#ভেজাগোলাপ❤️
#লেখিকা-মালিহা খান❤️
#পর্ব-১২
মিরাকে রুমে ঢুকতে দেখেই নড়েচড়ে বসলো রোদ্রি।নিজেকে যথাসম্ভব সাভাবিক রাখার চেষ্টা করলো।
মিরা বেশ বুঝতে পারছে রোদ্রি মনিরা বেগমের কথাটা শুনেছে।আর তার আন্দাজমতে রোদ্রি নীরাদকে ভালোবাসে তাই তার অমত হওয়ার কথা না।কিন্তু শুধু আন্দাজ এর উপর ভিত্তি করেই সে আগেরবারের মতো কোনো ভুলের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায় না।
মিরাকে দাড়িয়ে থাকতে দেখে মৃদু কন্ঠে বললো রোদ্রি,
-বসো ভাবি।
-তোর সাথে কিছু কথা ছিলো রোদ্রি।
-হ্যাঁ বলো।
-তুই হয়তো চাচীর কথাটা শুনেছিস।তাইনা?
-হুম..
-তাহলে..তোর মত কি?
কিছুক্ষন চুপ থাকে রোদ্রি।তারপর বলে,
-তোমরা যা ভালো মনে করো।
রোদ্রির কথায় হতাশ হয় মিরা।মেয়েটা কখনোই মুখ ফুটে কিছু বলতে পারেনা।একেবারেই চাপা স্বভাবের।
-দেখ রোদ্রি,বিয়েটা হবে তোর আর নীরাদের।সংসার করবি তোরা।সেখানে তোর মত টা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন।তোর যদি আপত্তি থাকে তাহলে বল আমি এক্ষুনি চাচীকে মানা করে দিব।তোকে তো তোর ইচ্ছাটা জানাতে হবে বাচ্চা।
প্রচন্ড লজ্জা নিয়ে এবার মুখ ফুটে বলেই দেয় রোদ্রি,
-আমার আপত্তি নেই ভাবি।
হাসি ফুটে উঠে মিরার ঠোঁটের কোঁণে।রোদ্রির মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো সে।
মিরা রুম থেকে বেরিয়ে যায়।ঘরের লাইট নিভিয়ে দেয় রোদ্রি।আনমনে নিজেকে প্রশ্ন করে,”সে কি সত্যিই নীরাদকে ভালোবাসে?”উওরটা সে জানেনা।আসলেই জানেনা।সে শুধু জানে,নীরাদের সংস্পর্শ তাকে শান্তি দেয়।কেমন একটা নিরাপদ নিরাপদ অনুভব হয়।মনে হয়,হ্যাঁ এমন একটা আস্থাপূর্ণ ভরসাপূর্ণ মানুষইতো সবাই চায়।
___________
ফোনের রিংটনে ঘুম ভেঙে যায় রোদ্রির।কিছুক্ষন আগেই ঘুমিয়ে ছিল সে।পাশ থেকে ফোনটা নিয়ে স্ক্রীনে চোখ পরতেই এক লাফে উঠে বসে।স্ক্রীনে স্পষ্ট অক্ষরে লেখা”MR.Nirad is calling”।
এতরাতে নীরাদ কেন কল দিয়েছে?অবশ্য এখন এতরাত না মাত্র ১১:৩০ বাজে।সেই তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়েছিলো।নীরাদ নিশচয়ই তাদের বিয়ের ব্যাপারে বলতে ফোন করেছে?কি ভাবে কি বলবে সেসব ভাবতে ভাবতেই ফোনটা রিসিভ করলো সে।
-হ্যালো,মিস রোদ্রি?
-জি বলেন।
-আপনি ঘুমিয়েছিলেন?তাহলে পরে ফোন দিবোনে…
-না না বলেন।সমস্যা নেই।
-আপনার রেজাল্টের খুব ভালো হয়েছে শুনলাম।কংগ্রেচুলেশন।
-ধন্যবাদ।
-কালকে ফ্রি আছেননা?
-হুম।
-আচ্ছা ঠি কাছে ঘুমান আপনি।আপনার কন্ঠ শুনেই বোঝা যাচ্ছে ঘুমিয়ে ছিলেন।গুড নাইট।
-গুড নাইট।
_____________
সকালবেলা শাওয়ার নিয়ে বের হতেই বিছানার উপর কয়েকটা প্যাকেট দেখতে পেলো রোদ্রি।ভ্রু কুচকে এগিয়ে গিয়ে একটা প্যাকেট হাতে নিতেই পিছন থেকে মিরা বললো,
-দেখতো তোর পছন্দ হয় নাকি?সকাল সকাল নীরাদ এতকিছু পাঠিয়েছে তোর জন্য।সন্ধ্যায় ওরা আসবে আংটি পড়াতে।এগুলা পড়েই তৈরি হয়ে নিস।ছেলেটা শখ করে পাঠিয়েছে।
-আজকেই?
-হ্যাঁ,নীরাদ নাকি চাইছে যত দ্রুত সম্ভব বিয়েটা করে ফেলতে।তোর সাথে কথা হয়নি ওর?
-হয়েছে…কিন্তু এ বিষয়ে…
মিরার ফোন বেজে উঠে।রোদ্রিকে বলে,
-তোর ভাই ফোন দিয়েছে।আমাদের ও তো একটা প্রস্তুতির ব্যাপার আছে।
বলে ফোন কানে লাগিয়ে ব্যস্ত ভঙ্গিতে রুম থেকে বের হয়ে যায়।
একটা একটা করে প্যাকেট খুলছে আর অবাক হচ্ছে রোদ্রি।একটা মানুষের পছন্দ এতটা সুন্দর কি করে হতে পারে ভেবে পায় না রোদ্রি।হঠাৎই ফোনের টুংটাং শব্দে চমকে উঠে সে।
হাতে নিয়ে দেখে নীরাদের মেসেজ,
-“পছন্দ হয়েছে রোদ্রি?”
চলবে….