#The_murderous_mafia
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ০৩
তারপর আমি আর আন্টি সেখান থেকে চলে এলাম আন্টির বাসায়।রুমে ডুকে চিরকুটে কি লেখা আছে পড়তে চিরকুট হাতে নিলাম।লিখা আছে……
প্রিয় ভাইয়া,জানিনা ক্ষমা করবে কি না!কিন্তু আমার এছাড়া আর কোনো উপায় নেই।জানোয়ার গুলো আমাকে বাঁচতে দিল না।অনেক চেয়েছিলাম বাঁচতে। তাদের পায়েও ধরেছিলাম।কিন্তু তারা আমাকে ছাড়ে নি।তাদের ডাকে সাড়া না দিলে ভিডিও গুলো ভাইরাল করার কথা বলে। আমি যখন মামলা করব বলি তখন এমপি আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দেয়।আমাকে বলে যাদি আমি মামলা করতে থানায় যায় তাহলে বেঁচে ফিরতে পারব না।এমন কি আমার পরিবারের কাউকেও বাঁচতে দিবে না।সবাইকে মেরে ফেলবে।
এমপি অনেক ভয়ংকর। তার কাছে কেউ যেতে পারে না।সে সবার কাছে আসে।এমপির অনেক সিক্রেট আমি জেনে গেছি।দিনের বেলায় সে নিজেকে এমপি ভালো মানুষ দাবি করে কিন্তু রাতের বেলায় সে মাফিয়া হয়ে যায়।মদ,হিরোইন, ইয়াবা সহ মাদক দ্রব্যের কারবার ই তার রাতের কাজ।এমপির ফোন পেয়ে আমি এমপির বাসায় যায়, যেতে চাইনি কিন্তু তোমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তাই যেতে হয়েছে।তোমার উপর তাদের লোক নজর রাখছে।তারা সবাই গুলি নিয়ে তোমার উপর নজর রাখছে।যদি আমি ভুলেও মুখ খুলতে যায় তাহলে আগে তোমাকে মেরে ফেলবে পরে পরিবারের সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তুমি সাবধানে থেকো ভাইয়া।
আর হ্যা ঐ এমপি অনেক বড় বড় প্রাচার কারিদের সাথে জড়িত থাকে।মেয়ে প্রাচারও করে।আমাকেও প্রাচার করার হুমকি দেয়।কিন্তু আমি তাদের বিরোদ্ধ কিছু বলতে পারি নি।করতেও পারি নি কিছু। জানি ভাইয়া তুমিও করতে পারবে না।যদি কখনো পারবে বলে মনে হয় তাহলে ওদের সবাইকে শাস্তি দিও।তুমি না পারলেও এমন কাউকে বলিও যে ওদের শাস্তি দিতে পারবে।
ভয় পাবে না জানোয়ার গুলোকে।হারাম করে দিবে তাদের ঘুম।
ক্ষমা করে দিও ভাইয়া আমায়।জানি আমি ভুল পথটা বেছে নিয়েছি কিন্তু এছাড়া আমার আর কিছু করার ছিল না।সরি ভাইয়া……..
……………ইতি তোমার অবাধ্য বোন তসিয়া।
চিরকুটটা পড়ে আমার চোখে দিয়ে পানি চলে এলো।কি কষ্ট না পেয়েছে মেয়েটা।শাস্তি নিশ্চয় হবে একদিন।আজ বা কাল ঠিকই হবে। হারাম হয়ে যাবে তাদের ঘুম। খেতে বসতে ভয়ে কেঁপে ওঠবে ওরা।সবাই আজ থেকে মৃত্যুর প্রহর গুনবে।সব অপরাধীর মনে ভয় ঢুকে যাবে।
এসব ভাবছি তখনই কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে পেছনে তাকালাম। আন্টি পেছনে দাঁড়িয়ে আছে।
আন্টিঃকি হয়ছে বাবা, তোমার চোখে পানি কেন?
আমিঃআসলে আন্টি তাসিয়ার মৃত্যুটা বার বার ভাবিয়ে তুলছে কত কষ্ট না পেয়েছে মেয়েটা।
আন্টিঃহ্যাঁ বাবা মন খারাপ করো না।চল নাস্তা করবে।
আমিঃআন্টি এখন ভালো লাগছে না পরে খাব আপনি যান।
আন্টিঃতা কেমনে হয় চল….
আন্টি পেছনে ঘুরতে যাবে তখনই আমার হাতের চিরকুট দেখে থেমে গেল আর আমার হাতের ওটা কি জিজ্ঞেস করল।কিন্তু আমি তেমন কিছু না, বলে এড়িয়ে যেতে চাইলে আন্টি আমার হাত থেকে চিরকুট টা নিয়ে পড়তে শুরু করল।চিরকুটের লেখা পড়ে আন্টি নিজেও কাঁদতে লাগল।
আমিঃআরে আন্টি আপনি কেন এসব পড়তে গেলেন এখন কান্না করছেন….
আন্টিঃআমি জানি ছেলেদের মন অনেক শক্ত সহজে কাঁদে না।সেক্ষেত্রে এই চিরকুট পড়ে তুমি কেঁদেছ। সেখানে আমার কান্না করাটা কি খুব অস্বাভাবিক কিছু?
আমিঃতা না আন্টি কিন্তু আপনি কাঁদলে কেমন যেন বেমানান।
আন্টিঃকেন বেমানান হবে?
আমিঃজানি না কেন বেমানান হবে তবে আপনাকে কাঁদতে দেখে আমার খুব খারাপ লাগছে।
আচ্ছা হয়ছে আর কাঁদতে হবে না এখন চলেন তো নাস্তা করব।(আন্টিকে আমি খুব ভালো করে চিনি এখানে দাড়িয়ে দাড়িয়ে কান্না করতে করতে চোখ ফুলিয়ে ফেলবে তাই নাস্তা করার কথা বলে নিয়ে আসলাম)
সবাই গিয়ে নাস্তার টেবিলে বসলাম।কাজের মেয়ে আছে সে নাস্তা দিল।সবাই এটা ওটা বলে নাস্তা করে নিলাম।
আমার খেতে ইচ্ছে না থাকা স্বত্বেও খেলাম।তারপর রুমে চলে এলাম।ফোন দিলাম রাশেকে।ফোন রিসিভ করতে বললাম,”কই তুই কাজ আছে রেডি থাকিস”।
রাশেদঃকি হয়ছে হঠাৎ এত হার্ড হলি কেন কোনো সমস্যা?
আমিঃতেমন কিছু না।দেশে ধর্ষণ বেড়ে গেছে তাই একটু মাঠে নামতে হবে।এই আরকি….
রাশেদঃতুই মাথা ঠান্ডা করে কি বলছিস?মাঠে নামবি মানে তুই না আপুকে ওয়াদা দিছিস এসব করবি না।
আমিঃহ্যাঁ ওয়াদা দিছিলাম কিন্তু আপু নিজে বলল এসব প্রতিরোধ করতে।
রাশেদঃতাহলে কি পোলাপান রেডি করব?
আমিঃতার দরকার নেই।আপতত তাদের নিয়ে কোনো কাজ করব না।আমি যে এখনো বেঁচে আছি তা তোরা মাত্র কয়েক জন জানিস।ওরা তো কেউ জানে না।
(সবাই জানে R.K মারা গেছে,এক্সিডেন করে,নদীতে গাড়ি পড়ে গেছিল তারপর আর কেউ খুঁজে পাই নি)
রাশেদঃওকে। তবে যা করবি সাবধানে সব।আর মাহমুদকে বলতে হবে নাকি এসব ব্যাপারে?
আমিঃনা আপাতত মাহমুদের কাজ নেই তবে যদি কাজ পড়ে ওর তখন বলব নে।তাও একটু রেডি থাকতে বলিস।
রাশেদঃওকে বলে দিব রেডি থাকতে।আর পুলাপানকেও রেডি করে রাখব যদি কখনো প্রয়োজন পড়ে।
আমিঃআচ্ছা। রাখছি।
ফোন কেটে দিয়ে চিরকুট টা হাতে নিলাম”আহ কত কষ্ট করে কেঁদে কেঁদে লিখেছে এই চিরকুট, আজ যদি মেয়েটা আত্মহত্যা না করত তাহলে এই চিরকুট আমার হাতে থাকত না।মেয়েটার জন্য খুব মায়া হচ্ছে। মেয়েটা চাইলে বেঁচে থেকে অনেক কিছু করতে পারত।কিন্তু ভুল পথটা বেছে নিল,অবশ্য বলেছিল বেঁচে থাকার উপায় ছিল না।কিন্তু চাইলে ছদ্মবেশ ধরতে পারতো আমার মতো”
ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেল।অনেক দিন ধরে ভার্সিটিতে যাওয়া হয় না।এখান থেকে গিয়ে ভার্সিটিতে যেতে হবে।অনেক দিন ধরে কোনো মিশনেও যাওয়া হয় না।
পরদিন আন্টির বাসা থেকে চলে এলাম।রাশেদের সাথে প্রতিদিন কথা হয়।আজ রাশেদকে আমার বাসায় আসতে বললাম।বিকালে কপি নিয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছি আপু,আমি আর রাশেদ।টিভিতে একটা খবর আসল যেটাতে বলা হল স্কুলের একটি বাসকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সকাল থেকে।বাসটি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিল। হঠাৎ গাড়িটি স্কুলে না পৌছালে স্কুল শিক্ষক বাসের ড্রাইভারকে ফোন দেয় কিন্তু ফোন বন্ধ পাই।শিক্ষক এসব বিষয় পুলিশকে জানায় কিন্তু পুলিশ প্রায় এক ঘন্টা খোঁজেও বাসটির কোনো হদিস পাইনি।
খবরটা শুনে যতটুকু বুঝলাম বাসটা কেউ কিডন্যাপ করেছে।হয়তো টাকার জন্য নয়তো প্রাচারের উদ্দেশ্যে।
রাশেদঃএখন কি করব আমরা এখনো কি বসে বসে আড্ডা দিব?নাকি এই বাচ্চা গুলোকে বাঁচাব?
আমিঃপুলিশ কি বসে বসে টাকা গুনবে?ওরা দেখি কি করতে পারে বা করে।
আপুঃওরা কিছু করবে না।টাকা গুনবে আর আরামে ঘুমাবে।
রাশেদঃতাহলে আমরা কিছু করি?
আপুঃতোমরা করতে পার তবে সাবধানে। ভুলেও কেউ যাতে বুঝতে না পারে আমার ভাই এখনো আছে।
রাশেদঃওকে আপু তুমি চিন্তা করো না।এসব আমাদের মধ্যে থাকবে।
আপুঃঠিক আছে মাথায় রাখবে কথাটা।
রাশেদঃওকে আপু।দোয়া করবে আমাদের জন্য।
আপুঃতা তো সবসময় করি।আচ্ছা তোমাদের নেক্সট মিশন কি হবে?
আমিঃভার্সিটিতে গিয়ে ক্লাস করব আর কি করব….?
আপুঃকত দিন পর আজ ভার্সিটির কথা মনে পড়ল তোর বলতো?
আমিঃনা মানে ওটাই তো মিশন…
রাশেদঃমানে?
আমিঃভার্সিটিতে প্রতি সপ্তাহে একটা করে ড্রাগস ডিল হয়।এখন আমাদের জানতে হবে কারা কার এই ড্রাগসের সাথে জড়িত। আর তাদের মূল মাথা কে।
রাশেদঃআমি একজনকে সন্দেহ করি কিন্তু জানিনা কতটুকু সত্যি।
আমিঃকাকে সন্দেহ করিস?
রাশেদঃএমপিকে।
আমিঃওহ
আপুঃওহ মানে তুইও সন্দেহ করিস নাকি?
আমিঃআমি তো সবাইকে সন্দেহ করি।
রাশেদঃএটা কি আর কখনো যাবে না?
আমিঃনা গেলেই তো ভালো।আর গেলে সে-তো সমস্যা।
আপুঃহয়ছে রাখ তোর ডাইলক।ভার্সিটিতে কখন যাবি?
আমিঃদেখি বাসটা খোঁজে একটু হলেও তো দেখতে হবে কোথায় গেছে বাসটা আর বাচ্চা গুলো কতটুকু নিরাপদে আছে।
রাশেদঃতাহলে মাহমুদকে ফোন করি?
আমিঃহুম কর বলবি বাসটা কোথায় গেছে খুঁজে পাই কি না দেখতে।আর কে নিয়ে গেছে ওটাও একটু খবর নিতে।
রাশেদঃওকে।
রাশেদ মাহমুদকে ফোন দিল।আর বাসটার খোঁজ নিতে বলল।তাই মাহমুদ বসে গেল কম্পিউটারের সামনে।
বাসের যাওয়া থেকে আসা অব্দি সব কিছু জানার জন্য পাশের বিল্ডিং, ট্রাফিক, বিভিন্ন অফিস, স্কুলে-সহ সবগুলোর সিসিটিভি ক্যামরা হ্যাক করল। তিন দিন ধরে কি হয়েছে কে বা কারা নজর রাখছে বাস বা বাচ্চাদের উপর সব ফুটেজ চেক করতে লাগল।কিন্তু দুই দিনের ফুটেজে তেমন কিছু পেল না।তবে একটা জিনিস নোট করা যাচ্ছে তা হচ্ছে একটা পাগল টাইপের লোক স্কুলের সামনে এই দুই দিন দৌড়াদৌড়ি করতেছে।এবং বাচ্চারাও পাগলটার সাথে দুষ্টামি করতেছে।এবং পাগলটাকে একটা লোক নিয়ম করে খাবার দিচ্ছে। এটা ছাড়া এই দুই দিনে তেমন লক্ষ্য করার মত কিছু নাই।
তৃতীয় দিন মানে যে দিন থেকে বাসটা নিখোঁজ সে দিনের ফুটেজ চেক করতে গিয়ে দেখে…
বাসটা বাচ্চাদের নিয়ে চলতে লাগল।পুলিশের চেক পোস্টে গিয়ে স্লো করল আবারো সামনে চলতে লাগল।কিছু সময় দিয়ে আর কিছু দেখা যাচ্ছে না।বাসটা হঠাৎ এর পর কোথায় গেল সব কিছুর ফুটেজ অদৃশ্য হয়ে গেল।মাহমুদ সব গুলো বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখল কিন্তু কোনো ফুটেজে বাসটা দেখা যাচ্ছে না।কোথায় যেন একটা গন্ডগোল আছে মনে হল।সব গুলো ক্যামরার ফুটেজ এক সাথে না পাওয়া মানে বড় কোনো কারণ আছে।
মাহমুদ সোজা আমাকে ফোন দিল।আমার বেঁচে আছি যে এটা শুধু পরিবারের বাইরে তিন জন মানুষ জানে।প্রথম হল আপনি হুম আপনি। আর মাহমুদ, রাশেদ।তাই মাহমুদ সোজা আমার নম্বারে ফোন দিল।রাশেদ নিজের বাসায় চলে গেল।আমি নিজের রুমে বসে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেছি আমার ল্যাপটপে।মাহমুদ ফোন দিতে আমি ফোনটা রিসিভ করলাম।মাহমুদ বলতে শুরু করল…
মাহমুদঃভাই দু দিনের ফুটেজে তেমন সন্দেহ জনক কিছু নেই।তবে একটা পাগল দেখলাম তাকে আবার একটা লোক নিয়ম করে খাবারও দিতে দেখলাম।আর কিছু নেই।
আমিঃতৃতীয় দিনের কি অবস্থা?
মাহমুদঃতৃতীয় দিনের ওখানে সব গোলমাল।
আমিঃকেন কি হয়েছে তৃতীয় দিনের ওখানে?
মাহমুদঃতৃতীয় দিনের ফুটেজ নেই।এমন কি পাশাপাশি সব বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ডিলেট।
আমিঃকত মিনিটের ফুটেজ ডিলেট হয়ে গেছে?
মাহমুদঃবেশি না মাত্র ১৫ মিনিট।এই সময়ে তারা সব করেছে।
আমিঃতাহলে এই সময়ের ফুটেজ রিকোভার কর।
মাহমুদঃএটা পসিবল নয়।কারণ ফুটেজ গুলো কখনো রিকোভার না হওয়ার মতো করে দিছে।রিকোভারের জন্য জোর দিলে আমাদের সিস্টেম হ্যাক হতে পারে।
আমিঃতাহলে পিকাসো কে ডিগন্যাল দিলে কেমন হয়?
মাহমুদঃতাও হবে না।কারণ পিকাসো তাদের সার্ভারের কাছেও যেতে পারবে না।কারণ পিকাসো এখন মারাত্মকভাবে আহত। যত দিন তুই পিকাসোর সামনে যেতে না পারবি ততদিন পিকাসো অর্ধ মৃত।
আমিঃপিকাসো এখন কোথায় আছে?
মাহমুদঃপিকাসোর অবস্থান বর্তমানে আমেরিকার কোনো শহরে আছে।তুই কোনো কারণে পিকাসোর কাছাকাছি গেলে তোর প্রচন্ড মাথা ব্যথা করবে এমন কি…
আমিঃজানি এমন কি আমি মারাও যেতে পারি।তাই তো আমি সব সময় পিকাসোর বিপরীতে অবস্থান করি।
মাহমুদঃতাহলে বাচ্চাদের কিভাবে খুজব এখন?
আমিঃএর জন্য আমাদের অপরাধ….
#To_be_continue…….
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।