#গল্প_শান্তির_খোঁজে
পর্ব:-০৪
Writer:-Hassab bin Ahmed.
আমি:- অস্থির হয়ো না। বলছি । তাঁর আগে তুমি বলো এই হঠাৎ করে আমাকে ভালো বেসে ফেলেছো কারণ কি?
হুমাইরা:- এই ৪ দিন আপনি আমার এতো কেয়ার নিয়েছেন তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আপনি আসলেই অনেক ভালো। আর বিয়ের পর একজন মেয়ের কাছে তার স্বামী সব। আর এই কস্ট দেয়ার জন্য আমি দুঃখিত । আমি আপনার পা ধরে মাফ চাচ্ছি আপনি আমাকে ফিরিয়ে দিবেন না.
(বলতে বলতে আমার পা ধরে ফেলেছে আর কেঁদেই যাচ্ছে।)
আমি: আরে কি করো । ( আমিও ওকে তুলে বুকে জড়িয়ে নিলাম)
কিছু সময় নিরবোতা …….
হুমাইরা:- তাহলে আমাকে ধরা অন্যায় বলেছিলেন কেনো?( কেঁদে কেঁদে)
আমি:- তাই এতো কাঁদতে হয় আসলে আমি তো তোমাকে তোমার মোহরানা আদায় করি নি এখন পর্যন্ত তাই না ☹️?
হুমাইরা :- কেনো মোহরানা আদায় না করলে স্ত্রী কে কি ধরা যাবে না 🤨? আর মোহরানা তো ডিভোর্স হয়ে গেলে দিতে হয়? তাঁর মানে কি আপনি আমাকে মাফ করেন নাই? ( আবার কন্না আরম্ভো করলো)
আমি:- আরে এতো কাঁদো কেনো?😨 জি এইটা ঠিক মোহরানা আদায় না করলে স্ত্রী কে স্পর্শ করা যায় না । আর এই কথা কে বলেছে আপনাকে ডিভোর্স হলে মহরানা দিতে হবে? আমি কি তোমাকে বিয়ে করেছি ডিভোর্স দেয়ার জন্য?😡
পবিত্র কুরআনে সূরা নিসা আয়াত নং -০৪ এ বলা হয়েছে:- “আর সন্তুষ্ট চিত্তে নারীদেরকে তাদের দেয় মোহর প্রদান কর, কিন্তু যদি তারা স্বেচ্ছায় কিয়দংশ প্রদান করে তাহলে সঠিক বিবেচনা মত তৃপ্তির সাথে ভোগ কর।”
আর আপনাকে মাফ করবো না কেনো আপনাকে ঘিরেই তো আমার সব স্বপ্ন।
হুমাইরা:- তার মানে বিয়ে করার পরেও মোহরানা আদায় না করলে স্ত্রী কে স্পর্শ করা যায় না তাহলে যারা প্রেম করে আর বলে পবিত্র প্রেম তাদের কি অবস্থা হবে? আর এই আয়াত মতে আমি মাফ করে দিতে পারি তাইনা?
আমি:- জি বিয়ের আগে প্রেম হারাম। যারা এটাকে পবিত্র প্রেম বলে তারা আসলে কুরআন হাদীস জানে না। আর তুমি নিজের ইচ্ছায় মোহরানা মাফ করে দিতে পারো । কিন্তু তোমাকে কেউ জোর করতে পারবেনা। আর আপনার মাফ করে দিতে হবে না কারণ আমার সামর্থ্য অনুযায়ী আপনার মোহরানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এটা তোমার অধিকার।
হুমাইরা:- আচ্ছা ঠিক আছে । রাত কিন্তু অনেক হয়েছে আবার আপনি তো ফজরে উঠবেন?
আমি:- জি । আর শুনো।
হুমাইরা:-কি
আমি:- আই লাভ ইউ ♥️
হুমাইরা লজ্জা পেয়ে এক দৌড়ে রুমে চলে গেল।
আর আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি কি থেকে কি হয়ে গেল কিছু সময় আগেই তো আমার মনটা খারাপ ছিল আর এখন মনে হচ্ছে আমি পৃথিবীর সুখী মানুষ।
Dr. Gary Chapman বলেছিলেন বেশির ভাগ সম্পর্কৈ কিন্তু ভালোবাসার অভাবে নয় দুজন দুজনের ভালোবাসা অনুভব না করার কারণে ভেঙে যায়। দুজন মানুষের সম্পর্ক কখনোই একি রকম থেকে না। দিন দিন হয় খারাপ হতে থাকে আর না হয় ভালো হতে থাকে। যদি কোনো মানুষের পৃথিবীর সব কিছু থাকে সুধু তার প্রিয়জনদের ভালোবাসা টুকু নাথাকে তাহলে সে এই পৃথিবীর দুখি মানুষ দের একজন। কিছু সময় আগেই আমারো মনে হয়েছিল এই দুখি মানুষের ভিতর আমিও একজন। কিন্তু না আল্লাহর রহমতে আমি মনে হয় এখন সুখী মানুষ।
। আমিও রুমে গিয়ে দেখি হুমাইরা খাটের এক পাশে মাথা নিচু করে বসে আছে । আমি ডয়ার থেকে একটা বান্ডিল বের করে হুমাইরার মুখের কাছে গিয়ে বসলাম
আমি:- মহারানী আপনার আমানত 🤗।
হুমাইরা:- আমার আমানত মানে? আর আপনি আমাকে মহারানী বলেছেন কেনো?
আমি:- আমানত মানে মোহরানার টাকা পরিশোধ করলাম. আর আপনি তো আমার মহারানী. আর যিহেত মোহরানা আদায় করলাম তাহলে এখন কিন্তু …….
হুমাইরা:- আপনি না…. ( লজ্জা পেয়ে) 😌 আচ্ছা ঠিক আছে আমি আপনার মহারানী ঠিক আছে। আর এতো রাতে এতোগুলো টাকা কোথায় পেলেন?
আমি:- টাকা তো আগেই রেডি করে রেখেছিলাম ভাবছিলাম বাসর রাতে আমি নিজের হাতে দিবো . তো আমার বাসার রাতে আমার বোউএর যে আচরণ দেখলাম . কি আর বলি….😕
হুমাইরা:- আপনি আমাকে এখনো মাফ করেন নাই তাই না ☹️ আমি আসলেই দুঃখিত দয়া করে আর রাগ করে থাকবেন না।
আমি :- আরে না আমি ঠিক আছি। টাকা গুলো গুনে দেখেন?
হুমায়রা:- কেনো গুনে দেখবো? আপনি তো কম দিবেন না । আর দিলেও কি হবে 🤔?
আমি:— তুমি কি জানো টাকা পয়সা হিসাব করে দেয়া নেয়া সুন্নত । কারণ এতে দুজন দুজনের কাছে আসস্থ থাকে। কারো মনে কোন সন্দেহ থাকবেনা ।
যদি ভুল করে হিসাবে গন্ডগোল থেকে যায়। আর কেউ নিজ দায়িত্বে হিসাব মিলিয়ে নিলো না। তবে দুজনের মনে সন্দেশ থাকবে। একজন ভাবে ও মিথ্যা বলছে আরেকজন ভাববে ও মিথ্যা বলছে। এজন্য লেনদেনে হিসাব মিলিয়ে নেয়া সুন্নত ।
হুমায়রা:- আচ্ছা ঠিক আছে।
হিসাব করার পর
হুমায়রা:- এক টাকাও কম দেন নাই একে বারে ঠিক আছে। আমি এতো টাকা দিয়ে কি করবো ? আমি আপনাকে দিলাম আপনার যা ইচ্ছে তাই করেন.
আমি:- আরে কি বলেন আপনার টাকা আমি খরচ করবো কেনো?
হুমায়রা:- আপনি তো বলেন আমি আপনারা সব । তাহলে আমাকে এইটুকু সাহায্য করবেন না ? অন্তত বলেন কি করলে ভালো হবে?😔
আমি:- অবশ্যই মহারানী কেনো বলবো না? দেখো আমার মতে এই টাকাটা তোমার বাবা মা কে দিতে পারো কারণ ১. তোমার যা কিছু প্রয়োজন হবে তা তো আমি দিবোই । ২. তুমি কল্পনাও করতে পারবে ন必利勁
া যে তোমাকে এতো বড় করতে কোতো কস্ট তারা করেছে । তাঁরা না খেয়ে তোমাকে খেতে দিয়েছে। আমার এখনো মনে পড়ে যদি আমাদের বাড়িতে ৩ টা মাছ থাকতো তাহলে আব্বু আম্মু খেতো না আমাকেই তিন বার খেতে দিতো😥।
তাই আমি বলবো এই টাকা গুলো বাবা মা কে দিতে পারো। আর তুমি যদি অন্য কিছু করতে চাও করতে পারো।
হুমায়রা:- আপনি জানেন আপনি এই পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো স্বামী. ( খুশি হয়ে).
আমি:- আচ্ছা থাক ঘুমাই এখন। ( বলে সোফায় শুইয়ে পরলাম).
হুমায়রা:- শুনছেন?😔
আমি:- জি বলুন?
হুমায়রা:- আসলে আমার একা ঘুমাতে অসুবিধা হয় । আর খাট টা তো বড়ই আছে তাই খাটেই ঘুমাতে পারেন আর মাঝে কোল বালিশ নিয়ে দিয়েছে?
খাটে ঘুমানোর কথা শুনে তো আমি খুশি তে আত্মহারা হয়ে গেছিলাম আবার কোল বালিশ এর কথা শুনে তো মনটা খারাপ হয়ে গেল।
আমি:- আচ্ছা ঠিক আছে।( খাটে শুয়ে শুয়ে ভাবছি)
আমার খাট আর আজ আমাকেই অন্য জনের কথা মতো শুতে হয়। তাঁর পরেও পাসে বৌউ শুয়ে আছে মাঝে আছে ভারত পাকিস্তানের বোডার। আমার থেকে অভাগা মানুষ মনে হয় পৃথিবীতে নাই 😭 । তাঁর পর কাল থেকে কলেজে যেতে হবে? শুয়ে আছি কিন্তু কেউ কিছু বলছি না তাই আমি বললাম
আমি :- আচ্ছা মেডাম এই বোডার কতো দিন পর্জন্ত চলবে?
হুমায়রা:- জানিনা ঘুমান তারাতারি. ( লজ্জা পেয়ে)
আমিও আর কথা বাড়ালাম না ঘুমিয়ে গেলাম
ফজরের আযানে ঘুম ভেংগে গেলে দেখি হুমাইরা আমার বুকের উপর শুয়ে আছে । কোল বালিশ কোথায় আছে আপাতত বলতে পারছি না 😂। আমি শুয়ে শুয়ে বললাম
আমি:- ঘুম কি রকম হলো?
এই কথা বলার পর হুমাইরা আমার দিকে রাগী ভাবে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে এখনি কেঁদে দিবে আমি অবাক হঠাৎ আবার কি হলো.
আমি:- কি হয়েছে ওভাবে তাকিয়ে আছো কেন ?
আমার বুকের উপর শুয়ে শুয়েই বললো।
হুমাইরা:- আপনি এতো খারাপ? বলেই কেঁদে দিলো☹️ 😭😭
আমি তো চিন্তায় পড়ে গেলাম । আমি আবার কি করলাম তাও আবার আমার বুকে শুয়ে আমাকেই খারাপ বলছে ?🤔😕
চলবে………..