#ফিরে_আসা
#ফারজানা
#পর্বঃ০৬

আদিবা চোখ একবার বন্ধ করলো আবার মেললো তখন তার ঠোঁটে দুষ্টুমির হাসি দেখা দিলো

আদিবা ছোটো হলেও ওর বুদ্ধি অনেক আর আদিবার খুব ইচ্ছা ছিলো কারো সাথে কথা বলবে অন্যের হয়ে তাই ও দীবার ফোন নিয়ে রাদ কে মেসেজ দিলো…..

___কে আপনি?

রাদ দীবার মেসেজ যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ও মেসেজ দিলো….

__আজ যে তোমাকে রেগিং এর হাত থেকে বাঁচিয়েছে সে

আদিবা কিছুক্ষণ ভাবলো ওর মনে একটা সন্দেহ হলো এই কি সেই নীল চোখ নাকি তাই ও আবারো জিজ্ঞাসা করলো….

___আপনি কি সেই নীল চোখ ওয়ালা মানুষ?

রাদ মেসেজটা যাওয়ার সাথে সাথে চেক করলো আর মেসেজ দেখে হেসে দিলো…..

___আমি আমি সেই ব্যাক্তি

___ওহহ আচ্ছা জানেন আপনাকে দেখার জন্য আমার মনটা চটপট করছে

মেসেজটা দেখে রাদের চোখ কপালে উঠে গেলো আর ভাবলো

আশিক না বললো মেয়েটা এইসব প্রেমে বিশ্বাসী না তাহলে এই মেসেজ দিলো নাকি ও আমার নীল চোখের প্রেমে পড়ে গেছে তখনি আবারো ফোনে মেসেজের আসলো….

___কি হলো কিছু বলছেন না কেনো নীল চোখ?

____না ভাবছি আপনি ও যে আমার কথা ভাবছেন বাই দা ওয়ে আপনি আমাকে তো একবারও আস্ক করলেন না কিভাবে আপনার নাম আর ফোন নাম্বার জানলাম

মেসেজটা দেখে আদিবা বুঝতে পারছে না কি বলবে । তখন ও বললো…

___আপনি মনে হয় জাদু জানেন তাই পেয়ে গেছেন

রাদ তো মেসেজটা দেখে হাসতে হাসতে শেষ ও ভাবছে এত বড় একটা মেয়ে আর ও কিনা এইসব ভাবছে আসলে মেয়েটা বড় হয়েছে বাট স্বভাব বাচ্চামো

___এই যে মিস বাচ্চা আমি জাদু জানি না আমি তোমার সব ইনফরমেশন কলেজ থেকে নিয়েছি

___ওহ আচ্ছা

___হুম। একটা কথা বলবো?

___মেসেজ করছেন তো কথা কেমনে বলবেন?

__হুম তাই তো তাহলে চলুন কথাই বলি

___ইহহহহ না না আপু সাথে

___সমস্যা নাই আস্তে আস্তে কথা বলবে

আদিবা ও না করলো না ও বললো আচ্ছা। আসলে ও রো জানতে ইচ্ছা করছিলো নীল চোখ মানুষটার সম্পর্কে আর নীল চোখ মানুষটার কণ্ঠ ও শুনতে ইচ্ছা করছিলো তাই আর না করতে পারলো না

আদিবা ফোন নিয়ে বেলকনিতে চলে গেলো তখনি রাদ ফোন দিলো….

___আসসালামু আলাইকুম

__ওলাইকুম আসসালাম।কেমন আছেন?

__আলহামদুলিল্লাহ ভালো আপনি?

__আগে ভালো ছিলাম না এখন অনেক ভালো

___কেনো?

___এই যে আপনার এত মিষ্টি আর বাচ্চামো কণ্ঠ শুনে

আদিবা লজ্জা পায় ছোটো হলেও আবেগ ভর্তি মন

___তাই বুঝি

___হুম

এইভাবে অনেকদিন চলতে থাকে আদিবা আর রাদের চুপি চুপি কথা বলা আর রাদ কলেজে দীবা কে দেখে হালকা হালকা কথা বলে কেননা আদিবা বলেছে কলেজে এইসব বিষয় কথা না বলতে ওর লজ্জা লাগে তাই যা বলবে ফোনে বলবে……

এইভাবে অনেকদিন চলতে থাকে এই ছোট্ট মেয়ে রাদের কথায় ওর মায়াজালে পড়ে যায় আর ভালোবাসতে শুরু করে এই ছোটো মেয়ে হয়তো ভালোবাসার মান সম্পর্ক কি বুঝে না শুধু বুঝে এই নীল চোখ ওয়ালা ব্যাক্তি কে সে ভালোবাসে…….

এইভাবে চলতে চলতে ২ টা বছর পার হয়ে যায় ছোটো আদিবা এইবার ক্লাস ৮ এ পরে আর দীবা ও এইবার অনার্স থার্ড ইয়ারে কিন্তু রাদ আজও জানে না ও কার সাথে কথা বলে ও জানে ও দীবার সাথে কথা বলে।

স্বপ্ন ও ওদের কথা বার্তা শুনে কষ্ট পায় বাট মুখে তা প্রকাশ করে না ও যতদূর পারে দীবার কাছ থেকে দূরে যেতে একদিন কলেজে ভেলান্টাইন্স ডে উপলক্ষে অনেক বড় একটা প্রোগ্রাম হয়। আর দীবা সেই প্রোগ্রামে গোল্ডেন কালারের শাড়ি চোখে গাঢ়ো করে কাজল আর ঠোঁটে পিঙ্ক কালারের লিপস্টিক কানে বড় যুমকো মাথার চুল এক পাশে সিটি করে এক পাশে রাখা আজ দীবা কে দেখতে একদম পরীর মতো লাগছে স্বপ্ন ও রাদ তো হা হয়ে তাকিয়ে আছে । রাদ নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে কলেজের বাগান থেকে একটা রাণী গোলাপী গোলাপ তুলে দৌড়ে চলে গেলো দীবার কাছে আর দীবাকে অবাক করে দিয়ে এক পা ভাঁজ করে দীবার সামনে বসে বললো…..

শোনো মেয়ে,
আমি কোনো রকম ভূমিকা-টূমকা
না করে একেবারে সোজাসুজিভাবে তোমাকে একটা কথা বলে দিতে চাই।

দীবা অবাক হয়ে রাদের দিকে তাকিয়ে রইলো অন্যদিকে স্বপ্ন এইসব দেখে অন্যপাশ ফিরে দাড়িয়ে রইলো আর রাদ দীবা কে কোনো কিছু না বলতে দিয়ে আবারো বলে উঠলো

এই দুষ্টু মেয়ে। তুমি এ কি জাদু
করলা? তোমাকে দেখলে আমার হার্টবিট বেড়ে যায়।
আবার তোমাকে না দেখলে অস্থিরতা মরে যাই।
তুমি কি জানো?
আমি তোমাকে অনেননননননননন….ক ভালোবাসি

একটা প্রেমের গান লিখেছি

আর তাতে তোর নাম লিখেছি

মাঝরাতে বদনাম হয়েছে মন।

ভালোবাসি তোমায় দীবা প্রতিদিন তোমার সাথে রাতে চুপিচুপি কথা কথা গুলো শুনতে শুনতে তোমার ওই পিচ্ছি কণ্ঠকে খুব ভালোবেসে ফেলেছি জানো প্রতিদিন অপেক্ষা করতে করতে আর ভালো লাগে না তাই আজ তোমার বারণ করা সত্বেও সবার সামনে প্রপোজ করে দিলাম

দীবা কথাটা শুনে মনে হলো আকাশ থেকে পড়লো তাই ও বললো….

___আমি কবে আপনার সাথে কথা বলছি রাতে?

___দীবা তুমি এই সময় মজা করছো কেনো সবাই দেখছে

___দেখুক। আর হুম আপনাকে আমি ও পছন্দ করি বাট ভালোবাসি কি না জানি না কিন্তু এই জন্য আপনি আপনার চরিত্র নিয়ে কথা বলবেন এই অধিকার কি আপনাকে দিয়েছি আমি

___ছিঃ ছিঃ দীবা তুমি এতটা মিথ্যাবাদী। তুমিই তো দুই বছর ধরে আমার সাথে কথা বলছো আর তুমি কিনা এইসব বলছো। আসলে তোমাদের মতো মেয়েরা মিথ্যা অভিনয় খুব ভালোই বলতে পারে

কতটা শুনে দীবা রাদ কে সজোরে একটা থাপ্পড় মারে…

___মিথ্যা আমি বলছি না আপনি? আর কি বলছেন আমি আপনার সাথে কথা বলেছি তাই না তাহলে দেখেন আমার ফোনে নাই কোনো মেসেজ নাই কোনো আপনার ফোন নাম্বার

____তুমি তো ডিলেট ও করে দিতে পারো

এই কথা বলে রাদ ওর ফোন বের করলো আর মেসেজ দেখালো আর রাদের ফোনে কিছু রেকর্ডও ছিলো ওইগুলো ও শুনালো । ফোনের ওপাশের কণ্ঠ শুনে দীবা স্থির হয়ে দাড়িয়ে রইলো আর বললো….

___আদিবা এমন করলো। ও যে এমন কিছু করতে পারে আমি ভাবতেও পারছি না। আমার তো বিশ্বাস ও হচ্ছে না

কথাটা বলে দীবা দৌড়ে সেই জায়গা ত্যাগ করে….

দীবার মুখে আদিবা নামটা শুনে রাদ ও স্বপ্ন অনেক অবাক হয় তখন স্বপ্ন বলে…..

___আমি তোকে অনেকবার বলেছি যে দীবার কণ্ঠ আর রাতের দীবার কণ্ঠ এক না। রাতের দীবা অনেক বাচ্চা স্বভাবের আর আবেগ ভর্তি আর এই দীবা অনেকটা ভিন্ন তোকে আগেই বলেছি ওর কথা না শুনে কলেজে দীবাকে আস্ক করতে বাট করলি না এখন দেখ কি হয়

রাদ তখন কিছু একটা ভেবে মুখে এক চিলতি হাসি দিয়ে স্বপ্ন কে বললো…..

___স্বপ্ন চল এক জায়গায়

।_____কোথায়?…

___সাথে গেলেই বুঝতে পারবি….

স্বপ্ন ও আর কোনো প্রশ্ন না করে রাদের সাথে চলতে লাগলো…..

চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here