#শুভ্র_বর্ষণ
#প্রভা_আফরিন
#পর্ব_১০

মাঝরাতে হুট করেই ঘুম হালকা হয়ে গেলো মিহার। চোখের খুলে অন্ধকারে নিমজ্জিত রুমটায় চোখ বুলিয়ে আবারো চোখের কপাট বন্ধ করলো। হাত এগিয়ে নিশান্তকে একবার স্পর্শ করতে চাইলো। কিন্তু বিছানা হাতড়ে তাকে পেলো না। ভাবলো হয়তো ওয়াশরুমে। তাই অপর পাশ ফিরে পুনরায় ঘুমানোর প্রস্তুতি নিলো। অনেকক্ষন পার হওয়ার পরও যখন নিশান্তর উপস্থিতি টের পেলো না তখন মিহা পিটপিট করে চোখ মেললো। কিছুক্ষনের মাঝেই আধার চোখ সয়ে যেতেই আধো আধো সব দৃশ্যমান হলো। রুমে কোথাও নিশান্তর অস্তিত্ব নেই। মিহা উঠে বসলো।

চারিদিকে চোখ বুলাতেই বারান্দার দরজাটা আধ খোলা দেখলো। সেদিক থেকেই অল্পবিস্তর আলো আসছে রুমে। ওর মনে আছে ঘুমানোর আগে দরজা বন্ধ করে ঘুমিয়েছিলো। নিশান্ত কি বারান্দায়? কথাটা মাথায় আসতে খাট থেকে নেমে পড়লো। শব্দহীন পায়ে বারান্দার খোলা দরজায় পা রাখতেই একটা অবয়ব স্পষ্ট হলো। নিশান্ত দাড়িয়ে আছে। দৃষ্টি নিবদ্ধ ধুসর রঙের আকাশে। এতো রাতে না ঘুমিয়ে এখানে কেনো দাঁড়িয়ে আছে সে? নিশান্তের মুখ দেখা যাচ্ছে না। শুধু পিঠ দেখা যাচ্ছে। মিহা বুঝে উঠতে পারছেনা ওর নিশান্তকে ডাকা উচিৎ কিনা। একবার ভাবলো তার পাশে গিয়ে দাঁড়াবে। আবার মনে হলো নিশান্ত হয়তো একা থাকতে চায়।সবকিছুতে প্রশ্ন করলে হয়তো বিরক্ত হতে পারে।

হুট করেই মিহা-নিশান্ত একে অপরের জীবনের সাথে জড়িয়ে পরেছে। দুজনের স্বাভাবিক জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন নিশ্চয়ই এসেছে। একে অপরকে খুশি রাখা, ভালো রাখারও একটা প্রচেষ্টা চলছে সবসময়। কোথাও এই সবকিছুতে নিশান্ত হাপিয়ে উঠছে নাতো! তার ব্যস্ত জীবনের ব্যস্ততা বাড়ানো আরেকজন হয়ে উঠলো নাতো মিহা! কথাটা ভাবতেই মিহার খারাপ লাগলো। দম বন্ধ অনুভূতি ঘিরে ধরলো। ওর জীবন যাপনের সাথে হয়তো নিশান্তর জীবন যাপনের সাদৃশ্য কম। তারা একে অপরের সাথে মানিয়ে নিচ্ছে। নিশান্ত কি আদৌ খুশি এতে। মিহার ভেতরটা হুহু করে কেদে উঠছে। কিসব ভাবছে ও! কিন্তু ভাবনাগুলো তো অযৌক্তিক নয়।

যদি এমন কিছুই হয় তাহলে শুধু শুধু ভেবে সময় নষ্ট করে কি লাভ। নিশান্ত বুদ্ধিমান ব্যক্তি। খোলামেলা আলোচনা করলে অবশ্যই সাড়া দেবে। হুট করে মাঝরাতে এইসব ভাবনাই বা কেনো আসছে বুঝতে পারলো না মিহা। নিশান্তর হয়তো ঘুম আসছে না বলেই দাঁড়িয়ে আছে। নিজেকে শান্ত রেখেই পুনরায় নিঃশব্দে রুমের ভেতর পা রাখলো সে। কিন্তু এক কদম বাড়াতেই নিস্তব্ধতা ভেঙে পেছন থেকে নিশান্তের গলা পাওয়া গেলো,

“মাহযাবীন, চলে যাচ্ছো কেনো?”

মিহা থমকে গেলো। নিশান্ত বুঝে যাবে ও ভাবতে পারেনি। পিছনে ফিরে দেখলো নিশান্ত আগের মতোই দাঁড়িয়ে আছে। তাহলে বুঝলো কি করে? মিহা বললো,

“আপনাকে বিরক্ত করতে চাইনি। তাই চলে যাচ্ছিলাম।”

নিশান্ত পেছন ফিরলো। হতাশ গলায় বললো,
“তুমি আমার বিরক্তি? এটা মনে হয় তোমার?”

মিহা আধারেই মাথা নেড়ে না বোঝালো। বললো,
“আমি সেটা বলতে চাইনি। আপনি হয়তো একটু একা থাকতে চান তাই আরকি…”

“কাছে এসো।”

মিহা বারান্দায় পা রাখলো। নিশান্তর পাশে গিয়ে দাঁড়ালো। চাঁদের উপস্থিতি নেই আজ। তবুও একটা আলো আধারের খেলায় মত্ত চারপাশ। বাইরের রাস্তার লাইটের হলুদ সাদা আলোগুলোর জন্য হয়তো। নিশান্তকে এখন স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। মানুষটার চোখে কেমন বিষন্নতা। এতোদিন তো এই চোখ নজরে পড়েনি মিহার। তাহলে কি ওর একটু আগের ভাবনাই ঠিক!

মিহার পড়নে এখনো সেই নীল শাড়িটা। তবে আধারে রঙটা তেমন ফুটে উঠতে পারেনি। নিশান্ত শাড়ির আঁচলটা আরেকটু উঠিয়ে দিলো মিহার কাধে। ঘুমানোর আগে সেফটিপিন খুলে রেখেছিলো বিধায় বারবার আঁচলটা সরে যাচ্ছে। যদিও আধার ঘেরা পরিবেশ তবুও মিহা একটু লজ্জা পেলো। আঁচলটা প্যাচিয়ে নিলো ভালো করে। নিশান্ত মিহার হাতদুটো নিজের হাতে আবদ্ধ করলো। বললো,

“আমি জানি তুমি হয়তো আমাকে স্পেস দিচ্ছো।কখনো কখনো সম্পর্কের মাঝে স্পেস লাগে। নিজেকে বুঝতে, অপরজনকে বুঝতে কিংবা সম্পর্ক ভালো রাখতে নিজের জন্য একটু স্পেস দরকার হয়। আমাদের মাঝে এখনো তেমন সময় আসেনি। আর না আমি সেই সময়টা কখনো কামনা করি। তোমাকে আমি মন থেকে গ্রহন করেছি। মন থেকেই তোমার সঙ্গ চাই। তোমার সাথে থাকা প্রতিটা মুহূর্ত আমি উপভোগ করি। তাই নিজেকে আমার বিরক্তির কারন ভেবে ভুল করবে না।”

মিহা এবার কিছুটা স্বস্তি পেলো মনে মনে। কিন্তু নিশান্তকে গুমোট লাগছে দেখে একটা ভারী ভাব এখনো রয়ে গেলো ওর চারপাশে। নিশান্ত বললো,

“আমার বেস্ট ফ্রেন্ড হবে মাহযাবীন?”

নিশান্তর করুন আকুতি মিশ্রিত কন্ঠস্বর মিহার কানে বিধলো। অস্ফুট স্বরে উচ্চারণ করলো,
“বেস্ট ফ্রেন্ড!”

“হুম বেস্ট ফ্রেন্ড। যাকে মনের ক্ষোভ বা রাগ, দুঃখ বা কান্না, সুখ বা আনন্দ সবটাই দেখাতে পারবো। যার কাছে আমি খোলা বইয়ের মতো নিজেকে প্রকাশ করতে পারবো। কোনো লুকোচুরির ব্যাপার থাকবে না। দিন শেষে ভালো না থাকা সত্ত্বেও ভালো আছি বলে হাসতে হবে না। অভিনয় করতে হবে না।”

কথাগুলো শুনে মিহার হঠাৎ মনে হলো ওর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটা ভালো নেই। কোথাও না কোথাও সে দুঃখী। বড্ড অসহায়। সেটা কাটিয়ে উঠতেই সে মিহাকে আপন করে নিতে চাইছে। এতোটা আপন, যতটা হলে নিশান্ত হালকা হতে পারবে। মিহার মন ভার হয়ে উঠলো। সে কেনো এতোটা দিন একবার ভালো করে মানুষটাকে খেয়াল করলো না? হয়তো কোনো চাপা কষ্ট রয়েছে তার বুকে।

নিশান্ত আবার বললো,
“কিছু কিছু অনুভূতি খুব নিষ্ঠুর জানোতো। এদের আসার কোনো নির্দিষ্ট দিন ক্ষন থাকে না। হুট হাট এসে মনকে বিষন্ন করে চলে যায়। এরা দিনের আলোয় লুকিয়ে থাকে। রাতের আধারে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে। সেই সময়টায় আধার মানুষের সবচেয়ে আপন হয়ে যায়।”

কথাগুলো আবেগী মিহা নিতে পারলো না। নিঃশব্দে কেদে ফেললো। ওর চোখ দিয়ে জল গড়াতেই নিশান্ত ওকে শক্ত করে বুকে চেপে ধরলো।

“আপনাকে আমি বুঝতে পারিনা কেনো? কেনো শুধু আপনার খুশি টুকু বুঝি। দুঃখ কেনো নয়?”

“এভাবে কাদলে তো তোমায় বেস্ট ফ্রেন্ড বানানো যাবে না মাহযাবীন। আমার কথা শুনে যদি তুমি আবেগী হয়ে পড়ো তবে আমাকে সঠিক উপদেশ কে দেবে শুনি? আর ওইযে বললাম, কিছু অনুভূতি হুট করে এসে মনকে বিষন্ন করব দেয়। তার মানে কি এই যে আমি ভীষন অসুখী? মোটেই না। বরং মাঝে মাঝে একটু বিষন্নতাও দরকার হয় জীবনে। এই বিষন্নতাও মানুষকে অনেক কিছু শেখায়।
আমি খুব সুখী একজন মানুষ। তোমার কাছে থাকার পুরোটা সময় আমি খুশি থাকি তা তুমি নিশ্চয়ই বোঝো। সেই সময় কোনো বিষন্নতা বিরক্ত করতে আসে না। এসব ভেবে নিজেকে দোষারোপ করবে না একদম। আর মনে রাখবে, তুমি তখনই কাউকে সম্পূর্ণ বুঝতে পারবে যখন কেউ নিজেকে বোঝাতে চাইবে বা তার কোনো ভান থাকবে না। কাউকে বোঝো না বলে কষ্ট পাবে না। আর তাছাড়া আমার পুরোটা তো তোমাকেই বুঝে নিতে হবে। তারজন্য নিজেকে সময় দাও। আমাদের পথচলা তো সবে শুরু।”

“বুঝতে চাই। আপনাকে পুরোটা বুঝতে চাই। আপনার একান্ত প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠতে চাই।”

“হবে কিন্তু এভাবে কথায় কথায় কাদলে চলবে না। তাহলে আমিও তোমায় মন খুলে কিছু বলতে পারবো না। এমন আবেগী হলে যে কেউ তোমাকে কাদাতে চাইবে। তোমাকে কাদিয়ে অনেকে আনন্দিত হবে। তুমি কেনো মানুষকে এই সুযোগটা দেবে? একদম দেবে না। এমনকি আমাকেও সেই সুযোগ দেবে না। বি স্ট্রং মাই লেডি।”

মিহা মাথা নাড়ালো। নিশান্ত আর বেশি কিছু বললো না। এই মেয়েটা কাছে থাকলে এক অন্যরকম শান্তি বিরাজ করে। যেমন টা এখন লাগছে। বারান্দায় একটা মাত্র বেতের মোড়া রয়েছে। নিশান্ত সেটায় বসে মিহাকে জড়িয়ে ওর পেটে মাথা দিয়ে চোখ বুজে রইলো। মিহা পালানোর চেষ্টা করলো না। লজ্জায় কাপলো না। বরং আজ মনে হলো নিশান্ত এভাবেই থাকুক। ও আলতো করে নিশান্তর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো। আরাম পেয়ে নিশান্ত আরো মিশে গেলো মিহার সাথে।

__________

ভোর হতেই সুমা বেগম এবং শিরীন বেগমের ব্যস্ততা শুরু হয়ে গেছে। হালিমা প্রতিদিন দেরি করে আসলেও আজ তাকে জলদি আসতে বলা হয়েছে। হালিমা থাকে পাশের এলাকার ছোট্ট বস্তিতে। ওর বয়স আনুমানিক পঁচিশ ছাড়িয়েছে। নির্দিষ্ট করে বয়স বলতে পারে না সে। নদী ভাঙন এলাকায় জন্ম হালিমার। যখন ওর বয়স ষোল তখন গ্রাম থেকে এসে এই বাড়িতে কাজ নেয়। পাশাপাশি আরো দুয়েক বাসার টুকুটাক কাজ করে দেয় সময় পেলে।

হালিমার সতেরো বছর বয়সেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে বস্তিরই এক বেকার ছেলেকে বিয়ে করে। তবে সেই সংসার থেকে ঝগড়া, মারামারি ব্যতীত কিছুই কপালে জোটেনি। একাই সংসার টেনেছে সে। মোহ যখন শেষ হয়, আবেগ কেটে যায় তখন ওর স্বামী আরেক মেয়ের সাথে পালায়। তখন হালিমার গর্ভকালীন পাঁচ মাস চলছে। সে একাই বাচ্চাকে জন্ম দেয়। ওর পাশে তখন আনোয়ার সাহেবের পরিবারই ছিলো। হালিমার ছেলে একটু বড় হতেই রেখে আসে মায়ের কাছে। কয়েক বছর ঘুরতে হালিমাও আবার বিয়ে করে নেয়। সেটা এখনো টিকে আছে। ওর স্বামী যখন যা পায় সেই কাজই করে। দুইজনের বয়সের দিক থেকে সমান বলা যায়। তবে হালিমা সুখেই আছে। ছেলেকে এনে নিজের কাছে রাখছে এখন।

সকাল বেলা মশলা বাটতে বসে হালিমা গ্রামের গল্প শুরু করে দিয়েছে। একটা মানুষের হাত এবং মুখ একই সাথে কিভাবে চলে সেটা হালিমাকে দেখলেই বোঝা যায়। কথা না বললে নাকি কাজে আনন্দ পায় না সে। ওর উঁচু গলায় বলা সব সত্যি মিথ্যার সাজানো গল্পে বাড়ির সবার ঘুম ছুটে গেছে।

নিশান্ত ফুরফুরে মেজাজে আছে সকাল থেকে। ওকে এমন চনমনে স্বভাবে দেখে মিহার ভালো লাগলো। এই রূপেই তো নিশান্তকে মানায়। এই রূপেই তো মিহার আবেগী মন ওর প্রতি ছুটে যায় বারবার। খুশি থাকার একশ একটা উপায় বোধহয় নিশান্তের জানা। রাতের সেই বিষন্নতার লেশমাত্র নেই ওর মাঝে। খুশি থাকতে জানলে জীবনে আর কি লাগে!

নিশান্ত শোভাকে নিয়ে হাটতে বের হয়েছে। এলাকাটা ভালো করে দেখা হয়নি। একটু হেটে বেরাবে বলে মিহার সাথে বের হতে চেয়েছিলো। কিন্তু সে কোমড় বেধে মা এবং মামির সাথে কাজে লেগে গেছে। শ্বশুর বাড়ির মানুষদের আপ্যায়নে ত্রুটি রাখবে না। অগত্যা শুধু শালিকাই সঙ্গি হলো তার। শোভা এবং নিশান্ত উভয়েই গল্প করতে পারদর্শী হওয়ায় ওদের আড্ডা জমে উঠেছে।

রাস্তায় বের হয়ে প্রথমেই আরিফ আঙ্কেলের সাথে দেখা হলো ওদের। শোভা প্রথমে ভয় পেয়েছিলো আরিফ আঙ্কেল ফুল চুরির কথা জেনে গিয়েছেন কিনা। তাই শোভা মুখ লুকাতে চাইছিলো। রিয়াদের হাতে ধরা পড়ার পর আর ওই বাড়িমুখো হয়নি সে। তবে আরিফ আঙ্কেলের মাঝে তেমন কিছু লক্ষ্য করা গেলো না। তিনি স্বাভাবিক ভাবেই শোভাকে দেখে প্রানবন্ত হাসিটা উপহার দিলো। জিজ্ঞেস করলো,
“কি খবর শোভা? কেমন আছো?”

শোভা হাসার চেষ্টা করে বললো,
“আলহামদুলিল্লাহ আঙ্কেল। আপনি?”

“আমি, একদম ফিট এন্ড ফাইন। এই বুঝি এলাকার নতুন জামাই?”

আরিফ আঙ্কেলের কথার ধরনে এতে শোভা হাপ ছেড়ে বাঁচলো। যাক, জানে না তবে। হেসে বললো,
“জি আঙ্কেল। উনিই আমার দুলাভাই।”

শোভা নিশান্তকে পরিচয় করিয়ে দিলো আরিফ আঙ্কেলের সাথে। টুকটাক সৌজন্য সাক্ষাৎ ঘটিয়ে বিদায় নিলেন তিনি।
নিশান্ত এবং শোভা আরো সামনে এগিয়ে চললো। আকাশ নীল আঁচল ছড়িয়ে রেখেছে মাথার ওপর। সেই আঁচলে সূর্য্যি মামা সোনালী রঙের আলপনা একে দিয়েছে। যার দরুন প্রকৃতি তপ্ত হয়ে উঠেছে। কিছুদূর এগিয়ে মিমদের আমবাগানে ঢুকে পড়ে ওরা। মিম হলো শোভার ছোটবেলার বান্ধবী। বড় হয়ে সেই বন্ধুত্ব ছিটেফোঁটা আছে বললেই চলে। এই আম বাগান আমের সিজন বাদে বাকি সময় সবার জন্য উন্মুক্ত। আলোছায়ায় মোড়ানো যায়গাটা হাটাহাটির জন্য একদমই উপযুক্ত। সেখানেই রিয়াদের সামনে পড়লো শোভা। মনে মনে একটু আড়ষ্ট হলেও মুখে স্বাভাবিকতা বজায় রাখলো সে।

রিয়াদ শোভাকে কারো সাথে দাঁড়িয়ে গল্প করতে দেখে একটু থমকালো। কিছু মুহূর্ত উভয়কে পর্যবেক্ষণ করে পুনরায় মুখে উপেক্ষার মনোভাব প্রদর্শন করে চলতে লাগলো। রিয়াদ ওকে পাশ কাটিয়ে যেতেই শোভা হাপ ছাড়লো। কিন্তু রিয়াদের উপেক্ষার দৃষ্টিটা যেন কোথাও একটু খোচা দিলো। মনে করালো, এটা অপমান। ওর গোপন চুরি ধরে ফেলে যেন ওকে দুর্বল করে ফেললো রিয়াদ। এটা শোভা কিছুতেই মানতেই পারবে না।
শোভার এতোক্ষনের অভিব্যক্তি নিশান্তের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। অভিজ্ঞ চোখে শোভাকে এবং পাশ কাটিয়ে যাওয়া ছেলেটাকে পর্যবেক্ষণ করে বললো,

“কুচ তো গড়বড় হ্যায় শালিকা সাহেবা।”

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here