#ফুচকাওয়ালা যখন স্পেশাল অফিসার
#পর্বঃ০৪
#রবিউল_হাসান
আপনি যা করছেন সব ভালোর জন্যই করছেন। জনগন আপনাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিবে।
প্লিজ আপনি আত্মাসমর্পণ করেন।(এক নাগাড়ে কথা গুলো বলে গেল,আমি কিছু বলছি না)
রিমিঃকি হল কথা বলছেন না কেন?
আমিঃকি বলব আপনি তো নিজেই সব বলে যাচ্ছেন।আর হ্যা আমি জানি আপনি আমাকে ভালোবাসেন কিনা, তবে এতটুকু বলব যদি সত্যি ভালোবাসেন তাহলে অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। আমার মিশন যতদিন পর্যন্ত শেষ হবে না।ততদিন আপনি না দেখবেন আমার চেহারা , না পাবেন আমার ভালোবাসা।তবে এটা মনে রাখবেন আপনাকেও আমার ভালো লাগে।
আজকে আসি,আর হ্যা রাতে একা বের হওয়া আপনার পক্ষে ভালো হবে না।
রিমিঃহুম।(আমি আর কিছু না বলে চলে আসলাম)
(রিমিকে কলেজে যখন প্রথম দেখলাম তখন থেকে ভালো লাগে,তাই না করি নি)
আমিও চলে আসলাম বাসায়।এভাবে চলে গেল প্রায় আরো ১০ দিন।
ওহ হ্যা আপনাদের আরো একটা কথা বলি বর্তমান আমার যে চেহারা আছে সেটা আমার না। প্লাস্টিক সার্জারি করিয়েছি।
আমার সামনে আর ১৭ দিন সময় আছে এই সময়ের মধ্যে অনেক কাজ করতে হবে।
আজও নিয়ম মতো কলেজে যাচ্ছি ফুচকা বিক্রি করতে। দেখলাম এম পির কিছু পোলাপান মারামারি দিছে।আমি সে দিক থেকে চলে আসতে পিরলাম।কিন্তু একটা পাথর এসে লাগল আমার মাথায়।আমি ওখানেই অজ্ঞান হয়ে যায়।
যখন চোখ খুললাম, নিজেকে আবিষ্কার করলাম ছাদের নিছে।ভালো করে থাকিয়ে দেখলাম।এটা হসপিটাল নয় কারো বাসা।
আমি মাথা তুলতেই মাথা চক্কর দিয়ে ওঠল। আহ বলে যখন মাথায় হাত দিলাম তখন মাথায় ব্যান্ডেজ লাগানো।
আমার আওয়াজ শুনে কেউ একজন আসল…..
আমি থাকিয়ে দেখি একটা মহিলা।
মহিলাঃতা বাবা তোমার জ্ঞান ফিরল তাহলে।
আমিঃজ্বী কিন্তু আপনি কে, আর আমি কোথায়?
মহিলাঃআমি হলাম, এই বাড়ির মালিক। তোমাকে আমরা রাস্তায় অজ্ঞান অবস্থা পাই।আমরা রাতে সে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম।যেখানে তুমি জ্ঞান হারিয়ে পেলছ!তারপর আমরা সেখান থেকে তোমাকে এখানে আনি।এখন তোমার জ্ঞান ফিরল।
আমিঃধন্যবাদ আন্টি।(বাকি গুলো ঠিক করে বলা যাবে না, কারণ আমিতো এখনো ফুচকা বিক্রিতা সেজে আছি)
আপনারা না আনলে মুর যে কী হইতো আল্লাহ জানে।আচ্ছা আন্টি মুই এখন আসি।
মহিলাঃসে কি বাবা তুমি এই অবস্থায় কোথায় যাবে?না না তোমাকে কোথাও যেতে হবে না।তুমি বরং বিশ্রাম নাও।
আমিঃকিন্তু মোর ফুচকার গাড়ি কোথায়?
মহিলাঃআছে তোমার পুচকার গাড়ি, চিন্তা করো না তুমি সুস্থ হলে গাড়িও পেয়ে যাবে।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে।
মহিলাঃঠিক আছে তুমি বিশ্রাম নাও আমি খাবার পাঠিয়ে দিচ্ছি আমার মেয়েকে দিয়ে।
আমিঃআচ্ছা।
খাবার নিয়ে যে মেয়েটা আসল বিশ্বাস করেন কখনো ভাবি নি।
খাবার নিয়ে রিমি আসল।(আমি তো রিমি কে দেখে অবাক)
আমিঃআপনি এহানে কেন?
রিমিঃআমার বাসায় আমি থাকব না তো কে থাকবে?
আমিঃকিহ এটা আপনাগো বাসা?
রিমিঃহুম এটা আমাদের বাসা।
আমিঃওহ
রিমিঃকি হল এই নেন খাবার।
আমিঃহুম(বলে উঠতে চাইলাম কিন্তু মাথা প্রচন্ড ব্যথা করছে তাই আবারো শুয়ে পড়লাম)
রিমিঃকি হল আবার শুয়ে পড়লেন কেন?
রিমিঃআচ্ছা আপনাকে উঠতে হবে না।
আমিঃতাহলে কেমনে খাব?
রিমিঃআমি খাইয়ে দিব?যদি আপনার প্রব্লেম না হয় তো?
আমিঃএটা কি কন, আইচ্ছা আপনি রাইখা যান মোর ভালো লাগলে খাইয়া নিমু নে।
রিমিঃতা কি করে হয়, আপনি কাল রাত থেকে না খেয়ে আছেন।
আমিঃতো এখন মুই কি করে খামু
রিমিঃআর একটা কথাও বলবেন না।আমি খাইয়ে দিচ্ছি।
(রিমি হাত ধুয়ে ভাত মেখে আমার সামনে ধরল,আমি খাচ্ছি না শুধু চেয়ে আছি তার দিকে)
রিমিঃকি হল হা করেন।
আমিঃহুম(বলে হা করলাম আর রিমি খাইয়ে দিচ্ছে)
খাওয়া শেষে,
রিমিঃঠিক আছে এখন বিশ্রাম নিন।আমি কলেজে যাব।
আমিঃআইচ্ছা যান,কেউ ডিসটার্ব করলে মুরে কইয়েন।
(রিমি আমার দিকে চোখ বড় বড় করে থাকাল,আর ভাবল DC হয়েও যদি কেউ ডিসটার্ব করে তাহলে তার তো বারোটা বাজাবই)
রিমিঃআরে কেউ ডিসটার্ব করে না।
আমিঃহুম।
রিমিঃআচ্ছা আমি আসি।(বলে রিমি চলে গেল)
আমি শুয়ে আছি আর ভাবতেছি……..
আর যাই হোক মেয়েটা অহংকারী না,যে এভাবে সেবা করতে পারে তাকে বউ হিসেবে খুব ভালো মানাবে আমার সাথে।
আর ভাবলাম আমার মিশন শেষে রিমি কে বিয়ে করে নিব।এমনিতেই রিমিকে আমার ভালো লাগে।যদিও সে আমাকে ভালোবাসে কিন্তু R.K হিসেবে।
তার সামনে খুব তাড়াতাড়ি নিজের আসল চেহারা নিয়ে আসব।আর মাত্র ১৬ দিন।
এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম।
ঘুম থেকে উঠে রাশেদকে একটা ফোন দেওয়ার কথা ভাবলাম।কিন্তু পকেটে হাত দিয়ে দেখি ফোন নেই।
আমি আন্টিকে ডাক দিলাম।
আন্টি এসে বলল, কি হয়ছে বাবা তোমার?
আমিঃআসলে আন্টি মোর মোবাইল টা খুজে পাচ্ছি না……
আন্টিঃওটা আমার কাছে আছে, দাড়াও আমি এনে দিচ্ছি।
আমিঃহুম
আন্টি আমাকে ফোন দিয়ে বলল, বেশি কথা বলিও না আবার মাথা ব্যথা করবে।
(বাটন ফোন তাই কথা বলিও না বলছে)
আমিঃজ্বী আন্টি।
তারপর আন্টি চলে গেল।আমিও রাশেদ কে ফোন দিলাম।
রাশেদঃকিরে কাল থেকে কি হল তুর একটা ফোনও দিলি না।(আমার নিষেধ কেউ যাতে আমাকে ফোন না করে,প্রয়োজন হলে আমি ফোন দিব, তাই ফোন দেয় নি)
আমিঃআরে তেমন কিছু হয় নি।তুর ভাবির বাসায় আসছিলাম তাই ফোন দিয় নাই।
রাশেদঃভাবির বাসায় মানে, বিয়ে কখন করলি ১ দিনের মধ্যে
আমিঃআরে বিয়ে করিনি বিয়ে হবে আর কি?
রাশেদঃওহ তাই বল।আমারতো রাগ উঠছিল,আমাদের না জানিয়ে বিয়ে করে নিলি বলে।
আমিঃআচ্ছা ওইস বাদ দেয় কলেজের কি খবর?
রাশেদঃআজকে খুব বড় একটা ঘটনা ঘঠতে চলেছে।
আমিঃকি ঘটনা?
রাশেদঃআজ রাতে কলেজে একটা মেয়েকে খুন করবে এম পির ছেলে, আর তার গায়ে লিখে দিবে R.K, যাতে সবাই মনে করে একেও তুই খুন করেছিস।আর জনসম্মুখে প্রকাশ করবে,R.K শুধু ধর্ষক দের হত্যা করছে এমন নয় নিরীহ মানুষ কে ও হত্যা করছে।
ছেলে হত্যা করবেনা এজন্য যে ছেলের গায়ে যদি R.K লিখা থাকে তাহলে সবাই তাকে ধর্ষক হিসেবে চিনবে।তাই মেয়ে হত্যা করবে।
আমিঃতুই কি ভাবে জানলি এই ব্যাপার গুলো?
রাশেদঃতুই জানিস না আমি R.K এর কি হয়
আমিঃজানি কিন্তু তুই কি আবারো নিচে গিয়েছিলি(মাটির ৫০০ ফুট নিচে, যেখান থেকে আমাদের সব কাজ পরিচালনা করা হয়)
রাশেদঃনা, ফোন দিয়েছিলাম অফিসার Rh7 কে,সে জানাল।
আমিঃওহ আচ্ছা।
(আমার হয়ে যারা কাজ করে, তারা সবাই বড় বড় অফিসার, কোনো বেআইনি কাজ আমরা করি না।
আফিসার Rh7 সবার ফোন কল রেকর্ড করে, সেখানে বিশেষ নজরদারি করার জন্য একজন রাখা হয়েছে সে হচ্ছে Rh2
সে এম পির চৌদ্দ গুষ্টির ফোন ট্রেগ করে আর তাদের ফোনে কি কথা হয় তা শুনে সেখান থেকে রাশেদ এই কথাটি জানতে পারল)
আমিঃঠিক আছে তাহলে আজ রাতে আমি সেখানে যাব দেখি কে আমার নাম অন্যের গায়ে লিখে। আর শুন আমার পোশাক টা নিয়ে আয়, বর্তমান যেখানে আছি মানে তুর ভাবির বাসায়।খুব সাবধানে আসবি কিন্তু আর আসার সময় আমার সব হাতিয়ার নিয়ে আসবে। মনে রাখিস তুর ভাবি কিন্তু D.C
রাশেদঃকিহ তুই সামান্য একটা D.C কে নিয়ে এত কথা বলছিস?
আমিঃআরে কি বলিস ওটা কেনো ব্যাপার না, আমি কলেজে প্রথম দেখাতে তাকে ভালোবেসে পেলছি।
রাশেদঃওকে।তুর ইচ্ছে।
আমিঃহুম এখন রাখছি।
হঠাৎ আন্টি আমার রুমে আসল।
আন্টিঃতোমাকে না বলছিলাম বেশি কথা না বলতে?
আমিঃএই তো আন্টি মাত্র ৫ মিনিট কইলাম।
আন্টিঃতোমার নাম কি?
আমিঃমোর নাম হাসান।সবাই এটা কইয়া ডাকে।
আন্টিঃতুমি কি মনে করছ তুমি ফোনে কথা বলার সময় আমি শুনি নাই?
আমিঃকি শুনছেন(অনেকটা অবাক হয়ে)
আন্টিঃতুমি শুদ্ধ করে কথা বলতে পার, তাও গ্রামের কথা কেন বল?
(যাক তাহলে বেশি কিছু শুনে নি)
আমিঃগ্রামের ভাষায় ভালো লাগে তাই বলি।আর আমি ফুচকাওয়ালা ভালো করে কথা বললে অনেকে অনেক রকম মনে করবে তাই বলি।
আন্টিঃশুধু কি এটা নাকি আরো অনেক ব্যাপার আছে?
আমিঃঠিক বুঝলাম না কি বলতেছেন আপনি?
আন্টিঃকলেজের প্রথম দেখায় কাকে ভালোবাসছ?তাও আবার D.C?
আমিঃএটাও শুনে নিলেন তাহলে?
আন্টিঃবল কে মেয়েটা?যদি রিমি হয় তাহলে ভুলে যাও কারণ রিমি শুধু R.K কে ভালোবাসে অন্যকাউকে সে বিয়ে করবে না।শুধু ভলোবাসে এমন কিন্তু নয়, প্রায় ১ টা বছর সে R.K কে ভালোবাসে।তুমি যদি তাকে ভালোবেসে থাক তাহলে ভুলে যাও বাবা(এই বলে আন্টি বেরিয়ে গেল,তবে যাওয়ার আগে আন্টির চোখে পানি দেখলাম।)
একদিকে আমি খুশি কারণ কেউ আমায় একটা বছর ধরে ভালোবেসে আসছে।
শুয়ে শুয়ে দুপুর পর্যন্ত কাটিয়ে দিলাম।দুপুরের খাবার নিয়ে আসল আন্টি।
আমিঃআন্টি আপনার সাথে কথা আছে।
আন্টিঃবল কি কথা?
আমিঃআন্টি আপনি আমাকে ভুল বুঝবেন না।আর আমি যতটুকু জানি রিমি তো এখনো পড়াশোনা করে তাহলে D.C হবে কেমনে?
আন্টি অবাক হয়ে আমার দিকে থাকাল।(এখানে যে ছদ্মবেশ ধরে আসছে সেটা আন্টির মনে ছিল না।)
আন্টিঃআরে এমনি বললাম, তুমার জন্য খাবার আনছি খেয়ে নাও।(কথা ঘুরানোর জন্য বলল)
আমিঃআচ্ছা খেয়ে নিব,একটা অনুরোধ আছে আপনার কাছে।
আন্টিঃকি অনুরোধ?
আমিঃআমি যে ভালোভাবে কথা বলতে পারি সেটা আপনি ছাড়া যাতে আর কেউ না জানে?
আন্টিঃঠিক আছে জানবে না।আর হ্যাঁ সকালে ফোনে কি বলছ আর আমি কি বলছি এসব তুমিও ভুলে যাও।
আমিঃঠিক আছে আন্টি।আর হ্যা আন্টি আমি এখন চলে যাব।
আন্টিঃতোমার কি মাথা খারাপ হয়ছে?চলে যাবে মানে কি এখনো তুমি অসুস্থ।
আমিঃএটা তেমন কিছু না আন্টি…..(আর কিছু বলতে দিল না)
আন্টিঃআমি কি তোমাকে যেতে বলছি?বলছি যাবে না তো যাবে না।ব্যাস…..
To_be_continue…….