গল্পঃ হৃদয়ের বন্ধন।
পর্বঃ ৩।
লেখাঃ মেহের।

উকিল সাহেব মেয়ের জামাইয়ের কথা শুনে বলে,মারুফ বাবা তুমি আমার উপরে ক্ষেপেছো কেন?
কি এমন করেছি যে রাগে কথা বলতে পারছো না!

মারুফ বলে,ভালোই অভিনয় করতে পারেন তো।
যেহেতু আপনি বুঝতে পারছেন না বলেছেন সেহেতু আমার দায়িত্ব হচ্ছে আপনার অন্যায় গুলো বুঝিয়ে দেওয়া।
আচ্ছা আঙ্কেল আপনি না আমাকে ও আমার পরিবারকে বলেছিলেন, আপনার বড় ধরনের ক্ষতি করতে কিছু বিপক্ষের লোক আপনার
মেয়ের পিছনে বাজে ছেলেদের লাগিয়েছে ।
তারা নাকি সময় সু্যোগ পেলেই জেসিকে অপহরণ করে নিয়ে আপনার ক্ষতি করতে চেষ্টা করবে।
আর আপনি সব জেনেও প্রমাণের অভাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে পারছেন না।

জামিল তালুকদার বলেন,হ্যাঁ বলেছি তো
আর এটা সত্যি যে কিছু
বিপক্ষের লোক জেসিকার ধারা আমার ক্ষতি করতে চেয়েছে।
বা ধরতে পারো এখনো চাচ্ছে বলেই তো তোমার হাতে আমার মেয়েকে তুলে দিয়েছি।

মারুফ বলে, আচ্ছা বিয়ের আগেই আমি আপনার কাছে জানতে চেয়েছিলাম না জেসিকা এই বিয়েতে রাজি হয়েছে কিনা?
বা অন্য কোন সমস্যা আছে কিনা?
কিন্তু আপনি বলেছেন জেসিকা এই বিয়েতে রাজি আছে।
আর বিয়ের পরে জানতে পারি তা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা ।
এতো বড় ধোঁকা কী করে দিলেন আপনি?
বাবার বন্ধু হয়ে তার পরিবারকে ধোঁকা দিতে একটুও বুক কাঁপেনি।

জামিল তালুকদার মারুফের কথা শুনে বিষম খেয়ে
তখন আমতা আমতা করে বলল,ইয়ে মানে বাবা ছোট থেকেই তোমাকে আমার এতো পছন্দ যে তুমি বড় হওয়ার পরে মনে মনে তোমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে ঠিক করেছি।
তাইতো তোমার পরিবার রাজি হয়েছে বলেই জেসিকার মতামত নিয়ে তেমন একটা ভাবিনি।
আচ্ছা বাবা আমি বুঝতে পারছি না আমার উপরে তুমি কোন কারণে রেগে আছো?
আর বাবা না রেগে যদি কোন সমস্যা থাকে তো সে বিষয়ে তুমি আমাকে সবকিছু খুলে বললে হয়তো দুজনে মিলে যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে পারতাম।

মারুফ বলে, যে সমস্যা আপনার তৈরি করা আবার তার সমাধান আপনিই দিতে চাচ্ছেন!
এটা মানতে পারছি না আমি।

একথা শুনে জামিল তালুকদার বলে, মারুফ আমি কি করেছি তুমি আমাকে খুলে বল তো?

মারুফ মনে মনে বলে, সবকিছু জেনেও আবার মুখে থেকেই শুনতে চাচ্ছেন ভালোই।

জামিল তালুকদার বলে, কি হলো বলছো না কেন!

একথা শুনে মারুফ একে একে কালকে রাতে থেকে এ পর্যন্ত জেসিকার করা ব্যাবহার।
জেসিকার কারো সাথে সম্পর্ক আছে যার সাথে রাতে কথা বলেছে এই সবকিছু খুলে বলল।
জেসিকা কোমলকে মেরেছে সেজন্য জেসিকার গায়ে মারুফ হাত তুলছে এটাও বলে দেয় জামিল তালুকদারকে।

জামিল তালুকদার সব শুনে বলে,বাবা তোমার কাছে আমি সত্যিই অপরাধী।
নিজের মেয়ের ভালো করতে যেয়ে তোমার বড় ক্ষতি করে দিয়েছি।
আর আমি জানি , তুমি কেন কোন ছেলেই বিয়ের পরে স্ত্রীর অন্য পুরষের সাথে সম্পর্ক মেনে নিতে পারবে না।

মারুফ বলে, দেখুন আঙ্কেল আমি এ বিয়ে থেকে মুক্তি পেতে চাই।
আপনার মেয়ে কখনোই আমার পরিবারের মনের মত একজন সদস্য হতে পারবে না।

এবং আমার মনে হয় জেসিকা কখনো আমার পরিবারের একজন হতে চেষ্টাও করবে না।
তাই যে সম্পর্কের কোন ভবিষ্যৎ নেই সে সম্পর্ক আগেই ছিন্ন করা ভালো এতে কষ্টের পরিমাণ কম থাকবে।

জামিল তালুকদার একথা শুনে বুকের ভিতরে ধক করে উঠল।
তাহলে কি তার দেখা স্বপ্ন মিথ্যা হয়ে যাচ্ছে।
সে তো মারুফের সাথে
জেসিকার বিয়ে দিয়েছে তার কারণ হচ্ছে নিজের পথভ্রষ্ট মেয়েকে মারুফের উছিলায় সঠিক পথে আনতেই।
তার মেয়েটা তো ধর্ম সমাজ এইসব কিছুই পরোয়া করে না।

একমাত্র সন্তান হওয়ার কারণে ছোট থেকেই জেসিকাকে অবাধ স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।

কখনো ভুল করলে শাসন করে নায় ।
যার ফলে মেয়েটা কখন যে এমন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে তা বুঝতে পারেনি।
আর যখন বুঝতে পারলো তখনই মেয়ের লাগাম টেনে ধরতে চেষ্টা করেও পারছিলো না।
তাইতো তড়িগড়ি করে মারুফের সাথে বিয়ে দেয় ।
এই আসায় যে তার বেপরোয়া মেয়েকে মারুফ ঠিক করতে পারবে।
মারুফকে দেখার পরে থেকে জামিল তালুকদারকে সবচেয়ে আকৃষ্ট করেছিল মারুফের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।
তাইতো মেয়ের একমাত্র দূর্বলতা কাজে লাগিয়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এই বিয়েতে রাজি করিয়েছেন।
কিন্তু ভাবতেই পারেনি যে জেসিকা প্রথম দিনেই বাবার শোধ মারুফের থেকে তুলবে।

জামিল তালুকদার এসব চিন্তা ভাবনা করে হঠাৎ প্রচন্ড অসুস্থ্য বোধ করেছেন।

মারুফ জামিল তালুকদারের দিকে তাকিয়ে দেখে , বারবার কপাল ঘামছে ।
সেই ঘাম হাত দিয়ে বারবার মুছে ফেলেছে।
দেখেতো তাকে কিছুটা অসুস্থ্য লাগছে ।
হয়তো তার কথায় কষ্ট পেয়েছে তাই ভেবে মারুফ জামিল তালুকদারের কাছে যেয়ে বলে, আঙ্কেল আপনার কি খারাপ লাগছে তাহলে নীচে চলুন রেষ্ট নিবেন?
জামিল তালুকদার মারুফের হাত ধরে বলল,বাবা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে
আমাকে একটু ওখানে বসিয়ে দাও।
মারুফ বলে,পরে কথা বলতে পারবেন আগে আপনি রেষ্ট নিবেন আমার সাথে নীচে আসুন।
জামিল তালুকদার জোর করেই ছাদে কর্নারে বসার জায়গা ছিল সেখানে বসে বলতে লাগলো,বাবা তোমার গুনের জন্যেই তোমাকে আমার এতো পছন্দ।

এই যে এখন তুমি আমাকে অসুস্থ্য দেখে মূহূর্তেই তোমার সাথে হওয়া অন্যায় ভুলে আমার খেয়াল রাখতে বাস্ত হচ্ছো সেটা আমায় মুগ্ধ করেছে।
আর সব থেকে বড় বিষয় হচ্ছে, তোমার ভিতরে আল্লাহর ভয় কাজ করে সেজন্য তুমি সবসময় নিজেকে কঠোর শাসনের মধ্যে রাখো এসব কিছুই আমার অজানা নয়।

মারুফ বলে, আঙ্কেল আপনি চুপচাপ বসে থাকেন তাহলে ভালো লাগবে।

জামিল তালুকদার বলে,মারুফ আজ তোমাকে এক সত্য কথা বলবো , তা হচ্ছে জেসিকাকে আমি ব্লাকমেইল করে তোমার সাথে বিয়ে দিয়েছি।

মারুফ এই কথা শুনে বলল,কি !
কেন এমন করেছেন?

জামিল তালুকদার বলেন, জেসিকা যে ছেলেকে ভালোবাসে তার চরিত্র ভালো না।
ওই ছেলের নাম, রাহুল।
রাহুলের অহরহ কত মেয়েদের সাথে অনৈতিক সম্পর্ক আছে তার ঠিক নেই।
তবে রাহুল এতোটাই চালাক যে জেসিকাকে এইসব সম্পর্কে কখনো জানতে দেয়নি।
আর রাহুলের বাবা আমার একজন কলিগ।
সে আমার সাফল্যেকে হিংসা করে ।
তাই তো রাহুলকে আমার মেয়ের পিছনে লেলিয়ে দেয়।
যাতে রাহুল জেসিকাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওঁর জীবন নষ্ট করে ছেড়ে দেয়।
এই সমাজে যেনো আমার মাথা হেঁট হয়ে যায়।
কিন্তু জেসিকা সেটা বুঝতে চায় না।
আর ওঁরা জেসিকাকে এটা বুঝিয়েছে আমি ওদের হিংসে করি তাই এই সম্পর্ক হতে দিতে চাচ্ছি না।
জেসিকা রাহুল বলতে পাগল তাই ওদের সব কথা বিশ্বাস করে নেয়।
এমনকি ওদের প্লান ছিল তোমাদের বিয়ের দু’দিন আগে জেসিকা কে মিথ্যা বিয়ে করে আমাকে অপমান করা।

আমি এটা টের পেয়ে জেসিকা কে আমার মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে এই বিয়েতে রাজি করিয়েছি।

কিন্তু আমি এটা একবার চিন্তা কেন করলাম না যে এতে আমার রাগ ও তোমার উপরে তুলতে চেষ্টা করবে।
বাবা আমাকে ক্ষমা করে দাও ।

আঙ্কেল আপনি ভুল করছেন ওকে জোর করে বিয়ে দিয়ে এর থেকে ওই ছেলের সব সত্য প্রকাশ করতে চেষ্টা করা উচিত ছিল।
আরেকটি কথা আমি একদিনের জেসিকাকে দেখেই বুঝতে পারছি আপনার মেয়ে বদ মেজাজি ও বেয়াদব তাই আমি চেষ্টা করেও ওঁর সঙ্গে মানিয়ে চলতে পারবো না।

এর থেকে ভালো হয় আপনি ওকে সাথে করে নিয়ে যান এবং তিন মাস পরে আমরা দুজনে আলাদা হয়ে যায় এটাই সবচেয়ে ভালো হবে।

একথা শুনে জামিল তালুকদার মারুফের পায়ে হাত দিতে গেলে মারুফ আঁতকে উঠে সেখানে থেকে পিছিয়ে বলে আঙ্কেল এ আপনি কি করছেন?

জামিল তালুকদার বলে,বাবা আমার মেয়েকে তোমার পায়ে ঠাঁয় দাও, ওকে সঠিখ পথে আনতে তোমার যা করতে হয় করবে কেউ তোমাকে বাঁধা দিবেনা।
আর আমি কথা দিচ্ছি জেসিকা তোমাকে আইনের ভয় দেখিয়ে কিছুই করতে পারবে না।
আমি তোমার পাশে থাকবো সবসময়।
তাও তুমি ওকে ছেড়ে দিয়ে না।

মারুফ বুঝতে পারছে একজন বাবা কতোটা অসহায় হলে নিজের অবস্থান ভুলে ছোট কারো পায়ে ধরতে পারে তাই মারুফ বলল, আঙ্কেল আমি আপনার কথা চিন্তা করে এই সম্পর্কে একটা সুযোগ দিবো তা ফল যেটাই হোক না কেন আপনাকে মানতে হবে।
আরো অনেক কথা বলে দুজনে।
কথা শেষ হতেই নীচে আসে।

জামিল তালুকদার কিছুটা অসুস্থ্য তাই কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেয়।
এরপর নিয়ম অনুযায়ী জেসিকা ও মারুফকে জামিল তালুকদার তাদের বাসায় নিয়ে আসে।
জেসিকা বাসায় এসেই মারুফকে নীচে রেখেই নিজের রুমে চলে গেল।
জেসিকার মা নতুন জামাইয়ের আপয়ন করত ব্যস্ত হয়ে পরে।

জামিল তালুকদার জেসিকাকে রুমে যেতে দেখেই, মেয়ের পিছনে পিছনে মেয়ের রুমে এসে বলে, তুই মারুফের সাথে খারাপ আচরণ করেছিস কেন?

তুই জানিস আমাদের সাত কপালে ভাগ্যে যে তোকে এমন ছেলের কাছে বিয়ে দিয়ে পেরেছি।

যেখানে মারুফকে তোর মাথায় করে রাখা উচিত সেই তুই ওর অসম্মান করিস কিভাবে?

বাপি তুমি ওই আন কালচার ছোট লোককে মাথায় করে নাচতে পারো বাট আমি না।

ওঁর কোন যোগ্যতাই নেই জেসিকার হাজবেন্ড হওয়ার।

জামিল তালুকদার রেগে বলে, চুপ বেয়াদব কোথাকার।
আর শুনে এতো ভালো ছেলে স্বামীরূপে পেয়েছিস তা ধরে রাখতে চেষ্টা কর না হলে জীবনে কষ্ট ছাড়া কিছু
পাবিনা।

জেসিকা একথা শুনে বলে, ওহ্ বাপি তোমার ভালো ছেলে তো আমার রাহুলের পায়ের নখের যোগ্যও না।
আমার রাহুল হচ্ছে দেখতে শুনতে নায়ক পেশায় একজন ইন্জিনিয়ার।
আর ওই ছোটলোক তো আন কালচার পেশায় একজন সামান্য দোকানদার।
ওঁর মতো গ্রামের ক্ষ্যত আমার পাশে মানায় না।
প্লিজ বাপি তুমি বুঝতে চেষ্টা করো আমি ওর সাথে থাকতে পারব না।

একথা শুনে জামিল তালুকদার বলেন, তুই ওকে ছাড়লে আমার মরা মুখ দেখবি এটা মনে রাখিস।
একথা বলেই মেয়ের রুম ছেড়ে বেরিয়ে যায়।

জেসিকা মনে মনে বলল, ঠিক আছে বাবা আমি ওকে ছাড়বো না কিন্তু এমন ব্যবস্থা করবো যাতে ওই লোক আমাকে ছাড়তে বাধ্য হয়ে যায়।
তুমি আমাকে এই বিয়েতে বাধ্য করে ভালো করোনি।
তা সামনে বুঝতে পারবে।

জেসিকা ও মারুফের বিয়ে হয়েছে একমাস হয়ে গেছে।
এর মধ্যে অনেক কিছুই ঘটে গিয়েছে।
জেসিকার বাবা জেসিকাকে আর নিতে বা দেখতে আসে না।
মেয়ের ভালোর জন্য মেয়ের কাছে থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছে।
এমনকি জেসিকা কে স্বামী ছাড়া বাড়িতে য়েতেও বারণ করেছে জামিল তালুকদার।
হয়তো ভেবেছিলেন এসব করে মেয়েকে লাইনে আনতে পারবেন।
কিন্তু একটা কথা আছে না সময়ে কাজ সময়ে করা ভালো।

এদিকে জেসিকা বাবার উপরে জেদ করে এই নীরহ মানুষ গুলোর সাথে দিন দিন খারাপ আচরণ করেছে ।
তাদের জীবন বিস্বাদময় করে তুলেছে।
এই একমাসে জেসিকা মায়া, কোমল , ঝর্না রাশেদ সেলিনা ও ইসহাকের সাথে ও বেয়াদবি করতে পিছপা হয়নি।

জেসিকা প্রতিদিন ভার্সিটির নাম করে বাসার বাহিরে কাটিয়ে দেয় বেশি সময়।
আর যতটুকু সময় বাসায় থাকে সেসময় সবাই কে যা নয় তাই বলে অপমান করে।

ঝর্না ও কোমলকে অযথায় দুই দিন ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।
এরমধ্যে একদিন রাশেদের বন্ধুদের সামনেই রাশেদকে অপমান করে।
রাশেদ দুই দিন রাগে অপমানে কিছু খেতে পারেনি।
মারুফ এসব দেখে সহ্য করতে পারছিল না।
তাই সিদ্ধান্ত নেয় সে এই মেয়েকে আর কোন সুযোগ দিবে না তার পরিবারকে কষ্ট দেওয়ার।
তাইতো তার এক বন্ধুর ভাই উকিল ।
তার সাথে দেখা করে ওদের ডিবোর্সের ব্যাপারে আলাপ করে।
মারুফের বন্ধুর ভাই জানান, তাদের যেহেতু বিয়ে হয়েছে বেশি দিন হয়নি।
তাই তালাক দিতে হলে তাকে কমপক্ষে তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে।

মারুফ তার কথা বুঝতে পারছে।
সেদিন দুপুরে মারুফ বাসায় এসেই সবাইকে বলে দেয় সে তিন মাস পরে জেসিকা কে তালাক দিয়ে দিবে।
আর যতদি না তালাক হয় এই মেয়ে এই বাড়িতে থাকবে কিন্তু অপরিচিত মেহমান হয়ে।
আমাদের সাথে আজকের পরে থেকেই জেসিকার আর কোন সম্পর্ক নেই।
কেউ যেন ওর কোন বিষয় কথা না বলে,
আর ওঁর খাবার দাবার যেন কাজের লোক দিয়ে ওর ঘরেই দেয়।
এসব কথা বলে,মারুফ নিজের রুমে থেকে নিজের সব কাপড় চোপড় এনে অন্যরুমে রাখে।
এবং বল আজকে থেকে তালাক হওয়ার আগ পর্যন্ত এই রুমেই থাকবে।

এসব দেখে মারুফের দাদু চাঁদনী বানু কেঁদে কেঁদে নিজেকে দোষারোপ করছেন।
ভুল হয়েছে তার এতো ভালো নাতির জন্য এমন মেয়েলোকের সাথে বিয়ে দিয়েছেন বলে।

মায়াও ছেলের অবস্থা দেখে কান্না করেন কারণ তার ছেলে সবার কথা ভেবে বিয়ে করে তার নিজের জীবনেই নষ্ট হয়ে গেছে।
ছেলে অশান্তির দেখে কিছু করতে না পেরে মায়ের কষ্টে বুকে ফেটে যাচ্ছে।
কিন্তু কাউকে সেই কষ্ট দেখাতে পারছেন না।
তার ভালো ছেলেটার কপালে শেষে এমন মেয়ে ঝুটলো সে এসব মানতে পারছে না।

এদিকে মারুফ নিজেকে বুঝাবে নাকি পরিবারকে !
বিয়ে নামক পবিত্র একটা সম্পর্ক তার জীবনকে তছনছ করে দিচ্ছে।
তবুও মনে মনে বিশ্বাস করে আল্লাহ একদিন সব ঠিক করে দিবেন।
হয়তো এখন আল্লাহ তাকে পরিস্থিতিতে ফেলে তার পরীক্ষা নিচ্ছে।
তবে মাঝে মাঝে নিজের মনোবল ভেঙে যায় পরিবারের কষ্ট ঘেরা মুখ গুলো দেখলে।

অন্যদিকে জেসিকা মনে মনে খুব বেশি খুশি তার আর এই সম্পর্কে আটকে থাকতে হবে না।
সে খুব তাড়াতাড়ি রাহুলকে বিয়ে করতে পারবে।
ভার্সিটি ফাঁকি দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই বান্ধবীদের নিয়ে রাহুলের সাথে ঘুরতে যায়।
রাহুল ইন্জিনিয়ার হয়েও তার ব্যস্ত সময় থেকেই জেসিকার জন্য সময় বের করে ।
এমন ভালো ছেলেকে রেখে কেন যে বাপি ঐ আন
কালচারটার সাথে বিয়ে দিলো তা জেসিকা বুঝতে পারছে না।

এদিকে রাহুল মরিয়া হয়ে উঠেছে জেসিকাকে ভোগ করতে।
এমন হট একটা মেয়ে আশেপাশের থাকলে হাত নিশপিশ করে একটু ছুঁয়ে দিতে।
রাহুল আজ পর্যন্ত কোন মেয়ের পিছনে বিছানা পর্যন্ত নিতে এতো সময় নষ্ট করেনি ।
যা জেসিকার পিছনে ঘুরে নষ্ট করতে হয়েছে।
রাহুল মনে মনে বলছে,এই শালীকে ভাগে আনতেই পারছি না।
মর্ডান মেয়ে হয়েও ফিজিক্যাল রিলেশন বিষয়ে এই মেয়েকে কোনো ভাবেই আগ্রহী করতে পারছি না।
শালী পুরানো আমলের মত গো ধরেছে বিয়ের পরে ফিজিক্যাল সম্পর্ক যাবে।
এই শালীতো আর জানে না ওঁর মতো সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিস এই রাহুল কখনোই বিয়ে করবে না।

এদিকে জেসিকার আজকাল কেমন অস্থির অস্থির লাগে আগের মত রাহুলের আশে পাশে থাকলেও সেই শান্তি খুঁজে পায় না।
জেসিকা বুঝতে পারে রাহুল ইদানিং ওঁর থেকে ওঁর শরীরের…..

নোটঃ ছোট ছোট ভুলকে প্রশ্রয় দিলে তা এক সময় বৃহৎ আকার ধারণ করে।
তখন ভুল শুধরানোর সুযোগ হাতছাড়া হয়ে যায়।
ভালো মন্দের তফাৎ ভুলে হয়ে বেপরোয়া।
আর ছোট ছোট ভুল শুধরে দিলে বড় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।

বিঃদ্রঃ লেখায় ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
লাইক ও কমেন্ট করে সঙ্গে থাকবেন।
আপনাদের সাপোর্ট আমাকে লেখতে সাহায্য করে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here