#ভাগ্যবতী
#লাবিবা_তানহা_এলিজা
#পর্ব_৪

৮.
হসপিটালে বড় সড় একটা ঝামেলা হয়েছে আজ। পুরো হসপিটাল জুড়ে দুর্নীতির ছড়াছড়ি। এতোদিন মুখ ফুটে কেউ কিছু বলতো না। স্টাফের একজন সৎ পথে থাকলে তো বাকি জনরা অসৎ। একদিন এই হসপিটাল আর হসপিটাল থাকবেনা এভাবে চলতে থাকলে। অডিটের লোক এসেছে। কিছু সত্য তথ্য স্বীকারোক্তি দিতেই অপমান করে ছেড়েছে। রাগ কন্ট্রোল না করতে পেরে আজি রিজাইন দিয়ে এসেছে সাদ। আর কখনোই জয়েন দিবেনা এই হসপিটালে। সপ্তাহের দুটো দিন চট্টগ্রামে না দৌড়া দৌড়ি করে ঢাকা বসেই আরাম করবে। বাড়িতে থাকবে । লাগবেনা তার এতো টাকা। যা আছে তিন পুরুষ খেলেও শেষ হবে না। কাজের পেছনে না দৌড়ে নিজেকেও সময় দেওয়া উচিত একটু। অতিরিক্ত চিল্লাচিল্লি তে মাথা ধরেছে। কিছুই ভালো লাগছে না। চট্টগ্ৰাম আর কখোনোই আসবেনা। গাড়ী নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। ফ্লাইওভারের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় ব্রেক করে। রাতের সুনসান পরিবেশ আর ফ্রেশ বাতাস সত্যিই মন ভালো করার ক্ষমতা রাখে। জোরে মুখ ভর্তি করে শ্বাস নিয়ে ধীরে ধীরে ছাড়ে। নিজেকে কন্ট্রোল করার ক্ষেত্রে এতেই অনেক উপকার পাওয়া যায়। ফ্লাইওভারে নেমে মুক্ত বাতাসে গা ভাসিয়ে দেয়। প্যান্টের পকেটে হাত দিয়ে হাঁটতে থাকে। গাড়িতে ফিরে যেতে ইচ্ছা করছেনা। ঘড়িতে একটা পঁচিশ। মাঝরাতে একা একা পথ চলার অনুভূতি রোমাঞ্চকর।পাশে কেউ থাকলে মন্দ হতো না। নীরবতার মাঝে কারো বকর বকর শুনতে ইচ্ছা হচ্ছে। মাঝে মাঝে এসব অদ্ভুত ইচ্ছা হয়। হটাৎ পকেটে ফোনটা বেজে উঠে। স্কিনে নূরা নামটি ভেসে আসে। নূরা সাদমানের জানের জিগার দোস্ত। ভীষণ চটপটে কিন্তু মনটা মাটির মতো নরম। চট্টগ্রামে একই হসপিটালের ডক্টর। তবে উইকে একদিন বসে। আর তিনদিন ঢাকাতে। নূরা গাইনী স্পেশালিষ্ট আর সাদমান কার্ডিয়াক সার্জন। ফোন রিসিভ করে কানে তুলতেই খায় এক রাম ধমক,
” এতোক্ষন লাগে ফোন তুলতে ?হসপিটালে ঝামেলা করছোস সেই রাগ আমার উপরে ঝাড়বি তোর কি মনে হয় কষ্মিনকালেও এই নূরা এইটা মেনে নেমে? যদি তাই ভেবে থাকিস তাহলে শুনে রাখ আমার উপর রাগ দেখিয়ে লাভ নেই।”

” কথা শেষ তোর? ”
“মুখের থেকে কথা কেড়ে নিলি তুই এতো বড় স্পর্ধা। ”
” কি বলতে এতোরাতে ফোন দিয়েছিস বল। আজাইরা কথা শোনার মোড নেই আমার। ”
” আমি কি হসপিটালে ছিলাম না? রিজাইন দেওয়ার সময় আমাকে জানিয়েছিস একবার? ”
” না। সময় হয়নি। হুটহাট সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। ”
” আমিও। ”
” আমিও কি? ”
” হুটহাট সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি।”
” মানে? ”
” আমিও রিজাইন দিয়ে ফেলেছি।তোর ভরসাতেই ঢাকা চট্টগ্রাম ‌রান করতাম। তুই নেই দরকার ও নেই। ”
” ঠিক করেছিস। ঐ হসপিটালে এমনিতেও তোকে আর চেম্বারে বসতে দিতাম না আমি। ”
” হুম। কোথায় আছিস? যাওয়ার সময় ড্রপ করবি আমাকে। ”
” আমিতো এখনি চলে যাচ্ছি। ”

সাদের চোখ যায় কিছুটা দূরে। ঢালাই করা রেলিং এর উপর একটা বউ দাঁড়িয়ে আছে। সাদের বুঝতে দেরী হয়না যে এই মূহুর্তে তার সামনে একটা সুইসাইড হতে যাচ্ছে। বউটি বাঁচানোর জন্য দৌড় দেয়। পৌঁছতে পৌঁছতেই বউটি লাফ দিয়ে দেয়। ভাগ্যক্রমে সাদ বউটির হাত ধরে ফেলতে সক্ষম হয়। সেই বউটি আর কেউ নয়। সেই এতিম আশ্রয়হীন পূরবী। পূরবীর নিচের দিকে তাকিয়েই খেয়াল হয় সে কি করতে যাচ্ছিলো। উপরে তাকিয়ে দেখে একটা লোক তার হাত ধরে আছে। আর সেই হাত ধরেই সে ঝুলে আছে। ছোট্টমনা পূরবী ভয়ে হাতটি শক্ত করে ধরে কেঁদে উঠে। বাচান বাচান বলতে থাকে। সাদ নিজের যথা সাধ্য চেষ্টা করে পূরবীকে উপরে তুলে আনতে সক্ষম হয়। পূরবী এসে পরে একদম সাদের বুকের উপর। ভয়ে কাপতে থাকে আর জোরে জোরে কাঁদতে থাকে। এই অবস্থা দেখে সাদের প্রচন্ড রাগে ফেটে পরার জোগাড়। একেতো হসপিটালের জন্য এমনিতেই মেজাজ খারাপ তারমধ্যে এই স্টুপিড গার্লটার কার্যকলাপ। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয় পূরবীকে। পূরবী গিয়ে পরে পিচের উপর। হাতের কনুই, হাটুতে আর পায়ের নখে ব্যাথা পেয়ে কাকিয়ে উঠে । উঠে বসে সাদের দিকে তাকায়। সাদ কিছুমূহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে যায়। বড় বড় অশ্রুশিক্ত চোখ দুটো তার দিকে তাকিয়ে আছে। অসহায় চাহনির মাঝে মায়ার ছটা দৃশ্যমান। ধারালো নাক। কম্পমান ভরাট এক জোড়া ঠোঁট। গালদুটোয় হালকা মেকআপ ।এলোমেলো কয়েকটা চুল মুখের উপর ছড়ানো। গহনায় মোড়ানো বেনারসী দোপাট্টার আবরনে সিথি ভর্তি সিঁদুর দেওয়া সদ্য বিবাহিতা একটা বউ। ল্যামপোস্টের আলোতে মানবশূন্য ফ্লাইওভারের চওড়া রাস্তার মাঝে বউটাকে একটা মায়াবীনি মনে হচ্ছে। হটাৎ ই সাদের মনে প্রশ্ন জেগে উঠে বউটা কি মানুষ নাকি অন্যকিছু? তাকে কি কোন ট্রাপে ফেলা হলো? ফ্লাইওভার থেকে সুইসাইডের অনেক রেকর্ড আছে। ছোটবেলায় দাদীর মুখে শুনেছে যে মাঝে মাঝে নাকি আগে নির্জন জায়গায় বউ বের হতো। যাকে পছন্দ হতো তাকে নিজের ট্রাপে ফেলে নিয়ে যেতো। কিন্তু বউ কাঁদবে কেনো? নিজেকে সামলে নেয় সাদ।এসব ভূত প্রেতে সে বিশ্বাস করে না। রূপকথার সব আজগুবি গল্প রুপকথাতেই শোভা পায়। আগে কিছু থেকে থাকলেও আজকাল কিছুই নেই। এতো সুন্দর একটা মেয়ে সুইসাইড করতে গিয়েছিলো ভেবেই সাদ রেগে উঠে।ধমক দিয়ে বলে,
” এইযে বৌদি ,কি করতে যাচ্ছিলেন আপনি? জীবনটাকে কি ভাবেন যে সুইসাইড করতে যাচ্ছিলেন?লাফ দিয়ে বাচার জন্য আবার চিল্লাচিল্লি করেন। মাথা কি ঠিক আছে? পাগল নাকি? ”

পূরবী ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। বলে,

” আ.. আমি বুঝতে পারিনি। ”

” দেখুন একদম কাঁদবেন না। আপনার কান্না দেখতে চাইনি আমি। দেখে তো মনে হচ্ছে সদ্য বিয়ে হয়েছে আপনার । হাজবেন্ড কোথায় আপনার? নিশ্চয় রাগ করে চলে এসেছেন। এতোক্ষনে নিশ্চয় খুজাখুজি শুরু হয়ে গেছে। যার বাড়ির বউ তার বাড়ি ফিরে যান। হাজবেন্ডের কাছে যেতে না চাইলে বাবা মায়ের বুকে ফিরে যান। কারো বুক খালি করার রাইট আপনার নেই। আমার সামনে মরতে যাচ্ছিলেন জন্যই বাচিয়ে নিতে পেরেছি। এটা আমার কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। নয়তো এতোক্ষনে আপনার ডেড বডি পরে থাকতো।”

পূরবী সাদের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। সাদ বলে, ” কি? ”

পূরবী সাদকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে। লোকটা যথেষ্ট হ্যান্ডসাম। দেখেই বোঝা যাচ্ছে জেন্টলম্যান। জ্যাকেট দেখে জিজ্ঞাসা করে,
” আপনি কি পুলিশ? ”
” কেনো? ”
পূরবী উত্তর দেয় না। কোন মতে উঠে দাঁড়ায়। ব্যথায় কুকিয়ে উঠে। ব্যলেন্স রাখতে না পারলে সাদ এসে হাত ধরে নেয়। পূরবী বলে,
” আপনি পুলিশ হলেও খুব নির্দয় পুলিশ। বাচিয়ে নিয়ে মারার জন্য ই তো ধাক্কা দিয়েছিলেন। ”
সাদ দেখে সত্যিই ব্যথা পেয়েছে। ছিলে গেলে একদম।
সাদ বলে,
” অনেকটা ছিলে গেছে। বাসায় গিয়ে ব্যান্ডেজ করে নিবেন। জায়গাটা ভালো না। বিপদ আপদ ঘটতে পারে। চলে যান। অনেক রাত হয়ে গেছে। কয়টা বাজে? ”

পকেটে হাত দিতেই দেখে ফোন নেই। ফোন তো সেখানেই ফেলে দিয়েছে। কলে নূরা ছিলো।
“ওহ সীট” বলেই কপালে দুটো আঙুল প্রশস্ত করে রাখে সাদ।

” বাসায় যান।এরকম ভূল আর কখনোই করবেন না।”
বলেই সাদ হাটা দেয়। নূরা নিশ্চয় বার বার ফোন দিচ্ছে। হয় ও তাই। রাস্তার উপর ফোনটা কুড়িয়ে নেয় সাদ। রাত না হয়ে দিন হলে এতোক্ষনে ফোন আর ফোনের জায়গায় থাকতো না। কল রিসিভ করে।

” হ্যালো নূরা। ”
” কুত্তা ফোন কাটলি কেন?
” হাত থেকে পরে গিয়েছিলো। শোন আ’ম অন দ্যা ওয়ে। ”
” আমাকে না নিয়েই চলে গেলি? ”
” এখনো যায়নি। ফ্লাইওভারে আছি। তুই যদি যেতে চাস তাহলে চলে আয়। আমি ওয়েট করছি। ”
” ওয়েট কর। এক্ষুনি আসছি।”

সাদ ফোন কেটে পেছনে তাকাতেই পূরবীকে দেখতে পায়। পূরবীর মনে হয় লোকটা ভালো। অন্যদের মতো না। এর থেকে হেল্প পাওয়া যাবে । লাগেজ নিয়ে পিছু পিছু চলে আসে। সাদ ভাবে এদিক দিয়েই চলে যাচ্ছে মেয়েটা। তাই মাথা ঘামায় না। খেয়াল করে গাড়ি থেকে হাটতে হাটতে অনেকটা পথ চলে এসেছে। মেঘ সরে আকাশে বাকা চাঁদটাও দেখা যাচ্ছে। সাদের সাথে হেটে পাচ্ছে না পূরবী। এক পর্যায়ে জোরে বলেই বসে,

” একটু আস্তে হাটুন না… আমার পায়ে ব্যাথা। ”
চমকে তাকায় সাদ। তারমানে তাকে ফলো করছে!
পূরবী সাদের পাশাপাশি হাটছে এখন। ছাদকে বলে,
” বললেন না তো আপনি কি পুলিশ? আমি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছি। ”
” কেনো? আপনাকে নিরাপত্তা দিতে বলবেন? বাসায় পৌঁছে দিতে বলবেন? ”
” একটা কোথাও থাকার ব্যবস্থা করে দিবেন প্লিজ? ”
সাদ দাঁড়ায়।মাথা নাড়িয়ে বলে,
“না। আমি কার্ডিয়াক সার্জন ডক্টর সাদমান শেখ। পুলিশ নই। আ’ম সরি টু সে, আমি আপনাকে হেল্প করতে পারছি না। ”

” মি.ডাক্তার একটু হেল্প করুন প্লিজ। আহহহহ…. ”
সাদের দিক তাকিয়ে হাটতে হাটতে হোঁচট খেয়ে পরে যেতে নেয়। সাদ পূরবীকে আটকিয়ে ফেলে। পূরবী সোজা হয়ে দাঁড়ায়। আবার ব্যথা পেয়েছে বুঝতে পারে সাদ। পূরবীকে ধরে ধরে গাড়ির বুটের উপর বসায় সাদ। ফাস্ট এইড বক্স এনে হাতে পায়ে ঔষধ লাগিয়ে দেয়। পূরবীকে জিজ্ঞাসা করে, ” হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছেন?দেখি?”

শাড়িতে হাত দিতেই হাত দিয়ে আটকিয়ে দেয় পূরবী। সাদ পূরবীর দিকে তাকিয়ে বলে, ” আমি ডাক্তার। সো লেট মি ফিনিশ। ”

পূরবী কিছুক্ষন চুপ করে থেকে নিজে থেকেই শাড়ী উপরে তুলে দু হাটু বের করে। সাদ একবার তাকিয়েই চোখ সরিয়ে নেয়। এমন পরিস্থিতিতে কখনো পরেনি সে। ডাক্তার হবার কারনে নারী পুরুষ অজস্র লোকের শরীর দেখেছে ছুঁয়েছে। সেটা নিজের পেশার ক্ষেত্রে। কিন্তু কখনো চোখ সরিয়ে নিতে হয়নি। আজ কেনো চোখ সরিয়ে নিতে হলো তাকে? নিজের সাথে যুদ্ধ করেই সে আবার ফিরে তাকায় । মসৃণ একজোড়া আকর্ষনীয় নারী পা তার সামনে। হাটুতে লাল হয়ে আছে। সাদ ঐ লাল হয়ে যাওয়া অংশটুকুতেই আঙুলে ঔষধ লাগিয়ে দেয়। পূরবী যে কাপছে সেটা সে বুঝতে পারে। ঔষধ লাগানো শেষ হতেই সে উঠে পরে। মাথাটা একটু ঝিম ঝিম করছে। পূরবীর দিকে তাকায়। পূরবীকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে কতোটা ডেস্পারেট সে। ভীষন মায়া হয় মেয়েটার প্রতি। বিয়ের পরেও মেয়েটি পালিয়েছে নিশ্চয় বড় কোন ঘটনা আছে নয়তো কেউ পালায় না। সাথে কোন ছেলে থাকলেও মানা যেতো যে জোর করে বিয়ে দিয়েছে তাই প্রেমিকের হাত ধরে বিয়ের রাতেই পালিয়েছে। কিন্তু সাথে কেউ নেই। মেয়েটা আশ্রয় চাইছে। হতেই তো পারে প্রেমিকের সাথে কাল মিট করবে। প্রেমিক দূর থেকে আসছে তাই লেট হচ্ছে। হিন্দু বিয়ে হওয়া অব্দি না খেয়ে থাকতে হয় সেটা তো মাথাতেই কেস করেনি সাদের। নিশ্চয় মেয়েটা না খেয়ে দূর্বল হয়ে পরেছে। গাড়িতে তো খাবার ও নেই। কি করে এখন?গাড়ি থেকে পানির বোতল এনে হাতে ধরিয়ে দিয়ে বলে,

” আপনাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে না খেয়ে আছেন । আপাতত পানি খান একটু এনার্জি পাবেন। ”

পূরবী এক লিটারের বোতল থেকে একটু পানি খায়। বুট থেকে নেমে সিথি থেকে টিকলি সরিয়ে সিঁদুর ধুতে থাকে। লাল পানি গুলো পায়ের সামনে ফোঁটায় ফোটায় পরে। সাথে নিঃশব্দে পূরবীর চোখের বন্যাও বয়ে যায়। সাদ তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে বলে,

” এতো অবমাননা? তাহলে বিয়ের আগেই পালানোর চেষ্টা করতেন। ভাগ্যে থাকলে কি আর করার! ”

পূরবী সাদের দিকে তাকায়। পূরবীর চোখ মুখ লাল হয়ে আছে। সাদ ভ্রু কুঁচকে তাকায়। পূরবী রাগ দেখিয়ে বলে,
” আমি মুসলিম। ”
” হুয়াট? ” চমকে উঠে সাদ। সাথে অবাক ও হয়।
” একজন হিন্দু ব্যাক্তির কাছে যেমন কবুলের কোন মূল্য নেই একজন মুসলিম এর কাছে সিঁদুরের ও তেমন মূল্য নেই। কেউ একজন হুট করে এসে সিঁদুর পরিয়ে দিলেই যে সেটা আমি মাথায় ভরে রাখবো সেটা কখনোই হয়না। আমি পুরোপুরি একজন মুসলমান।”
নড়েচড়ে দাঁড়ায় সাদ। অবাকের শীর্ষ পর্যায়ে চলে গেছে সে। কিছুটা বুঝলেও কিছুটা বুঝতে পারছেনা। বোঝা না বোঝার দোটানায় পড়ে গেছে।
” আপনার কাছে আরো পানি আছে? ” পূরবীর কথায় টনক নড়ে সাদের। গাড়ি থেকে আরেক বোতল পানি নিয়ে আসে। পূরবী ধুতে থাকে। সাদকে জিজ্ঞাসা করে, ” হয়েছে পরিষ্কার? ” সাদ ফ্ল্যাশলাইট অন করে দেখে চুলের মাঝে এখনো আছে। ফোনটা পকেটে ঢুকিয়ে বলে, ” দাও আমি পরিষ্কার করে দিচ্ছি। ”
নিজের হাতে মাথা পরিষ্কার করে দেয় সাদ। বয়সে তার থেকে অনেক ছোট হবে তাই আর আপনি ডাকার প্রয়োজন বোধ করছে না। নিজের রুমাল এগিয়ে দেয়। পূরবী মাথা সহ মুখ মুছে নেয়। ভেজা চুল গুলো কানের উপর রাখে। মুখের মেকআপ এক বিন্দু উঠেনি। সব ফিক্সড হয়ে আছে। এবার পূরবীকে স্বাভাবিক দেখাচ্ছে। এতোক্ষনের সংকোচবোধ থেকে সরে এসেছে ছাদ পকেটে হাত গুজে বলে,
” এবার বলোতো কাহিনী কি? নাম কি তোমার? ”
” নওশীন আনবার পূরবী। ডাক নাম পূরবী। ”
সাদ দুবার মুখে আওরায় পূরবী… পূরবী।

চলবে,

বাবুরা তোমরা কি পড়তে ভয় পাও? বিশ্বাস করো। একদম ভয় পেও না। ভালোলাগার উচ্চ শিখরে পৌঁছে দিবো তোমাদের 🙈।রিয়েক্ট দিতে ভয় পেও না। কমেন্ট করতেও কিপ্টামো করিওনা। ছোট ছোট কমেন্ট দেখে মন ভরে না। যারা রেগুলার পড়ছো তারা লাকি। কিজন্য বললাম এইটা সময়ই বলে দিবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here