#মন_নিয়ে_খেলা(১৬)
***********************
কী ব্যাপার, আবারও মন খারাপ কেন?
এমনি।
এমনি, এমনি মন খারাপ! কী হয়েছে বলবে তো? বাসায় কিছু হয়েছে? আন্টি কিছু বলেছেন?
আম্মু না।
তাহলে কে?
বাবা।
আংকেল কী বলেছেন?
অনেক কথা। বাবা, তোমাদের বিষয়ে অনেক কথা জানতে চাইলেন।
তুমি কী বলেছ?
আমি যতটুকু জানি, ততটুকুই বলেছি।
ঐটুকু শুনে আংকেল কী বললেন?
বাবা আমাকে আরও ভালো করে চিন্তাভাবনার পর সিদ্ধান্ত নিতে বললেন।
তুমি কী চিন্তাভাবনা করলে?
কিছু ভাবিনি।
তাহলে সিদ্ধান্ত নেবে কী করে?
অরণী কিছুক্ষণ চুপ করে সাদমানের দিকে তাকিয়ে থাকল। তারপর বলল, সিদ্ধান্ত তো নিয়েই নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত নিতে আমার তিন বছর সময় লেগেছে। আজকে এসে হঠাৎ করে মত পালটে ফেলব বলে সিদ্ধান্ত নিইনি আমি।
আংকেল ঠিক কোন বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছেন, বলবে আমাকে?
বাবা তেমনভাবে কিছু বলেননি। আমাকে কোনোরকম জোরও করেননি। পুরোটাই আমার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।
আমার আসলে আগে চিন্তা করা উচিত ছিল।
কী চিন্তা?
আংকেল ওনার জায়গা থেকে ঠিকই বলেছেন৷ আমার মতো একটা মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলের, তোমার সাথে রিলেশন করা মানায় না।
এই-ই তোমার চিন্তা!
আমি কী ভুল কিছু বললাম?
আগে যখন এসব নিয়ে ভাবোনি, আজকে আর নতুন করে ভাবনার কোনো অবকাশ নেই। নতুন করে কিছু ভাবতে চাইও না। আমি শুধু বাবার কথাটাই তোমাকে বললাম। তুমি কথাটা এভাবে নেবে, এটা জানলে আর বলতাম না।
আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, আমাদের জন্য সামনে একটা ঝামেলা অপেক্ষা করে আছে।
কী ঝামেলা?
সেটা আমি জানি না; কিন্তু ঝামেলা একটা হবেই।
মোবাইল ফোনটা বেজে উঠতেই অরণী ফোন রিসিভ করে কথা বলল। কথা শেষ করে তার চোখে-মুখে বিরক্তি ফুটে উঠল। সাদমান জিজ্ঞেস করল, কী হয়েছে? কার ফোন?
আম্মুর।
আন্টি? আন্টি কী বললেন?
আম্মু জানতে চাইলেন আমি এখন কোথায়? কখন বাসায় ফিরব। আমি স্কুল-কলেজে থাকতেও, আম্মু কখনও এভাবে ফোন করে আমার খোঁজ নিতেন না। মনে হচ্ছে আমি যেন কোনো স্কুল গার্ল। একারণে বারবার ফোন করে খোঁজ নিচ্ছেন কোথায় আছি, কী করছি।
নীলোর্মির ক্লাস শেষ হবে কখন? নাকি ও বাসায় চলে গেছে?
নীলোর্মিদের ক্লাস থেকে আজকে স্টুডেন্টদের কোথায় যেন নিয়ে যাওয়ার কথা। নীলোর্মি ওখান থেকেই বাসায় চলে যাবে। আম্মু তোমার কথা জানার পর থেকেই আমার প্রতি একটু বেশি কনসার্ন দেখানো শুরু করেছেন। আমি বুঝতে পারছি আম্মু আমাকে চোখে, চোখে রাখতে চাচ্ছেন। এই জিনিসটা আমার ভীষণ বিরক্ত লাগছে। কথাটা বলেই অরণী ওর মোবাইলটা সজোরে ব্যাগের ওপর রাখল।
মোবাইলটা তুলে নিয়ে সাদমান বলল, আন্টির ওপর রাগ করো না। আন্টি তোমার ভালো চান বলেই এমন করছেন।
আমার এসব ভালো লাগছে না। আমার ইচ্ছা হচ্ছে….
কী ইচ্ছা হচ্ছে? থামলে কেন, বলো।
বলব না। যখন আর ধৈর্য ধরার অবস্থা থাকবে না, তখন কাজটা করে ফেলব।
কী কাজ, অরণী? আমাকে বলবে না?
এখন বলব না। সময় আসুক।
সাদমান উদ্বিগ্ন চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইল। শান্ত অরণীর এমন রাগান্বিত রূপ সে আগে কখনও দেখেনি।
——————-
পূনমরা তিন বোন আজ সিনথির বাসায় একত্রিত হয়েছেন। তাঁদের বাবা শাহাবুদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে কয়েকটা এতিমখানায় খাবার পাঠানো হয়েছে। দু’টো বৃদ্ধাশ্রমের সব বাসিন্দাদের জন্য নতুন কাপড় আর শুকনো খাবার পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের একমাত্র ভাই রূপম কানাডায় থাকেন। তিনবোন একসঙ্গে ভিডিয়ো কলে, ছোটো ভাইয়ের সঙ্গে কথা বললেন। আব্বা-আম্মাকে নিয়ে তাঁদের সবার স্মৃতিচারণ পরিবেশটাকে আর্দ্র করে তুলল। রূপম ফোন রাখার পর তাঁরা এবার নিজেদের সংসার নিয়ে আলোচনা শুরু করলেন। সিনথি আবারও অরণীর প্রসঙ্গ টানলেন। পূনম তুমি অরণীকে ঐ ছেলেটার কথা জিজ্ঞেস করেছিলে?
লাবনী জিজ্ঞেস করলেন, কোন ছেলে আপু?
সিনথি বললেন, আমি তোমাকে একটা ছেলের কথা বলেছিলাম তো। ঐ যে যমুনায় দেখা হয়েছিল।
ও আচ্ছা।
সিনথি বললেন, পূনম তুমি লাবনীকে বলোনি?
পূনম বললেন, খেয়াল ছিল না।
আচ্ছা, এখন বলো, তুমি কী কথা বলেছ?
হুম, বললাম সেদিন।
অরণী কী বলল? ঐ ছেলে ওর বয়ফ্রেন্ড, তাই না?
হুম।
আমি তোমাকে বলেছিলাম কিন্তু। ওদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ দেখে আমি ঠিকই বুঝে গেছি। ছেলের কী অবস্থা, সেটা বলো? ছেলের বাবা কী করে?
সরকারি চাকরি।
কোন লেভেলের চাকরি?
শিক্ষা অধিদপ্তরে কাজ করে। উপপরিচালক বোধহয়।
ফ্যামিলি কেমন, খোঁজ নিয়েছ? এইসব কারণে আমি আমার বাচ্চাদের দেশে রাখিনি। দেশে থাকলে, কোথায় যেত, কাদের সঙ্গে মিশত, তার কোনো ঠিক আছে? আমি সাফিন, সারা দু’জনকেই বলে দিয়েছি, নিজের লেভেল বুঝে যা করার করবে। দেশে থাকলে, কোনসব আবুল-কাবুলের ছেলেপেলের সঙ্গে ভেজাল বাধিয়ে বসবে৷ পরে এসব নিয়ে আরেক কেলেংকারি অবস্থা হয়ে যাবে। ওরা বাইরে আছে দেখে, আমি খুব নিশ্চিন্তে আছি বাবা। অরণীর ব্যাপারটা কী হল? ও কী সিরিয়াস? তোমরা বিষয়টা এখনই সিরিয়াসলি নাও পূনম। ছেলের ফ্যামিলি আমাদের সমকক্ষ কি না, ভালো করে খোঁজ নাও।
কিছুটা খোঁজ নিয়েছি। অখিল যা বলল, সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার। তেমন কিছু না।
এইসব মধ্যবিত্ত ফ্যামিলিতে আমাদের মেয়েরা থাকতে পারবে? এরা কী এভাবে বড়ো হয়েছে? তুমি অরণীকে বুঝিয়ে এই রিলেশন এখানে স্টপ করাও।
হুম সেটাই ভাবছি।
লাবনী এতক্ষণ দুইবোনের কথা শুনছিলেন। এবার তিনি বললেন, ছেলে ভালো হলে সমস্যা কোথায়? আজকের দিনে এসব কোনো ব্যাপার নাকি?
সিনথি বললেন, তোমার কাছে তো ব্যাপার মনে হবে না। তুমি নিজেও তো এই কাজ করেছ। তাই এখন সাফাই গাইছ।
আমি কিসের সাফাই গাইলাম?
দুইবোনের কথা শুনতে পূনমের বিরক্ত লাগছে। তিনি কারো কাছ থেকে জ্ঞান নিতে রাজি না। মেয়ের সঙ্গে কী করতে হবে, সেটা তিনি কারো চেয়ে কম জানেন না। পূনম উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, আমি যাচ্ছি।
দুইবোন একসঙ্গে বলে উঠলেন, এখন কেন?
পূনমের হঠাৎ করেই মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে। আগামী কয়েক ঘন্টায় এটা আর ঠিক হবে না। কাজেই এখানে বসে থেকে বোনদের ওলট-পালট কথা শোনার চেয়ে, চলে যাওয়াটাই ভালো। তিনি বললেন, যেতে হবে আপু। ফাহাদের গেস্ট আসবে বাসায়।
ওমা, এটা কখন ঠিক হল! তুমি না বললে, আজকে তোমার কোনো কাজ, কোনো অনুষ্ঠান, কিছুই নেই।
হঠাৎ করেই হয়ে গেল। ফাহাদ কিছুক্ষণ আগে ফোন করল। আমাকে এখনই যেতে হবে। আপু, লাবনী, তোমরা এই শুক্রবার বাসায় আসো।
সিনথি বললেন, শুক্রবার কী?
কিছুই না। এমনিই আসো। অনেকদিন একসাথে আড্ডা দেওয়া হয় না। ঠিক আছে, আমি গেলাম। শুক্রবার এসো কিন্তু।
পূনম চলে গেলে সিনথি বললেন, কী ব্যাপার বলো তো? পূনম এমন তাড়াহুড়ো করে চলে গেল কেন?
জানি না, আপু। ওর কোনোকিছুই আমি বুঝি না। এতক্ষণ কত ভালোভাবে কথা বলছিল। আমরা তো এমন কিছু বলিওনি যে ছোটো আপুর রাগ হতে পারে। বাদ দাও। অন্য কথা বলো।
–———————–
বিকেলে জরুরি একটা মিটিং আছে; কিন্তু ফাহাদের এখন কেমন যেন অস্বস্তি লাগছে। থেকে, থেকে বুকের ভেতর চিনচিনে একটা ব্যথা হচ্ছে। তিনি জিএমকে রুমে ডেকে পাঠালেন। জিএম শাখাওয়াত হোসেন রুমে ঢুকলে ফাহাদ বললেন, আজকের মিটিংয়ের কী করি, বলেন তো শাখাওয়াত?
কেন স্যার? কিছু হয়েছে?
আমার শরীরটা একটু খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে একটু রেস্ট দরকার। শাখাওয়াত, আপনি মিটিংটা চালিয়ে নিতে পারবেন না?
পারব স্যার; কিন্তু লি-ফাং গ্রুপের এমডি তো সবসময় আপনার সঙ্গে সরাসরি মিটিং করেন। স্যার এক কাজ করি, আজকের মিটিংটা পিছিয়ে দিই।
না, না। এই সময়ে এসে মিটিং পেছালে ওনারা বিষয়টা ভালোভাবে নেবেন না।
স্যার আপনার কী বেশি খারাপ লাগছে? স্যার গাড়ি বের করতে বলব? হসপিটালে যাবেন?
হসপিটালে না। আমি বরং বাসায় চলে যাই।
স্যার, আমি কী ম্যাডামকে ফোন করব?
না, দরকার নেই। মিটিংয়ের কী করব, সেটাই বুঝতে পারছি না।
স্যার, আমি দেখছি কী করা যায়। আপনি বাসায় চলে যান। ওনারা যদি আপনাকে ছাড়া মিটিংয়ে বসতে চান, আমি সব ম্যানেজ করে নিতে পারব। আপনি টেনশন করবেন না।
কথার ফাঁকে জিএম শাখাওয়াত গাড়ি বের করতে বলেছিলেন৷ পিয়ন এসে দরজায় নক করে জানালো, গাড়ি অপেক্ষা করছে। শাখাওয়াত বললেন, স্যার আপনার সঙ্গে কাউকে যেতে বলি?
না, লাগবে না। আমি এতটাও অসুস্থ হইনি। একটু খারাপ লাগছে। আমি চলে যাব। সাথে কাউকে যেতে হবে না।
ঠিক আছে স্যার।
আর শোনেন, যদি প্রয়োজন মনে করেন, আমাকে ভিডিয়ো কলে নিয়ে নিয়েন৷
জি স্যার, ঠিক আছে।
ফাহাদ প্রয়োজনের জিনিসপত্র গুছিয়ে ল্যাপটপ ব্যাগ নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।
——————
পূনম বাসায়ই ছিলেন। এমন অসময়ে ফাহাদকে বাসায় ঢুকতে দেখে তিনি বেশ অবাক হলেন। তিনি ফাহাদের পিছনে এসে রুমে ঢুকে বললেন, কী ব্যাপার? তুমি এই অসময়ে বাসায় যে?
একটু খারাপ লাগছিল, তাই চলে এলাম।
কী রকম লাগছে? তুমি বাসায় আসলে কেন? আমাকে ফোন করে দিতে। আমি হসপিটালে চলে যেতাম। সরোয়ার ভাইকে ফোন করেছ? উনি এই সময়ে কোথায় বসেন?
সরোয়ার তো এখন ঢাকা মেডিক্যালে। সন্ধ্যায় ইউনাইটেডে বসবে।
তুমি ওনাকে ফোন করো। আমরা কী সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করব নাকি? ফোন করে ওনাকে খারাপ লাগার কথা জানাও। উনি যদি বলেন, তাহলে আমরা এখনই হসপিটালে চলে যাই৷
পূনম তুমি এত অস্থির হচ্ছ কেন? সামান্য একটু বুক ব্যথাই তো করছে। খাওয়াদাওয়ার বোধহয় কোনো উলটোপালটা হয়েছিল। বেশি খারাপ লাগলে তো আমি নিজেই হসপিটালে চলে যেতাম।
আমাদের চেক-আপের ডেট কবে যেন? ডিসেম্বর নাকি জানুয়ারিতে?
ডিসেম্বরে।
ডিসেম্বর তো দেরি আছে।
হুম। আমি ভাবছিলাম, এখনই চেক-আপ করিয়ে আসি৷
হুম সেটাই ভালো। আমি অখিলকে বলছি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব, টিকিট কেটে ফেলতে। তুমি ড্রেস চেঞ্জ করে সরোয়ার ভাইকে ফোন করো।
হুম।
পূনম রুম থেকে চলে গেলে, ফাহাদ ফোন করে তাঁর বন্ধুর সঙ্গে কথা বললেন। সরোয়ার বললেন, তিনি পাঁচটার মধ্যে হসপিটালে চলে আসবেন। ফাহাদ যেন ঐসময়ে হসপিটালে চলে আসেন।
পূনম, অখিলকে ফোন করে যত দ্রুত সম্ভব এয়ারলাইনসের দু’টো টিকিট করতে বললেন।
অখিলের ফোন রাখতেই, লেডিস ক্লাবের সেক্রেটারি ফোন করলেন। এর আগেও দুই দিন ওনার ফোন এসেছিল; কিন্তু পূনম ফোন রিসিভ করেননি। গত সপ্তাহে তিনি একদিনও ক্লাবে যাননি। যত আগ্রহ নিয়ে তিনি প্রসিডেন্টের কাজ শুরু করেছিলেন, হঠাৎ করে কেন জানি এই কাজের প্রতি একদম আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন! তার ওপর আমস্টারডাম যাওয়ার ব্যাপারটা নিয়েও বেকায়দায় আছেন। ফাহাদকে কোনোভাবেই রাজি করানো যায়নি। এদিকে ক্লাব থেকে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কবে নাগাদ তাঁরা যাওয়ার প্ল্যান করবেন। এখন ফোনটা আসায় তাঁর মাথায় একটা বুদ্ধি খেলে গেল। ফোন রিসিভ করে পূনম বললেন, কেমন আছেন জিনিয়া আপু?
আমরা তো ভালো আছি। আপু, আপনাকে তো একসপ্তাহ ধরে পাচ্ছিই না! আপনি ক্লাবেও আসছেন না। তাই ভাবছিলাম এখন আপনাকে না পাওয়া গেলে, সন্ধ্যায় বাসায়ই চলে আসব। আপু আপনি সুস্থ আছেন তো?
আমি ভালো আছি। আমাকে কেন খুঁজছিলেন, আপু? কোনো জরুরি বিষয় নাকি?
না, তেমন জরুরি না। মেয়েরা তো আপনাকে ফোন করতে ভয় পায়৷ সবাই শুধু আমাকে ফোর্স করছিল, আমি যেন আপনাকে ফোন করি। সবার তো প্ল্যান করাও শেষ। আমাদের আমস্টারডাম কবে নাগাদ যাওয়া হতে পারে, পূনম আপু?
ওহ হো, জিনিয়া আপু, আপনাকে তো একটা কথা বলাই হয়নি।
কোন কথা আপু?
আমাদের আমস্টারডাম যাওয়াটা হচ্ছে না। আপনি এই কথাটা সবাইকে জানিয়ে দেবেন প্লিজ।
যাওয়া হচ্ছে না! কেন? কোনো সমস্যা হয়েছে?
হুম। ফাহাদ হঠাৎ করে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওকে ইমারজেন্সি সিঙ্গাপুর নিতে হচ্ছে।
হায় আল্লাহ! আপু কী বলেন? ভাইয়ার এখন কী অবস্থা?
ভালো না। ভীষণ টেনশনে আছি আপু। একারণে আমি ক্লাবেও আসতে পারছি না। কারো ফোনও রিসিভ করতে পারছি না। আমার যে কী খারাপ লাগছে এই ট্যুরটা বাতিল করতে, আপনাকে কী বলব! ক্লাবে সবাই যে আমাকে কী ভাববে?
না, না আপু। একদম মন খারাপ করবেন না। আমি সবাইকে বুঝিয়ে বলব। সবার আগে ভাইয়ার চিকিৎসা, তারপর সবকিছু। আপনি ক্লাব নিয়ে একদম ভাববেন না৷ এটা একটা ব্যাপার হল নাকি? আপনারা কখন যাচ্ছেন আপু?
যত তাড়াতাড়ি টিকিট পাওয়া যায়।
ঠিক আছে। আমি ফোনে যোগাযোগ রাখব। ভাইয়ার জন্য শুভকামনা রইল।
থ্যাংকস জিনিয়া আপু।
জিনিয়ার ফোনটা রেখে পূনম স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। আমস্টারডাম ট্যুরটা তাঁর মাথার ওপর বোঝার মতো চেপে বসেছিল। এত সহজে এর থেকে পরিত্রাণ পেয়ে যাবেন, এটা তিনি ভাবতেই পারেননি। তাঁর খিঁচড়ে যাওয়া মেজাজটা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে।………………………