#এক_চিলতে_রোদ।
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ০৩

রাশেদ চলে গেল। অহনা আর রবি এখনো রেস্টুরেন্টে বসে আছে।একটু পর অহনা ওয়াশরুমে গেল।সে সময়টায় রবি বিল দিয়ে দিল।রবি বাইরে এসে একটা মেয়েকে দেখে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

অহনা রবির পেছন পেছন আসলো তা রবি খেয়াল করে নি।মেয়েটা রিকশা নিয়ে চলে যাচ্ছে আর রবি তার যাওয়া দিকে তাকিয়ে আছে।অহনা বুঝতে পারল এটা মনে হয় রিহি যার কথা রবি তাঁকে বলেছিল।অহনা গিয়ে রবির পাশে দাঁড়ালো। রবির রিকশার দিক থেকে চোখ নামিয়ে অহনার দিকে চেয়ে একটা শুকনো মলিন হাসি দিল। কিন্তু অহনা রবিকে কিছু লুকাতে দেয় নি।অহনা রিকশার দিকে তাকিয়ে রবিকে বলল…
–রিকশায় বসে থাকা মেয়েটা নিশ্চয়ই তুমি চেন?
রবি কিছু না বলে অহনার দিকে তাকালো আর বললো”চলো পাশের পার্ক থেকে ঘুরে আসি,ভালো লাগবে”
–হুম চলো।

রবি খুব ভালো করে বুঝতে পারলো রিকশায় থাকা রিহির প্রতি অহনার জানার ইচ্ছে আছে।
রবি একটা রিকশা ডেকে অহনাকে নিয়ে পাশাপাশি বসে পড়ল।রিকশা পার্কের দিকে যেতে লাগলো।অহনা নিজে থেকে রবির হাত ধরে বসল।রবি অহনার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিল। সে হাসিতে অহনা যেন সুখের রাজ্য খুঁজে পেলো।

অহনা রবিকে আবার জিজ্ঞেস করলো…
–মেয়েটা রিহি ছিল তাই না?
রবি এবার না বলে চুপ করে থাকলো না।অহনার দিকে চেয়ে অহানর হাতটা একটু উঁচু করে ধরে নিজের দিকে টেনে রবি বলল….
রবিঃহুম ওটা অহনা ছিল।দেখলে তো কি অপরাধ বোধ জমে আছে তার চোখের চাহনির মাঝে?
–হুম আছে তো বটে।কিন্তু তোমার মাঝেও কিন্তু তার জন্য অনেক ফিলিংস জমে আছে।
রবিঃকাউকে যখন তুমি মন থেকে ভালোবাসবে তখন তার প্রতি তোমার মায়া, আবেগ,ভালোবাসা কখনো যাবে না।
–হুম জানি।আচ্ছা এসব নিয়ে মন খারাপ করো না।পার্কের কাছেই তো চলে এলাম….
রবিঃহুম আর একটু গেলেই থেমে যাবে রিকশার চাকা।
–যদি রিকশার চাকা না থামতো, তাহলে কতোই না ভালো হতো?
রবিঃহুম অনেক ভালো হতো।তোমার সাথে পুরো শহরটা রিকশায় চেপে তোমার হাতে হাত রেখে ঘুরে দেখার ইচ্ছে জমে আছে।
–তাহলে চলো আজ ঘুরে দেখি?
রবিঃআজ না।অন্য কোনো দিন অন্য কোনো সময়।যেদিন এই শহরের রাস্তায় তুমি আর আমি ছাড়া আর কেউ থাকবে না সেদিন আমরা পুরো শহরটা খুব সুন্দর করে দেখব।পুরো শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করবো।
–কিন্তু এমনটা তো কখনো হবে না।কারণ এই শহর ঘুরে দেখার জন্য কেউ না কেউ তাদের প্রিয় মানুষটার সাথে ঘুরে বেড়ায়।এমন আকাশকুসুম চাহনি তোমার কখনো পূর্ণ হবে না।
রবিঃজানি সেটা।তাই আমি দ্বিতীয় অপশনও রেখেছি।
–কি সেটা?
রবিঃযে দিন এই পুরো শহরটায় মানুষ তেমন একটা থাকবে না সে দিন তোমায় নিয়ে পুরো শহরটা ঘুরে দেখব।একটা রিকশা থাকবে এক বৃদ্ধ সে রিকশা চালাবে আস্তে ধীরে যাতে আমরা পুরো শহরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারি। রিকশা যতই আস্তে যাবে আমাদের ততই ভালো হবে।

রবির কথা শুনে অহনা যেন রবিতে আটকে গেল।কি অদ্ভুত আর কি সুন্দর তার কথা গুলো।কি অপূর্ব তার ইচ্ছে। কি রোমান্টিক তার আবদার গুলো।ভাষায় যেন প্রকাশ করতে পারছে না অহনা।রবির কাঁধে অহনা মাথা ঠেকালো।রবির ইচ্ছে হলো অহনার মাথার এলোমেলো চুল গুলো একটু গুছিয়ে দিতে। কিন্তু রবি চাইলেই তো সেটা করা সম্ভব হবে না।

প্রবল ইচ্ছে রবির হাত যেন নিজের অজান্তে অহনার মাথায় চলে গেল।খুব সাবধানে রবি নিজের হাত সরিয়ে নিলো।কিন্তু অহনা বিষয় টি বুঝতে পেরে রবির হাত ধরে বললো”চুল গুলো একটু গুছিয়ে দাও না”

অহনার কথা শুনে রবির ঠোঁটের কোনে এক অপূর্ব হাসি ফুটে ওঠল।যা অহনাকে মুচকি হাসতে বাধ্য করল।অহনার চুল গুলো গুছিয়ে দিতেই রিকশা থেমে গেল।এমন সুন্দর এক মূহুর্ত নষ্ট করার জন্য রবি বিরক্তির চাহনিতে সামনে দেখল।রিকশা ওয়ালা মামাকে কিছু বলতে গিয়ে যেন রবি থেমে গেল।কারণ পথটাই তো শেষ হয়ে গেল।

রিকশা ওয়ালা মামার কি দোষ তাতে?দুই জন রিকশা থেকে নেমে আস্তে ধীরে পায়ে পা মিলিয়ে হেঁটে পার্কে ঢুকে গেল।ওখানে দুই জন গাছের নিচে বসে অনেক গল্প করলো।দুই জনই চাই এই গল্প যেন শেষ না হয়।সময় যেন থেমে যায়। কিন্তু প্রকৃতি তো নিজের নিয়মেই চলবে।হঠাৎ একটা বাদাম ওয়ালাকে দেখে অহনা বাদাম খাওয়ার বাহানা ধরল।রবি গিয়ে বাদাম নিয়ে এলো।রবি বাদামের খোসা ছাড়িয়ে দিচ্ছে তো অহনা খাচ্ছে। কি বাচ্চাদের মতো তার আচরণ যেন থমকে দেয় রবিকে।

রবির ফোন বেজে ওঠতে যেন দুই জনের মুগ্ধতা কেটে গেল।রবি পকেট থেকে ফোন বের করে দেখে অপরিচিত নাম্বার।রবি ফোনটা ধরবে কি ধরবে না ভাবতে ভাবতে কেটে গেল।অহনা রবির দিকে এক পলকে তাকিয়ে আছে রবির বুঝতে বাকি নেই সেই চাহনিতে সন্দেহের তীর রবির দিকে তাক করানো আছে।
দ্বিতীয় বার ফোন বাজতে ফোনটা ধরে কানে দিল। ফোনের ওপাশ থেকে কেউ বলে ওঠল….
–আমি কে তা জানতে হবে না।শুধু এটা জেনে রাখুন আপনি খুব বড় একটা বিপদে পড়তে যাচ্ছেন।সাবধানে থাকবেন।

রবির কাছে কন্ঠটা কেমন যেনা চেনা লাগলো।কিন্তু রবি কিছু বলার আগে ফোনটা কেটে দিল।অহনা তাকিয়ে আছে রবির দিকে হয়তো জানতে চাই কে ফোন দিল আর কি বলল…
রবি নিজে থেকে বলল”জানি না কে ফোন দিল, তবে এটা জানি আমার শুভাকাঙ্ক্ষী। যে আমাকে সতর্ক করতে ফোন দিছে।”
অহনা রবির কথার কিছু বুঝতে পারে না।কিন্তু অহনাও কেমন যেন হয়ে গেল দ্বিতীয় প্রশ্ন করে নি।যেটা রবিকে আরো ভাবিয়ে তুলেছে।চারপাশে কি হচ্ছে সব বাদ দিয়ে দুই জন হাঁটা শুরু করল পার্কে।দীর্ঘ সময় ঘুরে সন্ধ্যা করে আপু আর মায়ের জন্য নাস্তা নিয়ে রবি আর অহনা বাসার দিকে রিকশায় চড়ে রওনা দিল।

দরজায় কলিং বেল চাপ দিতে আপু এসে দরজা খুলে দিল।রবির হাতে থাকা সমস্ত ব্যাগ আপুর হাতে দিল।আপু রবির দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।রিফা এসে আপুর হাত থেকে ব্যাগ গুলো নিয়ে গেল।অহনা মায়ের রুমে গেল রবি নিজের রুমে চলে এলো।সারাদিন টা যেন রবি আর অহনার কল্পনায় কেটে গেল।রবি ফ্রেশ হয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে একটা নাম্বার দেখে গভীর চিন্তায় মগ্ন হলো।কে হতে পারে মেয়েটা?

হুম একটা মেয়ে ফোন দিছিল রবিকে পার্কে থাকা অবস্থায়। কে হতে পারে ভেবে যেন রবির মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যাবে।কন্ঠ টা খুব চেনা মনে হচ্ছে কিন্তু কে সেটা তো মনে পড়ছে না।এই কন্ঠ রিহির নয়।আর কে হতে পারে যে রবিকে চেনে?

অহনা রবির মায়ের রুম থেকে বের হয়ে এলো।রবি নিজের ফোনটা পাশে রেখে দিল কেননা অহনা আবার বুঝে যাবে রবি শুভাকাঙ্ক্ষীর ফোনটা নিয় চিন্তায় আছে।অহনা রুমে ঢুকতে রবি ফ্রেশ হতে চলে গেল।সেই সময়ে অহনা রবির ফোন নিয়ে পার্কে কে ফোন দিছে জানতে রবির ফোনটা নিয়ে দেখল।কিন্তু নাম্বার টা অপরিচিত তবে জানতে হবে কে হতে পারে এটা?অহনা নাম্বার টা নোট করে নিলো।

রবি ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে অহনা বসে আছে আর কি যেন ভাবছে। রবি অহনার পাশে গিয়ে বসল। রবির উপস্থিতি বুঝতে পেরে অহনা রবির দিকে ফিরে বসল।রবি অহনাকে বলল…
রবিঃতুমি কি কোনো কারণে চিন্তিত? দেখে মনে হচ্ছে কোনো গভীর চিন্তায় মগ্ন তুমি।
–না তেমন কিছু না।তুমি বস আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।

রবি বুঝতে পারল অহনা তার কাছ থেকে কিছু লোকাচ্ছে।তবুও রবি নিরবে বসে রইল।অহনা ফ্রেশ হয়ে এসে রবির পাশে বসল। রবি অহনার দিকে চেয়ে একটা দুষ্টামি মাখা হাসি দিল।অহনা রবির দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।

রাত নয় টা, রবি নিজের রুমে বসে আছে অহনা আপুর সাথে বসে গল্প করছে। রিফা নিজের কাজ করছে। রবি ওঠে মায়ের কাছে গেল।মা বসে আছে রবির যাওয়া দেখে মা বলল…
মাঃআমি জানি তুই কেন এসেছিস।
রবিঃতো কি সিন্ধান্ত নিলে বল?
মাঃআসলে আজকের মেয়েরা একটু অদ্ভুত তাই আমি ভাবছি পরে আবার সমস্যা হবে না তো তোর?
রবিঃহ্যাঁ মা আমি জানি আজকাল কার দিনে একটু ভিন্ন মেয়েরা।আর অহনাও পড়তে চাই যদি তোমার অনুমতি পাই।
মাঃহুম পড়তে পারে তবে তুই নিয়ে যাবি সাথে করে নিয়ে আসবি।
রবিঃতাহলে তুমি পড়ার অনুমতি দিচ্ছ?
মাঃহ্যাঁ। আমি তো আর এখানে থাকব না তোরা সাবধানে থাকিস।
রবিঃকেন মা তুমি এখানে থেকে গেলে কি সমস্যা হয়?
মাঃগ্রামের আর তার মানুষের প্রতি যে মায়া আমার ভেতরে তা কখনো ছাড়তে পারব না।তাই গ্রামে চলে যায়।
রবিঃওকে। তুমি যা ভালো মনে কর তাই করো।

তারপর রবি মায়ের রুম থেকে চলে এলো।অনেক চেয়েছিল রবি আর তার আপু কিন্তু মা কখনো এই শহরে থাকে না।মায়ের কাছে শহর মানে এক বিষাক্ত জায়গা।যেখানে মানুষ বলতে কেউ থাকে না।থাকে মানুষ রুপি কিছু রোবট।

রাতে সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে।রিফা সবাইকে খাবার দিচ্ছে মা রিফকে জোর করে বসিয়ে দিল।রিফা মেয়েটা একটু অদ্ভুত সবার সাথে খেতে বসতে চাই না।জোর করলেও তেমন একটা বসে না কিন্তু আজ মা বসিয়ে দিল।
সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে রবি বলে ওঠল…
রবিঃতাহলে আমরা পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছি কি বল আপু?
যদিও মা আপুর সাথে কথা বলে এই সিন্ধান্ত নিয়েছে তাও রবি আপুকে ছাড়া তেমন কিছু করে না।আপুও মায়ের সাথে একমত হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিল।
খাওয়া শেষ করে সবাই মিলে টিভি দেখতে বসল।একটু পর রবি ওঠে গেল নিজের রুমে গিয়ে কি যেন চিন্তা করছে।
আপু বিষটা বুঝতে পেরেছে।তাই আপু রবির রুমে আসলো আর কি হয়েছে জিজ্ঞেস করলো।কিন্তু প্রতি বারের মতো রবি “তেমন কিছু না ” বলে কথাটা উড়িয়ে দিল।রবির কথা শুনে আপুও কিছু টা চিন্তিত হয়ে পড়ল।কারণ আপু খুব ভালো করে জানে রবির অস্বাভাবিক কিছু হলে সেটা সে তেমন কিছু না বলে ওড়িয়ে দেয়।

আপু বুঝতে পারল রবি তাঁকে কিছু বলবে না তাই আপু আবারো অহনার কাছে গেল। অহনার পাশে একদম গা ঘেঁষে বসল। অহনা আপুর দিলে আড় চোখে তাকালো কারণ আপু কারো গা ঘেঁষে বসতে পারে না।অহনা বুঝতে পারে আপু হয়তো তাঁকে কিছু বলবে।তাই জিজ্ঞেস করে ফেললো….
–আপু কিছু বলবেন মনে হয়?
আপুঃহুম বলতে হবে।আচ্ছা কি হয়ছে বল তো সে সন্ধ্যায় তোমরা বাসায় আসার পর থেকে রবি কেমন যেন অন্য রকম হয়ে আছে।কি সমস্যা বলতে পার?
–আমি তো তেমন কিছু জানি না৷ তবে পার্কে থাকা অবস্থায় কেউ ফোন দিছিল।সেদিক থেকে কিছু বলে ফোনটা কেটে দিছে।তারপর থেকে রবি চিন্তায় পড়ে গেছে।
আপুঃফোনটা কে করেছে জানতে চাও নি?
–চেয়েছি কিন্তু সেটা কে জানে না নাকি।আর একটু করে কন্ঠ টা আমিও শুনছিলাম সেটা একটা মেয়ে ছিল।আর রবি আমাকে বলল সেটা তার শুভাকাঙ্ক্ষী।
আপুঃআচ্ছা তাহলে তো দেখতে হয় সে শুভাকাঙ্ক্ষী টা কে।
–জানি না কে,তবে আমার মনে হয় তারপর থেকে রবি চিন্তায় মগ্ন হয়ে গেছে।
আপুঃওকে।দেখতে হবে সেটা কে।আর শুন তুমিও রুমে যাও বেশি রাত জেগো না কয়েক দিন তো খুব দখলে গেছে।
–ওকে আপু।

অহনা আর আপু দুই জন ঘুমাতে গেল আপু নিজের রুমে চলে গেল।অহনা রবির রুমে চলে এলো।রবি তখন ফোনে কি যেন করছে অহনা আসতে তার দিকে চেয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে ফোনটা রেখে দিল।অহনা রবির পাশে শুয়ে পড়ল।

লাইট অপ চাদের আবচা আলো জানালা দিয়ে প্রবেশ করছে।এই আলোয় যেন অহনাকে আরো কয়েক গুন বেশি সুন্দর লাগছে।রবির মায়াবী চোখের চাহনি দেখে অহনা বলল…
–এভাবে কি দেখছ শুনি?
রবিঃআমার পাশে একটা পরি এসে শুয়ে আছে না দেখে কি উপায় আছে বল?
–তাই না।খুব দুষ্ট হয়ে গেছ কিন্তু….
রবিঃতোমাকে খোলা চুলে বেশ সুন্দর দেখায়।
–তাহলে এক্ষুনি খুলে দিচ্ছি।

রবির বলতে দেরি অহনা চুলের খোপা খুলতে দেরি নয়।অহনার চুল গুলো চারপাশে ছিটিয়ে রয়েছে কিছু চুল রবির মুখের উপর পড়ে আছে।

#To_be_continue…….
#RK9023DXWC
#অনুমতি_ছাড়া_কপি_করা_নিষেধ।
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here