#বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤Part: 43……
#Written_By_Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr [ Mêhèr ]
🖤
বেতের চেয়ারে বসে নিজের ভাবনায় বিভোর হয়ে তীব্র কখন ঘুমিয়ে গেছে নিজেও জানে না।
সকালের ঠান্ডা শুভ্র আবহাওয়ায় পাখির চেঁচামেচিতে ঘুম ভাঙ্গে তীব্রের । উজ্জল আলোতে চোখের পাতা খুলতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে । ঘুম থেকে উঠে হাঁটুতে দু‘ হাতের কনুই রেখে কিছুক্ষন মুখ ঢেকে বসে থাকে। দু‘আঙ্গুল দিয়ে কঁচলে নেয় নিজের চোখ। ছোট ছোট চোখে সামনে তাকিয়ে এক অস্বস্তি ফুটিয়ে তোলে মুখে। ওদিক-সেদিক দেখে ঘঁড়ি দেখে নেয়।
প্রায় ১০টা বাজে। শেষ রাতের দিকে ঘুমিয়েছিল। তাই বেলা হওয়া স্বাভাবিক। ও চেয়ার থেকে উঠে তুরের রুমের দিকে পা বাড়ায়।
রুমে ঢুকতেই অবাক হয়ে যায় তীব্র। বিছানায় তুর নেই । তাহলে কি তুর পালিয়ে গেল । কিন্তু না । তা কীভাবে সম্ভব ? ওর পায়ের মোঁচ নিয়ে এটা অসম্ভব। তাহলে কই তুর। দ্রুত রুমের ভিতর ঢোকে। গিয়ে আশ-পাশ দেখতেই বেশ অবাক হয়ে যায় । বিছানার ওপাশে কোন রকম কাঁথা-বালিশ ছাড়াই মাথায় হাত দিয়ে খালি মেঝেতে শুয়ে আছে তুর। তীব্র দ্রুত ওর কাছে যায়। চোখ-মুখ কেমন ফোলা ফোলা লাগছে। তাঁর মানে তুর কী কান্না করেছে? আর পায়ের এই অবস্থা নিয়ে মেঝেতে কেন ঘুমোচ্ছে? তীব্র দ্রুত ওকে কোলে তুলে বিছানায় শুইয়ে দেয়। সবকিছুই নরমাল আছে। তীব্র স্বস্তির শ্বাস নেয়।
তারপর ওর ডান পায়ের কাছে যায়। পা‘টা হাতের মধ্যে নিয়ে একটা মোচড় মারতেই তুর চিৎকার করে ঘুম থেকে উঠে বসে নিজের পা গুঁটিয়ে নেয়। পাশে থাকা বালিশটা বুকের মাঝে নিয়ে চিৎকার করে বলে ,
— “ সমস্যা কী আপনার? কাল আমার দাঁত উঠিয়ে ,পা‘টা মঁচকে শান্তি হয়নি এখন ভাঙতে এসেছেন। এত বধ কেন আপনি? পা ভেঙে সারাজিবন আটকে রাখতে পারবেন বলে মনে হয়? ”
—– “ আমার কী মনে হয় না হয় তা যেনে তোমার লাভ নেই। তাড়াতাড়ি উঠ। আমাদের ফিরতে হবে। “
—– ” ফিরতে হবে মানে? আমার পা… ”
তুর ডান পা নাঁড়াতেই অবাক হয়ে পায়ের দিকে তাকায়। পা’টা এদিক-ওদিক ঘুড়িয়ে নেয়। একদম ঠিক আছে। কিন্তু কীভাবে? ভ্রু-কুঁচকে তীব্রের দিকে তাকালে তীব্র বলে উঠে,
—– ” রেডি হয়ে নেও। ”
তুর কিছু বলার আগেই বেড়িয়ে যায় ও। তুর কিছুক্ষন বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর ভাবে ও কী রেডি হবে?
তর শুধুমাত্র চোখে-মুখে পানি দিয়ে বেড়িয়ে আসে। তীব্র পা ঝুলিয়ে দুপাশে হাত দিয়ে বিছানায় বসে আছে। তুরের আসার শব্দে ও শান্তভাবে ওর দিকে তাকায়। আবার চোখ ফিরিয়ে নেয়। তুর হাতের তোয়ালটা চেয়ারে রাখতে রাখতে বেশ ভারী কন্ঠে জিজ্ঞেস করে উঠে, ” কাল রাতে কোথায় চলে গিয়েছিলেন আমাকে একা রেখে? ”
তীব্র অনড়ভাবে বসে নিজের ভাবনায় ব্যস্ত। কোনো উত্তর না পেয়ে তুর চেয়ারে রাখা তোয়ালটা ধরে তীব্রের দিকে তাকায়। কন্ঠে গাম্ভীর্যতা বজায় রেখে আবার প্রশ্ন ছুড়ে দেয় তীব্রের দিকে কোথায় গিয়েছিল ও? তীব্র ভাবলেশহীন চোখে তুরের দিকে তাকায়। হতাশ কণ্ঠে উত্তর দেয়, ” বাইরে ছিলাম। আর আমি না থাকাতেই কী? তুমি তো ভয় পাও না। তাহলে…? ”
” না ভয় পাই না। কিন্তু আমাকে এখানে এনে আপনি অপরিচিত জায়গায় ফেলে গিয়ে ঠিক করেছিলেন? ”
” কাল রাতে তোমার সাথে থাকলে বোধহয় ঠীক করতাম না তুর। ” নিচের দিকে তাকিয়ে কথাটা শেষ করে তুরের দিকে তাকাল। ” কিহল? তোমার সাথে কাল রাতে থাকলে কী ঠিক করতাম? ”
তুর বেশ ইতস্তত হয়ে পরে। নজর নামিয়ে জড়তার সাথে বলে, ” আমি বলছি কাল আপনি চলে গিয়েছিলেন তো ভয় হয়েছিল। তাই…। ”
” আমার থাকাটা তোমার ভয়ের কারন হতে পারত? আমার চলে যাওয়া কীভাবে? আর যদি তাই বলো ; তাহলে বলতে হবে তোমার ভয় দূর করতে চলে গিয়েছিলাম। নাহলে তুমি… আচ্ছা ছাড়.. এখন বলো নিচে কেন শুয়েছিলে? ”
“কারন… ” তুর জবাব দিতে গিয়েও থেমে যায়। ও হাত কঁচলাচ্ছে। তীব্রের নজর এড়ায় না। ওকে বিব্রত না করে তীব্র বলে, ” আচ্ছা যাও জানতে হবে না। এখান থেকে চল…”
বেড়িয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার জন্য দরজার দিকে এগোও। দরজার বাইরে পা রাখতে যাবে তখনি ডাক আসে, ” তী..তীব্র… ” পিছনে ফিরে তাকায় ও। তুরের মুখে কিছু জানার অদম্য কৌতুহল দেখতে পায়। মাথা ইশারায় তুরকে কীহল জানতে চায়। তুর কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলে, ” আমাকে এখানে কেন এনেছেন তীব্র? আর আপনি বলেছিলেন চলে যাবেন কিন্তু? ( নিচের দিকে তাকিয়ে চুপ থেকে ) ফিরে আসলেন যে? ” বলে তীব্রের দিকে তাকায়৷ তীব্র শান্ত দৃষ্টি রেখে ওর কথা শুনছে। কথা শেষ হলে ভিতরে এসে তুরের কাছে এসে ওর দু’কাধে হাত রাখে। না চাইতেও তুরের শরীরে অদ্ভুত শিহরণ দিয়ে উঠে। দু’জনের দৃষ্টি একে-অপরের দৃষ্টিতে বদ্ধ। তীব্র শান্তভাবে বলে, আমি তোমাকে এখানে কেন এনেছি? সেটা কাল রাতেই তোমাকে বলেছি। না তোমার থেকে চেয়েছি। আর আমি না বললেও তুমি জানতে তুর। তাই ন্যাকামি বন্ধ করো? ”
” আ…আমি…”
” হুসস। তুমি ভালো করেই জান। তুমি ছাড়া আমার পক্ষে অন্য কাউকে আপন করা সম্ভব না। তোমার কাছে তুমি আমার বন্ধনী হলেও আমার কাছে ” তুমি ” ছিলে। তাই… ”
তুর সিগ্ধ চোখে চেয়ে আছে। সত্যি কী তাই ছিল ওর মনে? তুর কী ওর কাছে যেতে চায়নি নাকি তীব্র ভুল বুঝেছে?
” তুর একটা কথা কী জান? কাল যদি আমি চলে না যেতাম তাহলে আজকে তুমি নিজেই বলতা আমি তোমাকে শুধুমাত্র… ” থেমে যায় তীব্র। ” যাই হোক তুর শুধু একটা কথা জেনে রাখ। ৭ বছর আগে আমি তোমার সাথে যা করেছি তাতে আমি নিরুপায় ছিলাম। তাতে আমার স্বার্থ থাকলেও সেটার জন্য আমি বাধ্য ছিলাম। কিন্তু কাল…। কাল আমার বাধ্যতা ছিল না। তাই স্বার্থপর হইনি। ”
এটা শুনে তুর মনে মনে নিজেকে শুধালো, ” আমি আজও জানতে পারলাম না কেন হয়েছিলাম আপনার বন্দীনি? যদি সত্যি আপনার উদ্দেশ্য আমাকে ইউজ করার হত তবে ৩মাসে কেন করল না? শুধুই কী ছোট ছিলাম বলে? তাহলে বিয়ে করেই বা কেন এমনটা করল? কাহিনী যেখানে শুরু সেখানেই এখনো দাঁড়িয়ে আছে। আমি ৭বছর আগে তীব্রের কাছে যেটা জানতে চেয়েছিলাম। আজও তাই জানার অপেক্ষায়। কেন হতে হয়েছিল আমাকে #বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤? প্রশ্ন একটাই অপেক্ষা ৭ বছর। ”
চেয়ে আছে তীব্রের দিকে। তীব্র ওকে ছেড়ে যেতেই তুর ওর হাত ধরে নেয়। প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকায় তীব্র। তুর এক বুক আশা নিয়ে প্রশ্ন করে, ” আমাকে কী এমন দামী বস্তু দিতে চেয়েছিলেন? ” আলত হাসল তীব্র।
” তীব্র এটা কিন্তু ঠিক না। আপনি… ”
” তুর, আমার জীবনে সবচেয়ে দামী তুমি ছিলে। আর যা তোমাকে দিতে চেয়েছি তা আমার কাছে অমূল্য। ”
” তাহলে দেবেন না আমাকে? ” ড্যাপড্যাপ করে তাকিয়ে আছে তীব্রের দিকে। তীব্র ওর কপালে হালকা ঠোঁট ছোঁয়ায়।
” যেদিন তুমি তার যোগ্য হবে সেদিন দেব। আর তার আগে তোমার থেকে আমার অনেক কিছু নেওয়া বাকি আছে। ”
আরষ্ট হয় তুর। তীব্র ওকে দেখে গম্ভীর ভাব নিয়ে বলে, ” আমাদের যেতে হবে। ” তুর কিছু বলার আগেই বেড়িয়ে যায়।
” তুমি আমাকে চেন না বোকা পাখি। আমি তোমার থেকে তোমাকে নেব। আর তুমি টেরও পাবে না। কাল ইচ্ছে করেই তোমার কাছে যায়নি। জানি তুমি আমাকে চেয়েছিলে। তোমার কাছে গেলে বাঁধা দেওয়ার ক্ষমতা তোমার ছিল না। কিন্তু কী বলত? আমি তীব্র। যা যাই তা আমার পুরোটা চাই। অনেক অপেক্ষা করেছি। ফল তো মিষ্টি বানিয়েই ছাড়ব। আমার যা নেওয়ার তা তুমি নিজে আমাকে দেবে। সেটা কেবল শুরু। চাইছিলাম না। কিন্তু বাধ্য করলে আবার খেলতে। ”
ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসি ফুটে উঠে তীব্রের। তুর যে ওকে কতটা চায় তা কাল রাতেই বুঝতে পেরেছে। যে মেয়ে আয়নায় তীব্রের প্রতিবিম্বের উপর পা দিতে পারে না। সে কতটা দুর্বল ওর জন্য বোঝা বাকি নেই। তীব্র ওকে এখানে এনেছিল তুরের মন বোঝার জন্য। আর যা জেনেছে, তাতে… আবার হাঁসে তীব্র।
তীব্র গাড়ির সামনে পা তুলে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তখনি তুর আসে। ওকে দেখে তীব্র গাড়িতে বসে স্টার্ট দেয়। তুর উঠেনা। কয়েকবার হন দেয়। তারপর ও গাড়িতে উঠে বসলে তীব্র গাড়ি চালাতে শুরু করে।
কিছুক্ষন কেটে যাবার পর তুর বেশ ঝাঝাল গলায় জিজ্ঞেস করে, ” কোথায় যাচ্ছি আমরা? ”
তুরের অলক্ষ্যে হাসে ও। ” যেখানেই যাই তোমার উপর জোর নেই তুর। ” নীরব-স্থীর কন্ঠে ড্রাইভ করতে করতে বলল।
তীব্রের এমন খাঁপছাড়া কথা মানতে পারছে না। উত্তেজিত হয়ে বলে, ” কী বলতে চাচ্ছেন? এটাই আমি সেচ্ছায় আপনার সাথে এসেছি। আর আপনি কোনরকম জোর ছাড়াই আমাকে নিয়ে এসেছেন। ”
তখনি রাস্তায় একটা বাঁক আসে। আচমকা মোড় ঘোরার কারনে তুর গাড়ির কাচের সাথে ধাক্কা খেতে নেয়। কারন সিট বেল বাঁধেনি তুর। চিৎকার করে ” তুর… ” বলে একহাতে স্টেয়ারিং ধরে আরেকহাতে তুরকে ধরে গাড়ি দ্রুত ব্রেক করে। তাও কপালে বারি লাগে তুরের। তীব্র দ্রুত ব্যাথা স্থানে ঢলে দিতে দিতে বলে, ” বড় হয়েছ বুদ্ধি গজায়নি। গাড়িতে বসে সিটবেল বাঁধতে হয় জানো না। ”
তীব্রের অস্থিরতা দেখে ওর দিকে তাকিয়ে শুধু এইটুকুই বলল, ” যখন জোর করে নিয়ে এসেছেন। তারমানে আমার যা কিছু হোক তার দায়ভার আপনার। এখন নিজের দায় যদি ঠিক-ঠাক পালন করতে না পারেন তাতে আপনার দোষ আমার না। ”
থমকে যায় তীব্র। ওর দিকে কিছুক্ষন দৃষ্টি রাখে। গাড়ির বক্স থেকে ব্যাথার স্প্রে বের করে কপালে দেয়। ” তারমানে আমাকে অপরাধী করার চেষ্টা। নিজেকে সামলাতে পার যে বলছ? ”
” আপনি যখন ছিলেন না তখন সামলিয়ে নিয়েছি। ”
” তা আমি এসেছি বলে কী এখন আর ইচ্ছে নেই? দায়ভার আমাকে দিতে চাইছ? নাকি নিজের ক্ষতি করে আমাকে অপরাধী করতে চাইছ? ”
তীব্রের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে সামনে তাকিয়ে সোজা হয়ে বসে বলে,” যা ভাববেন তাই। ”
আলত হাসে তীব্র। পরক্ষনেই তুরের গাল চেপে ধরে নিজের দিকে ফেরায় তীব্র। আচমকা আক্রমণে বুঝতে পারে না। ব্যাথা পেয়ে, ” আহহ… ” করে উঠে।
তীব্রের চোখে চোখ পরতেই বলে, ” তোমার দায়ভার আমি আর নেবনা তুর। সেই অধিকার তুমি দেওনি আমাকে। অনধিকার নিয়ে কিছু করিনা আমি। ”
” তীব্র… ” তীব্রের থেকে গাল ছাড়াতে তীব্রের হাত ধরতেই, তীব্র আরো জোরে ওর গাল চেপে ধরে, ” কাল রাতে তুমি সেটা প্রুফ করে দিয়েছ তুর। যখন এতবছর পর তোমাকে কাছে চেয়েছিলাম। অধিকার নিলে ক্ষেত্রবিশেষ নয় সবকিছুর নিতে হয়। বুঝতেই পারছ সবকিছুর…। ” তুরকে আস্তে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয় তীব্র। হাত দিয়ে নিজের মুখ মুছে বলে, ” যেদিন সবটা দিয়ে মেনে নিয়ে আমার কাছে আসতে পারবে সেদিন বলো। অপরাধীও হতে পারব আর দায়ভার ও নিতে পারব। ”
তারপর আর কোন কথা বলে না। তুরের সিটবেল বেঁধে তীব্র গাড়ি ড্রাইভ করতে থাকে। পুরোটা রাস্তায় কেউ কোন কথা বলে না। তীব্র আড়চোখে ওকে দেখে নেয়। তুর জানালায় চোখ রেখে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। চোখ যে জলে ছলছল হয়ে আছে।
দুপুরের দিকে বাড়ি ফেরে ওরা। তুর কিছুটা ভ্রু-কুঁচকায়। তীব্র ওকে ওর বাড়ি নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কেন? তীব্র এই মূহুর্তে ওকে কেন এখানে নিয়ে আসবে? ভাবনায় ছেদ পরে তীব্রের ডাকে।
” রিদ্ধের বিয়ে। তোমার ফ্যামিলির সবাই এখানে আছে। তাই এখানে নিয়ে এলাম। ”
” আমি বাড়ি যাব। ”
তীব্র কথা না বাড়িয়ে টান দিয়ে ওকে গাড়ি থেকে নামায়। গেটে থাকা সিকিউরিটিদের উদ্দেশ্যে বলে, ” এই ম্যামকে যদি বাইরে বেড়োনের চেষ্টা করতে দেখ তাহলে ওখানেই হাত-পা বেঁধে রাখবে। তারপর আমাকে ডাকবে। ”
মাথা নাড়ায় কালো পোশাকধারী সুঠাম দেহের গার্ডগুলো। তুর অবাকের শীর্ষে। প্রচন্ড রেগে গিয়ে বলে, ” আপনি তো বলেছেন জোর করবেন না তাহলে…”
তীব্র ওর কানে ফিসফিস করে বলে,
” তুমি ব্যাপারটা বুঝতে ভুল করেছ। আমি এটাই বলেছি জোর করে তোমাকে আদর করব না। তাই বলে তোমাকে একা রেখে চলে আসব পাগল আমি? আমি রেখে আসি আর তুমি আমার বউ হয়ে, আমার টাকায়, আরেকটা ছেলের সাথে ফূর্তি করে বেড়াবে। পাগল আমি? ”
” আপনি… ” দাঁত কিড়মিড় করে রাগে ফুঁসছে। তীব্র আর কোন কথা না বলে কোলে গুলে নেয়। গার্ডস গুলো মুখ টিপে হাসে। এটা দেখে ভ্রু-কুঁচকে ওদের উদ্দেশ্যে বলে, ” আজকালকার মেয়ে। রোমান্টিকতা বেশি পছন্দ করে। তাই সুযোগ পেলেই কোলে উঠতে চায়। ”
এবার ওরা হেসেই ফেলে। তুরের তো গা জ্বলে যাচ্ছে। ও চিৎকার দেয়..
তুরকে রুমে এনে বেডের মধ্যে ছুড়ে মারে। রুম লক করে একটা টাওয়াল নিয়ে বাথরুমে ঢোকে। পিছনের দরজা দিয়ে রুমে ঢুকেছে। যাতে তুরকে কেউ না দেখে। বিশেষ করে তাইয়্যান। রিদ্ধের বিয়ে এই বাড়িতেই হবে।
তুরের মেজাজ গরম হয়ে আছে। তবুও রুমটার দিকে চোখ যায়। এই রুমে হয়ত দু-একবার এসেছিল। তাও আবার ৬ বছর আগে। ভালো করে দেখতে থাকে রুমটা। সবকিছুই কেমন একটা এক রকম। রুমের দেয়াল আর বেড শুধু সাদা। আর বাকি সবকিছুই সাদা-কালো। যেন দুনিয়ায় আর কোন রঙ নেই। তখনি তীব্র খালি গায়ে চুল মুছতে মুছতে বের হয়। এটা দেখে ভ্রু-কুঁচকায় তুর।
” আপনার বডি দেখিয়ে কী ইমপ্রেস করতে চাইছেন নাকি? ” তুরের এমন কথায় কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পরে। পরক্ষনেই নিজের ঠোঁট কাঁমরে বলে, ” আমার ইমপ্রেস করার ইচ্ছে নেই। তবে তুমি ইমপ্রেস হও তাতে আমার দোষ কেন দেও? ”
তুর তীব্রের দিকে এগিয়ে যায়। ” বাজে কথা বলবেন না। ” তীব্র এবার একদম ওর কাছ ঘেষে দাঁড়িয়ে টাওয়ালটা বিছানায় ছুঁড়ে মারে। তীব্রের খালি বুক ওর সামনে উন্মুক্ত। একদম ফাঁকা। কোন লোম নেই তাতে। বিন্দু বিন্দু পানি জমে আছে। তুরের চোখ পরতেই সরিয়ে নেয়। তীব্র বাঁকা হেসে বলে, ” লজ্জা করছে তোমার? যাহহ আমি তো ভাবলাম লজ্জা-টজ্জা সব জলে গুলে খেয়েছ। ”
” দেখুন আমি ন্যাকা মেয়েদের মত লজ্জা-টজ্জা পাই না। ” অন্য দিকে মুখ ঘুড়িয়ে।
” মেয়েরা লজ্জা পেলে তাকে ন্যাকামি বলে না। সেটা তার শোভা। ”
” আজাইরা পেঁচাল। ” বলেই বিছানায় বসল। তবুও আড়চোখে তীব্রকে দেখছে। যা আয়নায় দেখতে পাচ্ছে তীব্র।
” বললেই হল। তুমি সত্যি লজ্জা পাচ্ছ। যাই হোক ফ্রেশ হয়ে আসো। ”
” আমাকে গোসল করতে হবে। কাল করিনি। আর আমার কাছে জামা-কাপর নেই।”
“ তাতে কী? ”
” তাতে কী মানে? আমি কী….”
” তুমি তো বললে লজ্জা-টজ্জা পাও না। আর আমি তোমার হাজবেন্ড। সো… ” শয়তানি হাসি দিয়ে। তুর কিছু বলার আগেই একটা ধূসর টি-শার্ট পরে বেড়িয়ে যায় দরজা লক করে।
,
,
,,
বিয়ের আয়োজন হচ্ছে। আজ রাতেই গায়ে হলুদ। বিয়ের যাবতীয় খরচ তীব্রের। হলে করতে চেয়েছিল কিন্তু তুরের জন্য করেনি। এই বিয়েতে তাইয়্যানকে মা ফিরিয়ে দিতে চায় তীব্র।
তীব্র তাইয়্যানের কাছে যেতেই তাইয়্যান দৌড়ে ওর কোলে উঠে গলা জড়িয়ে ধরে, ” পাপাই কোথায় চলে গিয়েছিলে। আমি কত মিস করেছি জানো? ” তীব্র হাসে। ” সকালে উঠে পাপাকে দেখনি বলে এমন করছ। রিদ্ধ আংকেল তো ছিল। ”
” আর রিদ্ধ আংকেল। স্যার আপনার বউ দেখে বিয়ের স্বাদ মিটে গেছে। আর ছেলে দেখে বাচ্চার। উফফ… ” হাফ ছাড়ে রিদ্ধ।
” রিদ্ধ আংকেলকে জ্বালিয়েছ। ” মাথা নাড়ায় তাইয়্যান।
” কী? ” চোখ ট্যারা হয়ে আসে রিদ্ধের। এক মুহুর্তের জন্য শান্তি দেয়নি। তখনি তাইয়্যান বলে, ” পাপা তুমি কোথায় ছিলে? জান আমি… ”
” পাপাই তোমার জন্য মাম্মাম আনতে গিয়েছিলাম। তোমার না মাম্মাম চাই? ”
“হা… [ মাথা নাড়ায় ] কোথায় মাম্মাম? ”
” এইত বাবা। তুমি আমার কথা শুনলে এনে দিব নাইলে.. ”
“ তাহলে এবার যাও। আমার একটু কাজ আছে। ”
” আচ্ছা। ” চলে গিয়ে আবার ফিরে আসে। ” আচ্ছা পাপাই, এটা কার বাড়ি। ” তীব্র হালকা হেসে ওর কপাল চুমো দিয়ে বলে, ” তোমার বাড়ি। ”
” তাহলে আমি তীরকে বের করে দিব। ” বলেই তাইয়্যান দৌড়। ” আরে তাইয়্যান শোন। ” কিন্তু কে শোনে কার কথা। তীব্র আর রিদ্ধ দুজনেই হাসে। তারপর দুজনেই কাজের ব্যাপারে ডিসকাসড করে। সবকিছু দেখে ওরা তীব্রের রুমের দিকে যায়। তীব্র লক খুলে রুমে ঢুকতেই চোখে শস্যে ফুল দেখে। রিদ্ধ ওকে ঢুকতে বললে দ্রুত দরজা লাগিয়ে বুকে হাত দিয়ে বাম পাশটা ঘসে নেয়। ভ্রু-কুঁচকায় রিদ্ধ। ” কীহল স্যার? ”
“” রিদ্ধ তুমি যাও। আমার রুমে কাজ আছে। ”
” কিন্তু আমিও তো কাজের জন্য রুমে। ”
” যাও তুমি। ”
” স্যার। ”
” রিদ্ধ। ” একপ্রকার জোর করে রিদ্ধকে পাঠিয়ে দেয়। তারপর নিজেকে সামলে রুমে ঢোকে।
” এসবের মানে কী তু..” দু-টো ঢোক গিলে নেয়। তুর ওর দিকে তাকিয়ে টেডি স্মাইল দেয়। ” কেন? ”
” তুমি… ” আর বলতে পারে না। কারন তুর শাওয়ার নিয়ে সিল্কি ভেজা চুলগুলো কাকের বাসা করে গায়ে টাওয়াল জড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
” এই যে হ্যালো মি. তীব্র এভাবে কী দেখছেন? ”
রেগে যায় তীব্র। ” এই কী অবতার নিয়ে দাঁড়িয়ে আছো? যাও চেঞ্জ করে আসো। ”
এইটা শুনে তুর দুষ্ট হাসি দিয়ে বলে, ” যাহহ বাবা এটা কী হল? ( মাথা চুলকে ) আমার যতদূর মনে পরছে কেউ আমাকে ইউথআউট ড্রেস থাকতে বলেছে। সে নাকি আমার হাজবেন্ড। আমি তো তাও টাওয়ালে আছি। সমস্যা কী? ” পায়ের উপর পা তুলে বিছানায় বসে।
তীব্রের মাথা ঘুরছে। ও মজা করার জন্য বলেছিল কিন্তু ও সিরিয়াসলি নিবে।
” দেখ রুমে যে কেউ আসতে পারে। ”
তুর উঁকি দিয়ে দেখে দরজা লক করা। তীব্র কিছু বলতে গিয়েও পারে না। ও তুরের হাত টেনে বিছানা থেকে উঠাতে চাইলে তুর ওকেই ফেলে দেয়। তুর ওর বুকের উপর মাথা দিয়ে ঠোঁট কাঁমরে হাসে। তুরের ভেজা চুল তীব্রের মুখে। ” হচ্ছেটা কী তুর? আমার কাজ আছে। এসব কী ছেলে-মানুষী? ”
” তুর ওর দিকে তাকিয়ে তীব্রের ঠোঁটে হাত দেয়। ” এত বেশি ভদ্রতাও ভালো নয় ড. রায়হান। আমাকে জোর করে এখানে আটকে রেখে ন্যাকামি হচ্ছে। সহ্য না হলে যেতে দিন। আমি বাড়ি যাব। ”
তুরের মুখে ড. রায়হান কথাটা শুনেই রেগে যায় তীব্র। তারউপর আবার বাড়ি ফেরার কথা। তীব্র তুরকে নিজের উপর থেকে ফেলে নিজেও তুরের উপর ভর ছেড়ে ওর হাত চেপে ধরে। হাতে ব্যাথা পায় তুর।
” কী করছেন? ছাড়ুন। ”
” জাস্ট এই কারনেই আমি কিছু বলিনি এতক্ষন। কিন্তু বাধ্য করলে তুমি। এখন তো কিছু শুনব না। তুমি আমাকে টিজ করছ তাও আবার… ”
” তীব্র ছাড়ুন। ” নিজের হাত কঁচলাতে শুরু করেছে তুর। কিন্তু তীব্র নাছোড়বান্দা। ও ধীরে ধীরে তুরের ঠোঁটের দিকে এগোতে থাকে। তুরের খুব কাছাকাছি এলেই চোখ বন্ধ করে নেয় তুর। ঘন হয়ে আসছে ওর শ্বাস। ঠিক তখনি দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ আসে। হুশ ফেরে তীব্রের। তীব্র উঠতে নিলেই তুর আটকে দেয়। ” এখন কেন যাচ্ছেন? ” তীব্রের গলা জড়িয়ে।
” তুমি দিন দিন আসলেই আস্ত একটা নির্লজ্জ হয়ে যাচ্ছ। ”
মুচকি হাসল তুর। ” ওইযে বললাম আমি ন্যাকা মেয়েদের মত নই। এবার বুঝেছেন অসময়ের বিরক্তি কেমন লাগে? ”
” হুমম। এবার ছাড়ো। ”
” কী অবস্থা? আমার থেকে ছাড়ানোর শক্তি নেই আপনার? ”
তীব্র কিছু বলতে যাবে তার আগেই দরজায় কড়া নাড়া বৃদ্ধি পেতে লাগল। তীব্র দ্রুত ছেড়ে দাঁড়াল। তুর হেসে কুটিকুটি। তীব্র দরজার দিকে এগোচ্ছে রাগে গজগজ করছে, ” এই কাজের শোধ আমি সুদে-আসলে তুলব তুর। ওয়েট & সি… ”
দরজা খুলতেই আরেক জ্বালা। রিদ্ধ… ” হ্যালো স্যার। ” দাঁত কেলিয়ে। ” রিদ্ধ তুমি? তুমি আবার…? ” রেগে গিয়ে সামনে এগোতেই রিদ্ধ নিচের দিকে ইশারা করল।
” পাপা আমি। ” নিচের দিকে তাকিয়ে দেখে তাইয়্যান গাল ফুলিয়ে বলছে। তীব্র দরজা দিয়ে উঁকি দিয়ে আছে। কারন তুর এখন ওখানেই।
” পাপাই তুমি কী করছ? এত ডাকার পর খুললে না। আমি ভিতরে ঢুকব। ”
” এই বাবা না। তীব্র নিচে বসে একহাত দিয়ে দরজা আর আরেকহাতে তাইয়্যানকে ধরল।
” পাপাই একটা কাজ করছি তুমি আসতে পারব না। ” তখনি তুর দরজার এপাশে দাঁড়িয়ে চিমটি কাটল। ” আহহ.. ” করে উঠল তীব্র।
” কী হয়েছে পাপাই.. ”
” কিছু না। দম বন্ধ হয়ে আসছে তীব্রের। কারন তুর ওর হাতে চিমটি দিয়ে শেষ পর্যন্ত কাঁমর দিয়েছে। তাইয়্যান তাই কিছু বলতে পারছে না। তাহলে তাইয়্যান জেনে যাবে ভিতরে কেউ আছে। আর তুর সন্দেহ করবে ওকে কেউ বাবা বলছে। পরেছে বিপদে। রিদ্ধ অবলার মত দাঁড়িয়ে আছে।
” স্যার কী হয়েছে? ”
” হ্যা কী হয়েছে আপনার তীব্র। ” আদুরে গলায় বলেই তীব্রের কব্জিতে আবার কাঁমর দেয় তুর। তীব্র সহ্য করতে না পেরে রিদ্ধের হাত চেপে ধরে চোখ খিঁচে বন্ধ করে নেয়। এটা দেখে রিদ্ধ বেশ কড়া গলায় বলে, ” স্যার আপনি কী সত্যি শুধরাবেন না? কী করেন হাত ছাড়েন সামনে আমার বিয়া। ”
তীব্র ব্যাথায় কিছু বলতে পারছে না। তুর ছেড়ে দিলে কাতর কন্ঠে রিদ্ধের দিকে তাকিয়ে বলে, ” রিদ্ধ প্লিজ তাইয়্যানকে এখান থেকে পাঠাও। ”
কথাটা শুনেই রিদ্ধ লাফিয়ে উঠে, ” তাইয়্যানকে পাঠাব মানে? আপনি কী করবেন? ”
” আমার রুমে.. ” আবার কাঁমর দেয় তুর। ” আহহ করে উঠে।
” স্যার আমি আপনার রুমে কেন যাব? আর তাইয়্যান? ছি স্যার… আপনি দিন দিন কেমন হয়ে যাচ্ছেন? ”
রেগে যায় তীব্র। কিন্তু কিছু বলতে পারছে না। তুরের কাঁমর, দরজার চিপা, তাইয়্যানের বিরক্তি আর এই রিদ্ধের বকানি অতিষ্ট তীব্র। কিন্তু তাইয়্যানের সামনে কিছু বলতে পারছে না। তাইয়্যান বাবার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করছে কী হয়েছে?
” কী হয়েছে পাপা? ” তীব্র হালকা হেসে বলল, কিছুনা। ”
” তাহলে ভিতরে ঢুকতে দিচ্ছ না কেন? ”
তীব্র গলা ঝেরে বলল, ” ১মিনিট।” বলেই দরজা লাগিয়ে দিয়েই তুরের দিকে তেরে গেল। কিন্তু তুর ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে হাত গুজে দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়াল। ” তুর তুমি? ” তুর কিছু না বলে তীব্রকে জড়িয়ে ধরে নাকের মধ্যে একটা কাঁমর দিল। ও কিছু বলবে এদিকে তাইয়্যান দরজা ভেঙে ফেলছে। তীব্র কিছু বলতে পারছে না। তুরকে ছাড়াতেও পারছে না।
” কী হল দী গ্রেট ড. রায়হানের। আমার সাথে পেরে উঠছেন না। ”
” তুর প্লিজ এমন করো না। বাইরে… ” থেমে যায়। ” তুর ওর মুখে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে আদুরে গলায় বলে, ” নতুন গার্লফ্রেন্ড? ওহহ তাই আসতে দিতে চাইছেন না? আহারে.. ”
বলেই ওর গালে কিস করে? তীব্র ওকে ছাড়াতে চায় কিন্তু পারে না। বুঝতেই পেরেছে ফাঁদে পরেছে। আর সেই সুযোগটাই নিচ্ছে তুর। ” তুর প্লিজ…? ”
” পাপাই দরজা খোল। ” রুম লক তাই আওয়াজ আসছে না। কিন্তু দরজার আঘাত বুঝতে পারছে। এদিকে তুর ওকে জড়িয়ে রেখেছে। ছাড়াতেও পারছে না। কোন রকম ওকে দূরে ঠেলে আবার দরজা খোলে তীব্র।
” স্যার আপনি কী ওপেন-দি-ডোর, ক্লোজ-দি-ডোর খেলছেন? ”
তীব্র রিদ্ধের মাথায় গাট্টা মারে। ” পাপাই পরে কথা বলব।” তখনি রিদ্ধ বলে, ” ভিতরে কেউ আছে স্যার? ” তীব্র ঠিক এই ভয়টাই পাচ্ছিল আর রিদ্ধ তাই করল। তাইয়্যানের দিকে তাকাতেই দেখে ও প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। ” পাপা ভিতরে কেউ আছে? ”
তীব্র জোর করে হেসে বলল,” আছে। একটা বান্দর। তুমি ভয় পাও তাই আমি ওকে আটকে রেখেছি। ” তখনি তীব্রের নাকে কাঁমরের দাগ দেখে তাইয়্যান।
” পাপা বাঁদর তোমাকে কাঁমরেছে। ”
” হ্যা, বাবা। তোমাকে যদি কাঁমর দেয়। তাই আমি যেতে না করছি। তুমি বরং দাঁড়াও। আমি বাঁদরটাকে আগে ধরি। ” তুরের দিকে তাকিয়ে। তুরকে বাদর বলায় ক্ষেপে যায় ও।
এতক্ষনে রিদ্ধ বুঝল ঘটনা। ” রিদ্ধ”
” জি স্যার? ”
” এখনি তাইয়্যানকে নিয়ে যাও। নাইলে….( আবার কাঁমর দেয় তুর।) আহহহ… নাইলে তোমার 1st night আমি পুরো দেশে লাইভ টেলিকাস্ট করব।”
” ধন্যবাদ স্যার। কিন্তু দরকার নাই। এমনি অনেক করছেন। ”
” রিদ্ধ ওকে নিয়ে যাও। ”
বলেই দরজা লাগিয়ে দেয়। কিন্তু তাইয়্যান যেতে নারাজ। ও ক্রমাগত দরজা আঘাত করেই যাচ্ছে। ওর বাবাকে যদি ওই বাঁদর কিছু করে।
” কী শুরু করেছ তুমি? ” প্রচন্ড রেগে।
” আমাকে যেতে দিন। আমি বাড়ি যাব। আর নাইলে.. ”
” নাইলে কী? ” তুরকে দরজার সাথে চেপে ধরে।
” নাইলে এই বাঁদর নিজের বাঁদরামি দেখাবে। যে বাইরে দাঁড়িয়ে আছে সে ঠিক জেনে যাবে আপনি আমার সাথে আছেন। আমাকে বাঁদর বলা। সো বলুন যেতে দেবেন আমাকে। ”
” তুর… ” এদিকে দরজা ভেঙে ফেলছে তাইয়্যান এমন জোরে আঘাত করছে।
“” বলুন যেতে দেবেন কিনা? নাইলে আমি… ”
বলেই চিৎকার দিতে নেয়। কিন্তু তার আগেই তীব্র ওর ঠোঁটে ঠোঁট দেয়। এমন অবস্থায় তীব্র এমন কিছু করবে ধারণা ছিল না তুরের। ও ছাড়ানোর চেষ্টা করলে আরো জোরে আঁকড়ে ধরে। তুর শান্ত হয়ে গেলেই ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিল তীব্র।
” তোমাকে আমি পরে দেখছি তুর। ” বলেই দরজা খুলে বাইরে থেকে লক করে দেয়। তাইয়্যানের কাছে যায়।
” পাপাই… তোমাকে বাঁদরটা কিছু করেনিতো? ”
” নাহহ পাপা। তুমি এখন যাও রিদ্ধ আংকেলের সাথে। নাহলে কিন্তু মাম্মা এনে দেব না।”
” কিন্তু মাম্মাম কবে আনবে? ”
” খুব তাড়াতাড়ি। তাইয়্যানের জন্য কিউট মাম্মাম এনে দিব। ”
” তাল পাতার সিপাহির মত। ”
” হুমম। এবার যাও। ”
তাইয়্যান বেশ খুশি হয়ে চলে গেল রিদ্ধের সাথে। এদিকে তীব্রের মেজাজ প্রচন্ড বিগড়ে আছে। আজকে তুরের কিছু একটা ব্যবস্থা করবেই। বড্ড বেশি বাড় বেড়েছে। ইচ্ছে করে ওকে বিরক্ত করার জন্য এসব করছে ও।
,
,
,
🖤
[ বাকিটা পরের পর্ব গুলোতে জানবেন🖤 ]
গল্পটা আর ৩-৪ পর্বে শেষ হয়ে যাবে। পুরো গল্পটা যেমন ছিল তার ইন্ডিং তেমনি হবে। সো….
🖤
Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr