#হৃদয়_রেখেছি_জমা
অরিত্রিকা আহানা
পর্বঃ৯

বছর দুয়েক আগের কথা,
বেশিকিছুদিন ধরে এজেন্সি থেকে ইনফরমেশন লিক হচ্ছিলো। সেই সাথে হঠাৎ একদিন রাতুল মিসিং। খোঁজ নিয়ে জানা গেলো কিডন্যাপ করা হয়েছে তাঁকে। তোড়জোড় মাহমুদদের মিশনে পাঠালেন ইরফান সাহেব। সঙ্গে মেহরিনও ছিলো। সেই মিশনেই মারা যায় রাতুল।

রাতুলের মৃত্যুর ঘটনাটা জানা জরুরি! মিশন চলাকালীন সময়ের বর্ননা,
মাহমুদের দুইপাশে পক্ষ বিপক্ষ মিলিয়ে মোট তিনজন সদস্য বন্দি ছিলো। রাতুল, মেহরিন এবং শত্রুদের এক সদস্য। শত্রুনেতার দাবি ছিলো মাহমুদ যদি তাদের সদস্যটিকে ছেড়ে দেয় তবে সে-ও মেহরিন কিংবা রাতুলের দুজনের মধ্য থেকে একজনকে ছাড়িয়ে নিতে পারবে। বাট ইট ওয়াজ আ ট্র‍্যাপ। পরে বুঝতে পারে মাহমুদ!
যাইহোক, মাহমুদ-মেহরিনের প্রেমের বসন্ত তখন বারোমাস! তথাপি সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলো না দুজনের কেউই। রাতুলকে প্রচুর পরিমানে টর্চার করা হয়েছে। আগে তাঁকে উদ্ধার করা প্রয়োজন। তাঁকে ছাড়ানো গেলে মেহরিনকেও ছাড়িয়ে আনা যাবে। সি ক্যান ফাইট! মেয়ে দেখে শত্রুপক্ষ বোধহয় খুব একটা গুরুত্ব দেয় নি। মাত্র দুজন পাহারাদার রেখেছে। তবুও অনুমতির অপেক্ষায় একবার মেহরিনের দিকে চাইলো মাহমুদ, চোখে চোখে কথা হয়ে গেলো দুজনার। রাতুলকে ছেড়ে দিতে বললো দুজনেই।


কিন্তু ঝামেলাটা তখনই হলো যখন নিজমুখে অপরাধের কথা স্বীকার করে নিলো রাতুল। এজেন্সি থেকে ইনফরমেশন তাঁর মাধ্যমেই লিক হচ্ছিলো। হি ওয়াজ সোল্ড! বিশাল একটা অ্যামাউন্টের লোভ দেখিয়ে কিনে নেওয়া হয়েছিলো তাঁকে। কিন্তু পরোবর্তীতে তারাই আবার ওর সাথে বেইমানী করে। সত্যি সত্যি আটক করে ফেলে তাঁকে। কারণ শত্রুদের অনেক ইনফরমেশন জেনে গেছে সে। তাঁকে ছেড়ে দেওয়া মানে ওদের ইনফরমেশন লিক হওয়া।

তাই মেহরিনকে আত্মসমর্পণের জন্য প্রস্তুত হতে দেখে বাধা দিলো রাতুল। আতংকিত ফ্যাকাসে মুখে বারবার করে মাহমুদকে অনুরোধ করলো মেহরিনকে আটকাতে। কিন্তু তার আগেই শত্রুপক্ষের নির্দেশ মোতাবেক তাদের ঘাঁটির দিকে এগোতে শুরু করেছে মেহরিন।
মাহমুদ হতভম্ভ! রাতুলের মতন সৎ বিশ্বাসী এজেন্ট এই ধরনের কাজ করবে সে ভাবতেই পারে নি! দেশের সঙ্গে কি করে এতবড় বেইমানি করলো সে? অথচ তাঁকে রক্ষা করতেই ইরফান সাহেব পুরো ফোর্স পাঠয়েছেন! তাঁকে চুপ থাকতে দেখে হাউমাউ করে কেঁদে ফেললো রাতুল। কাঁদতে কাঁদতেই বারবার করে ক্ষমা চাইলো। অনুতপ্ত কন্ঠে বললো,’ওরা আমাকে ছাড়বে না মাহমুদ ভাই। ওদের অনেক ইরফরমেশন আমি জেনে গেছি। যদি বেঁচে থাকি সেগুলো এজেন্সি পাবে। কিন্তু,জানি বাঁচবো না। কালরাতেই ওরা আমাকে মেরে ফেলার প্ল্যান করেছিলো। কিন্তু শেষমুহুর্তে আমাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করে আপনাদের ফাঁসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওদের মেইন টার্গেট নতুন এজেন্ট। নতুন ইনফরমেশন! তবে এটা নিশ্চিত যে আমাকে ওরা ছাড়বে না। আপনি প্লিজ মেহরিন আপুকে আটকান। প্লিজ মাহমুদ ভাই! আমার জন্য দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আর ক্ষতি করবে না। আমাকে আমার শাস্তি ভোগ করতে দিন।’

হতভম্ভ ভাব কাটিয়ে দ্রুতই নিজেকে সামলে নিলো মাহমুদ। আর একমুহূর্তও দেরী করলো না। সঙ্গে সঙ্গেই শুট করলো মেহরিনের দুপাশের দুজনকে। তবে গুলি শত্রুপক্ষ থেকেও চললো! রাতুলের ওপর!
মেহরিন হতবাক হয়ে চেয়েছিলো কেবল। তারপর থেকেই রাতুলের মৃত্যুর জন্য মাহমুদকেই দায়ী করলো সে। তাঁর ভাষ্যমতে, দুজনের মধ্যে সম্পর্ক থাকার কারণেই রাতুলকে এত সহজে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে মাহমুদ। হি ইজ সেল্ফিশ!এরকম একটা সেল্ফিশ লোকের সঙ্গে রিলেশন রাখা তাঁর পক্ষে সম্ভব না। সেই থেকেই দুজনের ব্রেক আপ।

এতক্ষণ যাবত সোহাগকে দুজনের ব্রেক আপ কাহিনী বলছিলো মাহমুদ। সোহাগ দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,’মেহরিন আপনার সাথে ঠিক করে নি মাহমুদ ভাই!’

-‘না সোহাগ। ইমোশোনালি, মে বি সি ওয়াজ রাইট। শেষ মুহূর্তে রাতুলের চোখে আমি বাঁচার আকুতি দেখেছিলাম। বাড়িতে তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী আর অসহায় ছোট বোন ছিলো! বাট প্র‍্যাক্টিকালি ব্যপারটা অন্যরকম। এই ছাড়া আমার কাছে আর কোন উপায় ছিলো না। ইদার আই হ্যাড টু লেট দ্যা ইনোসেন্ট ডাই অর আই হ্যাড টু লিভ দ্যা গিল্টি টু হিজ ফেইট! আই চোজ দ্যা সেকেন্ড ওয়ান।’

-‘উই নেভার লেট দ্যা ইনোসেন্ট ডাই! বেঁচে ফিরলেও রাতুলের শাস্তি হতো।’

-‘হতো। হয়ত মরতো কিংবা বেঁচে যেতো। একটা সম্ভাবনা ছিলো! বাট থিংক’স হ্যাপেন্ড সাডেনলি!’

-‘তবুও। আমি বলবো হি ওয়াজ আ ট্রেইটর! তাঁর শাস্তি মৃত্যু দন্ডই হওয়া উচিৎ।’

-‘ইয়েস। বাট হি ওয়াজ অলসো আওয়ার কলিগ। আমরা একসাথে অনেকগুলো মিশনে কাজ করেছি। মেহরিন ওকে ছোট ভাইয়ের মতই স্নেহ করতো। শেষমুহুর্তে বোধহয় মেহরিনকে বাঁচাতেই সত্যিটা বলে দিয়েছিলো সে।’

-‘ব্রেক আপের পর আপনি মেহরিনকে আটকানোর চেষ্টা করেন নি?’

-‘সব চেষ্টা ব্যর্থ ছিলো! মেহরিনকে আটকে রাখা যায় না। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে নিজে ধরা দিচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তুমি তাঁকে আটকে রাখতে পারবে না।’

সোহাগ করুণ মুখে মাহমুদের দিকে চেয়ে রইলো। মাহমুদ খুব স্বাভাবিক ভাবেই কথাগুলো বলছিলো। অথচ তাঁর চোখ লাল! কন্ঠস্বর নিষ্প্রাণ!

-‘ডাজ শী রিয়েলি হেইট ইউ?’

-‘নো। সি লাভস মি। সে আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু আমি এ-ও জানি যতই ভালোবাসুক না কেন ও নিজে যখন ঠিক করে নিয়েছে আমার কাছে ফিরবে না। তারমানে ফিরবে না। সি ইজ ভের‍্যি হার্ড! তোমার ইমাজিনেশন চাইতেও অনেক বেশি হার্ড।’

সোহাগ ব্যপারটা কিছুতেই মানতে পারছে না। মেহরিনের মত বুদ্ধিমান একজন এজেন্ট কি করে এমন বোকার মতন কাজ করতে পারে? রাতুলের প্রতি তাঁর স্নেহ থাকতেই পারে তাই বলে তাঁর অন্যায়কে ছোট করে দেখবে এটা কেমন কথা? একটা নিরপরাধ মানুষকে দোষী বানিয়ে দিয়েছে সে। দিস ইজ আনফেয়ার। ভেরি আনফেয়ার!’


এইটুকুই ছিলো মাহমুদের সঙ্গে ব্রেক আপ করার জন্য মেহরিনের সাজানো অযুহাত। বাট দ্যা রিয়েল স্টোরি ইজ কমপ্লিটটি ডিফরেন্ট! ইন দ্যাট স্টোরি মাহমুদ ইজ দ্যা ওয়ান এন্ড অনলি হিরো অফ হার লাইফ হোম সি লাভস দ্যা মোস্ট!

রাতুল মারা যাওয়ার পর মিশন শেষে সেদিনই অন্য একটা মিশনে আফ্রিকা পাঠানো হয় মাহমুদকে। মেহরিনের শারীরিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলো না বিধায় ইরফান সাহেব তাঁকে দেশে ফিরে আসার নির্দেশ দেন। মাইন্ড রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য পনেরো দিনের ছুটি দিয়েছিলেন। কিন্তু ঐ পনেরো দিনই ছুটিই ছিলো মেহরিনের জীবনের সবচেয়ে বড় ট্র‍্যাজিডি। ইন দ্যাট টাইম শী লস্ট হার ইউটেরাস অ্যাজ আ রেজাল্ট অফ আ টিউমার অপারেশন! অ্যান্ড হ্যাড টু এক্সেপ্ট স্টেরিলিটি!সারাজীবনের জন্য বন্ধ্যাত্ব বরণ করে নিতে হয়েছিলো তাঁকে। ডাক্তার স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিলেন সি কান্ট বি আ মাদার উইথ হার ওন.! অথচ এতবড় সত্যিটা লায়লা শারাফাতের কাছেও চেপে গেলো মেহরিন। ঢাকার বাইরে অন্য হস্পিটালে অপারেশন করালো। সমস্ত ধকল একা একাই সহ্য করলো। তারপর রাতুলের মৃত্যুর অজুহাতটাকে কাজে লাগিয়ে মাহমুদের সঙ্গে ব্রেক-আপ করার সিদ্ধান্ত নিলো। নিজেকে বোঝালো, শুধুমাত্র ভালোবাসায় অযুহাতে মাহমুদের লাইফটাকে নষ্ট করার কোন অধিকার তাঁর নেই। এটা স্বার্থপরতা! সি হ্যাজ টু স্যাক্রিফাইস হার লাভ!


এবার আসি বর্তমানে,
পুরো অফিস ফাঁকা। থার্ড ফ্লোরে দুটো রুমে বাতি জ্বলছে কেবল। মাহমুদ আর মেহরিন আলাদা আলাদা ভাবে নিজেদের ডেস্কে বসে কাজ করছে। ইরফান একগাদা ফাইল ধরিয়ে দিয়েছেন দুজনকে। সেগুলো দেখে নতুন করে প্রত্যেকটা ফাইলের রিপোর্ট করতে হবে। বাধ্য হয়ে রাত জেগে কাজ করতে হচ্ছে দুজনকে।

মাহমুদের কাজ শেষ। মেহরিনের রুমে উঁকি দিলো সে। ভেতরে বসে একমনে কাজ করছে ডাকুরানী! দরজায় টোকা দিলো মাহমুদ।

-‘কাজ শেষ?’ টেবিল থেকে মুখ না তুলে জিজ্ঞেস করলো মেহরিন।

-‘হ্যাঁ। তোমার বাকি থাকলে আমাকে দিতে পারো।’

-‘লাগবে না। আরেক সামান্য।’

মাহমুদ ভেতরে ঢুকে টেবিলের ওপর উঠে বসলো। টেবিলের ওপর সকালের এনার দেওয়া গিফট বক্স আর একটা ছোট টিফিন বক্স রাখা। টিফিন বক্স খুলে দেখলো সে, খালি! বন্ধ করে এনার দেওয়া বক্সটা খুললো।

মেহরিন একঝলক সেদিকে তাকিয়ে ফের কাজে মনোযোগ দিলো। চকলেট দিয়েছে এনা। সাথে একটা চিরকুট। মাহমুদ প্রথমে প্যাকেট খুলে চকলেটে কামড় বসালো। তারপর আধখাওয়া চকলেটের বাকি অংশ মেহরিনের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,’খাবে?’

-‘উহু।’ তাঁর হাতটা সরিয়ে দিলো মেহরিন।

আরো একটা বাইট বসালো মাহমুদ। তারপর একহাতেই চিরকুটটা খুলে জোরে জোরে পড়তে শুরু করলো।

‘প্রিয় মেহরিন আপু,
আপনি কি জানেন আপনি ঠিক চকলেটের মতনই মিষ্টি? বোধহয় জানেন না। সেজন্যই সবসময় মন খারাপ করে থাকেন। আপনাকে যে আমি কত পছন্দ করি আপনি সেটাও জানেন না। ছেলে হলে নিঃসন্দেহে আমি আপনাকে প্রপোজ করতাম…’ বাকিটা আর পড়লো না মাহমুদ। ঠাট্টাসুরে বললো,’মনে হচ্ছে প্রেমপত্র লিখেছে। আজকাল মেয়েরাও একে অপরের তারিফ করে দেখছি! ইম্প্রেসিভ! মেহরিন তাঁর কাছ থেকে চিরকুটটা নিয়ে বিরক্ত ভঙ্গিতে শার্টের পকেটে ঢুকিয়ে নিলো।

ঠোঁট উল্টালো মাহমুদ। কিছু চুপচাপ বসে থেকে আরেকটা চকলেট খুলে খাওয়া শুরু করলো। তাঁর যে খিদে পেয়েছে সেটা বুঝতে বাকি রইলো না মেহরিনের। নিশ্চয়ই রাতে খাওয়া হয় নি! কাজ করতে করতে কখন যে সময় চলে গেছে মাহমুদ টেরই পায়নি। ব্যাগ থেকে ছোট একটা বক্স বের করে তাঁর দিকে বাড়িয়ে দিলো মেহরিন। ভুনাখিচুড়ি! সাথে শসা আর গাজর খেটে আনা হয়েছে। মাহমুদ একবার বক্সটার দিকে একবার মেহরিনের হাতের দিয়ে চেয়ে থেকে হেসে ফেললো।

-‘ডিনার করো নি কেন?’

-‘খেয়াল ছিলো না। কিন্তু তোমার কাছে দুটো বক্স? এত খাও তুমি?’

-‘বক্স নিয়ে নেবো কিন্তু।’

-‘আচ্ছা সরি!’

মেহরিন নিজে থেকেই বললো,’লাঞ্চে রুটি আর সবজি নিয়ে এসেছিলাম। খাওয়ার সময় পাই নি। সেগুলো দিয়ে ডিনার করেছি। তাই বক্সটা রয়ে গেছে।

মাহমুদ খেতে খেতে বললো,’ও আচ্ছা। ঠিক আছে এবার তোমার কাজ তাড়াতাড়ি শেষ করো। পৌনে একটার মতন বাজে।’

কাজ শেষ। টেবিল গুছিয়ে নিলো মেহরিন। বেরোনোর সময় মাহমুদ এনার দেওয়া চকলেটের বক্সটা তাঁর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,’তোমার গিফট ফেলে যাচ্ছো।’
ভুলবশত ফেলে যাচ্ছিলো মেহরিন। মুচকি হেসে বললো,’নিয়ে আর কি হবে? তুমি তো খেয়ে অর্ধেক শেষ করে ফেলেছো।’

-‘বাকি অর্ধেক?’

মেহরিন বক্স থেকে একটা চকলেট তুলে নিয়ে বললো,’গিফট দিয়েছে তাই একটা রাখলাম। বাকি গুলো তোমার।’

-‘চকলেট দিয়ে আমি কি করবো?’

-‘এতক্ষন কি করেছো?’

-‘তখন তো ক্ষিধে ছিলো।’

-‘ঠিক আছে, নিতে হবে না তোমার। দাও, আমার গিফট আমাকেই ফেরত দাও।’ বক্সটা মাহমুদের হাত থেকে নিয়ে ব্যাগে ঢুকিয়ে ফেললো সে।

-‘টাকলু তোমাকে কিছু দেয় নি?’

-‘দিয়েছে। ঘড়ি!’

দুজনে লিফটের কাছে এসে দাঁড়ালো। হঠাৎ করেই প্রশ্ন করলো মেহরিন,’সবাই তো যা দেওয়ার দিয়েছে। তুমি আমাকে কোন গিফট দিলে না?’

নিতান্ত রসিকতা করে প্রশ্নটা করেছিলো সে। কিন্তু মাহমুদ হাসলো না। চট দুপা এগিয়ে এলো মেহরিনের কাছাকাছি! দুহাতে তাঁর বাহু চেপে ধরে আচ্ছন্ন গলায় বললো,’কি চাও বলো? যা চাও তাই দেবো! আই প্রমিস!’

তাকে সরিয়ে দিয়ে আচমকাই হেসে ফেললো মেহরিন। ঠাট্টাসুরে বললো,’বেশি কিছু না। আপাতত তোমার গাড়িতে একটা লিফট দিলেই হবে। আমার গাড়িটা আবার গেছে।’

ফোঁস করে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো মাহমুদ। কৃত্রিম আফসোসে মাথা দুলিয়ে বললো,’কতবড় সুযোগ! চাইলে গোটা আমি টাকেই পেয়ে যেতে মিস মেহরিন শারাফাত! আর তুমি কি না চাইলে সামান্য একটা লিফট? দুঃখজনক! খুবই দুঃখজনক!’ অথচ তাঁর সত্যিই কষ্ট হচ্ছে!

-‘এই মুহূর্তে তোমার চাইতে তোমার গাড়িটাই আমার বেশি প্রয়োজন মি.মাহমুদ সিদ্দিকি। বাসায় ফিরতে হবে।’, ফের ঠাট্টারসুরে জবাব দিলো মেহরিন।

তাঁর ঠাট্টায় যোগ দিলো না মাহমুদ। যতই শক্ত থাকার চেষ্টা করুক না কেন ভেতরে ভেতরে প্রচন্ড অসহায় বোধ করছে সে। গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে কিঞ্চিৎ হাসার চেষ্টা করে বললো,’এসো।’
চুপচাপ গাড়িতে উঠে বসলো মেহরিন। শুনশান রাস্তা ধরে এগোতে শুরু করলো গাড়ি। দুজনেই নিরব। ঝাপিয়ে কান্না আসছে মেহরিনের কিন্তু সে কাঁদতে পারছে না। অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে বুকের ভেতর!
.
.
.
চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here