#The_murderous_mafia
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ২১

এবার নিশাত গুলি নামালো আর মাহমুদলে সরি বলল।মাহমুদ আপুর কাছে গিয়ে হাতের বাঁধন খুলে দিল।

আর আপুকে বলল…
মাহমুদঃআপু তুমি এই দুই জনের সাথে লড়াই করতে পার নি?RK তোমাকে যেভাবে ট্রেনিং দিয়েছে আমার জানা মতে তুমি বিশ জনকে অনায়াসে মাটিতে ফেলে দিতে পারবে।
আপুঃওরা দুই জন নয়।
মাহমুদঃকিহ দুই জন নয় তাহলে কত জন আর বাকিরা কোথায়?
আপুঃওরা বারো জন।বাকিরা আমা রুমে কয়েক জন হয়তো মারাও গেছে।

নিশাত মাহমুদের কথা শুনে অবাক কারণ মাহমুদ বলেছিল RK আপুকে ট্রেনিং দিছে তাহলে তো আপু RK কে চেনে।নিশাত আপুকে বলে ফেললো…
নিশাতঃআপু তুমি RK কে চেন?
আপুঃহ্যাঁ রবি হচ্ছে RK…
কথাটা শুনে নিশাত আরো অবাক।এত দিন পাশে ছিল তাও বুঝতে পারে নি RK আসলে কে।সে ভাবছিল RK অন্য কেউ।

মাহমুদঃচল তোমার রুমে যায় কার এত বড় সাহস একটু দেখে আসি।

এই বলে মাহমুদ আপু আর নিশাত আপুর রুমে গেল।দশ জনের মধ্যে ছয় জন মারা গেছে।বাকি চারজন শ্বাস নিচ্ছে কথা বলতে পারছে না।তাতে কিছু আসে না ওটা বেঁচে থাকলেও মরবে তার থেকে এভাবে মরে গেলে আরো ভালো।

মাহমুদঃআপু তুমি সবাইকে তো মেরে দিলে তাহলে ওরা দুই জন কিভাবে তোমাকে বেঁধে নিল?
আপুঃওরা তোর লোক।আমি মনে করছি তুই ওদের পাঠিয়েছিস।আমি এসে চেয়ারে বসলাম।ওরা দুই জনও বসল হঠাৎ একজন আমার মুখে রুমাল শুকিয়ে দিল তারপর তারা আমাকে বন্দী করতে পারল।নয়তো বারো জনকে মারা আমার কোনো ব্যাপার না।কিন্তু তুই এত রাতে কেন আসলি?

মাহমুদঃরবি ফোন দিয়ে বলল তোমার উপর হামলা হতে পারে।আর আমার এক লোক বিশ্বাস ঘাতক ছিল তাই ওকে মেরে দিয়ে এখানে আসলাম।আর এসে কি হল তা তো দেখলেই।

আপুঃরবি কোথায় এখন?
মাহমুদঃতুমি তো জান থাইল্যান্ডে গেছে।
আপুঃহ্যাঁ জানি কিন্তু ঠিক আছে তো সে।আমার উপর হামলা হলে তার উপর ও তো হতে পারে।
মাহমুদঃনা তার উপর হয় নি বরং সে আরেক জনের উপর করতে গেছে।

আপুঃমানে?
মাহমুদঃসে এখন মিশনে গেছে হয়তো এতক্ষণে মিশন শুরু হয়ে গেছে। এসব নিয়ে চিন্তা করো না।তুমি রবির রুমে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়।আমি তোমার বিপরীত রুমটাতে আছি।
আর নিশাত তুুইও ঘুমিয়ে পড়।চিন্তা করিস না এসব সাধারণ ব্যাপার আর হ্যা RK যে রবি এটা ভুলেও কাউকে বলিস না।বললে ওর ক্ষতি হবে তুই নিশ্চয়ই চাস না তার ক্ষতি হউক।
নিশাতঃওকে ভাইয়া কাউকে বলব না।যাও তোমরাও ঘুমাও।

সবাই নিজেদের রুমে চলে গেল।লাশ গুলো পড়ে আছে।যারা বেঁচে আছে তারাও কিছু সময়ের মধ্যে মারা যাবে।

এই দিকে অনেকক্ষণ ধরে ভেতরে তারা কি বলছে তা আমি আর রাশেদ শুনছি।তাদের প্ল্যান আছে নারী পাচার করার।রাফায়েল স্যারের মেয়ে ওদের প্রধান টার্গেটে আছে। তাদের মিটিং শেষ হতেই রাশেদ আর আমি ভেতরে ঢুকে গেলাম।যেটা ভেতরে থাকা কোনো শত্রু আশা করে নি।অবশ্য ভেতরে থাকা আমার লোক গুলো জানত।আমরা ভেতরে যেতে সবাই ভয়ে কিছু টা পেছনে গেল।

তাদের বস আমাকে দেখে ভালো সাজার চেষ্টা করলো,আমাকে বলল..

বসঃভাই আপনি এখানে?আমাকে বললে আমি চলে যেতাম আপনার কাছে।
রাশেদঃভাবলাম আমরা না হয় একটু দেখা করে যায় তাই চলে এলাম।
বসঃতাহলে হাতে গুলি কেন?
আমিঃতোদের সবাইকে চিরতরে বিদায় জানাতে এলাম।মেয়ে পাচার করবি আমার বোনের উপর হামলা করাবি আমাকে মারার প্ল্যান করবি তাহলে তোদের বাঁচিয়ে রেখে কি লাভ বল?
বসঃতাহলে সব জেনেই গেছিস।
রাশেদঃআমাদের কাছে সব পৌঁছে যায়।তোদের থেকে কয়েক পা এগিয়ে চলি আমরা।
বসঃ এটাই ভুল করলি যে এখানে তোরা একা এসে। এখন তোরা দুজনে এখান থেকে লাশ হয়ে ফিরতে পারবি।তোদের কফিন ঠিকই বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিব চিন্তা করিস না।আর প্ল্যান করে যা করার কথা ছিল তা করতে হবে না। আর তোদের আরেকজন মাহমুদ, তাকেও মেরে দেবে সময় করে….

আমিঃ তুই এখনও বোকা রয়ে গেলি পারলে সামনে এসে দেখা তো তুই এখন দাড়িয়ে আছিস। পরে বসার সময় পাবি ন।
বসঃমানে?
আমিঃ মানে টা খুব সোজা তোরা এখন সবাই এখান থেকে লাশ হয়ে ফিরবি তাও মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে।
বসঃ পুরো পাগল হয়ে গেলি নাকি তোরা মাত্র দুইজন আর আমরা এখানে গুণে শেষ করতে পারবি না। বাইরেও আছে কি করতে পারবি তোরা আমাদের?

রাশেদঃ আমাদের কিছু করতে হবে না যা করার আমাদেরই ইশারা পেলেই সবাই করে নিবে। তোদের মধ্যে আমাদের লোক আছে।তারাই আজ তোদের মেরে মাটি চাপা দেবে।
বসঃ মানে কি বলছিস বিশ্বাস ঘাতক এখানে?
আমিঃ তুই কি ভাবলি শুধু একাই খেলতে জানিস আর আমরা খেলতে জানিনা?

বসঃ ঐ তোরা দাঁড়িয়ে কি দেখছিস মেরে দুইটাকে মাটি চাপা দিয়ে দেয়।(তার লোক গুলোকে বলল)

বসের কথা শুনে লোক গুলো আমাদের দিকে আসতে লাগলো। কিন্তু ঠিক আমাদের সামনে আসতেই চারজন এক সাথে মাটিতে পড়ে গেল।সবাই ভয়ে কাঁপা শুরু করল। কারণ তারা বুঝতে পারল এখানে আমরা দুই জন নয় আরো অনেকে আছে।

আবারো কয়েকজন সামনে আসতে তাদের মাথায় আড়াল থেকে আমার লোকেরা শুট করে দিল।এবার খুব বেশি ভয় পেয়ে গেলো সবাই।সবাই নিজের হাতে থাকা গুলি আমাদের দিকে থাক করতেই সবগুলো দুই সেকেন্ডের মধ্যে মাটিতে পড়ে গেল।আর দুই জন মাত্র দাঁড়িয়ে ছিল।সাথে তাদের মধ্যে মিশে থাকা আমার লোক গুলো।

মাত্র দুই জন শত্রু দাঁড়িয়ে আছে আমরা দুই জন ওদের সামনে গেলাম।বেশি কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে বললাম”কেউ যদি আমার দেশ আমার পরিবার কিংবা আমার দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকায় তাহলে তার চোখ আমার হাতে চলে আসে।গুড বাই….

আমরা দুই জন ওরা দুই জনকে শুট করে দিলাম।লাশ গুলো লুকিয়ে ফেলতে বলে আমি আর রাশেদ চলে এলাম।সাথে আমার স্পেশাল লোক গুলোকেও নিয়ে এলাম।তাদের আস্তানায় পাঠিয়ে দিয়ে আমি আর রাশেদ নিজেদের ভাড়া নেওয়া বাসায় চলে এলাম।অবশ্য এখানে রাশেদের দুইটা বাসা আছে কিন্তু সেগুলো রাফায়েল স্যারের থেকে একটু দূরে তাই এখানে বাসা নিলাম।

রাত অনেক হয়েছে তাই রাফায়েল স্যারকে আর বিরক্ত করি নি।রুমে এসে দুই জন ঘুমিয়ে গেলাম।সকালে ঘুম থেকে ওঠে রাফায়েল স্যারের সাথে দেখা করতে গেলাম।স্যার গার্ড দের আগে বলে দিয়েছিল আমাদের পথ না আটকাতে তাই কেউ আটকায় নি।স্যারের সামনে গিয়ে বসে পড়লাম।স্যারের কথে কথা বলতে যাচ্ছিলাম তখনই একটা মেয়ে এলো আমি আর রাশেদ দুই জনই অবাক মেয়েটাকে দেখে।আমরা অবাক হয়ে মেয়েটার দিকে তাকালে রাফায়েল স্যার বলল..

স্যারঃতোমরা এভাবে তাকিয়ে কি দেখছ ও আমার মেয়ে।
আমিঃস্যার এই মেয়েটার ছবি পাইছি আমরা।
স্যারঃভালো করে বল।

আমিঃকাল রাতে আমি আর রাশেদ একটা মিশনে গেছি।যে আপনার ফোনে আপনার মেয়েকে কিডন্যাপ করার হুমকি দিছে সে আমাকেও ফাঁসিয়েছিল। কাল রাতে ওদের সবাইকে মেরে দিছি।

স্যারঃতোমরা মিশনে গেছ আমাকে না জানিয়ে?
আমিঃস্যার এটা আমরা দুই জন জানতাম আর এটা তেমন বড় কিছু না তাই বলি নি।

স্যারঃওকে তবে আমাকে বললে ভালো হতো।আজ রাতে মিশন আছে ভুলে যেও না।

রাশেদঃজ্বী স্যার।স্যার আমাদের কাছে কিছু মেয়ের ছবি আছে মেয়ে গুলো ওই মাফিয়াদের টার্গেটে ছিল।

রাশেদ মেয়েগুলোর ছবি স্যারকে দেখালে স্যার অনেক মেয়েকে চিনতে পারে।আমরা স্যারের সাথে কথা বলে আবারো নিজেদের বাসায় চলে এলাম।

বাসায় এসেই আমি আপুকে ফোন দিলাম।
আমিঃহাই আপু কেমন আছ?
–ভালো তুই কেমন আছিস।আর কোনো মিশনে গেছিলি নাকি?
আমিঃহুম গেছিলাম।সবাইকে শেষ করে দিয়ে ফিরছি।আচ্ছা তুমি ঠিক আছো তো কেউ তোমার উপর হামলা করতে চেয়েছিল তাই মাহমুদ কে পাঠলাম।
আপুঃভালোই করেছিস সে না আসলে অনেক বর সমস্যা হতো।
আমিঃহামলা হয়েছে নাকি?
আপুঃহুম।সে ঠিক মতো আসছে তাই বেঁচে গেলাম।
আমিঃওকে সাবধানে থেকো আর আমার রুমে থেকো।

আপুর সাথে কথা শেষ করে ফোন কেটে দিলাম।অপেক্ষা করতে লাগলাম।মিশনের জন্য। প্রস্তুতি নিলাম স্যার রাশেদ আর আমাকে ভাগ করে দিল।আজকে রাতে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সব মাফিয়া থাইল্যান্ডের একটি শহরে দেখা করতে আসবে সেই সময় আমাদের মিশন শুরু হবে।

রাত হতেই সবাই নিজের পজিশন নিয়ে নিলো।নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের কাজ শুরু হবে।এক এক করে সব মাফিয়া আসতে শুরু করলো।মোট ষাট জন মাফিয়া আসার কথা।সবাই এসে গেছে মাত্র দুই জন বাকি। কিছু সময় পর ওরা দুই জন এক সাথে আসলো।

ওরা ভেতরে যেতো দেরি আমার সামনে থেকে হামলা হতে দেরি নয়।রাশেদ পেছনে আছে লোক নিয়ে আমি সামনে।আর স্যার নিজের ঘরে আরামে ঘুমাচ্ছে।

ভেতরে থাকা মাফিয়ারা বুঝতে পারে নি কি হচ্ছে কারা আর কোথা থেকে তাদের উপর গুলি করছে কেউ বুঝতে পারে নি।অনেকে ইতোমধ্যে মারা গেছে কয়েক জন পেছনের দরজা দিয়ে পালাতে চাইলে পেছন থেকে রাশেদ হামলা করে।মিনিট দু’একের মধ্যে নিমিষেই রক্তের বন্যা বয়ে গেল।কোনো মাফিয়া আর বেঁচে নেই।

মিশন শেষ করে সকালে স্যারের কাছে গেলাম। স্যার আমাদের মিশনে অনেক খুশি হয়েছে।স্যারের থেকে বিদায় নিলাম।আর আন্ডার কভার এজেন্ট থেকে রাশেদ আর আমি পদ ত্যাগ করতে চাইলে স্যার না করে।কারণ এই অন্ডার কভার এজেন্টের পরবর্তী প্রধান আমি হব তাই।আমি না থাকলে রাশেদও থাকবে না আর আমি থাকলে সেও থেকে যাবে।পরে বাধ্য হয়ে থেকে যেতে হলো।হয়তো সারাজীবন থেকে যেতে হবে থাইল্যান্ডে…..

আজ বাংলাদেশে চলে যাব রুমে এসে ব্যাগ গুছিয়ে নিলাম।মাহমুদকে ফোন দিলাম বাংলাদেশে চলে যাব বলে।মাহমুদ ফিরতে নিষেধ করলো।কারণ জানতে চাইলে বললো পিকাসো থাইল্যান্ডে আছে।খবরটা শুনে ভালো লাগলো আবার খারাপও লাগলো যদি আমার সমস্যা হয়…

আপু আর রাশেদ কে থাইল্যান্ডে চলে আসতেই বললাম। কারণ আমি পিকাসোর সামনে যেতে অনেক সমস্যায় পড়তে পারি।আর মাহমুদ সাথে থাকলে অনেক কিছু বলতে পারবে আমাকে পিকাসোর অবস্থান সমন্ধে। আপুকে ফোন দিয়ে বলে দিলাম এক্ষুনি প্লেনে ওঠতে।হঠাৎ মনে হলো প্লেনে করে আসলে অনেক সময় লাগবে তাই মাহমুদ কে একটা মেসেজ দিলাম।যেটাতে লেখা ছিল আমার পার্সোনাল হেলিকপ্টারের ঠিকানা।

বিকাল হতে আপু মাহমুদ আর নিশাত হেলিকপ্টার নিয়ে চলে এলো।নিশাতের কথা আমার মনেই ছিল না।রাতে পিকাসো আমাদের কাছাকাছি চলে আসবে আর সে সময় আমাকে পিকাসোর সামনে যেতে হবে।কিন্তু ঐ সময় পিকাসো একটু বেশি সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।রাতের বেলায় পিকাসোকে কেউ কনট্রোল করতে পারে না।তাই সিন্ধান্ত নিলাম সকালে যাব তাও হেলিকপ্টার নিয়ে পিকাসোর সামনে।

সকালে উঠে সবাই পিকাসোর সামনে যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে গেলাম। রাশে, মাহমুদ আর আমি পিকাসোর সামনে যাবো। আপু আর নিশাত বাসায় থাকবে।

মাহমুদ একটা গাড়িতে পাঁচ টা কম্পিউটার বসালো পিকাসোর অবস্থা ট্রেস করতে হবে। মাহমুদ কম্পিউটারের সামনে বসে পড়লো।রাশেদ আর আমি ওই গাড়িতে করেই পিকাসোর দিকে যাচ্ছি। পিকাসোর অবস্থা এখান থেকে প্রায় চল্লিশ কি.মি. দূরে।

আমরা গাড়ি নিয়ে যতই সামনের দিকে যাচ্ছি ততই আমার মাথা ভারী হয়ে আসছে। বেশ কিছু সময় গাড়ি চলার পর হঠাৎ আমার জ্ঞান হারিয়ে গেল। মাহমুদ আর রাশেদ পানি দিয়ে আমার জ্ঞান ফিরিয়ে আনলো। গাড়ি চলতেছে তার আপন গতিতে।

আরো পাঁচ মিনিট গাড়ি চলার পর আমার শরীরটা কেমন যেন অবশ হয়ে আসছে। একটু পর পর মাথাটা ঘুরতেছে…..

#To_be_continue…….
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here