বাসন্তী
পর্ব-২৪
লিমু

——” দূর আকাশের তারাগুলোও যেন পুষ্পর চোখের জল দেখে ব্যাথায় পুড়ছে।
পুষ্পের কান্নায় যেন ওরাও শোকাহত।
মিটমিট করে বলছে,কেঁদোনা পুষ্প। তোমার কান্না যে আমাদেরও ব্যাথাতুর করে তোলে। আরও একজন যে কষ্টে পোড়ে তোমার কান্নায়,কেন বুঝোনা।

এই যে আকাশে এতো এতো তারা,দেখে মনে হয় একটা আরেকটার কত কাছে। কতগুলো তো একসাথে দলা পাকিয়ে থাকে,মনে হয় একটা তারা আরেকটার সাথে আলিঙ্গন করছে। অথচ প্রত্যেকটা তারা একটা থেকে আরেকটার দূরত্ব সমান,পঁচিশ লক্ষ কিলোমিটার। আর আমরা খালি চোখে দেখে ভাবি ওরা একজন আরেকজনের কত কাছে।

—–” পুষ্প আর প্রণয়ের সম্পর্কটাও ঐ তারাগুলোর মত হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে দুজন দুজনার কত কাছে,কত পাশে,অথচ তবু দূরে। এক অদৃশ্য দেয়াল ওদের দুজনকে এক হতে দিচ্ছেনা। ওরা চাইলেও খুব সহজে সে দেয়াল ভাঙতে পারবেনা।
তবে যেখানে ভালোবাসা দিয়ে সব জয় করা যায়,সেখানে এ সামান্য দেয়াল তো কিছুই না। যদি ওদের ভালোবাসা সত্যি হয়,যদি দুজন দুজনার জন্য হয়ে থাকে,তবে পূর্ণতা পাবেই পাবে ওদের এ ভালোবাসা। এটাই সত্য।

—– ” কটেজের বারান্দার ফ্লোরে বসে উচ্চস্বরে কান্না করছে পুষ্প,ওর সাথেই কেন এমনটা হলো!
জীবনে তো খুব বেশি চাওয়া ছিলো না। শুধু সবাইকে নিয়ে খুশি থাকতে চেয়েছিল,আর আজকে সবার দুঃখের কারন হয়ে গেল সে। ওর মায়ের মুখের দিকে তাকানো যায় না,কলিটা কেমন চুপচাপ হয়ে গেছে। যে আগে সারাক্ষণ বকবক করতো। কবিরটা ছোট,তাই হয়তো কিছু বুঝেনা। কিন্তুু ওর বোনের এভাবে চুপ হয়ে যাওয়াটা ওকেও নিশ্চয়ই ভাবায়। পুষ্প তো শুধু সবাইকে নিয়ে সুখী হতে চেয়েছিল সাধ্যের মধ্যে,সেটাও ওর ভাগ্যে জুটলনা। আসলে ওর কপালটাই খারাপ।
পুষ্পর বুকটা দুমড়ে মুচড়ে যাচ্ছে,এতো কষ্ট কেন পাচ্ছে ও। কেন এই ছেলেটার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারে না। কেন বারবার ওর কাছে ছুটে যেতে ইচ্ছে করে,ওর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে বলতে ইচ্ছে করে,”এই পঁচা ছেলে শোন….

—– ” ভালোবেসে ফেলেছি যে!”

——” কি হবে এখন?

—–“এতো ভালো বাসতে হয় না কাউকে বুঝেছো। এতো ভালোবাসতে নেই,কষ্ট পাবে শুধু। আমার যে তোমাকে ভালোবাসা ছাড়া কিছুই দেবার নেই।
আমিতো তোমাকে ভালোবাসতে চাই নি,তাহলে কখন মনটা চুরি করে নিলে? আমি কিছু টেরই পেলাম না। তুমিতো খুব সেয়ানা চোর। না তোমাকে চোর বলা যায় না,তুমি হলে ডাকাত। মস্তবড় ডাকাত। বলা নেই,কওয়া নেই,হুট করে এসেই হৃদয়টা ডাকাতি করে নিলে। এমনভাবে করলে যে, সেখানে অবশিষ্ট কিছুই নেই। বুকের প্রতিটা কাঁপনে শুধু একটাই শব্দ উচ্চারিত হয়,পুষ্প তুই ভালোবেসে ফেলেছিস ওকে। খুব বেশিই ভালোবেসে ফেলেছিস। তোর হৃদয়ে ও ওর নামটা খোঁদাই করে নিয়েছে,আর সেটা ওর ভালোবাসার দ্বারাই। তুই চাইলেও সেই নাম মুঁছতে পারবিনা। তোর প্রতিটা হৃদস্পন্দন ওর নামে কাঁপে,তুই তা কি করে মুঁছবি!”

পুষ্পর এইমুহুর্তে খুব ইচ্ছে করছে প্রণয়ের গলা জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে কাঁদতে,আর বলতে সে আর পারছেনা। সে এ কষ্ট থেকে মুক্তি চাই। এ যন্ত্রণা যে পুষ্পকে নিঃশ্বেস করে দিচ্ছে ভিতরে ভিতরে। ভালোবেসেও ভালোবাসার মানুষের থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রাখার কষ্ট যে কি,সেটা শুধু সেই জানে।

—–” ওর ভেতরটা তোলপাড় করছে শুধু প্রণয়ের নামে,আর বাহিরে একরাশ নিস্তব্ধতা। আচ্ছা প্রণয়তো ওকে এখনো ভালোবাসে,সেটা ওর চোখমুখই বলে দেয়। তবে কি পুষ্প ভুল করছে,নিজেকে প্রণয়ের থেকে দূরে সরাতে চেয়ে।
পুষ্প আর ভাবতে পারছেনা,ওর প্রচন্ড মাথা ধরেছে। কপালের শিরা-উপশিরাগুলো অনবরত লাফিয়ে চলছে,যেন ছিড়ে যেতে চাইছে। মাথাটা কেমন চিনচিনিয়ে ব্যাথা করছে,চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। এক অসহ্য অনুভূতি হচ্ছে, সবকিছু কেমন অন্ধকার হয়ে আসছে।

—–” হঠাৎ ঝাপসা চোখে পুষ্প ওর সামনে একটা ছায়া দেখতে পেল। ছায়াটা ক্রমশ ওর কাছে আসছে। পুষ্প উঠে দাঁড়াতে চাইলো,কিন্তুু পারলনা। পা দুটো কেমন অবশ হয়ে আসছে। সামনের ছায়া মূর্তিটা হাটু ফেলে পুষ্পর সামনে বসলো।
পুষ্পর মাথার চুল এলোমেলো হয়ে আছে একদম। কপালে,চোখেমুখে চুল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে।

—–” পুষ্পর একদম মুখোমুখি বসে আস্তে করে কপালের আর চোখমুখের চুলগুলো পেছনে সরিয়ে দিল প্রণয়।
পুষ্প যেন হালকা কেঁপে উঠলো প্রণয়ের শীতল হাতের স্পর্শে। পুষ্পর গায়ের শালটা প্রণয় ভালো করে জড়িয়ে দিল ওর গায়ে।
পুষ্প অবাক নয়নে প্রণয়ের কাজ কারবার দেখছে,যেন মনে হচ্ছে এটা ওর স্বপ্ন। একটু পরেই দেখবে প্রণয় নেই।
কিন্তুু হঠাৎ-ই প্রণয় পুষ্পর হাতদুটো মুঠোতে পুরে নিলো।

——-” পুষ্প একবার ওর হাতের দিকে,আরেকবার প্রণয়ের মুখের দিকে তাকালো। প্রণয়ের মুখটা দেখেই পুষ্পর মনে হলো ওর একটা হার্টবিট মিস করলো। প্রণয়ের চোখ দুটো অসম্ভব লাল হয়ে আছে। কারন পুষ্প হয়তো টের পাইনি,প্রণয় অনেক্ষন ধরেই দাঁড়িয়ে ওর পাগলামী গুলো দেখছিল। আর সে কারনেই ওর মুখটা দেখেই বুঝা যাচ্ছে,ওর ভেতরে যে কি ঝড় চলছে। নিজের ভালোবাসার মানুষকে চোখের সামনে এভাবে পাগলের মতো কাঁদতে দেখে,ভেতরটা ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাচ্ছে প্রণয়ের।

যাকে নিজের ভালোবাসায় মুড়িয়ে রাখতে চায়,সে এভাবে চোখের সামনে কষ্ট পাচ্ছে,কাঁদছে। প্রণয় যে এটা আর সহ্য করতে পারছেনা। প্রণয়ের রঙিন পৃথিবীটা যে রংহীন হয়ে যায়,তার বাসন্তীর কান্নায়।

—–” ছেলেদের কাঁদতে নেই,এটা কি কোন নিয়মে লিখা আছে?

—–“নিশ্চয়ই না।

—-” কিন্তুু ছেলেরা বোধহয় শত কষ্টেও কাঁদতে জানে না। যদি জানতো,তাহলে পুষ্পর চেয়েও বেশি কান্না বোধহয় প্রণয় করতো এখন।
আর এতোক্ষণ প্রণয় যেভাবে পুষ্পর কান্নাটা নিজের চোখের সামনে দেখে সহ্য করেছে,পুষ্প প্রণয়ের কান্নাটা সহ্য করতে পারতো কিনা সন্দেহ আছে।
প্রণয় স্থির দৃষ্টিতে পুষ্পর দিকে তাকিয়ে আছে,আর পুষ্পর দৃষ্টি মাটির দিকে।
হঠাৎ প্রণয় মৃদু স্বরে বললো,

—–” পুষ্প….

—- ” তাকাও আমার দিকে।”

প্রণয়ের গলার আওয়াজটা শুনে পুষ্পর বুকটা ধক করে উঠলো। প্রণয়ের দিকে তাকাবে তো দূর,মনে হয় ওর শরীর কাঁপছে প্রণয়ের শীতল কন্ঠস্বর শুনে। কেমন যেন ঘোর লাগানো কন্ঠে প্রণয় পুষ্পকে কথাটা বললো।
প্রণয়ের দিকে তাকানোর বিন্দুমাত্র সাহস পুষ্পর নেই।
প্রণয় আবার পুষ্পকে বললো,
আমার চোখে চোখ রাখো প্লিজ….

শুধু একবার তাকাও আমার দিকে। দেখ তো এ চোখে কোন মিথ্যে আছে কিনা? কোন ছলনা আছে কিনা?
যদি তুমি এ চোখে তাকিয়ে ভালোবাসা অনুভব করতে না পারো,আমিই তোমার জীবন থেকে অনেক দূরে সরে যাবো। তুমি মুক্ত হয়ে যাবে প্রণয়ের বাঁধন থেকে।

শেষের কথাটা শোনামাত্রই পুষ্পর বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো। পুষ্প নিজের অজান্তেই এবার প্রণয়ের চোখের দিকে তাকালো। আর তাকিয়েই প্রণয়ের বিপর্যস্ত মুখটা দেখে পুষ্পর বুকটা হু হু করে কেঁদে উঠলো। আর প্রণয় অপলক পুষ্পর দিকে তাকিয়ে আছে। পুষ্প চোখ সরিয়ে নিতে চাইলে,প্রণয় সাথে সাথে বলে উঠলো…

—– ” একদম চোখ সরাবে না বলছি। আমার চোখ থেকে কি কার্বন-ডাইঅক্সাইডের গ্যাস নির্গত হয় যে তাকাতে পারো না।

—–” এমন অবস্থায় প্রণয়ের মুখে এ কথা শুনে পুষ্প হাসবে না কাঁদবে বুঝতে পারলনা। কিন্তুু পুষ্প চোখ সরাতে পারলনা প্রণয়ের চোখ থেকে।

—–” কি দেখতে পাচ্ছো চোখে?

—– ” আমার সর্বনাশ!”

—–” ভালোবাসি যে।

—-” সেটাই ভয়।”

—-” কিসের ভয়?”

—-” হারানোর।”

—-” খুব ভালোবাসো না?”

—-” নাহ!”

—-” চোখের দিকে তাকিয়ে মিথ্যে বলছো,তুমিতো বিশ্ব মিথ্যুক। মিথ্যা বলার জন্য অস্কাবেল প্রাপ্য তোমার।

—-” এই ছেলের কথা পুষ্পর মাথার উপর দিয়ে যায়। সিরিয়াস মুহুর্তেও হাসি পায়।
পুষ্প স্বাভাবিকভাবে বললো,অস্কাবেল জিনিসটা আবার কি জানতে পারি?”

—” অস্কার + নোবেল = অস্কাবেল। মিথ্যা বলার জন্য তোমার দুটাই প্রাপ্য।

—- ” পুষ্প কি বলবে ভেবে পেল না। একটা মুচকি হাসি দিল শুধু।

—-” সেটা দেখে প্রণয় বুকের বাপাশে হাত দিয়ে বললো,ইসস এই হাসিতেই আমি পরেছি ফাঁসি,ভালোবাসি ভালোবাসি।

কতদিন পর অবশেষে একটু মেঘ সরলো বিষন্ন আকাশ থেকে।

—” ঐ বিষন্ন আকাশটা রাঙিয়ে দিতে চায়,
—“আমার ভালোবাসার গভীরতায়,
—“দিবে কি তুমি সেই অধিকার?”

—“ঐ অবাধ্য চুলগুলো সরিয়ে দিতে চায়,
—“পরম যত্নে,আর ভালোবাসায়,
—” দিবে কি তুমি অনুমতি?
—“তোমার ভুবনটা আমিময় করতে চাই,
—“আমার ভুবনটা যে শুধুই তুমিময়,
—“শুধু একবার বলো ভালোবাসি,

– ” শতসহস্র ভালোবাসা লুটিয়ে দিবো তোমায়।

—” পুষ্প কি বলবে,কি করবে বুঝতে পারছেনা। ওর মাথা ভাবনাশূন্য হয়ে গেল,মনে হয় ওর পৃথিবী ঘুরছে। আর প্রণয় শান্ত বালকের মতো তখনো পুষ্পর হাত ধরে বসে আছে। যেন হাত ছেড়ে দিলেই পুষ্প কোথাও হারিয়ে যাবে।
তাই শক্ত করে হাত দুটো ধরে রেখেছে।

—” যেকোন পরিস্থিতিতে এভাবে হাতদুটো ধরে রাখতে পারবে?
নাকি ছেড়ে দিবে।

— ” ছাড়ার জন্য তো ধরিনি। সারাজীবনের জন্যই ধরেছি। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এই হাত দুটি ধরে রাখার অধিকার দাও আমায়। আমি যে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছি তোমার ভালোবাসায়। সেখান থেকে ফিরা যে আমার সাধ্যের বাইরে। ইনফেক্ট আমি ফিরতে চায় না। আমি তোমার ভালোবাসায় নিজেকে বিলীন করে দিতে চায়।
—- ” কিছু তো বলো পুষ্প?”

—-” পুষ্পর এতোক্ষণে ঘোর কাঁটলো। ও এতোক্ষণ কোথাও যেন হারিয়ে গিয়েছিল।
কি বলবে পুষ্প?
প্রণয় কি বুঝেনা,পুষ্পর মন কি বলে?
নাকি বুঝেও বুঝেনা।

—” পুষ্প…..

—” হু।”

—” ভালোবাসি।”

—” জানি।”

—” ভালোবাসি।”

—” জানিতো।”

—” বলো তাহলে।”

—-” কি?”

—” উত্তর।”

—” সরি স্যার প্রশ্ন কমন পড়ে নাই।

—” হঠাৎ পুষ্পর এমন দুষ্টুমি দেখে প্রণয় শুধু অবাকই হলো না,একইসাথে খুশিও হলো। আর সেই খুশি ওর চোখমুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে।

—-” পুষ্প উঠে দৌড় দিতে চাইলো,কিন্তুু ব্যার্থ চেষ্টা। প্রণয় তার আগেই খপ করে পুষ্পর হাত ধরে ফেললো। আর বললো,
প্রশ্ন কমন না পড়লেও বানিয়ে বানিয়ে কিছু লিখতে হয় ম্যাম,খাতা খালি রেখে আসতে নেই।

—-” পুষ্প নিজের কথায় নিজে ফেঁসে গেল এবার। আজকে আর উপায় নেই।

—” বলেন ম্যাম।”

—” আই হেট ইউ!”

—” হোয়াট! ”

—” বানিয়ে লিখলে খুব কমই সঠিক উত্তর হয় স্যার। এটা বলেই পুষ্প মুখ লুকিয়ে হাসলো।

—-” প্রণয়ও এবার নিজের কথায় ফেঁসে গেল। এই মেয়ের পেটে পেটে এতো দুষ্টু বুদ্ধি থাকতে পারে,সেটা প্রণয়ের ভাবনার বাইরে। কিন্তুু আজকে আর কোন ছাড়াছাড়ি নেই,উত্তর চাই-ই চাই প্রণয়ের।
প্রণয় যখন এসব ভাবছিল,তখন পুষ্প হাত ছাড়িয়ে এক দৌড় দিল রুমে।
আর প্রণয় ক্যাবলাকান্তর মতো পুষ্পর যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো।

——” এইটা কি হলো!

ছাত্রী তো সেই চিটিংবাজ।
এক তো ভুল উত্তর দিলো,আবার এখন পালালো।
কিন্তুু পালিয়ে আর কোথায় যাবেন ম্যাম,ধরা যে পড়ে গেছেন জালে।
প্রণয়ের ভালোবাসার মায়াজালে।
সো নো চিটিংবাজি, অনলি ভালোবাসাবাজি!”
আর উত্তর তো আমি আদায় করে ছাড়বোই,তাও এই মেঘের দেশ সাজেকেই।
বাইরে তখন একদল মেঘ প্রণয়ের খুব কাছ দিয়েই উড়ে যাচ্ছে। প্রণয়ের মনে হলো,ওরা প্রণয়কে ভালোবাসার শুভেচ্ছা জানিয়ে গেছে। ফিসফিস করে বলে গেছে, নিজের ভালোবাসাকে নিজের করে নে সারাজীবনের জন্য।”

#চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here