প্রিয়ঃ_আপডেট পর্ব ৩
মোর্শেদা রুবি

৩.
সকালে ঘুম ভাঙার পর থেকেই প্রিয়’র একই ঘ্যানঘ্যানানি শুরু হয়েছে! কোনোভাবেই কান্না থামানো যাচ্ছেনা।আধো আধো বোলে বারবার বলার চেষ্টা করছে-“তিয়া…..তিয়া!”

শারদ কম্পিউটারে কাজ করছিল।প্রিয়র কান্নামেশানো কথা শুনে মায়ের দিকে তাকালো-“মা….কি বলছে ও?তিয়া কি?”
-“আরে ও ঐ প্রিয়া মেয়েটার কথা বলছে।কাল তোর মাজেদা খালার সাথে গেলাম না! সেখানে তো তোর মেয়ে তো কাল তান্ডব করেছে।শেষে নতুন বৌ এর চাচাতো বোন প্রিয়ার কোলে গিয়ে শান্ত হয়েছে।অনেকক্ষণ ওর সাথে খেলেছে!”
-“তাই নাকি?”বলে শারদ কম্পিউটার ছেড়ে উঠে এসে মেয়েকে কোলে নিয়ে আদরের সুরে বললো-“কি হয়েছে মা?”
-“তিয়া দাবো…!”

-“এই যে বাবা আছে।চলো আমরা একটু ঘুরে আসি!”বলে শারদ মায়ের দিকে তাকিয়ে বললো-
-“মা,আমি একটু ওকে বাইরে থেকে ঘুরায়ে নিয়ে আসি!”

-“নিয়ে যা তাহলে।তোর মেয়ের মাথায় একটা কিছু ঢুকলে আর সহজে ভোলে না!”

শারদ প্রিয়কে কোলে নিয়ে বাইরে চলে গেলো।সাজেদা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চিন্তায় ডুবে গেলেন!

তার নাতনী একদিনেই মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানেই প্রিয়া মেয়েটার অনুরক্ত হয়ে পড়েছে।নাতনীর ব্যাপারে তিনি যতবারই ভাবেন ততবারই প্রিয়ার ব্যপারে তাঁর মন স্থির সিদ্ধান্তে চলে আসে।তিনি প্রিয়’র জন্য গত দুটো বছর ধরে এমন একজনকেই খুঁজছিলেন।শারদের জন্যেও।

ছেলেটা নিজেকে যেন শেষ করে দিচ্ছে।তার হাসিখুশি ছেলেটা কেমন মেজাজী আর গম্ভীর হয়ে গেছে।ওকে শেষ কবে হাসতে দেখেছেন মনে করতে পারবেন না সাজেদা।একমাত্র প্রিয়’র সামনেই সে স্বাভাবিক থাকে নতুবা মুখের ওপর কঠিন এক বর্ম এঁটে থাকে সে।
নীরা মারা যাবার পর থেকে আত্মীয় মহলে অনেকেই নিজের মেয়ে দিতে প্রস্তুত ছিলো।কিন্তু শারদের এককথা, সে আর বিয়ে করবে না।নীরার স্থান সে নাকি কাউকে দিতে পারবেনা।ভেবেছিলেন নীরার ছোট বোন ইরাকে দিয়ে বিয়ে করালে হয়তো শারদ রাজী হবে।কিন্তু এটা শুনে তো আরো তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেছে সে।ইরাকে নাকি সে বোনের চোখে দেখে,ওকে বিয়ে করার প্রশ্নই ওঠেনা।অথচ ইরাসহ ওদের গোটা পরিবার বিয়েতে রাজী ছিলো কিন্তু যেখানে শারদ নিজেই রাজী না সেখানে তিনি জোর করে তো আর বিয়ে করাতে পারেন না।

এদিকে প্রিয়ও দিন দিন কেমন জেদী আর একগুঁয়ে হয়ে উঠছে।একবার কাঁদতে ধরলে আর সামলানো মুশকিল।কাঁদতেই থাকে।তার নিজেরও তো বয়স হয়েছে।তিনি নিজেই এখন প্রিয়কে সামলাতে হিমশিম খান।প্রিয়কে নিয়ে রাত জাগতে গিয়ে তার নিজেরই ইনসমনিয়ার মতো হয়ে গেছে।

গতকাল প্রিয়া মেয়েটাকে দেখার পর তো বটেই বিশেষ করে প্রিয়র সাথে ওর অন্তরঙ্গতা দেখে সাজেদার মাথায় রোখ চেপে গেছে।যা হোক না হোক,এই মেয়েকে তিনি শারদের বউ বানিয়ে আনবেনই।
যদিও বয়সটা একটু কম মেয়েটার,তবু শারদের সাথে একেবারে বেমানান লাগবেনা।তাছাড়া মেয়েটা শ্যামলা হলেও চেহারাটা মায়াকাড়া।
এদিকে বাড়তি যোগ্যতা হিসেবে ধার্মিকতাও আছে।তাছাড়া প্রিয়া মেয়েটা নিজে এতিম, সে নিশ্চয়ই আরেক এতিমের কষ্ট বুঝবে বলেই তাঁর বিশ্বাস।
তিনি প্রিয়ার সাথে সরাসরি কথা বলবেন তবে তার আগে শারদকে হ্যাঁ বলাতে হবে!
তিনি আজই শারদ আর তার বাবার সাথে কথা বলার সিদ্ধান্ত নিলেন।শারদকে যে করেই হোক রাজী করাতেই হবে।
তবে মেয়েটার ব্যপারে আরেকটু খোঁজ খবর করতে হবে।
সাজেদা দ্রুত মাজেদার নম্বরে ফোন করলেন।

একটু পরেই শারদ মেয়েকে কোলে নিয়ে ফিরে এলো।প্রিয়ার হাতে আইসক্রিমের ছোট্ট একটা কাপ।সে সাজেদাকে দেখে হেসে হাত বাড়িয়ে দিলো!
-“শেষমেষ আইসক্রিমে পোষ মানলো?”বলে সাজেদা নিজ হাতেই কাপটা নিয়ে ছোট ছোট স্কুপ নাতনীর মুখে তুলে দিতে লাগলেন।

শারদ গিয়ে ফের কম্পিউটারে বসলো।সাজেদা একপলক ছেলের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবলেন,এখনই বিয়ের কথাটা বলবেন নাকি?মাজেদার সাথে তার এইমাত্র কথা হলো।মাজেদা আগে শারদকে রাজী করাতে বলেছে কারন প্রিয়ার ব্যপারে ওর চাচার সাথে নাকি ও নিজেই কথা বলবে।ওর বিশ্বাস আরমানের শ্বশুড় মাজেদার কথা ফেলতে পারবেন না।
সাজেদা হঠাৎ ছেলের উদ্দেশ্য বললেন-“শারদ, তুই কি ব্যস্ত নাকি রে?”
শারদ কম্পিউটার থেকে চোখ না সরিয়েই বলল-“কিছু বলবে নাকি মা?”
-“কি বলবো আর! বলার তো কথা একটাই আর তুইও সেটা জানিস যে আমি কি বলতে চাই”!

শারদ আর কোনো কথা না বলে একমনে কাজ করতে লাগল।সে বেশ বুঝতে পারছে মায়ের মাথায় আবার বিয়ের ভুত চেপেছে অথচ সে আগেই স্পষ্ট বলে দিয়েছে সে আর কোনোদিন বিয়ে করবেনা।তবু মা তার চেষ্টায় অনড়।
সাজেদা নাতনীকে আইসক্রিম কিছুটা খাইয়ে কাপটা আস্তে করে সরিয়ে ফেললেন আর ওর হাতে ওর পছন্দের খেলনাটা ধরিয়ে দিলেন।পুরো আইসক্রিমটা না খাওয়াই ভালো।এমনিতেই বাচ্চাটার ঠান্ডার ধাত।তিনি উঠে এসে শারদের পাশে বসে ওর হাতের উপর হাত রাখলেন।
-“বাবা,আমার কথা শোন্,একটা মেয়ের কথা বললাম না।ঐ যে প্রিয় যার কোলে গিয়ে শান্ত হয়ে গেলো। মেয়েটা খুব ভালো রে…..খুব শান্ত আর ভদ্র।জানিস,মেয়েটার বাবা মা নেই।চাচার কাছে মানুষ।”

-“মা…”(মাকে থামিয়ে দিয়ে শারদ টাইপ করা বন্ধ করে মা’ র দিকে ঘুরে বসল)”কেন আরেকটা মেয়ের জীবন নষ্ট করতে চাইছো?”

-“কেন? জীবন নষ্ট হবে কেন?”

-“কারন আমি নীরা’র জায়গায় অন্য কাউকে বসাতে পারবোনা আর তুমি এটা ভালো করেই জানো।”

-“দ্যাখ্,জন্মেছি যখন তখন মরতে তো হবেই তাই বলে জীবন তো থেমে থাকবেনা!”

-“আমি আর বিয়ে করবোনা মা,প্লিজ… আমাকে জোর কোরোনা!এই কথাটা তোমাকে কতবার বলতে হবে”!

-“নিজের দিকে একবার দেখেছিস?বয়স হবার আগেই বুড়োদের মতো লাগে তোকে।”

-“সাঁইত্রিশ ইজ নট আ ম্যটার অফ জোক।বুড়ো তো হয়েছিই।”

-“শোন্,তুই এবার কোনো কথা বলে পার পাবিনা।এবার আমি তোর কোনো কথা শুনবো না!প্রিয়াকেই আমি বিয়ে করিয়ে নিয়ে আসবো।প্রিয় কত্ত পছন্দ করে ওকে!আর পুরুষ মানুষের জন্য সাইত্রিশ কোনো বয়স না!”

কথাটা শুনে হঠাৎ শারদ সোজা হয়ে বসলো-“আচ্ছা,একটা কথা।তুমি বলছো মেয়েটা প্রিয়কে নিয়ে খেলেছে, তাই না?”

-“হ্যাঁ…..তো?”

-“তার মানে মেয়েটার বয়স খুব বেশী হবে না।এগজ্যাক্টলী কত হবে বয়েস ওর ?”শারদ কম্পিউটার ছেড়ে মায়ের মুখের দিকে তাকালো!

সাজেদা কিছুটা ইতস্তত করে বললেন-“কত আর হবে,এই ধর পঁচিশ কি ছাব্বিশ?”

-“তার মানে আমার বারো/চৌদ্দ বছরের ছোট!”

-“তাতে কি?বয়স দিয়ে কি হয়?তোর বাবা আমার আঠারো বছরের বড়।আমাদের দুজনের আন্ডারষ্ট্যান্ডিং এ তো কখনো কোনো সমস্যা হয়নি।নীরা তো তোর ক্লাসমেট ছিলো।কতবার ঝগড়া করে ও বাড়ী ছেড়েছে বলতো?”

-“মা…..!”আহত স্বরে বললো শারদ।

-“স্যরি,যে মারা গেছে তার বদনাম গাওয়া গুনাহের কাজ। কিন্তু কথা প্রসঙ্গে বললাম।বয়স কখনো বন্ধুত্বের শর্ত হতে পারেনা।”

-“তা পারেনা কিন্তু আমি আমার চেয়ে এতো অল্প বয়সের মেয়ে বিয়ে করবোনা!”

শারদ কথা শেষ করে পুনরায় কম্পিউটারের দিকে ঘুরে বসল যেন সে শেষ কথা বলে দিয়েছে!
সাজেদা এবার বেশ রেগে গিয়ে উঠে দাঁড়ালেন।
-“করিসনা,আমিও আর কিছু বলবোনা।তারপর দুদিন বাদে আমি যখন মরে যাবো তখন বাচ্চাটাকে নিয়ে একটা এতিমখানায় দিয়ে আসিস কারন তখন তো তুই আরো বুড়ো আর দুনিয়া বিবাগী হয়ে যাবি তখন তো তোর দুটো শোক থাকবে।একটা নীরার মৃত্যশোক অন্যটা আমার মৃত্যুশোক “!

শারদের হাত থেমে গেল।মা’র দিকে তাকিয়ে বলল-“তুমি কি চাও আমার কারনে আরেকটা জীবন নষ্ট হোক?”

-“তা কেন চাইবো,কিন্তু প্রিয়’র কথাটা একবার ভাব!ওর একজন মা দরকার যে সারাক্ষণ ওর পাশে থাকবে”!

-“তুমি এটা কিভাবে নিশ্চিত হলে যে,ঐ মেয়েটা প্রিয়’কে ভালবাসবে?সৎ মায়েরা কখনো ভালো হয়, শুনেছো?”

-“অনেক শুনেছি”!সবাই একরকম হয়না শারদ।তাছাড়া আমি খোঁজখবর নিয়েই তোকে বলছি,মেয়েটা খুব ভালো আর ধার্মিক মাইন্ডেড “!

শারদ বড় করে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ধীরে ধীরে বলল-
-“ঠিকআছে,তোমার জেদের কারনে আমি বিয়ে করবো তবে, যদি মেয়েটার সাথে কথা বলে ওকে আমার প্রিয়’র জন্য ঠিক মনে হয় তাহলেই !আমি মেয়েটার সাথে একবার কথা বলতে চাই!”

সাজেদা ঊৎসাহের সাথে বললেন-“ঠিকআছে,পাপিয়ার বিয়েতেই তোর সাথে মেয়েটার কথা বলাবার ব্যবস্থা করে দেবো।কিন্তু তুই আবার বেঁকে যাসনা যেন!”
শারদ কোনো জবাব না দিয়ে খটাখট টাইপ করতে লাগলো।

দেখতে দেখতে শুক্রবার চলে এলো।আজ আরমানের শ্বশুড়বাড়ী থেকে লোক আসবে আরমানকে আংটি পড়াতে।সাজেদা মনে মনে ভেবে রেখেছেন আজই মাজেদাকে সাথে নিয়ে সালেহাকে একফাঁকে প্রিয়ার সাথে শারদের দেখা করাবার কথাটা বলবেন।আর তখনই বিয়ের প্রস্তাবটাও রাখবেন।
সন্ধ্যের কিছু পরেই পাপিয়ার পুরো পরিবার চলে এলো।তাদের মাঝে প্রিয়াকে না দেখে সাজেদা কিছুটা দমে গেলেন।আড়ালে গিয়ে মাজেদাকে বললেন-“তোর বেয়াইনের কান্ডটা দেখেছিস?এতো করে বলার পরও প্রিয়াকে আনলোনা”!

মাজেদা হেসে বলল-“তুমি কি আপা,প্রিয়াতো এসেছে,ঐ তো বসে আছে।বোরকা পড়ে আছে বলে চিনতে পারছোনা।সাজেদা হঠাৎ খুশিতে হেসে দিলেন।

আংটি পড়ানোর রুসুম শেষে একফাঁকে সালেহাকে মাজেদার ঘরে ডেকে নিয়ে প্রিয়ার বিয়ের প্রস্তাবটা সরাসরিই দিলেন সাজেদা হাই।সালেহা নিজেও যেন মনে মনে প্রস্ততই ছিলেন এ কথার জন্য !তার মন বলছিলো যে এরা হয়তো প্রিয়ার বিয়ের প্রস্তাবই রাখবে।

সালেহা খুবই ভদ্রতা ও বিনয়ের সাথে বললেন-“কি সৌভাগ্য আমাদের প্রিয়ার।আমাদেরও খুব্বি ভালো লাগতো আপনাদের সাথে সমন্ধ করে কিন্তু আপা কি করবো বলেন,প্রিয়ার বিয়ের কথা একদম পাকা হয়ে আছে।ছেলে বিদেশে থাকে সামনের বছর এলেই বিয়েটা হয়ে যাবে।সব ঠিক না থাকলে ওদের ফিরিয়ে দিতেও আমার কোনো আপত্তি ছিলোনা।কিন্তু একেবারে কথা দিয়ে ফেলেছি যে বড়আপা!”

সাজেদা হাই ভীষন মনখারাপ করে ফেললেন।কত আশা করে রেখেছিলেন তিনি।এদিকে প্রিয় তো প্রিয়াকে দেখামাত্রই কোলে ঝাঁপিয়ে পড়ল।প্রিয়া ওকে প্রথমে ধরতে চায়নি কারন চাচী বাসা থেকেই বারন করে দিয়েছিলেন, সে যেন প্রিয়কে কোলে না নেয়।কিন্তু প্রিয় যেভাবে কোলে ঝাপ দিয়েছে, বরং সাথে সাথেই না ধরলে পড়েই যেতো।সালেহা আড়চোখে দেখলেন,কিছু বললেন না।

রাতে সবাই চলে যাবার সময় পুনরায় বিপত্তি বাঁধল।প্রিয় কিছুতেই প্রিয়ার কোল থেকে নামবেনা।প্রিয়ারও কষ্ট হচ্ছিল।বাচ্চাটার প্রতি ওরও কেমন যেন অদ্ভুত মায়া পড়ে গেছে।শেষে একরকম জোর করেই প্রিয়কে সরানো হলো,প্রিয়া প্রায় লুকিয়ে বের হলো।

রাতে বাড়ী ফিরে প্রিয়র সেকি কান্না আর অকারন জেদ।রাগে দুঃখে সাজেদার চোখে পানি চলে এলো!মা’কে আপসেট দেখে শারদ কোনো কমেন্ট করলোনা তবে মেয়েটার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে শুনে মনে মনে চাপা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো সে।
মনটা শান্তিই পাচ্ছিলো কিন্তু প্রিয়র কান্না দেখে কিছুটা খারাপও লাগছে।হাজার হোক বাবা তো!

পরদিন সকালে হঠাৎ প্রিয়র জ্বর এসে পড়লো।সাজেদার মনটা আরো বেশী খারাপ হয়ে গেল।এমন সময় মাজেদা ফোন দিলেন,প্রিয়র কথা শুনে খুব দুঃখ করলেন তারপর বললেন-
-“বড়আপা,দাঁড়াও,একটা শেষ চেষ্টা করে দেখি,এরপর যদি না হয় তো ধরে নিও যে প্রিয়া তোমার শারদের রিযিকে নেই!বিয়ে শাদী আল্লাহর হাত,আমরা তো কেবল চেষ্টা করবো”!

সাজেদার নিজেরো শরীর খারাপ তার উপর নাতীটার এমন অবস্থা মনটাকে আরো খারাপ করে দিয়েছে।

রাতে হঠাৎ মাজেদার ফোন।
ও উচ্ছ্বসিত কন্ঠে বলে উঠলো-“আপা তোমার জন্য বিরাট সুখবর।”
সাজেদা উৎসুক হলেন!
ক্লান্ত স্বরে বললেন–“কি খবর রে?”

-“শোনো,আমি বিকেলে ফোনে সরাসরি পাপিয়ার শ্বশুড়কে ধরেছিলাম।মানে মিজান ভাইয়ের সাথে কথা বলেছি।উনি তো সব শুনে কিছুক্ষণ গম্ভীর হয়ে থাকলেন।তারপর বললেন,উনি তোমার সাথে কথা বলতে চান।উনার বক্তব্য খুব পরিস্কার।উনি বলেছেন,যে আগ্রহ করে আমার বাপ মা মরা ভাইঝিকে নেবে আমি সেখানেই বিয়ে দেবো।”

-“কি বলিস, সত্যি?”

-“আরে হ্যাঁ….ওনার হাবভাবে মনে হলো উনি বিদেশী পাত্রের ব্যপারে বিশেষ আগ্রহী না।

সাজেদা যারপরনাই খুশি হলেন।ফোন রেখে দ্রুত শারদের বাবা আর শারদের সাথে কথা বলতে গেলেন।তাঁর ইচ্ছা,তিনি কালই যেয়ে মেয়েটাকে আঙটি পড়িয়ে আসবেন।

সব শুনে শারদ অবাক হয়ে বললো-“কিন্তু এমন তো কথা ছিলো না মা !তুমি তো বলেছিলে আমাকে কথা বলার সুযোগ করে দেবে।আমিতো মেয়েটাকে দেখলামই না এখনো, কথা বললাম না আর তুমি কিনা….একেবারে বিয়ের তোড়জোর শুরু করে দিয়েছো!”

-“দেখিস বাবা দেখিস , বিয়েটা হয়ে যাক্,তখন দেখিস আর কথা যা বলার তখনি বলিস!”আনন্দে সাজেদা ঝলমল করতে লাগলেন।শারদ আর কথা না বাড়িয়ে নিরবে নিজের ঘরে চলে গেলো!

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here