#ধূসর_রঙের_প্রজাপতি
#ফাতেমা_তুজ
#part_2
ভোরের তীক্ষ্ম আলো চিক চিক করছে। সূর্য যেন হেসে খেলে উঠেছে, না হলে সকাল ছয় টা বাজতেই এমন রোদ উজ্জ্বল হওয়ার কথা না।
জানালার গ্রিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে ঝিল। ভোরের দিকেই চোখ টা লেগেছে ওর। অভিনব একটা চেয়ারে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।
দরজায় একবার খট খট আওয়াজ হতেই অভিনবর ঘুম ভেঙে গেল । ওর ঘুম খুব আলগা , একজন ভ্রমন প্রেমি হলে যা হয় আর কি।
অভিনব ঝিলের দিকে এক পলক তাকিয়ে আরমোড়া ভেঙে দরজা খুলে দিলো।
ভদ্র মহিলা প্রশস্ত হেসে বললেন
_ নাস্তা খাইতো আছো বাবা।
অভিনব মাথা ঝাঁকালো। কিন্তু ঝিল কে ডাকবে নাকি ডাকবে না সেটা নিয়ে বিপাকে পরেছে। যে হারে চমকে উঠে মনে হয় গায়ে আঘাত ই করে দিবে। কোর্ট টা চেয়ার থেকে নিয়ে গায়ে জড়িয়ে নিলো।
ঝিলের থেকে খানিক টা দূরত্ব রেখেই ডাকতে লাগল
_ মিস ঝিল, সকাল হয়ে গেছে উঠে পরুন।
আর ও কয়েকবার ডাকার পর ও ঝিল উঠলো না। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে ওহ। উপায় না পেয়ে অভিনব ঝিলের বাহু তে ধাক্কা দিলো।
ঝিল পিট পিট করে তাকাতে তাকাতে বলল
_ ভাইয়া পাপা কতোবার বলেছি আমি ঘুমালে তোমরা কেউ আমাকে ডাকবে না।
অভিনবর সড়ু চোখ টা কুঁচকে গেল। নিজের মস্তিষ্ক কে ঠান্ডা করে আবার ডাকল
_ মিস ঝিল আমি অভিনব।
অভিনব কথাটা ঝিলের কানে পৌছাতেই ধুরমুরিয়ে উঠলো ঝিল।
ভয়ার্ত কন্ঠের সাথে স্পষ্ট রাগ নিয়ে বলল
_ আপনি , আপনি আমার কাছে আসছেন কেন ?
আমি কিন্তু নিজেকে শেষ করে দিবো।
ঝিলের কথাতে অভিনব বোকা বনে গেল। কি বলছে কি মেয়েটা ?
ঝিল নিজেকে ঠিক করতে ব্যস্ত। অভিনব ফোঁস করে শ্বাস ফেলে বলল
_ আপনি প্লিজ ভয় পাবেন না। সকাল হয়ে গেছে তাই ডেকে তুললাম।
আন্টি নাস্তা করার জন্য ডাকছেন। তাড়াতাড়ি ফ্রেস হয়ে আসুন , আমাদের বেরোতে হবে।
ঝিল কোনো কথা বলল না। তবে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল যা অভিনব স্পষ্ট দেখতে পেল। মাথা নিচু করে ওয়াসরুমের দিকে পা বাড়ালো।
বাসায় গিয়ে আজ তুলকালাম করবে।
ওর বিয়ের ভুত টা সবার মাথা থেকে বের করেই ছাড়বে হুহ।
*
নাস্তা খেয়ে সবাই কে বিদায় জানিয়ে বের হচ্ছিলো অভিনব আর ঝিল।
ভদ্র মহিলা এগিয়ে এসে অভিনব আর ঝিল কে দোয়া করলেন।
ঝিল আলতো হেসে কৃতঙ্গতা জানালো।
ভদ্র লোক ওদের কিছু টা এগিয়ে দিয়ে গেলেন।
সরু মাটির রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে ওরা। পাখির গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে, ঝিলের মন টা মুহূর্তেই ভালো হয়ে গেল।
বরাবর ই প্রকৃতির প্রতি ঝোক বেশি ওর। কিছুদূর হেটে আসতেই একটা চায়ের দোকান দেখতে পেল।
অভিনব গলা ঝেরে বলল
_ চা খাবেন ?
ঝিল ফুরফুরে মেজাজে মাথা ঝাঁকালো । একটা বেঞ্চে তে বসলো ওরা , দোকান দার দুটো চা দিয়ে গেলেন।
মাটির খোড়ায় চুমুক দিতেই শরীরে অদ্ভুত ভাবে শিহরন জেগে উঠলো।
গরমের মাঝে ও চা টা এতো ভালো লাগবে তা ভাবতে পারে নি অভিনব। কুমিল্লা নাকি রসমালাই এর জন্য বিখ্যাত। এর আগে দু বার বিডি তে আসলে ও কুমিল্লার রসমালাই খাওয়া হয় নি। কিন্তু এবার খাবে বলে ঠিক করলো।
এক হাতে চায়ের খোঁড়া আর অন্য হাতে ফোন নিয়ে ব্যস্ত অভিনব।
চা খেতে খেতে আড়চোখে তাকাচ্ছে ঝিল। কিছুটা রোদ্দুর এসে অভিনবর মুখে পরেছে যার দরুন মুখ টা চিক চিক করছে।
ঝিল চোখ সরিয়ে নিলো। অভিনব নেটওয়ার্ক পাওয়ার চেষ্টা করছে কিন্তু বার বার ব্যর্থ হচ্ছে ।
দোকান দার বেশ অনেকক্ষণ ধরেই পর্যবেক্ষন করছিলো অভিনব কে।
বিদেশী দের মতো দেখতে বলেই হয়তো।
অভিনবর চোখে মুখে বিরক্তির ছাঁপ দেখেই দোকান দার প্রশ্ন ছুঁড়লো
_ স্যার কিছু খুঁজতেছেন মনে ওয় ?
অভিনব ফোনে দৃষ্টি রেখেই বলল
_ নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না। কাল রাত থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।
দোকানার স্মিত হেসে বললেন
_ পাইবেন কেমনে দুদিন আগের বৃষ্টি তে ট্রাওয়ার এর সমস্যা হইছে।
ট্রাওয়ার অফিসে খবর পাঠাইছে কিন্তু কোনো কাম ই ওয় না।
অভিনব ভ্রু কুঁচকে তাকালো। বিডি তে এখনো এই রকম সমস্যা আছে ভাবতে পারে নি ওহহ।
চা খেয়ে বিল দিয়ে পাশে তাকাতেই অবাক হলো ।
ঝিল তো তার পাশেই ছিলো কিন্তু এখন নেই।
অভিনব দ্রুত উঠে গিয়ে চারপাশে চোখ বুলালো। কিন্তু ঝিল কে দেখতে পেল না।
চিৎকার করে ডাকতে লাগলো
_ মিস ঝিল কোথায় আপনি ?
ঝিলের সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। কোনো ছবি ও নেই যে আশে পাশের কাউকে দেখাবে।
অভিনব চার পাশে পাগলের মতো খুজতে লাগলো। বরাবর ই ওহ ওর রেসপনসিবিলিটি খুব সুন্দর করে কমপ্লিট করে।
মেয়েটার যদি কিছু হয়ে যায় ভাবতেই অভিনবর মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
পাশেই নদী, অভিনব নদীর ধার ধরে চিৎকার করতে লাগলো।
কিছুদূর যেতেই চোখ দুটো শান্ত হয়ে গেল।কিন্তু মুহুর্তেই প্রচন্ড রাগ হলো ওর। একটা ঝোপের কাছে দাঁড়িয়ে কি যেন করছে ঝিল। ব্যস্ত পায়ে হেঁটে ঝিল কে এক ধমক দিয়ে বলল
_ আপনার কোনো ধারনা আছে ?
কোনো জ্ঞান ই নেই দেখছি। আমাকে না বলেই এখানে চলে এসেছেন। ইউ নো আমার মাথায় কতো রকমের চিন্তা হচ্ছিলো।
ঝিলের মুখ টা ছোট হয়ে গেল। সামান্য রাগ নিয়ে বলল
_ আপনার কোনো ধারনা আছে আপনি আমার কতো বড় ক্ষতি করে দিলেন।
অভিনব ভ্যবলার মতো তাকিয়ে রইলো। কাল রাত থেকে সাহায্য করে যাচ্ছে ওহহ আর এই মেয়ে বলে কি ?
কোমরে হাত গুঁজে দিয়ে মুখে বিরক্তি ফুটিয়ে বলল
_ আমি আপনার কি ক্ষতি করলাম ?
ঝিল নাক টেনে বলল
_ আপনার জন্য প্রজাপতি টা চলে গেছে। এমন ভাবে ধমক দিয়েছেন যে ওহহ চলে গেল।
সেই কখন থেকে ফলো করে আসলাম আর আপনি কি না
ঝিল কে থামিয়ে দিয়ে অভিনব বলল
_ ওয়েট ওয়েট তার মানে আপনি একটা প্রজাপতির পেছনে পেছনে এখানে চলে এসেছেন ?
মাই গড , আপনার দেখছি কোনো ম্যানার্স ই নেই।
ঝিল মুখ টা বাঁকিয়ে নিলো। অভিনব লম্বা দম ফেলে বলল
_ কাম উইথ মি। এমনিতেই অনেক টা লেট করিয়েছিন।
ঝিল বির বির করতে করতে অভিনবর সাথে গেল।
অভিনব সামান্য চিন্তায় পরে গেল। কাল রাতে গাড়ি টা ফেলেই চলে এসেছে । কে জানে গাড়ি টা আছে নাকি নেই।
তপ্ত শ্বাস ফেলল, ফোন টা ও এখন কাজে আসবে না।
কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে বড় সড়কে চলে এসেছে ওরা। নদীর ধার থেকে এখন অব্দি একটা কথা ও বলে নি কেউ। অভিনব প্রকৃতি প্রেমি হওয়াতে চারপাশে চোখ বুলাচ্ছে। আর ঝিল একটা চকলেট খাচ্ছে। গাড়ির কাছে আসতেই দেখলো মানুষের লম্বা ভীর লেগে গেছে।
অভিনব একটু উঁচু গলাতে বলল
_ আপনারা একটু সাইট হোন প্লিজ। এটা আমার গাড়ি , কাল কে একটা বিপদে পরে গাড়ি এখানে রেখেই গ্রামে চলে গিয়েছিলাম।
অভিনবের কন্ঠে সবাই এক যোগে তাকালো। গ্রামের কয়েক জন ও আছে বোধহয় । তারা কানাঘুষো করতে লাগলো এরাই বোধহয় যাদের কাল সবাই ধরে বিয়ে দিয়েছে। কেউ কেউ কটু উক্তি ও করলো।
অভিনব সরু চোখে তাকালো। এদের মানসিকতার প্রশংসা না করে থাকা যায় না। মানুষ মানুষকে সাহায্য ও করতে পারবে নাহ।
কেউ কেউ বাজে নজরে ঝিলের দিকে তাকাচ্ছে। ঝিল চকলেট খেতে ব্যস্ত , অভিনবর চোখে মুখে রাগ ফুটে উঠলো।আজ কাল যুগে এসে ও মানুষ খারাপ দৃষ্টি ছাড়ছে না , হয়তো কোনো দিন ও ছাড়বে না।
ঝিলের হাত টা শক্ত করে ধরলো অভিনব।
ঝিলের হাতে থাকা চকলেট টা পরে গেল।বিরক্তি তে ভরে উঠলো ওর মুখ। ঝিল কে এক প্রকার টেনেই গাড়ি তে বসালো ওহহ।
গাড়ির স্টিয়ারিং এ হাত দিয়ে ধোঁয়া উঠিয়ে গাড়ি নিয়ে চলে গেল অভিনব।
অভিনবর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে ঝিল।
অভিনবর চোয়াল শক্ত হয়ে গেছে। বাজে মানুষ গুলোর বাজে দৃষ্টি ঝিল কে অবলোকন করছিলো।
আর এই মেয়েটা নাকি বাচ্চা দের মতো চকলেট খাওয়ায় ব্যস্ত।
কড়া কন্ঠে ঝিল বলল
_ আমাকে টাচ করতে বারন করেছিলাম নাহ ?
টাচ করলেন কেন আমায় ?
আমার চকলেট টা ও ফেলে দিলেন। একটা মাত্র ই চকলেট ছিলো আমার।
অভিনবর কোনো প্রতিক্রিয়া না পেয়ে ঝিল রেগে গেল।
ক্রোধ মেশানো কন্ঠে গরগর করে বলল
_ সাহায্য করেছেন বলে এমন নয় মাথা কিনে নিয়েছেন। আপনি আমার চকলেট টা ফেলে দিলেন আবার প্রজাপতি টাকে উরিয়ে দিলেন।
কতো সুন্দর ধূসর রঙের প্রজাপতি ছিলো। এই যে আপনার ধূসর শার্টের থেকে ও অনেক সুন্দর।
অভিনব বিরক্ত হতে লাগলো। মেয়েটা প্রচুর কথা বলছে। কাল রাতে তো একটা রা ও ফুটছিলো নাহহ।
ঝিল বকবক করে অভিযোগ করেই যাচ্ছে। অভিনব হঠাৎ করেই ব্রেক কষলো। হঠাৎ এতো জোরে ব্রেক কষাতে ঝুকে গিয়ে পরলো ঝিল । একটুর জন্য মাথায় লাগে নি।
অভিনব গাড়ি থেকে নেমে গেল। ঝিল ভ্রু কুঁচকে নিলো, আশে পাশে তাকিয়ে দেখলো নির্জন ফাঁকা রাস্তা। ঝিল ফাঁকা ঢোক গিলল , অভিনব সম্পর্কে নানা ভাবনা ফুটে উঠলো।
ব্যাগ থেকে একটা সেফটি পিন বের করে রাখলো। কাছে আসতে চাইলেই পেটে ঢুকিয়ে পালাবে।
এক মিনিট পরে অভিনব আসলো। গাড়ির দরজা খুলে সামনে হাত বাড়াতেই অভিনবর হাতে ঝিল সুচ ফুটিয়ে দিলো।
অভিনব ব্যাথা পেয়ে হালকা আহহ করে উঠলো।
ঝিল গাড়ি থেকে নেমে পালাতে লাগলো। অভিনব হাত চেপে ধরে ঝিলের পেছনে দৌড়াতে লাগল। অভিনব কে দৌড়াতে দেখে ঝিলের আত্মা কেঁপে উঠলো।
মুহূর্তেই ঝিল কে ধরে ফেলল অভিনব।
ঝিল নিজেকে ছাড়াতে চেষ্টা করলো। সেফটি পিন টা ও নেই সাথে , এখন কি হবে ?
ঝিল কে টানতে টানতে গাড়ির কাছে এনে ছেড়ে দিলো অভিনব।
চোখে মুখে অসম্ভব রাগ ফুটে উঠেছে। ঝিলের হাত টা জোরে চেপে ধরাতে লাল হয়ে গেছে। অভিনব ধমকে বলল
_ স্টুপিট গাল এভাবে দৌড়াচ্ছিলেন কেন ?
আর আমার হাতে পিন পুস ই বা করলেন কেন ?
ঝিল একটু দূরে সরে বলল
_ দেখুন আপনি আমার সাথে উল্টা পাল্টা কিছু করতে চাইলে আমি রাস্তার ধার থেকে লাফিয়ে মরে যাবো।
অভিনব নাক মুখ কুঁচকে বলল
_ হোয়াট ?
আপনার মাথা ঠিক আছে ? আপনি এখনো আমাকে অবিশ্বাস করছেন।
হোয়াট আ জোঁক । আমি আপনাকে বাঁচালাম আর সেই আপনি ই।
তাচ্ছিল্য হাসলো অভিনব। ঝিল সামান্য ভরকে গিয়ে বলল
_ আপনি ই তো তখন আমার দিকে হাত বাড়াচ্ছিলেন।
অভিনব মুখ গোমড়া করে বলল
_ আপনি না দেখেই একটা বাজে কাজ করে ফেললেন।
ঝিল প্রশ্নবোধক দৃষ্টি তে তাকিয়ে রইলো। অভিনব কোর্টের পকেট থেকে একটা ছোট বক্স বের করে বলল
_ এটা দেওয়ার জন্য ই আপনার দিকে হাত বাড়িয়েছিলাম।
ঝিল অবাক চোখে তাকিয়ে বলল
_ এটা কিহ ?
_ চকলেট।
_ চকলেট।
_ হুমম আপনি যেভাবে আমাকে চকলেট নিয়ে অভিযোগ করছিলেন।
তাই আমার গাড়ির ডিকি খুলে চকলেট নিয়ে আসলাম।
আমার কাছে কয়েকটা চকলেট ছিলো। মূলত বিডির বাচ্চাদের জন্য ই নিয়ে এসেছিলাম। আর ভাগ্য ক্রমে আমার সাথেই একজন বাচ্চা পেয়ে গেলাম। নিননন আপনার চকলেট।
শেষের কথা গুলো অভিনব রসিকতার ছলেই বলল। ঝিল লজ্জা পেয়ে গেল , অনুনয়ের স্বরে বলল
_ সরি।
_ ফরমালিটিস করতে হবে না। যা হবার তা হয়েই গেছে , এখন চকলেট টা নিয়ে তাড়াতাড়ি, গাড়ি তে আসুন।
ঝিল মাথা নিচু করে চলকেট টা নিলো। তারপর গাড়িতে উঠে বসলো। গাড়ি স্টার্ট দিতেই সা সা করে বাতাস এসে এলোমেলো করে দিলো ঝিলের চুল।
অভিনব এক পলক তাকিয়ে হাসলো। না বালিকা মেয়ে হলে ও বাচ্চা নয় ঝিল। তবে চকলেটের প্রতি ঝোক দেখে মনে হয় ছয় বছরের কোনো বাচ্চা।
চকলেটের বক্স টা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছে ঝিল। চকলেট টা বেশ দামী , তবে এই চকলেট টা কখনো খাই নি ওহ।
ওর বাবা কাকা রা বিভিন্ন দেশ থেকে চকলেট এনে দেয় ওকে কিন্তু এটা কখনো এনে দেয় নি।
এই নিয়ে ও মনে মনে অভিযোগ কষলো ওহহ। বাসায় গিয়ে সবাই কে অভিযোগ করবে কেন এই রকম চকলেট ওকে এনে দেয় নি।
বেশ কিছুক্ষণ নাড়াচাড়া করে চকলেট বক্স টা খুললো ওহ ।
চকলেট টা দেখেই চোখ দুটো গোল গোল হয়ে গেল। এতো এতো সেপের চকলেট খেয়েছে ওহহ কিন্ত রোজ সেপের চকলেট কখনোই খায় নি।
আনমনেই অভিনব কে প্রশ্ন করে ফেলল
_ এই চকলেট টা খুব রেয়ার নাহহ ?
অভিনব স্টিয়ারিং এ হাত রেখেই বলল
_ হুমম , তবে এটা খুব ভালো ওহ , আর লো ফ্যাট এটাতে।
মাঝে মাঝে আমি ও খেতাম তবে আজকাল খাওয়া হচ্ছে না।
অভিনবের উত্তরে আর কিছু বলল না ঝিল । চকলেট টার এক কোনা মুখে দিতেই সাড়া শরীরে শির শির করে উঠলো। ঠান্ডা ঠান্ডা একটা লেয়ার ভেতরে । চকলেট টা খেতে অসাধারণ লাগছে।
একশ পঞ্চাশ গ্রামের চকলেট টা নিমেষেই শেষ করে দিলো ওহহহ।
অভিনব সে দিকে তাকালো ওহ না। ওর দায়িত্ব এখন মেয়েটা কে সেফলি পৌছে দেওয়া।
কুমিল্লা সদরে এসে গাড়ি থামালো অভিনব। ঝিল বাইরের দিকে তাকিয়ে উপভোগ করছে সব।
ব্রেক কষাতে ঘুরে তাকালো , অভিনব হালকাভাবে বলল
_ গাড়িতে থাকুন আপনি, আমি এই স্টোর থেকেই রসমালাই নিয়ে আসছি।
এখানের রসমালাই নাকি বিখ্যাত।
ঝিল হালকা হেসে সম্মতি জানালো। কাল রাতে যখন বাস থেকে নেমে দৌড়াচ্ছিল তখন ভেবেছিল ওর ক্ষতি হয়ে যাবে।
কিন্তু সৃষ্টিকর্তার রহমতে বেঁচে গেছে ওহহ। এবার থেকে সব ধরনের সেফটি শিখে রাখবে ওহহ।
বছরে কতো বার বাসা থেকে পালাতে হবে কে জানে।
এর আগে ও তিন বার পালিয়েছে। তপ্ত শ্বাস ফেলল ওহহহ , কথায় আছে অতিরিক্ত ভালোবাসা ঠিক না।
ঝিল হারে হারে টের পাচ্ছে পরিবারের অতিরিক্ত ভালোবাসা।
এবার যদি মাস খানেকের মাঝে কেউ বিয়ের কথা বলে তো ঘরে নিজেকে বন্দি করে রাখবে হুহহ।
চলবে