#ললাট_লিখন
কলমে:লাবণ‍্য ইয়াসমিন
অন্তিম পর্ব

আরশির যেন আর তর সইছে না। আজকের মধ্যেই যদি ওর কন্ঠটা শুনতে পেতো তাহলে হয়তো ভালো হতো।। আরশীর ভাবনার অবসান হলো কলিংবেলের আওয়াজ শুনে। বাড়ির কাজের মেয়েটা গিয়ে দরজা খুলতেই আলামিন সাহেব হাসিমুখে ভেতরে ঢুকলেন। দুপুর গড়িয়ে বিকাল হতে চলেছে। আরশীর টেনশন হচ্ছে। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার কি বলেছেন না জানা পযর্ন্ত মন শান্ত হচ্ছে না। আলামিন সাহেব আরসির দিকে একটা ফাইল এগিয়ে দিয়ে বললেন,
> বোন ভয়ের কোনো কারণ নেই। তবে ওর একটা ছোট অপারেশন করা লাগবে।
> কিসের অপারেশন?
> দীর্ঘদিন ওকে যে ওষুধটা দেওয়া হচ্ছে ওটার প্রভাবে কন্ঠনালীর মধ্যে ইনফেকশন হয়েছে। যদি অপারেশন না করা হয় তবে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। উনারা বলছিলেন আজকেই হাসপাতালে ভর্তি হতে।
> অপারেশন করলেই কি উনি কথা বলতে পারবেন?
> কেন পারবে না? উনার গলাতে তো কোনো সমস্যা ছিল না। ষড়যন্ত্র করে এমন করা হয়েছে। আর আমি কিন্তু মোটামুটি সব কাজ করে ফেলেছি।
> কী কাজ?
> এই কাহিনীর পেছনে যে ভিলেন আছে সে আমার চোখের সামনে শুধু সবার সামনে ঘটনাটা সময় মতো ব‍্যাখ‍্যা করতে হবে। আমি চাইছি ঐতিহ্য সুস্থ হলে তোমাদের দুজনকে নিয়ে ওবাড়িতে ঢুকবো। বেশ মজা হবে।
আলামিন সাহেবের কথা শুনে আরশী ভ্রু কুচকে ফেলল। ঐতিহ্য ও এগিয়ে আসলো। আরসী জিঞ্জাসা করলো,
> যে এমন করেছে আপনি চিনেন তবুও ছেড়ে দিয়ে রাখবেন যদি পালিয়ে যায় বা আমাদের ক্ষতি করে?

> আরে বাবা না। তিনি পালিয়ে যাবেন না। শুনো আমি থাকতে তোমাদের কোনো চিন্তা করতে হবে না। রেডি হয়ে আসো হাসপাতালে যাইতে হবে এবং আজ রাতেই অপারেশন হবে।
> আজ রাতেই?
> বোন একটা ভালো ডাক্তার পেয়েছি। উনি আজকে এখান থেকে বদলি হচ্ছেন। চাইছি না উনাকে হাতছাড়া করতে। যাও দুজন রেডি হয়ে আসো।
> আচ্ছা।
আরশী রুমে গিয়ে লাগেজ বের করলো। রেডি হতে ওর সময় লাগবে না। তাছাড়া এখানে গোছানোর মতো কিবা আছে যেগুলো গোছানো দরকার? তবে আরশী সেদিন আসার সময় বোরখা আনতে একদম ভুলে যায়নি। এটা মেয়েদের জন্য খুব দরকারি।খারাপ লোকের দৃষ্টি হতে নিজের রক্ষা করার একমাত্র হাতিয়ার। কথাটা ভেবেই ও বোরকা পরে নিল। আপাতত ওর চোখ ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না। ঐতিহ্যকেও একটা চাদরে জড়িয়ে দিল। যদিও ছেলেটা কিছুতেই চাদর মুড়ি দিতে রাজি ছিল না তবুও আরশীর জিদের কাছে পরাজিত হয়ে দিতে বাধ্য হলো। আরশী ওকে নিয়ে গাড়িতে গিয়ে বসতেই আলামিন সাহেব গাড়ি ছাড়লেন। রাস্তায় চলতে চলতে আরশী জিঞ্জাসা করলো,
>ভাইয়া আপনি খাওয়া দাওয়া করেন না?
> করবো না কেনো নিশ্চয়ই করি।
> দেখলাম না তো।
> বোন আয়েশ করে খাওয়ার সময় কোথায় পাবো সব সময় দৌড়ের উপরেই আছি।।
> আমার জন্য কষ্ট করছেন আমার খারাপ লাগছে।
> ওসব ভালো খারাপ নিয়ে পড়ে থেকো না। যা বলছি মন দিয়ে শুনবে। হাসপাতালে আমি ঘনঘন আসতে পারবো না। তোমাদের জন্য কেবিন ভাড়া করেছি সেখানেই থাকবে। কিছু দরকার হলে আমাকে জানাবে আমি কাউকে দিয়ে পাঠিয়ে দিব।

কথাটা শুনে আরশী মাথা নাড়ালো।। এই ভদ্রলোক ছিল বলেই আজ সবটা এতো সহজে হচ্ছে। নয়তো বিপদের অন্ত থাকতো না। আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন‍্যই করেন। সেদিন যদি ওভাবে না আসতো তাহলে উনার সঙ্গে দেখা হতো না। ওর ভাবতে ভাবতেই গাড়ি হাসপাতালে সামনে গিয়ে থামলো।সেদিন রাতে ঐতিহ্যের অপারেশন হলো। আরশী আলামিন সাহেবের কথা শুনে কেবিন থেকে কোথাও যায়নি। যখন যা দরকার উনি লোক দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
এভাবে বেশ কিছুদিন পার হলো। এমনি করে হাসপাতালে থেকে ঐতিহ্যকে রিলিজ করার দিন চলে আসলো। আরশী এবার নিজের বাড়িতে ফিরবে বলে ঠিক করেছে। আলামিন সাহেব ও ভাবলেন এটাই ঠিক হবে। আর কতদিন এভাবে বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়ানো যায়। তাই উনি চৌধুরী সাহেব কে ফোন করে বললেন, ঐতিহ্য আর আরশীকে পাওয়া গেছে কিন্তু ঐতিহ্যের শরীর একটু খারাপ। তাই উনি যেনো ডাক্তার ছামাদকে বাড়িতে ডেকে নেন। তাছাড়া আরশীর বাড়ির লোকজনেরও তো টেনশন হচ্ছে সবাইকে বাড়িতে ডেকে আনতে বলে উনি ফোন রাখলেন। চৌধুরী সাহেব ভীষণ খুশী। উনি সবাইকে আসতে বললেন। ডাক্তার ছামাদ খবর শুনে দ্রুত চলে এসেছেন।।
আলামিন সাহেব ওদের দুজনকে নিয়ে চৌধুরী বাড়িতে প্রবেশ করলেন। ভেতরে সবার মধ্যে চাপা উত্তেজনা কাজ করছে। আরশীর ভাই ভাবি আম্মা আব্বা সবাই এসেছে। এই বাড়ির প্রতিটা মানুষ অধীর আগ্রহে বসে ছিল ওদের পথ চেয়ে। এমন সময় আরশী ঐতিহ্যকে চাদরে জড়িয়ে কাধে হাত রেখে ভেতরে প্রবেশ করল। ওদেরকে দেখে মিসেস চৌধুরী দৌড়ে আসলেন। উনি ছেলের চোখে মুখে হাতে চুমুতে ভরিয়ে দিচ্ছেন। এই একমাত্র ছেলে উনার। আরেকটা মেয়ে ছিল সেই কবেই মারা গেছে। সেই থেকেই নিজের ধ‍্যান জ্ঞান ভালো খারাপ সব কিছুতেই শুধু ঐতিহ্য। আরশী শাশুড়ির থেকে ওকে আলাদা করে সোফায় নিয়ে গিয়ে বসল। এর মধ্যেই ডাক্তার ছামাদ ইনজেকশন রেডি করছে। উনি হন্তদন্ত হয়ে আরশীর সামনে এসে বললেন,
> সব কিছুর মূলে তুমি। তোমার জন‍্যই ছেলেটা পথে পথে । দেখছো কেমন অসুস্থ? এখান থেকে যাও আমাকে দেখতে দাও।
কথাটা বলেই উনি ইনজেকশনটা ঐতিহ্যের হাতের কাছে নিয়ে আসতেই আলামিন সাহেব উনার হাতটা দ্রুতগতিতে এসে ধরে ফেললেন। তারপর মৃদু হেসে বললেন,
> আপনার দেখি খুব তাড়া। আপনার মতো ডাক্তার ঘরেঘরে দরকার। এতো দায়িত্ববোধ ভাবা যায় না। ঐতিহ্য তোমার কি ঔষধের প্রয়োজন আছে?
পাশ থেকে ঐতিহ্য চনচল হয়ে আস্তে করে বলল,
> একদম না। আমার মনে হচ্ছে এবার ডাক্তার ছামাদের এই ঔষধের খুব দরকার। আপনি বললে আমি কিন্তু এটা উনার শরীরে প্রদান করতে পারি।

ঘরভর্তি লোকগুলো ঐতিহ্যের কথা শুনে থমকে গেলো। সবার চোখ ছানাবড়া। ডাক্তার ছামাদ সবথেকে বড় ঝটকা খেয়েছে যা উনার চোখেমুখে প্রকাশ পাচ্ছে। আলামিন সাহেব চৌধুরী সাহেব কে বললেন,
> আঙ্কেল এই ডাক্তার দিনের পর দিন ঐতিহ্যকে ভুলভাল ঔষধ দিয়ে ওকে অসুস্থ করে রেখেছিল। আমি আর আরশী ওকে হাসপাতালে ভর্তি করে সুস্থ করে তূলেছি। আর কিছুদিন হলে গলা থেকে মারাত্মক খারাপ কিছু হতে পারতো। ঐতিহ্যকে বাঁচানো যেতো না।
আলামিন সাহেবের কথা শুনে ঐতিহ্যের বাবা হুঙ্কার দিয়ে উঠলেন। উনি অন্ধের মতো ডাক্তার ছামাদকে বিশ্বাস করে আসছেন। তাছাড়া ছামাদ হচ্ছে ঐশীর সিনিয়র। ওকে ঐশী ডেকেছিল। তাই জন্য কখনও সন্দেহ হয়নি। উনি রাগান্বিত দেখে ঐশী এগিয়ে এসে বলল,
> আঙ্কেল এসব মিথ্যা কথা। আমি কেনো ঐতিহ্য ভাইয়ার ক্ষতি চাইবো? উনি আমাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।
> তাই নাকি মিসেস ঐশী হুসাইন?
আলামিন সাহেবের কন্ঠে মধু ঝরছে। উনি হাসিমুখেই কথাটা বললেন কিন্তু উপস্থিত সকলের চোখ আরেক দফায় ঘুরে গেলো। মিসেস ঐশী হুসেইন মানে কি? ওর এখনোও তো বিয়েই হয়নি। সবাইকে গুঞ্জন করতে দেখে আলামিন সাহেব মুখের হাসি থামিয়ে বললেন,
> আমি বলছি সবটা তাহলে? আসলে ডাক্তার ছামাদ হচ্ছে ঐশীর স্বামী। ওরা বিয়ে করেছে এই দুবছর হতে চলেছে। উদ্দেশ্য ছিল ঐতিহ্যকে কব্জা করে খুন বা অচল করতে পারলেই বিশাল অঙ্কের কিছু টাকা পাওয়া যাবে। সেগুলো নিয়ে বিদেশের মাটিতে বেশ সুখেই বসবাস করা যেতো। কিন্তু মাঝখানে আরশী চলে আসে।ওর বিয়ের দুদিন আগ পযর্ন্ত সব ঠিক ছিল। ঐতিহ্য ঔষধের ফলে পাগলামি করতো। কিন্তু দুদিন ঔষুধ না পেয়ে ওর চেতনা ফিরতে শুরু করে। আর ও বুঝে যায় সবটা।আলামিন সাহেবের কথা শেষ হলো না আরশী প্রশ্ন করলো?
> বিয়ের রাতে ওই লোকটা কে ছিল? আর ওরা আমাকে মারতে চাইছিল কেন?
> বিয়ের রাতে ওটা কে ছিল সেটা পরে বলছি। আগে বলি তোমাকে ওরা খুন করতে চাইছিল কারণ ওদের মনে হয়েছিল তুমি হয়তো ঐতিহ্যের সম্পত্তির অংশীদার হয়ে যাবে এবং সবকিছু তাড়াতাড়ি জেনে যাবে।এই জন্য তোমাকে সরানোর চেষ্টা করেছিল যেটা ঐতিহ্য বুঝতে পেরে আটকে দিয়েছিল। তো মিসেস ঐশী হুসেইন কিছু বলবেন?
ঐশি রেগে বলল,
> এসব কিছুই হয়নি আপনি কেনো আমার নামে মিথ্যা বলছেন?
> ও তাই বুঝি? প্রমাণ গুলো আমাদের হাতে আছে। আপনার বিয়ের কাবিননাম সঙ্গে সাক্ষী সব তৈরী। আর ডাক্তার ছামাদ আপনার ঔষধের বিষয়টা প্রমাণ করতে আমার এক মিনিট লাগবে দেখবেন?

আলামিন হাসেন দ্রুত স্থান পরিবর্তন করে ডাক্তার ছামাদের হাত থেকে ঔষুধ ভর্তি সিরিজটা এক ঝটকায় নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে মৃদু হেসে বললেন,
> এর থেকে বড় প্রামাণ আর কিছু আছে নাকি। আরশী বেলকনিতে তোমার উপরে যে আক্রমণ করেছিল জানো তো তার উদ্দেশ্য কি ছিল?
আরশী কৌতূহলী হয়ে জিঞ্জাসা করলো,
> ভাইয়া আপনি বলতে থাকেন।
> সে চেয়েছিল তোমাকে খুন করে ঐতিহ্যের উপরে খুনের দায়ভার চাপিয়ে দিতে। উনি চতুরতার সঙ্গে নিজের চেহারা ওর মতো করে ফেলেছিল তুমি বুঝতে পারোনি।
> আর নববধূর ছবি ওইটা?
> বিয়ের রাতে তোমার সঙ্গে সেই ছিল। উনি ঐতিহ্যকে তোমার কাছে একটু রহস্যময় করে তুলতে কাজটা করেছিলেন। খুব নিপুণ ভাবে ছবি এঁকে আবার মুছে দিয়েছিল। তুমি দেওেয়াল টা হয়তো ভালো করে লক্ষ্য করোনি। রঙ তুলি ঘরের কোন থেকে উদ্ধার হয়েছে। যাইহোক সেই মহান ব‍্যক্তিটা কে দেখবে না?
> কে?
উপস্থিত সবার চোখে বিস্ময়। কে এমন জঘন্য কাজ করতে পারে বুঝতে পারছে না। আলামিন সাহেব হাসতে হাসতে চুপচাপ ঐশীর ভাই ঐশ্বর্যের পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন। তারপর কাশি দিয় গলা পরিস্কার করে বললেন,
> ঐশ্বর্য সাহেব আপনার পরিকল্পনা টা ভীষন খারাপ ছিল। এমনটা কেনো করলেন?
> মানে কি বলতে চাইছেন?
> এখনো বুঝতে পারছেন না? অপেক্ষা করুন।
উনি একটা কল রেকর্ড শুনালেন। সেখানে ঐশ্বর্য কথা বলছে আরশীর ভাইয়ের সঙ্গে। সেখানে উনি বারবার ঐতিহ্যকে খুন করতে বলেছেন। আলামিন সাহেব জুলেখা বেগমের সঙ্গে কথা বলে এগুলো জোগাড় করেছেন। তাছাড়া ঐশ্বর্যের ঘর থেকে মেকাপের জিনিসপত্র পাওয়া গেছে। বাসার সামনের সিসি ক‍্যামেরা থেকে বেশ কিছু প্রামাণ সংগ্রহ করেছেন। সব শেষে চৌধুরী সাহেব ঐশ্বর্যের গালে জোরে একটা থাপ্পড় দিলেন। উনার চোখে পানি চিকচিক করেছে। এতোদিন বোনের ছেলেমেয়েকে উনি নিজের ছেলেমেয়ে ভেবে এসেছেন। বোনটা একটা অমানুষকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিল। বেঁচে থাকতে কখনও সুখ পাইনি। সেই লোকটা উনার বোনকে টাকার লোভে বিয়ে করেছিল ঠিকই কিন্তু পরে আবারও বিয়ে করে। এসব সহ‍্য করতে না পেরে উনার বোন সুইসাইড করে মারা গেলে ঐতিহ্যের বাবা ওদের ভাইবোনদের এই বাড়িতে নিয়ে আসেন। উনি আদর করে তিন সন্তানের না দিয়েছিলেন ঐতিহ্য,ঐশ্বর্য আর ঐশী। কথায় বলে রক্ত কথা বলে এখন মনে হচ্ছে কথাটা সত্যিই ছিল। ওরা নিজের বাবার মতোই স্বার্থপর হয়েছে। নয়তো এমন কখনও করতে পারতো না। আলামিন সাহেব মুখ খুললেন,
> আঙ্কেল যা হবার হয়েছে আমি এদের থানায় নেবার ব‍্যবস্থা করছি। বাইরে আমার লোকজন দাঁড়িয়ে আছে। তাছাড়া রিপোর্টার এসছে বেশকিছু। আপনি বিষয়টা সামলে নিয়েন। আর আরশী যখনই দরকার হবে আমাকে ফোন করবে। ভাই থাকতে কোনো চিন্তা নেই। শুধু রক্তের সম্পর্ক থাকলেই আপনার হয়না। তোমার সঙ্গে আমার আত্নার সম্পর্ক ঠিক আছে?
> জ্বী ভাইয়া।
আলামিন সাহেব সবাইকে নিয়ে চলে গেলেন। আরশীর ভাই আরশীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল কিন্তু ঐতিহ্য মানা করেছে। বলেছে ও বাড়ির সঙ্গে ওদের আর কোনো সম্পর্ক নেই। যা ছিল সব সেদিনের রাতে মিটে গেছে। এমন উত্তর শুনে ওরা মাথা নিচু করে ফিরে গেছে। আরশীর শাশুড়ি ভিষন খুশী ছেলে আর ছেলের বউকে ফিরে পেয়ে। তাছাড়া ঐতিহ্য আবার আগের মতো কথা বলতে পারছে। এর থেকে খুশীর খবর কিবা হতে পারে।

রাতে আরশী রুমে একা বসে আছে। এমন সময় ঐতিহ্য ভেতরে প্রবেশ করে দেখলো ও মন খারাপ করে বসে আছে। ঐতিহ্য সোজা ওকে পেছন থেকে জড়িয়ে বলল,
> পর্ব আকাশে এক টুকরো চাঁদ উঠেছে। যাবে আমার সঙ্গে? বড্ড জোছনা বিলাস করতে মন চাইছে। যদিও আমার ঘরে সব সময় চাঁদের আনাগোনা তবুও।

আরশী ওর কথায় মলিন হেসে বলল,

> আপনার কন্ঠটা শুনতে বড্ড ইচ্ছে করতো। খুব আফসোস হয়েছিল বোবা লোকটার সঙ্গে থাকতে হবে ভেবে কিন্তু এখন আমার থেকে খুশী আর কেউ না। কথায় বলে আল্লাহ্ যা করেন ভালোর জন‍্যই করেন।
> আমারও ইচ্ছে করতো তোমাকে নিজের মনের কথাগুলো বলতে। এখন থেকে সারাক্ষণ বলবো। তোমাকে পাগল করে দিব বুঝলে?
> আমি পাগল হতেই তো চাই। আচ্ছা চলুন চাঁদ দেখবো আর গল্প করবো।
কথাটা বলে ওরা হাতে হাত রেখে ছাদের দিকে পা বাড়ালো। ওরা সারাজীবন এক সঙ্গে পথ চলবে সেই অঙ্গীকারে দুজন বদ্ধপরিকর।

সমাপ্ত

আসুন নামাজ ও কোরআন পড়ি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here