#The_murderous_mafia
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ১০
রাশেদ আর মাহমুদও আমার পেছন পেছন আসল।আমি ওদের বললাম এমপির উপর নজর রাখতে আর কে বা কারা ফোন দেয় সে ব্যাপারে খবর নিতে। আমি বাসায় চলে এলাম।খেলা এবার শুরু হবে আসল খেলা।
আমি জানি এপমির ছেলে সাকিব ও তার বন্ধুরাও অনেক কিছু জানে এখন তাদের তুলে আনলে অনেক কথা বের করা যাবে তাই মাহমুদকে পাঠালাম তাদের তুলে আনতে।মাহমুদ ঠিক সময় মতো করে তুলে আনলো সাকিবের তিন বন্ধুকে। সাকিব আর তার তিন বন্ধুকে এক জায়গায় বেঁধে রাখল । প্রথমে তাদের ভালো করে বললেও তারা মুখ খোলেনি পরে তাদের মেরে হাতের নখ উঠিয়ে নিলে তারপর মুখ খুলতে বাধ্য হল।তারপর তারা বলে দিল কোথায় কোথায় হামলা হবে তা তারা আগে থেকেই জানে যদিও এমপি এসব ব্যাপারে জানে না ফলে তারা বলে দেয় কোথায় কোথায় হামলা হবে আর কিভাবে হামলা হতে পারে? এমনকি ওখানে বোমা হামলা হতে পারে প্রয়োজন হলে…..
তাদের থেকে এসব শুনে মাহমুদ আমাকে এসব ব্যাপারে জানাই আর আমি বুঝে যাই কোন কোন জায়গায় বোমা হামলা ভালোভাবে করতে পারবে আমিও সে জায়গায় মানুষ বসিয়ে দিলাম।আবার এমনও হতে পারে এমপির ছেলে আমাদের ভুল পথে চালিত করতাছে যাতে হামলা সঠিক ভাবে চালিয়ে সফল হতে পারে।
আমিও কয়েকটা জায়গা সন্দেহমূলক ভাবে চিহ্নিত করে সেই জায়গার মধ্যেই রাশেদ মাহমুদকে পাঠালাম। তারা সেই জায়গাগুলো ভালোভাবে পরীক্ষা করে দেখলো কোন ধরনের বোমা বা এরকম কিছু আছে কিনা। কিন্তু তারা এমন কিছু না পেয়ে ফিরে আসলো। তাদেরকে চোখ রাখতে বললাম তাও ওই স্থান গুলোতে। হয়তো এখন নাই কিছুক্ষণ পরে হয়তো আবার বোমা হামলা চালাতে পারে আর রাতের দিকে ওদের বেশি নজর রাখতে বললাম এই স্থান গুলোতে।
সাকিব ও তার বন্ধুদের দিয়ে অনেক কিছু জানতে হবে। আমরা সামান্য এই টুকু নিয়ে প্রতিরোধ করতে পারবো না।কারণ আমাদের খুব সতর্কতার সাথে এগোতে হবে।
কাল হামলা হবে দেশের বিভিন্ন স্থানে।রাতের দিকে এমপির কাছে গেলাম আমি আর রাশেদ। এমপিকে বললাম তারা কোথায় কোথায় হামলা করবে জানতে হবে।যদিও সাকিবের থেকে আমরা অনেক কিছু জেনেছি।এমপিকে ফোন দিতে বললে সে না করে।তারপর আর কি করার ভিডিও কল দিলাম মাহমুদ কে সাকিব আর তার তিন বন্ধু কে বেঁধে রাখার ভিডিও দেখালাম।এমপির চোখ এবার কপালে ওঠে গেল।যদি আমাদের কথা না শুনে সাকিবকে মেরে দেওয়ার হুমকি দিতে সে বলল ওরাই একটু পর ফোন দিবে।এদিক থেকে ফোন দেওয়া যাবে না।কারণ তারা নিজের ফোন থেকে এমপির সাথে যোগাযোগ করে না। ল্যান্ড লাইন থেকে ফোন করে।
এমপির কথা শুনে আমি আর রাশেদ কিছু সময় বসে রইলাম।কোনো ফোন আসছে না।প্রায় ত্রিশ মিনিট পর একটা ফোন আসল কিন্তু সেটা তারব স্ত্রীর। তার স্ত্রীর সাথে কথা বললো তার স্ত্রী বলল সাকিব আর তার তিন বন্ধুকে খোঁজে পাচ্ছে না।আমি এমপিকে ইশারায় বললাম যাতে বলে তার সাথেই আছে।এমপি তাই বলল।তারপর ফোন কেটে দিল।তার পাঁচ মিনিট পর আবারো ফোন এলো সেটা অন্য কেউ নয় ভারতীয় ল্যান্ডলাইন থেকে করা হয়েছে।এমপির মাথায় গুলি ঠেকিয়ে বললাম আমরা যা বলছি তাই করবি যদি একটু ভুল করে তাহলে সাকিবের মাথার খুলি উড়ে যাবে।এমপি বাধ্য হয়ে ফোন রিসিভ করল….
এমপিঃজ্বি ভাই বলেন আমাদের মিশন কাল কোথায় হবপ আর কোন সময় হবে?
–কাল রাত এগারোটা বাজে। আর হামলা হবে সব বিমানবন্দরের কাছে স্থান হলো চট্টগ্রাম এক নাম্বারে থাকবে।খুলনা,রাজশাহী আর দিনাজপুর। এই স্থান গুলোতে আমাদের লোক পৌঁছে গেছে।বন্দরের কাছে আমাদের লোক কাল রাতে বোমা লাগাবে।প্রতি বোমায় ৮-১০ জন করে মরবে।আর মানুষ সেদিকে ব্যস্থ থাকলে আমাদের আসল কাজ গুলো করতে হবে।
এমপিকে ইশারায় বললাম প্রতি বন্দরে কত জন করো তাদের লোক আছে জানতে।এমপি জিজ্ঞেস করলে তারা বলে সব বন্দরে ৫ জন করে থাকবে কিন্তু চট্টগ্রামে থাকবে ২০ জন কারণ ওখানে দুইটা বড় মাফিয়া আছে।তার এলাকায় কিছু করাও আমাদের কাছে তত সহজ হবে না তাই ওখানে আমার লোক গুলো ছদ্মবেশ ধরে যাবে।আর আমাদের আর্মসের যাতায়াত হবে তার পাশে মিয়ানমারের সীমানা ঘেঁসে কক্সবাজার দিয়ে।সমুদ্র পথে এই কাজ চলবে আর এরিয়া যখন তোমার ঠিক মতো মাল গুলো নিরাপদে নিয়ে নিবে।
এমপিঃজ্বি ভাই এটা নিয়ে চিন্তা করতে হবে না।
আমি আবারো বললাম তাদের লোক গুলো কোনো আলাদা পোশাকে থাকবে কি না জিজ্ঞেস করতে।ওরা বললো তাদের লোক গুলো সবাই ওয়েটারের ড্রেসে থাকবে।তারপর ফোন কেটে দিল।
আমি বুঝতেছিনা ওরা আসলে কি এমন করবে?গোপন মিশনে যখন আছে তখন এত সহজে তো এমন তথ্য দিয়ে দেওয়া পসিবল না।তাহলে ওরা বলল কেন?
হঠাৎ মাহমুদ ফোন দিল,অসময়ে ফোন দেওয়াই তার কাজ।আমি ফোন রিসিভ করে কানে দিলাম…..
মাহমুদঃওরা যা বলল সব মিথ্যা।
আমিঃকারা কি মিথ্যা বলছে?
মাহমুদঃএমপির ফোন দিয়ে কে কি বলছে আমি সব শুনেছি আর ঐ দিক থেকে যারা ফোন দিছিল তাদের কথাও।তারা আমাদের ভুল পথে নিতে চাচ্ছে। কারণ ওরা যে স্থানে হামলা করবে ওই স্থান উল্লেখ করে নি।
আমিঃকি বলবি স্পষ্ট করে বল।
মাহমুদঃযারা হামলা করার খবর দিছে তাদের লোকেশন আমি ট্রেক করেছি।আর কোন নাম্বার থেকে ফোন আসছে তাও আমি দেখলাম।ঐ স্থানে যত ফোন ছিল সবার ফোনে একটা অটো সফটওয়ার ইনস্টল করে দিয়েছে।আর ঐ এপস দিয়ে আমি সবার ফোনের সব তথ্য হ্যাক করেছি।প্রায় বিশ জন ছিল ঐ জায়গায় সবার মধ্যে পাঁচ জনকে সিলেক্ট করলাম।যাদের ফোনে এমন তথ্য আছে সবার ফোনে আমি ঐ এপসটা ওপেন করে দিয়েছি।সেখান থেকে জানলাম ওরা হামলা করবে কোথায় তা বললো।তবে তারাও সিওর না কারণ ওদের বস এসব নিয়ে এখনো তাদের কিছু জানায় নি।তাদের বস এসব প্ল্যান করে রাখে। কাজের ঠিক কিছু সময় আগে তারা জানতে পারে হামলা কোথায় হবে।
আমিঃতাহলে এই এমপিকে যে বলল কোথায় হবে তা কি সব বানোয়াট ছিল?
মাহমুদঃহ্যা সব মিথ্যা কারণ এই এমপিকে তারা একটা খুটি হিসেবে ব্যবহার করছিল। আসল খুটি তো অন্য কেউ।আর কে সে খুঁটিকে আমরা খুব তাড়াতাড়ি ট্রেস করব।এক কাজ কর এমপি আর তার ছেলে আর বন্ধুদের রনির হাতে দিয়ে আয়।আর ওদের ফোনটাও দিয়ে আয়। কখন কার সাথে কথা বলছে এসব আমরা শুনতে পাব আর নিজেদের মধ্যে কথা বললেও শুনব।কিন্তু আমাদের মূল কাজ আগে করতে হবে।যারা হামলা করতে চাই তাদের বের করতে হবে।তোরা আমার বাসায় চলে আয়।
তারপর মাহমুদের কথা মতো এমপি আর ওর ছেলেদের রনির হাতে দিয়ে আমি আর রাশেদ মাহমুদের বাসায় চলে গেলাম।কারণ মাহমুদের বাসায় অনেক কম্পিউটার আছে ওগুলো দিয়ে অনেক কাজ করা যাবে।
মাহমুদের বাসায় আমরা তিনজন বসলাম, আন্টি চা এনে দিল।উনি জানে না ভালো করে আমি কে শুধু জানে আমিও মাহমুদের বন্ধু।চা খেয়ে মাহমুদের কম্পিউটার রুমে ঢুকে গেলাম।
মাহমুদ সব কম্পিউটার চালু করে দিল তার সফটওয়্যার টার কাজ গুলো দেখাচ্ছে আমাদের।মাহমুদ ভারতীয় লোক গুলোর ফোন কোথায় আছে তা ট্রেক করেই রেখেছে এমনকি কোথায় যাচ্ছে আশে পাশে কে কি কথা বলছে সব ওই সফটওয়্যার আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে।
বাংলাদেশে হামলা করার ব্যাপারে আলোচনা শুরু হল।তা আমরা এখানে বসেই শুনতে পাচ্ছি।
–ভাই কাল হামলা হবে সারা বাংলাদেশে।কিন্তু এখনো আমরা নিশ্চিত হয় নি হামলা কোথায় করতে পারব।
~~হুম আমি ম্যাপ করে রাখছি চল দেখাচ্ছি কোথায় কোথায় করা যাবে।
ম্যাপের কথা শুনে আমি কম্পিউটারে হাত দিলাম।তারা কিভাবে ম্যাপটা করল তা আমরা দেখলে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হবে।তাই ঐ লোকেশনে ক্যামরা আছে কি না দেখলাম। কিন্তু তেমন কোনো ক্যামরা ওখানে নেই তবে পাশের বিল্ডিংয়ে ক্যামরা আছে।ওই ক্যামরা হ্যাক করলাম ওখানে দেখা যাচ্ছে অনেক গুলো ড্রোন ওড়াচ্ছে বাচ্চার। এটাকে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগালাম।সব ড্রোন দেখলাম কোনো কাজের না কিন্তু পাশে একটা ড্রোনে ক্যামরা লাগানো।ঐ ড্রোনটাকে কনট্রোলে নিলাম।ওরা কি ম্যাপ দেখাচ্ছে দেখতে ড্রোন ওটা জানালার পাশে নিলাম।
~~এই যে ম্যাপটা এই ম্যাপের এই এই স্থান গুলোতে অর্থাৎ ঢাকা,কক্সবাজার, বগুড়া, লক্ষীপুর,সিলেট এই স্থান গুলোতে যত পর্যটন এলাকা আছে সব গুলোতে বোমা হামলা হবে।আর চট্টগ্রামে করা যাবে না।
–কেন চট্টগ্রামে করলে কি সমস্যা ওখানে তো আরো জনসংখ্যার যাতায়াত বেশি।ওখানে হামলা হলে তো আমাদের লাভ বেশি হবে।
~~কারণ চট্রগ্রামে আমাদের লোক আছে।আর সব থেকে বড় হচ্ছে ওখানে তাদের পরিবারও আছে।যদি একটুও ভুল হয় তারা কাজ করবে না।
–বুঝলাম বস।তাহলে ঐ পাঁচ স্থানে কি হামলা হবে?
~~হ্যা ওখানেই হবে।তার জন্য আমাদের একটা স্পেশাল টিম গঠন করা হয়েছে।সবাই খুব দ্রুত গতিশীল। ওরা এই কাজে অনেক এক্সপার্ট। তাদের দিয়ে আগেও ছোট খাটো কাজ করিয়েছি সফল ভাবে।
–স্পেশাল টিম আছে আমাদের?
~~হুম সেটা তেমন কেউ জানে না কেবল আমি জানতাম কিন্তু এখন তুইও জানলি।
–কি বুদ্ধি ভাই আপনার, চমৎকার ভাই।এই বুদ্ধি দিয়ে আমরা অনেক কিছু করতে পারব।
~~হ্যা হ্যা তা করবই। আর আমাদের স্পেশাল লোক গুলোর আলাদা ট্রেনিং আছে।কাজের সময় তারা আলাদা ড্রেস পড়ে কাজ করে।
–আপনার বুদ্ধির প্রশংসা করতেই হয় ভাই।সাব্বাশ ভাই।
~~আচ্ছা শুন ওখানে আমাদের জন্য বোমা বানানো শেষ। শুধু মাত্র সময় হতেই বোমা গুলো লাগিয়ে দিবে আর রাত এগারোটা হতেই ফুঁ……
আমি ওদের কথা স্পষ্ট শুনলাম। কিন্তু একটা জিনিস মাথায় আসছে না পর্যটন এলাকায় হামলা করে মানুষ মারতে চাইলে দিনে মারার কথা কিন্তু রাতে কেন?
নিশ্চয় এখানেও কোনো চক্কর আছে তাদের।তখনই তারা আবার বলতে শুরু করল….
–ভাই আমার মনে হয় হামলা দিনে করলে ক্ষতি বেশি হবে ওদের।
~~আরে বোকা হামলা রাতে করব যাতে সফল ভাবে করতে পারি।দিনে করলে এত সহজ হবে না।আর আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের সৌন্দর্য কে নষ্ট করা।আর দেশের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া।মানুষ ঐ দিকে ব্যস্থ থাকবে আর আমার লোক ঐ সুযোগে ড্রাগস নিয়ে যাবে।সাথে আর্মস তো থাকবেই।একসময় তারা অসহায় হয়ে পড়ে তাদের দেশকে আমাদের অঙ্গরাজ্য করতে বাধ্য হবে।আর আমরা সে সুযোগ পেতেই এই হামাল করব।
আমার সাথে থাকা মাহমুদ রাশেদ এসব শুনে ভয় পেয়ে গেল কিন্তু আমি তো আর ভয় পাচ্ছি না।কারণ আমি জানি কিভাবে প্রতিরোধ করতে হবে। শুধু সময়ের অপেক্ষা। দেখা যাক তারা কি করে আমরা কি করতে পারি। কাল রাতেই সেই হামলা হবে।তাদের বলা স্থান গুলোতে আমাদের লোক থাকবে পাশাপাশি তারা যে স্থান গুলোর কথা বলে নি কিন্তু সন্দেহ জনক জায়গা সেখানেও লোক থাকতে হবে। কারণ বলা তো যায় না কখন কোন দিকে তারা ঘুরে যায়।
আমি মাহমুদকে বললাম ওদের সাথে যত ফোন আছে সবগুলো হ্যাক করতে। তারা কি আদৌ হামলা ঐ স্থানে করবে নাকি অন্য কোথাও করবে আর কাল রাতে করবে না অন্য সময় তা এখানো বুঝা মুশকিল।আগে তাদের বলা স্থানে আমাদের লোক পাঠাতে হবে।
সবার বলা কথা গুলো আমরা তিনজন ভালো করে শুনলাম।তারপর কি করা যায় বা কি করলে হামলা থেকে আমার দেশকে রক্ষা করতে পারি তা খুব সুক্ষ্ম ভাবে সিন্ধান্ত নিলাম। আমার কথা মতো রাশেদ আর মাহমুদ দু’জন নিজের সব লোককে কাল সকালে বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দিবে।আমিও এবার অন্য রুপে ফিরব তাদের মাঝে।
সকালে সব লোক ছড়িয়ে পড়লো। সবার সাথে সারাক্ষণ যোগাযোগ আছেই।যদি একটু সন্দেহ হয় কাউকে তাহলে তাকে তোলে নিবে।সবার অজান্তে।
দিনের বেলা তাই আমি বসে নিজের রুমে ল্যাপটপ স্কিনে চোখ বুলাচ্ছি।ঢাকা, কক্সবাজার, বগুড়া,লক্ষীপুর,সিলেট বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ দেখতেছি।হঠাৎ একটা জিনিস সব স্থানে মিল দেখলাম।
#To_be_continue…….
#গল্পটা_কেমন_হল_জানাবেন।
#ভালো_লাগলে_শেয়ার_করবেন।
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।