গল্পঃ হৃদয়ের বন্ধন।
পর্বঃ ৩৩।
লেখাঃ #মেহের।

মারুফের চোখে মুখে রাগের ছাপ দেখে জেসিকা প্রথমে কিছুটা ভয় পেয়েছে।

পরক্ষণেই কিছু একটা চিন্তা করে নিজের ওষ্ঠ দিয়ে মারুফের ঠোঁট লক করে নিলো।
জেসিকা কান্ডে মনে হয় ওঁর ওষ্ঠ দ্বারাই মারুফের সবরাগ শুষে নিতে চাচ্ছে।

হঠাৎ করে বৌয়ের এমন আদর পেয়ে মারুফের সবরাগ নিমেষেই উধাও হয়ে গেছে।

তার প্রিয়তমার উষ্ণ স্পর্শ পেয়ে রাগ করে থাকার কোন মানেই হয়না।

এদিকে জেসিকা মারুফের ওষ্ঠ ছেড়ে কাঁধে মাথা রাখলো।

মারুফ ইচ্ছে করে জেসিকাকে নিয়েই বিছানায় ধপাস করে পরল।
জেসিকা কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুই হাত হালকা করে বিছানায় চেপে ধরে মারুফ তার
প্রিয়তমার ওপরে হামলে পরল।

মারুফের উষ্ণ স্পর্শের আক্রমনে জেসিকার মরি মরি অবস্থা হচ্ছে।
মারুফ জেসিকার গলার নিচের দিকে ওষ্ঠ দিয়ে ছুঁয়ে দিচ্ছিল।
জেসিকা যেনো মারুফের স্পর্শের নেশায় বুঁদ হয়ে গেছে।

এদিকে মারুফের চোখে মুখে এই মুহূর্তে জেসিকাকে ছাড়ার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে দেখা যাচ্ছে না।

বরং মারুফের দুচোখে তো এই মুহূর্তে প্রিয়তাকে গভীর ভাবে পাওয়ার নেশা চেপে ধরেছে।

জেসিকাকে সম্পূর্ণ রূপে পাওয়ার পর থেকেই লোভটা বেরে গেছে।
আজকাল যখন তখন ওঁর মাঝে ডুব দিতে ইচ্ছে করে।
সেদিন রাতের পরে থেকে মারুফের কাছে মনে হয় , জেসিকার নেশা ওঁর রক্তে মিশে একাকার হয়ে গেছে।
জেসিকার সিক্ত চেহারা দেখলে মারুফ নিজেকে সামলাতে পারে না।
তখন মারুফের মনে চায় বৌকে সব ভালবাসা উজাড় করে দিতে।
যেমন এই মুহূর্তে মনে চাচ্ছে।

অন্যদিকে জেসিকা মারুফের চোখে ওকে কাছে টানার আকুলতা দেখে লজ্জায় চোখ বন্ধ করে নিল।।

মারুফ আস্তে আস্তে জেসিকার সারা শরীরে ভালবাসার উষ্ণ স্পর্শ দিচ্ছে।

মারুফের স্পর্শ জেসিকার শরীরে প্রতিটা কোনায় কোনায় একধরনের অস্থিরতার শিহরণ খেলে যাচ্ছে।
জেসিকা অস্থিরতা সহ্য করতে না পেরে মারুফের চুল খাঁমচে ধরেছে।

মারুফ তো এটাই চাচ্ছিল ।

জেসিকার সাড়া পেয়ে মারুফ ধীরে ধীরে ওঁর প্রিয়তমার মাঝে ডুব দিল।
আশেপাশের সব কিছু ভুলে
দুজনে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেল।

এদিকে
ইসহাক রাতে বাসায় ফিরে মায়ের সাথে কথা বলছে।
তার পরে থেকে দোলার উপর তার মেজাজ খারাপ হচ্ছে।

দোলার ব্যাবহারে মনে হচ্ছে ওঁর বয়স দিন দিন কমছে।
কোথায় কি বলতে হয় এখনো তা বুঝতে চেষ্টা করে না।

অন্যদিকে ইসহাক মারুফের সাথে কথা বলে বুঝতে পারছে টাকা পয়সা থাকলেও পাত্রের পরিবারের মন মানসিকতা ভালো না তেমন।

এমন জায়গায় মেয়ে বিয়ে দিলে কি তার মেয়ে সুখি হতে পারবে!
ঝর্নার বাবাকে তা বড্ড ভাবাচ্ছে।

ইসহাক মেয়ের বিয়ে দেওয়ার কথা নিয়ে দোলার সাথে রাগারাগী করেছে ।

মেয়েটাকে বিয়ে দিতে দোলা মনে হয় পাগল হয়ে গেছে;

শুধু একটায় কথা মেয়ের বিয়েটা যেন শফিকের সাথে হয়।
এটা কি ধরনের আবদার ইসহাক তাই বুঝতে পারছে না।

ইসহাকের ওঁর বৌয়ের অবস্থা দেখে রাগ উঠে যাচ্ছে।

দোলার কথায় মনে হচ্ছে এই পাত্র হাতে থেকে ছুটে গেলে তাদের মেয়ের জন্য আর পাত্র পাবে না।
দোলার সাথে ইসহাক কথায় কখনো জিততে পারে নায়।
আর আজকেও পারল না।
কারণ দোলা সবসময় তাকে একটা কথা বলে ভয় দেখায়।
তা হচ্ছে ইসহাককে ছেড়ে সে বাপের বাড়িতে চলে যাবে।

ইসহাক দোলার এই কথাটা শুনে ভয় পায়।
যদি সত্যিই তাকে ছেড়ে চলে যায়!
তাহলে দোলাকে ছাড়া থাকবে কিভাবে!
ওকে যে ইসহাক প্রচন্ড ভালোবাসে।
তাই দোলার চাওয়া মেনে নেওয়া ছাড়া কিছুই করার নেই।

আর ইসহাক চিন্তা ভাবনা করে দেখে, দোলা মা হয়ে নিশ্চয় মেয়ের খারাপ চায়বে না।

গভীর রাত চারদিকে অন্ধকার নিরিবিলি পরিবেশ।
কিছুক্ষণ পর পর ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনা যাচ্ছে।
কেমন গা ছম ছম বাতাস বইছে।
আশেপাশের সবাই যখন ঘুমের বিভোর।
দুজনের চোখে মুখে ঘুমের রেশ মাত্র নেই।
মারুফ বালিশে হেলান দিয়ে বসে জেসিকাকে জরিয়ে ধরে আছে।
জেসিকা মারুফের বুকে মাথা রেখে মারুফের হৃদস্পন্দন অনুভব করছে।

আর মারুফ জেসিকার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছিলো আর গল্প করছিল।

জেসিকা মুগ্ধ হয়ে মারুফের গল্প শুনছে।

মারুফ জেসিকার দিকে তাকিয়ে দেখে জেসিকা ওঁর দিকে মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
তা দেখে মারুফ বলল, সোনা এভাবে তাকালে আমি কিন্তু নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারব না।
তখন আবারো তোমার মাঝে ডুব দিতে হবে।
অবশ্য তোমার মাঝে বারবার ডুবতে আমার ভালোই লাগবে।

মারুফের কথা শুনে জেসিকা লজ্জা পেয়ে বলল, ছিঃ বাজে লোক।
কথাটা বলে জেসিকা মারুফের বুকে মুখ লুকায়।

মারুফ জেসিকাকে লজ্জা পেতে দেখে মুচকি হেসে বলল,থাক আর লজ্জা পেতে হবে না গো।
তা বৌ আজকে কি ঘুমাবে না!

জেসিকা মারুফের কথাটা শুনে বলল, তুমিই তো আমাকে ঘুমাতে দিচ্ছিলে না

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল, আচ্ছা তাই বুঝি।
তা শুরুটা কে করছে সোনা?

জেসিকা মারুফের কথা শুনে বলল,জানি না।এই শুনো না।

জেসিকার কথা শুনে মারুফ হেসে বলল,হ্যাঁ সোনা বল না।

জেসিকা কপট রাগ দেখিয়ে বলে, সব কথায় তোমার দুষ্টুমি না করলে হচ্ছে না !

মারুফ অবাকের সুরে বলল, বাহ্ বাহ্ তুমিই তো বললে শুনো না।
আর আমিও তো বলতেই বললাম এখানে দুষ্টুমি কোথায় করলাম সোনা।
বৌ এটা কিন্তু ভারী অন্যায় সবসময় আমাকে দোষারোপ করা।

জেসিকা মারুফের কথা শুনে বলল, আচ্ছা এসব বাদ ,যা বলছিলাম কতদিন হয়ে গেছে আমাদের বাসায় যায়নি।
আমার না খুব যেতে ইচ্ছে করছে।

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল,ঠিক আছে কাল সকালে দিয়ে আসবো রাতে দোকান থেকে বাসায় ফেরার সময় তোমাকে বাসায় নিয়ে আসব।

জেসিকা মারুফের কথা শুনে মন খারাপ করে বলল, এতদিন পরে যাব আর কয়দিন থাকতে দিতে চাচ্ছ না।
এটা কোন কথা হলো।

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল,
তোমাকে ছাড়া রাতে আমার চলবে না বউ।
তোমার ছোঁয়া না পেলে রাতে আমার ঘুম আসবে না যে তার কি হবে!

জেসিকা মারুফের কথা শুনে বলল,কেনো তুমি আমার সাথে রাতে ওখানে থাকবে ।
আর এমনিতেই আমাদের বিয়ের পর থেকে তুমি বাপির বাসায় তেমন একটা ছিলেও না। তাই আমি আর কিছু জানতে চাচ্ছি না আর বুঝতেও চাচ্ছি না।
আমার সাথে তোমাকেও ওখানে থাকতে হবে এটাই ফাইনাল কথা।

জেসিকার কথা শুনে মারুফ বলল,বৌ পাগলামি করো না।

জেসিকা বলল,যাই বল না কেন কাজ হবে না।
তুমি কালকে সকালে বাপিকে ফোন করে বলবে আমরা আসছি।

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল, তোমাকে বলা হয়নি আব্বু আজকে ফোন করে তোমাকে আর আমার ভাই বোনদের নিয়ে বেড়াতে যেতে বলেছে তোমাদের বাসায়।

কথাটা শুনে জেসিকা বলল, তাহলে তোমার আমার সাথে যেতে সমস্যা কোথায় তাইতো বুঝতে পারছি না।

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল,বৌ তোমার উপরে যে অন্যায় করেছি তারপর শ্বশুর বাড়িতে যেতে লজ্জা করে।

আর এ ছাড়া ওখানে তোমাকে যদি এমন করে কাছে না পায়।
তাই যেতে ইচ্ছে করছে না।

জেসিকা মারুফের কথা শুনে বলল,প্লিজ পিছনের কথা ভুলে যাও।
সব ভুলে প্লিজ জান তুমি আমার সাথে চল না।
জান কথা দিচ্ছি আমাদের বাসায় গিয়েও তুমি যতক্ষণ বাসায় থাকবে আমি তোমার কাছে কাছে থাকবো।

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল, আচ্ছা পাগলি যাব আমাকে এভাবে অনুরোধ করা লাগবে না।
তবে কালকে সকালে না সন্ধ্যায় যাব দোকানে থেকে এসে।

মারুফের কথা শুনে জেসিকা খুশি হয়ে মারুফকে বুকে ওষ্ঠ ছুঁয়ে দেয়।
মারুফ জেসিকার মুখ দেখে বুঝতে পারছে তার বৌ সে যাবে শুনে খুশি হয়েছে।
মারুফ জেসিকার চুলে চুমু দিয়ে বলল, সোনা রাত অনেক হয়েছে এখন ঘুমাও।
জেসিকা মারুফের কথা শুনে বলল, আমার আরেকটা কথা ছিল।

কি কথা বৌ?

জেসিকা মারুফের দিকে তাকিয়ে বলল,পাত্র পক্ষেরা যে আমাদের ঝর্নাকে পছন্দ করেছেন তা কিন্তু তাদের মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল।

হয়তো যে কোন সময় পাঁকা কথা বলতে ফোন করবে।
কিন্তু ওখানে ঝর্নাকে বিয়ে দেওয়া কি ঠিক হবে?

তুমি দেখেছো তো আমাদের ঝর্নার থেকে ছেলের বয়স অনেক বেশি।
আর ছেলের পরিবারের ব্যাবহার তেমন ভালো না।
শুধু টাকা থাকলেই তো হলো না।
তুমি কিছু একটা করে এই বিয়ে ঠিক হওয়ার আগেই ভেঙ্গে দিলে ভালো হতো না!

জেসিকার কথা শুনে মারুফের অনেক ভালো লাগলো।
মনে মনে বলল, তুমি আমার পরিবারকে তোমার পরিবার ভেবে যেমন করে আগলে রাখো তা দেখে আমি তোমার উপরে মুগ্ধ না হয়ে পারি না বৌ।

তোমার মন ঝর্নাকে নিয়ে চিন্তা করছে তা আমি বুঝতে পেরে কিছুই করতে পারব না বৌ।

তুমি জানো না ,চাচী মনে হয় পন করেছে ঐ বাড়িতে মেয়ে বিয়ে দেওয়ার।

আমার বোন হলেও ঝর্না তাদের মেয়ে তাই আমি কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারব না।

জেসিকা মারুফকে চুপচাপ দেখে বলল,কি হয়েছে বলছো না তো কিছু।

মারুফ জেসিকার কথা শুনে বলল,যা হবে পরে দেখা যাবে এখন ঘুমাও তো।

পরের দিন সন্ধ্যায় বাসায় এসে মারুফ দেখে, কোমল, ঝর্না , রাশেদ ও জেসিকা তৈরি হয়ে বসে অপেক্ষা করছে ওঁর জন্য।

মারুফ সকালে দোকানে যাওয়ার আগেই মা এবং দাদুকে বলেছে, আজকে জেসিকাদের বাসায় বেড়াতে যাবে।

অনেকদিন ধরে মেয়েটা কোথাও যাচ্ছেনা।
এমনকি বাবা মায়ের বাসায়ও যায়নি ‌।
এসব ভেবে মায়া ও চাঁদনী বানু জেসিকাকে যাওয়ার অনুমতি দেয়।

এদিকে জেসিকা দেবর ও ননদের ছাড়া একা যাবে না বেড়াতে ।
তারা না গেলে জেসিকাও যাবে না বলে বসে রয় ।

আর বারবার চাঁদনী বানুর কাছে অনুরোধ করছে ওঁর সাথে তাদের যেতে দিতে।

চাঁদনী বানু জেসিকার বারবার করা অনুরোধ ফেলতে পারেনি তাই ওদের যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

মারুফ বাসায় এসেই বুঝতে পারছে তার বৌ তার ভাইবোনদের সাথে নিয়ে যাবে।
মারুফ এটা দেখে মনে মনে খুশি হয়।
জেসিকা যে ওদের নিজের সাথে নিয়ে যাওয়ার কথা চিন্তা করবে তা ভাবতেই পারেনি ।
স্বামীর ভাইবোনদের আজকাল কয়জন আপন করে নিতে পারে।
কিন্তু ওঁর বৌ তা করতে পেরেছে।
এমন বৌ পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার।

এসব ভাবনা চিন্তা শেষ হলে মারুফ ফ্রেস হতে যায়।
ফ্রেস হয়ে হালকা নাশতা করে সবাইকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ির দিকে রওয়ানা হলো।

কোমলের ও রাশেদের লজ্জা করছে ভাবীর বাপের বাড়িতে যেতে।
কিন্তু ভাবী ওদের ছাড়া যাবেনা তাই যেতে হচ্ছে।
কিন্তু ঝর্না ভীষণ খুশি হয়েছে ভাবী ওদের তার সাথে নিয়ে যাওয়াতে ।

জেসিকার মা মেয়েকে দেখে জরিয়ে ধরে কেঁদে উঠলো।
তার আদরের পুতুলটা কতদিন পর নিজের বাড়িতে এসেছে।
বিয়ের পরে থেকে
ইচ্ছে হলেই মেয়েকে তেমন একটা কাছে পায়না।

জেসিকা দেখে মাঝে মাঝে ওঁর মা অবাক হন।
তার এতো আদরের মেয়ে নাকি এখন একা হাতে সংসার সামলায়।
ভাবতেই চোখ দিয়ে দুফোঁটা পানি পরল।
জেসিকার মা তার মেয়েকে জড়িয়ে ধরেই সবাইকে ভিতরে আসতে বলল।
কোমল ও ঝর্নাকেও জেসিকার মা জরিয়ে ধরে আদর করল।

জেসিকার মার কাছে আজকে চাঁদ রাত মনে হচ্ছে।
আজ প্রথম মেয়ে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন নিয়ে এসেছে তাদের আপ্যায়ণে কোন কমতি রাখতে চাচ্ছে না।
নিজের সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করছে সবাইকে যত্ন ও খেয়াল রাখতে।
মারুফ ভাবতেই পারেনি তার শ্বশুর ও শাশুড়ি তাদের সবার এতো যত্ন নিবেন।
কারণ মারুফ ভাবতো জেসিকাকে মারার পর থেকে জেসিকার মা হয়তো তাকে তেমন পছন্দ করেন না।
কিন্তু আজকে বুঝাতে পারছে মায়েরা কখনো সন্তানের ভুল ধরে বসে থাকেন না।
সন্তানের ভুল শুধরে দিয়ে বুকে টেনে নেওয়ায় হচ্ছে মায়েদের ধর্ম।
রাশেদ ও কোমল এখানে আসতে লজ্জা পাচ্ছিল।
তাদের সব লজ্জা জেসিকার বাবা ও মার আদর যত্ন পেয়ে কেটে গেছে।
এখানে এসে বুঝতে পারছে তাদের ভাবী এ বাড়িতে রাজকন্যার মত ছিলো।

রাশেদ মনে মনে ভাবলো,যার জীবন কেটেছে রাজকন্যার মত সে কিনা ওদের সংসারের ছোট বড় সব কাজ হাসি মুখে করেছে।
মুখ বুজে শত অপমান সহ্য করে
ওদের বাড়িতে পরে ছিলো।
সত্যিই মেয়েরা হচ্ছে মায়ের জাত।
তাইতো সব কিছু হাঁসি মুখে সয়ে যায়।

জেসিকা এক সপ্তাহ বাবার বাসায় সবাইকে নিয়ে আনন্দে ফূর্তিতে কাটিয়েছে।

জেসিকার বাবা সবাইকে নিয়ে তাদের বাংলো বাড়িতে ঘুরিয়ে এনেছে।
মারুফ এবং ওঁর ভাই বোনেরা সেখানে দারুন সময় কাটিয়েছে।
জেসিকার বাবা প্রতিদিন চেম্বারে থেকে তাড়াতাড়ি এসেছেন ।
ওদের জন্য প্রতিদিন আসার সময়ে বিভিন্ন খাবারের চাইনিজ আইটেমে নিয়ে আসতো।
ওদের সবাইকে বসুন্ধরা শপিং মলে নিয়ে শপিং করে দিয়েছেন।
মারুফ বারবার বলছে তার এসব লাগবে না।
তবুও জেসিকার বাবা শুনেনি।
জেসিকার বাবা মারুফের দাদু,মা,চাচ্চু এবং চাচীর জন্য ও শপিং করেছে।
বসুন্ধরা সিটিতে শাড়ির কালেকশন গুলো মারুফ ঘুরে দেখছিল।
জেসিকার বাবা তা খেয়াল করে কিছু না বুঝার ভান করে , জেসিকার জন্য সিল্ক, জামদানি, জর্জেটের শাড়ি নিয়েছে।
জেসিকার জন্য দশটার মত শাড়ি কিনেছে আর কোমল ও ঝর্নার জন্য দুইটি।
সব কিছুর সাথে রেডিমেড ম্যাচিং ব্লাউজ ও পেটিকোট কিনেছেন।
বাসায় এসে জেসিকার বাবা সবকিছু মেয়েকে দিলো।

কিন্তু জেসিকা মারুফের সম্মানের কথা চিন্তা করে বাবাকে বলল,সে শুধু একটা শাড়ি নিবে।
আর গুলো জেনে অন্য কাউকে দিয়ে দেয়।
মারুফ জেসিকার কথা শুনে মনে মনে গর্ববোধ করেছে।

জেসিকার বাবা কথাটা শুনে কষ্ট পেয়েছে তবে এটা ভেবে খুশি হয়েছে তার মেয়ে স্বামীর কথা ভাবছে।
কিন্তু মেয়েটার জন্য কেনা শাড়ি গুলো না দিতে পারলে শান্তি পাবে না।
তাই মারুফের কাছে অনুরোধ করে সে যেনো এগুলো জেসিকাকে নিতে বলে।
সে বললে জেসিকা ওঁর কথা ফেলতে পারবে না।

জেসিকার বাবা মারুফকে আরও বলেন, বাবা আমি তোমাকে মেয়ের জামাই না নিজের ছেলে মনে করি।
তাই বাবা কি তার এই
ছেলেটিকে কিছু দেওয়ার অধিকার রাখে না।
মারুফ জেসিকার বাবা কথা শুনে তাকে মানা করতে পারলো না।
মারুফের কথা শুনে জেসিকা তার বাবার আনা শাড়িগুলো নেয়।
জেসিকার বাবা আজকে ওদের থাকতে বলেছিল।
কিন্তু জেসিকা ওঁর শাশুড়িকে রেখে আর থাকতে চায়নি।

আজকে সন্ধ্যায় শ্বশুর বাড়িতে এসেছে।
মারুফ দোকানে থেকে আসতে রাত হবে।
বাসায় এসেই শুনে আগামী সপ্তাহে ঝর্নার কাবিন হবে কথাটি শুনে হতভম্ব হয়ে গেছে।
আজকেই নাকি সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছে।
জেসিকা ভেবেই পাচ্ছে না বিয়ের ব্যাপারে এতো তাড়াহুড়ো করছে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here