অপরাজিতা- ৮

ফারজানা অফিস যাচ্ছে না দুই দিন হয়। তার মন ভালো নেই। নুপুর বাসায় ফিরেনি। এটা খুব অপমানজনক তার জন্য।
গত চারদিনে সেও যোগাযোগ করেনি নুপুরদের বাসায়।
কত লজ্জার বিষয়। বিয়ের পরদিন একটা মেয়ে তার ঘর সংসার ছেড়ে চলে গেছে। এলাকায় জানাজানি হয়ে গেছে। লোকজন রিফাতের বউ দেখতে এসে ফিরে গেছে। কতজনকে মনগড়া কথায় ভোলানো যায়। কেউ কেউ মুখের উপর অপমান করেছে। আড়ালে এগুলো নিয়ে দশ কথা হবে। সবই ভাগ্য। মন্দভাগ্য।

ব্যালকনিতে অস্থির হাঁটাহাঁটি করছে ফারজানা। বিকেল শেষে সন্ধ্যা প্রায়। গুমোট আঁধার আকাশ জুড়ে।

এমন সময় শারমিন একটা পিরিচ আর কফির মগ নিয়ে ব্যালকনিতে এসে দাঁড়ায়। গরম গরম সমুচা ভাজা হয়েছে। তিনটা সমুচা আছে ওতে।
টি টেবিলে পিরিচ আর মগটা রেখে মোড়াটা টেনে বসল।
ফারজানাকে দেখে নিচু গলায় বলল।
: রিফাতের সমস্যাটা আগেই বলতে পারতা ওদের কাছে?
ফারজানার নিশ্চুপ চাহনিতে রাগ দুঃখ অভিমান নেই। কেমন ভেঙে পড়া কষ্ট। অনেক প্রশ্ন সেখানে।

: কি বলব শারমিন?

কড়া কথাটা বলতে গিয়েও থেমে যায়। ধক করে জ্বলে উঠা আগুন সহজে নেভানো যায় না।

শারমিন কিছুটা ভয় পেয়েছে। তবুও নত মুখে বড় কথাটা বলে ফেলেছে। ফারজানা তাকে আশ্রয় দিয়েছে। জীবনে সবচেয়ে পরম উপকার করা এই মানুষটির কাছে শারমিন আজীবন মাথা নুয়ে রাখবে। কোনদিন নুয়ে রাখা মাথা তুলে কথা বলেনি।
আজ বলে ফেলল।

তখন অশীতিপর সন্ধ্যার আবছায়ায় মলিন রাত নামছে। আর ফারজানার ঠোঁট ছু্য়ে কফির মগে শীতলতা নামে একটু একটু করে।

: সব কথা, সব।

: এত বড় অন্যায় কি করে করি বলো?

: অন্যায় তুমি করোনি, সব দায় কেন নিজের করে নিচ্ছো?

: পরের একটা মেয়ের উপর এতটা অধিকার কোন মুখে রাখি। লজ্জা লাগে শারমিন।

: ছেলেটার জন্য বেহায়া হতে একটু,, ক্ষতি তো ছিল না।

ফারজানা কাঁদল। বাঁধভাঙা অশ্রুর ঝলক তবুও নিষ্প্রভ। চুইয়ে চুইয়ে ঝরে। শারমিনের বুকে লাগে। আহা মা হলেই বুঝি এত কষ্ট। সত্যিই তো রিফাতের কি দোষ।
দুজনেই চুপ। কোন কথা বলছে না কেউ।

: শারমিন স্বপ্নগুলো ভাঙতে ভাঙতে চুরমার হয়ে গেছে। তবুও আমি আশায় থাকি। এই বুঝি সব ঠিক হয়ে যাবে।
তবুও হয় না।
আমি কি হেরেই যাবো।?

: তুমি জানো বিয়ের পরদিন কত প্ল্যান ছিল আমার। মেয়েটাকে খালি হাতে এনেছি। লজ্জায় নুপুরের মাকে বলেছি আপনার গহনা দিয়ে মেয়েকে সাজিয়ে দিন।
অথচ দেখো কি আয়োজন ছিল আমার নুপুরের জন্য।

নুপুর শুধু আমার ছেলেটাকে আগলে রাখতো, তুমি দেখতে দুনিয়ার সব নুপুরকে দিয়ে দিতাম।

: শারমিন, আমি মা। তুমি বলো খুব কি ভুল কিছু চেয়েছি ছেলের জন্য?

শারমিন জানে না এর উত্তর। তবে তার বুকে কাঁটার মত বিঁধে আছে কিছু ঘটনা। একটা কলঙ্কিত অতীত। সেই কলঙ্কিত অতীতের রেশ বংশ পরস্পরায় বয়ে বেড়াচ্ছে ফারজানা।
এসব ফারজানাই তাকে বলেছে।
ফারজানার দাদার দাদা শ্বশুর সরফরাজ আলী। প্রচুর প্রতাপশালী মানুষ। কিন্ত বড় হিংস্র। মানুষকে আঘাত করতে খুব ভালবাসত।
কি মুখে। কি আচরনে। কখনও শরীরেও।
পুরো গ্রাম তার ভয়ে।কাঁপত।

একদিনের ঘটনা।
তার অনুমতি ছাড়া এলাকার এক গরীব লোক মজনু মিয়া সরফরাজ আলীর জমিতে ঘাস কাটে।
এই কথা কানে এলে ধরে আনা হয় মজনু মিয়াকে।
বিচার সালিশ বসে।
এলাকার লোক কেউই তার বিরুদ্ধে।কথা বলে না।
যত অন্যায় হোক।

মজনু মিয়ার বিচার হয়। জুতা পেটা করা হবে।
ভরা মজলিশে বাপের বয়সী লোককে জুতা মারা হয়।
মজনু মিয়ার চোখ ফেটে পানি আসে।
এত বড় অন্যায় যে লোক করতে পারে সে।মানুষ না। জানোয়ার।

তীব্র অপমানের যন্ত্রনা অনেক। মজনু মিয়াও সেই অপমান নিতে পারেনি।
সবার সামনে মুখ ফুটে অভিশাপ দিয়ে বসে।
” আফনের বংশ নির্বংশ হইবো। আমি কইয়া গেলাম।
মানুষরে মানুষ ভাবেন না। সব ছাই হইয়া যাইবো।
আমারে কান্দাইছেন হের লাইগা আফনেও কানবেন, আফনের বংশের একটা একটা মানুষ কানব।”.

শারমিনের বুক কেঁপে উঠে আরেকবার। কি অলুক্ষনে ক্ষন ছিল সেই অভিশাপের। সব সত্যি হয়ে গেলো।

সরফরাজের অভিশপ্ত বংশে আলো জ্বলে না আর। সন্তানগুলো এক একটা অভিশপ্ত হয়ে জন্মাতে থাকে।
হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী নয়তো মানসিক। হাহাকার চাপা যন্ত্রনায় কেঁদে কেঁদে জীবন পার করেছে সরফরাজ আলীর বংশধরেরা।

ফারজানাও কাঁদে একই কারনে। রাত হলে নির্ঘুম চোখে অভিশাপের আগুনে ছাই হয়।
জন্মের পর রিফাতের শারীরিক ত্রুটিকে সে বায়ে ঠেলে।নেমে পড়ে যুদ্ধের মাঠে।
সর্বোচ্চ চেষ্টায় তাকে।যোগ্য করে তুলে।
কিন্ত এর পাশাপাশি রিফাতের আরও কিছু ত্রুটি আস্তে।আস্তে প্রকট হয়ে উঠে।

ফারজানা ভেঙে পড়েনি। মনোবল হারায়নি।
ছেলেকে সাহস যোগাতে থাকে।

কম্পিউটার সায়েন্সে পড়া শেষ করে ভালো একটা জব পায় রিফাত। ফারজানা অদম্য যুদ্ধের মাঝে আশার আলো দেখে।
রিফাত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে শুরু করে। এত আনন্দ কোথায় রাখবে সে।
কিন্ত শেষ রক্ষা হয় না তার।

চেয়ারে হেলান দিয়ে চুপ করে বসে আছে ফারজানা। কাছে এল শারমিন। খুব মায়া লাগছে তার।

: তুমি বউয়ের বাড়িতে একটা ফোন দিয়া কথা কও।

: কোন মুখে ফোন দিবো শারমিন?

দীর্ঘশ্বাসের শব্দটা বড় করুন।

: নাহলে যাও ওদের বাসায়। গিয়ে সব খুলে বলো।

ফারজানা ঝিম মেরে বসে আছে। সে টের পায় নৈঃশব্দের রাত ছুঁয়ে বিষন্নতা নামছে কি অসীম হাহাকার নিয়ে।

নুপুরের বিষয়ে বাসায় আর আলোচনা হয়নি।
সালমা এই নিয়ে মেয়েকে কোন কথাও বলেনি আর।
ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নুপুরের। সালমার সায় আছে এতে।
ভীষন বড় একটা ঝড় গেছে। মেয়েটা কতটা অসহায় হয়ে পড়েছে সেটা তার মুখ দেখে বোঝা যায়।
মন খারাপ করে মেয়েটা ঘুরে বেড়ায় ছাদে। তিশাও যায়। তাকে সময় দেয়। দুবোন মিলে গুটুর গুটুর গল্প করে।

সালমার ভালো লাগে এটা। আড়াল থেকে সব দেখে। সে।

আজ সকাল সকাল রেডী হয়ে টেবিলে এল নুপুর। ভার্সিটিতে যাওয়া হয় না প্রায় এক সপ্তাহ।
সামনে সেমিস্টার। কোনই প্রিপারেশান নাই।
ধাক্কাটা সামলে নিতে পড়াশুনায় ব্যস্ত হতে হবে।

শফিক খুব সকালে বেরিয়ে গেছে দোকানে। সালমার সাথে এই নিয়ে তারও কথা বন্ধ।
রিফাতের বাবার সাথে আলাদা করে দেখা করার পর শফিক সালমাকে বুঝিয়ে সব বলতে চেয়েছে।
সালমা রাজি হয়নি।
শফিক ক্ষেপেছে। সালমাও সরে গেছে শফিকের কাছ থেকে।
এরপর সে মেয়েকে আগলে রাখে এসব বাজে আলোচনা থেকে। সিলভিয়া এলেও প্রসঙ্গ তুলে না।।

টেবিলে নাশতার পদ খুবই কম। রুটি ভাজি আর চা।
নাশতা খেতে খেতে খুব তাড়াহুড়ো করছে। নুপুর। কোন রকমে মুখে দিয়ে চা নিলো।
সালমা বিরক্ত হয়।

: এত তাড়া কিসের?

: মা আমি ভার্সিটিতে যাবো।

: বুঝলাম তো।

নুপুর খাওয়া শেষে ব্যাগটা নিয়ে দরজা পর্যন্ত গিয়ে আবার ফিরে এল।

: মা ওদের সাথে কথা বলেছো?

: না।

: দেরী করো না। আর আমার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিও।

: ঠি্ক আছে।

: তোর বাবার সাথে আজই কথা বলব।
তোকে অনেক বড় একটা শাস্তি দিয়ে ফেললাম বোধহয়।

নুপুর বাইরে চলে এল। সে মেইন রোডে হেঁটে হেঁটে আসে।
হাঁটতে গিয়ে পাশে একটা বাইক দুম করে ব্রেক কষে দাড়াল।
চোখ তুলে তাকাতেই দেখে রিহান।

ভেতরটা ধক করে উঠে। কতদিন পর দেখা হল। রিহানের জন্য নুপুরের আলাদা কোন অনুভুতি ছিল না। কিন্ত আজ মনে হল কিছুটা হলেও তার ভালো লাগা কাজ করছে। তার মানে কি রিহানকে তার ভালো লাগতে শুরু করেছে। নাকি তার মনের শূন্যতায় রিহান এসে জায়গা নিক এটা সে চায়।
নাকি সবটাই সাময়িক বিষয়।
খুব অবাক হয়েছে নুপুর রিহানকে দেখে।

: তুমি এখানে কি করছো রিহান?

: বলবো, বাইকে এসো।

: অসম্ভব।

: নুপুর যা শুনলাম সব কি সত্যি?

: রাস্তায় দাঁড়িয়ে এসব আলোচনা করে কেউ?

: চলো।

: কোথায়?

: আগে চলো।

: না।

রিহান হতাশ হল। মেয়েটা প্রচণ্ড রকম ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলে।রিহানের এটা পছন্দ। কিন্ত এই মুহুর্তে সে আশা করছে নুপুর তার কথা শুনুক।

: আহা, এত কথা কেন বলছো, উঠে এসো।

: না।

নুপুর পাশ কাটিয়ে চলে যায়। সামনে বাস স্টপেজ। রিহান খুব মনঃক্ষুণ্ণ হয়। কি অদ্ভুত মেয়ে। একটা ছেলে তার জন্য জীবন দিয়ে ফেলছে অথচ তার কোন ফিলিংস নাই। মানুষ এত শক্ত হয় কি করে। রিহান বাইক ঘুরিয়ে চলে যেতে যেতে ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে।
এই মেয়েটার জন্য যদি সারাজীবন অপেক্ষায় থাকতে হয় তবুও সে থাকবে।

বাস আসতে আরো দেরী হবে হয়তো। অনেক ভিড়। অনেক জ্যাম। লোকজনের হৈ চৈ বাড়ল। রোদ উঠেছে কড়া। ঘাম ঝরানো রোদ। নুপুর অসহ্য গরমে ঠায় দাঁড়িয়ে আছে বাসের জন্য।
রিহানের জন্য তার অনুভুতি আছে কি নেই সেটা বড় কথা নয়। অন্তত এই মুহুর্তে। রিহান তাকে পছন্দ করে। এটা তার ব্যক্তিগত চাওয়া কিন্ত রিহানের পরিবার কখনও সেই চাওয়ার মর্যাদা দেবে না। এটাই বাস্তবতা।
নুপুর তার মনকে বোঝাবে। অনেক বোঝাবে যেন রিহানের জন্য তার কোন অনুভুতি না আসে।
যতই কষ্ট হোক। এটা সে করবেই।

দুদিন পর রিফাতের বাড়ি থেকে ফোন এল।
সালমা কল রিসিভ করেছে। শারমিন ফোনটা ফারজানার কাছে দিয়ে সরে পড়ে।

: কেমন আছেন আপা?

: আছি।

ফারজানা খুব আপসেট হয়ে আছে। সেটা তার আওয়াজ শুনলে বোঝা যায়।
সালমা ভীষন বিব্রত বোধ করছে। বাজে একটা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলতে হবে। খুব অস্বস্তিকর প্রসঙ্গ।
কিন্ত রিফাতের মা এতটা ভেঙে পড়েছে কেন।

: আপা নুপুর কেমন আছে?

: ভালো আছে।
ফারজানা আশা করছে নুপুরের মা রিফাতের কথা জানতে চাইবে। কিন্ত তেমন কিছু হল না।

: আপা নুপুরের কিছু কথা ছিল। সেগুলো।আপনাদের জানা দরকার।

ফারজানা আতকে উঠে।

: আপা আগামীকাল আমি আসছি। সামনাসামনি সব বলি?

তড়িঘড়ি করে ফারজানা কল কেটে দেয়।
এতে করে সালমার চিন্তা বেড়ে যায়। রিফাতের মা নুপুরকে হাতে আনার চেষ্টা করবে এটা সালমা বুঝে গেছে। যদিও তা সম্ভব না। কারন এখানে নুপুরের চাওয়াই সবচেয়ে বড় তার কাছে। কিন্ত শফিক হয়তো ঝামেলা করবে। করুক।
সব কিছু অত পাত্তা দিলে হবে না।

সন্ধ্যের পর গাড়ি এসে থামল নুপুরদের বাড়ির গেইটে।
সালমা তটস্থ হয়ে আছে। শফিককে জানানো হয়নি। কৌশলে তাকে বাইরে রাখা হয়েছে। বসার ব্যবস্থাও নিচতলায় করা হয়েছে। সিলভিয়া এসেছে কিন্ত আদিল বাদ।

আপ্যায়নের আয়োজন খুব বেশী না। চা বিস্কিট আর কেক। এটা ফর্মাল আলোচনা তাই সবকিছুই হিসেব করা।

ফারজানা একা এসেছে। তার হাতে অনেকগুলো ব্যাগ।
সালমা সিলভিয়া বসেছে পাশাপাশি। নুপুর তার রুমে।

: আপা নুপুরকে ডাকেন।

সিলভিয়া হাতে খোঁচা মেরে সালমাকে মানা করে।

: আপা আগে আমরা আলোচনা করি। যেহেতু বিষয়টা খুব সেনসিটিভ তাই মেয়েকে আপাতত না আনি।
একচুয়ালি নুপুর ভীষন বাজে সিচুয়েশানে আছে।

ফারজানা সালমাকে থামিয়ে দেয়।

: আমি জানি আপনারা কি কি বলবেন বা কি চাইছেন।
কিন্ত আমার তরফ থেকে একটা অনুরোধ আছে।

সিলভিয়া আগ বাড়িয়ে প্রশ্নটা করার আগে ফারজানা বলে উঠে।

: আমার ছেলের জন্য আপনার মেয়েকে ভিক্ষা নিতে এসেছি। আমার সমস্ত সম্বল আজ থেকে নুপুরকে দিয়ে দিলাম।
এই ব্যাগে ত্রিশ ভরি গহনা আছে। আর এখানে উত্তরার ছয়তলা বাড়ির সব কাগজ। আমি দলিল করে এনেছি।
শুধু নুপুরের একটা সাইন হলেই চলবে।

ফারজানা ব্যাগ থেকে সব গহনা বের করে টেবিলের উপর রাখল। এত এত সোনার গহনা দেখে সালমা সিলভিয়া স্তব্ধ হয়ে গেছে। জীবনের সব সুখ প্রাচুর্য এখন হাতের মুঠোয়। কিন্ত এত সহজ হয় কি করে।

: আপা আমার ছেলেটা অসুস্থ নয়। ওর পায়ের বিষয়টা আগেই বলেছি। আর মনের দিক থেকে সে খুবই সহজ সরল। যাকে আমরা বোকা বলি।

এমন সময় নুপুর চলে আসে। ফারজানা নিজে উঠে গিয়ে নুপুরের হাতে সব ধরিয়ে দেয়।

: মা আমার ছেলেটার তুমি দায়িত্ব নেবে বলো?

নুপুর বুঝতেই পারছে না কি হচ্ছে।

: তুমি দেখো এই বাড়ির কাগজ আজ থেকে তোমার। আর এখানে যত গহনা আছে সব তোমার।
তুমি শুধু আমার ছেলেটার পাশে থাকো।
বিশ্বাস করো আমার ছেলেটা সিক নয়। যদি তাই হত তবে সে এত এত পড়াশুনা করতে পারত না।
ওর মাঝে কিছু সমস্যা আছে তবে সেটা ভয়ঙ্কর নয়।

আমি ওর মা। আমি বলছি তুমি খুব সুখে থাকবে রিফাতকে নিয়ে।

নুপুর কিছুই বলছে না। সালমা মেয়ের মুখের দিকে চেয়ে আছে।
অনেকটা সময় পর নুপুর নড়েচড়ে বসল।
তার মুখে রহস্যময় এক হাসি।
সালমার মনে হচ্ছে নুপুর রাজী হয়ে গেছে। অন্তত তার হাসিটা তাই বলছে।

সিলভিয়াও বোকাবোকা করে তাকাচ্ছে।
কেবল ফারজানার মুখে আনন্দিত হাসিটা সারা ঘরময় ছড়িয়ে গেলো।

…… তামান্না হাসান

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here