মেঘের_আড়ালে_মেঘ”৩৯”
#জেরিন_আক্তার_নিপা
মেহরীনের দিনগুলো এত সুখে কাটছে যে, সে বুঝতে পারছে না, সে কি কোন স্বপ্নের পৃথিবীতে চলে এসেছে? নাকি বাস্তবেই বাস করছে? এত সুখ কখনও পায়নি সে। বাবা,ইরফান, আয়াম,ছোট বাবু… এটা তার পরিবার। তার নিজের পরিবার।
ইরফান যতবার মেহরীন আর ছোট বাবুটাকে সাথে দেখে ততবার তার হামনার কথা মনে পড়ে যায়। আয়ামকে নিয়ে হামনাও এক সময় এমন করত। তার কত শখ ছিল। দ্বিতীয় সন্তানটা সে জোর করে নিয়ে ছিল। মেহরীন এই প্রথম মা হয়েছে। তার সব কিছুতেই ভয়। বাবুকে কোলে নিতে পারে না সে। বাবু নাকি অনেক ছোট। তার হাত থেকে পড়ে যাবে। ইরফান মাঝে মাঝে মেহরীনের কাণ্ড দেখে হাসে। আয়ামের কোলে বাবুকে দিয়ে রাখে তখন ফেলে দেওয়ার ভয় পায় না। আর সে নিজে কোলে নিতে গেলে নাকি ভয় পায়। ইরফান আয়ামের কোলে বাবুকে দেখে আয়ামের জন্মের সময়ের কথা মনে করে। যেদিন আয়াম দুনিয়ায় আসে। সে আয়ামকে প্রথমবার দেখে। প্রথম যখন তাকে স্পর্শ করে। প্রথমবার বাবার হবার অনুভূতি কেমন ছিল তা সে ভাষায় বলে বুঝাতে পারবে না। বাবা হবার খুশি, ভয়, দায়িত্ব সব মিলিয়ে অন্য রকম এক অনুভূতি। এবারও সে খুশি। ছোট ছেলে যখন তার দিকে পিটপিট করে তাকিয়ে থাকে। হাত পা নেড়ে খেলা করে, কোলে নিলে কোমল হাতে তাকে আঁকড়ে ধরে ইরফানের তখন নিজেকে পৃথিবীর সবচে সুখী ব্যক্তি মনে হয়।
মেহরীন বাবুকে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে ওকে বিছানায় রেখে সাবধানে উঠে এসে ইরফানের সামনে দাঁড়ায়। ওর বুকে মাথা রেখে ফিসফিস করে বলে,
“শোন না, বাবুর একটা নাম রাখবে না। ওকে কতদিন বাবু বাবু করে ডাকব।”
“তুমি ওর জন্য সুন্দর একটা নাম খুঁজে বের করো।”
“আমি কেন? তোমার ছেলে, তুমি নাম রাখবে।”
“তোমারও তো ছেলে নাকি! ”
“হুম। আমি ভাবছিলাম আয়ামের সাথে মিলিয়ে কোন নাম রাখব। দুই ভাইয়ের নামই ‘A’ দিয়ে শুরু। ভাল হবে না?”
“হুম।”
“আচ্ছা আমি আয়ামের সাথে কথা বলব। ভাইয়ের জন্য সে কোন নামটা পছন্দ করে রাখল জানতে হবে। ছেলেটা পাগল! স্কুল থেকে ফিরে সারাদিনই ভাই ভাই করে। বাবুর জন্য ঠিকমতো খেতেও চায়না। পুরোটা দিন বাবুকে কোলে নিয়ে বসে থাকে। আমার কোন কষ্টই নেই। আমি নিশ্চিন্ত মনে বাইরে কাজ করতে পারি। আয়াম ওকে এত যত্ন করে কোলে নেয় দেখে আমারই মায়া লাগে। সেদিন স্কুলে যাওয়ার সময় কী বলে জানো? বলে, মাম্মী ভাইকে আমি স্কুলে নিয়ে যাই। রিজভীকে দেখাব ওর বোন আছে, আমারও ভাই আছে। আমার ভাই ওর বোনের থেকেও সুন্দর।”
মেহরীন কথাগুলো বলতে বলতে ইরফানের বুকে নাক ঢলে মৃদু হাসল। ইরফান ওর মাথায় হাত রেখে বলল,
“সরি মেহরীন। তুমি আমায় ক্ষমা করে দিও।”
মেহরীন মাথা তুলে কপাল কুঁচকে ইরফানের দিকে দেখল। ইরফান দুই হাতে ওর মুখ ধরে বলল,
“ক্ষমা এইজন্য চাচ্ছি কারণ, আমার মনে একবার হলেও এই ভাবনা এসেছিল যে, নিজের সন্তান হলে আয়ামের প্রতি তোমার বিহেভ হয়তো একটু চেঞ্জ হতে পারে। কিন্তু না। আমার ভাবনা ভুল ছিল। তুমি সত্যিকারেই আয়ামের মা। শুধু জন্ম দিলেই যে মা হয় না। স্নেহ, মমতা, ভালোবাসা দিয়েও মা হওয়া যায়। তা তোমাকে না দেখলে হয়তো বুঝতাম না।”
.
পরিবারের সবাইকে নিয়ে ছোট একটা অনুষ্ঠান করে বাবুর নাম রাখা হলো আহান। আয়ামের সাথে মিলিয়ে আহান। নামটা অবশ্য আয়ামেরই দেয়া। ভাইয়ের নাম রাখতে পেরে তার খুশির শেষ নেই।
ওদিকে তার কিছুদিন পরেই হুমায়রার বিয়ে ঠিক হয়ে গেল। যে ছেলেটাকে বাবা পছন্দ করেছিল ওর সাথেই। ওই ছেলেটাকে হুমায়রারও পছন্দ হয়েছে।
সবকিছুই তার নিজস্ব গতিতে চলছে। সবাই সবার জীবনে খুশি।
.
আহানের বয়স এখন নয় মাস। দেখতে দেখতে হামাগুড়ি দিতে শিখে গেছে সে। এর মাঝে একটা মজার ঘটনা ঘটেছে। বাচ্চারা স্বাভাবিকভাবে সবার আগে ‘বাবা’ বা ‘দাদা’কে ডাকে। আহান সবার আগে ভাই ডেকেছে। ছোট ভাইয়ের মুখে সর্বপ্রথম ভাই ডাক শুনে আয়ামের খুশি দেখে কে!
মেহরীনের দিন দুই ছেলেকে নিয়ে কেটে যায়। দুটাই বিচ্ছুর সেরা। পুরোটা দিন এত দুষ্টুমি করে!
“আয়াম বাবা, ভাইকে নিয়ে একটু খেলা করো তো। আমি ভাইয়ের জন্য দুধ গরম করে নিয়ে আসি।”
“আচ্ছা মাম্মী। আহান, বলো ভাইয়া। ভাইয়া… হাসে না। আগে ভাইয়া বলো…
আয়াম সোফায় বসে হোমওয়ার্ক করছিল। মেহরীন ডাকলে সে বেডে আহানের কাছে আসে। মেহরীন ওদের রেখে বেড থেকে উঠে যায়। দরজার সামনে গিয়ে হঠাৎ তার মাথা ঘুরে উঠে। মুহূর্তে চোখের সামনে সবকিছু অন্ধকার দেখতে পায়৷ সে দরজা ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। নিজেকে সামলায়। ইদানিং তার সাথে এমন হচ্ছে কেন? শরীরটা মাঝে মাঝে এতটা খারাপ লাগে! চোখে ঝাপসা দেখে। তার হলোটা কী? বড় কোন অসুখ করেছে!
ইরফান রাতে বাড়ি ফিরে। মেহরীন ওর কাছে ছুটে যায়। মানুষটা সারাদিন কাজ করে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফিরে। তাকে চোখের সামনে দেখলে নাকি সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। মেহরীন ইরফানের গা থেকে কোট খুলে নিতে নিতে বলে,
“এক সপ্তাহ ধরে দম ফেলার সময় পাচ্ছ না। এক ঘন্টা ঠিক করে বাড়িতে থাকো না। সকালে বের হও, রাতে ফিরো। আমাদের কাউকেই দুমিনিট সময় দিতে পারো না। ছেলে দুটাকেও আদর করতে ভুলে গেছ। আমার কথা তো বাদই দিলাম। আমি তো এখন পুরোনো হয়ে গেছি।”
কথাগুলো বলতে বলতে অভিমানে মেহরীনের গলা ধরে আসছে। মাথা নিচু করে নিল সে। নইলে এক্ষুনি কেঁদে ফেলবে। ইরফান তার অভিমানী বউটার দিকে কতক্ষণ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। তারপর দু’হাতে মুখ তুলে বলল,
“নতুন একটা কেস হাতে নিয়েছি। ওটাই ভীষণ খাটাচ্ছে। এত দৌড়াদৌড়ি করেও কোন প্রমাণ হাতে পাচ্ছি না। একবার কেসটা শেষ হোক তারপর আমার সবটা সময়ই তো তোমাদের।”
“তোমার এত কাজ করতে হবে কেন? আমাদের তো কম নেই। দুটা ছেলে মিলে এতকিছু শেষ করতে পারবে? ”
“এসব তো আমার বাবা আমাকে দিয়েছে। এই বিষয়সম্পত্তি ওদের দাদুর। বাবার থেকে ওরা কিছু পাবে না! আমি আমার ছেলেদের জন্য কিছু করে যাব না!”
“না। তোমার অত কিছু করার দরকার নেই। ওদেরটা ওরা নিজেরা করে নিতে পারবে। তুমি শুধু আমাকে সময় দিবে। আজকাল তুমি আমাকে বড্ড অবহেলা করছো৷ যদি ছেড়ে চলে যাই না, তখন বুঝবে মজা। কেঁদে কুল পাবে না।”
ইরফান কিছু বলল না। মৃদু হেসে মেহরীনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল।
“আস্তে ধরো। লাগে আমার।”
ওর হাত নিজের হাতে নিলে ইরফান লক্ষ্য করল, মেহরীনের স্ক্রিন এতটা খসখসে হয়ে যাচ্ছে কেন?
“তুমি কী দিনদিন সুন্দর হচ্ছ? হাত পা কেমন সাদা হয়ে গেছে। আর গা-টাও গরম।”
“সুন্দর না মশাই। বলুন ফ্যাকাশে। আমিও লক্ষ্য করেছি সত্যিই আমার শরীর কেমন ফ্যাকাশে হয়ে যাচ্ছে। এমন হচ্ছে কেন বলো তো?”
“আমি তো ডাক্তারি পড়িনি মিসেস। উকালতি করি। এখন আমাকে যদি ডাক্তারি প্রশ্ন করো তাহলে তো সমস্যায় পড়ে যাব।”
“তোমার সব সময় মজা।”
“আচ্ছা পরশু নাহয় তোমাকে নিয়ে ডাক্তার দেখিয়ে আনব। দুর্বল হয়ে যাচ্ছ ভীষণ। আগের মত শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে পারো না।”
“তাই…!”
ইরফান মজা করলেও সে ঠিক বুঝতে পারছে মেহরীনের কিছু তো হয়েছে। ওকে দেখেই বোঝা যায়, ও ভেতর থেকে অসুস্থ। কাজ কাজ করে সে নিজের দায়িত্বে এতদিন অনেক হেলাফেলা করেছে। আর না। এবার পরিবার, বউ, বাচ্চাকে সময় দিতে হবে।
.
আজ দুই বছর পর অনন্ত জেল থেকে বের হলো। গেটের বাইরে পা দিয়ে সে খোলা আকাশের দিকে চোখ বন্ধ করে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল। বুক ভরে শ্বাস নিল। চোখ খুলে খুব শান্ত গলায় বলল,
“মেহু! এতদিনে আমাকে নিশ্চয়ই ভুলে গেছিস তুই। আমাকে তো তুই কবেই তোর জীবন থেকে লাথি মেরে বের করে দিয়েছিস। তাহলে আমার কথা মনে রাখবি কেন তুই? কিন্তু আমি তো তোকে ভুলিনি। তোকে না পাওয়ার শোকে পাগলও হইনি। এই অনন্ত কঠিন ধাতু দিয়ে গড়া। একে এত সহজে হারানো সহজ না। তুই হয়তো ভেবেছিস আমাকে জেলে পাঠিয়ে আমার থেকে পিছু ছাড়িয়ে নিয়েছিল। ভুল ভাবছিস রে মেহু। যতদিন আমি না মরব। ততদিন তোর শান্তি নেই। জেলে দুইটা বছর কীভাবে কাটিয়েছি তা শুধু আমি জানি। প্রতিটা দিন তোর কথা মনে করেছি। তোকে ভেবে আমার সকাল হয়েছে। আবার রাতে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত তোর কথাই মনে করেছি। তোর সাথে আমার অনেক হিসাব বাকি আছে। জেলে যাওয়ার আগে তুই শুধু আমার পাগলামি আর ভালোবাসা দেখেছিস। এবার দেখবি আমার প্রতিশোধ কতটা ভয়ঙ্কর।”
অনন্ত জেল থেকে বেরিয়ে অন্য কোথাও না গিয়ে সোজা ইরফানের বাড়ির উদেশ্যে হাঁটতে লাগল।
.
অনবরত কলিংবেল বাজতে থাকলে হুমায়রা বিরক্ত হয়ে এসে দরজা খুলে দিল।
“আসছি তো বাবা। কলিংবেল ভেঙে…
বলতে বলতে সামনে দাঁড়ানো লোকটাকে দেখে সে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে গেল। অনন্ত ইরফানের বাড়িতে হুমায়রাকে দেখে অবাক হলো না। দুলাভাইয়ের বাড়িতে শ্যালিকা দরজা খুলতেই পারে। অনন্ত মুখে এতবড় হাসি টেনে বলল,
” হুমায়রা ভালো আছো?”
হুমায়রা মুখ দিয়ে কোন শব্দ বের করতে পারছে না। তার হাত পা অবশ হয়ে আসছে। অনন্ত কবে জেল থেকে ছাড়া পেল! আর ও এখানেই বা কী করছে?
“ভাবছো তো আমি জেল থেকে কবে ছাড়া পেলাম? আজই ছাড়া পেয়েছি। জেল গেট থেকে বেরিয়ে সোজা এখানে এসেছি। এই পৃথিবীতে আমার তো আর কেউ নেই। কয়েকটা মানুষের জন্যই তো জেলে বসে দিন গুনেছি। কবে আমার শাস্তি শেষ হবে? কবে বের হব? আর কবে এই মানুষগুলোর সামনে এসে দাঁড়াব। পুরোনো অনেক হিসেব বাকি আছে। ভালোবাসা, রাগ, ঘৃণা, প্রতিশোধ… হ্যাঁ প্রতিশোধ! যাকগে সেসব কথা। আমাকে ভেতরে আসতে বলবে না? নাকি দরজার সামনে থেকেই বিদেয় দিবে ভাবছ।”
হুমায়রা ভেবেছিল সে হয়তো কোন স্বপ্ন দেখছে। কিন্তু না। স্বপ্ন দেখছে না সে। অনন্ত বাস্তবেই জেল থেকে ছাড়া পেয়েছে। শুধু এতটুকু নয়। এখন ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে।
“মেহু কোথায় হুমায়রা? ও কী বাড়িতে আছে?”
হুমায়রা ঠোঁটে তাচ্ছিল্যের হাসি ফুরিয়ে তুলে বলল,
“এখানে আপনি মেহরীনের থেকে প্রতিশোধ নিতে এসেছেন! প্রতিশোধ! হাহ্, যে মানুষটা হাসপাতালের বেডে শুয়ে তার জীবনের বাকি কয়েকটা দিন গুনছে, তার থেকে কী প্রতিশোধ নেবেন আপনি? উপরওয়ালা আপনার এই চাওয়া পূরণ করবেন না বলেই হয়তো আপনার সাথে ওর সাক্ষাৎ হওয়ার আগেই ওকে নিজের কাছে ডেকে নিচ্ছেন।”
হুমায়রার কথা অনন্ত ঠিক বুঝতে না পারলেও তার মুখে মেহরীনের শেষ দিন গোনার কথা শুনে বুকের ভেতর মুচড় দিয়ে উঠল। শুকনো গলায় সে জানতে চাইল,
“মেহু হাসপাতালে কেন? ওর কী হয়েছে? ”
“ব্লাড ক্যান্সার। এই পৃথিবীতে ও আর কিছু দিনের মেহমান। ওর হাতে বেশি সময় নেই।”
বলতে বলতে হুমায়রা চোখের পানি আটকাতে পারল না। অনন্ত শূন্য দৃষ্টি নিয়ে থমকে দাঁড়িয়ে রইল।
.
“মিস্টার ইরফান উনি আপনার সাথে দেখা করতে চাচ্ছেন না। উনি আপনাকে কাল আসতে বলেছেন।”
ইরফান দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ক্যান্সার ধরা পড়ার পর মেহরীনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। ইরফান রোজ ওর সাথে দেখা করতে আসে। কিন্তু মেহরীন মাঝে মধ্যে দেখা করতে চায় না৷ ইরফান বুঝে মেহরীন কেন দেখা করতে চায় না। ওর শরীর যেদিন বেশি খারাপ থাকে, শ্বাস নিতে ভীষণ কষ্ট হয়। ওর সাথে কথা বলতে পারে না। সেদিন মেহরীন তাকে ফিরিয়ে দেয়। সে জানে তার কষ্ট ইরফান সহ্য করতে পারে না।
“আজ কী ওর অবস্থা একটু বেশি খারাপ?”
“হ্যাঁ। সকাল থেকে শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে।”
ইরফান করিডরে মাথা চেপে ধরে বেঞ্চে বসে রইল।
তার সাথেই কেন এমন হয়? হামনাকে হারিয়েছে সে। এখন মেহরীনকেও হারাতে চলেছে। ইরফান বুঝতে পারে না তার কী করার আছে। কী করলে সে মেহরীনকে নিজের কাছে রেখে দিতে পারবে। ডাক্তার বলেছে মেহরীনকে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে যেতে। হায়াত থাকলে মেহরীন সুস্থ হতে পারে। ইরফান ভাবে, ব্ল্যাড ক্যান্সার কি কখনও সেরে যায়? তার সামনে কোন পথ খোলা নেই। যতদূর চোখ যায় শুধুই অন্ধকার নজরে আসে। মেহরীন না থাকলে তার বেঁচে থাকাও অর্থহীন হয়ে যাবে। সবচে বড় কথা, আয়াম, আহান ছেলে দু’টা তাদের মা’কে ছাড়া কীভাবে থাকবে?
ইরফান মেহরীনের সাথে দেখা না করেই এক সময় বাড়ি চলে আসে। বাড়িতে আয়াম,আহান আছে। দুই ছেলেকে দেখলে ইরফানের বুক খা খা করে। ওরা কী বুঝবে ওদের মা’র কতবড় অসুখ হয়েছে। মা হয়তো আর বাঁচবে না।
আয়াম পাপার কাছে এসে জানতে চায়,
“পাপা, মাম্মী কবে বাসায় আসবে? মাম্মী হসপিটালে থাকে কেন পাপা? মাম্মীর কী হয়েছে?”
ইরফান অসহায় চোখে ছেলের মুখের দিকে চেয়ে থাকে। তার কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না।
চলবে___
বানান ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনাদের মন্তব্যের প্রত্যাশায় রইলাম।