মেঘের_আড়ালে_মেঘ”১০”
#জেরিন_আক্তার_নিপা

ইরফান নিজের ঘরে যেতে পারছে না। মেহরীন আয়ামের সাথে ওখানে আছে। মেহরীন এ বাড়িতে আসার পর তার অস্বস্তি আরও বেড়েছে। সে কতক্ষণ বাবার ঘরে কাটিয়েছে। তারপর বাইরে গিয়ে কতক্ষণ পায়চারি করে ফিরে এসেছে। মেহরীনের জন্য গেস্ট রুম রেডি করা হয়েছে। ইরফান নক করে ভেতরে ঢুকল। ইতস্তত করে অন্য দিকে তাকিয়ে বলল,

“আয়াম ঘুমিয়েছে?”

মেহরীন তাকে আস্তে কথা বলতে বলল,

“এই এই আস্তে কথা বলুন। আয়াম মাত্রই ঘুমিয়েছে। জোরে কথা বললে জেগে যাবে।”

ইরফান চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। মেহরীন উঠে এসে ইরফানের সামনে দাঁড়াল। গলা খাদে নামিয়ে ফিসফিস করে বলল,

“আপনার ছেলে এত কথা বলতে পারে! বাবা! এক মিনিটের জন্য থামছিল না। এটা সেটা বলেই যাচ্ছিল।কত কষ্ট করে ওকে ঘুম পারালাম। মাম্মী তুমি পঁচা, মাম্মী তুমি একটুও ভালো না। তুমি আমাকে রেখে চলে গিয়েছিলে। তোমার সাথে আড়ি। আরও কতশত অভিযোগ তার। একদম পাগল।”

মেহরীন আয়ামের দিকে তাকিয়ে হেসে হেসে কথাগুলো বলেছে। ইরফানের চোখ এক মুহূর্তের জন্য মেহরীনের উপর আটকে গেল। মেয়েটার হাসিও সেইম হামনার মত। হাসলে এই মেয়েরও ডান গালে টোল পড়ে।
মনে মনে নিজেকে শাসাল ইরফান। এই মেয়ের দিকে একদম তাকাবি না তুই। এই মেয়েকে দেখলে আমি তোর চোখ তুলে নেব। ইরফান গলা খাঁকারি দিয়ে বলল,

“আপনার জন্য গেস্ট রুম গোছানো হয়েছে। আপনার লাগেজ রুমে রাখা আছে। ফ্রেশ হয়ে গিয়ে রেস্ট নিন এবার।”

“আচ্ছা। রাতে আয়ামের ঘুম ভেঙে গেলে আমাকে ডাকবেন।”

“হুম।”

মেহরীন আবার একবার আয়ামকে দেখে আসলো। ওর মাথায় হাত বুলিয়ে কপালে কিস করল। এই ঘর থেকে বেরিয়ে মেহরীন নিজের ঘরে না গিয়ে ইরফানের বাবার ঘরে গেল। দরজায় টোকা দিয়ে বলল,

“আঙ্কেল! জেগে আছেন? আমি আসব?”

সাথে সাথে ভেতর থেকে শোনা গেল।

“এসো মা, এসো।”

মেহরীন মুখে হাসি ঝুলিয়ে ভেতরে গেল। বলল,

“ঘরে যাচ্ছিলাম। ভাবলাম আপনাকে একটু দেখে যাই।”

“ভালো করেছ মা। আমারও রাতে ঘুম আসে না। গল্প করারও মানুষ নেই। দেখো না ইরফানটা সব সময় শুধু শাসন করে। বাবা রাত জাগবে না। বাবা এটা করবে না। বাবা ওটা করবে না। যেন আমি ওর বাবা না। ও-ই আমার বাবা। দাঁড়িয়ে আছো কেন? বসো না মা।”

মেহরীন বসে চোখ ঘুরিয়ে ঘরটা দেখতে লাগল। এতদিন পরিবার ছাড়া ছিল সে। এখানে আসার পর তার পরিবারের অভাব পূরণ হলো। তার বাবাও উনার মতই ভালো মানুষ ছিলেন। সে আসার পর থেকে মানুষটা
তাকে একটা বারও মা ছাড়া ডাক দেয়নি।

“তোমার পরিবারে কে কে আছে মা? তোমার বাবা মা উনারা কোথায় থাকেন?”

“আমার বাবা, মা বেঁচে নেই আঙ্কেল।”

“ওহ। দুঃখিত মা। আমি জানতাম না।”

“না,না আঙ্কেল। আমি কষ্ট পাইনি। বরং বাবা মা’কে নিয়ে কথা বলতে আমার ভালো লাগে। আপনি রাতের বেলা চা খান, আঙ্কেল? আমি বানিয়ে নিয়ে আসি?”

“না মা। আজ তোমার উপর দিয়ে এমনিতেই অনেক ধকল গেছে। আজ বরং তুমি গিয়ে শুয়ে পড়ো। চা কাল খাওয়া যাবে।”

“আচ্ছা। আপনিও ঘুমিয়ে পড়ুন আঙ্কেল। বেশি রাত জাগবেন না।”

“আচ্ছা।”

সেই রাতে আর আয়ামের ঘুম ভাঙল না। মেহরীন ক্লান্ত শরীরে ফ্রেশ হয়ে অনন্তকে কল দিতে ভুলে গেল। বিছানায় গা লাগাতেই ঘুমে তার বুজে এলো।
.
অনন্ত তার নিজের প্ল্যানে যথানিয়মেই এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু এখন সে আর মেহরীনকে ঠকাবে না। তাই প্ল্যানে একটু চেঞ্জ আনতে হলো। হুমায়রাকে সে কোনদিনও বিয়ে করবে না। বিয়ে তো সে মেহরীনকেই করবে।পায়চারি করতে করতে অনন্ত বলল,

“হুমায়রার পাঠ অতিশীঘ্রই চুকিয়ে ফেলতে হবে। এখানে আর বেশি সময় দেওয়া যাবে না। নাহলে মেহরীনের সামনে আমার সত্য এসে পড়বে। কী করা যায়? কী করা যায়?”

সিগারেট ধরিয়ে অনন্ত ভাবছে।

“হুম। লাইন পেয়ে গেছি।”

অনন্ত ফোন হাতে নিল। হুমায়রাকে কল করে দুপুরে একটা রেস্টুরেন্টে দেখা করতে বলল। ফোন পকেটে রেখে দিয়ে আয়েশ করে সিগারেটে টান দিয়ে হাসতে লাগল।

“মেহু শুধু একটা বছর সময় দে আমাকে। আমি তোকে নিয়ে এই শহর ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাব।
নতুন শহরে গিয়ে দু’জনে মিলে নতুন করে জীবন শুরু করব। তোকে বিয়ে করব আমি। তুই আমার বউ হবি মেহু।”
.
.
সকালে ঘুম থেকে উঠেই আয়াম মেহরীনকে না দেখে তাকে ডাকতে লাগল। মেহরীন কিচেন থেকে দৌড়ে এল। ওড়নায় হাত মুছতে মুছতে দরজার সামনে এসে বলল,

“কী হয়েছে বাবু? এভাবে ডাকছো কেন? ”

“তুমি আমাকে রেখে কোথায় গিয়েছিলে মাম্মী?”

“কোথাও যাইনি তো বাবু। আমি তো রান্নাঘরে তোমার জন্য খাবার বানাতে গিয়েছিলাম।”

“তুমি আমার সাথে ঘুমাওনি মাম্মী?”

“হ্যা?”

মেহরীন হুট করে মিথ্যা বলতে পারে না। থতমত খেয়ে সে বলল,

“ঘুমিয়েছি তো বাবা। সকালে উঠে গেছি। তোমার মনে নেই, তুমি সারারাত আমাকে ধরে ঘুমিয়েছ।”

আয়াম বিছানা থেকে উঠে এসে মেহরীনের হাত ধরে বলল,

“তুমি আমাকে আর পাপাকে রেখে চলে যাবে না তো?”

মেহরীন আয়ামের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলল,

“যাব না বাবা। তুমি আজ স্কুলে যাবে না? চলো, চলো তোমাকে রেডি করে দিই।”

ইরফান বাইরে থেকে এসে আয়ামকে ডাকতে এসে দেখে আয়াম অলরেডি ঘুম থেকে উঠে, দাঁত ব্রাশ করে, স্কুলের জন্য রেডি হয়ে খেতে বসে গেছে। ইরফানকে দেখে আয়াম বলে উঠল,

“পাপা। দেখো আমি স্কুলের জন্য রেডি হয়ে গেছি। তুমি কোথায় গিয়েছিলে? পাপা আজ আমাকে মাম্মী স্কুলে নিয়ে যাবে।”

মেহরীন ইরফানের দিকে তাকাল। সে আয়ামের স্কুল চেনে না। আর আয়ামকে সে স্কুলে নিয়ে গেলে তাকে দেখে কেউ যদি আয়ামকে কিছু বলে। স্কুলের স্যার ম্যামরা নিশ্চয়ই জানে আয়ামের মা মারা গেছে।
ইরফান বলল,

“না বাবা। মাম্মী অসুস্থ। সে বাসায় রেস্ট নিক। তুমি তো রোজ রোজ আমার সাথেই স্কুলে যাও।”

“মাম্মী অসুস্থ! মাম্মী তোমার কী হয়েছে? তোর জ্বর এসেছে?”

মেহরীন একবার ইরফানের দিকে তাকিয়ে আবার আয়ামের দিকে দেখে বলল,

“হ্যাঁ বাবা। একটু একটু জ্বর। তুমি আজ পাপার সাথে স্কুলে যাও। আমি কাল থেকে নিয়ে যাব, কেমন?”

ইরফান আয়ামকে নিয়ে বেরিয়ে গেলে মেহরীন বাবার রুমে গিয়ে উনাকে চা দিয়ে এসে নিজের ঘরে বসল। ওড়না দিয়ে কপাল মুছতে মুছতে বলল,

“আহ! পাক্কা সংসারী মনে হচ্ছে নিজেকে। যেন এটাই আমার সংসার। আয়াম আমার ছেলে আর ওই গোমড়ামুখো…

বলতে বলতে থেমে গেল সে। ভিজে কামড় দিয়ে বলল,

” এসব কী বলছি আমি হ্যাঁ! ওই গোমড়ামুখো আমার স্বামী হবে! এ্যাহ এত খারাপ দিন এখনো আসেনি আমার। আমার তো অনন্তর সাথে বিয়ে হবে। এখানে আমি জব করতে এসেছি। এই সবকিছু আমার জবের মধ্যে পড়ে। এটাকে আমার সংসার আর ওই লোককে স্বামী ভাবার প্রশ্নই আসে না। হ্যাঁ তবে আয়ামের জন্য মা মা ভাব আসে।”

ফোন হাতে নিয়ে মেহরীনের মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। অনন্ত একটা কলও দেয়নি! এই তার ভালোবাসা হ্যাঁ! কাল তো এখানে আসার আগে অনেক বড় বড় কথা বলছিল। ওই লোককে একদম লাই দিবি না। আমি ছাড়া কেউ তোর দিকে তাকালে হেন করব, তেন করব। যতসব আগলা পিরিত।
.
.
দুপুরে হুমায়রা রেস্টুরেন্টে একটু আগেই পৌঁছে যায়। সেখানে গিয়ে সে অনন্তর জন্য অপেক্ষা করে। এনগেজমেন্টের পর এটাই তাদের প্রথম একসাথে বের হওয়া। মানুষটা এতটা চাপা স্বভাবের কখনও ভালো করে দু’টা কথাও বলে না। আজ কী ভেবে নিজে থেকে কল করে এখানে আসতে বলল আল্লাহই জানেন। আর অপেক্ষা করতে ভালো লাগছে না। বারবার আশেপাশে দেখছে হুমায়রা।

“আমাকে এখানে আসতে বলে উনি নিজে ভুলে বসে আছে না তো? এখনও আসছে না কেন? এতটা দেরি হবার তো কথা না। নিশ্চয়ই ভুলে গেছে…

হুমায়রা কথা শেষ করার আগেই অনন্তকে তার টেবিলের দিকে আসতে দেখল। যাক ভুলে নি তাহলে। অনন্ত এসে হুমায়রার সামনে বসল। টুকটাক কথা বলে খাবার অর্ডার করল। চুপচাপ দু’জন খেল। খাওয়া শেষ করে অনন্ত বলল,

” তোমাকে একটা কথা বলার জন্য এখানে ডেকেছি। তোমার বাসায় গিয়েও বলতে পারতাম। কিন্তু…

“সমস্যা নাই। বলুন না কী বলবেন?”

“কথাটা তুমি আঙ্কেলকে বুঝিয়ে বোলো। আমি উনার সামনে কীভাবে যাব ভেবে পাচ্ছি না।”

হুমায়রার বুক ধুকপুক করছে। কী এমন কথা বলবে উনি! বিয়ে ভেঙে দিবে না তো? না,না। বিয়ে কেন ভাঙবে?
অনন্ত আড়চোখে হুমায়রাকে দেখল। মনে ভয় ঢুকেছে মেয়েটার। টুক করে এখন আসল কথা বলে দিলেই হলো। সে ইতস্তত ভাব নিয়ে বলল,

“আসলে বিয়েটা আমি সামনের মাসেই করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন হঠাৎ একটা সমস্যা হয়ে গেল। তুমি তো জানোই আমার বাবা, মা নেই। গ্রামে চাচা আছেন। হঠাৎ করে আজ চাচা মারা গেলেন। আজই আমাকে গ্রামে যেতে হবে। কতদিনে ফিরতে পারব বলতে পারছি না। মাস একের মত লেগেই যাবে। ফেরার আগে চাচীর একটা ব্যবস্থা করে আসতে হবে। উনাকে কীভাবে একা রেখে আসব সেটাও বুঝতে পারছি না। সাথে নিয়ে আসারও অবস্থা নেই। তুমি আমার কথা বুঝতে পারছো তো?”

অনন্ত মুখে করুণ ভাব ফুটিয়ে তুলল। যেন এক্ষুনি কেঁদে ফেলবে। হুমায়রা তাকে সান্ত্বনা দেবার মত কোন কথা খুঁজে পাচ্ছে না। সে বলল,

“এই কথা বলার জন্য আপনি এতটা ইতস্তত করছেন? বিয়ের জন্য কেউ আপনাকে জোরজবরদস্তির করছে? আপনি তো আর পালিয়ে যাচ্ছেন না। গ্রামে সব ঠিক হলে তবেই ফিরবেন। তার আগে না। আমি বাবাকে বলে দেব। বাবা কিছুই মনে করবেন না। আপনি ফিরলে তখন বিয়ের কথা ভাবা যাবে। আগে আপনি গ্রামে গিয়ে চাচীকে সামলান।”

অনন্ত হুমায়রাকে ধন্যবাদ দিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে গেল। বিল হুমায়রাই দিল। রাস্তায় বেরিয়ে অনন্ত হাসতে লাগল। গাধা মেয়ে এটাও বুঝে নি সে এতক্ষণ যা যা বলেছে সব মিথ্যে। আরে কারো চাচা মারা গেলে সে রেস্টুরেন্টে বসে চাইনিজ খাবে না।

“আহ! কাজ অনেকটা এগিয়ে গেল। এবার মাস দু’য়েকের জন্য ডুব দিতে হবে। কিছুতেই এই মেয়ে বা তার বাবার সামনে পড়া যাবে না। এক মাস পরে এসে নতুন চাল চালতে হবে। ততদিন শান্তি আর শান্তি। অহো, মেহুর একটা খোঁজ নেওয়া হলো না। নিশ্চয়ই রাগ করে গাল ফুলিয়ে বসে আছে। ও বাড়ির জবটা কেমন হয়েছে জানতে হবে। মানুষজন সুবিধার হলে কয়েক মাস কাজটা করুক। মেহু ওদিকে ব্যস্ত থাকলে আমি নিশ্চিন্তে এদিকে আমার কাজ সারতে পারব। তারপর মেহুকে নিয়ে নতুন শহরে ফুরুত।”
.
.
সকালের একটু পরপর অনন্তর সাথে মেহুর কথা হয়েছে। তারপর বাকিটা দিন তার শুয়ে বসেই কাটল। আয়াম এগারোটার দিকে স্কুল থেকে ফিরে এসেছে। ড্রাইভার তাকে দিয়ে গেছে। আয়ামের কাছ থেকে মেহু শুনেছে ইরফান অফিসে গেছে। মেহরীন এখনও এটাও জানে না লোকটা কী কাজ করে।
দুপুরে সে আয়ামকে খাইয়ে দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে বাবার ঘরে গেছে। এই বাড়িতে আয়ামের মা’র অনেকগুলো ছবি। কিন্তু কাল থেকে এ বাড়িতে আসার পর মেহু আসল কথাটা এখনও কারো থেকে জানতে পারেনি। আয়ামের মা মারা গেছে কীভাবে? কী হয়েছিল উনার? এই কথাটা না জানতে পারলে তার শান্তি লাগবে না। যে মেয়েটাকে তার মত দেখতে, তার সম্পর্কে জানার কৌতূহল জাগবে এটাই স্বাভাবিক।
.
মেহরীন ইরফানের বাবার ঘরে বসে নখ খুটছে। উনি কথা বলছেন মেহরীন শুনছে। উনার কথার মাঝে মেহরীন হঠাৎ বলল,

“আঙ্কেল একটা কথা জিজ্ঞেস করব?”

“একটা কেন মা? অনেক গুলো কথা জিজ্ঞেস করো।”

“আঙ্কেল আয়ামের আ-আম্মু… আয়ামের আম্মু কীভাবে মারা গেছে?”

দীর্ঘশ্বাস ফেললেন উনি। হাতের বইটা রেখে বললেন,

“হামনা! হামনা তার দ্বিতীয় সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখাতে গিয়ে নিজেই চোখ বুজে নিয়েছে।”

“দ্বিতীয় সন্তান!”

“হুম। বাচ্চাটা হামনার গর্ভেই মারা যায়। হামনার অবস্থাও ভালো ছিল না। শেষে সে-ও শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে। স্ত্রী সন্তান দু’জনকে একসাথে হারিয়ে আমার ইরফানটা ভীষণ ভাবে ভেঙে পড়েছিল। কয়েক মাস তো পাগলের মত কাটিয়েছে। আমরা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম, না জানি ছেলেটা পাগল হয়ে যায়। কিন্তু না, আয়ামের জন্য ইরফান নিজেকে শক্ত করেছে। ও যদি পাগলামি করে তাহলে ছোট আয়ামটার কী হবে? আমার ছেলেটা ভীষণ সাহসী। ও নিজের মাঝে সব কষ্ট লুকিয়ে রাখে। আমাকে কখনও বুঝতে দেয়না।”

মেহরীন হতভম্ব হয়ে কিছুক্ষণ বসে রইল। লোকটা শুধু নিজের স্ত্রীকেই হারায়নি! স্ত্রী সন্তান দু’জনকেই হারিয়েছে। এই লোক কীভাবে স্বাভাবিক আছে? সে নিজে হলে তো পাগল হয়ে যেত। প্রিয় মানুষকে হারানোর কষ্ট যে সহ্য করার মত না। সবটা শুনে ইরফানের জন্য মেহরীনের মনে এক ধরণের অজানা কষ্ট অনুভব হচ্ছে। মেহরীন ভেবে নিয়েছে, সে নিজের দিক থেকে যতটা পারে লোকটাকে কখনও কষ্ট দিতে চাইবে না। জেনে বুঝে তো একদম না-ই।

চলবে___

আজকের পর্বটা পড়ে সবাই নিজেদের অনুভূতি জানাবেন।
আর গল্প সম্পর্কিত সকল ধরনের পোস্ট আমার গ্রুপে করতে পারেন।
গ্রুপ লিংক
👇
https://www.facebook.com/groups/928548141001685/?ref=share

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here