গল্প:-মনের_মহারাণী
লেখিকা:-Sohani_Simu
পর্ব:-০৪

দিনের শেষ ভাগে আমাদের বিয়ে হয়ে গেল।উমান ভাইয়া জোর করে আমাকে বিয়ে করলেন।পাঁচটাকা দিনমোহর নিয়ে বিয়ে হল আর আমার যেহেতু বিয়ের বয়স হয়নি তাই দশহাজার টাকা ঘুষ দিয়ে সেই বিয়ে রেজিস্ট্রি করানো হল।কি থেকে কি হয়ে গেল আমি এখনও বুঝতে পারছিনা।আমার মনে হচ্ছে আমি একটা খেলনা পুতুল।ওরা আমাকে যেভাবে নাচাচ্ছে সে ভাবেই নাচতে হচ্ছে।রাগে আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে।কিছুতেই স্থির থাকতে পারছিনা।আম্মুর শোকেসের ভেতরে সাজিয়ে রাখা দামী দামী জিনিসপত্র গুলো ভেঙ্গে খান খান করছি।আম্মু এখানে থাকলে মেরে আমার পিঠের ছাল তুলে নিত।যাইহোক,বিয়ের জন্য এগারো জন ছেলে-মেয়ে আমাদের বাসায় এসেছে।আমি তাদের চেনা তো দূর কোন দিন দেখিওনি।কথা বার্তা আর হাবভাব দেখে বুঝা যাচ্ছে এরা সবাই উমান ভাইয়ার ফ্রেন্ড।উমান ভাইয়া একটু দূরে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে উনার দুটো ছেলে ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছেন।দুজন আপু সোফায় বসে ফোন টিপছে আর বাকি দুজন আপু কিচেনে কফি বানাচ্ছে।আরও পাঁচজন ছেলে ডাইনিংয়ে বসে বিরিয়ানি,বোরহানি,হালিম খাচ্ছে আর গল্প করছে।

এত কিছু ভাঙ্গলাম কেউ আমাকে সামান্যতম বাঁধা দিল না।এরা কি চাইছে আমি বাসার সবকিছু ভেঙ্গে ফেলি?আমার বাবার টাকা এভাবে ধ্বংস করব?কখনও না।মনে মনে ভাবলাম এভাবে আমার আম্মুর জিনিস ভাঙলে আমারই লস তাই আমার উচিত উমান ভাইয়া আর উমান ভাইয়ার ফ্রেন্ডদের জিনিসপত্র ভাঙ্গা।যেই ভাবা সেই কাজ।আমি গিয়ে মেয়ে দুটোর হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে ফ্লোরে আছাড় মারলাম।মেয়ে দুটো কিছু বলছে কিন্তু আমি সেসব না শুনে ডাইনিং টেবিলের কাছে গিয়ে পানি ভর্তি জগ হাতে নিয়ে ছেলে গুলোর দিকে ছুড়ে মারলাম।সবাই খাবার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।আমি রাগী কন্ঠে চেঁচিয়ে বললাম,

‘এটা আমার বাসা,বের হয়ে যান আপনারা এখান থেকে।’

উমান ভাইয়া ব্যালকনি থেকে সবটা দেখেছেন আমি সিউর।তাও উনি এদিকে আসছেন না।একটা ছেলে শার্টে লাগা পানি ঝেড়ে ফেলে মুচকি হেসে বাকিদের দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘দেখলি তো তোরা?আমার অভিশাপ কখনও বিফলে যায়না।আগেই বলেছি উমানকে একমাত্র ওর বউই শায়েস্তা করবে।এখন তোরা দেখ শুধু ওই বদমাইশ উমানকে ওর এই ক্ষীপ্তা বউ কিভাবে মাইর দেয়।’

সবাই হো হো করে হাসতে লাগলো।আমি রেগে নিজের রুমে এসে সজোরে দরজা লাগিয়ে দিলাম।ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ারের নিচে বসে চিৎকার করে কান্না করতে লাগলাম।আমি কিছুতেই এই বিয়ে মেনে নিতে পারছিনা।রাগে নিজেকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে করছে কিন্তু আমি মরে গেলে মিনির কি হবে?আমার বোন,ও যে খুব ছোট।

ওয়াশরুমের দরজায় ধাক্কা-ধাক্কি হতেই আমি শাওয়ার বন্ধ করে দরজা খুললাম।উমান ভাইয়া আর উনার ফ্রেন্ডরা আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।আমাকে ভেজা দেখেই উনার ফ্রেন্ডগুলো রুম থেকে চলে গেলেন।যেতে যেতে বললেন,

‘আমরা গেলাম ভাই,তুই তোর বউকে সামলা।’

দরজা আমি ভেতর থেকে লক করেছিলাম।এই বদমাইশ লোক তার সাঙ্গ পাঙ্গদের নিয়ে আমার রুমের এত দামী দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকেছে।আমার রাগ যেন তির তির করে বাড়তে লাগলো।উমান ভাইয়া সেই তখন থেকে আমার দিকে তাকিয়েই আছেন,কিছুই বলছেন না।আমি আবার ওয়াশরুমে ঢুকে দরজা লাগাবো তখনই উনি দরজায় হাত রাখলেন।আমি জোড়ে দরজা লাগানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু উনি আমার এক হাত ধরে আমাকে টেনে ওয়াশরুমের বাইরে নিয়ে আসলেন।আমি রেগে উনার হাতে নিজের সর্বশক্তি দিয়ে কামড় বসিয়ে দিলাম।কামড়ে হাতের মাংস তুলে নিয়ে উনার দিকে তাকিয়ে দেখি উনি ওই একইভাবে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।দেখে মনে হচ্ছে ব্যথা ট্যাথা কিছু পাননি।উনার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার দাঁত কেঁটে বসে রক্ত বের হয়ে গিয়েছে।এর জন্য উনি কি আমাকে মারবেন?মারতেই পারেন।উনি আমাকে একটা মারলেই আমি ডিরেক্ট কবরে চলে যেতে পারি।ভয় পেয়ে একটা শুকনো ঢোক গিলে বললাম,

‘কককেঁটে গেল,এখন ককি হবে?’

উনি অপ্রস্তুত হয়ে বললেন,

‘হুম?কি?কি বললি?’

আমি পরপর দুটো শুকনো ঢোক গিললাম।উনি কি এতক্ষণ অন্যমনস্ক ছিলেন?নাকি উনার মাথার সমস্যা আছে?উনি কি পাগল?পাগল না হলেও উনার মাথায় সিট আছে,সিট না থাকলেও নিশ্চয় ভূত আছে।নাহলে আমাকে এভাবে বিয়ে করতেন না।কেমন আবুলের মতো আমাকে আবার জিজ্ঞেস করছেন আমি কি বললাম।হাতের ব্যথা কি মাথায় গিয়ে লেগেছে?আবুল কোথাকার!!

উমান ভাইয়া আমার গালে এক হাত রেখে নরম কন্ঠে বললেন,

‘বল,কি বললি?’

আমি গাল থেকে উনার হাত সরিয়ে দিয়ে একটু পিছিয়ে গিয়ে তুতলিয়ে বললাম,

‘কককই কিছু না।শুনুন এটা আআমার বাসা আআপনাকে থাকতে দিব না,গেগটলস্ট।’

উনি মৃদু হাসলেন।আলমারি আর ওয়্যারড্রপ খুঁজে একটা আকাশী কালার টাওয়াল বের করে আমার সামনে দাঁড়ালেন।আমার মাথায় ওড়নার মতো করে টাওয়াল দিয়ে মুচকি হেসে বললেন,

‘তোর বাসা হতেই পারে বাট তুই কে জানিস তো?তুই আমার বউ।এই গরিব রাজার একমাত্র মহারাণী।আমার মনের মহারাণী।তাই আমাকে বাসা থেকে বের করে দিলে তোকে সাথে নিয়েই যাব।যেখানে কিং সেখানেই কুইন।’

আমি রেগে মাথা থেকে টাওয়াল সরিয়ে দিলাম।উনার বুকে ধাক্কা দিতেই উনি আমার দুই হাত ধরে চোখ মুখ শক্ত করে বললেন,

‘তোর দেখছি অনেক সাহস।আমাকে মারছিস?আমাকে?তোকে আজ…..!’

বলতে বলতে উনি আমার গলায় কামড় বসিয়ে দিলেন।
ব্যথায় আমি চিৎকার করে উঠেছি।উনি আমার মুখ চেপে ধরে আমার চোখের দিকে তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে বললেন,

‘আর মারবি আমাকে?বল?মারবি আর?’

আমি আর কি বলব,আমার চারপাশ ঘোলা হয়ে এসেছে।মাথার মধ্যে কেমন ভৌ ভৌ করছে।হাত পা সহ সারা দেহ যেন লুটিয়ে পরলো।

.

তীব্র মাথা ব্যথায় ঘুম ভেঙ্গে গেল।কপালের উপর হাত দিয়ে বুঝলাম ভেজা কাপড় দেওয়া আছে।চোখ মুখ কুচকে কাপড়টা হাত দিয়ে সরিয়ে দিতেই কেউ আমার হাত ধরে ফেলল।মাথাব্যথার জন্য আমি মৃদু আর্তনাদ করতে লাগলাম।কেউ আমার গালে হাত দিয়ে বলল,

‘কোথায় কষ্ট হচ্ছে মিতি?গলা ব্যথা করছে?আ’ম সরি।আর কখনও ব্যথা দিব না।’

ভিন্ন রকম কন্ঠ পেয়ে অতি কষ্টে চোখ খুললাম।উমান ভাইয়া!শুকনো মুখ করে আমার মাথার পাশে বসে আছেন।আমি ভ্রু কুচকে উঠে বসার চেষ্টা করতেই উমান ভাইয়া বাঁধা দিয়ে বললেন,

‘উঠিস না,জ্বর এসেছিল।’

আমি চোখবন্ধ করে দূর্বল কন্ঠে বললাম,

‘আমি কোথায় উম ভাইয়া?’

উনি কথা বললেন না।আমি একপাশ হয়ে শুলাম।পুরোনো অভ্যাসে বালিশের নিচে ফোন খুঁজতে লাগলাম।ফোন না পেয়ে মনে হল ফোন তো উমান ভাইয়াদের বাসায় গিয়ে হাত থেকে পরে ফেটে গিয়েছে।সাথে সাথে সবকিছু মনে পরতে লাগলো।বিয়ের কথা মনে হতেই লাফ দিয়ে উঠে বসলাম।উমান ভাইয়া আমার কপালে হাত দিয়ে জ্বর চেক করে বললেন,

‘থ্যাংক গড,জ্বর আর নেই।আচ্ছা এবার একটু খেয়ে নে তো।দুপুরেও কিছু খাসনি।না খেয়ে থাকলে আরও বেশি শরীর খারাপ লাগবে।’

আমি ভ্রু কুচকে আশেপাশে তাকিয়ে বললাম,

‘আর কেউ নেই বাসায়?’

‘না সবাই চলে গিয়েছে।তুই ওদের যেভাবে ট্রিট করেছিস ওরা আর থাকার সাহস পায়নি।’

বলতে বলতে উনি রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন।আমি ভ্রু কুচকে বেড সাইট টেবিলে রাখা একবাটি পানি আর এক টুকরো ভেজা কাপড়ের দিকে তাকিয়ে থাকলাম।মনে হয় অনেক বেশি জ্বর এসেছিল।গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গিয়েছে।একটু পানি খাওয়া দরকার।গায়ের চাদর সরিয়ে বিছানা থেকে নামতেই খেয়াল করলাম আমার ড্রেস গুলো শুকনো কিন্তু আমি তো ভেজা ড্রেসে ছিলাম।কে চেন্জ করে দিল!বাসায় তো আর কেউ নেই তাহলে উমান ভাইয়া!!নো!নো!আমি চোখ খিচে বন্ধ করলাম।মনে মনে প্রার্থনা করছি এটা যেন না হয়।তখনই উমান ভাইয়া রুমে ফিরে আসলেন।উনার পায়ের শব্দ পেয়ে চোখ খুলে দেখি উনি প্লেটে করে খাবার নিয়ে এসেছেন।আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,

‘আমার ড্রেস….’

উনি আমাকে পুরোটা বলতে না দিয়ে বললেন,

‘ড্রেস আছে।ব্যালকনিতে শুকোতে দিয়েছি।’

আমি কোন ভণিতা না করে গট গট করে বললাম,

‘আমার ড্রেস কে চে……’

উনি আমার মুখে খাবার পুরে দিয়ে বললেন,

‘কি এত ড্রেস ড্রেস করছিস?ড্রেস লাগবে তোর?আগে খেয়ে নে তারপর দেখ কত গুলো ড্রেস এনে দিব তোকে।’

রাগে আমার শরীর রিরি করতে লাগলো।কোন মতে মুখের খাবার গিলে কিছু বলার জন্য মুখ খুলেছি ওমনি উনি আবার আমার মুখে খাবার পুরে দিলেন।উনি যে ইচ্ছে করে আমার মুখ বন্ধ করতে চাইছেন বেশ বুঝতে পারছি।এই ছেলে মহা ধরিবাজ।তবে আমিও কম না।আমার খুব ক্ষুধা পেয়েছে তাই আগে পেট ঠান্ডা করি তারপর ড্রেসের প্রসঙ্গ তোলা যাবে কিন্তু কথা হল আমি এই ছেলের হাতে খাবার খাব না।না মানে কিছুতেই না।উনি আমার পাশে বসে বাম হাতের তালুতে প্লেট নিয়ে ডান হাতে ভাতের সাথে তরকারি মেশাচ্ছেন তখনই আমি উনার হাত থেকে প্লেট নিয়ে নিলাম।উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,

‘আমি একা খেতে পারি।’

উনি আমার কাছ থেকে প্লেট নেওয়ার চেষ্টা করতে করতে বললেন,

‘আমি জানি তুই একা খেতে পারিস কিন্তু আমি থাকতে তোর একা খাওয়ার প্রয়োজন নেই।এখন থেকে আমি খাইয়ে দিব তোকে।’

উনি আমার হাত থেকে প্লেট টা কেড়ে নিলেন।আমি আর খাবোই না এরকম একটা মনোভাব নিয়ে উঠে দাঁড়িয়েও আবার বসে পড়লাম।খুব ক্ষুধা পেয়েছে।না খেয়ে থাকলে মাথাব্যথাটা বেশি হবে।উনি যত্ন সহকারে আমাকে খাওয়াচ্ছেন।আমি উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,

‘কেন বিয়ে করলেন?আমি মানিনা এই বিয়ে।আপনি চলে যান আমাদের বাসা থেকে।’

উনি আমার মুখে খাবার শিলে দিয়ে হালকা রেগে বললেন,

‘ওকে ফাইন,কালই চলে যাব।এবার ঠিক করে বসে খাবারটা খেয়ে নিন রাণী সাহেবা।’

আমি খাবার গিলে বিছানায় পা তুলে বসে উনার দিকে তাকিয়ে কৌতূহলি হয়ে বললাম,

‘সত্যি চলে যাবেন? আমি তো আপনাদের বাসায় মিনিকে রেখে এসেছি।ওকে এখানে কে নিয়ে আসবে?আর আমার লাগেজ?ফোন?’

উনি কিছু বললেন না।থমথমে মুখ করে আমার মুখে খাবার তুলে দিলেন।খাওয়া শেষ করে উনি আমাকে প্যারাসিটামল খাইয়ে দিলেন।রুমের লাইট বন্ধ করতেই আমি চেঁচিয়ে বললাম,

‘লাইট অফ করছেন কেন?লাইট দিয়ে রাখুন।আমি লাইট দিয়ে রেখেই ঘুমাই।’

উমান ভাইয়া লাইট অন করে দিলেন।আমার কাছে আসতে আসতে বললেন,

‘ওকে কিছুক্ষণ অন থাকবে তারপর অফ।’

আমি বিছানায় হেলান দিয়ে কোলের উপর টেডি নিয়ে ভ্রু কুচকে বললাম,

‘আপনাকে একটা কথা বলি?’

উনি সোফায় বসে পকেট থেকে ফোন বের করে বললেন,

‘কি বলবি বল না।’

‘আপনি আজকে এই রুমে থাকুন প্লিজ।আমার রাতে খুব ভয় লাগে।আমি সোফায় থাকবো।আপনি বিছানায়। থাকবেন তো?প্রবলেম আছে?’

উনি মৃদু হাসলেন।ফোন কানে ধরে আমার আমার পাশে এসে গা ঘেষে বসলেন।আমি সরে যাব তখনই উনি আমার কোমড় জড়িয়ে ধরে ফোনে বললেন,

‘হ্যালো শিপন,কাজ এগুলো?কয়টা ডিজিট পাওয়া গিয়েছে?’

ওপাশ থেকে কিছু বলতেই উমান ভাইয়া খুশি হয়ে বলেন,

‘ভেরি গুড।কাল চলে আয় আর ওই মিনি ক্যাটকে সাথে নিয়ে আসিস?’

ওপাশের কথা শুনে উমান ভাইয়ার মুখ মলিন হয়ে গেল।মন খারাপ করে বললেন,

‘ঠিক আছে আমরাই যাব।তুই ফাইল রেডি কর।ডিলটা যেন ক্যান্সেল না হয়ে যায় দেখিস।’

আরও দু-একটা ব্যবসায়িক আলাপ শেষ করে উনি কল কেটে দিলেন।ফোন বেডসাইট টেবিলে রেখে আমার দিকে চোখ কট-মট করে তাকিয়ে আমার কোমড় থেকে উনার হাতটা সরালেন।খামচে উনার হাতের অবস্থা খারাপ করে দিয়েছি।উনি চোখ গরম করে হাতের পিঠে লাল লাল আচড় দেখে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,

‘নেইল কাটার কোথায় আছে?’

আমি একটু সরে বসে দুইহাত কোলের মধ্যে গুটিয়ে নিয়ে ভয়ে ভয়ে বললাম,

‘ননেই,নেইল কাটার ননেই।’

উনি আমার কথায় পাত্তা না দিয়ে ড্রেসিং টেবিলের সামনে গেলেন।অনেক খোঁজাখুঁজির পর পড়ার টেবিলের কলমদানির মধ্য থেকে আমার নেইল কাটার বের করে আমার পাশে এসে বসলেন।আমার হাত টেনে নিয়ে খট খট করে আমার সুন্দর সুন্দর বাড়তি নখ গুলো কেটে একদম মুড় করে দিলেন।রাগে দুঃখে আমি ভ্যা ভ্যা করে কান্না করে দিলাম।উনি বিছানা থেকে কাটা নখগুলো ঝেরে ফেলে দিয়ে আমাকে শাসিয়ে বললেন,

‘এই একদম কাঁদবিনা,থাপ্পড় দিয়ে গাল ফাটিয়ে দিব।চল ঘুমো।’

আমি নাক টানতে টানতে বিছানা থেকে নামতেই উনি আমার হাত ধরে টান দিলেন।আমি বিছানার প্রস্থ বরাবর পরে গেলেম।উনি বিলম্ব না করে আমার মাথার নিচে বালিশ দিলেন।আমার বালিশের পাশে আরেকটা বালিশ নিয়ে সেটার উপর কনুই রেখে আধ শোয়া হয়ে বসে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন,

‘কাঁপছিস কেন?শীত করছে?’

মনে মনে বললাম কেন আবার তোর ভয়েই তো কাঁপছি।লজ্জা করেনা চাচাতো বোনের সাথে এরকম বিহেভ করতে?মুখে আমি কিছুই বলতে পারলাম না।উঠার চেষ্টা করতেই উনি আমার পায়ের উপর নিজের এক পা তুলে দিলেন।উফ্ কি ভারী!আমি পা নড়াতেই পারছিনা।আমি হাত দিয়ে উনাকে ঠেলবো তারও উপায় নেই।উনি ডান হাতে আমার দুই হাত এক করে ধরে আছেন।আর বাম হাতের কনুই বালিশে রেখে সেই হাত দিয়েই আমার চুলে বিলি কাটছেন।আমি চরম অস্বস্তিতে অন্যদিকে তাকালাম।উনি মুচকি হেসে বললেন,

‘কি ভাবছিস?এত ভয় পাচ্ছিস কেন?’

আমি মিনমিন করে বললাম,

‘ছেড়ে দিন প্লিজ!’

উনি ভাব নিয়ে বললেন,

‘ছেড়ে দিন বললেই হল নাকি!আজ আমাদের বাসর রাত।সো নো ছাড়াছাড়ি।আমার সাথে এভাবেই ঘুমোতে হবে তোকে।’

বলেই উনি বালিশে মাথা দিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।আমি দরদর করে ঘামছি শুধু।কি করব কিছু ভেবে পাচ্ছি না।মাথা কাজ করছেনা।

চলবে…………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here