বাসন্তী
পর্ব-২৫
লিমু

—– ” পুষ্পকে এভাবে দৌঁড়িয়ে রুমে যেতে দেখে কলি একটু ঘাবড়ে গেল।
তবে পুষ্পর চোখেমুখে কোন কষ্টের ছাপ পরিলক্ষিত করেনি কলি,যেটা করেছে তা হল লাজুক রাঙ্গা অবয়ব। আর সারা বদন জুরে একটা চাপা খুশির লহর।
কলির কাছে মনে হলো এটা পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্য,অন্তত কলির কাছে।

আজ কতদিন পর কলি ওর বু কে খুশি হতে দেখেছে। খুশিতে ওর চোখে জল টলমল করছে। মাঝে মাঝে এমন হয় না,অপ্রত্যাশিত খুশি হাতে পেলে দিশেহারা লাগে। কলিরও এইমুহুর্তে ঠিক তেমন লাগছে।

-” খুশির চোটে কলি একটা কান্ড করে বসলো। পিছনে ঘুরে হুট করে প্রিয়মকে জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো,”আই অ্যাম সো সো হ্যাপী টুডে। অবশেষে আমার বু’র মুখে হাসি ফুটলো,ওকে এভাবে দেখে আমার যে কি কষ্ট হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল আমার দুনিয়াটা স্তব্দ হয়ে গেছে। আজ ওকে দেখে মনে হচ্ছে, আমার দুনিয়াটা প্রাণ ফিরে পেয়েছে। আই লাভ ইউ সো সো মাচ বু,ইউ আর মাই হার্ট।

কলি একনাগাড়ে কথা বলেই যাচ্ছে,ওর বোধহয় হুঁশও নেই ও কাকে জড়িয়ে ধরে আছে।
আর অন্যদিকে প্রিয়ম তখন থেকে রোবটের মতো স্থির দাঁড়িয়ে আছে। ও নিজেও হয়তো বুঝতে পারছেনা ঠিক কি ঘটছে এইমুহুর্তে বা ওর কি রিয়াকশান দেয়া উচিত। ওর কান দিয়ে মনে হয় ধোঁয়া বের হচ্ছে শা শা করে। ওর যতগুলো গার্লফ্রেন্ড ছিলো,সেগুলো ঘোরাঘুরি, খাওয়া-দাওয়া, হাত ধরা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিল। কখনো কাউকে জড়িয়ে ধরে নি এভাবে,সেই অধিকারটা দেওয়ার মতো কাউকে ভালোবাসতে পারেনি প্রিয়ম।

আর এই ঝগড়ুটে রানী কোন অধিকার ছাড়াই সেই কাজটা করে বসলো!”

এতো সহজে তো তাকে ছাড় দেয়া যাবে না। এর প্রাপ্য লজ্জা তো তাকে দিয়েই ছাড়বো এখন আমি। প্রিয়ম গলা খাঁকাড়ি দিয়ে বললো,” এক্সকিউজ মি ম্যাম,এটা আমার স্পেশাল মানুষের জন্য সংরক্ষিত জায়গা,কোন পাবলিক প্রোপার্টি নয় যে, যে কেউ দখল করবে।

-” এটা শুনে কলি এমনভাবে ছিটকে সরে গেল যে,মনে হয় এতোক্ষণ ও কারেন্টের শক খেয়ে আটকে ছিল। কলি এটা কি করে করলো, লজ্জায় ওর এই মেঘের দেশের মেঘেদের সাথে ভেসে যেতে মন চাচ্ছে। এমন জঘন্য একটা কাজ কলি কি করে করতে পারলো,ছিহ কলি,ছিহ!”
কলি লজ্জায় প্রিয়মের দিকে তাকাতেও পারছেনা,আবার এ জায়গা থেকে যে নড়বে সেটাও পারছেনা। মনে হচ্ছে ওর পা দুটো মাটিতে কিছুর সাথে আটকে আছে। ও চাইলেও নড়তে পারবেনা। কি করবে এখন কলি?
এই ব্যাটা তো এখন কলিকে ইচ্ছামত পঁচাবে,এর আগে কলি বধির হয়ে গেল না কেন,তাহলে তো কিছু শুনতে পেতো না। কলি ঠোট কামড়ে ধরে মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে আছে।
আর সেটা দেখে প্রিয়মের বেশ লাগছে। কলিকে আরেকটু ক্ষেপানোর জন্য বললো, “আচ্ছা শোনো, মানলাম তুমি তোমার বোনকে খুব ভালোবাস,তাই বলে কি সে তোমার হার্ট?”

– ” কলি মনে হয় কথাটার মানে ঠিক বুঝতে পারলনা,তাই ভ্রু কিঞ্চিত বাঁকা করে প্রিয়মের চোখের দিকে তাকালো জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে।

-” প্রিয়ম কলির দৃষ্টির মানে অনুসরণ করেই বলতে লাগলো,” এই ধরো তোমার বোনই যদি তোমার হার্ট হয়ে যায়,তাহলে অন্য কেউ কি হবে?

-” লিভার,না কি কিডনি!”

-” হুট করেই মনে হলো কলির মাথায় দপ করে আগুন জ্বলে উঠলো,এতোটা অসভ্য কেউ কি করে হয়!”

কলি রাগে কটমট করে তাকালো প্রিয়মের দিকে,আর প্রিয়ম কলির রাগটাকে চূড়ান্ত বাড়াতে কলিকে চোখ মারলো।
প্রিয়মের এমন কাজে কলি আরো তেলেবেগুনে জ্বলে উঠলো,আশেপাশে তাকিয়ে কি যেন খুঁজতে লাগলো। প্রিয়ম ঠিক বুঝতে পারলনা এই মেয়ে কি করতে চাইছে।

-” কলি এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু খুঁজে না পেয়ে মাটি থেকে কতগুলো শুকনা পাতা কুঁড়িয়ে নিয়ে প্রিয়মের গায়ে ছুড়ে মারলো। আর এক সেকেন্ডও সেখানে দাঁড়ালো না। মাথার কুঁকড়া চুলগুলো একটা নাড়া দেয়ার ব্যার্থ চেষ্টা করলো যাওয়ার আগে,কারন কুঁকড়া চুল তো আর সিলকি চুলের মতো এতোটা নড়ে না।
আর প্রিয়ম ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে নাক মুখ থেকে শুকনা পাতা সরাতে লাগলো।
আর মনে মনে বললো, ” সাইন্স পড়ে পড়ে এই মেয়ের মাথা পুরোটা গেছে। তা না হলে এমন উদ্ভট কাজ কেউ করে?”

অবশ্য তিনার তো সব কাজই উদ্ভট,ঐদিন কফি ছুড়লো, আজকে শুকনা পাতা। এই মেয়ের সাথে থাকলে সাবধানে থাকতে হবে এখন থেকে,কখন আবার পাহাড় থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। এটা কল্পনা করেই প্রিয়মের গা কেঁপে উঠলো। আর বলে উঠলো,লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা, এই বদ ঝগড়ুটে পেত্নীর থেকে আমাকে রক্ষা করো খোদা।”

– ” ভোর চারটায় কলি পুষ্পকে ডাকতে লাগলো। আর প্রণয় দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। কারন খুব ভোরবেলা ছাড়া সাজেকের মেঘেদের কাছ থেকে দেখা যায় না। ভোরবেলা মনে হয় মেঘগুলো একেবারে গা ঘেষে চলে যায়। যেটার জন্য মূলত সাজেক আসা হয় সবার,সেটাই যদি না দেখতে পারে তাহলে কি লাভ।
কলি পুষ্পকে ডাক দিল,

-” বু উঠো,চারটা বেজে গেছে।”

-” পুষ্প ঘুম ঘুম চোখে বললো, তো কি হয়েছে? আটটা তো আর বাজেনি যে মোর্টিন জ্বালাতে হবে।
-” এটা শুনে কলি জোরে হেসে দিল,বাইরে প্রণয় পর্যন্ত কলির হাসির শব্দ শুনতে পেল। কারন এমন কটকটির মতো হাসি আশেপাশের মানুষও বোধহয় শুনতে পাবে।

কলি পুষ্পকে বললো,”মোর্টিন জ্বালাতে হবে না বু,তবে আমরা এখন মেঘ ধরতে যাবো,উঠো তো। প্রণয় ভাইয়া বাইরে দাঁড়িয়ে আছে অনেক্ষন ধরে। তোমাকে ডাকছি কখন থেকে,কি স্বপ্নে বিড়বিড় করছিলে বলো তো।
প্রণয় বাইরে দাঁড়িয়ে আছে শুনে পুষ্প হুট করে শোঁয়া থেকে উঠে গেল। সেটা দেখে কলি অন্যদিকে মুখ লুকিয়ে মুচকি হাসলো। পুষ্প বললো,

-” বেশি দেরি হয়ে গেছে কি?”

-” নাহ,উঠো তো তাড়াতাড়ি। বেচারা কখন থেকে একা একা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। তার কুম্ভকর্ণ ভাই নাকি ঘুমুচ্ছে,সে আরো দশ মিনিট ঘুমিয়ে পড়ে আসবে। ভোরবেলার দশমিনিট ঘুম মানে বুঝতো? আজকে আর উনার মেঘ দেখতে হবে না,ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্নেই মেঘ দেখুক কুম্ভকর্ণ কোথাকার!”
বেড়াতে এসেছে, নাকি ঘুমাতে কে জানে।
পুষ্প হেসে দিল কলির কথা শুনে। কলিও হাসলো। আজকের ভোরটা অন্যরকম হতে চলেছে নিঃসন্দেহে,কলি সেটা জানে।

একটা প্রফুল্ল হাসি হাসলো কলি,একদম ভেতর থেকে মনখোলা হাসি। কতদিন পর মনে হয় ওর বুকটা একটু হালকা লাগছে। একটা প্রশান্তি অনুভূত হচ্ছে শরীর মন জুরে। কলির এখন একটাই চাওয়া সবকিছু যেন ঠিক থাকে,আর কোন কষ্ট যেন ছুঁতে না পারে ওর বু কে।

-” বাইরে আসতেই প্রণয় একটা মুচকি হাসি দিল ওদের দিকে তাকিয়ে। সেটা দেখে পুষ্প অন্যদিকে মুখ লুকিয়ে হাসলো গতকালের কথা মনে হয়ে। কলি মাঝখানে বোকার মতো দাঁড়িয়ে রইলো। কলির নিজেকে কাবাব মে হাড্ডি মনে হচ্ছে। কলি হঠাৎ বলে উঠলো,উহুম উহুম আমরা কি সামনে যেতে পারি কাইন্ডলি?”

-” প্রণয় বললো,হোয়াই নট ফুলকলি।

-” চলুন তবে ত্রিপলি ভাইয়া।”

কলির মুখে ত্রিপলি নামটা শুনে প্রণয় পুষ্পর দিকে তাকিয়ে আবারও হাসলো।
কলি বললো,চলুনননন না হয় মেঘ উড়ে যাবে সব।
প্রণয় হেসে বললো, ওকে চলেন প্রিন্সেস।
কলিও হেসে সামনে চললো।

-” এখনো ভোরের আলো ফুটেনি। চারদিকে মোটামুটি অন্ধকার। আকাশের দিকে তাকিয়েই কলি উল্লাসে ফেটে পড়লো। ও এতোদিন টিভিতে দেখেছে শুধু, আজ নিজের চোখে দেখছে বিশ্বাসই করতে পারছেনা। ওদের দু বোনেরই অনেক ইচ্ছে ছিল সাজেক দেখার,কিন্তুু চাইলেই তো আর সব ইচ্ছে পূরন করা যায় না। এটা ভেবে কলি একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো। তারপর আবার স্বাভাবিক হয়ে গেল। ভালো মুহুর্তে মন্দ সময়টার কথা ভেবে মন খারাপ করতে নেই। ভালো সময়টাকে উপভোগ করতে হয়। এগুলোই যে জীবনের ভালো স্মৃতি হয়ে থাকে। ছোট্র জীবনে শত কিছুর মাঝেও ভালো থাকতে হয়,থাকতে জানতে হয়। কি হবে দুঃখ জমিয়ে? তারচেয়ে দুঃখগুলোকে ঐ মেঘের সাথে উড়িয়ে দেয়াই ভালো।
তবেই জীবন সুন্দর।
জীবন তখনই সুন্দর হয়,যখন আমরা এটাকে সুন্দরভাবে সাজাতে জানি। হয়তো সব মনমতো হবে না, এটাই স্বাভাবিক। তবুও ভালো থাকতে জানতে হয়। ঠোটের কোণে হাসিটা ধরে রাখতে জানতে হয়। তোমাকে ভালো রাখার চেষ্টাটা, প্রথমে তোমাকেই করতে হবে।
এই সাতশো কোটি মানুষের পৃথিবী,তবু কিছু মানুষ একা,খুব একা। কারন এরা যে নিজেকেই ভালোবাসতে,ভালো রাখতে জানেনা।

আকাশে মেঘের অশান্ত উড়াউড়ি দেখে কলির বেশ লাগছে। মেঘ ধরার চেষ্টা করছে। পুষ্পও কলির সাথে যোগ দিল। দুইবোন মেঘ ধরায় ব্যস্ত। আর প্রণয় তার বাসন্তীকে মনভরে দেখছে।
অনেক্ষন দুই বোন ছুটোছুটি করে ক্লান্ত হয়ে গেল। কলি মাটিতে বসে পড়লো।
পুষ্প তখন চুপ করে চোখ বন্ধ করে মেঘের ঘ্রাণ অনুভব করার চেষ্টা করছে। আচ্ছা মেঘের কি কোন ঘ্রাণ আছে?”

পুষ্পর তা জানা নেই, তবুও সে এই প্রকৃতির ঘ্রাণ, মেঘের, মাটির ঘ্রাণ অনুভব করতে চাইছে। মনে অদ্ভুত প্রশান্তি পাচ্ছে। হঠাৎ পুষ্পর গাল বেয়ে একফুটা জল গড়িয়ে পড়লো, পুষ্পর অজান্তেই।

ঠিক তখনি পুষ্প ওর পেছনে কারো উপস্থিতি অনুভব করলো। পুষ্প চোখ বন্ধ রেখেই বললো,” কে কলি?”

কোন সাড়াশব্দ পেলনা পুষ্প,তবে কারো স্পর্শে শিউড়ে উঠলো। চমকে পেছনে তাকাতে নিলো,কিন্তুু পারলনা।
কারন তার আগেই প্রণয় পুষ্পকে ওর বাহুডোরে আবদ্ধ করলো পেছন থেকেই। পুষ্পর শরীর কাঁপতে লাগলো। কাঁপাকাঁপি দেখে প্রণয় আরো শক্ত করেই জড়িয়ে নিলো পুষ্পকে।
পুষ্প কিছু বলতে চাইছে কিন্তুু কথা গলায় আটকে আসছে। নিঃশ্বাস মনে হয় বন্ধ হয়ে আসছে। তবু পুষ্প মৃদুস্বরে বললো,কি করছো টা কি,কলি দেখছে তো।

-” প্রনয় পুষ্পর কাঁধে মুখ রেখে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বললো,”তোমার কি আমাকে এতোটাই বেহায়া মনে হয়? কলি নেই,রুমে চলে গেছে।

-” পুষ্প একটা স্বস্থির নিঃশ্বাস ফেললো মনে হয়। পরক্ষণেই আবার বললো, তারমানে তুমি ইচ্ছে করেই কলিকে রুমে পাঠিয়েছো,কি অসভ্য তুমি।

-” বাহ,এতে আমি অসভ্য হয়ে গেলাম?”

– ” নাহ,আপনি অসভ্যই।

– ” আবার আপনি কেন? তুমিটাই তো বেশ লাগছিলো।

-” সেজন্যই আপনি। রাগ হলে আমি মানুষকে বেশি সম্মান দিয়ে কথা বলি।

-” মাফ করেন আফা,এতো সম্মানের দরকার নাই। প্রণয়ের এই কথাটা বলার টোন টা শুনে পুষ্পর পেট ফেটে হাসি আসছিল।

-” হঠাৎ প্রণয় পুষ্পর কানের কাছে মুখ নিয়ে আস্তে করে বললো,” আমার বাসন্তী বউ হবে?”

পুষ্প সম্পুর্ণ জমে গেল প্রণয়ের কথায়। ওর দু’চোখ বেয়ে দু’ফোটা নোনাজল গড়িয়ে পড়লো আবার। এটা খুশির অশ্রু,ভালোবাসার অশ্রু। ভালোবাসাকে পাওয়ার অশ্রু। এমন ভালোবাসার কান্না পুষ্প সারাজীবন কাঁদতে চায়।

পুষ্পর চোখের জল গড়িয়ে পরার আগে প্রণয় মুছে দিল আঙ্গুল দিয়ে।
তারপর বললো,”কাঁদছো কাঁদো, বাঁধা দিব না। শুধু কখনো ছেড়ে যাওয়ার কথা বলো না,আমি শূন্য, রিক্ত হয়ে যাবো।
আমার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবো। তুমি আমার অস্তিত্বে মিশে গেছো। আর পেছনের সব ভুলে যাও সব। আমার কিছু যায় আসে না। আমি তোমাকে ভালোবাসি,এটাই সবচেয়ে বড় সত্য। মানুষ কি বলবে,কি ভাববে সেটা তোমার ভাবার দরকার নেই। মানুষ ভাববেই। তুমি শত ভালো হলেও,তোমাকে মানুষের কথা শুনতে হবেই। আমাদের সমাজটাই এমন।
সমাজ ছাড়া আমরা চলতে পারবনা, কিন্তুু তাই বলে সমাজের মানুষের কথা ভেবে নিজের সুখ,খুশি নিশ্চয়ই বিসর্জন দিবো না।
পুষ্প একমনে প্রণয়ের কথা শুনছিল। কি যেন আছে প্রণয়ের কথায়,যা পুষ্পকে সাহস যোগায় শত ভয়ের মাঝেও।
প্রণয় তখনো পুষ্পকে পেছন থেকেই জড়িয়ে রেখেছিল,হঠাৎ প্রণয়কে অবাক করে দিলো পুষ্প। প্রণয়ের কথার মাঝেই পুষ্প বলে উঠলো,” আই লাভ ইউ। ”
প্রণয়ের মনে হলো ও কানে ভুল কিছু শুনেছে। তাই পুষ্পকে জিজ্ঞাস করলো,” আবার বলো কি বললে?”

-” আই লাভ ইউ মিঃ প্রণয় মেহবুব।

-” প্রণয় পুষ্পকে ওর বাহুডোর থেকে আলগা করে দিল হুট করে,যেটা পুষ্পকে অবাক করলো কিঞ্চিত।
পুষ্প পিছনে ঘুরে তাকিয়ে দেখে প্রণয় মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে বসে আছে। আর কি যেন বিড়বিড় করছে। পাগল হয়ে গেল নাকি লোকটা!”

পুষ্প প্রণয়ের সামনে গিয়ে বললো,” আমি কি কোন পাগল হওয়ার মন্ত্র বলেছি? তা না হলে এমন পাগলের মতো আচরণ করছেন কেন, আজব!”

-” প্রণয় মাথা ভাসিয়ে বললো,” পাগল হওয়ার মন্ত্রের চেয়ে কোন অংশে কম কি? কারো কারো পাগল হওয়ার জন্য এ মন্ত্রই যথেষ্ট!”

পুষ্প ধ্যাত বলে চলে যেতে নিলো,প্রণয় পুষ্পর চাদরে হাত রাখলো, সেটা নিচে পড়ে গেল। পুষ্প ঠাঁয় দাঁড়িয়ে রইলো সেখানে। প্রণয় উঠে চাদরটা হাতে নিয়ে পুষ্পর কাছে গেল। তারপর চাদরটা দিয়ে পুষ্পকে আবার জড়িয়ে নিলো। তবে এবার দুজনই একই চাদরের ভেতর। এক অসম্ভব ভালো লাগায় ডুবে যাচ্ছে দুজন,সময়টা এখানে থেমে গেলেই বেশ হতো। একদলা মেঘ এসে ওদের আরো ভালোবাসায় মাখিয়ে দিয়ে গেল। জীবনে সুখী হতে খুব বেশি কিছু লাগেনা,যদি প্রিয় জন পাশে থাকে, পাশে রাখে।

#চলবে….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here