#The_murderous_mafia
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ০২
আমিঃসত্যি বলছ তুমি?
আপুঃহুম সত্যি বলছি এমন শিক্ষা দিবি যাতে কেউ আর ধর্ষণ করার সাহস তো দূরের কথা মনেও না আনে।
আমিঃওকে।দোয়া কইরো….
আর তোমার চ্যানেলে বলে দিও।RK is back.
আপুঃনা এটা বলে দিলে সমস্যা হবে আমার।তখন সবাই বলবে আমি কিভাবে জানি। তুই কিছু নমুনা দিয়ে যাস তারপর আমি বলে দিব।
আমিঃওকে প্রথম কাজ শেষ করে বুঝে যাবে আর তখন বলতেও পারবে।
আপুর সাথে আমি অনেকক্ষণ কথা বললাম।পর দিন আবারো আন্টির বাসায় গেলাম সাথে আমি বাইক টাও আছে।খুব ফেভারিট বলেই বাইক টা সাথে রাখি এমন টাও নয়।এই বাইক থাকলে মানুষের অনেক ঝামেলা থেকে আমি রক্ষা পাব আর সব থেকে বড় কথা এই বাইক অদৃশ্য হয়ে যেতেও পারে। এমন কি আমাকেও লোক চোখ থেকে অদৃশ্য করতে পারে।আবার এই বাইকের কিছু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাও আছে। কোনো কারণে এক্সিডেন করতে চাইলে নিজে নিজে এই বাইক কনট্রোল করবে।
সেটা না হয় এক রহস্য। বলা তো যায় না এখন বলে দিলে আপনারা আবার তথ্য পাস করে দিবেন।
আমি বাইক নিয়ে আন্টির বাসায় চলে গেলাম অবশ্য আসার আগে আন্টিকে ফোন দিয়ে বললাম আমি যাওয়ার কথা।আমি যেতেই আন্টি নাস্তা দিল কেমন আছি জিজ্ঞেস করল।
আমি আন্টির সব কথার উত্তর দিলাম।আন্টিকে জিজ্ঞেস করলাম….
আমিঃআন্টি কালকে খবরে দেখলাম আপনাদের টিউশনির মেডাম টা আত্মহত্যা করেছে।
আন্টিঃহ্যা বাবা মেয়েটা খুব ভালো ছিল।কিন্তু দেখ কিছু জানোয়ারের কারণে মেয়েটাকে আত্মহত্যা করতে হল।
আমিঃতা কাল গেছিলেন মেয়েটাকে দেখতে?
আন্টিঃনা যেতে পারি নি। শুনলাম মেয়েটাকে পুলিশ নিয়ে গেছে।
আমিঃকাল নিয়ে গেলে আজ তে দিয়ে দেওয়ার কথা। তা দেখতে যাবেন না?
আন্টিঃযেতে তো হবে বাবা কারণ আমার বাচ্চাদের প্রাইভেট টিচার। না গেলে কেমন হয় আর মেয়েটাকে শেষ বারের মত একটু দেখাও দরকার তাই না বল?
আমিঃজ্বি আন্টি আমিও তাই বলছি।তাহলে চলেন গিয়ে দেখে আসি?
আন্টিঃতুমিও যাবে?
আমিঃজ্বি আন্টি গেলে তো ভালো হতে সাথে জানাজা পড়াও হয়ে যাবে।
আন্টিঃওকে তাহলে আমি ড্রাইভার কে গাড়ি বের করতে বলছি।
আমিঃঠিক আছে বলেন।
তারপর আন্টি ড্রাইভারকে গাড়ি বের করতে বলল।আন্টি রেডি হয়ে নিল আমিতে রেডি আছিই।তারপর আন্টি আর আমি নিচে এলাম।ড্রাইভার আসছে তবে তার মুখে চিন্তার ছাপ আন্টি সেটা বুঝে জিজ্ঞেস করল কি হয়ছে করিম?(ড্রাইভারের নাম)
ড্রাইভারঃনা তেমন কিছু না খালি বউ টা অসুস্থ…(মন খারাপ করে)
আন্টিঃকখন থেকে অসুস্থ?
ড্রাইভারঃআজ তিন দিন হল।বিছানায় কাতরাচ্ছে…
আন্টিঃতো আগে বলনি কেন?
ড্রাইভারঃমনে করছিলাম ভালো হয়ে যাবে কিন্তু এখন দেখছি ভালো হচ্ছে না আরো খারাপ হয়ে গেছে।
আন্টিঃআচ্ছা তাহলে রাতে তুমি বাসায় চলে যেও এখন আমরা একটা কাজে যাচ্ছি বিকালে চলে আসব আর রাতে তুমি বাসায় চলে যেও।
ড্রাইভারঃওকে মেডাম আপনি যেমনটা বলবেন।
আমিঃআন্টি উনি এখন গেলে ভালো হবে মনে হয়।তিন দিন ধরে অসুস্থ উনার স্ত্রী তো যদি এখন যায় তাহলে ভালো মন্দ জিজ্ঞেস করতে পারবে আর কিছু লাগলে তাও আনতে পারবে।
আন্টিঃতাহলে গাড়ি কে চালাবে?
আমিঃআমি পারব আন্টি।
আন্টিঃতুমি গাড়ি চালাতে পারো?
আমিঃজ্বি আন্টি পারি।
আন্টিঃতাহলে তো ভালোই হল।
আচ্ছা করিম তুমি যাও আমি রবিকে নিয়ে যাচ্ছি আর তোমার স্ত্রীর কি অবস্থা আমাকে জানাবে আর এই নাও।
কিছু টাকা দিয়ে করিমকে তার বাসায় পাঠিয়ে দিল। আমি গাড়ির ছাবি নিয়ে ড্রাইভারের সিটে বসলাম।ভাবলাম আন্টি পেছনে বসবে।কিন্তু না আন্টি সামনে এসে বসল।
আন্টিঃচল…
আমিঃআন্টি আপনি সামনে এসে বসলেন যে?
আন্টিঃতো কি পেছনে বসতে হবে?
আমিঃতা না।আমি বলতে চাচ্ছি আপনি সামনে বসে যাতায়াত করেন?
আন্টিঃআরে না ড্রাইভার থাকলে পেছনে বসি আর তোমার আঙ্কেল থাকলে সামনে বসি।
আর তুমি তো আবার আমার ড্রাইভার না যে পেছনে বসব।ছেলে ড্রাইভার করতেছে তাই সামনে বসলাম।
আমার উনার কথা শুনে খুব ভালো লাগলো।উনি এমনিতেও আমাকে নিজের ছেলের মতো মনে করে আজ আবারো তা উনি প্রমাণ করলেন।
আমি গাড়ি চালাতে লাগলাম।আন্টি তাসিয়ার বাসা ছিনে তাই যেতে কোনো সমস্যা হয় নি।আমি চারপাশে চোখ বুলাতে লাগলাম যদি সন্দেহ জনক কিছু দেখি?
কিন্তু তেমন কিছু দেখলাম না।তবে একটা ছেলেকে দেখে খুব বেশি মন মরা মনে হল।আমি তার গেলাম।
আমিঃভাই আপনার সাথে কথা ছিল…!
~~আপনি কে ছিনলাম না তো?
আমিঃযে মারা গেছে সে আপনার কি হয়?
~~ছোট বোন।
আমিঃআপন ছোট বোন?
~~হুম আপন ছোট বোন।
আমিঃআমি রবিউল হাসান। তাসিয়া আমার বন্ধু ছিল খুব ভালো বন্ধু ছিল।তাসিয়ার সাথে যা হয়েছে সব আমাকে বলেছে।কিন্তু আমি বুঝতে পারছি না আসলে কি করা দরকার যদি আপনি হেল্প করেন তাহলে আমি হয়তো তাসিয়ার জন্য কিছু করতে পারব।
(কিছু জিনিস জানতে হলে কিছু মিথ্যা বলতেই হয়)
~~চলেন আমার সাথে।
এই বলে তাসিয়ার ভাই আমাকে একটা রুমে নিয়ে গেল।
আমিঃএখানে নিয়ে এলেন কেন?
~~বলছি আপনাকে সব।এই বলে তাসিয়ার ভাই বলতে শুরু করল।
তাসিয়া তেমন কিছু কাউকে বলে নি।শুধু এই টুকু বলেছে সব কিছু করেছে এমপির ছেলে সাকিব আর তার বন্ধুরা।আর তাদের কাছে ভিডিও ছিল তাসিয়াকে ওরা বার বার ডাকত কিন্তু তাসিয়া যেতে রাজি হয় নি।এমন কি ওকে মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছিল।
আমিঃতো মামলা কেন করেন নি?
~~যদি মামলা করি তাহলে ওদের কিছু করতে পারব না।শুধু শুধু আমাদের এলাকা ছাড়া হতে হবে এমন কি মরতেও হতে পারে।এমপির ছেলে গুলো অনেক খারাপ।কি করতে পারব আমরা তাই মামলা করি নি।
আমিঃএই মন মানসিকতার জন্য আজ তাসিয়ার এই অবস্থা। মানসিকতার পরিবর্তন না হলে তাসিয়ার মত আরো কত নারীকে ধর্ষণের স্বীকার হতে হবে জানি না।জাগ্রত করুন এই মানসিকতাকে।নিজের বিবেক কে প্রশ্ন করুন আজকে তাসিয়া এদের স্বীকার হল আর কালকে কে হতে পারে?কাল আপনার পাশের কেউ হতে পারে।
~~কি করব বলেন? মুখ খুললে আমাদের মেরে ফেলার হুমকি দিছে।
আমিঃতাহলে চুপ করে বসে থাকেন আর পরবর্তী কোনো ধর্ষণের ঘটনা শুনার জন্য রেডি থাকেন।
অনেকটা রেগে এই কথা গুলো বলছিলাম।কি বিকৃত মস্তিষ্ক মানুষের অপরাধী ভয় দেখাবে আর লোকেরা দেখেও বসে থাকবে।বাহ বাহ তুলনা হয় না।
আমিঃশুনেন এই মানসিকতা নিয়ে বসে থাকলে জীবনেও কিছু করতে পারবেন না।আর তাসিয়ার আত্মা যদি আপনাকে জিজ্ঞেস করে তার মৃত্যুর বিচার হয় নি কেন?তখন আপনি কি জবাব দিবেন?একদিন তাসিয়ার কাছে আপনি অপরাধী হয়ে রইবেন।
তাসিয়ার ভাই চুপ করে আছে।কিছু বলছে না তবে কান্না করছে তা বুঝা যাচ্ছে। আমি আর তেমন কিছু বললাম না।শুধু আসার সময় বললাম এসবের বিচার কিন্তু হবেই।
তাসিয়ার ভাই আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকালো।আমি আর কিছু না বলে বাইরে চলে এলাম।উদ্দেশ্য জানাযার নামাজ পড়ে যাব।কিছু সময় পর তাসিয়ার লাশ জানাযার মাঠে নিয়ে গেল।তখনই কিছু গাড়ি আসল।দেখায় যাচ্ছে এমপি এসেছে।দেখি কি বলে….
আমি আর দশটা মানুষের মত জানাযার লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।(আমি জানি না জানাযার মাঠে লাশ রেখে এত বক্তব্য দেওয়া ঠিক কি না,মিনিমাম ৪০ মিনিট বক্তব্য শুনতে শুনতে বিরক্তি চলে আসে।হয়তো লাশের ক্ষমা চেয়ে, দেনা পাওনা মিটিয়ে, লাশের জন্য দোয়া করার কথা বললে হয়, কিন্তু বেশি কথা বলা জানিনা উচিত কি না!কেউ যদি জানেন আর যুক্তির মাধ্যমে বুঝাতে পারেন তাহলে আমাকে ইনবক্সে বা কমেন্ট বক্সে জানাবেন-রবিউল হাসান)
এমপি এসে কথা বলার জন্য সামনে চলে গেল।আর এম পি মানুষ পেছনে তো দাঁড়াবে না।সামনে যেতেই উনাকে বক্তব্য দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হলো।
এমপিঃআমি জানি না কারা এই মেয়ের আত্মহত্যার জন্য কে বা কারা দায়ী।এই মেয়ের সাথে খুব বড় অন্যায় হয়েছে। আমি এই মেয়ের আত্মহত্যার জন্য যারা দায়ী তাদের খুব তাড়াতাড়ি শাস্তির ব্যাবস্থা করব।যে হোক অপরাধী তাকেই শাস্তি পেতে হবে।আইন চলবে নিজের গতিতে। খুব শীগ্রই আশা করি এর বিচার কার্য শুরু হবে।
এই বলে এমপি তার বক্তব্য শেষ করল।কি ভালো অভিনয় করলি রে এমপি?সাব্বাস তোকে তো অভিনয়ের জন্য এওয়ার্ড দেওয়া দরকার……..
জানাযা হয়ে গেল।সবাই তাসিয়াকে কবরে শায়িত করে নিজের গন্তব্যে চলে গেল।হয়তো সবার তিন-চার দিন তাসিয়ার জন্য মন খারাপ থাকবে।তাসিয়ার কথা মনে পড়লে মন খারাপ করবে।আর বাবা-মার বেশ জোর দু’মাস, যদিও শুনছি চল্লিশ দিন কষ্ট হয় এর পরে সবাই মৃত ব্যক্তির কথা ভুলে যায়।
হয়তো তাসিয়ার কথা আর কারো মনে পড়বে না।কোনো খবরের পতায় আর তাসিয়ার কথা ছাপানো হবে না।হয়তো তার বাবা মা-ও ভুলে যাবে তাসিয়ার কথা।বিচারের নামে যে আশ্বাস দিয়েছিল এমপি তাও ভুলে যাবে সবাই।আদৌ কি বিচার হবে তাসিয়া ধর্ষণের?
আমি জানাযা শেষ করে তাসিয়ার বাসায় এলাম কারণ আন্টি এখানে আছে।আন্টি তাসিয়ার মায়ের কাছে গেল।শান্তনা দিল, কিন্তু শান্তনা দিলে কি আর তাদের মেয়ের কথা এত সহজে ভুলা যাবে?
আন্টি তাসিয়ার মায়ের থেকে বিদায় নিল।আমি তাসিয়ার ভাইয়ের কাছে গেলাম।
আমিঃআপনি কি করেন?মানে কিভাবে সংসার চলে?
~~দোকান আছে,ব্যাবসা করি।
আমিঃতাহলে তো সংসারে আর কোনো চিন্তা নাই।আর শুনেন তাসিয়া কি আপনাকে কিছু দিছিল?
~~কেমন কিছু?
আমিঃযেমন কেউ আত্মহত্যা করার সময় চিঠি লিখে বা তেমন কোনো সূত্র রেখে যায়।কারণ হিসেবে কোনো চিরকুটে কিছু লিখে যায় তেমন কিছু?
~~হুম একটা চিরকুট ছিল।আনছি আমি…
এই বলে তাসিয়ার ভাই চিরকুট আনতে চলে গেল।আমি ওখানেই দাড়িয়ে রইলাম।প্রায় পাঁচ মিনিট পর আসল।এসে আমার হাতে একটা চিরকুট দিল।
আমিঃতা আপনার নামটা তো জানা হলো না।কি নাম আপনার?
~~আমার নাম আসিফ।
আমিঃওকে আসিফ ভাই।সাবধানে থাকবেন।আর পরিবারের খেয়াল রাখবেন।
তারপর আমি আর আন্টি সেখান থেকে চলে এলাম আন্টির বাসায়।রুমে ডুকে চিরকুটে কি লেখা আছে পড়তে চিরকুট হাতে নিলাম।লিখা আছে……
প্রিয় ভাইয়া,…
#To_be_continue…….
#সবাই_নিয়মিত_নামাজ_আদায়_করবেন।