#ভেজাগোলাপ❤️
#লেখিকা-মালিহা খান❤️
#পর্ব-১৯
মুখোমুখি বসে আছে ফারহান আর নীরাদ।নীরাদের ঠোঁটের কোঁণে বাঁকা হাসি।
একহাত দিয়ে টেবিলের উপর রাখা পেপার ওয়েটটা ঘুরাচ্ছে সে। ফারহান থমথমে চেহারায় বসে আছে।
তার অফিসে এসে তার উপরই জোর খাটানো হচ্ছে ব্যাপারটা সে একদমই মেনে নিতে পারছেনা।
ফারহানকে চুপ থাকতে দেখে নীরাদই বললো,
-কথা বলছিস না কেন?কোন সাহসে তুই রোদ্রিকে মেসেজ দিয়েছিস?রাগে চিৎকার করে উঠে নীরাদ।
-রোদ্রি আমার।শুধু আমার।।তুই ওকে ছলনা করে বিয়ে করছিস।আমার জান কে আমি আমার করেই ছাড়বো দেখে নিস।
ধৈর্য্যর বাধ ভেঙে যায় নীরাদের।একহাত দিয়ে ফারহানের কলার চেপে দাড়া করায় সে।দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
-মুখ দিয়ে আর একবার জান শব্দটা বের করলে তোর জানটাই কিন্তু আমি নিয়ে নিব।সো বি কেয়ারফুল।
বলেই ফারহানের মুখ বরাবর একটা ঘুষি দিয়ে ঝামটা দিয়ে ছেড়ে দেয় কলার।
নাক আর ঠোঁটের কোণা দিয়ে রক্ত বেরিয়ে আসে ফারহানের।রক্তটা হাত দিয়ে মুছে নীরাদকে মারার জন্য তেড়ে আসে সে।নীরাদ শান্ত কন্ঠে ভ্রু উচিয়ে বলে,
-ডোন্ট ইউ ডেয়ার।
ফারহান থেমে যায়।এই মুহুর্তে নীরাদকে ভয় লাগছে তার।সে ভাবেনি নীরাদের এমন রুপও থাকতে পারে।
রুমের দরজা খুলে প্রবেশ করে ফারহানের বাবা।হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসেছে সে।অস্থির দেখাচ্ছে তাকে।
হাঁপাতে হাঁপাতে সে বলল,
-মি.নীরাদ, আমার ছেলেকে ছেড়ে দিন।ওর ভুল হয়ে গেছে।আর কখনো এরকম কিছু হবে না।আমি কথা দিচ্ছি আপনাকে।
ফারহান আপত্তিকর গলায় বললো,
-এসব কি বলছো তুমি ড্যাড?
ফারহানের বাবা ধমকে উঠে বলে,
-কোন কথা বলবে না তুমি।আমার সম্মান তুমি ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছো!!
ফারহান চুপ করে যায়।সে বুঝতে পারছে অবস্থা বেগতিক।এখন কথা না বলাই শ্রেয়।
নীরাদ তাদের কথা শুনে হাসে।তারপর হাসি থামিয়ে দুহাত পকেটে গুঁজে গম্ভীর গলায় বলে,
-দেখুন,মি.চৌধুরি,আপনার ছেলেকে আমি চাইলে এখনই মেরে ফেলতে পারি।কিন্তু মারছিনা শুধু আপনার অনুরোধের জন্যে।আপনি আমার অনেক বড়।আপনাকে সম্মান করেই আমি আপনার কথা রাখছি।
তবে,এরপরও যদি ও আমার ওয়াইফের সাথে কোনকিছু করার চেষ্টা করে তখন কিন্ত…আশা করি আপনি
বুঝতে পারছেন।
-জি জি মি.নীরাদ।আর এমন হবেনা।
নীরাদ উওর দেয়না।ফারহানের দিকে একবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নি:ক্ষেপ করে বের হয়ে যায়।সোজা গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দেয়।একহাতে ফোনটা বের করে,রোদ্রি এখনো ফোন দেয়নি ভেবে অবাক হয়।অন করতে গিয়ে দেখে ফোন অফ।মানে ফোনে চার্জ নেই।”শিট”বলে গাড়ির হ্যান্ডেলে বাড়ি দেয়।দ্রুত আরেকটা ফোন বের করে সে।রোদ্রির নাম্বারে কল দেয়।
অপরিচিত নাম্বার থেকে কল পেয়ে ভয় পেয়ে যায় রোদ্রি।ভাবে হয়তো ফারহান কল দিয়েছে।ফোনটা রিসিভ করে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে,
-হ্যা..হ্যালো?কে?
রোদ্রির ভয়ার্ত কন্ঠ শুনে নীরাদ দ্রুত বলে,
-আমি নীরাদ।তুমি চিন্তা করো না।একটা কাজে আটকে গিয়েছিলাম ফোনের চার্জ শেষ তাই ইনফর্ম করতে পারিনাই।আমি আসছি,জাস্ট বিশ মিনিট লাগবে।ওকে?
নীরাদের বলা সবগুলো কথা মাথার মধ্যে ঘুরপাক খায় রোদ্রি।প্রশ্ন না করতেই সব উওর দিয়ে দিয়েছে নীরাদ।
রোদ্রিকে চুপ থাকতে দেখে নীরাদ আবার বলে,
-রোদ্রি?
মৃদু কন্ঠে রোদ্রি বলে,
-জি ঠিকাছে।আপনি আসেন।
__________
এক্সট্রা চাবি দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে নীরাদ।ডাইনিং টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে গিয়েছে রোদ্রি।পাশে প্লেট সাজানো।তার জন্য অপেক্ষা করতে করতেই ঘুমিয়ে গেছে মেয়েটা।নিজেও খায়নি।নীরাদ কোনরকম শব্দ না করে উপরে যায়।দ্রুত ফ্রেশ হয়ে নিচে নামে।রোদ্রি এখনো আগের মতোই ঘুমিয়ে আছে।
নীরাদ যেয়ে মাথায় হাত রাখে।নরম গলায় ডাকে,
-রোদ্রি?
একবার ডাকতেই মাথা তুলে তাকায় রোদ্রি।নীরাদের পরণে বাসার কাপড় দেখে বুঝতে পারে সে আগেই এসেছে।বিস্মিত কন্ঠে বলে,
-আপনি কখন আসলেন?
পাশের চেয়ার টেনে বসতে বসতে নীরাদ বলে,
-একটু আগেই।রোদ্রির সামনে প্লেট রেখে বলে,”মা খেয়েছে না?”
-জি।বলে নীরাদকে খাবার বেড়ে দেয়।
দুজনের খাওয়া শেষ হলে।সব গুছিয়ে উপরে যায় রোদ্রি।
রুমে ঢুকে দেখে নীরাদ বিছানায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছে।
কাপড় গুলা সোফায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা।রোদ্রি যেয়ে সেগুলো ঠি ক করে রাখে।ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাড়িয়ে চুলগুলো বেণি করে নেয়।পিছনে ঘুরতে নিলে ঘাঁড়ে কারো নি:শ্বাস অনুভূত হয়।
পিছন থেকেই রোদ্রির কোমড় জড়িয়ে ধরে নীরাদ।রোদ্রির উন্মুক্ত কাঁধে ঠোঁট ছোঁয়ায়।হাল্কা কেঁপে উঠে রোদ্রি।
লজ্জামাখা মিইয়ে যাওয়া কন্ঠে বলে,
-নীরাদ,কি করছেন?
নীরাদ উওর দেয়না।রোদ্রিকে সামনে ঘুড়িয়ে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরে।তার ঠোঁটজোড়া ক্রমশ রোদ্রির কাঁধে,গলায় বিচরণ করছে খুব গভীরভাবে।
চলবে..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here