বন্ধ_দরজায়_তুমি🖤Part: 31
#Written_By_Mêhèriyâr_Mêhèr
…….
আদালত তুরকে নিজের পক্ষে কিছু বলতে বললে তুর অনুভূতিশুন্য ভাবে মাথা নাড়িয়ে না জানাল। তীব্র কাহিনী গুলোকে যেভাবে সাজিয়ে হার্ড প্রমান আর যুক্তিসঙ্গত কারন আদালতে পেশ করেছে এরপরে তুরের অবাস্তব ছেলে ভোলানো কথা কেউ বিশ্বাস করবে ভাবাটাও বোকামি। তাই তুরের সম্মতি আর সমস্ত প্রমান বিবেচনা করে তীব্রকে আদালত নির্দোষ ঘোষণা করে সসম্মানে মুক্তি দিয়ে দিলো সাথে তুরকে কিছু বানী প্রদান করল যা তুরের কান পর্যন্ত এলো না।
রায় ঘোষনা করার পর সবাই যখন নিজেদের মত কানা ঘুশা করতে করতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকল। তুর তখন কাঠগড়ায় শান্তভাবে দাঁড়িয়ে কি হয়েছে তা বোঝার চেষ্টা করতে লাগল। কিন্তু নিজের মতিষ্কে অনেক খোঁজার পরও নিজেকে সান্ত্বনা দেওয়ার মত উপযুক্ত কোন কারন পেল না।
নিস্তেজ মানুষের মত নিজের শরীরের ভর ছেড়ে দিয়ে কাঠগড়া থেকে নেমে আসতেই তীব্র কাঠগড়া থেকে নেমে গিয়ে ওর সামনে দাঁড়ায়। সামনে কে দাঁড়িয়েছে সেটা দেখার মত ইচ্ছে বা মানসিকতা কোনটাই তুরের নেই। তীব্র ওর দুহাত দিয়ে তুরের দুহাত নিজের হাতে মুঁঠে পুড়ে নিলেও তুর কোন রিয়েক্ট করেলো না। ও তখনো শান্ত ভাবে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। যেন ওর কিছু যায় আসে না যে , কে ওকে ধরে আছে।
তীব্র ওর হাত ধরে হাটু গেড়ে সবার সামনে চিৎকার করে বলল,
——– ” তুর I love you. I love u তুর…..ভালোবাসি তোমাকে।”
তীব্রের এই কথায় আদালতের সবাই হাতে তালি তো কেউ সিডি বাজালো । সবাই যেন মুভির কোন সিন দেখছে। কিন্তু তুরের তাতে কোন রিয়েক্ট হলো না। ও শান্ত ভাবে তখনো নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল। তীব্র এটা দেখে একটু অবাক হলো । ও বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে তুরের বাহু ধরে ওকে ডাকল। কিন্তু তাতেও তুরের কোন সাঁড়া নেই । তাই ও এবার তুরকে বেশ ঝাকিয়ে বলল, “ তুর…” তীব্রের ডাকে এবার হুশ ফেরে তুরের। ও ক্লান্ত চাওনি নিক্ষেপ করে তীব্রের দিকে।
তুরের চোখের দিকে তাকিয়ে অদ্ভুত শীতল অনূভব হয় তীব্রের। তুরের চাওনিতে কোন সজীবতা ছিলই না। বরং ওর মনে হলো এক মৃত চাওনি দিল তুর। যার মাঝে কোন অনুভুতি বা আবেগ অবশিষ্ট নেই। তুরকে ওর জলজান্ত কোর জম্বি মনে হলো। যার প্রান আছে কিন্তু সেই প্রানের কোন বেঁচে থাকার বোধ নেই।
তুর অপলক মৃত চাওনিতে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। তীব্র কিছু বলতে যাবে তার আগেই তুর শান্ত ভাবে তীব্রের দুহাত থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিল। তারপর দুপা পছনে সরে গম্ভীর গলায় বলে উঠল,
——-” আমি এরজন্য ক্ষ….. ক্ষমা করব না আপনাকে।”
তীব্রের মনে হলো তুর দুলছে। তুর কিছু বুঝতে পারছে না । ওর মনে হচ্ছে ওর মাথার উপরিভাগে খুব ভারী কিছু রয়েছে। হয়ত অদৃশ্য কিছু আঘাত করছে। হঠাৎ করেই সামনেটা ঝাপসা হয়ে এলো । তুর পড়ে যেতে নিলে তীব্র ধরতে চায় । কিন্তু তার আগেই তুর নিজেকে সামলে নিয়ে তীব্রের থেকে আরো দূরে সরে যায়। মাতাল মাতাল লাগছে ওর। কোন রকম ভাবে নিজের আশেপাশে তাকিয়ে ওর বাবা আর তোয়া দেখতে পায়। মাতালদের মত টলতে টলতে গিয়ে ওর বাবাকে জড়িয়ে ধরতে চায় কিন্তু পারে না নিজেকে সামলাতে । তাই পরে যেতে নিলেও ওর বাবা পরম আদরে মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নেয়। তুর তখন কোন কান্না বা ধরা গলায় না ক্লান্তির সুরে জোরে জোরে নিশ্বাস নিয়ে ওর বাবাকে বলে,
—— “ আব্বু আমার না এখানে অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমাকে বাড়িতে মায়ের কাছে নিয়ে চল। “
দুনিয়ার মানুষ না বুঝলেও ওর বাবা ঠিকি বুঝতে পারছে এই বিচার ওনার মেয়ে মেনে নিতে পারেনি। কারন অন্য কেউ না জানলেও ওনি জানেন ওনার মেয়ে কি করতে পারে? আর তীব্র কি বলেছে তাতেও এতটুকু যেন বিশ্বাস করতে পারল না। তাই ওনি কথা না বাড়িয়ে তুরকে নিয়ে বাইরে চলে এলেন। ওনার সাথে তোয়াও বাইরে চলে যায়।
—— ‘‘ কংগ্রেস স্যার ।”
——‘‘ ও হুমম…”
রিদ্ধের কথায় তীব্রের হুশ ফেরে এতক্ষন আনমনে তুরকে দেখছিল। বড্ড অবাক লাগছে তুরকে। তুরের এখন স্বাভাবিক ভাবে রাগ বা কান্না করা উচিত ছিল । কিন্তু তুর তা না করে এমন শান্ত বিহেভ করবে তীব্র ভাবেনি। কেমন জানি ব্যাপারটা ভালো লাগল না তীব্রের।
—– “ স্যার আমি ভাবতেও পারিনি আপনি কোন রকম পাওয়ার বা কারো হেল্প ছাড়াই শুধুমাত্র যুক্তি প্রমান দেখিয়ে এভাবে সবটা সামলে নেবেন । সত্যি আপনার জবাব নেই। “
হঠাৎ খেয়াল করল তীব্র ওর কথা শুনছে না। তাই ও তীব্রকে আবার ডাকল। তীব্র বেশ চিন্তিত কন্ঠে রিদ্ধর ডাকে সারা দিল।
—— “ স্যার কোনো সমস্যা ? ’’
এবার নিজের ভাবনার জগৎ থেকে সম্পূন বেড়িয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে নিল। তারপর বেশ কনফিডেন্ট নিয়ে বলল,
—— ‘‘ যে মানুষ ভবিষ্যত সর্ম্পকে না ভেবে বর্তমানের কাজ করে সাহায্য তার প্রয়োজন হয়। Sr. কখনো ভবিষ্যত না ভেবে কাজ করে না। তাই এমনটা হওয়ার ছিল। ’’
—— ‘‘ আপনি জানতেন এমন কিছু হতে পারে আর তাই…..”
ওর কথা শেষ না হতেই তীব্র বলে উঠল,
—— “ ভবিষ্যত নিয়ে কখনো সঠিকভাবে কিছু বলা যায় না। তবে … “ কথাটা সর্ম্পূন না করে রিদ্ধের দিকে তাকায়, তারপর আবার বলে,
—– “ যদি বাস্তব জ্ঞান দিয়ে বিবেচনা করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে কী হতে পারে তা বুঝতে পারা তেমন জটিল কিছু নয়। ”
কথাটা বুঝলেও তীব্র যা বুঝাতে চেয়েছে তা বুঝতে পেরেছে কিনা সেটা নিয়ে দ্বিমত আছে রিদ্ধের । যদিও তাতে আক্ষেপ নেই ওর।
তীব্র বড় সড় একটা নিশ্বাস ফেলল। এটা দেখে রিদ্ধ কিছু বলতে যাবে তার আগেই তীব্র বলল,
—— ” সবটাই হলো। এখন বাকি আছে নিজের নির্দোষিতার কথা সবাইকে জানানো। রিদ্ধ…. ”
—— ” ইয়েস স্যার….. ” উৎসুখ হাশি দিয়ে । এবার তীব্র নিজেও হেসে বলল,
—— ” বিখ্যাত ইন্ডাস্ট্রিয়ালিজ Sr. মানে ড. রায়হান নিজের নাবালিকা প্রেমিকা তথা ওনার বর্তমান ওয়াইফের আবদার পুরন করতে জেলে চলে গেছেন৷। এই নামে কালকের নিউজে বেকিং নিউজ দিয়ে দেও। আর প্রত্যেকটা টিভিতে জানো এই নিউজ আজকে টেলিকাস্ট করা হয় এটা ইনসিউর করো। বাকিটা পাবলিক নিজেই করে দেবে আমাকে রোমিও বানিয়ে। এরপর কেউ সমালোচনা না প্রেমিক হিসেবে আলোচনা করবে আমার। আর এটাই হচ্ছে ভালোবাসার শক্তি মানে Power of love…… ”
——– ” You are great sir….. ”
তীব্র কিছু বলল না শুধু মুচকি হাসল। রিদ্ধ মোবাইলে কল আসার কারনে চলে গেল। এটা দেখে তীব্র নিজের মনেই বলে উঠল,
—— “ যাকে নিজের ভবিষ্যতের জন্য ডিসাইড করেছি। তার জন্য কোন ব্যবস্থা করব না তা কী করে হয়? তুর নামের অমূল্য সম্পদের দাবিদার আমি এমনি এমনি নামহীন করে রাখতাম। 25% শেয়ারের বিনিময় তুর না। দাম দিয়ে তুরকে কিনিনি কিন্তু তবুও ও আমার কাছে দামী। “
তীব্র বাইরে যেতেই দেখে তায়ান , তুষা আর অরুন দাঁড়িয়ে আছে। বুঝতেই পারছে ওরা সবাই রেগে আছে। ও মাথা নিচু করেই ওদের সামনে গিয়ে দাঁড়ায় । তুষা নিজেকে সামলাতে না পেরে ইচ্ছে মত তীব্রকে মারতে শুরু করে। তীব্র ওকে সামলাতে না পেরে জড়িয়ে ধরতেই শুরু হয় ওর গালাগালি,
—— “ কুত্তা , শুয়ার, স্বার্থপর কোথাকার । এতদিন তোর সাথে আছি । আর হারামি তুই বিয়া কইরা মাইয়ারে প্রেগন্যান্ট কইরা জেলের ভাত খাইছোস অথচ আমাগোরে জানানোর সময় তোমার হয়নাই। আস্তা হারামি তুই। “
তায়ান আর অরুন কোন কথা বলছে না। তীব্র ওদের কিছু বলার সাহস পাচ্ছে না । এখন কিছু বললে মাইরও খেতে পারে। অরুন মুখ খুললেই পিন মারবে । আর তায়ান কিছু বলবে না রাগ দেখনো ছাড়া। এর চেয়ে তুষার গালাগালি ভালো মনে হল তীব্রের। কিন্তু পরে ভাবল না। একবারের জন্য কিছু বলা উচিত। ও কিছু বলতে যাবে তার আগেই তায়ান বলল,
—— “ কাজটা একদম ঠিক করিসনি তুই। মানলাম তুই প্রথমে জানতি না। কিন্তু যখন তোয়ার কাছ থেকে সবটা জানতে পারলে তখন ত দরকার ছিল তুরের কথা সবাইকে জানানো । তা না করে তুই বিয়ে করে,,,,,”
—— “ হইছে রে আর কত? কম তো সহ্য হয়নি। পুলিশের ডান্ডার বাড়ি পর্যন্ত খাইছি। “
তুষাকে ছাড়িয়ে তায়ানকে জড়িয়ে ধরে। তায়ান প্রথমে ছাড়াতে চাইলেও পরে হার মেনে নেয়। এইটা দেখে অরুন আবার ফোড়ন কাটে,
—— “ আল্লাদ দেখলে বাঁচি না। আরে সালা ও জেল থেকে বের হইছে। যুদ্ধ জয় করে নাই। “
এইটা শুনে তীব্র কিছু বলার আগেই তুষা বলে উঠে,
—— “ তুমি ঠিক করেই রাখছো ওর সাথে এমন করবা।?”
কথাটা শুনে অরুন আহমক হয়ে তুষার দিকে তাকায়। নিজের হবু বউ + প্রেমিকা যখন আরেকজনের জন্য ঝারে কেমন লাগে। ও রেগে তীব্রর দিকে তাকাতেই তীব্র চোখ মারে তাতে আরো ক্ষেপে যায় অরুন।
—– ‘‘ এই শোন আমার না বিশ্বাস হয়নাই তুই আদো মেয়েটাকে বিয়ে করছোস ? “
—– “ তাইলে রেজিষ্ট্রি পেপার কি তোর ? “
—– “ তাইলে তো ভালোই হতো। তোর পছন্দের মেয়েকে তো বিয়ে করে শোধ নিতাম । ‘’
এইটা বলে বেশ ঘাবড়ে যায় অরূন। কারন তুষা রাগী ফেস করে তাকিয়ে আছে। এইটা দেখে অরূন তায়ানকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই তুষা বলে,
—– “ কেন আমাকে আর ভালো লাগে না। এখন …..”
এইজন্যে তুষাকে এত ভালো লাগে। সবসময় ওর জন্য অরূনের সাথে ঝগড়া করে। যদিও এমনি খারাপ লাগে কিন্তু যখন ভাবে অরুন ওর পিছে লাগে তখন সেইটা আর লাগে না।
—– ” আচ্ছা থাম তোরা। এখন আমার বউয়ের কাছে যাওয়াটা বেশি প্রয়োজন। ”
তীব্র ওদের ছাড়িয়ে তুরের কাছে যেতে চায় তখনি তায়ান ওর হাত ধরে। তীব্র জিজ্ঞেসুর দৃষ্টিতে তায়ানের দিকে তাকাতেই তায়ান বলে উঠে,
—— ” তুর মেয়েটা কিন্তু খুব সহজ সরল। খুব ভালো মেয়ে৷ জানিনা কতটুকু সত্যি আছে তোর কথায় কিন্তু ওকে দেখে বুঝেছি অনেক কষ্ট পেয়েছে । যে কারনেই হোক তুই মুক্তি পা এটা হয়ত চায়নি। মেনে নিতে পারছে না। ওকে যত্নে আদর দিয়ে বুঝাস রাগ না করে। ”
তীব্র মাথা নেড়ে আশ্বস্ত করল। এটা দেখে অরুন বলল,
——– ” আমি শুধু এর টেস্ট টা দেখছি। নারী বিদ্বেষী ভান ধরে এরকম কাজ করল তাও আবার এই বয়সী একটা মেয়ের সাথে। ”
——- ” চুপ করবি তুই। আমি তো নারী বিদ্বেষী হয়েও পারলাম৷ তুই কী করছোস? স্কুল লাইফের প্রেম অথচ এখন ফিয়ন্সি। ”
কথাটা যেন অরুনের গায়ে কাঁটা হয়ে বিধল। ও তুষার দিকে রাগী চোখে তাঁকাতেই তুষা বাহানা করে কেটে পরল। তারপর বেড়িয়ে পরল।
বাইরে বেড়োতেই তীব্রের সাথে শাওনের দেখা হয়। তীব্র ওকে দেখে পাশ কাটিয়ে যেতেই শাওন বলে উঠল,
——- ” ভালোই গেম খেলতে পারলেন আপনি। মেয়েটাকে একদম নিজের বউ বানিয়ে নিলেন। ”
কথাটা শুনে তীব্র থমকে গেল। ঠিক হজম করতে পারল না। কারন এটা তুরের দিকে বাজে ইঙ্গিত করছে৷ তীব্র কিছুটা রেগে গেল কিন্তু নিজেকে শান্ত করে আলত হাসি দিল,
——- ” তোমাকে বলেছিলাম না তুর অপবিত্র নয়। কিন্তু এটা বলিনি তুর অবুঝ। নাইলে তুমি বল নিজের বিয়ের কথা নিজেই জানে না। আর তাইত তোমার কাছে আমার নামে নালিশ করেছে।।”
কথাটা শুনে শাওনের রাগটা বেড়ে যায় রীতিমতো জ্বলছে ওর গা। ও বেশ রেগেই বলে,
—— ” তারমানে….. ”
—— ” হুমম তুর যা কমপ্লেন করেছে সব সত্যি। আর এটাও সত্যি ও আমার বউ। যা তুর জানত না। এখন নেশার ঘরে কেউ কি পেপারে সাইন করছে তাতে কি আসে যায়। বিয়ের কথা জেনে বা না জেনে ও কি করত? ”
——- ” আপনি…. ”
শাওনের রাগ দেখে এবার চোখ মুখ করে তীব্র বলে,
——- ” তুরকে আমি তোমার আর তুরের নজরে ইউজ করেছি আমার নজরে না। আর এমনিতেই [ অনেকটা আলসেমি ঝেড়ে ] 25% শেয়ার মানে জানো। বিয়ের কাবিন স্বরুপ দিয়েছি তা এমনি এমনি [ কথাটা শাওনকে রাগানোর জন্যই বলল ] সে যাই হোক। ”
শাওনের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। আর তীব্রের তাতে বেশ মজা লাগছে। একটা কথা সবসময় মানে তীব্র, “যদি কেউ আপনাকে রাগানোর জন্য কিছু বলে তাহলে না রেগে শান্ত ভাবে হাসি দিন। এতে সে আপনার থেকে কাঙ্ক্ষিত ফল না পেয়ে নিজেই চুপ হয়ে যাবে। পরে যদি সেই ব্যাপার নিয়ে তাকে হালকা নাড়া দেন। আপনার কিছু করতে হবে না সে এমনি জ্বলে পুড়ে ছাই হবে।” যা শাওনের সাথে হলো।
তীব্র ওকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার আগে বলল,
——- ” শাওন আমি জানিনা তুমি আমাকে কী ভাব? কিন্তু তুরের ভালো চাও। বা দ্যা ওয়ে তুর আমার ওয়াইফ। ওকে আমি বিয়ে করে স্ত্রী হওয়ার সব সন্মান দিয়েছি। আমার যদি বাজে ইন্টেশন থাকত তাহলে নিশ্চয়ই আমি আদালতে ওকে অবুঝ বানাতাম না। ওকে নিয়ে আমার কোন প্লান নেই। তাই তুর আর আমাকে নিয়ে ভাবা বন্ধ কর। তুমি বুদ্ধিমান বেশি বলতে হবে না আশা করি। ”
শাওনের সাথে কথা বলে এদিকে আসতেই তীব্রের প্রচন্ড রাগ উঠে। মিডিয়া আর মানুষ তুরকে ঘিরে ধরেছে। ওদের জন্য তুর নিজের বাবার কাছ থেকে ছিটকে পরেছে। ওনি তুরের কাছে যেতে পারছে না। এমনিতে তুর মেন্টালি এখন স্ট্রোং নয়। তার উপর এত মানুষের ভিড়। প্রেস মিডিয়াদের নানা রকম উদ্ভট আর বাজে প্রশ্ন সহ্য করার ক্ষমতা তুরের নেই। ক্যামেরার প্রতিটি ফ্লাস যেন তুরের কাছে বিদ্যুৎ চমকানোর সময় যে ভয় হয় সেই ভয়ের আভাস করাচ্ছে একদম চুপসে গেছে ও। আর ওদের অবান্তর কুরুচিকর প্রশ্ন শুনে পাগল প্রায় হয়ে গেছে। কিছুই বুঝতে পারছে না। বার বার পাগলের মত হাত দিয়ে নিজেকে আড়াল করার চেষ্টা করছে।
তীব্রের সাথে তুরের নাম জড়িয়ে যাওয়াতে এটাই স্বাভাবিক। প্রেস মিডিয়া নিজেদের পাবলিটির জন্য যা নয় তাই বলবে। কিন্তু তুরের যে সেটা সহ্য হচ্ছেনা তা বুঝতে পারছে। তোয়া ওকে আড়াল করার চেষ্টা করছে কিন্তু কে শোনে কার কথা রিপোর্টার উৎসুক জনতা তুরকে পাগল করে তুলেছে বুঝল তুরের অবস্থা ভালো না। ভীড় ঠেলে তীব্র তুরের কাছে যায়। কিন্তু দিকহারা তুর বুঝতে না পেরে পাগলের মত করে ওকে সরিয়ে মাথা চেপে ধরে। তুরকে সামলাতে না পেরে জড়িয়ে ধরে। প্রথমে ছাড়ানোর চেষ্টা করলেও পরে ক্লান্ত হয়ে পরে। তীব্র শক্ত করে ওকে জড়িয়ে রেগে সবাইকে সরতে বলে। কিন্তু উৎসুক জনতাকে আটকানো এত সহজ না। তাই রিদ্ধ এসে সবাইকে পাশ কাটিয়ে জায়গায় করে দিলে তীব্র সবার সামনে তুরকে কোলে তুলে নেয়। তুর নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টায় বরাবরের মত ব্যর্থ। ওকে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দ্রুত চলে যায়। তোয়া আর ওর বাবা চেয়েও ওদের ধরতে পারে না। তুরের বাবা পাগল প্রায় হয়ে তুরের কাছে যেতে চাইতেই তোয়া ওনাকে আটকায়।
——” ওই লোকটা আমার মেয়েকে নিয়ে গেল। আমাকে আমার মেয়ের কাছে যেতে হবে। ”
গাড়ির পিছনে ছুটতেই তোয়া ওনাকে আটকে দেয়। ততক্ষনে তায়ান এসেও ওনাকে আটকায়। তায়ান ওনাকে তীব্রের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বললে ওনি নিজেকে শান্ত করে। তারপর ওনাকে নিয়ে সামান্য পানি খাওয়ায়। এর মধ্যে তায়ান অরুনের কাছে নিজের বাইকের চাবি দিয়ে একটা সিএনজি নিয়ে আসে।
গাড়ির মাঝে তুর বার বার নিজেকে তীব্রের থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে। তুর ভালো করে চোখ মেলতে পারছে না। আধো আধো চোখ মেলেই ও তীব্রের থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠে। শরীর ক্লান্তিতে এতটাই নিস্তেজ হয়ে গেছে যে তীব্রের বুকে কিল মারছে কিন্তু তা যেন ওর গায়ে লাগছে না। রিদ্ধের কাছ থেকে একটা পানির বোতল নিয়ে তুরকে খাওয়াতে চায়। তুর খেতে না চাওয়াতে জোর করেই খাওয়াও। পানি খাওয়াতেই তুর নিস্তেজ হয়ে তীব্রের বুকে ঢলে পরলে তীব্র পানির বোতলটা রিদ্ধের কাছে দিয়ে বা হাত দিয়ে তুরকে জড়িয়ে রাখে। তুর সম্পুর্ন অচেতন হয়ে গেছে। প্রায় ১ঘন্টা পর তীব্র নিজের বাড়ি পৌঁছে।
বাড়ি ফিরে তুরকে কোলে করে রুমে নিয়ে বিছানায় শুইয়ে দেয়। তীব্র আর ওর দুজনের ড্রেস নোংরা। তুর বমি করে নিজের আর তীব্রের দুজনের গা ভাসিয়ে দিয়েছে। তুরের ড্রেস চেঞ্জ করে ওকে ফেশ করিয়ে নিজেও ফেশ হয়ে নেয়। যাওয়ার আগে তুরকে ঘুমের ইনজেকশন দেয়। প্রচন্ড মানসিক চাপ পরেছে ওর উপর। ঘুমটা খুব দরকার ওর জন্য।
শাওয়ার পানির নিচে দাঁড়াতেই পানির সংস্পর্শে এসে তীব্রের ব্যাথা জায়গা জ্বলে উঠে। এতটা আঘাত এর আগে পায়নি৷ দাত খিচে জ্বলন গুলো সহ্য করে যাচ্ছে।
শাওয়ার নিয়ে ফিরে আসতেই দেখে নিচে চিল্লানোর আওয়াজ। তীব্র একটা টাউজার আর সাদা একটা টি-শার্ট পরে নিচে নেমে দেখে তুরের বাবা। তীব্র অবাক দৃষ্টিতে তায়ানের দিকে তাকায়। ও কিছু বলতে যাবে তার আগেই ওনি এসে সজোরে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয় তীব্রের গালে। তীব্র তাল সামলাতে না পেরে দু কদম পিছনে সরে যায়। তায়ান আর তোয়া একটু কাছে আসতে চাইলে আঙুলের ইশারা দিয়ে ওদের কিছু বলতে নিষেধ করে। ওনি এসে তীব্রের টি শার্ট ধরে বলে,
—— ” তোমার সাহস কি করে হয় আমাকে না জানিয়ে আমার মেয়েকে এখানে নিয়ে আসার।”
তীব্র মাথা নিচু করে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।ওনি তীব্রকে ছেড়ে জিজ্ঞেস করল ,
—— ” আমার মেয়ে কোথায়? কোথায় আমার মেয়ে? ”
ওনার চিতকার শুনে তীব্র শান্ত গলায় বলল,
—— ” শান্ত হোন আপনি তুর আমার রুমে। বমি করে প্রচন্ড ক্লান্ত হয়ে পরেছিল তাই ওকে ঘুম পাড়িয়ে এসেছি ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে। ঘুম ভাঙতে সময় লাগবে।”
এটা শুনে আরো রেগে যায় ওনি।
——- ” আমার মেয়েকে কি করেছিস সত্যি করে বল? ওর কোন ক্ষতি….. ”
তুরের বাবা পাগল হয়ে উপরে দিকে যেতেই তীব্র ওনাকে আটকে দেয় যাতে ওনি রেগে আরেকটা থাপ্পড় বসিয়ে দেয় তীব্রের গালে। প্রতিটি থাপ্পড় দেয়ালে বাড়ি খাচ্ছে। কিন্তু তবুও তীব্র শান্ত ভাবে বলল,
——- ” দেখুন আংকেল আমি জানি তুর আপনার জন্য কি? ওকে নিয়ে যেমন আপনার চিন্তা হয় তেমনি আমারো। ভুলে যাবেন না তুর শুধু আমার স্ত্রী নয় আমার সন্তানের মা। সো ওর কোন ক্ষতি করার চিন্তা তো দুরে থাক। কেউ যদি এমনটা ভাবে তাকেও ছাড় দেব না আমি। ”
—— ” আমার নাবালিকা মেয়েকে আটকে রেখে জবরদস্তি বিয়ে করে বউয়ের অধিকার দেখানো হচ্ছে। তোমার যে সন্তান পৃথিবীতে অনাগত তার জন্য তোমার কষ্ট হচ্ছে আর যাকে ১৮ বছর নিজের বুকে করে পেলেছি আমার সেই একমাত্র মেয়েকে ওই অবস্থায় দেখে আমার কতটা কষ্ট হয়েছে তুমি জানো? ” নিজের রাগটা চেপে অনেক কষ্টে বলল কথাগুলো। তীব্র শুনল কিন্তু বলার মত কিছু খুজে পেল না। তীব্র চুপ থাকতে দেখে ওনি বলল,
——- ” আমার মেয়ের লাইফ রিক্স হোক এমন কিছুই আমি হতে দিব না। আশা করি বুঝতেই পারছ। এখন বলো আমার মেয়ে কোথায়? ”
তীব্র ওনার কথার মানে বুঝতে পারল। তুরের অনাকাঙ্ক্ষিত প্রেগ্ন্যাসি কারো কাম্য নয়। আর ওনার ভয়টাও স্বাভাবিক। তুরের বাবা আর কথা না বাড়িয়ে তুরের কাছে গেলেন। গিয়ে দেখে মেয়ে ঘুমিয়ে আছে। ওনি গিয়ে তুরের মাথার পাশে বসে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। অনেক কষ্টের সন্তান তুর। আল্লাহ কাছে অনেক চেয়ে পেয়েছেন এই মেয়েকে। না চাইতেও সব আবদার পুরন করেছে। ও যখন ছিল না মৃত মানুষের মত হয়ে গিয়েছিল। আর যখন ফিরে পেল তখন এই অবস্থায়।
তীব্র রুমে ঢুকতেই ওনি বলে উঠল ওনি তুরকে এখান থেকে নিয়ে যাবে। তীব্র ওনার ইমোশন বুঝতে পারছে কিন্তু তুরকে নিয়ে যাবে এটা যেন মানতে পারল না। কিন্তু কিছু বলতে গিয়েও বলল না।
কিছুক্ষন পর…….
তীব্র বাইরে দাঁড়িয়ে আছে তখন তুরের বাবা তুরের কাছে যায়।
—— ” আপনি ভালো করেই বুঝতে পারছেন ড. রায়হান তুর আপনার সাথে থাকতে চায় না।আর আমার পক্ষে ওর মতের বিরুদ্ধে গিয়ে আপনার সাথে ওকে রাখা সম্ভব না। ”
তীব্র শান্তভাবে ওনার কথা শুনল। তারপর বলল,
—— ” প্রথমত আমাকে তুমি করে বলুন। আর যতটুকু তুরকে নিয়ে যাওয়ার কথা তুরের অবস্থা ভালো না। আজকে আপনি কোন ভাবেই ওকে নিয়ে যেতে পারবেন না। আপনি চাইলে এখানে থেকে যান। কারন তুরের এই অবস্থায় ওকে শিফট করলে সেটা তুর & বেবির জন্য খারাপ হবে।”
তুরের ক্ষতি হবে শুনে তিনি কিছুটা দমে গেল। আর এখানে থাকা সম্ভব না। কারন তুরের মায়ের শরীর অসুস্থ। কিন্তু তুরকে এই লোকের কাছে রেখে যেতে নারাজ তিনি। তখনি তোয়ার কথা মনে পড়ল। বেশ ভাবনা চিন্তে করলেন তিনি। এমনিতেই সন্ধ্যা হয়ে এসেছে। এখন তুরকে এভাবে নিয়ে যাওয়া যাবে না। তাই ওনি সকালে তুরকে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবলেন।। না তোয়ার বাড়ি না। ডিরেক্ট নিজেদের বাড়ি।
—— ” আমি কাল এসে তুরকে নিয়ে যাব। ”
ওনার কথায় কিছু বলল না তীব্র শুধু হালকা হেসে সম্মতি জানালো।
তুরের বাবা তোয়াকে তীব্রের রুমে রেখে গেলেন। আর যাবার আগে বার বার তোয়াকে সাবধান করে গেলেন যাতে ওকে একা না ছাড়ে। তোয়া ও চাচার কথামত বসে রইল।
সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামতেই তীব্র নিজের রুমে আসে। তীব্রকে দেখে তোয়া দাড়িয়ে যায়। তীব্র গিয়ে তুরের পাশে বসে ওর একহাত ধরে তুরের মাথায় হাত দেয়। এটা দেখে তোয়া বলে,
—— ” আপনার আজকের কথা শোনার পর আমার এটা কেন মনে হচ্ছে আপনি আমার জন্য তুরকে আনলেও আমার জন্য আটকে রাখেনি।”
তোয়ার কথায় তীব্র তুরের কপালে একটা পরশ আকে। তারপর ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলে,
—— ” তোমার বোন আমার কাছে ছিল ৬ মাসের মত ছিল। যে নিজের আশে পাশে এক মুহুর্তের জন্য কোন মেয়েকে টলারেট করতে পারত না। সে এই মেয়েটাকে দেখার জন্য হাজার মাইল ছুটে যেত। সেটা ত এমনি এমনি না। বাই দ্যা ওয়ে তোমার খুশি হওয়া উচিত এটা যেনে তোমার বোনের সাথে আমার বিয়ে হয়েছে। ”
—— ” চাচা কিন্তু মানবে না। ”
—— ” তুর যদি ওনার মেয়ে হয়। তাহলে ওনার মেয়ের গর্ভে যে আছে সে আমার সন্তান। ওনি ওনার মেয়ের জন্য যেমন চিন্তিত তেমনি আমিও।।”
—— ” তাহলে কাল যে তুরকে নিয়ে যাবে। ”
তীব্র ওর কথায় বেশি কিছু বলল না শুধু বলল, —— ” দেখা যাক…….”
তোয়ার চোখেও ঘুম ভর করেছে। ও তুরের পাশে বিছানায় বসতেই তীব্র বলে উঠে,
—– ” তোমার কি রোমান্স দেখার ইচ্ছে হচ্ছে নাকি। ভুলে যেওনা না তুমি কিন্তু সম্পর্কে বড়।”
তীব্রের এমন কথায় বেশ লজ্জা পেল তোয়া। কিন্তু কিছু বলল না। নিজ দাঁয়িত্বে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল। তোয়া বেড়িয়ে যেতেই তীব্র দরজা লক করে দেয়। গভীর ঘুমে আছন্ন। তবে ভেঙে যেতে পারে ডোজটা কড়া ছিল না। তাই ও সেই রিক্স নিল না। নিঃশব্দে তুরের পাশে বসল। ওর মুখে পরা চুলগুলো সরিয়ে গলার নিচের দাগটা দেখতে লাগল। বেশ গভীর। সেখানে আলত করে বুলিয়ে ঠোঁট ছুইয়ে গভীর পরশ আঁকে। তুরের নিশ্বাস ওর ঘাঁড়ে বাড়ি খায়। তীব্র মাথা উঁচু করে আলত করে ওর ঠোঁটে আঙুল দিয়ে টেনে ছেড়ে দেয়। ঘুমের মধ্যে ঠোঁট উল্টায় তুর। আলত করে হেসে ওর কপালে চুমো আকে তীব্র।
তারপর নিজের নিয়মে তুরকে বাম বাহুতে শুইয়ে লাইটটা অফ করে দেয় তীব্র।
শোয়ার কিছুক্ষন পর তুরের মাথায় বিলি কাটতে কাটতে যখন তীব্রের চোখ লেগে আসছিল তখনি হালকা নড়ার আওয়াজ পায় তীব্র। তীব্র ভালোভাবে তুরকে বোঝার চেষ্টা করলে বুঝতে পারে ও কিছু বলছে। তীব্র লাইট জেলে দিতেই দেখে তুর মাথা এপাশ ওপাশ করে কিছু চাইছে। ওর কানের কাছে মুখ নিতেই বুঝতে পারে তুর পানি চাইছে। তীব্র তুরকে উঠিয়ে নিজের বুকে হেলান দেওয়ায়। তারপর বিছানার পাশের গ্লাসের পানি নিয়ে তুরকে খাওয়ায়। তুর দুই ঢোগ পানি গিলে শান্তভাবে নিজের ভারবহনকারীর দিকে।তাকায়। মুহুর্তেই ওর চোখে সমস্ত ক্লান্তি মিশিয়ে রাগে পরিনত হয়। ও তীব্রকে জোরে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেয়। টাল সামলাতে না পেরে তীব্র বিছানায় উপুর হয়ে পরে। তুর চিতিকার করে বলে উঠে,
_—– ” আপনি এখানে কেন? আমি বলেছি না আপনার সাথে থাকতে চাই না। ”
তীব্রের প্রচন্ড রাগ উঠে গেল তুরের কথায় তবুও নিজেকে শান্ত করে বলল,
—— ” দেখ তুর এতটা হাইপার হওয়া তোমার।জন্য ঠিক না। আর তুমি আজকে নিশ্চয়ই জেনেছ যে তুমি আমার স্ত্রী। ”
—— ” স্ত্রী….. [ কিছুটা তাচ্ছিল্য নিয়ে ] লজ্জা করে না এই কথাটা বলতে। ”
—— ” আমি জানি আমি অন্যায় করেছি। তোমার আমার রেজিস্ট্রির কথা তোমাকে জানানো উচিত ছিল। কিন্তু জানিয়েও কি লাভ হত? ”
——- ” তাহলে আমাকে এটা ভাবতে হত না আমি কোন অন্যায় করছি শুধু পরিস্তিতির স্বীকার হয়ে। আপনি তো জেনে বুঝে নিজের অধিকার ভেবে আমার কাছে এসেছেন আপনি কখনো আমার দিকটা ভেবেছেন? ”
তীব্র নিশ্চুপ।
—— ” আমার পক্ষে আপনার সাথে থাকা সম্ভব না। আমি চলে যাব। ”
তুর কথাটা বলেই বিছানা থেকে নামতে চায়। তখনি তীব্র ওর হাত ধরে। তুর রাগী চোখে তাকিয়ে ওর হাত ছাড়িয়ে নিতে চায়। কিন্তু তীব্র চাড়ে না। বরং গম্ভীর কণ্ঠে বলে,
—— ” তুমি মানো বা না মানো তুমি আমার ওয়াইফ। আর এটা ভুলে যাও কিভাবে তুমি আমার সন্তানের মা হতে চলেছ। ”
কথাটা শুনেই তুর শান্ত হয়ে যায়। তারপর কিছুক্ষন ভেবে শান্ত কণ্ঠে তীব্রকে বলে,
—— ” এর আগে তো এত ভালোবাসা ছিল না। সব বুঝি বাচ্চার জন্য। বাচ্চা আছে বলে আমাকে আপনার সাথে থাকতে হবে। এখন দেখি নিজের বাচ্চা শত্রু হয়ে গেল। তাহলে একটা কাজ এই শত্রুটাকেই শেষ করে দেই। ”
কথাটা বলেই অদ্ভুত এক ভাব প্রকাশ করল তুর। তুরের কথাটা যেন তীব্রের বুকে গিয়ে বিধল। ও কিছু না ভেবেই খুব জোরেই তুরের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিল। থাপ্পড় এর শব্দটা যেন দেয়াল ভেদ করে যেতে না পাড়ায় বার বার প্রতিধ্বনিত হতে লাগল রুমে। তীব্র ভাবতেই রাগ লাগছে তুর ওর জন্য নিজের বাচ্চাকে শত্রু বলছে। তুর গালে হাত দিয়ে করুন চোখে তীব্রের দিকে তাকাল। তারপর ও…………
,
,
,
,
,
,
,,
[ বাকিটা পরের পর্বে জানবেন ]