলেজ থেকে এসে বিয়ে বাড়ীতে যাবো ইনশাআল্লাহ।
আমি:- ওওও আচ্ছা ঠিক আছে ।
হুমাইরা:- এখন তাহলে ঘুমাই।
আমি:- ওগো প্রিয়তোমা 😉
হুমাইরা:- কি ?
আমি:- একটি আদর দাও না 😚
হুমাইরা:- হুহ্ 😏 পারবো না আমি 🙄
আমি:- কেনো?
হুমাইরা:- যাওয়ার সময় কি করে গেছেন মনে নাই। 🙄
আমি:- মনে তো আছেই। ঐ জন্য ই তো লোভ সামলাতে পারছি না 😂 দাও না একটা।
হুমাইরা:- এখন না আবার আমাদের যখন দেখা হবে তখন দিবো আপনার যত ইচ্ছে 🙂
আমি:- সত্যি তো।
হুমাইরা:- হুম 🤗 তিন সত্যি।
আমি:- তুমি ভাবছো যে আমার আর তোমার সাথে কিছুদিন দেখা হবে না তাই তো 😎 কিন্তু মনে রেখো জীবনে এমন কিছু সময় আসে যা আমরা কখনো কল্পনাও করি না।
হুমাইরা:- হুম একদম ঠিক আপনি তো ব্যাস্ত মানুষ। আপনি তো আর আমাদের বাড়িতে আসবেন না 🙄 তাই আমাদের দেখা হয়ার সম্ভবনা টা খুবই কম 🙂
আমি:- তোমার কলেজে গিয়েও তো দেখা করতে পারি?
হুমাইরা:- আপনাকে কখনো ঢুকতেই দিবে না। আমাদের কলেজে বাইরের লোক ঢুকতে দেয় না 😎 😁
আমি:- তাহলে আর কি করার 😌 থাকো তাহলে । কিন্তু আমার মন বলেছে আমাদের খুব তাড়াতাড়ি দেখা হবে 😎
হুমায়রা:- সেটা তো পরে দেখা যাবে 🙄 😒 😒
( হুমায়রার সাথে কথা শেষ করে ঘুমিয়ে গেলাম। হুমাইরা তো কল্পনাও করতে পারছে না পরের দিন তার সঙ্গে কি হতে চলেছে 🤭 🤭 🤭 )
চলবে. . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . ..
ইনশাআল্লাহ
. . . . জাযাকুমুল্লহু খইরন . . . .