আকাশে অনেক তারা – ৩
———-
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টটিং ডিপার্টমেণ্টের করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে মুহিব আর দিবা। দু’জনের মাঝে দূরত্ব ভালোই। গত তিন বছর ধরে দিবা মুহিবকে চেনে। পরিচয়টা লেখার হাত ধরেই। মুহিব লেখার বাবার কলিগের ছেলে। ছোটবেলায় পাশাপাশি সরকারি কোয়ার্টারে ছিল দুই পরিবার। সেখান থেকেই লেখা চেনে মুহিবকে। বয়সে মুহিব দেড় বছরের বড় আর ভার্সিটিতে এক বছর সিনিয়র হলেও ছোটবেলা থেকে তুই-তাই সম্পর্ক হওয়ায় সেটাই এখনো বহাল দু’জনের মাঝে। লেখার সঙ্গে দিবার পরিচয় কলেজে।
তুমি থেকে শুরু। পাশাপাশি টেবিল ভাগাভাগি করে বসা। তারপরে তুই। আর এখন তার থেকেও বেশি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। আপন বোনের মত। লেখা আজ দু’দিন ভার্সিটিতে আসছে না। ফোনটাও অফ। মুহিব খোঁজ নিতে এসেছিল তাদের ডিপার্টমেন্টে। সে ফিজিক্স নিয়ে অনার্স চতুর্থ বর্ষে পড়ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে। দিবা জানিয়েছে আজ আসবে লেখা। মুহিব অপেক্ষা করছে। দু’দিন দেখেনি সে মেয়েটাকে।
_________________________
মিনিট পাঁচেক অপেক্ষা করতে হল মুহিব আর দিবাকে। এই সময়ের মাঝে সে লক্ষ্য করেছে দিবা লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে তাকে। চাহনি কেমন ভিন্ন।
অন্যদিন কঠোরতা থাকে আজ নমনীয়। সে তো বেশ ভাব নিয়ে জিজ্ঞেস করে বসেছিল,
”কি দিনরাত্রি? এমন লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছ কেন? প্রেমে পড়ে গেলে নাকি? শুনে রাখ, তুমি লেইট। দেয়ার হ্যভ নো স্পেস ফর য়ু!”
নিজের বুকের বাম দিকে নির্দেশ করে আঙ্গুল দিয়ে মুহিব। দিবা নাকমুখ কুঁচকে এমন একটা ভাব করেছিল যেন জীবনে মুহিবের থেকে জঘন্য কোনো মানুষ সে কখনো দেখেনি। মুহিব মুখ বাঁকিয়ে দিবার দিকে তীক্ষ্ণ চাহনি নিক্ষেপ করে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছিল। দু’মিনিট পরই সে শুনতে পেয়েছিল,
”ধন্যবাদ!”
মুখয়বে বিস্ময় নিয়ে মুহিব দিবার দিকে ঘুরে। দিবা সঙ্কোচ বোধ করে। কিছুক্ষণ পূর্বে তার আচরন সত্যিই শোভন ছিল না। গত তিন বছর ধরে ছন্নছাড়া, অভব্য মুহিবকে সহ্য করে যাচ্ছে একমাত্র লেখার জন্য। সে নিজেও এই কথাটা বিশ্বাস করত। আসলে এটা সত্যি না। মুহিবের প্রতি তার অবচেতন মনেই একটা সফট কর্ণার তৈরি হয়েছে। গত দু’দিন আগে বাসে তাকে সাহায্য করা ছাড়াও মুহিব বহু ভালো কাজ করেছে। সে স্বচক্ষে স্বাক্ষী সেসবের। কিন্তু, পরক্ষণেই মুহিব এমন এমন কাজ করত যে ক্ষণিকে সম্মোহন কেটে যেত। সেই বিরাগ, বিতৃষ্ণা ঘিরে ধরত। তবে, বাসের ঘটনাটা মনে দাগ কেটেছে। সত্যিই সে একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য! সে মুহিবের খরখরে গলায় বলল,
”ধন্যবাদ? সেদিন বাসের ঘটনার জন্য? দু’দিন বাদে এসেছ ধন্যবাদ জানাতে? লাগবে না। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে যা করা উচিত ছিল তাই করেছি। তবে, এখানে সম্পূর্ণ কৃতিত্ব কিন্তু লেখার। তুমি তাকেই ধন্যবাদটা দিও!”
দিবা বিমোহিত হয়ে মুহিবের দিকে তাকিয়ে। মুহিবের সম্মন্ধে তার ধারনা বদলে গেছে আকস্মিক সেদিনই।
মানুষটা মন থেকে সত্যিই ভালো। দিবার মুখে অন্যরকম হাসি দেখে মুহিব ডান ভ্রু উঁচায়।
”এই মেয়ে একা একা হাসছ কেন? জ্বীনে ধরেছে নাকি তোমাকে?”
”কিহ্?”
হকচকিয়ে গিয়ে লাফিয়ে উঠল দিবা। আশপাশ থেকে সকলে দেখছে দুজনকে। মোটামুটি সবারই জানা এই দু’জনের মধ্যকার দুশমনি। দু’জন লাগেই লেখাকে নিয়ে। লেখা বলতে দু’জনই অজ্ঞান।
”কিরে? কি হচ্ছে?”
মুহিব দিবা দু’জনেই পেছনে ঘুরে। মুহিবের মুখে বিস্তৃত হাসি। সে এগিয়ে গিয়ে লেখার মাথায় স্পর্শ করে। বেশ আদুরে গলায় সম্বোধন করে,
”টুকি, শুকিয়ে গেছিস দেখি!”
”দু’দিনে কেউ শুকায়! বাজে বকিস না।”
”বাজে বকছি না! ঐ বিয়ে বাড়িতে গিয়ে তো তোর খাবার পাবার কথা না। সেকারণেই বললাম!”
লেখা মুহিবের পিঠে দু’টো ঘুষি বসিয়ে দিয়েছে। কিঞ্চিৎ ব্যথায় চোখমুখ কুঁচকে ফেলল। দিবা সশব্দে হেসে উঠল। চকিতে মুহিব চোখ খুলে হাসির উৎসের দিকে তাকাল। শুকনো ঢোক গিলল সে। তার অ্যডাম’স অ্যাপলের ওঠানামার গতি অস্বাভাবিক। লেখা সেটা লক্ষ্য করতেই তার চোখে অন্ধকার নেমে এল। সে মুহিবের হাতে নিজের হাত শক্ত করে চেপে ধরায় হুঁশ ফেরে তার। মুখটা চুপসনো ভঙ্গি করে বলে,
”টুকি খুব জোরে মেরেছিস!”
”বেশ করেছি, আরো মারব। বদ ছেলে কোথাকার!”
”ভীষণ বদ, নাম্বার ওয়ান বদ লেখা!”
দিবা বেশ সিরিয়াস ভঙ্গিমায় কথাগুলো বলে লেখার দিকে তাকায়। মুহিব চোখ ছোট ছোট করে দু’জনকে একবার করে দেখে বলে,
”জোট বাঁধা হচ্ছে দু’জনে মিলে না! আমিও সময় মত দেখে নেব!”
”পরে যত ইচ্ছা দেখিস। এখন ক্যন্টিনে চল। খেয়ে আসিনি! খিদে পেয়েছে ভীষণ।”
লেখার কথায় ওদের দু’জনের হুঁশ হল একজনও খেয়ে আসেনি। অগত্যা কেন্টিনের দিকেই এগোলো তিনজনে।
_________________________________
ক্যন্টিনে খেতে বসে মুহিব আর দিবা লেখার কাছ থেকে বিয়ে বাড়ির গল্প শুনল। গায়ে হলুদে যাওয়ার কথা থাকলেও সেদিন লেখার বাবার ইমার্জেন্সি কাজ
পরে যাওয়ায় যাওয়া হয়নি। পরদিন বিয়েতে গিয়েছিল সে। বিয়ের অনুষ্ঠান তো কমিউনিটি সেন্টারে হয়েছিল। দুপুরের পর গিয়ে খেয়ে-দেয়ে চলে এসেছিল তারা। বিয়েতে কোনো পর পুরুষকে কণেকে দেখতে দেওয়া হয়নি। পরদিন বৌ ভাতও কমিউনিটি সেন্টারে হয়েছিল। বৌ ভাতের দিন লেখা অনাকাঙ্ক্ষিত একজনের সাক্ষাৎ পেয়েছে। মুহিব দিবা আগ্রহ সহকারে জানতে চাইল,
”কার?”
লেখা দুঃখী দুঃখী মুখ করে জানাল তার প্রাক্তনের। এসএসসি শেষ হওয়ার পরে সে শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য একটা সম্পর্কে জড়িয়েছিল। কিন্তু, ধীরে ধীরে কখন যে সিরিয়াস হয়ে পড়েছিল জানেই না সে। সে যখন সিরিয়াস তখনই ছেলেটা জানাল সে নিজেও মজা নেওয়ার জন্যই সম্পর্কে এসেছিল। এখন তার পক্ষে আর সম্পর্ক রাখা কোনক্রমেই সম্ভব না। সে ছেড়ে চলে গিয়েছিল লেখাকে। লেখাও আঁটকায়নি।
কেন আঁটকাবে? সে তো কোনদিন ভালোই বাসেনি।
ধীরে ধীরে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছিল লেখা। অবশ্য এরপরেও দুতিনটা সম্পর্কে জড়িয়েছিল সে। একটাও স্থায়ী হয়নি। কাউকেই তেমন করে মনে ধরেনি তার আর। মুহিবের চোয়াল শক্ত হয়ে এল শুনে। লেখার পাশে সে ছিল সেদিনগুলোয়। মেয়েটার জীর্ণ অবস্থা সে দেখেছে। লেখা হাত বাঁড়িয়ে নিজের ডান হাতটা দিয়ে মুহিবের হাত ধরল। চোখের দিকে তাকিয়ে আশ্বস্ত করল,
”আমি বেরিয়ে এসেছি অতীত থেকে। বর্তমান নিয়ে ভাবি আমি!”
মুহিব হাসল। দিবা দু’জনকে দেখছে। কোথাও একটা ভার ভার লাগছে ভেতরে। সেটা পাত্তা না দিয়ে হাসল সে। দু’জনের মধ্যকার বন্ডিং বেশ স্ট্রং। সারাজীবন যেন এমনই থাকে দোয়া করল সে।
____________________________________
প্রধানীয়া ভিলায় শোকাবহ অবস্থা। মেয়ে বিদায় দিয়ে নাহার মূর্ছা গেছেন দু’বার। মোতালেব সাহেব নিজেও বেশ ভেঙ্গে পড়েছেন তবে সেটা প্রকাশ করতে তিনি নারাজ। আর একটা মাত্র জান্নাত ঘরে আছে। সে চলে গেলে ওনার পুরো বাড়ি খালি হয়ে যাবে। ভেবেই তিনি প্রতিবার ব্যথিত হন। মেয়ে বিদায় ভীষণ কষ্টের। ভীষণ
যন্ত্রণার! মেয়ে বিদায়ের পাশাপাশি তিনি ঘরে নতুন সদস্য আনার বিষয়ে-ও ভেবেছেন। ছেলের বয়স সাতাশ পেরিয়েছে। বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। সুপাত্রী পেলে তিনি দেরি করবেন না। ঘরটা নাহলে বড্ড ফাঁকাফাঁকা লাগবে। এক মেয়ে বিদায় দিয়ে নাহয় নতুন মেয়েই ঘরে আনবেন তিনি।
_______________________
নামাজ শেষে খাওয়া সেড়ে যে যার ঘরে ফিরে গেছে। পুরো প্রধানীয়া ভিলা নিশ্চুপ। মোতালেব সাহেব হাদিস বই নিয়ে বসেছেন ঘরে এসে। নাহার বিছানা ঝারছেন।
তাহাজ্জুদ পড়বেন উঠে। ঘুমিয়ে পড়তে হবে। আবার কাল আড়তে যাবেন মোতালেব সাহেব। মেয়ের বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত থাকায় যাওয়া হয়নি। কে জানে কর্মচারীরা কি অবস্থা করে রেখেছে সবকিছুর!
দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনে মোতালেব সাহেব জিজ্ঞেস করলেন,
”কে?”
”বাবা আমি!”
বড় মেয়ে জান্নাত। উনি হেসে বললেন,
”বড় আম্মা, আস ভেতরে!”
ভেতরে এসে সে বাবার সামনাসামনি দাঁড়ায়। চারপাশে মুখ ঘুরিয়ে মা’কে খোঁজে। না পেয়ে জিজ্ঞেস করে,
”মা রুমে নেই?”
”ওয়াশরুমে গেছে।”
মাথা নাড়ায় জান্নাত।
”বস!”
বাপের সামনের চেয়ারে বসে সে। হাদিস বইটা বন্ধ করে মোতালেব সাহেব জিজ্ঞেস করেন,
”জামাই কি করে?”
”কি জরুরি ফাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করতেছে।”
”ওহ্!”
চুপ হয়ে যান দু’জনেই। নিরবতা ভঙ্গ করে মোতালেব সাহেব ফের জিজ্ঞেস করেন,
”কিছু বলবি আম্মা?”
”হুঁ!”
”কি?”
”আম্মু আসুক!”
”দু’জনকে একসঙ্গে বলবি?”
”একসঙ্গে বলাটাই ঠিক হবে!”
”আচ্ছা! জরুরি কিছু কি?”
বাপের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসল জান্নাত। তার এই হাসির মানে তিনি খুব ভালো করে জানেন।
_______________________________
নাহার ওয়াশরুম থেকে বাহিরে এসে মেয়েকে দেখে খুব খুশি হন। বড় মেয়েটা মা ঘেঁষা খুব। মেজটাও ছিল মোটামুটি। কিন্তু, ছোটোটা বাপ বলতে দুনিয়াদারি শেষ এমন অবস্থা একেবারে। মেজ মেয়েটা শশুড়বাড়ি চলে গেল। বড় মেয়েটাও কাল বাদে পরশু চলে যাবে। ছোট মেয়ে নিজের মত করে থাকে। বড্ড একা হয়ে যাবেন তিনি। যাক, আজ মেয়ের সঙ্গে জমিয়ে কথা বলা যাবে। ওনার বড় মেয়েটা ভারী চমৎকার মানুষ।
”নাহার এদিকে এসে বস!”
স্বামীর ডাকে তিনি একটু অবাক হন। গিয়ে বসেন স্বামীর পাশাপাশি ডিভানে। জান্নাতকে কিছু বলতে হয়না, তিনিই জানান,
”বড় আম্মা কিছু বলতে চায় নাহার!”
”কি বলবি?”
ডান হাতের কব্জি বাম হাতে রগরায় জান্নাত। মনে মনে আল্লাহর নাম নিয়ে মাথা নাড়িয়ে সে মুখে বলে,
”বাবা নাকি তোমাদের জামাইয়ের সঙ্গে জুবায়েরের বিয়ে নিয়ে কথা বলছিল! সেটা নিয়েই কিছু কথা ছিল।”
নাহার চোখের পলক ফেলে বলেন,
”আমরাও নিজেরা আলোচনা করেছিলাম। তোর বাপ তো শাহেদকে বলেছে কোনো ভালো পাত্রী থাকলে সে যেন জানায়!”
”সেটা নিয়েই বলব!”
নাহার, মোতালেব সাহেব দু’জনেই নড়েচড়ে বসেন। আগ্রহী চোখে তাকান মেয়ের দিকে। জান্নাত জিহবায় ঠোঁট ভেজায়।
”একটা মেয়ের কথা সে বলেছে!”
মোতালেব সাহেব কিছু বলতে উদ্যত হলেন। তার পূর্বে নাহার বলে বসল,
”মেয়ে পরহেজগার তো?”
মোতালেব সাহেব নিজেও একথায় সায় দিলেন। একই কথা তিনিও জিজ্ঞেস করতেন। জান্নাত মাথা নাড়ে। বলে,
”মেয়েকে তোমরা চেনো!”
”আমরা চিনি?”
দু’জনের স্বরে, বদনে বিস্ময়। জান্নাত মুচকি হাসে।
মোতালেব সাহেব জিজ্ঞেস করেন,
”কে সে?”
ভনিতা করে না জান্নাত। জবাব দেয়,
”আঁখি!”
”আঁখি! সে তো কমপক্ষে দশ বছরের ছোট জুবায়েরের চেয়ে।”
”তো কি হয়েছে মা? তুমি বাবার থেকে বারো বছরের ছোট! তোমরা তো এমন মেয়েই খুঁজছ তাইনা?”
”তাই বলে আঁখি?”
”হুঁ, আঁখি। মেয়েটাকে সেই সাত বছর থেকে চেনো তোমরা। তাঁর নাড়িনক্ষত্র সব জান। নিজেদের হাতে গড়ে মানুষ করেছ। এরথেকে ভালো মেয়ে জুবায়েরের জন্য পাবে না আশা করি।”
চুপ করে আছেন স্বামী-স্ত্রী দু’জনে। কি বলবেন ভেবে পাচ্ছেন না। আঁখির কথা স্বপ্নেও ভাবেননি তারা।
”দেখি, ভেবে দেখি আমরা!”
একটা হতবিহবল অবস্থার মধ্যে থেকে যেন মোতালেব সাহেব উত্তর দিলেন বড় মেয়েকে। নাহার ঘাড় দুলিয়ে সাথ দিলেন স্বামীর।
________________________________
জুবায়ের বিয়ের যাবতীয় খরচাপাতি নিয়ে আলোচনা করার জন্য বাপের ঘরের দিকে এসেছিল। ভাবতেই পারেনি এমন কিছু শুনবে। একটা ঘোরের মাঝে আছে যেন। সে তাঁর বাপ-মাকে চেনে। নব্বই শতাংশ নিশ্চিত সে, আঁখি মেয়েটাই তাঁর অর্ধাঙ্গিণী হবে। তার বাবা-মা যেমন মেয়ে চায় তার প্রায় সব গুনই আঁখির মাঝে আছে। কিন্তু, সে কোনোদিন তো এমন চোখে দেখেনি মেয়েটাকে। গলা শুকিয়ে আসছে তার। ঘোর ঘোর লাগছে। রুম থেকে দরজার দিকে কারো আশার শব্দ শুনে দ্রুত সেইস্থান থেকে প্রস্থান করল সে। সত্যিই কি আঁখি তার স্ত্রী হবে? সেই শ্যমবর্ণের সবসময় মুখয়বে ভয়ে জুবুথুবু হয়ে আছে এমন একটা ভাব নিয়ে ঘোমটা দিয়ে ঘুরে বেড়ানো মেয়েটা? সত্যিই হবে?
তার সঙ্গে এক ঘরে থাকবে? এক বিছানায় ঘুমাবে?
হৃদপিন্ডের গতি আকস্মিক বেশ অস্বাভাবিক হয়ে গেল জুবায়েরের। শুকনো ঢোক গিলতে চাইল সে। আহ্, কণ্ঠনালী যেন মরুভূমি। পানি পান করা দরকার তার।
____________________________________
রাতে বাড়ি ফিরে বাপ-মায়ের ঘরে আলো জ্বালানো দেখে বেশ অবাক হল মুহিব। ড্রয়িংরুমের ঘড়ির দিকে তাকাল সে। এগারোটা বিশ। এই সময়ে আজ দু’জন বাসায়? গত দু’দিন সে বাড়ি ফেরেনি। হলে ছিল। কি হয়েছে দু’দিনের ব্যবধানে সে জানে না। মাথাও ঘামায় না। তাদের তিনজনের পরিবারে সে বুঝ হয়েছে থেকে তিনজন তিনদিকে থেকে এসেছে। কারো পথ কেউ মারায় নি। এখনো সেটাই হোক। তার বাবা-মা দু’জনেই কর্মজীবী। বাবা সহকারী সচিব, মা উপসচিব। লেখার বাবা বর্তমানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছে। তিনিও সহকারী সচিব। মুহিবের মা-ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছেন। সরকারী চাকরিধারী উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের স্ট্যাটাসই ভিন্ন। জীবনমান বেশ রসণীয়। উপভোগপূর্ণ! বিছানায় গা এলিয়ে দেয় মুহিব। সিলিংয়ের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। চোখ ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়। তার জীবনে এখন শুধু একজন মানুষই গুরুত্বপূর্ণ। আর সেটা একমাত্র টুকি।
এই মেয়েটার জন্যই জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা কাজ করতে করতেও করেনি। সে সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে হেঁটে চলে খাচ্ছে। কোনোদিন কোনোরূপ অর্থসংকট হয়নি তার। তবে, মানসিক শান্তিটা পরিপূর্ণভাবে কখনোই পায়নি। দরজায় টোকা দেওয়ার শব্দ হতেই উঠে বসে চোখ মুখে স্বাভাবিক করে। যথাসম্ভব নমনীয় গলায় বলে,
”কে? আসো!”
তার মা’কে দেখে সে খুব বিচলিত হয়। সেটা ক্ষণিকেই তার মুখভঙ্গি থেকে বিদায় নেয়। সে গম্ভীর মুখে বসে থাকে। ছেলের আচরণ দেখে বিব্রত হন জাহান। তিনি
উশখুশ করে অবশেষে জিজ্ঞেস করেন,
”ফিরেছিস?”
”দেখতেই তো পাচ্ছ!”
এতক্ষণে বিছানা ছেড়ে উঠে গিয়ে সেলফে বই ঘাটতে শুরু করেছে মুহিব। মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানে নিজেকে যে খোলসে আবৃত করে রেখেছে সে সেটা যেকোনো সময়ে মরমর করে ভেঙ্গে গুড়িয়ে যাওয়া।
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলেন জাহান। কি বলবেন কেন জানি কোনো জুতসই কথা খুঁজে পাচ্ছেন না।
”এত দেরি হয়েছে কেন ফিরতে?”
প্রশ্নটা শুনে চট করে মুহিব পিছু ঘুরে। তীক্ষ্ণ গলায় বলে,
”তুমি আমাকে জিজ্ঞেস করছ এ প্রশ্ন?”
বিজলি চমকানোর মত চমকে ওঠেন জাহান। মৃদু ঝাঁকুনি দেয় ওনার পুরো শরীর। অনেকক্ষণ অসারের মতো নিজ স্থাণে দাঁড়িয়ে থাকেন জাহান। মুহিব একটা বই হাতে নিয়ে ঘরের দরজার দিকে আসতে আসতে জিজ্ঞেস করে,
”কিছু বলবে তুমি?”
নিস্প্রভ মানবের ন্যায় মাথা দোলান তিনি। মুখে বলেন,
”আমি জার্মান যাচ্ছি!”
”ঘুরতে?”
”না!”
”তাহলে?”
”ওখানকার বাংলাদেশী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে!”
মুহিব চুপ থাকল কয়েক মূহুর্ত। তাহলে এসব নিয়েই ঝামেলা হয়েছে দু’জনের মাঝে। তার বাবার নিশ্চয়ই
ইগোতে লেগেছে খুব। সে নির্বিকারভাবে এক শব্দে বলল,
”ভালো!”
সে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলে জাহান কথা বলে উঠলেন,
”কিন্তু, তোর বাবা চাচ্ছে না আমি যাই!”
”কেন?”
”তার সেই চিরায়ত ধারনা আমি পরোক্ষ উপায়ে এখন অবধি এসেছি! আই হ্যাভ নো সেলফ পোটেনশিয়ালিটি!”
কম্পমাণ শোনায় জাহারের স্বর। মুহিব একনজর মায়ের দিকে তাকায়। বেশ সুশ্রী তিনি। ওনার মুখে শরীরে কোথাও মা মা ভাবটা নেই। এখনো কেমন রমনী রমনী একটা শ্রী ফুঁটে আছে। সে হাসল। বলল,
”যদি তাই নাহয় তাহলে তুমি সেটা ধরছ কেন? জাস্ট লেট দ্যাট গো! নিজের ড্রিম ফুলফিল করতে এতদিন
কি কি না করেছ! এতদিন কারো কথায় কর্ণপাত করনি। এখন কারো কথায় তুমি বিচলিত হচ্ছ কেন? নিজে নিজের কাছে এতদিন যেভাবে নিজেকে প্রথম স্থানে রেখেছ এখনো রাখ!”
মুচকি হাসল কথা শেষ করে মুহিব। জাহান ছেলের হাসিটা দেখলেন। বহুদিন দেখেননি। ছেলের মুখের দিকেই তো চেয়ে দেখা হয়নি। ভেতরে কোথাও সুই ফোঁটার মত তীক্ষ্ম যন্ত্রণা হচ্ছে। মুহিব ততক্ষণে বেরিয়ে গেছে ঘর থেকে। তার ঠোঁটের কোণে বিদ্রুপাত্মক একফালি হাসি ফুঁটে রয়েছে।
___________________________________
পরদিন জুবায়ের কাজ থেকে ফিরেছে দুপুরের পরে। কর্মচারীগুলো মাত্র তিনদিনে গরমিল করে রেখেছে হিসাবে। হিসেব মেলাতে গিয়ে মাথা গোলমেলে হয়ে গেছিল। তারপরে আবার ফেরার সময় রাস্তায় জ্যম। ঘেমে নেয়ে অস্থির সে। মা’কে বলে গেল রুমে একগ্লাস লেবু পানি পাঠিয়ে দিতে। গোসল যাবে এমন সময় রুমের দরজায় আঁখিকে দেখে চমকে গেল সে। আঁখি তার ঘরে। সে সরবত নিয়ে এসেছে। এতদিন তো মা নিজে নিয়ে আসতেন। তবে কি কাল রাতে তাদের আলোচনা খুব শীঘ্রই ফলে রূপান্তরিত হবে! সে ভাবতে পারছে না! মাথা ধরে যাচ্ছে। এই পিচ্চি মেয়েটা তার বৌ হবে? অন্যদিনের মতো আঁখিকে সে নিজের ঘরে আসার জন্য কিছু বলতে-ও পারছে না আজ। কেন?
”আমি নিজে থেকে আসিনি। আন্টি পাঠিয়েছে।”
জুবায়েরের ভাবনা শেষ হওয়ার আগেই সে আঁখির মিনমিনে স্বরে কথাগুলো শুনতে পেল। একদম ভিন্ন লাগছে আজ সবকিছু। কোনোরকমে ডান হাতটা উচিয়ে নাড়িয়ে জুবায়ের বলল,
”ঠিক আছে, ঠিক আছে, রেখে যা!”
আঁখি তাই করল। গ্লাসটা বেড সাইড টেবিলে রেখে এক মূহুর্ত দেরি করল না। জুবায়েরের দৃষ্টিসীমার আড়ালে চলে গেল। জুবায়ের কেমন অদ্ভুত চাহনিতে গ্লাসটার দিকে চেয়ে রইল। তার ভেতরে কি চলছে সে নিজেও বুঝতে অপারগ।
____________________________________
ছয় মাস কেটে গেছে। জুবায়ের লক্ষ্য করেছে তার বিয়ে নিয়ে তেমন কোনো তোড়জোড় নেই। আঁখিকে ঘিরেও কোন কথাবার্তা তার কর্ণগোচর হয়নি আর। হয়তো, বাবা-মা আপাতত এসব চিন্তাভাবনা বাদ দিয়েছে। কিন্তু, সে ভেতরের অনেক কিছুই জানে না। আঁখি এখনো বিয়ের উপযুক্ত হয়নি। তার বয়স সবে সাড়ে সতেরো। আঠারো হবার অপেক্ষায় আছেন ওনারা। তারপরই সিদ্ধান্তে উপণীত হবেন। নিশ্চিন্ত কিছুদিন কাটিয়ে নিক জুবায়ের। নতুন একটা সম্পর্কে জড়ানো নিয়ে সে সত্যিই ভীষণ বিভ্রান্তিতে রয়েছে।
_________________________________
বসন্ত প্রকৃতিতে রঙ নিয়ে আসে। কখনো কখনো মানুষের মনেও আনে। মুহিব নিষ্পলক সামনে তাকিয়ে রয়েছে। প্রথমদিকে আঁড়চোখেই তাকাচ্ছিল সে। এর মাঝে মুহিবের সেই রমণীর সঙ্গে চোখাচোখিও হয়েছে ক’বার। প্রতিবারই কেমন অদ্ভুত সুন্দর ভঙ্গিতে চোখ নামিয়ে নেয় সে। লেখা অনেক্ক্ষণ খেয়াল করেছে মুহিবের ব্যপারটা। সে-ও তাকাল মুহিবের চাহনি লক্ষ্য করে। চাহনিতে চমকিত ভাব ফুঁটে উঠেছে। মুহিব দিবাকে কেন দেখছে? তা-ও এমন বিমোহিত হয়ে? নিষ্পলক চাহনিতে! সে ঢোক গিলল। নিজে-ও তীক্ষ্ণ চোখে তাকাল দিবার দিকে। দিবা মেয়েটা সুন্দর। সত্যিই সুন্দর। বসন্ত উৎসব উপলক্ষে দিবা অন্য দশটা মেয়ের মতো শাড়ি পড়ে, চুল খোঁপা করে, খোঁপায় বেলীফুল গুঁজে সেজেগুজে এসেছে। কোরাস গানে অংশগ্রহণ করেছে। বাঙ্গালিয়ানা সাজে তাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে। যে করোরই তাকিয়ে থাকার কথা হা করে তার দিকে। দিবার জীবনে দিবা যত প্রপোজাল পেয়েছে গুণে রাখলে হাজার খানেকের বেশি হত সম্ভবত। একটা নিঃশ্বাস সন্তর্পণে গোপন করে লেখা। মুহিবের বাহু ধরে টান দেয়। মুহিবের সম্বিত ফিরে আসে। হকচকিয়ে যায় সে। লেখার দৃষ্টিতে দৃষ্টি রাখার সাহস হয়না। মুখ অন্য দিকে ঘুরিয়ে নেয়। লেখা এ প্রসঙ্গে কিছু বলে না। অনুষ্ঠান দেখায় মনোযোগী হয়। প্রকৃতপক্ষে তার ভেতরে অদম্য অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। সে নিজেকে বেশ সুদক্ষভাবে শান্ত দেখাচ্ছে বাহ্যিকভাবে। মুহিব আপাতত লেখার দিক থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল।
________________________________________
ঘড়িতে বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমেছে। সন্ধ্যার দিকে সদরঘাট এলাকাটা বেশ গ্যঞ্জাম লাগে। বেশ নোংরা মনে হয়। মুহিব আর লেখা দাঁড়িয়ে থেকে দিবাকে বাসে উঠিয়ে দিয়ে দাঁড়িয়ে রইল নিশ্চুপে কিছুক্ষণ।
লেখা কিছু বলল না। সে দেখল মহম্মদপুরের বাস আসছে। প্রস্তুতি নিল উঠে যাওয়ার। মুহিব হাত ধরে আঁটকাল তাকে। চোখ দু’টো সংকুচিত করে দ্বিধান্বিত চাহনি নিক্ষেপ করল সে। মুহিব হাত ধরে ভীড়ের মাঝ থেকে টেনে নিয়ে আসে। রাস্তার পাশে একটা চায়ের দোকানে বসে দু’টো রঙ চা দিতে বলে। আবহাওয়া বদলাচ্ছে। রঙ চা খেলে উপকার হবে। চা আসা অবধি দু’জনের কেউ-ই কোনো রা করেনি। মুহিবের ভঙ্গিমায় সঙ্কোচ। সে সঙ্কোচ ভেঙ্গে কম্পিত গলায় জিজ্ঞেস করল,
”টুকি তুই কি আমায় পছন্দ করিস!”
লেখা রাশভারি গলায় জবাব দিল,
”করি!”
মুহিব যেন জমে গেল সস্থানে। দুনিয়াটা যেন তার মাথায় ভেঙ্গে পড়েছে। চারিদিক যেন হুঁট করেই পানিশূণ্য বালিময় ধু ধু মরুভূমিতে রুপান্তরিত হয়েছে।
সে নিজের সংজ্ঞা বহুকষ্টে টিকিয়ে রেখেছে। কোনোভাবে সে উচ্চারণ করতে পারল,
”টুকি!”
মুখটা তখনো গম্ভীর লেখার। সে মুহিবের মনো অবস্থা ঠিক বুঝতে পারছে। সে অভিন্ন স্বরে বলল,
”কি?”
”টুকি আমি, টুকি তুই চাইলে, টুকি শোন!”
এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে মুহিবের বুলি। আকস্মিক শরীর কাঁপিয়ে হেসে উঠল লেখা। মুহিব হতবিহ্বল হয়ে তাকিয়ে তার দিকে। পথিমধ্যে অনেক পথিক লেখার দিকে বিরক্ত আর বিস্ময় চাহনিতে তাকিয়েছে।
”টুকি তুই?”
লেখা ভ্রু নাচিয়ে বলল,
”কি আমি? তোকে কি শুধু পুরুষ হিসেবেই আমাকে পছন্দ করতে হবে? সেই ছোট্টবেলা থেকে আমার অভিভাবক তুই। যে ভরসা আমি বাবার কাছ থেকেও পাইনি। তুই দিয়েছিস। অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে গেছিস। মন খারাপের সময়ে মন ভালো করেছিস পাশে থেকে। আমার জন্যই কানাডা যাসনি। নিজের স্বপ্নকে পায়ে পিষেছিস। এই মানুষটাকে আমি পছন্দ না করে থাকি কি করে? শুধু পছন্দই নয়। ভালওবাসি
আমি তোকে। ভীষণ ভালোবাসি!”
আশেপাশে আগ্রহী চোখগুলোকে অগ্রাহ্য করে লেখাকে একহাতে জড়িয়ে ধরল মুহিব। চুমুও খেল মাথায় চুলের উপরে। চায়ের দাম মিটিয়ে দিয়ে দু’জনে রাস্তার কিনারা ধরে হাঁটতে হাঁটতে সদরঘাটের দিকে এগোয়। রাতের নদীবহর দেখতে অন্যরকম সুন্দর লাগে। বহু দেখেছে। তবুও, ভালো লাগে। নতুন মনে হয়।
একটা লঞ্চ ছেড়ে গেছে ঘাট থেকে। এই প্রস্থাণ হয়তো কারো ঘরে ফেরার শুরু। এই দৃশ্যটাও অসম্ভব সুন্দর।
নদী থেকে ভেসে আসা বাতাসে দু’জনের চুল উড়ছে।
মুহিব বাদাম খোসা ছাড়িয়ে লেখার হাতে দিচ্ছে আর লেখা সেটা মুখে পুরছে।
”সত্যিই পছন্দ করিস ওকে?”
চমকে গিয়ে লেখার মুখের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বাক্যটা কর্ণকূহরে পৌঁছানো মাত্রই। লেখা স্বাভাবিক।
বাতাসে চুলগুলো উড়ছে। কি আদুরে লাগছে দেখতে।
সেই পিচ্চিকালের কথা মনে পড়ে গেল মুহিবের। মুহি মুহি করে পেছন পেছন ঘুরত।
”জবাব দিবি না?”
মুহিব ছোট করে নিঃশ্বাস ফেলল। ঠোঁটের কোণে সুক্ষ্ম একফালি হাসি দৃশ্যমান হল পরক্ষণে।
”ভালো লাগে! আজ থেকে নয় যেদিন থেকে প্রথম দেখেছি সেদিন থেকেই। গুরুত্ব দিয়ে কখনো ভাবিনি।”
”এখন ভাবছিস?”
”ভাবতে ইচ্ছে করছে! ভীষণ!”
”পরিমাণ কি হতে পারে জানিস? দিবা হিন্দু!”
মুহিব বলল,
”সে মেনে নিতে পারলে এসব কোনো প্রতিবন্ধকতাই না। আচ্ছা, টুকি তোর কি মনে হয়? দিবা মেনে নেবে আমাকে?”
”জানি না!”
মুহিব মুচকি হাসল। লেখার গাল টেনে দিয়ে বলল,
”হয়তো নেবে!”
লেখা ভ্রু উঁচিয়ে মুহিবের দিকে চাইল। জিজ্ঞেস করল,
”যদি না নেয়?”
”ভাগ্যের উপরে সৃষ্টিকর্তা ব্যতীত কারো হাত নেই। যা কল্যানকর হবে তাই ঘটবে!”
_____________________________
®সামিয়া বিনতে আলম
’মন্তব্য করুন! নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানান! জাযাকাল্লাহ খাইরান!’