গল্প:-মনের মহারাণী
লেখিকা:-Sohani_Simu
পর্ব:-৩১
উমানের সাথে বিয়ের কথা শুনে বাবা রাগ করে আমাদের নানুর বাসায় নিয়ে এসেছে।আমাদের পেছন পেছন উমান,সাদ ভাইয়া,বড়াব্বু,বড়াম্মু,ইমরুল আঙ্কেল,ফুপ্পি এসেছে।সবাই বারান্দায় ওয়েট করছে আর বাবা-আম্মু রুমে কথা বলছে।আমি আর মিনি পাশের রুমে শুকনো মুখ করে বসে আছি।পাশের রুমে বাবা আম্মু কি কথা বলছে সব শুনতে পাচ্ছি। বাবা রেগে বলছে,
‘এই বিয়ে আমি কিছুতেই মানিনা।উম এটা কি করে করতে পারলো?আমি বলেছিলাম মিতিকে রাজশাহী রাখতে,উম ওকে ঢাকায় নিয়ে গেল কেন?আর কিসের সিচুয়েশন খারাপ ছিল?ওকে কেউ বাধ্য করেছে আমার মেয়েকে বিয়ে করতে?বিয়ে করল আমাকে একবারও বলল না কেন?ওর সাথে প্রতিদিন কথা হয়েছে তো আমার।আমি মিতিকে নাসিরের বাসায় রেখে আসতে বলেছিলাম তাও রেখে আসেনি।কেন করেছে ও এসব?’
আম্মু বাবাকে শান্ত করার জন্য বলছে,
‘তুমি একটু শান্ত হও,আমার কথা শোন।উমের সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিলে তো….’
কিছু ভাঙার আওয়াজ পেলাম তারপর বাবা রেগে বলল,
‘দিতে চেয়েছিলাম সেটা এখন নয়।এত তাড়া কিসের?মেয়ের বিয়ের বয়স হয়েছে?এই বয়সে বিয়ে হলে ওর আর পড়াশুনা হবে?ও এখনও শিশু।আরও পাঁচবছর পর বিয়ে করলে তো উমের ক্ষতি ছিলনা।তাছাড়া ওর পড়াশুনাও তো শেষ হয়নি।আমি বলেছিলাম সার্ন থেকে একটা ডিগ্রী নিতে।’
আম্মু এবার বিরক্ত হয়ে বলল,
‘ওসব কথা বাদ দাও।এখন কি করতে চাইছো সেটা বল।’
‘কি করব মানে?মানছিনা এই বিয়ে।’
‘তাহলে কি ডিভোর্স করাবে?’
বাবা চুপ হয়ে গেল।ডিভোর্সের কথা শুনে আমার ভ্যা ভ্যা করে কান্না করতে ইচ্ছে করছে।কিছুক্ষণ পর বাবা বলল,
‘উমকে ডাকো?’
আম্মু উমানকে ডাকলো।উমান রুমে গিয়েছে হয়তো।বাবা বলল,
‘বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছে কিভাবে?’
উমানের কথা শুনতে পেলাম,
‘পেপার করা আছে আঠারো বছর হলেই অটো রেজিস্ট্রি হবে।’
বাবা বলল,
‘কানাডা যাচ্ছিস কবে?’
‘এই মাসের দশ তারিখ।’
‘ফিরবি কবে?’
‘ঠিক নেই,একবছর পর বা তারও বেশি।’
‘আমি এখন কোন বিয়ে মানছিনা।পাঁচবছর ওয়েট করতে হবে নাহলে ডিভোর্স।কি চাস?’
উমান কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন,
‘ভিলেনের মতো কথা বলনা।বিয়ে হয়ে গিয়েছে সো মিতি এখন থেকে আমার কাছে থাকবে।ওর সব দায়িত্ব আমার।’
বাবা বলল,
‘দিয়েছিলাম তোকে দায়িত্ব,আমার মেয়ের লাইফটায় নষ্ট করে দিয়েছিস।’
উমান বললেন,
‘এসব ইউসলেস কথা শুনতে ভাল লাগছেনা।দশতারিখে মিতিকে সাথে নিয়ে যাব,তোমরা কি বলছো বল?’
‘আমার মেয়েকে আমি কোথাও যেতে দিবনা।ও সারাজীবন আমার কাছে থাকবে।’
‘তাহলে তোমাদেরও নিয়ে যাব।’
আম্মু বলল,
‘উম,বি সিরিয়াস।আমরা এখন মিতিকে তোমার সাথে ছাড়বোনা।ও ছোট অনেক।’
উমান বললেন,
‘আ’ম সিরিয়াস আন্টি।তোমরা এবার সিরিয়াস হও।ভাল-মন্দ বোঝার আর সিদ্ধান্ত নেওয়ার বয়স আমার হয়েছে।সিচুয়েশন ভাল থাকলে এখন বিয়ে করতাম না।কি ধরণের খারাপ সিচুয়েশন সেটা তোমাদের বুঝিয়ে দিই।দাদি প্রীতির সাথে বিয়ের কথা বলে।দাদির জেদ তো জানো,সুইসাইড এটেম্পট করে হলেও সবাইকে রাজী করাবে।এখন আর সেই সুযোগ কেউ পাবেনা।আর তাছাড়াও আমি শুনেছিলাম চাচ্চু মিতিকে পাপনের সাথে বিয়ে দিতে চেয়েছিল তাই আমি রাগ করে…’
একে একে সবাই ওই রুমে ঢুকেছে।বড়াম্মু আমার রুমে এসে আমাকে নিয়ে বিছানায় বসে বলল,
‘দেখ মা,আমি জানতাম তোদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।উম আমাকে বলেছে ও জোর করেই তোকে বিয়ে করেছে।এখন সাথে নিয়েও যেতে চাইছে।তুই যেতে না চাইলে আমরা জোর করে তোকে ওর সাথে পাঠাবোনা।তুই যা বলবি তাই হবে।’
‘ও যাবেনা?ওর ঘাড় যাবে।’
দরজার দিকে তাকাতেই দেখি উমান হন হন করে আমার কাছে আসছেন।বড়াম্মু উমানের দিকে তাকিয়ে বলল,
‘তুই এখন যা এখান থেকে আমি মিতির সাথে কথা বলব।’
উমান আমার একহাত চেপে ধরে বললেন,
‘কারও কথা বলতে হবেনা ওর সাথে।ওর ব্যাপারে আমি যা বলবো তাই হবে।’
তারপর উনি আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,
‘আর তুই?একবারও যদি বলিস আমার সাথে যাবিনা তাহলে তোকে ওই পুকুরে নিয়ে গিয়ে খুসে ধরবো।চল এখনই গিয়ে চাচ্চুকে বলবি আমার সাথে যেতে চাস।’
উনি আমাকে শাসাচ্ছেন।শুধু তাই নয় আমার বাবাকেও শাসাচ্ছেন।মাথা মনে হয় খারাপ হয়ে গিয়েছে উনার।সবাইকে হুমকি ধামকি দিয়ে,জোরজবরদস্তি করে উনি আবার আমাকে বিয়ে করলেন।বিয়ের দিন মিনির সেকি কান্না,সেও তার উম ভাইয়াকে বিয়ে করবে।আমি জেলাস হয়ে ওকে ধুপধাপ কয়েকটা দিয়েছিও।তাও উমানকে বিয়ে করার জন্য ভ্যা ভ্যা করে কান্না করছিল।শেষে উমান ওকে কোলে নিয়ে বলেছিলেন ও বড় হলে উমান ওকেও বিয়ে করবে।আমি না উমানকে অনেক মেরেছি সেদিন।উর্মি আপুর দেবরের সাথে প্রীতি আপুরও বিয়ে হয়ে গেল।দেখতে দেখতে শিপন ভাইয়াও তার গার্লফ্রেন্ডকে বিয়ে করে নিলেন।সিঙ্গেল থেকে গেলেন শুধু সাদ ভাইয়া।সবাই বিয়ে করতে বললেও উনি পাত্তায় দিলেন না।তখন বুঝতে পারিনি ঘটনা কি।এখন কানাডায় এসে বুঝতে পারছি ঘটনা হল ওই শাকশুন্নি সামিরা,উরফে স্যাম।সুন্দরি পেত্নিটা যে সাদ ভাইয়ার গার্লফ্রেড এটা উমান না বললে আমি কিছুতেই বুঝতে পারতাম না।উমান ঠিকই বলেন আমি একটা গাধী।সামিরা ক্যানাডিয়ান মেয়ে,তার দাদুর মা ছিলেন বাংলাদেশি।সেই হিসেবে সামিরা কিঞ্চিত বাঙালী।তবে প্রবলেম একটায় পেত্নীটা খ্রিষ্টান।
আজকে সবার সম্মতিতে সাদ ভাইয়া আর সামিরার বিয়ে হচ্ছে।প্রথমে মুসলিম রীতিতে বিয়ে হয়েছে এখন খ্রিষ্টীয় রীতিতে বিয়ে হচ্ছে।যদিও সামিরা দুদিন আগেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে তবুও নিজের ফ্যামেলির মান রক্ষার জন্য খ্রিষ্টীয় রীতিতে বিয়ে করতে হচ্ছে।সাদ ভাইয়া স্যামকে শুধু একবারই বলেছিল ইসলাম ধর্ম গ্রহন না করলে ফুপ্পি তাকে কখনও ছেলের বউ হিসেবে মানবেনা।স্যাম ধর্মান্তরিত হতে রাজী হয়ে গেল কারন তার মা নেই।সাদ ভাইয়ার মাকে সে নিজের মা বানাতে চায়।যাইহোক,সাদ ভাইয়ার পক্ষ থেকে শুধু আমি,উম আর কিছু ফ্রেন্ড উপস্থিত আছি।বাংলাদেশ থেকে সবাই খুব এক্সাইটেড।সবাই ভিডিওতে বিয়ে দেখছে।
গির্জার ভেতর সবাই দাঁড়িয়ে আছি।উমান সাদা শার্টের উপর কালো কোর্ট-প্যান্ট পরেছেন,উনাকে দেখতে একদম রাজপুত্র লাগছে।বিদেশী মেয়েগুলো উনার উপর ঝাপিয়ে পরছে একদম।গত তিন ঘন্টা ধরে কিভাবে যে মেয়েগুলোর কাছ থেকে উনাকে প্রটেক্ট করছি সেটা শুধু আমি জানি আর আমার আল্লাহ জানে।মেয়েগুলোর পোষাক কি অশ্লীল।সবাই সাদা গাউন পরেছে,শরীরের বেশির ভাগ অংশই দৃশ্যমান।উমানকে বলে দিয়েছি একটা মেয়ের দিকেও যদি তাকায় চোখ কানা করে দিব।উমান আমার কথা শুনছেন না,শয়তানি করছেন খুব।
উমানের উপর রাগ করে মুখ ফুলিয়ে স্যাম আর সাদ ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।হঠাৎ পেছন থেকে একজন আধা বাঙালি ছেলে ফিসফিস করে তার গার্লফ্রেন্ডকে বলল,
‘লুক এ্যাট হার,শী ইজ লুকিং মোর বিউটিফুট দ্যান ইউ উইথ আ শাড়ি।আমি তোমাকে কতবার বললাম শাড়ি পর বাট পরলা না।’
এতবড় পার্টিতে আমি একাই শাড়ি পরেছি।কারন উমান আমাকে ওসব অশ্লীল গাউন পরতে দেননি।কালো রঙের এই শাড়িটা কানাডা আসার আগের দিন দাদি আমাকে গিফট করেছে।এত দামি আর ভারি শাড়ি আমি এর আগে কখনও পরিনি।আমি জানি আমাকে সুন্দর লাগছে সেজন্যই তো সবাই এত প্রশংসা করছে।লোকটার কথা শুনে পেছনে উনার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলাম।এইটুকুতেই উমান রেগে ফ্যায়ার হয়ে যাবেন বুঝতে পারিনি।উনি আমাকে নিয়ে অন্য সারিতে ঢুকলেন।বিয়ে প্রায় শেষের দিকে।উমান আমার একপাশে দাঁড়িয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে বিরবির করে বললেন,
‘আমাকে রাগাবি না।আর একবার যদি কারও সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছিস,তোকে কিন্ত পুতে ফেলবো একদম।’
উনার ঠান্ডা ধমক আমি গায়ে মাখলাম না।বিয়ে দেখতে ব্যস্ত হয়ে গেলাম।কিছুক্ষণ পর বিয়ে শেষ হল।সাদ ভাইয়া স্যামের দিকে আর একটু এগিয়ে যেতেই উমান আমার চোখে হাত রাখলেন।আমি ভ্রু কুচকে বললাম,
‘আরে হাত সরান,বিয়ে দেখছি তো।’
উমান আমার কানের কাছে মুৃখ এনে বললেন,
‘ওরা এখন কিস করছে,দেখবি?’
খ্রিস্টানদের বিয়ে শেষ হলে কিস করে জানতাম না।দেখার ইচ্ছা হলেও লজ্জায় বলতে পারলামনা যে দেখবো।উমান যখন আমার চোখ ছাড়লেন তখন সাদ ভাইয়া আর স্যামিরা আপু ভ্রমণের জন্য গাড়িতে উঠে গিয়েছে।আমাদের থেকে বিদায় নিয়ে ওরা চলে গেল।আমি মন খারাপ করলেও মনে মনে বললাম যেয়ে যেয়ে আর কতদূর রাতে হলে তো আমাদের বাসাতেই ফিরবে।
চারপাশে লোকজন গিজগিজ করছে।এখন সবাই হৈ-চৈ আর খাওয়া-দাওয়া করবে।আমি উমানকে আগেই বলে দিয়েছি এসব বিদেশী অখাদ্য আমি খেতে পারবোনা।উমানও আমাকে বলেছিলেন বিয়ে শেষ হলে আমাকে নিয়ে নায়াগ্রা ফলসে ঘুরতে যাবেন।কানাডা আসার পর থেকে উনার ব্যস্ততার জন্য আমরা কোথাও বের হতে পারিনি।হুট করে ঠান্ডার দেশে এসে কয়দিন জ্বর ছিল খুব তাই বাসার বাইরে যাইনি।নতুন স্কুলে উমানের সাথে একদিন গিয়েছিলাম।বাংলাদেশ থেকে আরও সাতজন মেয়ে এই স্কুলে ভর্তি হয়েছে।ওরা এখনও স্কুলে আসা শুরু করেনি তাই উমান বলেছেন ওরা আসলে তারপর আমি যেন ওদের সাথে রেগুলার হই।
সন্ধ্যা হবে হবে ভাব।আমি আর উমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জলপ্রপাতের সামনে দাঁড়িয়ে আছি।এত সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য আগে কখনও দেখিনি।স্টিলের রেলিংয়ে হাত দিয়ে পানির দিকে তাকিয়ে আছি।ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে গিয়েছে।ফ্যাশনের জন্য শাড়ির উপর ব্লেজার পরিনি।এখন ঠান্ডায় আমার ফ্যাশন উড়ে গিয়েছে।শাড়ির আঁচল গায়ে জড়িয়ে দাঁড়িয়েছিলাম উমান পেছন থেকে নিজের কালো ব্লাজারটা আমাকে পরিয়ে দিলেন।পেছনে ঘুরে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,
‘আপনার শীত করছেনা।’
‘হুম করছে কিন্তু আমার মহারাণীর আরও বেশি শীত করছে।মহারাণীর যদি নিউমোনিয়া হয়ে যায়?তার সচেতন বাবা আমাকে পাতালপুরিতে পাঠিয়ে দিবে।’
বলেই উনি হাসতে লাগলেন।ইদানিং উনি আমার বাবাকে নিয়ে খুব বেশি মজা করেন যেটা আমার একদমই সহ্য হয়না।উনার দিকে তাকিয়ে রেগে বললাম,
‘আপনি আবার আমার বাবাকে নিয়ে মজা করছেন?’
উমান হাসি থামিয়ে বললেন,
‘কই নাতো,আমি তো জাস্ট বলছিলাম যে তোর কিছু হলে চাচ্চু আমার গরদান নিয়ে নিবে।অকালে আমার মতো একটা কিউট কিং তার কিউট কুইনকে ফেলে……’
উনার বক বক থামিয়ে দিয়ে ভাব নিয়ে বললাম,
‘আপনি কিং?কে বলেছে?করেন তো একটা অফিসে চাকরের চাকরি।সকালে গেলে মধ্যরাতের আগে পাত্তা নেই।’
উমান মুচকি হেসে আমার ব্লেজার কেড়ে নিয়ে গায়ে দিয়ে আমাকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলেন।আমাকে ব্লেজারের মধ্যে নিয়ে বললেন,
‘আমার যতগুলো টাকা আছে তুই আর তোর বাবা সারাজীবন গুনেও শেষ করতে পারবিনা।তাছাড়া এত সুন্দর বউ যেহেতু আছে সেহেতু আমার রাজা হওয়ার অধিকারও আছে।আর তুই আমাকে চাকর বলছিস?আমি চাকর হলে তুই কি?চাকরানী?’
মুখফুলিয়ে বললাম,
‘আমি বাবার প্রিন্সেস।’
উনি আমাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললেন,
‘উহুম।তুই রানী,জুলিয়েট রাজ্যের রাণী।’
ভ্রু কুচকে বললাম,
‘কিসের জুলিয়েট রাজ্য?’
উনি আমার গালে কিস করে বললেন,
‘ক্লোজ ইউর আইস।’
চোখ বন্ধ করলাম।উনি পেছন থেকে আমার গালে নাক ঘষতে ঘষতে বিরবির করে উনার জুলিয়েট রাজ্যের বর্ণনা দিতে লাগলেন।এখানেই উনাদের টিউলিপ ফুলের বাগানের সাথে গোলাপেরও বাগান আছে।যেমন তেমনমন গোলাপ নয়,পৃথিবীর সব থেকে দামী ফুল।গোলাপের গাছগুলো এখন ছোট আছে।উনার কথা শুনে আমি ধীরে ধীরে কল্পনায় জুলিয়েট রোজ রাজ্যে চলে গেলাম।অসংখ্য লাল গোলাপ ফুটে আছে।দূর দূরান্ত পর্যন্ত গোলাপ ছাড়া কিছুই চোখে পরছেনা।আমি মেরুন রঙের গাউন পরে দুই হাতে গাউন ধরে গোলাপের মধ্যে দিয়ে সরু রাস্তা দিয়ে ধীরে ধীরে হাঁটছি।আমার গন্তব্য অনেক দূর।বিশাল গোলাকার থালার মত চাঁদ যেখানে দিগন্তে এসে মিশেছে সেখানে আমার মহারাজ আমার জন্য অপেক্ষা করছে।আমি উমানকে দেখতে পাচ্ছি।ইংরেজদের রাজকীয় পোষাকে উনি উল্টো পাশ ফিরে দাঁড়িয়ে আছেন।আমি উনার কাঁধ স্পর্শ করতেই উনি আমার দিকে ঘুরে দাঁড়ালেন।লাল টুকটুকে জুলিয়েট রোজের ক্রাউনটা আমার মাথায় পড়িয়ে দিয়ে কপালে চুমু খেলেন।পরম আবেশে উনার বুকে মাথা রাখলাম।গোলাপ দিয়ে সাজানো দোলনায় বসে উনার কাঁধে মাথা রেখে পূর্ণিমার চাঁদ দেখছি।উনি আমার হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে বললেন,
‘আমার মহারাণী’
সঙ্গে সঙ্গে চোখ খুললাম।সন্ধ্যার ম্লান আলোয় সামনের বিশাল প্রপাতের চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্যে আরও মুগ্ধ হলাম।এত সুন্দর স্বপ্ন আমি কখনও দেখি।উমান আমার জীবনে আসার পর থেকে আমি এতসুন্দর সুন্দর মোমেন্টের সাথে পরিচিত হয়েছি।উমান আমাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে মুচকি হেসে বললেন,
‘এখন বল চাকরানী নাকি মহারাণী।’
একটু লজ্জা পেয়ে উনাকে জড়িয়ে ধরে বললাম,
‘মহারাণী।’
উনিও আমাকে জড়িয়ে ধরে বিরবির করে বললেন,
‘হুম আমার মনের মহারাণী।’
~~সমাপ্ত~~
★স্কিপ করে শেষ করলাম।দুটো বড় ঘটনার মধ্যে দিয়ে গল্পটা শেষ করতে চেয়েছিলাম।প্রথম ঘটনা শেষ করার পর দ্বিতীয় ঘটনা গোছাতে আর মন লাগছিল না।
পাঠক-পাঠিকাদের এক পৃথিবী ভালোবাসা।ভাল থাকবেন সবাই।আল্লাহ্ হাফেজ।★