#ভেজাগোলাপ❤️
#লেখিকা-মালিহা খান❤️
#পর্ব-১৬
গোলাপ দিয়ে সাজানো নীরাদের ঘর।বিয়ের শাড়ি পড়ে বিছানার মাঝখানটায় বসে আছে রোদ্রি।চোখে মুখে ভর করেছে একরাশ লাজুকতা।দরজা খোলার আওয়াজে মুখ তুলে তাকায় রোদ্রি।নীরাদ এসেছে।
দরজাটা লাগিয়ে দিয়ে রোদ্রির দিকে দৃষ্টি দিলো নীরাদ।গুটিশুটি হয়ে বিছানায় বসে আছে সে।ধীরপায়ে রোদ্রির পাশে যেয়ে বসে নীরাদ।হাত বাড়িয়ে রোদ্রির হাতদুটোকে আবদ্ধ করে।রোদ্রির চোখে চোখ রেখে বলে,
-আমার সামনে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই।ঠিকাছে?
রোদ্রি উপরে নিচে মাথা নেড়ে হ্যাঁ বোধক সম্মতি দেয়।
-খিদে পেয়েছে?খেয়েছো কিছু?
-জি খেয়েছি।মা খাইয়ে দিয়েছে।
নীরাদ হাসে।পুরুষ মানুষের জীবনে দুইজন নারীর ভূমিকা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ন।একজন তার মা আর আরেকজন তার স্ত্রী।আল্লাহর রহমতে নীরাদের জীবনের এই দুইজন মানুষই খুবই ভালো।
একহাত রোদ্রির গালে রেখে আলতো করে কপালে ঠোঁট ছোঁয়ায় নীরাদ।চোখ বন্ধ করে ফেলে রোদ্রি।নীরাদের ভালোবাসার প্রথম ছোয়াঁ।
পানজাবির পকেট থেকে একটা বাক্স বের করে নীরাদ।খুলে দুইটা স্বর্ণের চিকন বালা বের করে।নিজেই রোদ্রির হাতে পরিয়ে দেয়।রোদ্রির গালে হাত রেখে বলে,
-এটা কখনো খুলবেনা।ঠিকাছে?
-আচ্ছা।
-ওয়াশরুমে যেয়ে ফ্রেশ হয়ে আসো।মেকাপ তুলে,ভারি শাড়ি ছেড়ে হাল্কা কিছু পরে নাও।
________
একটা সুতির শাড়ি পরে বেরিয়ে আসে রোদ্রি।চুলগুলো ছাড়া।সামনের কিছু চুল ভিজে গেছে।বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখে নীরাদ একপাশে আধশোয়া হয়ে বসে ফোন চালাচ্ছে।পরণে সাদা স্যান্ডো গেনজি আর ট্রাওজার।
-একসাথে ঘুমাতে প্রবলেম হবে?তাহলে আমি নাহয় সোফ..
-কোন সমস্যা নেই।বলে মুচকি হাসে রোদ্রি।
সাধারণভাবে বেশ স্নিগ্ধ লাগছে রোদ্রিকে।নীরাদ মুগ্ধ নয়নে দেখে।মেয়েটা শাড়ি পরে আছে।এলোমেলোভাবে গায়ে জড়ানো শাড়িটা।বারবার টানাটানি করছে সে।বুঝাই যাচ্ছে সামলাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তাকে।
নীরাদ নরম কন্ঠে বলে,
-শাড়ি পরে আরামে শুতে পারবেনা,অসুবিধা হবে।সকালে শাড়ি পরো।এখন কামিজ পরে নাও।
-কোনো অসুবিধা হবেনা।আমি শাড়িই পরবো।শাড়ি না পরলে বিয়ে বিয়ে ভাব আসবেনা।
নীরাদ শব্দ করে হেসে দেয়।রোদ্রি মুখ কুচকে তাকায়।সন্ধিহান কন্ঠে বলে,
-হাসছেন কেন?আমি কি হাসার মতো কিছু বলেছি?
-নাহ্।ঠিকাছে।এখন ঘুমাও।কাল আবার বৌ-ভাত।রেস্ট না নিলে পরে অসুস্থ হয়ে পরবে।
নীরাদের বা পাশে যেয়ে শুয়ে পরে রোদ্রি।লাইট নিভিয়ে দেয় নীরাদ।সারাদিনের ক্লান্তিতে কিছুক্ষণেই ঘুমিয়ে পরে রোদ্রি।ঘুমের ঘোরে একহাত মেলে দেয় নীরাদের বুকের উপর।নীরাদ আলতো করে সেই হাতের উপর হাত রাখে।কতোইনা অপেক্ষা করেছে সে এই সময়টার জন্য।
জানালা দিয়ে চাঁদের আলো এসে পরছে রোদ্রির মুখের উপর।ঘুমন্ত মুখের স্নিগ্ধতা যেন বাড়িয়ে দিচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে।
___________
সকাল ৯টা।
নীরাদের ঘুম ভেঙে যায়।কাঁধে ভারি কিছু অনুভূত হতেই চকিতে তাকায় সে।তার কাঁধে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে রোদ্রি।বুকে রাখা হাতটা সারারাতেও ছাড়েনি নীরাদ।
একহাত দিয়ে কাঁথা টেনে দেয় নীরাদ।শাড়ি আর শাড়ির জায়গায় নেই মেয়েটার।ঘুম থেকে উঠে কাপড়ের বেহাল দশা দেখে অন্যকিছু ভেবে ফেলতে পারে।
খুব সন্তর্পণে রোদ্রির মাথাটা বালিশে রাখে নীরাদ।হাতটা ছাড়িয়ে উঠে যায়।
ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে দেখে রোদ্রি উঠে গেছে।পিটপিট করে তাকিয়ে আছে নীরাদের দিকে।
ড্রেসিং টেবিল থেকে চিরুনি নিয়ে চুলটা আচরাতে আচরাতে বলে,
-ঘুম হয়েছে?
-হু।
-উঠে কাপড় পাল্টে রেডি হয়ে নাও।মেহমানরা আসবে তোমাকে দেখতে।বলতে বলতে কাবার্ড থেকে দুটো বক্স বের করলো নীরাদ।টেবিলে রেখে বলল,
-এই গহনা গুলো পরে নিও।আমি নিচে যাচ্ছি।রাতে রিসিপসন অনেক কাজ আছে।
রোদ্রি টেবিলে রাখা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।শাওয়ার নিয়ে শাড়ি পরে বেরিয়ে আসে।গহনাগুলো পরে নিচে চলে যায়।
নিচে নামতেই দেখে….
চলবে…