মধুচন্দ্রিমা
পর্ব ১৮
তানিয়া রহমান
– ইমরান!
– জ্বি স্যার
– মনিরকে কে ফলো করছে
– আজমল
– মনির যে ডিফেন্সে ছিল তুমি জানতে না
– পরে জেনেছি স্যার
– পরে কেন, ওকে ফলো করার আগেই তোমার ডিটেইল জানা উচিৎ ছিল
– ভুল হয়ে গিয়েছে
– আজমলকে সরিয়ে চৌকস কাউকে সেট কর, দরকার হলে সার্কেল তৈরী করে ফলো কর
– জ্বি স্যার, আমি দেখছি
– এখন যাও
মনির আর কর্ণেল ফারুক বসে আছে স্পাইসি শেফে,এক ঢোক জুস খেয়ে ফারুক বলল- মেহবুব চৌধুরীর ডিটেইল দিয়ে কি করবি
– শালা!আমাকে বহুত নাচাচ্ছে এবার নিজের নাচ বন্ধ করে ওর নাচ দেখবো
– যতদূর জানি মেহবুব চৌধুরীতো সাদামাটা নিপাট ভদ্রলোক ও তোকে কেমন করে নাচাচ্ছে
– মুখোশ, ঐ মুখোশের আড়ালে –যাক গে তুই ডিটেইল এনেছিস
– হুম
– শুরু কর
– বাড়ী গাড়ী থেকে শুরু করি কি বলিস
শ্বাস ছেড়ে মনির বলল- ওকে
– ভদ্রলোকের সেগুনবাগিচায় একটা ফ্ল্যাট আছে আর নিকেতনে আছে ডুপ্লেক্স বাড়ি,দু মাস আগে নিকেতনে শিফট করেছে।
মনিরের চোখ চকচক করে উঠলো, ঝুঁকে এসে বলল- তারপর
– গাজীপুরে দ্যা ডিউ নামে রিসোর্ট আর বান্দরবানে আছে ছোট একটা কটেজ। এই কটেজ ভদ্রলোক পার্সোনাল ইউজের জন্য বানিয়েছেন বাট গত দেড়বছরে একবারো যাননি।
শ্বাস নিয়ে ফারুক আবার বলল – ভদ্রলোকের দুটো গাড়ি আগে ছিল, দুমাস আগে একটা রেড কালারের বিএম ডাব্লিউ নিয়েছেন, এটা মূলত তার মেয়ে অপরাজিতা ইউজ করেন, মেয়ের সঙ্গে সম্প্রতি একজন লেডি গার্ড দেখা যায় সে আবার ব্লাকবেল্টধারী।
– গাড়ীর নাম্বারটা বল
– ঢাকা মেট্রো—
মনির নাম্বারটা টুকে নিয়ে বলল – তারপর
– ভদ্রলোকের প্রথম স্ত্রীর নাম হচ্ছে নীলিমা চৌধুরী ঋতু, তিনিও একজন আর্কিটেক্ট ছিলেন,বছর দেড়েক আগে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টে মারা যায়, নয়মাস আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন,তার নাম হচ্ছে
মনির থামিয়ে দিয়ে বলল – আমি জানি, নতুন কিছু থাকলে বল
– ভদ্রমহিলা নীলক্ষেতের ভোলানাথ লাইব্রেরী থেকে প্রতিমাসে বই কিনেন
মনির মনে মনে বলল “এত ইম্পরট্যান্ট একটা জিনিস কিভাবে মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল,আমি নিজেওতো বহুবার এখান থেকে বই কিনে দিয়েছি”
ফারুক আবার বলল – কিন্তু গত দুই মাস ধরে তিনি বই কিনতে যাচ্ছে না
– নিকেতনের বাসার এড্রেস বল
– রোড নাম্বার তিন বাড়ি নাম্বার চৌদ্দ আর বাড়ীর নাম হচ্ছে অমেরা
– কি নাম
– অমেরা
মনির মুচকি হাসি দিয়ে বলল – বাড়ির নিরাপত্তা কেমন
– ও মাই গড, এটাতো রীতিমতো দূর্গ বলতে পারিস, চারদিকে গার্ড সন্ধ্যা হলেই ঝকঝকে আলো সিসি ক্যামেরার অভাব নেই
মনির মনে মনে একটা হিসেব কষে নিল
– নিরাপত্তা দিয়ে কি করবি
– কাজ আছে
– চুরি টুরি করবি নাকি
– করতেও পারি
– কি চুরি করবি বৌ,হাসতে হাসতে ফারুক আবার বলল – ভদ্রলোকের বৌ নাকি দুর্দান্ত সুন্দরী
মনির ফারুককে থামিয়ে দিয়ে বলল – তোর প্রোমোশনের কি হলো
– আর প্রমোশন! তুই -ই ভাল করেছিস, রিটায়ার্ড নিয়ে নিয়েছিস
– না নিয়ে কি করব বল,রাজ–মারপ্যাচে প্রমোশনটা আর হলো না, জুনিয়রদেরতো স্যার ডাকা যায় না
– তোর মতো ব্রিলিয়ান্ট অফিসার ডিফেন্সে দরকার ছিল, আমরা মেধার কদর করি না
মনির শ্বাস ছেড়ে বলল -তো বন্ধু অনেক ধন্যবাদ হেল্প করার জন্য
– ইটস ওকে
– বাসায় আসিস
– আসব, আজ উঠি,ভাবীকে সালাম দিস
– ওকে
চলবে
কপি করা যাবে না