#মনোপ্যাথি
#পর্ব:৭
#অরিত্রিকা_আহানা
একটুপর মা আর আপু ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়লো।নাফিস ভাইয়েরা আসার সময় হয়ে এসেছে।আমি চুপচাপ বিছানার ওপর বসে আছি।এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে বড় অসহায় মনে হয়েছে।কি করবো বুঝতে পারছি না।যাইহোক মনে ভরসা রাখলাম এই ভেবে যে দেখতে এলেই তো আর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে না।
ভাগ্যের করুণ পরিহাস দেখে আপন মনেই হাসছি।যাকে আমার ধ্যান জ্ঞান সমস্ত সত্তা দিয়ে ভালোবেসেছি সে কি না আমার জন্য পাত্র দেখতে এসেছে?এরকম পরিস্থিতিতে কারো মাথা ঠিক থাকতে পারে কি না আমি জানি না।তবে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করলাম স্বাভাবিক থাকার। তারপরও মাথায় অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে।
সন্ধ্যে সাড়ে সাতটার দিকে নাফিস ভাইয়ারা এসে ভেতরে ঢুকলো।আমি ভেতরের রুমে বসে আছি।আপু এসে আমাকে খবর দিলো যে ওরা এসে পড়েছে।একটুপর আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো ওদের সামনে।
ভেবেছিলাম পাত্রপক্ষের সামনে যাবো না।কিন্তু না গেলে বাবার অসম্মান হবে।তাই বাধ্য হয়ে আমাকে যেতে হলো।
ওখানে গিয়ে দেখলাম ইনায়াজ ভাই বাবার পাশে সোফাতে বসে আছে।পরনে কালো একটা টি-শার্ট আর সাদা ট্রাউজার।হাতে বরাবরের মত ঘড়ি!ড্যাশিং লাগছে!দুপুরের পর আর উনাকে দেখি নি।অবশ্য আমিই বের হই নি ঘর থেকে।ইমতিয়াজ ভাইয়া আমাকে সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো।
নাফিস ভাইয়ের মা আমাকে ডেকে উনার পাশে বসালেন।আমি যেদিকটাতে বসেছি ইনায়াজ ভাই আমার ঠিক মুখোমুখি।আমার দিকে একপলক তাকালেন।তারপর ফোন নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন।
নাফিস ভাইয়ের মা আমাকে টুকটাক প্রশ্ন করে আমাকে আর নাফিস ভাইকে আলাদা করে কথা বলার জন্য পাঠিয়ে দিলেন।আপু আমাকে আর নাফিস ভাইয়াকে আমার ঘরে নিয়ে এসে বাইরে থেকে দরজা হালকা ভেজিয়ে দিলো।
দুজনেই নিশ্চুপ।কেউ কোন কথা বলছি না।আমি একমনে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছি। নিরবতা ভেঙ্গে নাফিস ভাই আমতা আমতা করে জিজ্ঞেস করলেন,”কেমন আছো?”
– “ভালো।”
উনি আরো অনেক কিছুই জিজ্ঞেস করলেন উনার সব কথারই সংক্ষেপে জবাব দিলাম।
হঠাৎ উনি অসহায় কন্ঠে আমার নাম ধরে ডাক দিলেন।আমি জবাব দিলাম না।বললেন,”তুমি জানো আজকে কয়মাস আমি ঠিকমত ঘুমোতে পারি না?চোখবন্ধ করলেই তোমার মুখটা ভেসে ওঠে!”
আমি উনার দিকে তাকালাম।নাফিস ভাই বাস্তবিকই বেশ শুকিয়ে গেছে।আগের মত ফিট বডি নেই।রোগারোগা চেহারা।চোখ বসে গেছে।চোখের নিচে অনিদ্রার ছাপ!
উনি আমার চোখে চোখ রেখে বললেন,”আর হ্যাঁ সেদিনের জন্য আমি ভীষণ অনুতপ্ত তনু! মন থেকে ক্ষমা চাইছি।তুমি চাইলে আমাকে যেকোন শাস্তি দিতে পারো,আমি সব মাথা পেতে নিবো।চাইলে ইমতিয়াজ কিংবা ভাবী সবাইকে জানাতে পারো তাদের যে কোন শাস্তি আমি মাথা পেতে নিতে রাজী আছি।কিন্তু একটাই অনুরোধ,সেদিনের অপরাধে আমাকে ফিরিয়ে দিও না প্লিজ।আমি সহ্য করতে পারবো না।” উনার চোখভর্তি পানি টলমল করছিলো।আমি বুঝতে পারছিলাম না কি করবো।নিজেকে বড্ড অসহায় লাগছে।ভালোবাসার যন্ত্রনা আমি বুঝি।নাফিস ভাইতো উনার মনের কথাগুলো আমাকে বলে দিলেন কিন্তু আমি কাকে বলবো?
উনি কাঁপাকাঁপা গলায় বললেন,”আমি কি তোমার হাতটা একটু ধরতে পারি?”
আমি উনার এমন প্রশ্ন শুনে রীতিমত চমকে উঠলাম।
আমার রিয়েকশন দেখে উনি লজ্জা এবং অনুশোচনা মিশ্রিত কন্ঠে বললেন,”ভয় পাচ্ছো কেন? আমি অতটাও খারাপ নই।তোমার পারমিশন ছাড়া তোমাকে টাচ করবো।আসলে তোমার হাত ধরতে খুব ইচ্ছে করছিলো।সরি! আমার এভাবে তোমার হাত ধরতে চাওয়াটা ঠিক হয় নি।”
আপু এসে বাইরে থেকে জিজ্ঞেস করলো
আমাদের শেষ হলো কি না?
নাফিস ভাই আর কথা বাড়ালেন না শুধু বললেন,”তোমার উত্তরের অপেক্ষায় থাকবো।” তারপর মলিন একটা হাসি দিয়ে বেরিয়ে গেলো।
আমি বোকার মত ওখানেই দাঁড়িয়ে আছি।উনার ওপর রাগ করে থাকতে পারলাম না।একটা জিনিস আমি জানি,.. অনুশোচনা সবচেয়ে বড় শাস্তি এবং উনি সেটা পাচ্ছেন।
কিন্তু আমার পক্ষে উনাকে বিয়ে করাটাও অসম্ভব!কথাটা উনাকে বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না।আমি এমনই ছোটবেলা থেকেই কারোর মুখের ওপর না বলতে পারি নি,নিজের প্রিয় জিনিসটা কারো কাছে চেয়ে নিতে পারি নি।ইগোতে লাগে!সবকিছু নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দে থাকি।
তবে একটা ব্যাপারে আমি কখনো দ্বিধাহীনতায় ভুগি নি।সেটা হচ্ছে ইনায়াজ ভাইয়ের প্রতি ভালোবাসা।
উনারা চলে যাওয়ার একটু পর ইমুও চলে গেলো।বাবার টেলিফোন পেয়ে সে পরীক্ষা ফেলে চলে এসেছে।কালকে পরীক্ষা দিয়ে হয়ত আবার আসবে বললো।
রাতের বেলা সবাই মিলে আবার মিটিংয়ে বসলো।আমি চুপচাপ আমার রুমে বসে আছি।মাথায় অসহ্য যন্ত্রনা হচ্ছে।কপালের রগগুলো ছিঁড়ে যাবে মনে হচ্ছে।নিশ্বাসেও সমস্যা মনে হচ্ছে।কাউকে কিছু জানালাম না।
আপু এসে জানালো নাফিস ভাইয়ের মা ফোন জানিয়ে উনাদের মেয়ে পছন্দ হয়েছে।ভীষণ খুশি লাগছে ওকে।আমার বুকের ভেতটায় ছ্যাৎ করে উঠলো।অস্বাভাবিক মাত্রায় ধুকপুক ধুকপুক করা শুরু করে দিলো।হৃদস্পন্দন বেড়ে যাচ্ছে আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি। আপুকে বলতে চাইছি যে আমার কষ্ট হচ্ছে কিন্তু আমার মুখ দিয়ে কোন কথা বেরোচ্ছে না।
আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি আপু আমাকে জিজ্ঞেস করছে,”এই তনু?তোর কি খারাপ লাগছে নাকি?তনু?..তনু??..মা!..ইমতিয়াজ ..বাবা??”
আপু কথা আমার কানে আসছে কিন্তু আমি কোন উত্তর করতে পারলাম না তার আগেই জ্ঞান হারালাম।আপুর চিৎকার শুনেই পাশের ঘর থেকে সবাই দৌড়ে আসলো।
জ্ঞান ফিরলে দেখলাম ইনায়াজ ভাই আমার পালস চেক করছেন।উনাকে এতটা কাছ থেকে আগে কখনো দেখিনি।আজকেই প্রথম এত কাছ থেকে দেখলাম।কি সুন্দর শান্ত,স্নিগ্ধ মুখ!
আমি তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিলাম।এবার আর লজ্জায় নয়,অভিমানে।
যদিও আমি জানি উনি এসবের কিছুই জানেন না তবুও অনেক অভিমান হলো উনার ওপর।
বিছানার একপাশে বাবা অন্য পাশে আপু বসে আছে।ইমতিয়াজ ভাইয়া একটা চেয়ারের ওপর বসে আছে।
আমার জ্ঞান ফিরুলে বাবা গিয়ে মাকে গিয়ে খবর দিলেন।একটুপর মাও এসে আমার পাশে বসলো।মায়ের চোখমুখ ফুলে আছে।আমি জানি,মা এতক্ষণ পাশের ঘরে নামাজ পড়ছিলো।ছোটবেলা থেকেই দেখেছি আমরা ভাইবোনরা কেউ অসুস্থ হলে মা নফল নামাজ পড়তো,এখনো তাই করেন।আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে জিজ্ঞেস করলেন,”এখন কেমন লাগছে মা?”
আমি কিছু বলার আগেই ইনায়াজ ভাই বললো,”আন্টি ওকে আগে কিছু খাইয়ে দিন।শরীর ভীষণ দুর্বল।উইকনেস থেকে এমন হচ্ছে!”
উনার কথা শুনেই মা আপুকে সঙ্গে নিয়ে তড়িঘড়ি করে বেরিয়ে গেলেন।
এদিকে কষ্টে আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে।ইচ্ছে করলো লজ্জা,ভয়,অভিমান সব দূরে ঠেলে দিয়ে বলি,”মিথ্যে কথা!ওসব উইকনেস টুইকনেস কিচ্ছু না আপনার জন্য আমার এই অবস্থা।আপনি আমার সর্বনাশ করছেন।”কিন্তু পারলাম না।
রুদ্র গোস্বামী একটা কথা মনে পড়ে গেলো, “একতরফা ভালোবাসা গুলোর এই এক অদ্ভুত নিয়ম, একদিন সে একটা লাট খাওয়া হাওয়ার মত এসে ছোঁ করে ছুঁয়ে যাবে, আর যাকে ছোঁবে তাকে এমন ভিকিরি করে দিয়ে যাবে একজন্মে কেন সাত জন্মেও তার সেই অভাব ঘুচবে না।”
নিজেকে ভিকিরির চাইতেও নিঃস্ব মনে হচ্ছে।নাফিস ভাই কে না করবো কীভাবে? উনি তো আশা করে বসে আছেন।
কিন্তু আমার যে উনাকে দেওয়ার মত কিছুই নেই।থাকবেই বা কি করে বুঝজ্ঞান হওয়ার পর থেকেই তো আমার যত হাসি,কান্না,মায়া,মমতা,মান অভিমান সব ইনায়াজ ভাইকে ভালোবাসতেই ব্যয় করে ফেলেছি।
আমার বলতে তো আর কিছুই নেই।
আমি কান্না চেপে রাখতে পারছি না।বুকফেটে কান্না আসছে।
হঠাৎ ইনায়াজ ভাইয়ের ফোনে দেখলাম কল আসলো।উনি উঠে বারান্দায় চলে গেলেন।আমি উনার দিকে চেয়ে আছি।এই মানুষটা কি কোনদিন আমার ভালোবাসাটা বুঝবে না?
ঘড়িতে রাত দুটো বাজে।ইমতিয়াজ ভাইয়ার চোখদুটো লাল হয়ে আছে।তাও আমার পাশে বসে আছে।চোখভর্তি দুশ্চিন্তা!!
আমি বাবাকে চুপিচুপি ডেকে বললাম,”ইমতিয়াজ ভাইয়াকে শুতে পাঠাও নি কেন? এতজন আমার পাশে বসে থাকা লাগবে না।”
বাবা এতক্ষন হুঁশে ছিলো না আমি জানি।আমার কথা শুনে তড়িঘড়ি করে ইমতিয়াজ ভাইয়াকে শুতে যেতে বললেন।
ইমতিয়াজ ভাইয়া আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছেন।আমি উনার দিকে তাকিয়ে হালকা হেসে আশ্বস্ত করলাম,”আমি এখন ঠিক আছি ভাইয়া,আপনি গিয়ে শুয়ে পড়ুন।এতজন আমার পাশে বসে থাকলে সবাই অসুস্থ হয়ে যাবেন।”
আমার আর বাবার জোরাজুরিতে ইমতিয়াজ ভাইয়া উঠে যেতে বাধ্য হলেন।
ইমতিয়াজ ভাইয়া চলে যাওয়ার একটু পরই ইনায়াজ ভাই ভেতরে আসলেন।বাবাকে জানালেন ভাইয়া আসছে।নাইটকোচে উঠেছে।কাছাকাছিই চলে এসেছে আর বোধহয় ঘন্টা দুয়েক লাগতে পারে।ইনায়াজ ভাই ইমতিয়াজ ভাইয়া যেই চেয়ারটায় বসে ছিলো সেটাতে বসলেন।আমি ভালো করে ইনায়াজ ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম উনার মুখটা বেশ শুকনো লাগছে।আমার জন্য উনাকে আর কষ্ট দিতে চাইলাম না।
বাবাকে বললাম,”আমি ঘুমাবো!তোমরাও শুতে যাও।”
আমার কথা না শেষ হতেই মা আপুকে নিয়ে ভেতরে ঢুকলেন।হাতে স্যুপ,আমার কথা শুনেই আপু বললো,”আগে একটুখানি খেয়ে নে।তারপর শুবি।” আমি না করে দিলাম কিন্তু ওরা শুনলো না।
ইনায়াজ ভাই এখনো চেয়ারে বসে আছেন।ডাক্তার মানুষ রোগী ঠিক আছে কি না নিশ্চিত না হয়ে হয়ত যেতে পারছেন না।আপু আমাকে জোর করে প্রায় অনেকখানি স্যুপই খাইয়ে দিলো।
খাওয়া শেষ হতেই ইনায়াজ ভাই উঠে এসে আমার কপালে হাত দিয়ে জ্বর আছে কি না চেক করলেন।আমার খালি বারবার মনে হচ্ছে আমি স্বপ্ন দেখছি।যেই মানুষটাকে নিয়ে এত আকাঙ্ক্ষা এত অনুভূতি সেই মানুষটা আজকে আমার এত কাছে ভাবতেই না চাইতেও মন ভালো হয়ে গেলো।বুকের ধুকপুকানি আবার বেড়ে গেলো।
আমি জানি এগুলো হয়ত ডাক্তারি এথিকস এর মধ্যে পড়ে তবুও মন বারবার অন্যকিছু প্রমাণ করতে চায়।
জ্বর আপাতত নেই। ইনায়াজ ভাই আপুকে বললেন,” আর কোন ভয় নেই।ভালোমত ঘুম দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে।”কিন্তু আমি জানি কিচ্ছু ঠিক হবে না।
ইনায়াজ ভাই বেরিয়ে গেলে আপু বললো,”তুই তো আমাদেরকে ভয় পাইয়ে দিয়েছিলি।ভাগ্যিস ইনায়াজ ভাই ছিলো।তা না হলে কি অবস্থা হতো আল্লাহ জানে।একশো চার ডিগ্রি জ্বর ছিলো তোর।সেই সন্ধ্যা থেকে বেহুঁশ ছিলি।উনি একটা সেকেন্ডের জন্যেও তোর পাশ থেকে নড়ে নি।”
আমি আপুর কথার কোন প্রতিউত্তর করলাম না।কারন আমি জানি উনি যা করেছেন আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও তাই করতেন। উনার কোন শত্রুর বেলাতেও উনি ঠিক একই কাজই করতেন।মানুষটা কি ধাতুকে গড়া আল্লাহই জানেন!আমার জীবনে আমি যেই কয়জন ভদ্রলোক দেখেছি তারমধ্যে ইনায়াজ ভাই একজন।আপাদমস্তক ভদ্রলোক উনি! খুবই ঠান্ডা স্বভাবের।তবুও কোথায় যেন একটা দৃঢ়তা আছে।স্পষ্ট ব্যক্তিত্বের ছাপ আছে উনার চেহারায়।তাকালে আর চোখ ফেরাতে ইচ্ছে করে না।মনে হয় যেন দেখেই যাই!!
ভোররাতের দিকেই টের পেলাম কেউ একজন আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।প্রথমে ভাবলাম আপু কিন্তু চোখ খুলে দেখলাম ভাইয়া আমার মাথার পাশে বসে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।স্মিত হেসে বললো,”কি হয়েছে তোর? হঠাৎ সেন্সলেস হয়ে গেলি কেন?ইনায়াজ এর কাছে শুনলাম প্রচন্ড জ্বরও নাকি ছিলো?”
ভাইয়ার পাশে ইনায়াজ ভাই দাঁড়িয়ে আছে।তারমানে উনি এতক্ষন পর্যন্ত জেগে ছিলেন?উনাকে দেখে বেশ ক্লান্ত মনে হচ্ছে।আমি ভাইয়ার কথার জবাবে একটু হাসার চেষ্টা করলাম।
ভাইয়া উদ্বিগ্ন গলায় বললো,”এখন কেমন লাগছে?” আমি ওকে আশ্বস্ত করা জন্য জোর গলায় বললাম,”ভালো।এত টেনশন করার মত কিছু হয় নি।সামান্য জ্বরেই তোমরা তুলকালাম বাধিয়ে দাও!”
-“তোর যা শরীর তুলকালাম না বাধিয়ে উপায় আছে? দিনদিন শুঁটকির মত হয়ে যাচ্ছিস!..কত করে বলি নিয়ম করে খাওয়া দাওয়া করবি তুই শুনিস?”
-“আচ্ছা শুনবো।এখন তুমি বলতো?..তুমি এসেই আমার পাশে বসে গেছো কেন? যাও চেইঞ্জ করো আগে।তারপর হালকা কিছু খেয়ে একটা ঘুম দাও।আমাকে নিয়ে এত চিন্তার কিছু নেই আমি একদম ঠিক আছি।”
ভাইয়া বললো,”ঠিক আছে তুই ঘুমা।কোন সমস্যা হলে ভাইয়াকে ডাক দিবি।ভাইয়ার মনে হয় এখন আর,ঘুম হবে।”
আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বোঝালাম।ভাইয়া ইনায়াজ ভাইকে নিয়ে বেরিয়ে গেলেন।ইনায়াজ ভাই বেরিয়ে যাওয়ার সময় দ্বিতীয়বার আমার কপালে হাত দিয়ে জ্বর আছে কি না চেক করলেন।আমার সমস্ত শরীরে এক অদ্ভুত শিহরণ বয়ে গেলো।উনি স্বাভাবিক ভাবেই বেরিয়ে গেলেন।কিন্তু আমি স্বাভাবিক থাকতে পারলাম না।উনার স্পর্শ সারারাত আমাকে ছুঁয়ে বেড়ালো।