“আমি তোমাকে ভালোবাসি, প্রিয়া।”

নতজানু হয়ে অনামিকা আঙুলের আংটি দেখছিলাম। যুবকের কন্ঠস্বরে ভালোবাসি প্রিয়া বাক্য শুনে তাকালাম। সুন্দর, সুদর্শন, বলিষ্ঠ পুরুষ দাঁড়িয়ে। ভাবভঙ্গি স্বাভাবিক। অন্তরে অনুতপ্তের কোন চিন্হ নেই। একজন অপরিচিত রমণীকে বাক্যটি বলার পর এদিক সেদিক পর্যবেক্ষণ করছে। অপেক্ষা করছে যেন কারোর। রাগ দমনে প্রয়াস করেও ব্যর্থ হলাম। যুবকটির উদ্দেশ্যে কঠোর কন্ঠস্বরে বলতে শুরু করলাম,
” মাথায় কী সমস্যা আছে? একজন অপরিচিত রমণীকে হেনস্থা করতে লজ্জা করে না? দেখতে তো ভদ্র মনে হচ্ছে কিন্তু আচরণগত ভাবে নির্লজ্জ মনে হচ্ছে। একা পথ চলাচলের অভ্যাস আছে আমার। শহরের অলি গলি বেশ পরিচিত। আত্মরক্ষার কৌশল শিক্ষা আছে।”

চারপাশে মানুষজন জড়ো হয়ে আসছে। গুনগুন মুখোকথা শোনা যাচ্ছে। হতভম্ব যুবক আশেপাশে পর্যবেক্ষণ করে কঠিন দৃষ্টিপাত করে নিজ অবস্থান থেকে সরে দাঁড়াল। আঁখি পল্লবের সামনে দৃশ্যমান হলো আরেকজন যুবকের হাস্যজ্বল মুখশ্রী যার নজর আমার দিকে। এতক্ষণ ভুলক্রমে যাকে বকে গেলাম সে মূলত নিরপরাধ। অপরাধবোধ ছেয়ে গেছে মনে। বকা খাওয়া যুবক কটমট চোখে বলল,

” ভদ্র ঘরের সন্তান বলেই আজ কিছু বললাম না। অদেখা কিছুই বিশ্বাস করতে নেই। স্বচক্ষে দেখা বস্তুও অনেক সময় মিথ্যা হয়।”

যুবকটি প্রস্থান করল।
বর্তমানে আমি আত্মরক্ষার চেয়ে অনেক চিন্তিত।
আরোহণকৃত গাড়িতে সেই যুবক বসে আছে যে ভালোবাসি প্রিয়া বলছিল। যা শুনে অন্য জগতে চলে গিয়েছিলাম আমি। এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। আমি সিদরাতুল মুনতাহা আরাত। পৃথিবীর সকল বিষন্নতা ঘিরে ধরেছে আমাকে। আমার নিকট মনে হচ্ছে এবার সকল বিষাদের অবসান ঘটবে। পরিশেষে সুখ আসবে জীবনে। আর কিছু সময়ের ব্যবধানে পাড়ি জমাবে অচীন দেশে। নিয়তি আদৌও কী তা চায়!

” কিছু বলছো না কেন প্রিয়া?”

পশ্চাতে যুবকের কথায় প্রশস্ত করার প্রয়াশ করলাম। বড়োদের শ্রদ্ধা নিবেদনের উপদেশ পেয়েছি ছোট বেলা থেকে। বিনয়ী হয়ে প্রত্যুওর করলাম,

” আমাকে বলছেন?”

” তুমি ছাড়া আর কে আছে এখানে, প্রিয়া!”

বাহিরের দেশের ন্যায় আমাদের দেশও এখন উন্নত। শহরের জীবন হাসপাতালে (ছদ্মনাম)মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তাঁদের আলাদা ব্যাজ রয়েছে যা প্রতিটি রোগীর বক্ষঃস্থলের বাম পাশে চিন্হিত করা থাকে। সময় সংকীর্ণ। সঠিক সময়ে পৌঁছাতে হবে গন্তব্যে। মানবতার নিকটে পরাজিত হচ্ছে মন! নিয়তির নিকট সহায় হয়ে যুবকটির দায়িত্ব নিলাম। গাড়ির ড্রাইভারকে বললাম হাসপাতালের দিকে অগ্রসর হতে।
” আপনার পরিজনকে প্রিয়া বলতেন বুঝি?”

” কি বলছ প্রিয়া, তুমিই আমার প্রিয়া। প্রিয়জন, আপনজন, ভালোবাসা।”

যুবকের চমৎকার কথা শুনে প্রশান্তি পাচ্ছি খুব। প্রিয়াকে অধিক ভালোবাসার পরিণাম হয়তো এমন! ক্ষনে ক্ষনে অনুধাবন করছি। হাতের অনামিকা আঙ্গুলের আংটির উপর হাত বুলিয়ে নিলাম। অদেখা মানুষটার আমানত স্বরূপ নিজেকে আখ্যায়িত করলাম।

ভালোবাসার শেষ পরিণাম সুখ কিংবা দুঃখের হয়।
যে পায় পূর্ণতা পায়, ভেসে যায় ভালোবাসার গভীরে।

——-
পাঁচতলা বিশিষ্ট ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে আছে তিনজন বন্ধু। সকলের মুখশ্রীতে বিরক্তিকর ছাপ বিদ্যমান। মালবাহী ট্রাক পর পর দুইটা দাঁড়িয়ে আছে ভবনটির সামনে। মূলত তিনজন বন্ধুদের মালপত্র আছে ট্রাকে। সকলে অপেক্ষা করছে ভবনটির মালিকের জন্য। ভবনটির মালিক, বিশিষ্ট পান ব্যবসায়ী রফিক সাহেবের। মাথায় ছাতা মেলে রফিক সাহেব এগিয়ে আসেন। এক পা ভাঙা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলাচল করেন।

” এই লোকের এত বড়ো বাসা? আকিল, তোর চিনতে অসুবিধে হচ্ছে না তো!”

রাব্বির কথায় কেউ কোন প্রত্যুত্তর করল না।
তিনজন বন্ধুদের মধ্যে আকিল এবং রিফাত বাসা ঠিক করে গিয়েছে। আজ বাড়ির মালিকের বেশ দেখে অবাক হচ্ছে সকলে। রহিম আজাদ পান খেয়ে ঠোঁট লাল করে এসে দাঁড়ায় তিনজন ছেলের সামনে। দাঁতের আগায় চুন ভরে বলে,

” আগের ভাড়াটিয়া ফ্ল্যাট ছাড়বে না। তোমরা অন্য বাড়ি দেখো। টাকা ফেরত দিচ্ছি।”

প্রিয়ানের মাথা গরম। কাঠফাটা রোদে দণ্ডায়মান এক ঘন্টা যাবত। ফ্ল্যাট ছাড়বে না মানে কী? গরমে ভিজবে নাকি সবাই? নিবীরে এসে ভয়ংকর দৃষ্টি নিক্ষেপ করল রফিক সাহেবের দিকে।

” মগের মুলুক পেয়েছেন? আমরা কী এখন ভিখারির মত রাস্তায় ঘুরে বেড়াবো? আমরা টাকা চাই না, ফ্ল্যাট চাই। ঐ ফ্ল্যাট খালি না হলে অন্য ফ্ল্যাট দিন।”

হাঁটুর বয়সী যুবকের অগ্নিরুপ কটাক্ষপাত করা দেখে ভয় পেলেন রহিম সাহেব। অনুভব করলেন ললাট বেয়ে গড়িয়ে পড়া ঘাম ঝড়ার। পানের থুথু মাটিতে ফেলার উদ্যোগ নিয়েও গলাধ:করণ করে নিলেন আড়ষ্টে। মুঠোফোন বের করে কাউকে কল লাগিয়ে দূরে সরে দাঁড়ালেন।

” কাজ হয়ে গেছে বাবারা। তোমরা যেই ফ্ল্যাট নিয়েছিলে, সেই ফ্ল্যাটের অপরপাশের ফ্ল্যাট খালি কিন্তু বড়ো।”

রহিম সাহেব আরো কিছু বলার জন্য উদ্যোগ নিলে প্রিয়ান মাঝপথে থামিয়ে দেয়। রহিম সাহেবের দিকে হাত পেতে চাবি চেয়ে নেয়।

” ভবিষ্যতে ভাড়াটিয়াদের সাথে দুই নাম্বারি করলে আপনার খবর আছে পান ওয়ালা আঙ্কেল।”

প্রিয়ান চলে গেল ভবনের অভ্যন্তরে সাথে দুই বন্ধুরাও। পান ওয়ালা আঙ্কেল অর্থাৎ রহিম সাহেব টিস্যু দিয়ে ঠোঁট মুছে নিলেন। টিস্যুতে পানের লাল রং দেখে ভাবনার পড়ে গেলেন কীভাবে পান খাওয়া ছাড়বে।
——–

আপন যাকে ভাবো তুমি সেই হয় পর! অচেনা হয়ে রয়ে যাবে সর্বদা তুমি, মুছে যাবে সংশয়।

” জাম্বু, আমার ওড়নাটা নিয়ে আয় তো?”

কলিং বেলের আওয়াজে মাথা ফেটে যাচ্ছে। ভন ভন করে ঘুরছে সব। বিদেশে চলে গেলেই যেন ভালো হতো। অন্তত ঐ রহিম চাচার সামনে পড়তে হতো না। নিশ্চিত এখন রহিম চাচা এসেছেন ফ্ল্যাট ছাড়তে বলতে! কিন্তু আমি তো যাবো না কোথাও। অগ্রিম ভাড়ার টাকা ফেরত পাইনি তাহলে যাবো কোন দুঃখে! জাম্বু, অমার পোষা কুকুর। আমার কলিজা আমার আত্মা। এই কলিজাকে রেখে চলে যাচ্ছিলাম বিদেশে। এটা কোন কথা! সেই যুবককে হাসপাতালে রেখে টিকিট ছিড়ে ফেলি। টিকিটের দাম অনেক ছিলো কিন্তু তাতে কী? বাঁচার মাধ্যম খুঁজতে হবে। মন ভরে নিশ্বাস নিতে হবে এবং ত্যাগ করতে হবে। বান্ধবী রাহার কাছ থেকে জাম্বুকে নিয়ে আসি। রহিম চাচাকে বলে দেই ফ্ল্যাট ছাড়ব না। এজন্যই হয়তো রহিম চাচা এসেছেন।

ওড়না কামড়ে মাথা কাৎ করে জাম্বু তাকিয়ে আছে। দেখতে শাহজাদা লাগছে। ওড়না পেঁচিয়ে দরজা খুলে দিলাম। রহিম চাচার পরিবর্তে একজন চিকন, রোগা যুবককে দেখে ভ্রু কুঁচকালাম। আটত্রিশ দাঁত বের করে যুবক হেসে সালাম জানিয়ে বলল, ” আসসালামু আলাইকুম আপু। আমি আপনার নতুন প্রতিবেশী। ঝাড়ু হবে?”

নতুন প্রতিবেশীর আবদার না করা যায় না। জাম্বুর দিকে তাকাতেই বুঝে গেলো ঝাড়ু লাগবে। রোগা পাতলা যুবকের দিকে তাকিয়ে কৃত্রিম হাসলাম। যুবকটিও বিনিময়ে বোকা হাসি উপহার দিলো। শলার ঝাড়ু দাঁতে কামড়ে দরজার সামনে এনে রেখে জিহ্বা বের করে নিশ্বাস ত্যাগ করছে জাম্বু। ঝাড়ুতে জাম্বুর মুখের লালা লেগে আছে দেখে রোগা পাতলা যুবক নাক সিটকায়। দুই আঙ্গুলের সাহায্যে নাকে হাত চেপে এগিয়ে যায় নিজ ফ্ল্যাটে। এমন ভাব যেন জাম্বুর পায়খানা যুক্ত কাপড় পরিষ্কার করতে যাচ্ছে সে।
——-
” ঝাড়ু কোথায় পেলি আকিল? এমনভাবে আনছিস যেন গু লেগে আছে, আর সেটা আনছিস।”

আকিল কথা শোনা মাত্র মাটিতে সজোরে শব্দ করে ফেলে দিল ঝাড়ু। রিফাতের দিকে তেড়ে এসে বলল,

” মুখের ভাষা ঠিক কর হারামি। পায়খানা বলা যায় না! পড়াশোনা করে কী শিখেছিস? কুত্তার ছেপ লেগে আছে ঝাড়ুতে। কই ভেবেছি সুন্দরী আপুর হাত থেকে ঝাড়ু নিবো। তা আর হলো কই! নিতে হয়েছে কুত্তার মুখ থেকে।”

” ছেপ কি আবুল! থুথু বলা যায় না? পাশে সুন্দরী রমণী আছে নাকি! ইশ মামা, জমবে এবার মজা!”

খালি ফ্ল্যাটে ঝনঝন শব্দ হচ্ছে শুধু। দুই বন্ধুর কথায় কেঁপে উঠেছে দেয়াল,দালান। ভূমিকম্প হলো যেন, এই বুঝি পান ওয়ালা আঙ্কেল আসছে দালান বাঁচাতে।

” তোদের ফ্ল্যাট পরিষ্কার করতে পাঠিয়েছিলাম। মা’রা’মা’রি করতে না।”

ছোট আসবাবপত্র নিয়ে হাজির প্রিয়ান। ফ্ল্যাটের একপাশে রেখে শার্টের হাতা উপরে উঠতে শুরু করল। প্রিয়ানের রাগ সম্পর্কে সবাই অবগত। কুকুরের লালার কথা ভুলে আকিল নেমে যায় ঝাড়ু দিতে।

প্রিয়ান হাসে। বিছিয়ে রাখা চাদরে বসে পড়ে। রিফাতের দিকে তাকাতেই ভ্রু যুগল কুঁচকে আসে। রিফাতের জঘন্য হাসি দেখে প্রিয়ানের ইচ্ছে করছে গাল লাল করে দিতে।
” হাসছিস কেন?”
” অ্যা মামু, কোথায় নিয়ে এলি রে! প্রতিবেশী যে খুব রূপসী, ভালো।”

প্রতিবেশীর কথা উঠে যেন প্রিয়মের মাথায় র’ক্ত চেপেছে। ফোঁস করে নিশ্বাস ত্যাগ করে আকিলকে ডেকে উঠে,

” তুই ঝাড়ু পাশের ফ্ল্যাট থেকে এনেছিস?”

আকিল প্রিয়ানের রাগের সম্পর্ক ঠাহর করতে পরল না। ঝাড়ু দিতে দিতে স্বাভাবিকভাবে উওর দিল, ” হ্যাঁ, প্রতিবেশীর থেকে ঝাড়ু এনেছি একটু পর বালতি আনবো। দরকার পড়লে দা, ব’টি সব আনবো। বুঝলি! সুযোগে সৎ ব্যবহার করব।”

প্রিয়ানের গম্ভীর কন্ঠস্বর শোনা গেল,” আর কিছু আনতে হবে না। সব আনা হয়েছে। ঝাড়ু, বালতি, মগ,বাতি সব। কোন ঝামেলা চাই না।”

আকিল নিশ্চুপ থাকল কিন্তু শুনল না। ঝাড়ু ফেরত দেওয়ার বাহানায় আবার যাবে সেখানে।

কিছু সময় পর,
কুকুরের ঘেউঘেউ আওয়াজে প্রিয়মের ধ্যান ভাঙে। টোলের উপর আকিল দাঁড়িয়ে ফ্যানের তাড় জোড়া লাগাচ্ছে। জাম্বু এসেছে ঝাড়ু ফেরত নিতে। জাম্বু দেখতে বড়সড়ো, নাদুসনুদুস, গলায় নেম প্লেট লাগানো ইংরেজিতে লিখা ‘jumbo’ জাম্বুর ভাব এমন যেন সে মালিক। টেলিভিশনের টম এন্ড জেরি শো তে টমের বাসায় এন্জেলা বেড়াতে আসলে টমের ভাবভঙ্গি যেমন হয় ঠিক তেমন। রিফাত বুকশেল্ফে বই গুছাচ্ছিল। কুকুরের আগমনে তেতে উঠে বলে,

” এই কুত্তা এখানে কী করে? বাহিরে ফেলে দিয়ে আয়!”
” কুকুরকে কুকুর ডাকতে শিখ গাধা।”
প্রিয়মের শীতল কন্ঠস্বর। সকলেই নিশ্চুপ।

স্বরণ শক্তির জন্য পুরস্কার প্রদান করা হলে জাম্বুকে করা দরকার। পুরো ফ্ল্যাটে নজর ঘুরিয়ে চিন্হিত মানুষকে খুঁজে নিলো। আকিলের চেয়ারের পাশে এসে ঘেউঘেউ আওয়াজ করতে লাগল। কারোর কোন প্রতিক্রিয়া না পেয়ে আকিলের চেয়ারে নাড়াচাড়া করতে থাকল। যার ফলে ভারসাম্যহীন আকিল ধপাস করে পড়ে যায় নিচে। ঘটনাটি এত দ্রুত ঘটেছে যে উপস্থিত সকলে বিস্মিত। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ঝাড়ু মুখে তুলে জাম্বু দরজার দিকে এগিয়ে যায়। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ঝাড়ু ফেলে আরো কিছুক্ষণ ঘেউঘেউ আওয়াজ করে কি যেন বলে যায়।
আকিল যেন ঠিক বুঝেছে কথাগুলো। কুকুর আকিলের উদ্দেশ্যেই যেন বলে গেছে,
” ঝাড়ু ফেরত দিয়ে আসলি না, আবার আসিস কামড়ে দিবো।”

——–

শহরে সকালে কিছু মানুষজন বের হয় জগিং করতে আর কিছু মানুষ বের হয় বাজার করতে। জাম্বুর গলায় ফিতা বেঁধে আগাচ্ছি ফুটপাতের রাস্তা ধরে। উদ্দেশ্য বাজার করতে যাবো। কয়েক গজ দূরে বাজার। সকাল সকাল হেঁটে আসায় দুই কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। এক জগিং, দুই বাজার। জাম্বুর গলায় ব্যাগ ঝুলানো। জাম্বুর উপদেষ্টা হয়ে উপদেশ দিচ্ছি।

” বুঝলি জাম্বু, শহরের আনাচে কানাচে চোরের উৎপত্তি বেড়েছে। বাহিরে বের হলে সাবধানে পা ফেলবি। অপরিচিত কাউকে খারাপ কিছু করতে দেখলে খেচ করে কামড় বসাবি।”

কথা শেষ হতেই জাম্বু দৌঁড় লাগাল। আমার হাতে অবশিষ্ট রইলো জাম্বুর গলার ফিতা। জাম্বুকে অনুসরণ করে সামনে আগালাম। একজন লোকের হাত কামড়ে ধরেছে জাম্বু। লোকটির হাতে একজন মহিলার হাত ব্যাগ। হয়তো লোকটি মহিলাটিকে সাহায্য করছিল। লোকটির আর্তনাদে মানুষ জড়ো হয়ে গেছে। কিছু লোক লাঠি নিয়ে আসছে জাম্বুকে আঘাত করার জন্য। উত্তেজিত স্বরে বলে উঠলাম,

” একদম আমার জাম্বুকে মারবেন না।”

ব্যথায় আর্তনাদ করা লোকটি ফিরে তাকাল। লজ্জা, ভীতি একসাথে গ্রাস করছে মনে। গতকালের যুবককে কামড়েছে জাম্বু। মানুষ জনের প্রহারের ভয়ে জাম্বু পায়ের কাছে চলে আসে। যুবকটি বাজপাখির মত তেড়ে আসে আমার দিকে। ব্যাথাতুর স্বরে বলে,

“গুন্ডামি করার জন্য আমাকে পেলে? এবার আমি তোমার কোন ইজ্জতে হাত দিয়েছি?”

গরম হলো তনু। ঢলে পড়লো যুবকটি, স্থান পেলো আমার কাঁধে। উৎসুক জনতার ভীড়ে অবলা নারীর মতো দাঁড়িয়ে আছি রাস্তার মাঝখানে। ভাবছি এখন কী হবে?

চলবে….

#অনুরক্তির_অনুভূতি
#আফসানা_মিমি
| ১ম পর্ব |

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here