প্রিয়ঃ_আপডেট পর্ব ৬
মোর্শেদা রুবিঃ
**************
৬.
সকালে ঝরঝরে অনুভূতি নিয়ে প্রিয়ার ঘুম ভাঙ্গলো।রাতের ওষুধটা বেশ কাজে দিয়েছে।মাথা ব্যথাটা একদম সেরে গেছে।জ্বর জ্বর ভাবটাও আর নেই তবে কোমড়ের কাছটায় একটা ভোঁতা যন্ত্রনা রয়ে গেছে।সাবধানে পাশ ফিরলো প্রিয়া।
শারদের উপর চোখ পড়লো।বেঘোরে ঘুমুচ্ছে সে।এই সুযোগে শারদকে ভালো করে দেখে নিচ্ছে প্রিয়া।জেগে থাকলে তো ভয়ে সংকোচে মুখের দিকে তাকাতেই পারেনা।কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে প্রিয়ার মনে হলো প্রিয়’র চেহারার সাথে একটা প্রচ্ছন্ন মিল আছে শারদের।ঘুমানোর কারনে কিনা কে জানে শারদকে অনেক শান্ত আর নিষ্পাপ দেখাচ্ছে।
আড়মোড়া ভেঙ্গে উঠে বিছানা ছাড়তে গেলে আচমকা কঁকিয়ে উঠলো প্রিয়া।ডান হাতে কোমড় চেপে বসে পড়লো।ব্যথাটা এতক্ষণ ঘাপটি মেরে ছিলো এখন নড়াচড়া করায় চাড়া দিয়ে উঠেছে।
ওর শব্দে শারদের ঘুম ভেঙ্গে গেছে। বিছানায় শুয়ে থেকেই প্রশ্ন করলো-“ব্যথা কমেনি?”
প্রিয়া মাথা নেড়ে না করলো!
শারদ গড়িয়ে বিছানার অপর পাশের ড্রআর থেকে একটা পেইন রিলিভার বের করে বললো-“এসো, এটা স্প্রে করে দেই!”
প্রিয়া রীতিমত আঁতকে উঠলো-“আরে না না,এটা দিতে হবেনা।”
-“আরে এটা দিলে তুমি দৌড়াতে পারবে!”
-“না,থাক্!”
শারদ কি বুঝলো কে জানে।রিলিভারটা ড্রয়ার খুলে ছুঁড়ে মারলো!
-“যাও,না দিলে নাই!”
প্রিয়া দাঁতে দাঁত চেপে ব্যথাটা হজম করে উঠে দাঁড়ালো।পা বাড়াতে যাবে এমন সময় দরোজায় টোকা পড়লো।প্রিয়া ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও দ্রুত দরোজার দিকে এগোতে পারছেনা।
শারদ উঠে গিয়ে গেট খুললো।
সাজেদা ঘরে ঢুকে বললেন-“কি অবস্থা তোমার?”
-“জ্বী,আলহামদুলিল্লাহ!”
-“হাঁটতে পারছো?”
-“একটু অসুবিধা হচ্ছে তবে পারবো!”
-“শারদ, তুই সন্ধ্যায় ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যা!”
-“না না…আম্মা, আমি ডাক্তারের কাছে যাবো না!”
-“কিন্তু তুমি তো সোজা হয়ে হাঁটতে পারছোনা!”
-“সমস্যা নেই।একটু হাঁটাচলা করলে ঠিক হয়ে যাবে!”
-“ও আসলে ব্যথাটা পালতে চাচ্ছে। পেইন রিলিভার দিলাম লাগাবেনা,
ডাক্তারের কাছে যাবে না!ওকে ওদের বাসায় পাঠিয়ে দাও।”শারদ কিছুটা রূঢ় স্বরে বললো।প্রিয়া আহত দৃষ্টিতে তাকালো শারদের দিকে।
সাজেদা ছেলেকে মৃদু ধমকে থামিয়ে দিয়ে বললেন-“আহ্,কি শুরু করেছিস।শোনো প্রিয়া,যে ডাক্তারের কথা বললাম উনি পুরুষ না মহিলা ডাক্তার।তুমি দেখাতে পারো!সমস্যা নেই!”
প্রিয়া মাথা নেড়ে সায় দিলো।শারদ মায়ের কথা শুনে এবার ধরতে পারলো কেন প্রিয়া ডাক্তারের কাছে যেতে চাচ্ছিলো না বা স্প্রে করতে দিতে চাচ্ছিলো না।সে বোকার মতো প্রিয়ার দিকে তাকালো কিন্তু প্রিয়া ওর দিকে আর তাকালোই না।সাজেদার সাথে কথা বলতে বলতে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বের হয়ে গেলো সে।
সারাদিনে আর প্রিয়াকে এ ঘরে দেখা গেলোনা।সাজেদা ওকে আজ রান্না করতে দেন নি।তাই প্রিয়কে নিয়েই সারাটা দিন কাটালো প্রিয়া।রাতে সাজেদার খাটেই কাত হয়ে প্রিয়কে ঘুম পাড়াচ্ছিলো।
সাজেদা ওদের দুজনকে হাসিমুখে কিছুক্ষণ দেখে প্রিয়কে বললেন-“কি দাদু,ঘরে যাবেনা?”
প্রিয় চুপ হয়ে তাকিয়ে রইলো।তবে প্রিয়া কিছুটা আড়ষ্ট হয়ে গেলো।
সাজেদা ওর দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে বললেন-“ওটা তোমার নিজের ঘর প্রিয়া।শারদকে ভয় বা লজ্জা পাবার কিছু নেই।নিজের অধিকার নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নিতে হবে।
শারদের বাবা এসময় ঘরে ঢুকতেই প্রিয়া উঠে বসলো।প্রিয়কে কোলে নিয়ে আস্তে করে উঠে দাঁড়িয়ে বললো-“প্রিয়র বাকী জিনিসগুলো দিন আম্মা ,ওকে নিয়ে যাই।প্রিয় আজ থেকে আমার কাছেই থাকবে।”
সাজেদা খুশি হয়ে প্রিয়র জিনিসপত্র গুছিয়ে বললেন-“চলো, আমি সহ যাই।তুমি একা ওকে নিয়ে এতোকিছু নিতে পারবেনা!”
সাজেদা যখন প্রিয়ার সাথে ঘরে ঢুকলেন শারদ তখন পিসিতে কাজ করছিলো।একপলক ওদের দেখে নিজের কাজে মন দিলো!সাজেদা প্রিয়র জিনিসপত্র বিছানায় নামিয়ে রেখে নাতনীর গালে চুমু দিয়ে প্রিয়ার কাঁধে হাত রেখে ওকে আশ্বস্ত করে চলে গেলেন।
প্রিয়কে নিয়ে বিছানার একপাশে শুয়ে পড়লো প্রিয়া।কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমে চোখ জড়িয়ে এলো ওর।প্রিয়কে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়লো সে।
খটখট শব্দে হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে গেলো প্রিয়ার।চোখ মেলে ঘড়ি দেখলো।রাত সাড়ে তিনটা বাজে।নিঃশব্দ রাতের নিস্তব্ধতাকে ছাপিয়ে একটানা বেজেই চলছে খট খট শব্দটা।প্রিয়া উঠে বসে অবাক হয়ে দেখলো শারদ একমনে পিসি কে কাজ করে যাচ্ছে।আস্তে করে বিছানা ছাড়লো সে।
ওযু করার জন্য বাথরুমের দিকে রওনা হলো।শারদ ঘাড় ফিরিয়ে কেবল ওকে একবার দেখে আবার কাজে মন দিলো।
প্রিয়া অযু করে বের হয়ে দেখলো শারদ দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে বিশ্রাম নিচ্ছে।সে আর চুপ করে থাকতে পারলোনা।বলেই ফেললো-“সারা রাত কম্পিউটারে কি কাজ করেন আপনি?”
শারদ ঘাড় ফিরিয়ে একবার প্রিয়াকে দেখে দীর্ঘশ্বাসের সুরে বললো-“এই তো, আমার ব্যবসায়িক কাজগুলো তো সব পিসিতেই করতে হয়।বায়ারদের মেল চেক করা,সেগুলোর আন্সার দেয়া,যাবতীয় সব কাজই তো পিসি তে।”
-“আপনার ক্লান্ত লাগে না?”
-“নাহ্,কাজ নিয়েই তো বেঁচে আছি!”
-“আপনাকে এককাপ চা করে দেই?”
-“মমম…..চা? হলে তো খুবই ভালো হয়!”
প্রিয়া কোনো কথা না বলে রান্নাঘরে চলে এলো।কয়েক মিনিটের মধ্যে চা বানিয়ে শারদের সামনে রেখে নিজে নামাজে দাঁড়িয়ে গেলো।শারদ তৃপ্তির সাথে চায়ে চুমুক দিয়ে পুরোনো স্মৃতিতে ফিরে গেলো।নীরা কখনো রাত বিরেতে চা খাওয়া পছন্দ করতো না।বানিয়ে দিতে বললে রেগে যেতো।প্রিয়া নীরার ঠিক বিপরীত।হঠাৎ শারদ সচকিত হয়ে ভাবলো, ছিঃ এসব কি ভাবছি আমি।নীরার তুলনা অন্য কারো সাথে হতেই পারেনা।নীরা শারদের প্রথম প্রেম।প্রথম ভালোলাগা।যৌবনের প্রথম উচ্ছাস।আর প্রিয়া মায়ের পছন্দ।প্রিয়র প্রয়োজন আর শারদের….নতুন দায়িত্ব।
সে নীরার মতো আর কাউকে ভালোবাসতে পারবেনা।
শারদ আনমনেই ঘাড় ফিরিয়ে প্রিয়ার দিকে তাকালো।তাকিয়েই স্থির হয়ে গেলো।প্রিয়াকে অসম্ভব পবিত্র দেখাচ্ছে।কাউকে কখনো এতো ইনোসেন্ট দেখাতে পারে শারদের ধারনা ছিলোনা।প্রিয়াকে সালাম ফিরাতে দেখে শারদ চট করে মুখ ঘুরিয়ে ফেললো।
প্রিয়াকে ওর দিকে স্বাভাবিক ভাবে হেঁটে আসতে দেখে হাতের কাপটা বাড়িয়ে ধরে বললো-“ব্যথাটা একদম গেছে না?”
জ্বী।আপনার পেইন রিলিভারেই কাজ হয়েছে।ডাক্তারের কাছে যেতে হয়নি!”বলে হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপটা নিলো প্রিয়া।
শারদ হঠাৎ কি ভেবে বলে উঠলো-“তখন ওভাবে বলার জন্য স্যরি,আসলে অতকিছু ভেবে বলিনি।”
প্রিয়া কোনো উত্তর দিলোনা একথার।চায়ের
কাপ হাতে বেরিয়ে গেলো।ফিরে এসে বললো-“আপনি নীরাকে খুব ভালোবাসতেন না?”
শারদ কিছুটা চমকে তাকালো-“হঠাৎ এ প্রশ্ন?”
-“না,মানে।এখনও নিশ্চয়ই ভালোবাসেন?”
-“তাতো অবশ্যই!”
-“তাহলে ওনার জন্য দু’আ করেন না কেন যেন আল্লাহ তাকে মাফ করে দেন।”
শারদ সহসাই কোনো জবাব দিলোনা একথার।প্রিয়া ওড়নার প্রান্ত খুঁটে বললো-“একটা কথা বলতে চাচ্ছিলাম,যদি অনুমতি দেন তো খুশি হবো!”
শারদ উত্তর না দিয়ে তাকালো।প্রিয়া মুখ নিচু করে বললো-“প্রিয় কে আমি ইসলামের রীতিনুযায়ী মানুষ করতে চাই।আপনি যদি অনুমতি দেন তো ওকে আমি ছোটবেলা থেকেই পর্দা করতে শেখাতে চাই!”
শারদ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো-“প্রিয় আমার একমাত্র মেয়ে।আমি অবশ্যই চাইবো ও ভালো কিছু শিখুক কিন্তু তাই বলে এতো ছোট বয়সেই পর্দা করবে কেন।পর্দার কি বোঝে ও…!”
-“বুঝেনা কিন্তু বুঝতে শুরু করবে।ওকে বড় হবার পর যদি হঠাৎ করে বলেন, আজ থেকে তুমি এভাবে চলবে তাহলে বিষয়টা ওর জন্য মানা কষ্টকর হয়ে যাবে তাছাড়া পর্দার অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই করাতে হয়।যেসব বাচ্চারা হাত পা পেট পিঠ বের করা অদ্ভুত পোষাক পড়ে বড় হয় তারা একটু বড় হলে তার কাছে ঢাকা কাপড় দেখলে কষ্ট বা অস্বস্তি হবে,তামাশা মনে হবে কারন ওর চোখের লজ্জা তো ছেলে বেলাতেই নষ্ট হয়ে গেছে।তখন সে পর্দা মেনে চলাটাকে ঝামেলা মনে করবে।আর বড় হয়ে আল্লাহর এই অমোঘ বিধানটাকে পাশ কাটিয়ে চলা রপ্ত করে নেবে আর এর শাস্তি আপনাকে এবং নীরাকে দুজনকেই ভোগ করতে হবে!”
শারদ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললো-“তুমি ওকে তোমার মতো করে তৈরী করো,কোনো সমস্যা নেই!”
প্রিয়া এবার খুশি হয়ে বললো-
–“যাজাকাল্লাহ!আর একটা অনুরোধ!”
-“আবার কি?”
-“আপনি এতো রাত পর্যন্ত জাগেন।ইচ্ছে করলেই ফজরের নামাজটা পড়তে পারেন যেটা ঘুমের কারনে অনেক নামাজীই পারেনা,মিস করে।”
-“এই শুরু হলো তোমার।কাছে আসার সুযোগ পেয়ে এখন খবরদারী করা শুরু করেছো! আমার নামাজ নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবেনা!তুমি প্রিয় পর্যন্তই থাকো!”
প্রিয়া দমে গেলো কিছুটা।
-“দেখুন,আপনার উপর আমার কোনো অধিকারই আমি ফলাতে আসিনি,খবরদারী তো পরের কথা।আপনার সঙ্গী হিসেবে না হোক,একজন মুসলিম হিসেবে এতটুকুতো আপনাকে বলতেই পারি যে,নামাজ পড়া প্রত্যেক মুসলমানের জন্য ফরয!এটা ঐচ্ছিক কোনো বিষয় না যে মন চাইলো পড়লাম আর না মন চাইলে পড়লাম না।আমাদের পৃথিবীতে পাঠানোই হয়েছে আল্লাহর ইবাদত করার জন্য।চাকরি,ব্যবসা বিয়ে শাদী সংসার এসব তো বেঁচে থাকার প্রয়োজনে……!”
-“আচ্ছা,এখন সরো।আমাকে কাজ করতে দাও!”শারদ কাজে মনোযোগ দিতে চেষ্টা করলো। প্রিয়া সরে গেলো ওখান থেকে।
পরদিন প্রিয়ার চাচা এলেন প্রিয়াকে দেখতে।প্রিয়ার মাথায় হাত রেখে বললেন-“কেমন আছিস রে মা!”
-“আলহামদুলিল্লাহ,চাচাজান।বাসায় আপনারা সবাই ভালো?”
-“আছি তো ভালোই।তবে তুই চলে আসায় তোর চাচীর হাত পা একদম ভেঙ্গে গুড়িয়ে গেছে।সে এখন কাজ নিয়ে পেরেশান!”
-“কেন,হনুফা আসেনা?”
-“আরে হনুফা কি আর তোর মতো চব্বিশ ঘন্টা সার্ভিস দেবে নাকি!”
প্রিয়া শুধু হাসলো কিছু বললো না।মিজানুর রহমান এক ফাঁকে প্রশ্ন করলেন-“হ্যাঁ,রে জামাই কেমন? তোকে মুল্যায়ন করে তো!”
-“জ্বী,মামা।এমনি তে তো মাশাআল্লাহ উনি ভালোই!খালি নামাজটাই……..!”
-“মা গো,এটা তুই ওকে বুঝাবি।বোঝালে সে ঠিকই লাইনে আসবে।সবাই কি আর হেদায়েত পেয়ে জন্মায়!আমরা তো সবাই বংশসূত্রে মুসলিম তাই ইসলাম কি তা না বুঝেই একজীবন পার করে ফেলি।মনে করবি এটা তোর দায়িত্ব,স্বামীকে দ্বীনের পথে আনা!চেষ্টা চালিয়ে যা,ফল আল্লাহ দিবে।আর কোনো সমস্যা নেই তো মা!”
-“জ্বী,না চাচাজান।আলহামদুলিল্লাহ আমি অনেক ভালো আছি!”
যাবার আগে সাজেদার সাথেও অনেক কথা হলো।মিজানুর রহমান মনে পরম স্বস্তি নিয়ে ফিরে গেলেন।বাপ মা মরা ভাইঝিটি তার দায়িত্ব হলেও সে ছিলো তার হৃদয়ের অনেকখানি।নিজ সন্তানের মতোই তাকে ভালোবাসেন তিনি।তাই তিনি দেখতে এসেছিলেন প্রিয়া সাংসারিক জীবনে সুখী হতে পেরেছে কিনা!সবকিছু দেখে তিনি স্বস্তি নিয়ে ফিরে গেলেন।যাবার আগে প্রিয়াকে একদিন জামাইকে নিয়ে তার বাড়ী বেড়াতে যাবার কথাও বলে গেলেন।
সাজেদা হেসে সম্মতি দিলেন।
প্রতিদিনের মতো প্রিয়কে গোসল করিয়ে খাইয়ে প্রিয়া নিজেও গোষল নামাজ শেষে প্রিয়কে ঘুম পাড়াচ্ছিলো।এমন সময় শারদ
ঘরে ঢুকে হাতের কাগজগুলো আছড়ে ফেললো কম্পিউটার টেবিলের উপর।প্রিয়া চমকে সেদিকে তাকালো।শারদের মুখ রাগে থমথম করছে।প্রিয়া সেদিকে তাকিয়ে
ভয়ে ভয়ে উঠে বসলো-“কি হয়েছে?”
শারদ কোনো জবাব না দিয়ে শার্ট খুলে হ্যাঙ্গারে ছুড়ে মেরে বাথরুমে ঢুকে গেলো।প্রিয়া দেখলো প্রিয় ঘুমিয়ে পড়েছে।সে আস্তে করে উঠে শার্টটা তুলে যথাস্থানে রেখে দ্রুত রান্নাঘরে চলে এলো।ক্ষিপ্রহাতে মালটার জুস বানালো।তারপর সেটা ট্রে তে বসিয়ে ঘরে এসে দেখলো শারদ ভেজা মুখ নিয়ে টাওয়েল খুঁজছে।প্রিয়া দ্রুত টাওয়েলটা ওর হাতে দিয়ে শরবতটা হাতে নিয়ে দাঁড়ালো।
শারদ মুখ মুছে বললো-“শরবত হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছো কেন?রেখে চলে গেলেই তো পারো!”
-“না,ঠিক আছে।আপনি টাওয়েলটা দিন।আর এটা নিন।”
বলে গ্লাসটা বাড়িয়ে ধরলো।
-“খাবোনা আমি শরবত!”
-“কেন? আমি আপনার জন্যই বানিয়েছি।প্লিজ, নিন না!”
শারদ কটমটে চোখে তাকালো-“একবার বলেছি খাবোনা।মানুষের মুড বুঝো না?”
প্রিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে টাওয়েলটা নিয়ে সরে গেলো তবে সরে যাবার আগে চট করে শারদের বুকে ফুঁ দিয়ে দিলো!
-“এটা কি করলে?”
-“পরে বলবো।এখন বললে বুঝবেন না!”
প্রিয়া চলে যেতে উদ্যত হলে শারদ ডাকলো-“কই,শরবত দিলে না?”
প্রিয়া ঠোঁট চেপে হাসি আটকে শরবতের গ্লাসটা বাড়িয়ে ধরলো।
শারদ গ্লাসটা নিয়ে মুখে দিতেই ওর কোঁচকানো ভ্রু সমান হয়ে গেলো।শরবত খেতে খেতে শারদের চোখ প্রিয়াকে জরিপ করতে লাগলো।আর প্রিয়া আনত নয়নে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো!
চলবে…..