#তোমাতে_মাতোয়ারা ১৩তম পর্ব
_আরশিয়া জান্নাত
“”প্রেমের বিয়ে হইলে যা হয় আর কি! কথায় আছেনা পিরিতের পেত্নিও ভালা।আমাগো নিরব দেখতে রাজপুত্রের মতো হইলেও চয়েজ এতো ভালা না।মেয়ের গায়ের রং বেশ ময়লা,আরেকটু পরিষ্কার হইলে তাও মানা যাইতো।বাড়ির বৌ ফর্সা না হইলে মানা যায়?””
নাক কুঁচকে সুপারি কাঁটতে কাঁটতে বললেন নিরবের বড় ফুপী তফুরা।নিরবের নানু নাহিদা সুলতানা খানিকটা বিরক্ত হয়ে বললেন,
তুমি মানুষের রূপটারেই সবসময় প্রায়োরটি দাও।নিজের ছেলে সবগুলারে তো রূপসী মেয়ে দেখে বিয়ে করাইছো,তা লাভ কি হয়েছে?ঠিকঠাক খোঁজ নেওয়া তো দূর বছরে একবারো যায়না তোমারে দেখতে।
তফুরা তেজী গলায় বললো– শোনেন খালাম্মা এখনের যুগের কোনো পোলার বৌ শ্বশুরবাড়ি পইড়া থাকে না,সবাই সেপারেশন চায়।এখানে রূপসী আর কালি আর যাই হোক।সুন্দরী হইলে তাও মন রে বুঝ দেওন যায় রূপের ঝলকে সাত খুন ও মাফ করা যায়!কিন্তু যাদের রূপ নাই তাদের রাগ দেখলেও গা জ্বলে।
তফুরার এমন কথা শুনে উপস্থিত সবাই ভীষণ বিরক্ত হলো।মহিলার কথার কি ছিরি,রূপ ধুয়ে যেন পানি খাবে!
নাহিদা– তোমার এই মানসিকতা এখনো বদলালো না!আফসোস হয় তোমার জন্য।তোমার সাথে কথা বলাই বেকার!তবে শোনো আমার নাতি চকচকে কাঁচ দেখে বিভ্রান্ত হয় নাই,সত্যিকার হিরা খুঁজে বের করছে।সময় হলে ঠিকই টের পাবা,তখন আবার দাম্ভিকতায় চেপে যেও না যেন!
তফুরা ভেংচি কেটে উঠে গেল।
নিরবের ছোট ফুপী সাহেরা বলল,একদম ঠিক জবাব দিয়েছেন খালাম্মা।বড় আপা সবসময় বাহ্যিকভাবে সবকিছু বিচার করে।ঐন্দ্রিলাদের ফ্যামিলির সবাই কত মিশুক দেখেছেন?কথা শুনে মনেই হয়না এই প্রথম মিট হলো।আসার পর থেকেই দেখছি কত সুন্দরভাবে এতো গেস্টদের হ্যান্ডেল করছেন।গ্রামের মানুষদের সম্মান দেখেই বোঝা যাচ্ছে এই পরিবারের সবাই খুব ভালো মনের মানুষ।
নাহিদা–দেখলে না গ্রামে যখন গাড়ি ঢুকলো সবাই কিভাবে পথ ছেড়ে দিচ্ছিল,নিজেরাই বলাবলি করছিল ইরফাজ সাহেবের নাতনীর বিয়ের বাড়ির অতিথি কি না!এমন পরিবারের মেয়েকে নাতবৌ হিসেবে পাওয়া সৌভাগ্য বটে।
নিরবের ছোট চাচী দিলারা বলল,তাইয়্যেবা তো বললো মেয়ে শান্তশিষ্ট স্বভাবের খুব ভদ্র।নিরব নাকি ভার্সিটি থেকেই পছন্দ করে,কিন্তু ঐন্দ্রিলা প্রপোজাল এক্সেপ্ট করেনি।বড় আপা যে কোত্থেকে বের করলো প্রেমের বিয়ে!মানুষের বয়স হলে ভুল ভাঙে তাঁর কোনো পরিবর্তন নাই।
তফুরা বেগম এখানেই দমে যান নি তিনি ঐন্দ্রিলাকে গিয়ে বললেন,এখন তো নানা রকম ক্রিম বের হয়েছে,মেয়েরা এখন কত কি মাখে,পার্লারে যায়।তুমি কিছু মাখোনা?এতোবছর শহরে আছ পার্লারেও যাও না?
ঐন্দ্রিলা চুপচাপ তাঁর কথা হজম করে নিচ্ছে।আজ পর্যন্ত কেউ ওকে বাহ্যিকভাবে এভাবে কিছু বলেনি।এই প্রথম এমন কিছু ফেইস করা কতটা কষ্টের তা কেবল ভুক্তভোগীই বোঝে।
ঐন্দ্রিলাকে চুপ করে থাকতে দেখে তফুরা মনে মনে বললো,মিচকা শয়তান একটা।উপরে দেখাইবো ভাঁজা মাছ উল্টাই খাইতে পারেনা।অথচ তলে তলে নিরবের মতো পোলারে কাইত কইরা দিছে!
চৈতি পাশে দাঁড়িয়ে ভেতরে ভেতরে ফুঁসতেছে কিন্তু কিছু বলতে পারছেনা।
তফুরা ফের বলতে লাগলেন,তা ঘরে কাজকাম পারো নি কিছু?অবশ্য আমার ভাইয়ের ঘরে কামের লোকের অভাব নাই তবুও বৌ রে তো টুকটাক কিছু পারা লাগে।
এমন সময় আরমান এসে বললো,বড় ফুপু আপনাকে বাবা ডাকছেন,চলেন তাড়াতাড়ি।
চৈতি হাঁফ ছেড়ে বললো,কি দাজ্জাল মহিলারে বাবা!এমন করে কেউ কথা বলে।চল তাড়াতাড়ি এখান থেকে ঐ মহিলার সামনে পড়া যাবেনা।
ঐন্দ্রিলা চৈতিকে ভেতরে যেতে বলে বাড়ির পেছনের বাগানে চলে গেল।চৈতি বুঝলো ঐন্দ্রিলা এখন পুকুরঘাটে গিয়ে বসবে,মন খারাপ হলেই মেয়েটা সবার থেকে লুকিয়ে বেড়ায়।
ঐন্দ্রিলা সিঁড়িঘাটের শেষ দিকে হাঁটু ভাজ করে বসে আছে।ফেসিয়াল নিয়ে মা মাঝেমধ্যে বললেও আর কেউ কোনোদিন বলেনি ও কালো,অবশ্য উজ্জ্বল শ্যাম বর্ণ আর কালো তে উনিশ বিশ তফাৎ।কবিরা সান্ত্বনা দিয়ে বলে মায়াবতী!
“”নিরবের পাশে আসলেই আমি খুব বেমানান!সে এতো ফর্সা তাঁর পাশে দাঁড়ালে আমাকে একটুও মানাবেনা।কেন যে সে এতো ভালোবাসে!””
চোখের পানি গাল গড়িয়ে নীচে পড়বার আগেই নিরব হাত বাড়িয়ে চার ফোঁটা জল নিলো।তারপর হাত মুষ্টিবদ্ধ করে বললো,ঐন্দ্রিলা যতো ইচ্ছে কেঁদে নাও,বিদায় অবধি তোমাকে কিছু বলছিনা।তবে এরপর থেকে প্রতিটি ফোঁটার হিসেব নিবো আমি!
ঐন্দ্রিলা অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে বললো,এখানে এসেছেন কেন কেউ দেখে ফেললে কি ভাববে?
বাড়িভর্তি মানুষের আনাগোনা,যান এখান থেকে।
নিরব ঐন্দ্রিলার চিবুক ধরে নিজের দিকে ফিরিয়ে বললো,এদিকে পারমিশন ছাড়া কেউ আসেনা আমি ভালো করেই জানি,আর আসলেও কি?আমি কি তোমার মতো ভীতু নাকি।
শোনো ঐন্দ্রিলা আমাদের কথা শোনানোর জন্য চারপাশে মানুষের অভাব নেই,যতোদিন চুপচাপ সব শুনে যাবে, প্রতিবাদ করবেনা পালিয়ে বেড়াবে ততদিন এরা সুযোগ পেয়ে আরো বেশি চেপে ধরবে।মনে রাখবে শক্তের ভক্ত নরমের জম!
ঐন্দ্রিলা হেঁচকি তুলে বললো,কেউ তো ভুল কিছু বলেনি।আপনার মতো সুদর্শন ছেলের পাশে কেউই আমার মতো কাউকে আশা করবেনা।তাই না?
নিরব রেগে বললো,তোমার মত কাউকে বলতে কি বোঝাচ্ছ?আমার বড় ফুপীর কথা এতো মূল্যবান তোমার কাছে?বাকিরা যে তোমায় এতো পছন্দ করেছে তাঁদের টা নজরে পড়ছেনা?বাকিদের কথা বাদ আমি যে তোমায় ভালোবাসি সেটার ও দাম নেই?
তুমি যদি নেগেটিভ এনার্জিতে এট্র্যাকটেড হও তাহলে তো কিছুই করতে পারবেনা।আর কে কি বললো তাতে কি আসে যায় হুম?আমার চোখে তুমি পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর রাজকন্যা!
—মন রাখতে বলছেন আর কি!ভালোবাসলে মানুষ অন্ধ হয়ে যায়।
—তো সেই অন্ধটার দিকে চেয়েও কি নিজেকে ভালোবাসতে পারবেনা ??তুমি জানো তোমার চোখের পানি কিভাবে তীরের মতো বিঁধছে?কান্না থামাও না প্লিজ।
ঐন্দ্রিলা চোখ মুছে শান্ত হলো।
–তা ম্যাম এই কয়দিন আমাকে মিস করেছিলেন ?
ঐন্দ্রিলা বড় বড় চোখ করে বললো,মিস করার কি আছে?ফোনেতো রোজ কথা হতোই,তাছাড়া এতো বিজি ছিলাম কি বলবো!
নিরব পুকুরে জোরে ঢিল ছুঁড়ে বললো,তুমি একটা নিষ্ঠুর মেয়ে।পাথরের মতো মন তোমার।যদি এই ভালোবাসাটা পাথর কে দিতাম সেও এতোদিনে গলে যেত।
ঐন্দ্রিলা সিঁড়ি ধিঙ্গিয়ে নিচে নেমে পানিতে পা ডুবিয়ে বললো,তা পাথর কে গিয়ে ভালোবাসুন না বেঁধে রেখেছে কে?
নিরব ঐন্দ্রিলার পাশে বসে হাত ধরে বললো,কি করবো বলো তোমাতে মাতোয়ারা হয়ে গেছি যে!
ঐন্দ্রিলা দুহাত দিয়ে নিরবের হাতটাকে মুঠোবন্দি করলো,তারপর নিরবের কাঁধে মাথা রেখে বললো,এই কথাগুলো কোথায় শিখেছেন বলুন তো,ভেতরটা একদম নাড়িয়ে দেয় জানেন?
নিরব ঐন্দ্রিলার কান্ড দেখে অন্যমোহে হারিয়ে গিয়েছিল,ওর কথা শুনে মুচকি হেসে বললো,এসব কথা শিখতে হয় না,মনের কথা প্রকাশ করলেই হবে।তুমি তো সব বাক্সবন্দি করে রাখো যেন কেউ চুরি করে নিয়ে যাবে,,
—হুহ।(ভেংচি কেটে বলল)
–হেই ঐন্দ্রিলা আবার করো তো।
–কি করবো?
–এই যে হুহ বলে করলে।So adorable!
–আপনিও না আজীব।
–হুম I love you too.
–মানে কি?আমি কি এটা বলেছি?
–তুমি তো বলবেনা আমি নিজে নিজে কল্পনা করে উত্তর দিয়েছি।
ঐন্দ্রিলা চোখ বন্ধ করে মনে মনে বললো, ভালোবাসি ভালোবাসি ভালোবাসি।
নিরব বললো,আমিও।
ঐন্দ্রিলা চমকে উঠে কাঁধ থেকে মাথা সরিয়ে নিরবের দিকে তাকাতেই নিরব হাসতে লাগলো।
“পাশাপাশি বসলে বুঝি মন পড়া যায় ডেঞ্জারাস তো!!!”
_________________
ইশতিয়াক সারাদিনের কাজ শেষে ছাদে থাকা চেয়ারে সবে গা এলিয়ে বসলো।এখানে আসার পর থেকেই দু’দন্ড ফুরসত মেলেনি।দুই পক্ষের আত্মীয়,ডেকোরেশনের দায়িত্ব সবমিলিয়ে দারুণ ঝামেলা।চোখ বন্ধ করে দিয়ার কথাই ভাবতে লাগলো সে।আজকাল চোখ বন্ধ করলে ওর মুখটাই ভাসে,মেয়েটা খুব দুষ্ট! শিলা অবশ্য এমন ছিল না।ও ছিল ম্যাচিওর মেয়ে,সবকিছুতে সিরিয়াস।আচ্ছা দিয়া হঠাৎ শিলার কথা জিজ্ঞাসা করেছিল কেন?ও কি শিলার সম্পর্কে কিছু জেনেছে?
হঠাৎ ইশতিয়াক উঠে বসে বললো,ওহ এই ব্যাপার!এইজন্য এমন কেঁদেকেটে অস্থির হয়েছিল।
শিলার বিয়ের খবর ওর কাজিনরা কেউ জানেনা,নিশ্চয়ই ইতুরা বলেছে ওর কথা।
আচ্ছা সে কি গিয়ে এই ব্যাপারে কথা বলবে!ধুর ছ্যাঁচড়া মনে হবে নাতো?ও যদি বলে বসে আমায় কেন বলছেন ভালোবাসেন নাকি?তখন কি উত্তর দিবে সে??
চৈতি আর ইতু বসে বসে মেহেদি দিচ্ছে।এমন সময় কারিয়ান এসে বললো,বিয়ে ঐন্দ্রিলার নাকি তোর?মেহেদি কেন দিচ্ছিস?আঙ্কেলকে বলে তোর ও বিয়ের ব্যবস্থা করি কি বলিস??
ইতু ক্ষেপে বললো,ভাইয়া তুই ও না!
কারিয়ান চৈতির দিকে তাকিয়ে বললো,তা তোরা ঠিকঠাক প্র্যাকটিস করেছিস তো দেখিস আবার গানের মাঝখানে আটকে যাস না যেন?
ইতু কারিয়ানকে চৈতির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললো,ও চৈতি পরিচয় করানো হয় নি এ হচ্ছে ঐন্দ্রিলা আপুর ছোট ফুপীর ছেলে কারিয়ান,মেরিন ইঞ্জিনিয়ার।আর ভাইয়া ও হচ্ছে চৈতি ঐন্দ্রিলা আপুর ফ্রেন্ড।
চৈতি—নাইস টু মিট ইউ ভাইয়া।
কারিয়ান বিড়বিড় করে বললো,ডোন্ট কল মি ভাইয়া স্টুপিড গার্ল।
চৈতি–কিছু বললেন?
কারিয়ান– না না কি বলবো!
ইতু– ভাইয়া তোরা ডান্স করবি তো?বরপক্ষকে দেখিয়ে দিতে হবে কিন্তু আমরা কি চিজ!
কারিয়ান– হ্যাঁ রে দুই পক্ষের হলুদ কি একসঙ্গে হবে??
ইতু–হ্যাঁ!আমরা তো ঠিক করেছি কম্পিটিশন রাখবো।
কারিয়ান– নানাভাই এলাউ করবে?
ইতু–দেখি না কি হয়!
।
বিয়েটা গ্রামে হলেও ডেকোরেটর শহর থেকে আনা হয়েছে।খুব সুন্দর করে স্টেজ বানানো হয়েছে,রাজকীয় কারুকাজের সোফা বসানো হয়েছে,রঙিন ফুল আর লাইট দিয়ে অনেক সুন্দর করে স্টেজ সাজানো হয়েছে।নানাপদের মিষ্টি,পান সুপারি আনা হয়েছে,হলুদের জন্য চমকপ্রদ আইটেম সাজানোর কাজে বাড়ির বৌয়েরা লেগে পড়েছে।
ইমরান সাহেব বারবার এ বাড়ি ও বাড়ি করে অস্থির হয়ে আছেন।ঐন্দ্রিলা তাঁর বাবাকে ধরে এনে রুমে বসিয়ে বললো,বাবা এতো ছোটাছুটি করছো কেন বলোতো!অনেক মানুষ আছে তো এসব দেখতে।ঐ বাড়িতেও ভাইয়ারা আছে সার্বক্ষণিক দেখভাল করতে।তুমি টেনশন করোনা তো।
ইমরান ম্লান হেসে বললো,মা রে মেয়ের বিয়েতে কোনো বাবা স্থির থাকতে পারে?তার উপর ওদেরকে এখানে এনেছি।কোনো কিছুর ঘাটতি আছে কিনা দেখতে হবেনা?
—উফ বাবা তুমিও না!এখানে চুপ করে কিছুক্ষণ বসো তো।তোমার সঙ্গে তো কথা বলার ই সুযোগ হচ্ছে না।
— কাল থেকে তো তুই পরের বাড়ির হয়ে যাবি,চাইলেই বাপ মেয়ে বসে গল্প করতে পারবোনা।নতুন সংসারে মানিয়ে নিস মা!প্রথম প্রথম কষ্ট হবে তারপর ঠিক হয়ে যাবে।
–বাবা তুমি কাঁদছো!
ইমরান চোখের পানি মুছে বলল,বুঝলি মা তুই হবার পর থেকেই এই দিনটাকে ঘিরে কত কল্পনা জল্পনা ছিল!অথচ দেখ বিয়ের দিন যতো ঘনিয়ে এলো মনটা আনন্দিত হবার বদলে ভারী হয়ে গেছে।তোকে ছাড়া কিভাবে থাকবো ভাবতেই চোখ ভিজে আসে।সমাজের নিয়মগুলো মাঝেমধ্যে কাঁটার মতো লাগে।
ঐন্দ্রিলা তাঁর বাবাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে বলল,বাবা তুমি কষ্ট পেও না তোমার যখন ইচ্ছে হবে চলে আসবে বা আমাকে ফোন করবে আমি ঠিক চলে আসবো।
ইমরান হেসে বললো,বোকা মেয়ে।
বাঁধন এসে সাথে সাথে ছবি তুলে নিলো।বাবার চোখে জল ঠোঁটে হাসি মেয়ে বুকে জড়ানো,এই মুহূর্তের আসলে কোনো তুলনা নেই।বাঁধন বললো,আঙ্কেল স্যরি পারমিশন ছাড়া ছবি তুলেছি তবে বিশ্বাস করুন এই মুহূর্ত ক্যাপচার না করলে হতোই না!!
ঐন্দ্রিলা চোখ মুছে বললো,তোর কাজ ই এটা।
____
ধীরে ধীরে হলুদের জন্য সবাই তৈরি হয়ে গেছে।
মেয়েরা পিংক হোয়াইট কম্বিনেশনের সারারা পড়েছে।ছেলেরা পিংকের উপর হোয়াইট ব্রাশ করা পাঞ্জাবি।সিনিয়ররা সবুজ শাড়ি,ভাবীরা রেড শাড়ি পড়েছে।আংকেলরা পড়েছে অফ হোয়াইট পাঞ্জাবি আর বড় ভাইয়ারা স্কাই ব্লু।
ঐন্দ্রিলার গায়ে গাঢ় গোলাপি আর বাসন্তী রঙের কম্বিনেশনের কাতান শাড়ি,কাঁচা ফুলের তৈরি গহনা,মাথায় দোপাট্টা।খুব সুন্দর করে মেকাপ করানো হয়েছে।
নিরব বাসন্তী কালারের পাঞ্জাবির উপর গাঢ় গোলাপির উপর গোল্ডেন সুতোর কাজ করা কটী,চুড়িদার পাজামা পড়েছে,চুলগুলো সুন্দর করে ব্রাশ করা।
সবাই একদম হিরো হিরোইন সেজে প্রস্তুত।
আপনাদের সবার দাওয়াত রইলো ঐন্দ্রিলার হলুদ+বিয়েতে সবাই আসবেন কিন্তু,,,
চলবে,,,
(অতিরিক্ত কথন—গল্প লিখি কল্পনা করে,বাস্তবে যা কখনোই হবার নয় তাই ই থাকে সেই মিথ্যে জগতে।দু চার ঘন্টা ব্যয় করে ভাবনাগুলো কীবোর্ডে তুলে আপনাদের সাথে শেয়ার করায় অন্যরকম আনন্দ খুঁজে পাই।তবে আফসোস হয় জানেন?একই গ্রুপে একই প্ল্যাটফর্মে অন্যান্য গল্পে হাজার হাজার লাইক কমেন্টস অথচ আমার গল্পে মিনিমাম সাড়া নেই!আমার গল্পগুলো কি তবে এতোটাই নগন্য?নূন্যতম সাড়া পাওয়ার মতো কি নয়?
মাঝেমধ্যে অভিমান হয় ভাবি আর লিখবোই না।তারপরো লিখি,এই মিথ্যে জগতটায় কিছুক্ষণ ডুবে থাকতে বেশ লাগে!তবে জানিনা এমন নিস্তব্ধতায় কতদিন একা একা এগিয়ে যাবো।
হ্যাপি রিডিং!)