#ফিরে_আসা
#ফারজানা
#পর্ব_৯
দীবা যখন স্বপ্নের হাত ধরে সামনে এগুতে দেখলো একটি লোক ভ্যান গাড়িতে করে ফুচকা বিক্রি করছে আর সেই ফুচকা দেখে দীবার মুখে পানি চলে আসে…..
____স্বপ্ন এই স্বপ্ন আমি না ফুচকা খাবো
___তোমার শরীল ঠিক না এই অবস্থায় ফুচকা খেতে হবে না চলো অন্য কিছু খাওয়া যাক
___নাহ আমি ফুচকাই খাবো
___না করছি আমি দীবা
____আমি খাবো মানে খাবো
___দীবাআআআআ
___এএএ বিইই তুমি আর আমায় ভালোবাসো না। ভালোবাসবে কিভাবে আমি তো পাগলী অসুস্থ্য আর পুরান হয়ে গেছি এ এ এ সামান্য ফুচকাও খেতে দেও না
____শুরু হয়ে গেলো ইমোশনাল ব্লেক মেইল ওকে যাও গিয়ে খাও ফুচকা
___কেনো তুমি খাবে না
___না তুমি যাও আমি ওই যে দেখছো উচু জায়গাটা ওইখানে দাড়িয়ে আছি
___আচ্ছা
দীবা চলে গেলো ফুচকা খেতে আর স্বপ্ন পাহাড়ের চূড়ায় উঠে দীবার জন্য অপেক্ষা করছে। দীবা ফুচকা খাওয়া শেষ করে আর কিছু ফুচকা ছোটো করে প্যাকেটে করে নিয়ে আসলো……
___এই যে স্বপ্ন নেও খাও ফুচকা
___তুমি আবার আনতে গেলে কেনো?
___আমার ইচ্ছা। এখন চলো ওই যে সবুজ ঘাস ওইখানে বসে বসে খাই
___যা হুকুম মহারাণী…..
স্বপ্ন ও দীবা বাকি ফুচকা গুলো খেয়ে ওইখানে বসে বসে প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগ করতে লাগলো….
ছড়ানো ছিটানো মেঘ পাহাড়ের নিচ গুলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে আর দীবা মেঘের খুলে হারিয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছে খেলা করছে তখন স্বপ্ন বললো…..
____জান একটা কথা বলি
___হুম বলো
___আমি যদি তোমার কাছ থেকে কিছু লুকিয়ে রাখি বাট পরবর্তীতে তুমি তা জানতে পারো তাহলে কি তুমি আমায় ক্ষমা করে দিবে
___তুমি যা লুকিয়েছো সব জেনে গেছি আমি
স্বপ্ন দীবার কথা শুনে অবাক হয়ে দীবার দিকে তাকালো আর তার চোখে মুখে স্পষ্ট দীবাকে হারানোর ভয় দেখা দিলো…..
তখন দীবা বললো…..
____ভয় পাওয়ার কিছুই নেই। তুমি যে আমার বাবা মার অ্যাকসিডেন্ট করিয়েছো আর আমার ওই ছোটো বোনের সাথে কি করেছে তা আমি অনেক থেকেই জানি
স্বপ্ন কিছু বলতে যাবে তার আগেই দীবা বলে উঠলো….
____চুপ কোনো কথা না। তুমি কি মনে করেছো সব কিছুই তোমার প্ল্যান বা তোমার কারণেই এই সাজেক আসা তাহলে তুমি সব ভুল ভাববে আমি আর রাদেই এইসব প্ল্যান করেছি। মিথ্যা অভিনয় করে ডক্টর কে আগে থেকেই বলে রেখেছিলাম যেনো ওনি ঘুরতে আসার কথা বলে আর তোমাকে আমি সব সময় সাজেকের কথা বলতাম কারণ এই সাজেকের এই পাহাড়ে কোনো দূর ঘটনা ঘটলেও কেউ বুঝতে পারবে না। হাহাহা
___ কি বলছো কি দীবা রাদ তো মারা গেছে
___রাদ মারা যায় নি সব ছিলো আমাদের প্ল্যান
___মানে?
____মানেটা না হয় আমিই বলি স্বপ্ন…..
স্বপ্ন পিছনে তাকিয়ে দেখে রাদ দাড়িয়ে আছে
___এত অবাক হওয়ার কিছুই নেই স্বপ্ন। তুমি আমার মা বাবা খুন করেছো আমার বোন কে রেপ করে অকেও খুন করেছো। আমাকে আর রাদ কে আলাদা করার জন্য কতই না প্ল্যান করেছো সব কিছু আজ শেষ হবে
____দীবা আমার কথাটা শুনে প্লিজ
___তোর কথাই আজ দীবা শুনবে না। আজ এই সাজেকের তোর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ কর।
বলেই স্বপ্ন কে ওই পাহাড় থেকে নিচে ফেলে দেয় রাদ। দীবা প্রথম একটা চিৎকার দেয় সাথে সাথে রাদ অকে জড়িয়ে ধরে…..
___তোমার অভিনয়টা ধারুন ছিলো। আমি তো প্রথম ভাবতাম সত্যি সত্যি পরে কিন্তু আমি জেলাস ফিল করতাম।
___তোমাকে জেলাস ফিল করার জন্যইতো এই রকম করেছি হিহিহিহি
__হুম বুঝতে পেরেছি। এখন এই শুভক্ষণে একটু মিষ্টি মুখ হয়ে যাক কি বলো ডার্লিং
দীবা লজ্জা পেয়ে রাদের ঠোঁটে হালকা ঠোঁট ছোঁয়াতেই রাদ দীবার পুরো ঠোঁট নিজের ধকলে নিয়ে নেয় …….
রাতে…..
___দীবা প্লিজ তাড়াতাড়ি আসো লক্ষ্মীটি। বিয়ের পর তো তোমার সাথে আমার এখনো ভালো কিছু হয় নি।
__বিয়ের পরেই তো আব্বু আম্মু মারা যায় তখন তো ওনাদের যে খুন করেছে আদিবার সাথে যে এমন করেছে তার মৃত্যু ছিলো আমার একমাত্র চাওয়া তাই তো তোমাকে দূরে রেখে ওই শয়তান কে পাশে রেখেছি
___এখন যা হবার হয়ে গেছে যান। আমি আর থাকতে পারছি না। চলে এসো
দীবার কানের কাছে মুখ এনে রাদ কথা বলছিলো। দীবার কেমন কেনো একটা অসস্তি লাগছিলো। হয়তো এতদিন স্বপ্নের কাছে থাকতে থাকতে।
____রাদ আমার কিছুদিন সময় লাগবে লক্ষীটি প্লিজ
___আর কোনো সময় না জান। প্লিজ নিজেকে আমার কাছে বিলিয়ে দেও
____রাদ প্লিজ। এক সপ্তাহ সময়
___এক মিনিট ও না
বলেই দীবাকে খুলে নিয়ে শুয়ে দিলো…..
ভোরে দীবা চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে রাদ অকে জড়িয়ে ধরে আছে। ও রাদের কপালে হাকলা ভাবে ঠোঁট জোড়া মিশিয়ে চুমু খেলো । আর বললো…..
____আজ থেকে আমাদের জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু রাদ। কখনো ছেড়ে যাবো না
রাদ তখন গভীর ঘুমে দীবা ফ্রেশ হওয়ার জন্য চলে যায়…..
দীবা ফ্রেশ হয়ে এসে শাড়ি পড়ছিল তখন ওর মনে হচ্ছে কেউ অকে দেখছে ও আসে পাশে তাকিয়ে দেখে নেই।পরে আবার রাদ ভেবে হেসে নিজের কাজে মন দেয়।
শাড়ি পরা শেষ করে পিছনে তাকিয়ে ও চমকে গেলো।
___স স্বপ্ন তু তুমি এইখানে? রাদ তো তোমাকে মেরে ফেলেছিলো
____হাহাহা। মৃত ব্যক্তিকে আর কতবার মারা যায় দীবা।
___ম মা মানে(ভয় পেয়ে)
_____মানে আমি আরো চার মাস আগেই মারা গিয়েছিলাম। শুধু তোমাকে ভালোবাসি বলে তোমার দেওয়া প্রতিজ্ঞা রাখতে আবারো ফিরে এসেছিলাম কিন্তু দেখো তুমিই কিনা আমার সাথে নাটক করেছো। গতকাল রাতে তোমাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্ত দেখে নিজেকে সহ্য করতে না পেরে চলে গিয়েছিলাম।
____তোমার শাস্তি তুমি পেয়েছো স্বপ্ন
____শাস্তি হাহাহা। এখন তো তোমাদেরও শাস্তি পেতে হবে জানে মন। তোমাকে ভালোবেসে হারিয়েছি প্রাণ সেই প্রাণের বিনিময়ে এখন নিবো তোমাদের প্ল্যান।
____স্বপ্ন একদম কাছে আসবে না।
____আমি স্বপ্ন না জান আমি স্বপ্নের সেই আত্মা যার সাথে বেঁচে থাকা সত্বেও অভিনয় আবার মৃত্যুর পর ও করেছে অভিনয়
_____এইসব অভিনয়ের জন্য তো তুমি দায়ী স্বপ্ন
____হাহাহা আমি দায়ী তা না। তাহলে শুনো কে আসলো দায়ী………
বিকালে রাদ বসে বসে বিজ্ঞাপন পড়ছিল তখন দীবা রাদের জন্য আলুর চপ আর ডিমের চপ নিয়ে আসলো…..
____বিকেল বেলা এইগুলো খেতে খুব ভালো লাগে
___তোমার তো এইসবই ভালো লাগবে
____রাদ তোমার জন্য আজ একটা স্পেশাল খাবার নিজের হাতে রান্না করেছি। খাবে
___তুমি বানালে তো খাবোই ডার্লিং
___এই নেও খাও
রাদ খাবারের দিকে তাকিয়ে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে দীবার দিকে তাকিয়ে একটা ঢুক গিললো….
কেননা খাবার গুলো ছিলো…..
চলবে……