#ভাগ্যবতী
#লাবিবা_তানহা_এলিজা
#পর্ব_১৩

১৭.
লকাপ থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেছে আশু। এসেই দরজা বন্ধ করে দিয়েছে । রুমের সকল জিনিসপত্র লন্ডভন্ড করে ফেলেছে। এদিকের জিনিস ওদিকে ছুড়ে মারছে। ধারালো জিনিসে শরীরে আচর কেটে রক্তাক্তও করেছে। বাইরে দাঁড়িয়ে সকলে শব্দ শুনে ভয়ে একজন আরেকজনের দিকে তাকিয়ে আছে। আশুর মা, বোন, কাকী, কাজিন সবাই দরজা ধাক্কাচ্ছে । আশু কিছুতেই দরজা খুলছে না । সে এখন ছোট খাটো ধ্বংসের খেলায় নেমেছে। নিজ কক্ষ ধ্বংস। এই দরজা যে খুলবেনা এখন সেকথা সবাই ভালো করে জানে। আশুর সাগরেদরাও চুপটি করে দাঁড়িয়ে আছে। একটু আগেই ফুলের মালা পড়িয়ে হৈ হৈ করতে করতে থানা থেকে বাড়ি অব্দি এসেছে । আশু চুপচাপ ছিলো। আশুর মা বার বার বলছে,
” ভগবান আমার গোপাল যেনো শরীরে আঘাত না করে বসে। তুমি দেখো ভগবান। ”
ঘন্টা খানেক পরেও দরজা না খুললে সবাই একে একে চলে যায়। থাকে শুধু আশুর মা আর বোন। আশুর মা কাঁদতে কাঁদতে দরজার সামনে বসে পড়ে। মুখে আচল গুজে বলতে থাকে, ” ভগবান আমার গোপালের কষ্ট কমাইয়া দেও ভগবান। আমার গোপাল কি এমন চাইছিলো? তুমি তা দিলা না ভগবান। গোপালের বাপ মরার পর থাইকা গোপালরে ধইরাই জীবন কাটাইয়া দিতাছি। মাইয়াডার বিয়া দিয়ে দিমু। গোপাল ছাড়া আমার আর কেউ নাই ভগবান। দুইডা সংসার বাইচা আছে আমার গোপালের মুখ চাইয়া। সব শেষ করে দিওনা ভগবান। আমার গোপাল রে সুবুদ্ধি দেও। ”
বিথী বিরক্ত হয়ে বলে, ” মা মরা কান্না বন্ধ করো তো। আগে দাদারে বের করো । ঘরতে বাহির হতে কও। ”
” পেটের দোষ আমার পেটের দোষ। কে বলছিলো ওরে বিধর্মী মাইয়ারে বিয়া করতে? ধর্মে সইনাই । পাপ হয়ছে পাপ। ঐ পাপের শাস্তি ভগবান ঠিক দিবো।”
” তোমার গোপাল পূণ্য করছে কবে মা? পাপের ঘড়া একদিন পূর্ণ হবো মিলিয়ে নিও। ”
ভেতর থেকে সব শুনছে আশু। ঘরের অক্ষত থাকা শেষ ল্যাম্পটাও এক আছাড়ে ভেঙে ফেলে। ফ্লোরে বসে ওয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে ফুসতে থাকে। পায়ের সামনে পড়ে থাকা ফুলদানিটায় লাথি দিয়ে গলা ফাটানো চিৎকার করে । ছাড়বোনা কিছুতেই ছাড়বোনা তোকে পূরবী। এতো বড় অপমান! তোর জন্য সব কিছু! আজ পর্যন্ত একটা ঘন্টা কেউ লকাপে রাখতে পারেনি আমাকে। তোর বাপে আমার সাথে আআআআআআআআআ……..। বিচ্ছিরি চিৎকারে ঘর সহ যেনো কেপে ওঠে।
ওয়ালে মাথা ঠেকিয়ে বার বার বলতে থাকে, ছাড়বোনা পূরবী ছাড়বোনা তোকে। তোকে একরাতের জন্য হলেও আমার চাই। কিছুতেই ছাড়বোনা তোকে।

তন্দ্রাচ্ছন্ন আশু হটাৎ চমকে উঠে। কে যেনো তাকে দুবার আশুদা বলে ডাকেছে। কে ডাকবে? ঘরের এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে কাউকে না পেয়ে আবার চোখ বুজতে যাবে তখনি আবার ডাকটা শুনতে পায়। মিষ্টি একটা মেয়েলি গলায় ডাকছে আশুদা..ও আশুদা । এ গলা আশুর খুবই পরিচিত একটা গলা। ডাক অনুসরণ করে বেন্টিলিটারের দিকে তাকায় আশু।দেয়ালের ফাঁক দিয়ে দুটো চোখ জ্বল জ্বল করছে। আশু ধরা গলায় বলে, ” লক্ষী ওখানে কেনো উঠেছিস? পা ভাঙার জন্য? ”
” আগে তো জানালাটা খোলো। তোমাকে তো দেখা যাচ্ছে না তাই এখানে উঠেছি। ”
” তাহলে সেখান থেকেই দেখ। ”
” ভালো করে তো দেখতেই পাচ্ছি না। এইটুকু ফাক ফোকরে কি তোমার মতো এতোবড় হাতি কে দেখা যায়? খুলোনা জানালাটা। ”
আশু রাগ চোখে তাকায়। যার অর্থ আমাকে হাতি ডাকার সাহস কি করে হয় তোর? উঠে জানালার কাচ সরিয়ে আবার আগের মতো এসে বসে পড়ে। লক্ষী জানালার তাক বেয়ে জানালা দিয়ে রুমে ঢুকে পড়ে। পুরো রুমের অবস্থা দেখে অবাক হবার ভান করে বলে, ” কতগুলো টাকা আবার শেষ করলে তুমি আশুদা। তুমি জানো এতোগুলো টাকা হলে আমি কয়টা শাড়ি কিনতে পারবো? ”
” শাড়ী দিয়ে কি করবি? গলায় ফাঁস দিবি? ”
” তা দিবো কেনো? আমি কি ছেঁকা খেয়েছি যে বেকা হয়ে দশ আঙুল জিহ্বা বের করে মুখকে তেরা করে মরার জন্য ফাস দিতে যাবো? শাড়ী তো অঙ্গে জড়াবো। কি সুন্দরটাই না লাগবে আমাকে। তোমাকে এসে দেখাবো। দেখে বলবে কেমন লাগে আমাকে। ”
” পড়িস তো সবসময় লম্বা শার্ট প্যান্ট। আচ্ছা কিনে দিমুনি। এখন যা। ”
” যা মানে? আসলাম ই তো কেবল। কলেজ থেকে তুমি আসার কথা শুনে দৌড়ে বাড়ি আসছি। এসেই শুনি তুমি দরজা বন্ধ করে দিছো। জেঠিমা দরজার সামনে কানতেছে। কেমনডা লাগে বলোতো? ”
” তোর বকর বকর বন্ধ হইলে যা। ”
” বন্ধ করবো কিভাবে? আমি তো বকর বকর করতেই জানিনা আশুদা। দেখি দেখি গলায় মালা দিয়েছো সুন্দর লাগছে।একটা দুইটা তিনটা চারটা মালা। গাদা ফুলগুলো বাসি মনে হচ্ছে। বাসি ফুল তোমার গলায় দেওয়া একদম উচিত হয়নি। লালনকে আচ্ছা বকা দিবো আমি। ”
লক্ষী আশুর গলা থেকে মালা খুলে নেয়। আশু রাগ চোখে তাকিয়ে থাকে লক্ষীর দিকে। ” লক্ষী তোরে অনেক ক্ষন আগে যাইতে কইছি। এখনো যাস নাই। ভাগ্যিস তুই আমার বাপের কাকার ছেলের মেয়ে। নয়তো তরে ধইরা আছাড় দিতাম। ”
” এএএহহ… একদিন তো কোলে নিয়েও দেখলেনা আমার ওজন কতো। আবার আছাড় দিবো। আমিও কি বলি। কোলে কি আর কোন গুন্ডায় নেয়? ”
” এই গুন্ডি যাবি তুই এখান থেকে? আমার মাথা ঠিক নাই। কখন জানি তোর মাথা ফাটাইয়া দেই। ”
লক্ষী গিয়ে সব গুলো জানালা খুলে দেয়। দরজাটাও খুলে দেয়। একটা ঝাড়ু আর বেলচা নিয়ে আসে। ওড়নাটা কোমড়ে গুজে ঝাড়ু দিতে থাকে। আশু লক্ষীর কার্যকলাপ দেখছে। লক্ষী কিছুক্ষণ পর পর আশুর দিক তাকিয়ে দেখে আশুর চোখে আগুন জলছে। তবে সেটা চাপা পড়া আগুন । লক্ষী বাতাস ও করবে না আগুনের তেজ ও বাড়বে না। । আশু নড়ে চড়ে উঠে বলে,
” লক্ষী তোর কাছে বাংলা আছে? ”
” বাংলা মানে? ”
” বাংলা চিনিস না তুই হারামজাদী? আমার টিমে থাকার তোর কোন যোগ্যতাই নাই যদি বাংলা না চিনস। ”
“আমি কি বাংলা খাই তাইযে আমার কাছে থাকবো? ”
” দৌড় দে। মেথর পট্টি থাইকা তিন বোতল আনবি। যা। সুরমারে আমার নাম কইলেই দিয়ে দিবো। ”
” আমি কি আশু যে গিয়ে সুরমারে বলবো সুরমা বোতল নিয়ে ঘরে আয়? আমি লক্ষী। সোজা গিয়ে অরুনের কাছে বলবো বোতল দিতে। ”
” যাইতে হবো না তোর। রুম পরিষ্কার করে যা এখান থেকে কামলী । ”
লক্ষী ভেংচি কেটে সমস্ত ঘর ঝাড় দিয়ে পরিষ্কার করে। জেঠিমার থেকে প্লেটে ভাত, ডাল, মাংস, ভাজা নিয়ে আশুর কাছে আসে। আশু বলে,
” খামুনা আমি। নিয়ে যা ভাত। ”
” মানুষের কষ্টের দাম দিতে হয়। এতো কষ্ট করে রান্নাঘর থেকে এতো ভারী একটা থালা নিয়ে আসলাম। আর তুমি কষ্টের দাম দিবা না ? ফেলনা মনে হয় আমারে?নাও ভাত খাও। তোমার বোতল আনতে লোক পাঠাইছি। ”
” আনুক। ”
” ক্ষিধা লাগে নাই? কয়েক লোকমা খাও । খাইবা নাতো? না খাইলা। কয়েকদিন পরে যখন থাকবোনা তখন বুঝবা। কে তোমার যত্ন করে। ”
” কই যাবি? ”
” বাহ রে.. আমার বিয়া দিবা না তোমরা? ” মুখে লজ্জা ফুটিয়ে বলে লক্ষী। আশু চোখ গরম করে বলে,
” বিয়ার কথা আমারে বলস লজ্জা করেনা? যা তোর বিয়া দিলাম না। ”
” কি ?”
” তোরে বিয়া দিলাম না। ”
” তোমার জন্য সারাজীবন আয়বুড়ো থাকবো নাকি? ”
” ভরণপোষণ তো সব আমিই দিমু তাইনা? ”
” আর ভালোবাসা? আদর সোহাগ? বাচ্চা-গাচ্চা? ”
” দূর শালী দূর হ তুই।নয়লে তুই থাক আমি গেলাম। ”
চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ায় আশু। লক্ষী তাড়াতাড়ি সামনে গিয়ে দু হাত দুদিকে দিয়ে দরজায় আটকে দেয়।
” খালি পেটে থেকো না আশুদা। আমি এনেছি। ভাতটুকু খেয়ে নাও। আমি চলে যাচ্ছি। ”
লক্ষী দরজা ভেজিয়ে দিয়ে চলে যায়। এবার আশু ভাত খাবে। পেটের ক্ষুধার তাড়নায় হোক বা লক্ষীর অনুরোধেই হোক সে খাবে। কোনটাই অগ্রাহ্য করার শক্তি নেই তার। লক্ষীকে আশুর পরিবারের একজন বলা যায়। আশুর অনেক কাজে লক্ষী হেল্প করে। মাঝে মাঝে অনেক জঘন্য কাজেও লক্ষীকে পরোক্ষভাবে ব্যবহার করা হয় তা লক্ষী বুঝতেও পারে না। অথবা বুঝলেও চুপ থাকে। যার দারা এতোটা সাপোর্ট পাচ্ছে তাকে সাহায্য করতেই হবে। সে কাজ ভালো হোক অথবা মন্দ।লক্ষীর বাবা মারা যাবার পর থেকে আশুই তাদের দুই ভাই বোন আর মা কে দেখে আসছে। পরিবারের প্রতি আশুর টানটা বরাবর ই একটু আলাদা রকমের। সব কিছুর আগে তার কাছে ইমপর্টেন্ট তার পরিবার। বাকি সবকিছু চুলোয় যাক ।

সাজুর বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে আশু। ভয়ংকর অপমানিত হয়ে এসেছে সে। বাড়িতে বকুল ছাড়া কেউ ছিলো না। সেই বকুল যার বিয়ে দিতে লাখ লাখ টাকা দিয়েছে সেই বকুল ই আজ তাকে যা নয় তাই বলেছে। নীতি দেখাচ্ছে নীতি। মায়ের সাথে এসে যখন টাকাগুলো নিয়ে গিয়েছিলো তখন কোথায় ছিলো এই নীতি? মুখ থেকে মায়ের সাথেই মধূ বের করছিলো। মানুষ যে গিরগিটির মতো রং পাল্টায় তা আজ স্বচক্ষে দেখলো আশু। যে মানুষ গুলো স্বার্থের জন্য নিজেদের রং পাল্টায় তারা সাপের বিষের চেয়েও ভয়ংকর। সাপ যেমন বিষ ছড়িয়ে জীবন ধ্বংস করে রং বদলানো মানুষগুলো তেমনি বিশ্বাস ধ্বংস করে। নিজের উপর ঘৃণা হচ্ছে। এমন মানুষ কে বিশ্বাস করেছিলো সে। আশু গুন্ডা হতে পারে ,টাকা নিয়ে কাজ করে। কিন্তু কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করে না। রাস্তায় এসে নিজের বাইকটাকে এক লাথি দিয়ে ফেলে দেয়। লালন দৌড়ে এসে বাইক তুলে দাড় করায়।
” মোটর সাইকেল কেনো ফেললে গুরু? ”
” আগুন জলছে আগুন। ইসস কি গরম ” বলে লক্ষী হাত দিয়ে মুখে হাওয়া করতে করতে পায়চারি করতে থাকে। লক্ষীর দিকে তাকিয়ে বাকা হাসে আশু। হাসির রেশটা মুখে লাগিয়েই রাখে। লালনকে সরতে বলে বাইকের উপর লম্বা লম্বি শুয়ে পড়ে। হাটুর উপর হাটু তুলে মাথার নিচে দুহাত ভাজ করে দিয়ে চোখ বন্ধ করে। লালন ভৃত্য গুরুর পাশে নিজের বাইকে বসে থাকে। লক্ষী চার হাত জায়গার মাঝেই পায়চারী করে।
” পূরবীর খবর জানিস লালন? ”
” ওর বাপে সারাদেশ খুঁজে বেড়াচ্ছে। ”
” খুঁজুক। আমি খুজবোনা। পাখি এরিয়ার মাঝে এলেই চিপকে ধরবো। ”
” খুজবেনা বলেও তো কতগুলো লোক লাগিয়েছো। ”
” লাগুক। পেলেও পাইতে পারে। লেগে থাকলে সমস্যা কি? ”
” কোন সমস্যা না। ”

লক্ষী থামে। পায়ের রগ হুট করে টনটন করে উঠে। সেদিকে না ভেবে কোমড়ে একহাত রেখে বলে, পূরবীর কথা ভুলে যাও আশুদা। সেই মেয়ে এমনি এমনি পালাতে পারেনি। নিশ্চয় কারো হাত ধরে পালিয়েছে। তাছাড়া তুমিতো জোকের মাথায় বিয়ে করতে উঠে পড়ে লাগলে। দুই জন দুই ধর্মের হয়ে সংসার করাটা ইমপসিবল বললেই চলে। না তুমি ধর্ম ত্যাগ করবে না পূরবী ধর্ম ত্যাগ করবে। বিয়ে সাত সাতটা জনমের বন্ধন। এটা কোন ছেলে খেলা নয় যে তুমি বিয়ে করে ছেড়ে দিলে । ”
” আমি সত্যিই পূরবীকে চাই। ”
” তুমি হিন্দু আর পূরবী মুসলিম। তুমি চাঈলেই হয়ে যাবে? পূরবী তো তোমাকে চায় না। একটা বিয়ে শুধু দৈহিক এবং পারস্পরিক সম্পর্ক নয়। সমাজ এটা কখনোই মানবেনা। ধর্ম -কর্ম কেও অস্বীকার করা যায় না। কিছুতেই ভগবান এটা মেনে নিবে না। ”
” পূরবীকে কতোবার দেখেছিস লক্ষী? বড্ড কোমল একটা মেয়ে জানিস ? ধরলেই যেনো মোমের মতো গলে যায়। একরাশ ভারী কালো চুলের বেনুনী। হাটার তালে তালে দোল খায়। ঘোমটার আড়াল থেকে হরিণডাগর চোখ দুটো যখন ভয়ে ভয়ে তাকায় পৃথিবীর সমস্ত আদর ঢেলে দিতে ইচ্ছা করে। রক্তজবা ঠোঁট দুটো যখন কেপে কেপে কথা বলে তখন মনে হয় তার কথা শুনতে শুনতে সব ভূলে যাই। লম্বা পুষ্ট মায়াময়ী সেই দেহ আমার ঘুম হারাম করেছে। রাতে ঘুম হয়না আমার। সপ্নের ঘোরে এসে ছিন্নভিন্ন করে দেয় আমায়। ”
দীর্ঘশ্বাস ফেলে লালন। তার গুরু না পাগল হয়ে যায় পূরবীর জন্যে।
লক্ষী মুখে ভেংচি কাটে।
” এ মোহ অতিস্বত্বর তোমার কেটে যাবে আশুদা। তোমার চোখে রংধনু খেলা করছে। যখন পৃথিবী সূর্য তাপে উত্তপ্ত হয়ে যাবে অথবা রাতের আধার নামবে তখন তোমার ঘোর কাটবে। রুপের মোহতে আটকে গেছো তুমি। তুমার চোখে পূরবীর সৌন্দর্য খেলা করছে। সেই সৌন্দর্য ভোগ করার লালসা তোমার রাতের ঘুম হারাম করেছে। পূরবী তোমার জন্য দূর্লভ ব্যক্তি । আমরা তার পেছনেই ছুটি যা আমাদের জন্য পাওয়া দূর্লভ। তোমার ভেতরে পূরবীকে পাওয়ার জেদ বসে গেছে। যতক্ষন তুমি পূরবীকে না নিজের করে পাবে ততোক্ষন তোমার এই জিদ বহাল থাকবে। যেই তুমি পূরবীর সৌন্দর্য পেয়ে যাবে সেই তুমি তাকে ছুড়ে ফেলে দিতে দুবার ভাববে না। কারন তুমি যা চেয়েছিলে তা তুমি পেয়ে গেছো। তোমার অন্তত আমি এতটুকু চিনি। ভগবান পূরবীকে শকুনের হাত থেকে বাচিয়ে দিয়েছে। তিনি যা করে মঙ্গলের জন্যেই করে।”
আশু লাফ দিয়ে বাইক থেকে উঠে দাঁড়ায়। তার চোখে আগুন জ্বলছে। পাশের একটা বাড়ির গেইটে লাগানো একশ পাওয়ারের এনার্জি লাইটের আলোয় আশুর মুখটা স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছে। লক্ষীর মাঝে কোন হেলদোল নেই। লালন ভয় পেয়ে গেছে। সে ভাবছে আজ তো লক্ষী শেষ। যে করেই হোক তাকে আশুকে শান্ত করতে হবে। লালন দু হাত উচিয়ে বলে, ” গুরু। গুরু শান্ত হও।লক্ষী না বুঝে কথা বলছে। ছোট মানুষ। কলেজে পড়াশোনা করে মাথাটা গেছে মনে হয়। ঐ লক্ষী বেশী পকর পকর করিস তুই। এখানে কি? যা বাড়ি যা।”
” তেইশ বছর বয়সে মেয়েদের তিন চারটা বাচ্চা থাকে।ও কোন দিক দিয়ে ছোট? আমারে শকুন ডাকে সাহস কতো বড়ো ওর? এই কলেজে পড়ার নমুনা। ওরে বলে দে আমারে যেনো জ্ঞান না দিতে আসে। আমার জ্ঞান ভালো লাগে না। মাথা গরম হয়ে যায়। ”

চলবে,

আমাকে তো খুব করে বলো লাবি মনি কিপ্টুস। তোমরাও তো কম কিপ্টুস না। যেদিন বেশী কমেন্ট করতে বলি সেদিন করো। বাকি দিন ফুস… 😏

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here