#তোমাতে_মাতোয়ারা ১৭তম পর্ব

_আরশিয়া জান্নাত

হাতিরঝিলের লেকটার সামনের বসে আছে ইশতিয়াক আর দিয়া।দিয়া বেশ কৌতুহল নিয়ে তাকিয়ে আছে ইশতিয়াকের দিকে।ইশতিয়াক লেকে ঢিল ছুঁড়ে বললো, শিলা আর আমি প্রায়ই এখানে মিট করতাম।এখন আর এদিকটায় আসা হয়না।
দিয়া বললো,,মিট করতাম মানে?এখন মিট করেন না?
–শিলার বিয়ে হয়ে গেছে আজ চার বছর!
দিয়া অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো ইশতিয়াকের দিকে।ইশতিয়াক ক্লান্ত গলায় বললো,
ওর সঙ্গে আমার ভার্সিটি থেকে প্রেম,আই মিন ছিল।খুব কেয়ারিং মেয়ে,পড়াশোনায় বেশ সিরিয়াস ও বটে!আমি সবসময় বিন্দাস লাইফ লিড করেছি,বন্ধুদের সাথে আড্ডা নানা জেলায় ঘুরে বেড়ানো।সারাবছর খবর নেই পরীক্ষার কয়েকদিন আগে টেনশনে অস্থির হয়ে যেতাম,সেই টেনশন দূর করতো শিলা।সব নোটস সে এক্সট্রা করে আমার জন্য লিখে রাখতো সবসময়।কতোটা ডিপেন্ডেন্ট ছিলাম বলে বোঝাতে পারবোনা।ও আমার জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গিয়েছিল।
–বিয়ে করে নিলেন না কেন?
ইশতিয়াক হেসে বললো,হলুদের দিন দুপুরেও সে বলেছিল পালিয়ে যেতে,ও সব ছেড়ে চলে আসবে।কিন্তু আমি পারিনি সেই দুঃসাহস দেখাতে।আমার দাদাই খুব রেপুটেটেড মানুষ,তাঁকে হার্ট করার কথা আমি কল্পনাও করতে পারিনা।তাছাড়া আমাদের ফ্যামিলিতে এমন কোনো কেলেঙ্কারি নেই,,
—ফ্যামিলিকে বলতেন?আই ডোন্ট থিংক উনারা রিফিউজ করতো?
—বিসিএস ক্যাডার পাত্র ফেলে কোনো বাবা কি সামান্য প্রাইভেট কোম্পানির ইমপ্লয়ের সাথে মেয়ে বিয়ে দিত?আমি ভীতু হলেও শিলা ভীতু ছিল না,ও ওর বাবার কাছে আমার কথা বলেছিল।বিনিময়ে দু মাস পরের বদলে আগেই বিয়ের ডেট ফিক্সড করলেন।
দিয়া চুপ করে ইশতিয়াকের দিকে তাকিয়ে রইলো।
ইশতিয়াক চোখে পানি নিয়ে দিব্যি হেসে বলছে,ওর ফুটফুটে একটা মেয়ে আছে।অবিকল ওর মতো দেখতে!সুখেই আছে হয়তো।জানোতো আমাকে ও এখন প্রচুর ঘৃণা করে,অবশ্য ঘৃণা করাই ভালো।ভালোবাসলে ভালো থাকতে পারতো না।
দিয়া ইশতিয়াকের কাঁধ হাত রেখে বললো,সামলান নিজেকে।এভাবে ভেঙে পড়বেন না প্লিজ!
ইশতিয়াক চোখ মুছে বললো,আমি ঠিক আছি।ডোন্ট ওরি!জানো ভেবেছিলাম ও চলে যাওয়ার পর আর বাঁচতে পারবোনা,ফ্যামিলির সবার কথা ভুলে সুইসাইড করতে গিয়েছিলাম।ভাগ্য দেখো মরতেও পারিনি!মাঝখানে সবাইকে হার্ট করার আত্মগ্লানী নিয়ে বেঁচে আছি।
তারপর তুমি এলে আমার জীবনে।তোমাকে শুরু থেকেই এড়িয়ে গেছি সবসময়,তোমার চোখেমুখে মুগ্ধতার কারণ বুঝতে বাকি রইলোনা আমার।পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে না!আমি চাই নি দ্বিতীয়বার মায়ায় জড়াতে তাই সবসময় তোমাকে রুডলি ইগ্নোর করেছি।কিন্তু তুমি আমার পিছু ছাড়লেনা,ঠিকই মায়ায় জড়িয়ে নিলে।
যেই না তোমার উপর উইক হতে শুরু করলাম তখনই জানলাম তুমি আমার ছোটবোনের উড বি ননদ!মনের মাঝে অজানা শঙ্কা জন্মালো,বহু যুদ্ধ করেছি মনের সঙ্গে কিন্তু জিততে পারিনি।
আমি দ্বিতীয়বার হারানোর ব্যথা সইতে পারবোনা দিয়া!
দিয়া খুশিতে কেঁদে ফেললো,ইশতিয়াক ও তাঁকে ভালোবাসে ভাবতেই অন্যরকম আনন্দ হচ্ছে তাঁর।
–এ কি দিয়া তুমি কাঁদছো কেন?আমি কি ফের তোমাকে হার্ট করলাম??
দিয়া হেসে বললো, I love you!will you marry me?
ইশতিয়াক দিয়ার হাত ধরে বললো,Yes I’ll.I Love u too Dia…এইবার আমি দাদাইকে বলে তোমার বাসায় কথা বলবো।গতবারের ভুল রিপিট করবোনা।

দিয়ার চোখে আজ আনন্দ অশ্রু।এতোদিনের দুঃখ অবশেষে ঘুচলো আজ??

ছাদের গাছগুলোতে পানি দিচ্ছে ঐন্দ্রিলা,দিয়া আর ও মিলে ছাদটাকে বেশ সুন্দর করে ডেকোরেশন করিয়েছে।নিরব রুমে এসে ঐন্দ্রিলাকে না দেখে ছাদে গেল,পেছন থেকে ঐন্দ্রিলাকে জড়িয়ে ধরে বললো,আপনি এখানে আমি যে পুরো বাড়ি খুঁজে ফেললাম!
—আজ হঠাৎ এই টাইমে বাসায়?
—হুম।কাজ শেষ ভাবলাম বাইরে আড্ডা না দিয়ে বরং বৌয়ের সাথে বসে চা খাই।
আপনি বসুন আমি চা করে নিয়ে আসছি।
তুমি বসো তো,সারাক্ষণ রান্নাঘরে যেতে চাও কেন বলোতো?এতো লোক আছে তাও তোমারই করতে হবে?আমি বলে এসেছি চা করতে নিয়ে আসবে।
ঐন্দ্রিলা পানির জার রেখে বললো,আপনজনদের নিজ হাতে রেঁধে খাওয়ানোতে অন্যরকম আনন্দ আছে আপনি বুঝবেন না সেটা।
নিরব চেয়ারে বসে শার্টের বোতাম দুটো খুলে কলার পেছনে টেনে বললো,হুম তুমি সব বোঝো।উফ কি গরম পড়েছে,তোমার বাসার ছাঁদের মতো এখানেও একটা রুমের ব্যবস্থা করতে হবে।ফ্যান ছেড়ে বসা যাবে অন্তত!
ঐন্দ্রিলা শাড়ির আঁচল দিয়ে নিরবের ঘাম মুছে বললো,এখানে গরম বেশি লাগছে?রুমে চলুন তাহলে?
–বাতাস আছে তো কিছুক্ষণ বসলে ঠিক হয়ে যাবো।
ময়না এসে চা দিয়ে গেল।ঐন্দ্রিলা নিরবের দিকে চায়ের কাপ বাড়িয়ে দিয়ে বললো,বলুন তো আকাশ সুন্দর নাকি সাগর সুন্দর?
–তোমার দুটোই পছন্দ,তাই দুটোই সুন্দর।
–সবসময় চালাকি করেন,হুহ!
–তোমার এই ভেংচি কাঁটার স্টাইলটা দারুণ!দেখলেই গাল টেনে দিতে ইচ্ছে করে।
ঐন্দ্রিলা গাল বাড়িয়ে বললো দিন।
নিরব টুপ করে চুমু খেয়ে বলল,এখানে কেবল চুমু খাওয়া যায় অন্য কিছু না।
ঐন্দ্রিলা লজ্জায় লাল হয়ে বললো,আপনিও না আজীব!
_______________
দেখতে দেখতে কেটে গেল অনেকগুলো দিন।নিরবের সাথে ভালোবাসা,মান- অভিমান, খুনসুটি আর দুষ্টুমিতে কখন যে মাস পেরিয়ে বছর ঘনিয়ে এলো টেরই পেলোনা ঐন্দ্রিলা।এর মাঝে দুই পরিবারের সম্মতিতে দিয়ার সাথে ইশতিয়াকের অ্যাঙ্গেজমেন্ট হয়ে গেছে।দিয়ার ফাইনালের পর বিয়ের ডেট ফিক্সড করা হবে।
চৈতির সাথে কারিয়ানের বিয়ে হয়েছে কয়েকমাস আগে।চৈতিকে ভাইয়ের বৌ হিসেবে পেয়ে ঐন্দ্রিলার আনন্দের শেষ নেই।
রাতে ডিনার সেরে ঐন্দ্রিলা রুমে এসে বসলো।নিরব ল্যাপটপে মুখগুজে গানের টিউন এর সাথে লিরিক আওড়াচ্ছে।ঐন্দ্রিলা আয়নার সামনে বসে চুল আঁচড়াতে লাগলো।নিরব ল্যাপটপ রেখে ঐন্দ্রিলার হাত থেকে চিরুনি নিয়ে আনাড়ি হাতে বেনুনী করে দিলো।ঐন্দ্রিলা বললো,রহস্য কি?হঠাৎ চুল আঁচড়ে দিচ্ছেন?
নিরব বাচ্চাদের মতো কিউট ফেইস করে বললো,সবকিছুতে রহস্য খোঁজো কেন?আমি কি নিজের বৌয়ের একটু যত্ন নিতে পারিনা??
ঐন্দ্রিলা নিরবের গলা জড়িয়ে বললো,অবশ্যই পারেন।তবে কিছু যত্ন আছে যা এমনি এমনি করা হয়না।এর পেছনে যে কারণ আছে ঠিক টের পাওয়া যায়।নিরব ঐন্দ্রিলার কোমড় জড়িয়ে আদুরে গলায় বললো,বলছিলাম কি আমাদের একটা বেবীর প্ল্যান করলে ভালো হয় না বলো?না মানে তুমি না চাইলে থাক প্রেশার দিবোনা।
ঐন্দ্রিলা নিরবের কথায় হাসতে লাগলো।
আপনিও না পারেন বটে!এমন চেহারা করে বলছেন যেন বাচ্চা ছেলে ক্যান্ডি চাইছে।
—কি করবো ভয় লাগে তো।
ঐন্দ্রিলা নিরবের চুল এলোমেলো করে দিয়ে বললো,আমি বাঘ না ভাল্লুক?
নিরব ঐন্দ্রিলাকে কোলে তুলে বললো,তুমি ঐন্দ্রিলা সেটাই ভয়!
ঐন্দ্রিলা মুখ লুকিয়ে বললো লাইটটা অফ করে নিন প্লিজ।
নিরব হেসে বললো,তোমার এই লাজুকতা আরো বেশি পাগল করে দেয় জানো সেটা!!
ঐন্দ্রিলাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে কপালে আলতো চুমু এঁকে লাইট অফ করে দিলো নিরব।
বাইরের মিষ্টির চাঁদের আলো জানালা গলে মেঝেতে ছড়িয়ে পড়লো,ভালোবাসার রঙে রঙিন হলো ভুবন!
______________
বেশ কয়েকদিন ধরেই মনোয়ারা বেগম অসুস্থ।মনে শুধু আজেবাজে চিন্তা আসে।ইরফাজ সাহেব সান্ত্বনা দিয়ে বলেন শেষ বয়সে এমন হয়,জীবন ফুড়িয়ে আসছে তো!
মনোয়ারা বেগম তৃপ্ত হন না।ভেতরে ভেতরে ঠিকই অশান্তি টের পান।যেন খুব প্রিয় কিছু হারাতে চলেছেন।এই অশান্তিটা কারো সঙ্গে বলেও বোঝাতে পারেন না তিনি।
ঐন্দ্রিলার মাইগ্রেনের ব্যথাটা বেশ ভালোভাবেই উঠেছে।দুইবার বমি করে অবস্থা কাহিল।বাসায় আজ কেউ নেই,ময়না ছুটিতে বাড়িতে গেছে।দিয়া তাইয়্যেবার বাসায়।এতক্ষণে নিরবের চলে আসার কথা সেও আসছেনা।ঐন্দ্রিলা ঠিক করলো কুসুম গরম পানিতে পা ভিজিয়ে মাথার পেছনের দিকে কাপড়ে বরফ জড়িয়ে ছ্যাক দিবে।এতে নাকি ব্যথা কমে।কিচেনে যাওয়ার আগে নিরবকে কয়েকবার কল করলো,কিন্তু ফোন রিসিভ হলোনা।টেক্সট করলো, “কোথায় আপনি?আর্লি বাসায় আসেন মাইগ্রেনের ব্যথাটা খুব বেড়েছে।”
ঐন্দ্রিলা ফ্রিজ থেকে আইসবক্স বের করে টেবিলে রাখলো।তারপর কিচেনে ঢুকে লাইট অন করতেই খুব জোরে বিস্ফোরন ঘটলো!
মুহূর্তেই রান্নাঘরের দেয়াল ভেঙে গেল,ঐন্দ্রিলা ছিটকে পড়লো ডাইনিং রুমে।
বাইরে থেকে গার্ড আর কেয়ার টেকাররা দৌড়ে ভেতরে এসে দেখে ঐন্দ্রিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে আছে।ব্লাস্টের প্রেশারে দেহের মাংসগুলো গলে গলে পড়ছে,,,,চোখের সামনে ঐন্দ্রিলা যন্ত্রণায়
ছটফট করতে করতে শেষ নিঃশ্বাস ছাড়লো।
এলাকার সবাই বিকট শব্দ শুনে বেড়িয়ে এলো।নিরবদের বাড়ির সামনে ভীড় করে দাঁড়িয়ে রইলো।নিরব ভীড় সরিয়ে আতঙ্কিত হয়ে ভেতরে ঢুকলো।সাদা কাপড়ে ঢাকা ঐন্দ্রিলাকে দেখে আৎকে উঠলো,অ্যাম্বুলেন্স এসে ফেরত চলে যায়।নিরবের গগন কাঁপানো চিৎকারে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠে।
ফায়ার সার্ভিসের অফিসার জয়নাল আহমেদ বললেন,গ্যাস লিক করে বিস্ফোরনটা ঘটেছে।ভিকটিম মেবি স্মেল পায়নি,অসতর্কতাবশত কারেন্টের সুইচ অন করেছে যার কারণে,,,,,
তাহজীব কান্নায় ভেঙে পড়লেন।অফিসার সান্ত্বনা দিয়ে চলে গেলেন।
মনোয়ারা বেগম ঘুমের ঘোরে দেখলেন ঐন্দ্রিলা এসে তাঁর দিকে তাকিয়ে আছে।তিনি হেসে বললেন,চান্নি এতোদিনে আইলি বুবুন?
ঐন্দ্রিলা দাদীর মাথায় বিলি কেটে বললো,দাদুন আমি বিদায় জানাতে এসেছি।উনাকে দেখে রেখো দাদুন, আমাকে যেভাবে দেখে রাখতে ঠিক সেইভাবে।সুস্থ হয়ে উঠো জলদি তোমার যে অনেক কাজ বাকী,সবাইকে সামলাতে হবে।”
মনোয়ারা লাফ দিয়ে উঠে বললেন,হুনছেন নি গো ও ইসহাকের বাপ।আমার চান্নিপহর কি কয় এগুলা।
ইরফাজ দৌড়ে এসে বললেন,কি হইছে মনুরাণী?
মনোয়ারা জোরে বিলাপ করে কাঁদতে কাঁদতে বললেন,ওগো আমার চান্নিপহর নাই।তুমি ঢাকায় যাওয়ার ব্যবস্থা করো।
ইরফাজ সাহেব গাড়ির ব্যবস্থা করলেন,ইশতিয়াকদের কাউকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছেনা।মনে মনে দোআ করতে লাগলেন সব যেন ভুল হয়,মনোয়ারার ভাবনা যেন ভুল হয়,,,,,,,,

ব্রেকিং নিউজঃ সিঙ্গার সাহিল ইবনান নিরবের স্ত্রী ঐন্দ্রিলা সিলিন্ডার বিস্ফোরনে নিহত হয়েছেন।ফায়ার ফাইটার জয়নাল জানিয়েছেন,গ্যাস লিক করে দূর্ঘটনা টি ঘটেছে।পুলিশ ব্যাপারটি খতিয়ে দেখছেন।

আপনজনদের আহাজারিতে আকাশবাতাস কেঁপে উঠছে যেন,ইরফাজ সাহেবের বংশের রত্ন হারিয়ে গেল যে!
গ্রীষ্মের তপ্ত সূর্য মুহূর্তেই কালো মেঘেতে ঢেকে গেলো।আকাশেরো যেন আজ বড্ড মন খারাপ,কান্না তাঁর বৃষ্টি হয়ে ঝরছে ধরণীতে।
আচ্ছা কেউ কি বলতে পারো অতি ভালোবাসার মানুষকে হারানোর যন্ত্রণা কতখানি গভীর???

নিরব ফোনটা হাতে নিয়ে ঐন্দ্রিলার লাস্ট মেসেজটা দেখলো।কে জানতো এটাই হবে তাঁর শেষ বার্তা???এই নম্বর থেকে আর কোনোদিন কল আসবেনা,,,,,,,,

পরিশিষ্টঃ কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্ট এ দাঁড়িয়ে নিরব সূর্যোদয় দেখছে।হাত দুটো মেলে চোখ বন্ধ করে ভোরের মিষ্টি রোদ পুরো শরীরে মেখে নিচ্ছে,ঠিক যেমনটা ঐন্দ্রিলা করতো!
কল্পনায় ঐন্দ্রিলার সেই হাসৌজ্জল ছবি,সেই ভোরে দেখা মায়াবিনীর মুখখানা স্মৃতিতে আজো কত স্পষ্ট প্রাণোচ্ছল!
জুতোজোড়া খুলে নরম বালিতে হেঁটে চলছে সে।
আছড়ে পড়া ঢেউয়ের সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতা করে ঐন্দ্রিলার খিলখিলিয়ে হাসি,ঝিনুক কোড়ানোর সময় সে কি বাচ্চামি!সব যেন চোখের সামনে ভাসছে।
নিরব পাথরের উপর বসে সেই দৃশ্যগুলো উপভোগ করছে।ঐন্দ্রিলা এসে কাঁধে হাত রেখে বলল,এখানে কেন এসেছেন?অযথা স্মৃতিচারণে কষ্ট পেতে?
নিরব মুচকি হেসে বললো,স্মৃতিচারণে কষ্ট হয় বুঝি?
ঐন্দ্রিলা বালিতে আঁকিবুকি করে বললো,এভাবে আর কয়দিন?নতুন কাউকে খুঁজে নিচ্ছেন না কেন??
নিরব নীলাভ জলের স্রোতের দিকে তাকিয়ে বললো,”তোমাতে মাতোয়ারা” হয়েই থাকি না বাকিটা জীবন??নতুন কাউকে জড়িয়ে তোমার স্মৃতি মুছে ফেলতে চাইনা।মনে নেই কি মিনতি ছিল তোমার?
“”বকুলের মালা শুকোবে
রেখে দিও তার সুরভি
দিন গিয়ে রাতে লুকোবে
মুছো নাকো আমারই ছবি
আমি মিনতি করে গেলাম,,,,,,,,,,,”
ঐন্দ্রিলা এসে কাঁধে মাথা রেখে বললো,আপনি আসলেই মাতোয়ারা!
—উহু তোমাতে মাতোয়ারা………

___________সমাপ্ত_______________

(আত্মকথনঃ ট্র্যাজেডিক গল্প আমার একদম পছন্দ না।আমার মতে জীবনে তো কম ট্র্যাজেডি নেই কল্পনাতে ট্র্যাজেডির কি দরকার?আমি খুব ইমোশনাল বটে ঐন্দ্রিলার মতো বাস্তবতা থেকে পালিয়ে বেড়াতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।এই গল্পটা শুরু করার সময় জানতাম না শেষটা কি হবে।বড় বড় লেখক লেখিকার মতো আগে থেকে ভেবেচিন্তে লিখতে পারিনা আমি।যখন কল্পনাজগতে ডুবে যাই অটোমেটিক সব টাইপ হয়।এই গল্পের শেষ পার্টটা লেখার সময় কল্পনাতেই চোখে পানি এসে গেছে।বারবার ইচ্ছে হয়েছে এখুনি ব্যাকস্পেসে ক্লিক করি সবটা কেটে নতুনভাবে লিখি।কিন্তু এতে গল্পের নামটায় স্বার্থকতা মিলতোনা হয়তো।কল্পনায় চরিত্রগুলো যেভাবে এসেছে টাইপ করে সেভাবেই উপস্থাপন করেছি।
And I strongly believe that Fortune can’t tolerate true love or perfect story for long time.
ধন্যবাদ সবাইকে,ভুলত্রুটি ক্ষমাপ্রার্থনা।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here