মেঘের_আড়ালে_মেঘ”২৪”
#জেরিন_আক্তার_নিপা
হুমায়রা ইরফানের সাথে প্রথমে অনন্তর দেওয়া তার অফিসের ঠিকানায় গেল। অনন্ত যে ঠিকানা দিয়েছিল, সেখানে গিয়ে ওরা জানতে পারলো এই কোম্পানিতে অনন্ত বলে কেউ কাজ করে না। উনারা অনন্ত নামে কাউকে চিনেনই না। ইরফান বারবার হুমায়রাকে দেখছে। মেয়েটা একদিনে এতগুলো ধাক্কা সামলাতে পারবে তো? যতই শক্ত মনের মেয়ে হোক। কষ্ট তো তাও লাগে। সেটা প্রকাশ করতে না পারলে কষ্টের মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে যায়। গাড়িতে উঠে বসতে বসতে ইরফান বলল,
“হুমায়রা চলো আজ বাসায় ফিরে যাই। কাল বা অন্য কোনোদিন নাহয়…
” না দুলাভাই। আজই আমি এর শেষ দেখতে চাই। ওই বাটপারের মুখের উপর ওর রিং ছুঁড়ে আসতে চাই।”
“কিন্তু হুমায়রা…
” কোন কিন্তু না দুলাভাই। আমাকে নিয়ে আপনি চিন্তা করবেন না। আমি ঠিক আছি। আমি ওই অমানুষের জন্য কষ্ট পাব না। যে আমার ঘৃণার যোগ্য না তার জন্য আমি চোখের পানি ফেলব না। অতটা বোকা আমি না।”
“হুম। আমি ভাবিনি তুমি এক কথায় আমার উপর বিশ্বাস করবে। আমার কাছে সব ধরণের প্রমাণ আছে।”
“দুলাভাই! আপনার মুখের কথা কি যথেষ্ট নয়? আমাকে আপনার প্রমাণ দেখাতে হবে!”
ইরফানের নিজেকেই এখন অপরাধী লাগছে। হামনার শোকে সে এতটাই গুম হয়ে ছিল যে, নিজের কাছের মানুষ গুলো এমনকি হামনার বোনের দিকেও খেয়াল রাখেনি। সে হামনাদের বাসায় আসা যাওয়া বন্ধ না করে দিলে অনন্তর সাথে তার আগেই দেখা হতো। সে অনন্তর ব্যাপারে খোঁজ খবর নিতে পারতো। হয়তো অনন্তর সত্য সে হুমায়রার এনগেজমেন্টের আগেই জেনে যেত। তাহলে এখন মেয়েটা এত কষ্ট পেত না। সব দোষ তার। নিজের ছোট বোনের মত হুমায়রাকে স্নেহ করে সে। অথচ আজ তার কষ্ট কমাতে পারছে না। উল্টো তার জন্য হুমায়রার জীবনে নানান সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
হামনা চলে যাওয়ার পর তার দায়িত্ব ছিল সবাইকে দেখে রাখার। সে তার দায়িত্ব পালন না করে নিজেকে সবকিছু থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছিল। সম্পর্কের দায়িত্ব থেকে পালিয়ে বাঁচতে চেয়েছিল সে।
“ওই বাটপারকে এখন কোথায় পাব দুলাভাই?”
“জানি না। আমি ওকে কল করে আসতে বলতে পারি। আমার কল পেয়ে পাগলা কুত্তার মত ছুটে আসতে বাধ্য সে।”
“না। আমি কল করে ডাকব। আপনি শুধু আমার সাথে থাকবেন। দেখবেন ওকে আমি কেমন শিক্ষা দেই।”
হুমায়রা ইরফানের সামনে নিজেকে যতটা কঠিন দেখাতে চাইছে, মনে মনে সে তার থেকেও বেশি ভেঙে পড়েছে।
.
হুমায়রা অনন্তকে একটা রেস্টুরেন্টে আসতে বলে। অনন্ত কাজ আছে বলে বাহানা দিয়ে আসতে না চাইলেও হুমায়রা তার কোন কথা শুনলো না।
ইরফান হুমায়রা পাশাপাশি বসে আছে। অনন্ত ভেতরে ঢুকতেই ওদের দেখে ওর চোয়াল শক্ত হয়ে গেল। ইরফান তাহলে হুমায়রাকে সব বলে দিয়েছে। তার কথা ইরফান রাখেনি।
অনন্ত এসে হুমায়রার সামনে বসল। হুমায়রার মুখ দেখে কিছু বুঝতে পারল না সে। হুমায়রা বলল,
“অফিস থেকে এসেছেন?”
অনন্ত মনে মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল। হুমায়রা তার সম্পর্কে জেনে গেলে নিশ্চয়ই এমন করে কথা বলতো না। বরং তাকে দেখার সাথে সাথেই থাপ্পড় মেরে বসত।
“হ্যাঁ, হ্যাঁ। অফিস থেকেই এসেছি। স্যারকে বলে এক ঘন্টার জন্য বেরিয়েছি। লাঞ্চ টাইম শেষ হওয়ার আগে ফিরতে হবে।”
“ওহ। আপনার অফিসটা যেন কোথায় পড়েছে? কখনও যাওয়া হয়নি। ভাবছি দুলাভাইকে নিয়ে একদিন যাব। দুলাভাই আপনার কাজের জায়গা, আপনার বাসা দেখতে চেয়েছিল।”
হুমায়রা এমন ভাবে হেসে হেসে কথা বলছে যে, অনন্ত সত্য মিথ্যা গুলিয়ে ফেলছে। বাঁ হাতে কপালের ঘাম মুছে বলল,
“অফিস! ওই অফিসের ঠিকা…
” ওহ হ্যাঁ, আর একটা কথা। আমার নতুন বোন মেহরীন। ও আপনাকে দুলাভাইদের বাসায় দাওয়াত করেছে। আপনাকে কিন্তু যেতেই হবে। নইলে আমার বোন মনে কষ্ট পাবে।”
অনন্ত এবার ইরফানের মুখের দিকে তাকিয়ে তোতলাচ্ছে।
“দা-দাওয়াত! হ্-হ্যাঁ অ-অবশ্যই যাব। যাব না কেন? ন-না যাওয়ার তো প্রশ্নই আসে না।”
হুমায়রা অনন্তর মিথ্যা আর সহ্য করতে পারছে না। লোকটা এতগুলো মাস ধরে তার সাথে শুধু মিথ্যাই বলে যাচ্ছে। আর সে অন্ধের মত লোকটার সব মিথ্যা কথাগুলোকে সত্য ভেবে বিশ্বাস করে এসেছে। তাকে ইরফানের সাথে দেখার পরও কত সুন্দর করে বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা বলে যাচ্ছে। ইরফান তার সত্য জানে। যেকোন সময় বলে দিতে পারে এই ভয়টাও মনে কাজ করছে না! হুমায়রা কখনও ভাবতে পারেনি অনন্ত তার সাথে এরকম করবে। প্রথম দেখাতেই অনন্তকে পছন্দ করে ফেলেছিল সে। আজ সে বুঝতে পারছে, মানুষের উপরটা দেখে ভেতরটা বোঝা যায়না। হুমায়রা এই জায়গাটাতেই ভুল করেছে। বাহিরের চাকচিক্য দেখে অনন্তর ভেতরের নোংরা মনটাকে দেখতে পারেনি। অত দিন অনন্ত তার আড়ালে তাকে ধোঁকা দিয়ে এসেছে। আজ সবটা জেনে সে অনন্তকে এতটা সহজে ছেড়ে দিবে না। হুমায়রা জোরে জোরে কয়েকবার দম টানলো। নিচের ঠোঁট কামড়ে ধরে নিজেকে ভেতর থেকে শক্ত করল। টেবিলের উপর থেকে পানির গ্লাসটা হাতে নিয়ে এদিক ওদিক না তাকিয়ে সোজা অনন্তর মুখে পুরোটা পানি ছুড়ে মারল। হুমায়রার এই কাজে রেস্টুরেন্টে উপস্থিত সবার সাথে ইরফানও অবাক হয়ে গেল। ইরফান ভাবেনি হুমায়রা হঠাৎ এমন কিছু করে বসবে। আশেপাশের মানুষ গুলো মুখ হা করে হুমায়রার দিকে তাকিয়ে আছে। কারো কারো চোখ কোটর ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে চাইছে। হুমায়রা টেবিলে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে চেঁচিয়ে বলল,
“চিটার! বাটপার! চোর! আমার সামনে বসে তুই বিনা সংকোচে এতগুলো মিথ্যা বলে যাচ্ছিস। অমানুষ, জানোয়ার আমি তোকে ছাড়ব না। কী ভেবেছিল তুই, এতকিছু করার পরও এত সহজে পার পেয়ে যাবি! না, না,না। আমি তোকে এত সহজে ছাড়ব না। এবার বুঝবি তুই কার পাল্লায় পড়েছিল। সারাজীবন পস্তাবি তুই, কেন এই মেয়েকে জালে তুলতে গিয়েছিলাম।”
রেগে আগুন হয়ে কথাগুলো বলেই হুমায়রা আশেপাশে তাকিয়ে কিছু খুঁজতে লাগল। পাশেই এক ওয়েটার ট্রে হাতে দাঁড়িয়ে ড্যাব ড্যাব করে হুমায়রাকে দেখছিল। এখানের উপস্থিত কেউই বুঝতে পারছে না, এখানে কী হচ্ছে। ওয়েটারটাও সবার সাথে বোঝার চেষ্টা করছে এই মেয়ের মাথা টাথা খারাপ হয়ে গেছে নাকি? মেয়েটা কি পাগল। হুমায়রা দু’পা এগিয়ে এসে ওয়েটারের কাছ থেকে সফট ড্রিঙ্কসের গ্লাস নিয়ে আবার অনন্তর মুখে ছুটে মারল। নুডলসের প্লেট নিয়ে পুরোটাই অনন্তর মাথায় ঢেলে দিল। হুমায়রার এই রূপ ইরফান আজই প্রথম দেখছে। তার এরূপ পাগলামি দেখে ইরফান হাসি চেপে রাখতে পারল না। সে উঠে এসে হুমায়রাকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। হুমায়রাকে পেছন থেকে আটকে ধরেছে সে। হুমায়রা চিংড়ি মাছের মত লাফালাফি করে বলছে,
“দুলাভাই ছাড়ুন। ছাড়ুন আমাকে। আমি এই অমানুষকে ছাড়ব না। উচিত শিক্ষা দেব শয়তানটাকে। মেয়েদের জীবন নিয়ে খেলা করার শখ মিটিয়ে দেব। মেয়েদের মন এতটাই সস্তা বস্তু নাকি এর কাছে! দুলাভাই ছাড়ুন বলছি।”
হুমায়রার এই রুদ্রমূর্তি রূপ দেখে অনন্ত হতবুদ্ধি হয়ে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে। তার মুখে কোন কথা নেই। কয়েক মিনিটের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেছে সে। হুমায়রা এতটা ভয়ংকর হতে পারে এটা তার কল্পনার বাইরে। এই মেয়েকে সে সব সময় তার হ্যাঁতে হ্যাঁ মিলাতে দেখে এসেছে। কখনও তার কথার উপর একটা কথাও বলেনি। সেই মেয়ে আজ তার মুখের উপর ড্রিঙ্ক ছুঁড়ছে! তার মাথায় নুডলস ঢালছে! সবটাই কেমন অনন্তর কাছে অবাস্তব লাগছে। মনে হচ্ছে সে স্বপ্ন দেখছে। তার এই স্বপ্ন এক্ষুনি ভেঙে যাবে। তখন সে নিজেকে অন্য কোথাও আবিষ্কার করবে। তার সামনে হুমায়রা ইরফান কেউ থাকবে না।
ইরফান হুমায়রার দুই হাত পেছনে দিকে ধরে রেখেছে। হুমায়রা নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ইরফান তার কানের কাছে বলল,
“কুল শ্যালিকা, কুল। শান্ত হও। তোমাকে এই রূপে দেখে আমারই ভয় লাগছে। মাথা ঠান্ডা করো। রিল্যাক্স, রিল্যাক্স! মাথা ঠান্ডা করো প্লিজ।”
হুমায়রা হাঁপিয়ে উঠেছে। সে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে। অনন্ত এখনও পাথর।
“আমি তোকে পুলিশে দেব বাটপারের বাচ্চা। তুই মেহরীনকে ঠকিয়ে আমাকে বিয়ে করার নাটক সাজিয়েছিস। আমাকে ভালোবাসিস না তবুও এনগেজমেন্ট করে ফেললি। টাকা চাই তোর? তোর প্রথম থেকেই আমার বাবার টাকার দিকে নজর ছিল। তোকে আমি জেলের ভাত খাইয়ে ছাড়ব। তুই শুধু দেখে যা। তোর এই নোংরা চেহারা আমি কীভাবে মেহরীনের সামনে আনি। মেয়েটা তোকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে। তুই ওকেও ঠকাচ্ছিস। জীবনে একজন মানুষের আপন হবি তো নাকি? সবার সাথে ধোঁকাবাজি! কারো প্রতি তোর একটু অনুভূতিও কাজ করে না।”
ইরফান বুঝতে পারছে হুমায়রাকে এখান থেকে জোর করে না নিয়ে গেলে, এই মেয়ে আজ এখান থেকে যাবে না। সারাদিনই এখানে দাঁড়িয়ে অনন্তর চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে যাবে। সে হুমায়রাকে টেনে নিয়ে আসতে চাইছে। হুমায়রা বাধা দিচ্ছে।
“দুলাভাই আপনি আমাকে ছাড়ছেন না কেন? কোথায় টেনে নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে। ছাড়ুন দুলাভাই, আমি এই ভণ্ড লোকের মাথা না ফাটানো পর্যন্ত শান্তি পাব না। এতগুলো মাস ধরে ও আমাকে ঠকিয়ে যাচ্ছে। আমার মাথায় আগুন জ্বলছে দুলাভাই। প্লিজ একটা বার ছাড়ুন শুধু। আমি এর মাথার সব চুল ছিড়ে ফেলব।”
ইরফান হুমায়রাকে না ছেড়ে ওভাবে ধরে রেখেই অনন্তর সামনে গিয়ে দাঁড়াল। চোখ টিপ দিয়ে মৃদু হেসে বলল,
“ভায়রা ভাই… ওপস এখন তো ভায়রা ভাই বলা যাবে না। দেখলে তো, সব মেয়েরা এক রকম হয়না। মেহরীনের মত সবার মন মোমের হয়না। কোন কোন মেয়ে হুমায়রার মতোও আগুনের ফুলকি হয়। একটু হাওয়া পেলেই জ্বলে উঠে। এটা তো প্রথম ধাপ। হুমায়রা যদি তোমার এই অবস্থা করে তাহলে মেহরীন তোমার কী করবে ভাবো। মেয়েদের কম মনে করে তুমি জীবনের সবচে বড় ভুল করেছ।”
ইরফান হুমায়রাকে জোর করে নিয়ে আসার সময় হুমায়রা বলল,
“আর একটা কাজ বাকি রয়ে গেছে দুলাভাই।”
ইরফান ওর মুখের দিকে তাকাল হুমায়রা ঠোঁট টিপে হাসল৷ ইরফানও হেসে ওকে ছেড়ে দিল। হুমায়রা ফুল অ্যাটিটিউড নিয়ে অনন্তর সামনে এসে দাঁড়াল। নিজের আঙুলের আংটি খুলে অনন্তর মুখের উপর ছুড়ে দিল। অনন্তর হাত নিয়ে টেনে ধরে আংটি খুলতে খুলতে বলল,
“তোর জিনিস তোর কাছে রাখ৷ আমার জিনিস আমাকে ফিরিয়ে দে। আর হ্যাঁ, খবরদার কখনও আমার সামনে পড়বি তো। তোকে আজ শুধু মেহরীনের জন্য ছেড়ে দিচ্ছি। তাই বলে ভাবিস না তোকে মেহরীনের সাথে মেনে নেব আমি। যত তাড়াতাড়ি পারিস মেহরীনকে ছেড়ে দিবি তুই। তোর মত নোংরা মানসিকতার লোক মেহরীনকে ডিজার্ভ করে না। তুই মেহরীনের পায়ের জুতারও যোগ্য না।”
হুমায়রা অনন্তর হাত থেকে আংটি খুলে নিয়ে চলে এলো। অনন্ত এতটা সময় ধরে চুপ করে হুমায়রার প্রতিটা কথা গায়ে মেখেছে। সে চাইলেই হুমায়রার প্রতিটা কথার যোগ্য জবাব দিতে পারত। হুমায়রার হাত মুচড়ে ভেঙে ফেলা তার জন্য তেমন কিছু ছিল না। কিন্তু সে তা করেনি। কারণ এখন টেক্কা ইরফানের হাতে। সে এখন কোন ভুল করতে চায় না। টেক্কা তার হাতে নিয়ে তবেই সে ইরফানের সাথে লাগবে। অনন্ত মাথা থেকে নুডলস ঝেড়ে ফেলে মনে মনে প্রতিজ্ঞা করল,
“ইরফান, ইরফান, ইরফান। তোমাকে বলেছিলাম আমার সাথে লাগতে এসো না। আমাকে আমার মত ছেড়ে দাও। আমি মেহুকে নিয়ে তোমাদের জীবন থেকে অনেক দূরে চলে যাব। তুমি আমার কথা শুনলে না৷ তুমি আমাদের মাঝে হুমায়রাকে টানলে। আজকের এই দিনের কথা আমি কক্ষনো ভুলব না৷ আমার জীবনের সমস্ত স্মৃতি নষ্ট হয়ে গেলেও আজকের দিনের কথা আমার মাথা থেকে বের হবে না। এতগুলো লোকের সামনে আজ আমি যতটা অপমানিত হয়েছি, তুমিও ঠিক এতটাই অপমানিত হবে। এই অপমানের জ্বালা আমার গায়ে ততদিন জ্বলবে যতদিন না আমি এর শোধ নিতে পারব। তুমি এই অনন্তর সাথে লেগে মোটেও ভালো করোনি। এর জন্য তোমাকে সত্যিই পস্তাতে হবে ইরফান। মেহু আমার থাক বা না থাক, আজকের অপমান আমার সাথে সারাজীবন থাকবে। আমি চেয়েও কখনও তোমাকে ক্ষমা করতে পারব না। আজ থেকে আমার জীবনের সবচে বড় দুশমন তুমি ইরফান। তুমি। আমি শ্বাস নেওয়া ভুলে যাব কিন্তু তোমার খারাপ চাওয়া ভুলব না। এই দেহে যতদিন প্রাণ থাকবে ততদিন আমি তোমার ক্ষতি করে যাব। কথা দিলাম তোমাকে।”
অনন্ত জলন্ত চোখে আশেপাশের মানুষ গুলোর দিকে তাকালে ওরা নিজেদের মত সরে পড়ল। অনন্ত ইরফান আর হুমায়রার চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে কিড়মিড় করে বলল,
“হাতি কাদায় পড়লে নাকি চামচিকাও লাথি মারে। আমিও আজ কাদায় পড়েছি। তুমিও নাহয় এক দুইটা লাথি মারলে। তবে সময় আমারও আসবে। বেশি দিন কাদায় পড়ে থাকব না আমি ইরফান। দিন গুনতে থাকো তুমি।”
চলবে___