#অপূর্ণ_ভালোবাসা
#লেখকঃরবিউল_হাসান
#পর্বঃ০৬(শেষ)
মিমঃআরেকটা কথা জানার ছিল।
রাহীঃকি কথা?
মিমঃআমি যে দিন আপনার বন্ধুর নাম্বার চেয়েছিলাম সেদিন আপনি বলছিলেন। ওর নাম্বার নিলে আপনারা প্যারা থেকে বাঁচবেন।আমি কথাটা ঠিক আজো বুঝি নি।কেন বলছিলেন কথাটা?
রাহীঃএমনি বলছিলাম(এই মেয়ে তো দেখছি কখন কি হয়ছে সব মনে রাখে, মনে মনে)
মিমঃনা এমনি বলেন নি কাহিনি তো আছে।
রাহীঃএটা কি শুনা খুব দরকার?
মিমঃদরকার বলেই তো জিজ্ঞেস করলাম।আর না বললেও সমস্যা নাই(মন খারাপ করে)
রাহীঃআচ্ছা মন খারাপ করতে হবে না বলতেছি।
মিমঃহ্যা৷ বলেন।
রাহীঃআসলে আমরা যদি কোনো মেয়েকে নিয়ে রবির সামনে মজা করি তাহলে সে আমাদের ব্রেকআপ করিয়ে দিবে বলে ভয় দেখায় তাই বললাম।আর কিছু না।
মিমঃতা আমি নিলে কি ভয় দেখাবে না?
রাহীঃহয়তো দেখাবে তবে ব্রেকআপ করিয়ে দিবে না।যাই হোক চলে আসছি এবার নাম।(রবির বাসা থেকে তানিয়ার বাসা ১০ মিনিটের পথ)
মিমঃহুম চলেন।
রাহীঃআমি কোথায় যাব আবার?
তানিয়াঃআমার বাসায় যাবেন আর কোথায়?
রাহীঃনা থাক অন্য একদিন যাব।
মিমঃতা তো হবে না চলুন (একপ্রকার জোর করে নিয়ে গেল)
কিছুক্ষণ পর চা পানি দিল।খাওয়ার পরে আবারো আমার বাসায় চলে আসল।কারণ আজ তো একসাথে থাকব।
অনেক রাত হয়ছে তাই রাহী আসার পর খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে অনেকটা সুস্থ অনুভব করলাম।
১ মাস পর আমি পুরো সুস্থ এই একমাসে মিম নিয়মিত আমার খুজ নিত দেখতে যেত।
এমন কি বউয়ের মত সেবাও করত….
১ মাস পর…….
সকালে খুব তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠলাম। অনেক দিন কলেজে যায় নি তাই আজ একটু তাড়াতাড়ি যাব।
সবাই মিলে সোজা কলেজে চলে গেলাম।
প্রিন্সিপাল এসে আমাকে ডাকল, আমি স্যারের কাছে গেলাম।(সবাই অবাক কারণ স্যার যে পরিমাণ যে রাগী কথার আগে হাত চলে। তাই একটু ভয় হচ্ছে)
স্যারের কাছে যাওয়ার সাথে সাথে সবার সামনে স্যার আমাকে জড়িয়ে ধরল। আমিতো আবাক।কিনভাবলাম কি হল।
স্যার সবাইকে বলতে শুরু করল।
তোমার হয়তো সবাই অবাক হয়েছ রবিকে জড়িয়ে ধরছি দেখে।তবে অবাক হওয়ার কিছু নাই।সে যে কাজ করেছে সেটা নিয়ে আমার গর্ব হচ্ছে। আশা করি তোমরা রবির থেকে কিছু শিখবে।
আমিঃস্যার ঠিক বুঝলাম না আপনি কি বলতেছেন?
স্যারঃআমি সব জানি রবি তুমি কেন এতদিন কলেজে আস নি?রাহী আমাকে সব বলেছে।এখন একটু মনোযোগ দিয়ে ক্লাস কর।পড়াশোনা অনেক পিছিয়ে গেছে।
মনে রাখবে তুমি একটা মহত্ত্বের কাজ করেছ।তোমার জায়গায় অন্য কেউ হলে এটা কখনো করত না।তোমাকে নিয়ে আমার গর্ব হচ্ছে।
আমিঃধন্যবাদ স্যার।
স্যারঃঠিক আছে এখন মনোযোগ দিয়ে ক্লাস কর। (বলে স্যার চলে গেল।)
আমি গিয়ে নিজের জায়গায় বসলাম।
একটা ক্লাস শেষ করে সবাই জিজ্ঞেস করল কাহিনি কি?স্যার কাউকে ডাকলে ইচ্ছে মত ধুলাই করে আর আমাকে জড়িয়ে ধরল কেন?
তখন রাহী সবাইকে বলে দিল, আসল কাহি নি কি?(রক্ত দেওয়ার ব্যাপারটা)
আপনাদের তো বলা হয়নি,মিম আমাদের কলেজে ভর্তি হয়ছি।তানিয়ার বাসা থেকে ক্লাস করে।
তিনটা ক্লাস করে আমরা আড্ডা দিতে চলে আসলাম।অনেক দিন ধরে কলেজে আড্ডা দেওয়া হয় না।
কিছুক্ষণ পর মিম আর তানিয়া আসল।মিম কেমন আছেন আপনি?(আমাকে বলল)
আমিঃআলহামদুলিল্লাহ ভালো, তুমি?
মিমঃহুম ভালো।
সবাই মিলে আনেক্ষণ আড্ডা দিলাম।আড্ডার মাঝে খেয়াল করলাম মিম আমার দিকে থাকিয়ে থাকে।আমার চোখাচোখি হলেই ঘুরে যায়।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে, আড্ডা অনেক হয়েছে এবার ওঠা যাক।
রাশেদঃহ্যা চল।
মিমঃশুনেন(আমাকে বলল)
আমিঃহুম বল।
মিমঃকাল একটু তাড়াতাড়ি আসবেন।
আমিঃকেন?
মিমঃএত কেন কেন করেন কেন?আসতে বলছি আসবেন ব্যাস।
আমিঃআচ্ছা আসব।
মিমঃগুড়।এবার চলেন।
সবাই নিজ নিজ বাসায় চলে গেলাম।
রাহী ফোন দিল।
আমিঃহ্যা রাহী বল।
রাহীঃকি করিস।
আমিঃশুয়ে আছি তুই কি করিস?
রাহীঃএইতো বসে আছি।
আমিঃকিছু কি বলবি?
রাহীঃহ্যা আজ মিমের ব্যাপারটা দেখছিস?
আমিঃহ্যা দেখছি, আড্ডার মাঝে আমার দিকে থাকিয়ে থাকে।
রাহীঃহুম সেটাইতো প্রেমের লক্ষণ।
আমিঃফাজলামি করিস কেন?
রাহীঃআচ্ছা বাদ দে, কাল তো তুকে তাড়াতাড়ি যেতে বলল।যাবি নাকি?
আমিঃনা যাব না….
রাহীঃযাবি না মানে?
আমিঃযাব না মানে যাব না।
রাহীঃপাগল হয়ছিস নাকি? তুকে যেতেই হবে।কাল তুর সাথে আমিও তাড়াতাড়ি যাব।তাও তুকে যেতে হবে।
আমিঃআচ্ছা যাব।
রাহীঃআচ্ছা ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠবি।
আমিঃওকে।
রাহীঃআচ্ছা ঠিক আছে এখন রাখছি।
আমিঃওকে।
রাতে পড়ে ঘুমাইয়া গেলাম।
সকালে রাহীর কল পেয়ে রেড়ি হলাম,কলেজে যাওয়ার জন্য।
রাহী আর আমি কলেজে চলে গেলাম।কিন্তু মিমকে কোথাও দেখতেছিনা।তাই ভাবলাম একটু পরে আসবে।তখনই গেইট দিয়ে আসতে দেখলাম।
কালো শাড়ি পড়ছে।দেখে তো আমি ফিদা হয়ে গেলাম।আমার সামনে এসে বলল কেমন আছেন?
আমারতো সেদিকে খেয়াল নাই।
রাহী হাল্কা করে ধাক্কা দিল।
মিমঃকি দেখছেন এমন ড্যাব ড্যাব করে?
আমিঃপরী দেখ…….(বাকিটা বললাম না)
মিমঃকি হল কি দেখেন এমন করে?
আমিঃ কিছু না, তবে আজ তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
মিমঃসত্যি সুন্দর লাগছে তো?
আমিঃআরো কত মত্যি ওকে পরীর মত লাগছিল)
মিমঃকি বললি কুত্তা, আমাকে সুন্দর লাগছে না।(রেগে)
আমিঃনা মানে অনেক সুন্দর লাগছে।
মিমঃসত্যি করে বলেন।
আমিঃহুম সত্যি বলছি অনেক সুন্দর লাগছে।
মিমঃতাহলে ঠিক আছে। আর আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে।
আমিঃহ্যা বল কি কথা?
মিমঃএখানে বলা যাবে না। চলেন ওদিকে যায়…..
আমিঃআচ্ছা চল (বলে সেদিকে গেলাম, শুধু আমি আর মিম)
মিমঃআসলে একটা কথ অনেক দিন ধরে বলার ট্রাই করছি কিন্তু বিভিন্ন কারণে বলা হয়ে ওঠে নি।
আমিঃকি এমন কথা যেটা বলার জন্য এদিকে নিয়ে আসতে হল?
মিমঃআমার লজ্জা করে।
আমিঃএত লজ্জা পাওয়ার কি আছে বলে দাও।
মিমঃআপনি শেষে আমাকে ভুল বুঝতে পারবেন না।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে বল।
মিমঃআসলে আমার সেই প্রথম দিন থেকে আপনাকে ভালো লাগে। বলতে পারেন ভালোবাসি।
আমিঃভালো লাগা আর ভালোবাসা এক না।এমনও হতে পারে কিছুদিন পর মোহ কেটে যাবে তখন, অপর ব্যক্তিটাই শুধু কষ্ট পাবে।
মিমঃনা এটা মোহ না, আপনাকে আমি সত্যি ভালোবাসি।আই লাভ ইউ।
আমিঃছেড়ে যাবা না তো?(আমিও তাকে ভালোবাসি শুধু বলিনি ভুল বুঝতে পারে বলে)
মিমঃকখনো যাব না।
আমিঃলাভ ইউ টু….
মিমঃসত্যি?
আমিঃ হ্যা সত্যি আমিও সেই কলেজের প্রথম দেখা থেকে ভালোবাসি।ভয়ের কারণে বলতে পারি নি।যদি তুমি খারাপ ভাব….
মিমঃযদি বলে দিতেন আগে তাহলে কি হত?আমাকে এত কষ্ট পেতে হত না।আর এখন আমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য আপনাকে শাস্তি পেতে হবে।
আমিঃকিহ এই জন্য আমি প্রেম করি না।শুধু প্যারা আর প্যারা।
মিমঃএত কথা শুনতে চায় না শাস্তি পেতেই হবে।
আমিঃঠিক আছে বলেন মহারানী কি শাস্তি দিবেন আমাকে?
মিমঃশাস্তি দুইটা দিব।
আমিঃভুল করলাম একটা শাস্তি কেন দুইটা?
মিমঃএকটা ভুল করলেও শাস্তি দুইটা পেতে হবে।
আমিঃআচ্ছা বল কি কি শাস্তি পেতে হবে আমাকে?
মিমঃ২ নাম্বার কলেজে আপনার ফ্রেন্ডদের সামনে আমাকে প্রপোজ করতে হবে।
আমিঃকিহ্ এটা কিন্তু ঠিক না।
মিমঃকোনটা ঠিক কোনটা বেঠিক সেটা আমি বুঝব।আর ১ নাম্বার এখন আমাকে জড়িয়ে ধরতে হবে।(বলে মাথা নিচু করে ফেলল)
আমিঃএটা কি আর বলতে হয় সাথে সাথে জড়িয়ে নিজের বাহুতে আবদ্ধ করে নিলাম……
প্রথম কারো এমন ছোয়া পেয়ে তো অনুভূতি অন্য রকম হবেই।
সাথে সাথে কানে হাত তালির আওয়াজ আসল।
পিছনে থাকিয়ে দেখি…….
রাহী,রাশেদ,মাহমুদ, সাদিয়া, সাকিব সবাই দাড়িয়ে হাত তালি দিচ্ছে
সাথে সাথে মিম কে ছেড়ে দিলাম।
রাহীঃকি মামা প্রেম তো ভালোই চলে।
(মিম অনেক লজ্জা পাইছে সেটা দেখে বুঝা যাচ্ছে)
আমিঃতোরা সবাই একসাথে তাও এখানে?
রাহীঃতোমরা প্রেম করবা আমরা কি মাঠে ঘাস কাটব?
আমিঃদাড়া তোদের ব্রেকআপ করিয়ে দিচ্ছি।
রাহীঃসেটা তো আর হচ্ছে না।আগে তুই সিঙ্গেল ছিলি তাই ভয় দেখাতি।কিন্তু এখন আর পারবি না।আমাদের প্রেমের কিছু করলে তোর প্রেমের বারোটা বাজাব।
আমিঃএটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না।
রাশেদঃসেটা পরে দেখা যাবে, বসে বসে কি প্রেম করবি না ক্লাসে যাবি।
আমিঃচল ক্লাসে যায়।
মিমঃনা আজ আমি ক্লাস করব না প্রেম করব।
আমিঃআচ্ছা তোরা ক্লাসে যা আমি…….(আর বলতে দিল না)
রাহীঃতুই প্রেম করবি,তাইতো?
আমিঃতোরা যাবি নাকি (বলে একটা হালকা দোড় দিলাম তাদের দিকে)
তখন তারা সবাই চলে গেল।সাদিয়া দাড়িয়ে আছে।
আমিঃতোমার আবার কি হল?ক্লাস করবা না?
সাদিয়াঃক্লাস করব, তবে মিমের সাথে একটু কথা আছে।
মিমঃবল কি কথা।
সাদিয়াঃএকটু এদিকে আয়।
(সাদিয়া মিমকে কানে কানে বলল, ভালো করে রোমাঞ্চ কর,এটা বলে সাদিয়া দৌড়ে চলে গেল।)
আমিঃতা চল ঐ দিকে গিয়ে বসি।
মিমঃহ্যা চলেন।
আমিঃআরেক বার বল তো এখন কি বলছ, ভালো করে বুঝি নি।
মিমঃহ্যা চলেন বলছি।
আমিঃএখনো কি আপনি করে বলতে হবে।এখন থেকে তুমি করে বলবা।
মিমঃওকে বলব।আর হ্যা প্রপোজ কখন করবেন?
আমিঃকখন করতে হবে।
মিমঃআজ করলে ভালো হয়।
আমিঃকিহ আজ কিভাবে করব।একটা ফুল নাই কিছু নাই।
ওকে কাল করব সবার সামনে।
মিমঃসত্যি তো…..?
আমিঃহুম সত্যি।
আমিঃএবার চল।
মিমঃহুম চল….
(গিয়ে একটা গাছের নিচে বসলাম)
মিমঃআচ্ছা তেমার কি কালার পছন্দ?
আমিঃআমার তো সবুজ ই পছন্দ, কারণ আমার মাতৃভূমিই তো সবুজ।
তোমার কোন কালার পছন্দ?
মিমঃআমার খয়রী, খুব ভালো লাগে খালারটা।আর আমি মনে করি ৮০% মেয়েদের এই কালার পছন্দ।
আমিঃতাই নাকি?তুমি তাহলে ৮০%মেয়েদের মনের খবর জান দেখছি।
মিমঃদেখতে হবে না কার গার্লফ্রেন্ড।
আমিঃওমা এই মাইয়া তো দেখছি পুরাই রোমান্টিক।
এত রোমান্টিকতা কোথাথেকে আসে শুনি?
মিমঃআসে আসে অনেক রোমান্টিক আমি।
আমিঃতা তো দেখতে পাচ্ছি।
মিমঃআচ্ছা এখব ফুচকা খাব।চল যাই।
আমিঃকিহ এসব খাই মানুষে পেট ব্যাথা হবে।
মিমঃহুম খাই তো।আর পেট ব্যাথা হবে কেন?আমি তো অনেকবার খাইছি কই একবারও তো পেট ব্যাথা হয় নি……
আমিঃআচ্ছা চল।
ফোসকার দোকানে…….
আমিঃমামা এক প্লেট ফোসকা দেন তো।
মিমঃএকপ্লেট কেন?তুমি খাবে না?
আমিঃআমি এসব খাই না।পেট খারাপ হবে।
মিমঃআরে কিছু হবে না একদিন খেলে।
মামা ফোসকা দুই প্লেট দিন।একটাতে ঝাল বেশি দিয়েন।
আমিঃতুমি বেশি ঝাল খাও?
মিমঃশুধু ফুচকাতে বেশি খাই।আর কোথায়ও না।
আমিঃএত ঝাল কিন্তু ভালো না।শরীরের জন্য অনেক খারাপ।
মিমঃজানি তো,তাও ফুসকায় না খেলে মজা পায় না।
আমিঃআচ্ছা আমি আর খাব না তুমি খাও।
মিমঃকেন কি হয়ছে?Anything wrong?
আমিঃনা না সব ঠিক টাক এমনি আর খাব না, এমনিতে এসব ফুচকা আমার ভালো লাগে না। তুমি বললে তাই খেলাম।
মিমঃআচ্ছা চল।
আমিঃমামা এই নিন বিল।
মিমঃআরে তুমি দিচ্ছ কেন আমি দিয়।
আমিঃকোথাও কি দেখছ বয়ফ্রেন্ড থাকতে গার্লফ্রেন্ড বিল দেয়।
মিমঃতা তো দেখি নি।তবে তোমার আর্থিক অবস্থা টা তো তেমন ভালো নেই তাই আমি দিতে বললাম।
আমিঃহুম, আমার আর্থিক অবস্থা ভালো না হতে পারে কিন্তু গার্লফ্রেন্ডকে একটা বকুল ফুলের মালা,আইসক্রিম আর ফুচকা খাওয়ানোর সামর্থ্য আমার আছে।
মিমঃআচ্ছা হয়ছে আর বলব না।
আমিঃহুম গুড।
মিমঃআচ্ছা চল এখন কলেজে ছুটি হবে সেদিকে যায়।
(কিছুক্ষণ পর কলেজে ছুটি হল সবাই আসল)
রাহীঃতা মামা তোদের প্রেম আলাপ কেমন হল?
রাশেদঃঅবশ্যই ভালো হবে,শত হলেও নতুন প্রেম বলে কথা।
আমিঃঐ তোরা সবসময় এমন করিস কেন?
রাহীঃআমরা আবার কি করলাম?
আমিঃকিছু না।(কথা বললে কথা বাড়বে)
একটু পর সাদিয়া আসল।
সাদিয়াঃতা দুলা ভাই প্রেম আলাপ কেমন হল?
আমিঃতোমাদের সবাই কে কি ভুতে পাইছে?সবাই এসে একি কথা বল কেন?
সাদিয়াঃনা না ভুতে ধরবে কেন?নতুন প্রেম তাই বললাম আর কি?
আচ্ছা মিম এখন চল আমি অনেক টায়ার্ড।
মিমঃআচ্ছা এক মিনিট।
আমার কাছে এসে।
মিমঃশুন কাল কিন্তু সবার সামনে প্রপোজ করতে হবে।বলে দিলাম।
আমিঃহুম করব তো মেরি কলিজা( এমনি দিলাম এটা, কেউ সিরিয়াজলি নিবেন না)
মিমঃহুম মনে থাকে যেন।
আমিঃহুম থাকবে চল তোমাকে দিয়ে আসি।
মিমঃনা কষ্ট করতে হবে না তোমাকে আমরা যেতে পারব।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে যাও।
মিমঃহুম।(বলে কিছুটা দুরে গিয়ে আবার ফিরে আসল,কানে কানে বলল —-কালকের কথা যেন মনে থাকে)
আমিঃহুম থাকবে।
মিমঃহুম বাই।
আমিঃআল্লাহ্ হাফেজ।
মিমঃআল্লাহ্ হাফেজ।
(মিম আর তানিয়া চলে গেল)
আমরা ও চলে আসলাম নিজের বাসায়।
কাল কিভাবে মিম কে প্রপোজ করব সেটা ভাবতে থাকলাম।
হঠাত রাহীর কথা মনে হলো(সে হচ্ছে প্রেম গুরু, অন্যের জি এফ কে পটাতে ৭-১০ দিনের বেশি লাগে না তার)
ফোন দিলাম রাহীকে।
রাহীঃহ্যা মামা বল।
আমিঃকাল তো মিমকে প্রপোজ করতে হবে।কিন্তু কিভাবে কি করব কিছুই বুঝতেছি না।তুই একটা আইডিয়া দেয় না…..
রাহীঃএক দম সোজা ভাবে করে দেয়,কারণ তোদের তো প্রেম আগে থেকে চলতেছে।
সো প্রপোজ কেমন করতে হবে, বা কেমন করে করলে রাজী হবে সেটার চিন্তা নাই।
আমিঃকিন্তু একদম সোজা ভাবে প্রপোজ করব কিভাবে সেটাতো বল।
রাহীঃআচ্ছা শুন।কালকে আমরা আগে চলে যাব, তুই আমার বাসায় ডুকে আমার বাইকটা নিবি।সেটা নিয়ে সোজা মার্কেটে যাবি।গিয়ে গোলাপ ফুল কিনবি কতগুলো।তারপর সোজা কলেজে চলে যাবি।
আমিঃতারপর?
রাহীঃতারপর গিয়ে আমাদের আড্ডার জায়গায় যাবি।মিম সহ আমরা সবাই ওখানে থাকব।
আমিঃগিয়ে কি করব?
রাহীঃগিয়ে সোজা মিম কে বলবি……
I love you mim,আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। তুমি কি তোমার হৃদয়ে একটু জায়গা আমাকে দিবে?
I really love you. Will you marry me?
এসব বলার পরে মিম তোকে যা বলার বলবে।
তোর এতটুকু করলে হবে।
আমিঃআচ্ছা ধন্যবাদ। (ওর এমন অদ্ভুত কথা আমার ভালো লাগে নি)
ভাবলাম তার চেয়ে আমি আরো ভালো করে প্রপোজ করতে পারব।
অনেকক্ষণ চিন্তা করলাম কিভাবে কি করব।
সকালে রাহীর ফোনে ঘুম ভাঙলো।
রাহীঃমামা বাইক রেখে গেলাম।আম্মুর থেকে চাবি নিয়ে যা যা বলছি করবি।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে তোরাও কিন্তু মিমের সাথে থাকবি।
(বলে ফোন কেটে দিলাম)
তারপর ভালো করে ফ্রেশ হয়ে,রাহীর বাসায় গেলাম।
সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে ফুলের জন্য গেলাম।
অনেক গুলো গোলাপ নিয়ে।চলে গেলাম কলেজে।
বাইকটা সোজা মিম যেখানে আছে সেখানে নিয়ে গেলাম।দেখলাম তারা সবাই আড্ডা দিচ্ছে।
আমি বাইক থেকে নেমে মিমের সামনে গেলাম।
(আমি মিমকে দেখে তো পুরাই অবাক, আবারো ক্রাশ খেলাম নীল কাপড়ে ওফফফফস যা লাগছে না।একদম নীল পরী।)
আমিঃএই যে নীল পরী শুনছ…….
তুমি এমনই একজন……
যে গোধূলি লগ্নে তোমার পা পড়বে,সে মূহুর্ত হবে মহা মূল্যবান……
কারণ তুমি বিধাতার সৃষ্টি এক অনন্যা অদ্বিতীয়া……..
তোমার তুলনা একমাত্র তুমি।
এই হৃদয় তোমার কথা ভেবে এমনি এমনি হেসে ওঠে,ভেসে যায় আনন্দের বন্যা।
তোমাকে একটি কথা বলার জন্য শত বাক্য ব্যবহার করলেও,সেটা কম হয়ে যাবে।
তোমাকে শুধু এইটুকু বলতে চায়…….
অন্ধকার ছাড়া যেমন চাঁদের কোনো মূল্য নেই,ঠিক তেমনি আমার হৃদয় তোমার হৃদয়ে না মেশা পর্যন্ত তার কোনো মূল্য নেই।
সেই প্রথম কলেজে দেখার পর, আমার ঘুম হতো না ঠিক মত।দু-চোখ বন্ধ করলেই তোমার চেহেরাটা ভেসে ওঠে।
পরিশেষে একটা কথায় বলতে চায়…….
আমি তোমাকে ভালোবাসি,
I love you….Will you marry me?
মিম কিছু বলছে না, খেয়াল করলাম মিম সহ সবাই ঘুরের মধ্যে আছে।
আমি মিমকে হাল্কা ধাক্কা দিয়ে বললাম।
hay নীল পরী i love you, will you marry me?
মিম কিছু না বলে সোজা জড়িয়ে ধরলো(এমন কিছু হবে আমি জানতাম,তাই অবাক হয় নি)
মিমঃহুম মিশিয়ে দিব তোমার হৃদয়ের সাথে আমার হৃদয়। আমিও তোমাকে ভালোবাসি।i love you too…….
(সাথে সাথে সবাই তালি দিয়ে ওঠল)
রাহীঃভাই আপনি কে?আপনি কি সেই রবি যে প্রেম করতে চাইতেন না?আপনি কি সে রবি মিম কে কিভাবে প্রপোজ করতে হবে জানতে চেয়েছিলেন।
নাকি রবির জায়গায় কোনো সাহিত্যিক চলে আসছেন?
দাড়া চিমটি কেটে দেখাচ্ছি(বলতে দেরি হল কিন্তু মারতে দেরি না)
রাহীঃআওওও এভাবে কেউ চিমটি মারে?
আমিঃএখন তো বিশ্বাস হল,কে আমি?
রাহীঃনা এখনো ডাউট আছে।
রাশেদঃরাখ তোদের ডাউট, আগে ট্রিট দেয় চল।
আমিঃআচ্ছা চল, আজ সবাইকে আমি খাওয়াব।
(মিম তো এখনে ঘুরের মধ্যে আছে)
রাহীঃওকে চল।
আমিঃএই মিস তুমি এখনো ঘুরের মধ্যে আছ কেন?কোনো সমস্যা?
মিমঃসমস্যা না, একটা জিনিস জানার ছিল।চল নাস্তা করতে করতে বলব।
আমিঃহুম চল।
এখন সবাই বসে আছি একটা রেস্টুরেন্টে।
আমিঃতোরা সবাই কে কি খাবি অর্ডার কর।বিল আজ আমি দিচ্ছি।
তারপর সবাই নিজের মত অর্ডার করল।
মিমঃএকটা কথা জানার ছিল….
আমিঃহুম বল কি কথা?
মিমঃতুমি সাহিত্য জান?
আমিঃএই একটু একটু আর কি?
রাহীঃএসব কি একটু একটু?আমার মনে হয় প্রেম গুরু আমাকে না বলে তুকে বলা দরকার।আজ যেভাবে প্রপোজ করলি যে কোনো মেয়ে পটবেই।
রাশেদঃশুন ভাই এখন থেকে রাহী কাউকে পটাতে গেলে রবির থেকে জিজ্ঞেস করবি প্রপোজ টা কিভাবে করবি।দেখছি ও ভালো সাহিত্য পারে।
সাকিবঃহুম এমন প্রপোজ করলে যে কেউ পটবেই।
আমিঃঅনেক হয়ছে এবার খা তো……
তারপর সবাই ইচ্ছে মত খেল।
বিল দিয়ে কলেজে আসলাম।
আমিঃচল দুইটা ক্লাস করি।
রাহীঃহ্যা দুইটা এগুলো ইম্পরট্যান্ট ক্লাস।চল সবাই।
মিমঃঠিক আছে আমিও ক্লাসে যায়।
মিম আর তানিয়া চলে গেল।
#সবার কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এখানে নামের জায়গায় দুই জন মেয়ের নাম ছিল।মিম আর অপরটা তানিয়া/সাদিয়া।একটু ভুল হয়ে গেল এখানে যে তানিয়া সে সাদিয়া এটা নিজের মত করে সাজিয়ে নিবেন সবাই ধন্যবাদ।।
দুইটা ক্লাস করে কলেজ ছুটি হয়ে গেল।সবাই মিলে আরো কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম।তারপর সবাই নিজের বাসায় চলে আসলাম।
মিম আর আমার প্রতিদিন কথা হয়।কলেজে যাওয়া আড্ডা দেওয়া প্রেম করা এসবে প্রায় আমাদের ৫ টা বছর চলে গেল।
এই ৫ টা বছরে মিম আর আমার ভালোবাসা আরো গভীর হল।এখন একি ভার্সিটিতে আমরা ৪ জন আছি।আমি,মিম,রাহী আর তানিয়া।
বাকিরা অন্য ভার্সিটিতে চলে গেছে।প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে তাদের সাথে আমাদের যোগাযোগ। এই ৫ বছরে অনেক ঘটনা ঘটে গেছে। মিমের সাথে অনেক বার ঝগড়া হয়ছে।পরে সব ঠিকও হয়ে গেছে।কিন্তু…..
আজ ৫ বছর পর হঠাৎ মিম এসে আমাকে বলল।
মিমঃসরি রবি আমাকে ক্ষমা করে দিও আমি পরিস্তিতির স্বীকার। ভালো থেকো তুমি।আল্লাহ হাফেজ। (পর্ব ১)
শুধু আমি চেয়ে দেখলাম তার দিকে,কিছুই বলতে পারি নি।অনেক ভালোবাসি তাকে আর সে এভাবে ঠকাবে বুঝি নি।
হয়তো এভাবে হারিয়ে যাবে আমার ভালোবাসা।
মধ্যেবিত্ত মানুষের ভালোবাসা হয়তো এভাবে হারিয়ে যায়।
আমি মধ্যেবিত্ত তাই আমার ভালোবাসার মানুষ ও আমায় ছেড়ে গেছে।
মিম চলে যাওয়ার পর ওখানে অনেকক্ষণ কান্না করছি।তারপর বাসায় চলে আসছি।এসে বৃষ্টিতে অনেক্ষণ ভিজলাম।
এখন আমার বৃষ্টি খুব ভালো লাগে,নিজের চোখের জল আর বৃষ্টির জল আলাদা ভাবে চেনা যায় না, সব জল একসাথে মিশে যায়।
অনেক দিন কান্না করছি প্রিয় মানুষ টা এভাবে চলে যাওয়ায়।
এভাবে প্রায় ১ টা মাস বাসা থেকে বের হয় নি।মাও অনেক চিন্তা করছে আমায় নিয়া।
আজ বের হচ্ছি আপুর সাথে অবশ্যই বের হওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিল না।আপু জোর করে তার সাথে ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছে।
এখন আপু আর আমি বসে আছি একটা পার্কে।প্রায় ২০ মিনিট আপু আমাকে একটু হাসানোর চেষ্টা করছে।
কিন্তু আমি হাসাটা সেই দিন ভুলে গেছি যে দিন মিম আমায় ছেড়ে গেছে।
অনেকক্ষণ পর হঠাৎ খেয়াল করলাম।একটা গাড়ির দিকে,সেখান থেকে খুব পরিচিত একজন মানুষ বেরিয়ে আসল।
সে আর কেউ না মিমই ছিল।
আমিঃআপু চল এখান থেকে যায়…..
আপুঃআরে আরো কিছুক্ষণ থাকি এখানে।মাত্রই তো আসলাম।
আমিঃনা আপু,তোমার ইচ্ছে হলে তুমি থাক আমি চলে যাচ্ছি।
#এখানে মাঝখানে একটু ভুল হয়ে গেছে কোথাও, এডিট করতে গিয়ে।কেউ পড়ার সময় সেটি একটু ধরিয়ে দিবেন প্লিজ।
এই বলে হাটা ধরলাম।
গেইটের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে পরলাম।প্রিয় মানুষ টাকে শেষ বারের মত একবার দেখে যায় ভালো করে।হয়তো আর কখনো দেখার সুযোগ পাব না।
মিম যাতে আমাকে না দেখে একটা গাছের পিছনে দাড়ালাম।আর চেয়ে আছি তার দিকে।আর ভাবছি এই মায়াবী চেহারাটা কিভাবে এতটা ছলনাময়ী হতে পারে……?
এই কি সে মিম যাকে আমি ভালোবাসছি?
এ কি সে মিম যে আমার পুরোটা জুড়ে আছে….?
এই কি সে মিম যাকে বাচাতে গিয়ে নিজে মরতে বসছিলাম….?
এই কি সে মিম যাকে নিয়ে আকাশ সমান কল্পনা করছিলাম……?
এই কি সে মিম যাকে ভালোবেসে সব উজাড় করে দিয়েছিালম……?
হঠাৎ কারো হাতের স্পর্শ পেয়ে পেছনে থাকালাম,দেখলাম আপু আমার কাদে হাত দিছে।
আপুঃসরি ভাই,আমি জানতাম না মিম আজ এখানে আসবে।আমি জানলে তুকে নিয়ে এখানে আসতাম না।
আমিঃসমস্যা নেই আপু তুমি আজ এখানে আনছ বলে তাকে দেখলাম অনেক দিন পরে।
আপুঃকান্না করছিস কেন?
আমিঃআরে তেমন কিছু না, চল বাসায় যায়। (বলে চোখের জল মুছে আপুকে নিয়ে বাসার দিকে রওনা দিলাম।)
এখন আর বাসায় বসে থাকি না।সব আগের মত করে নিয়েছি।
আর ৫ দিন পর মিমের বিয়ে।এই ৫ দিনে সবাইকে দাওয়াত দেওয়া সহ সব আয়োজন করা শেষ।
মিম সবাইকে দাওয়াত দিছে তার বিয়েতে।বিয়ে হচ্ছে একটা বড় লোকের ছেলের সঙ্গে।
রাহী,রাশেদ,মাহমুদ, সাকিব সবাইকে দাওয়াত দিছে শুধু আমাকে ছাড়া।আর আমাকে দাওয়াত দিবেই বা কেন?আমার মত গরিব কে দাওয়াত দিলে তার বিয়েটা ঝাক-ঝমক হবে না।তাই আমাকে দাওয়াত দেয় না।
রাহী আমাকে বলল তাদের তো সবাইকে দাওয়াত দিছে তুই যাবি কি না আমাদের সাথে।আমি যেতে চাই নি,আমি না গেলে তারাও কেউ যাবে না।
তাই তাদের সাথে আমিও গেলাম।তবে আমার বেশে নয় ছদ্মবেশে। আমার ফ্রেন্ডরা ছাড়া আর কেউ আমাকে চিনতে পারবে না এই বেশে,তাদেরকে বলছি তাই তারা চিনবে।
যাইহোক মিমকে বউয়ের সাজে অনেক সুন্দর লাগছে।কিন্তু আপসোস এই সাজটা আমার জন্য করার কথা ছিল কিন্তু করছে অন্য কারো জন্য।
চোখ দিয়ে শুধু জলই গড়িয়ে পড়ছে।
হঠাত কেউ একজন বলে ওঠল এই কে আপনি আর কি হয়ছে আপনার কান্না করছেন কেন?
তাকিয়ে দেখি তানিয়া।(ছদ্মবেশের কারণে চিনতে পারে নি)
আমিঃআমি রাহীর ফ্রেন্ড(রাহীকে দেখিয়ে দিয়ে)
সাথে সাথে রাহী আমার কাছে আসল।
রাহীঃআরে তানিয়া তুমি!কেমন আছ?
তানিয়াঃভালো ভাইয়া।ইনি নাকি আপনার ফ্রেন্ড?
রাহীঃহ্যা ও আমার ফ্রেন্ড।
তানিয়াঃউনার কি হয়ছে ওনি কান্না করছে কেন?
রাহীঃওর নাম হচ্ছে হাসান (আমার পুরো নাম রবিউল হাসান,এখানে হাসান বললে তানিয়া চিনবে না রবি বললে ঠিকই চিনত, তাই হাসান বলল)
সে একজনকে খুব ভালোবাসত, কিন্তু তার প্রিয় মানুষ টা তাকে ছেড়ে অন্য কাউকে আপন করে নেয়,তাই সেটা মনে পড়ায় কাদছে হয়তো।
তানিয়াঃso sad……আচ্ছা ভাইয়া আমি আসি আমার অনেক কাজ।
রাহীঃহুম এসো তুমি।
তানিয়া যাওয়ার পর রাহী আমাকে বলল।
সরিরে তুর কষ্ট টা মনে হয় আবারো বেড়ে গেল,কিন্তু কি করবি বল সে তো তুকে চায় না,তাই তোর কিছু করারও নাই।
আমিঃআচ্ছা বাদ দেয় সে সব।তুরা আনন্দ কর,আমি এখন আসি।
রাহীঃকি বলিস এখন চলে যাবি মানে?
আমিঃআমার আর ভালো লাগছে না।
রাহীঃআচ্ছা ৫ মিনিট দাড়া আমি এক্ষুনি আসতেছি।
রাহী গিয়ে আমার সব ফ্রেন্ডদের বলল রবি চলে যাচ্ছে তার সাথে আমিও চলে যাচ্ছি।তোরা থাক এখানে।
কিন্তু কেউ থাকে নি।সবাই চলে আসতে চায়।তাই রাহী মিমের সাথে দেখা করতে গেলে কিন্তু সহজে দেখা করা যাচ্ছে না বিয়ে বাড়ি বলে কথা।
রাহী আবার তানিয়াকে ফোন দিল, ফোন দিয়ে মিমের সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করল।
মিমঃহ্যা ভাইয়া আপনি আমাকে কেন ডেকেছেন? (এই কয়দিনে মিম রবি নামক ছেলেটাকে একদম ভুলেই গেছে)
রাহীঃআসলে এখানে আমার একটা ফ্রেন্ড আসছে তার নাকি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা কাজ আছে তাই সে চলে যেতে চায়।
আমাদের সাথে তাকে আনছি তাই তাকে একা কিভাবে যেতে দিয়? তাই আপনাকে বলতে এলাম আমরাও তার সাথে চলে যাচ্ছি।
মিমঃআচ্ছা ঠিক আছে ভালো থাকবেন।
রাহীঃহুম আপনিও ভালো থাকবেন আসি এখন।
রাহী কয়েক পা এসে পেছনে থাকাল।মিমের দিকে থাকিয়ে চিন্তা করল…..
একটা মানুষ কিভাবে এত পরিবর্তন হতে পারে।একটা বারও রবির কথা জিজ্ঞেস করল না….?
যে ছেলেটা বাসে টাকা দিয়ে অপমানিত হওয়া থেকে রক্ষা করছে…..
যে ছেলেটা নিজের জীবনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল এই মেয়েটাকে বাঁচাতে….
যে ছেলেটা সব বিপদ আপদে এই মেয়েটার পাশে ছিল, কিভবে পারে সে মেয়েটা একটা বারও রবির কথা জিজ্ঞেস না করে থাকতে।
রাহী তারপর আমাদের সবার কাছে আসল,তারপর আমরা সবাই গাড়িতে উঠলাম সবাই নিজের বাসায় চলে যাব বলে।
কিন্তু কিছুক্ষণ পর আমার মাথা প্রছন্ড চক্কর দিয়ে ওঠে আমি বেহুশ হয়ে যায়।
যখন জ্ঞান ফিরে হসপিটালের বেড়ে নিজেকে আবিষ্কার করলাম।
রাহী সহ সবাই আমার পাশে বসে আছে।দেখছি সবাই কান্না করছে।মৃত মানুষের পাশে যেমন জীবিত মানুষ কান্না করে ঠিক তেমন।
আমিঃএই কি হয়ছে তোরা কান্না করছিস কেন?
রাহীঃতুই এত বড় একটা সমস্যা কিভাবে লুকালি আমাদের কাছ থেকে।
আমিঃআমি আবার কি লুকালাম?কি হয়ছিল আমার বল?
রাহীঃতুর ব্লাড ক্যানসার, সেটা তুই জানতি না?
আমিঃহুম কয়েক দিন আগে জানলাম।এটাও জানি আর কয়েকটা দিনের অতিথি আমি।যাই হোক তোরা কেউ আমার আপুকে বা আম্মুকে এই সব ব্যাপারে জানাবি না প্লিজ।
রাহীঃকিহ এত বড় একটা সমস্যা তুই এখনো বাসায় জানাস নি?
আমিঃনা জানায় নি আর তোরাও কেউ বলিস না, মা আর আপু একদম ভেঙে পড়বে।কথা দেয় তোরা আমার মৃত্যুর আগে কেউ এই ব্যাপারটা জানাবি না, আমার পরিবারকে।
সবাই কথা দিল কেউ জানাবে না।
প্রায় ৩ দিন পর হসপিটাল থেকে আসলাম।আম্মু আর আপু প্রতিদিন ফোন দিয়ে বলত আমি কোথায় বাসায় আসছি না কেন?
তখন বলতাম রাহীর বাসায়, ওর বাসায় ওর বাসায় এমন করে তিন দিন পর আজ বাসায় আসলাম।
আমাকে দেখে মা জড়িয়ে ধরে বলল তুর কি হয়ছে, বাইরে বাইরে থাকিস কেন?
তুই জানিস না তোরা দুই ভাই বোন আমার সামনে না থাকলে আমার ভালো লাগে না?
আমিঃজানি তো আম্মু। মাত্র তিন দিন ই তো ছিলাম।সারাজীবন তো আর যায় নি।
আর সারাজীবনের জন্য বাইরে গেলে তখন কি করবা?
আম্মুঃকি হয়ছে তুর এমন বলিস কেন?
আমিঃআরে কিছু না আম্মু এমনি বলছি।আপু কোথায়?
আম্মুঃহসপিটাল থেকে এখনো আসে নি।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে।তুমি যাও আমি একটু গোসল করব।
আম্মুঃ আচ্ছা যা।গোসল শেষে খেয়ে নিস।
আমিঃআচ্ছা ঠিক আছে।
একটা গোসল দিলাম।
আরো কিছুক্ষণ পর আপু আসল।খাওয়া শেষে আপুর সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে,নিজের রুমে চলে আসলাম।
কিছুক্ষণ পর আপু আমার রুমে আসল।
আপুঃতুর কি হয়ছে বল ত?
আমিঃআমার আবার কি হবে?
আপুঃদেখ ঠিক করে বল তুর কি হয়ছে?তুই কিন্তু ইদানীং কেমন যেন হয়ে গেছিস।
আমিঃআরে তেমন কিছু না।
আপুঃসত্যি তো?
আমিঃহুম। আচ্ছা তোমাকে একটা কথা বলি রাখবে কিন্তু।
আপুঃবল কি কথা?
আমিঃ আম্মুকে একটু দেখে রাখিও আপু।আমি ৩ দিন বাসায় ছিলাম না তাই যে পাগলামি শুরু করছে।আমার তো চিন্তা হয় যদি আমি মরে যায় তখন আম্মুু কি হবে?
আপুঃভাই তোর কি হয়ছে বল প্লিজ।মরে যাবি মানে কি?
আমিঃআরে আপু এমনি বললাম।মানুষ কখন মরবে সেটা তো আল্লাহ ঠিক করে রাখছে,কে কখন মরে যায় সেটা তো বলতে পারি না।তাই বললাম।
আপুঃহ্যা তা ঠিক কিন্তু তোর মুখে হঠাৎ এমন কথা শুনে একটু চিন্তা হচ্ছে।
আমিঃআরে আপু এমনি বললাম চিন্তা করতে হবে না।
আপু…………….
আমিঃআচ্ছা যাও আর বলব না।
আপুঃসত্যি তো?
আমিঃহুম সত্যি।
তারপর আপু চলে গেল।
আজ রবিবার ভার্সিটিতে যাচ্ছি।সব কিছু একদম আগের মত করে নিতে ট্রাই করছি। যাতে কেউ না বুঝে আমি আর দু দিনের অতিথি।
ভার্সিটিতে গিয়ে রাহীর পাশে বসলাম।২ টা ক্লাস করে বেরিয়ে আসলাম।
আমিঃআচ্ছা রাহী চল ঐ দিকে বসি।(সেদিকে সবাই গিয়ে বসলান)
হঠাৎ আমার আবারও মাথা চক্কর দিয়ে ওঠল।
জ্ঞান ফিরল হসপিটালের বেড়ে।
রাহীঃবন্ধু আমাদের ক্ষমা করে দিস।তোর জন্য আমরা কিছু করতে পারলাম না।
আমিঃবন্ধু আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে, হয়তো আমি আর কিছুক্ষণের অতিথি।আমার দুইটা শেষ ইচ্ছে পূরণ কর প্লিজ।
রাহীঃহুম পূর্ণ করব কি ইচ্ছে বল।
আমিঃআমার আপু আর আম্মুকে একটু দেখে রাখিস তোরা।
রাহীঃহ্যা দেখে রাখব তোর চিন্তা করতে হবে না।
আমিঃআর একটা ইচ্ছে পূরণ করবি প্লিজ
রাহীঃহুম বল কি ইচ্ছে?
আমিঃমিমকে একবার দেখার ইচ্ছে করছে খুব, তাকে একবার আমার সামনে আনবি প্লিজ।
(তখন রাহী সহ সবাই চেহারা কালো করে পেলছে, বুঝলাম না তাদের কি হয়ছে)
আমিঃকি হয়ছে কিছু বল।
রাহীঃবন্ধু আমাদের ক্ষমা করিস তোর শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে পারলাম না।
তোর জ্ঞান হারানোর পরেই আমি মিমকে ফোন দিছিলাম। সে নাকি তোকে চেনে না। রবি নামের কেউ ছিল সেটা নাকি সে অনেক আগে ভুলে গেছে।
সাদিয়াকে বলছিলাম সেও মিমকে বুঝাইছে কিন্তু তাও মিম আসবে না।
ক্ষমা করিস আমাদের।
আমিঃওকে , তোরা আপু আর আম্মুকে দেখে রাখিস।তোরাও ভালো থাকিস।(চোখের জল তো পড়ছে আমার সাথে সবার)
রাহীঃভালো থাকিস বন্ধু……..
(হঠাৎ রবি নামের ছেলেটা বড় একটা শ্বাস ছাড়ল,অপূর্ণ থেকে গেল তার শেষ ইচ্ছে)
হয়তো এভাবেই হারিয়ে যার হাজারো ভালোবাসা।
হয়তো রুপের কারণে, নয়তো টকার কারণে….
—————–সমাপ্ত —————–
#RK9023DXWC
ভুল দেখলে ধরিয়ে দিবেন। নয়তো বার বার ভুল হতে পারে।মনে রাখবেন মূর্খের ভুল ধরিয়ে দিলে আপনি হবেন তার শত্রু,আর জ্ঞানীর ভুল ধরিয়ে দিলে আপনি হবেন তার বন্ধু।
বিদ্রঃগল্পটা কি এখানে শেষ করে দিব নাকি আরো লম্বা করব জানাবেন।
ধন্যবাদ সবাইকে। কেমন হয়ছে জানাবেন
মানুষ মৃত্যু থেকে বাঁচার চেষ্টা করে জাহান্নাম থেকে নয়,কিন্তু মানুষ চাইলে জাহান্নাম থেকে বাঁচতে পারে,মৃত্যু থেকে নয়।
#সবাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন
আল্লাহ হাফেজ
#অনুমতি ব্যাতিত কপি করা নিষেধ….