#ভাগ্যবতী
#লাবিবা_তানহা_এলিজা
#পর্ব_১২

১৬.
রোজ সকালে পূরবীর ডিউটি সাদের জন্য কফি হাতে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা। সাদ যতক্ষন এক্সারসাইজ করবে ততোক্ষন পূরবী সাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে। কফি হাতে থাকলেও দাড়িয়ে থাকতে হবে ,না থাকলেও দাঁড়িয়ে থাকতে হবে। সাদ যে উদ্দেশ্যহীন ভাবে পূরবীকে দাঁড়িয়ে থাকার আদেশ দেয়নি তা পূরবী আগে না বুঝতে পারলেও এখন একটু একটু বুঝতে পারছে। কারন পাশের বিল্ডিং এ দুটো মেয়ে দাঁড়িয়ে থাকতো। তাদের দুদিন থেকে একবারের জন্যও দেখা যায়নি। যতদূর সম্ভব বাকি মেয়ে গুলোও কয়েকদিনের মধ্যে ভেনিস হয়ে যাবে। এধরনের মেয়েদের পূরবীর একদমই ভালো লাগে না। গায়ে পড়া স্বভাবের। এভাবে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা নষ্ট চরিত্রের পরিচয় জানান দেওয়া ছাড়া কিছুই নয়। এতোকাল জানা ছিলো ছেলেরা নষ্ট চরিত্রের। ঢাকা শহরে না আসলে তো পূরবী জানতেই পারতো না মেয়েরাও যে পিছিয়ে নেই । একজন যুবতীর মনে অনুভূতির সৃষ্টি হওয়া ন্যাচারাল ফ্যাক্ট। যখন কাউকে ভালো লাগে সেই ভালো লাগাটাকে প্রশ্রয় দিলেই তা ভালোবাসায় পরিণত হয়।যদি ভালোবাসাকে হারানোর ভয় থেকে থাকে তবে সোজাসুজি তার নিকটে প্রস্তাব দেওয়ায় উত্তম। এতে পবিত্রতা ছাড়া কোন বেহায়াপনা থাকে না। কিন্তু প্রশ্ন হলো মেয়েগুলো কি ভেবে চলে গেলো ? মি. ডাক্তারের গার্লফ্রেন্ড ? গার্লফ্রেন্ড তো বাসায় কিভাবে থাকবে? তাহলে কি বউ? বউ……পুরো গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায় পূরবীর। চোখ দুটো বন্ধ করে ফেলে।
” কোথায় বউ ?” সাদের গলা শুনে চমকে যায় পূরবী।একটু জোরেই বলে ফেললো নাকি? সাদ পূরবীর পাশে এসে দাঁড়ায়। বেলকনি থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে খুঁজে কাউকে না পেয়ে জিজ্ঞাসা করে, ” বউ বউ করে চিল্লাচ্ছ কেনো? কোথায় বউ ? ”
” এই যে বউ ।”
” কে বউ?”
” আমি বউ ।”
” কার বউ ?”
” আপ.. না কারো না। ”
” দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দিবাসপ্ন দেখো নাকি? ”
” না। কিছুনা। আচ্ছা ঐ মেয়েগুলো আমাকে কি ভাবে ? ”
” কি ভাববে? যা ভাবার তাই ভাববে। ”
” উল্টাপাল্টা কিছু ভাবলে? ”
” উল্টাপাল্টা মিনস? বউ ? এরজন্য বউ বলে চিল্লাচ্ছিলে? বজ্জাত মেয়ে সব সময় মাথার ভেতর এসব ঘুরে তাইনা? ”
” আমার মাথা ভালো। ঐ মেয়েগুলোর খারাপ। এসব ভেবেই তো দুজন একেবারে হাপিস। ”
সাদ একবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে নেয়। মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়ে তুলে। পূরবী এ হাসির মানে খুজে পাই না। তবে তাকে যে ব্যবহার করা হচ্ছে সেটা ঠিকই বুঝতে পারে। চুপচাপ প্রস্থান করে পূরবী। স্বার্থ ছাড়া কেউ এতো ভালো ব্যবহার করে না। তাইতো বলি যে লোক আমাকে দেখলেই বকাবকি করতো। আশেপাশে সহ্যই করতে পারতো না সে কিভাবে ঘন্টাখানেক নিজের সামনে দাড় করিয়ে রাখে ! ভালোভাবে কথাও বলে! সিড়ির সামনে আসতেই জমিলার সাথে ধাক্কা লাগে। জমিলা মুখে হাসি ফুটিয়ে বলে, ” মা টেবিলে আরেকটা ট্রে আছে। একটু আইনা দেও না। ছোট সাহেব আবার এখনি বের হবো। ”
” এতো সকালে বের হবে কেনো? ”
” ছোট সাহেব তো সিলেট যাইতেছে। সেইখানে ক্যাম্পিং হবো। রাতের বেলায় জানছি। ”
” আমিতো উনার রুমেই ছিলাম। উনিতো দিব্যি এক্সারসাইজ করছেন। বের হবেন বললেন না তো। ”
” কিজানি!একটু আইনা দেও মা। ”
পূরবী ট্রে নিয়ে আসে। এমনিতেই সকাল বেলা ছাড়া লোকটার দেখা মেলা ভার। আজ নাকি আবার কেম্পিং এ যাচ্ছেন। কবে ফিরবেন কে জানে? ক্যাম্পিং এ গিয়ে কি উনি হার্টের রোগী দেখবেন? পূরবী নিজের মাথায় নিজেই বারি দিয়ে বলে, হার্টের ডক্টর হার্টের রোগী দেখবেন নাতো কি দেখবেন?এতো গাধী কিভাবে হলাম?

এরমধ্যে সাদের গোসল করে তৈরী হওয়া শেষ। মি. ডক্টর যে বেশ ফাস্ট তার একটিভিটি দেখেই বুঝা যায়। সাদ দাড়িয়েই পূরবীর হাতের ট্রে থেকে ফ্রুট সালাদ খেতে থাকে। বেশ তাড়াহুড়ো করে খাচ্ছে দেখে পূরবী বলে, ” আস্তে খান। গলায় আটকে যাবে তো।”
সাদ একটি আঙুল তুলে ইশারা করে গোগ্ৰাসে গিলতে থাকে। পানিটুকু শেষ করে বলে, ” মা কে দেখে রেখো। আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানে নেট থাকে না। মা টেনশন করলে মাকে অন্য কিছু বলে ভুলিয়ে রাখবে।”
” মি. ডক্টর। কতদিনের জন্য যাচ্ছেন আপনি? ”
” ফর সেভেন ডেস। ”
” এতোগুলো দিন! ক্যাম্পিং এ কি তাবুতে থাকেন? অনেক মজা হয় তাই না? ”
” ডক্টরদের মজা করার টাইম থাকে না। এমনো হয় সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা -নয়টা পর্যন্ত রোগী দেখতে হয়। অবশ্য এটা ক্রাউডের উপর ডিপেন্ড করে। ফ্রি টাইম থাকলেও আমরা টাইম ওয়েস্ট করিনা। ডক্টর হলে বুঝতে। ”
” সে গুড়ে বালি। ”
” কেনো? ”
” আমার মার ড্রিম ছিলো ভাইয়া ইঞ্জিনিয়ার হবে আর আমি ডক্টর হবো। ভাইয়া ইঞ্জিনিয়ার হলো। কিন্তু আমি তো সমুদ্রে পড়ে গেলাম। ”
সাদ কয়েক সেকেন্ড পূরবীর দিকে তাকিয়ে থেকে বলে, ” ও আচ্ছা। ”
সাদ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দ্রুত ব্যাগ হাতে নিচে আসে। মমতা ড্রয়িং রুমে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে ছিলো।
সাদ এসে মমতাকে জড়িয়ে ধরে। মমতা মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,” সাবধানে যেও। নিজের খেয়াল রেখো। ”
” হুয়াট ডু ইউ ওয়ান্ট? ”
” সাতকরা ”
সাদ মুচকি হাসে।
” মণিপুরী শাড়ী অলসো। ”
সাদ মাথা দোলাতে দোলাতে “টেক কেয়ার ” বলে বেরিয়ে যায়। সাতকরা গুরু মাংস সাদে প্রিয় খাবার। তার জন্য সিলেট নাম শুনলেই আগে সাতকরার নাম মুখে আনে মমতা। এই হচ্ছে মা। আগে সন্তানের চাহিদা পূরন তারপর ভূবন। পূরবীর খুব বলতে ইচ্ছে করে, মি. ডক্টর আমার জন্য তাজা তাজা চা পাতা নিয়ে আসবেন। কিন্তু এটা বেশী বেশী হয়ে যায় বলে আর বলা হয়ে উঠে না। এমনিতেই থাকতে দিচ্ছে খেতে দিচ্ছে তার উপর বায়না ধরা এটা অতিরিক্ত কিছু বলেই মনে হয়।

অফিস শেষ করে রুকু ছুটেছে অতিকুর ইসলামের বাসার দিকে। তার মেয়েদের আজ কমপ্লেইন্ট করতেই হবে। লোকটা আজ নিজের লিমিট ক্রস করে ফেলেছে। মিটিং রুমে সবার সামনে হাগ করেছে। মিটিং শেষে যখন মেল ইমপ্লয়িদের সাথে হাগ করছিলো তখন আচমকা সুযোগ বুঝে রুকুকেও শক্ত করে ধরে হাগ করেছে। আরো দুজন ফিমেল ইমপ্লয়ি ছিলো তাদের সাথে হাত মেলানো পর্যন্ত ই অব্যাহত ছিলো। তাহলে রুকুকেই কেনো ডিস্টার্ব করে লোকটা? এর উত্তর জানা আছে রুকুর। তা হলো রুকু একা। একা লাইফে যোগ্য অযোগ্য সবাই প্রবেশ করতে চায়। যেখানে রুকু সাইনবোর্ড লাগিয়ে রেখেছে এখানে প্রবেশ নিষেধ। হোক সে অদৃশ্য তবুও তো প্রকাশ্য। কেমন সাহস বেড়ে গেছে ভাবা যায়? আজকের বেয়াদবি টা নতুন নয়। যখন থেকে এই লোক সিইও হিসেবে জয়েন করেছে তখন থেকেই এই লোকের খারাপ নজর দেওয়া শুরু। পেপারর্সে সিঙ্গেল দেখে খোঁজ নেওয়ার পর তো উঠে পড়ে লেগেছে। কেবিনে ডেকে অযথাই দাড় করিয়ে রেখে চোখ দিয়ে গেলা, কথায় কথায় হাত ধরা, অফিস টুরে গেলে পাশের সিটে বসা, গা ঘেঁষাঘেষী করা, প্রেমময় কথা বলা, সারাক্ষন ফোন দিয়ে জ্বালানো এসব তো আছেই। অফিসে টিকতে পারছিলো না রুকু। কলিগরা আগে থেকেই ফিস ফিস করছিলো। আজকের ঘটনায় অনেকে তো রুকুকে কনগ্ৰাচুলেট করছিলো। নতুন জীবনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছিলো। কেউ কেউ বলছিলো, আর কতো একা থাকবে? তোমাকে অনেক বুঝিয়েও কাজ হয়নি দেখে হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। এবার দেখি তুমি নিজেই বুঝতে পেরেছো। নিজের জীবনে নতুন করে কাউকে জায়গা করে দিয়েছো। তবে আমাদের সিইও স্যারই যে সেই ভাগ্যবান তা তো জানাছিলো না। ” যারা বেশী ক্লোজ তারা বলছিলো,
কি ব্যাপার রুকু? তলে তলে এতোদূর.. আর আমরা কিছুই জানতে পারলাম না? তোমার সাথে এতো ভালো বন্ধুত্ব থাকা সত্ত্বেও তুমি কিছুই বলোনি। অবশ্য আমরা ঠিকই বুঝতে পেরেছিলাম। সেই যে স্যারের সাথে লাঞ্চে বসলে, তোমাকে স্যারের ইমপ্রেস করা দেখেই আমরা বুঝতে পেরছিলাম। তবে এবার কিন্তু আমাদের পার্টি চাই।
পিয়নটাও ছাড় দেয়নি। দাত কেলিয়ে বলছিলো,
” আফামনি আপনেতো ছোট বোনের মতো দুইটা মেয়েও পেয়ে গেলেন। আপনার ই কপাল। ”
এসব কথা শুনে আর বুড়ো লোকটার দাত কেলিয়ে হাসি দেখে বার বার গা গোলাচ্ছিলো রুকুর। নিজেকে খুব অসহায় লাগছিলো। মানুষ না জেনে না বুঝে নিজেদের মতো করে কতো কথাই না বানিয়ে নিতে পারে। কতভাবে ইনসাল্ট করতে পারে। ভীষন কাঁদতে ইচ্ছা করছিলো রুকুর। ক্ষোভে দুঃখে তখন তখন ই রিজাইন লেটার দিয়ে এসেছে। সেই অফিস মুখো আর হবে না রুকু। মানুষ কিভাবে পারে ওরকম একটা লোকের সাথে তাকে জড়িয়ে কথা বলতে? এতোটাই কি বয়স্ক মনে হয় তাকে? রাস্তার পাশে শপিং মলের লুকিং গ্লাসের সামনে দাঁড়ায় রুকু। আপাদমস্তক নিজেকে দেখে নেয়। সাদা রঙের টিস্যু কাপড়ের থ্রিপিচে মেকআপ বিহীন মুখটায় একদম সাদাসিধে লাগছে। অলংকার বলতে নাক কানে ডায়মন্ডের ছোট্ট পাথরের ফুল দৃশ্যমান। আজকাল নিজের রুমেও মনে হয় কেউ এতোটা সাদাসিধে থাকে না। ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আতিকুর ইসলামের বাসায় উপস্থিত হয় রুকু। কিন্তু গেইট থেকেই ফিরে আসতে হয়। দারোয়ান জানায় আতিকুর ইসলামের মেয়েরা নাকি রাজশাহীতে গিয়েছে । আবার পথ হাটতে থাকে রুকু। বাবাদের একমাত্র মেয়েরাই শাসন করতে পারে। অনেক খারাপ কাজে জড়িত আর নেশাগ্ৰস্ত বাবাদের ও দেখা যায় যখন তার ঘর আলো করে একটা মেয়ে আসে তখন মেয়ের জন্য চিন্তা করেই ভালো পথে ফিরে আসে। সেই আশাটুকু নিয়েই রুকু এসেছিলো। না জানি লোকটা আবার কোন মেয়েকে ডিস্টার্ব করতে শুরু করে! সময় থাকতে শাসন করে নেওয়া উচিত।

হটাৎ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। আকাশটা দুপুর থেকেই মেঘলা ছিলো। এ সময় যে বৃষ্টি নামবে কে জানতো? সকালে রোদ দেখে আর ছাতা নিয়ে বের হওয়া হয়নি। বাড়ীর গাড়িটাও খুব কম ব্যবহার করে রুকু। বৃষ্টি আস্তে আস্তে বাড়ছে। ব্যাগটা ওয়াটার প্রুভ হওয়ায় এ যাত্রায় ফোন আর ল্যাপটপ টা বেঁচে গেলো। এখান থেকে বাসা খানিটকা দূরেই বলা চলে। রুকু চাইলেই ট্যাক্সি নিতে পারে। কিন্তু নিতে ইচ্ছে করছে না। বৃষ্টিতে হাটতেই ভালো লাগছে। বারিধারায় নিজেকে সিক্ত করতে ইচ্ছা করছে। সেদিন ছিলো সিক্স মানথ এনিভার্সারী। বাইরে মূষলধারে বৃষ্টি হচ্ছিলো। হটাৎ বারিধারা বলে উঠলো, ” রুকু চলো তোমাকে বারিধারায় সিক্ত করে দেই। ”
রুকু অবাক হয়ে বলে ” একটু আগে সাওয়ার নিয়েছি। তাছাড়া তোমার ঠান্ডা লেগে যাবে। দুদিন আগে তোমার হাই ফিভার ছিলো ভুলে গেলে? একদম বাইরে যাওয়া যাবে না। ”
বারি মুখে অসহায় ভাব ফুটিয়ে বলে, ” আমিতো তোমাকে সিক্ত করতে চেয়েছিলাম রুকু। ” রুকু দুষ্টুমি করে বারিকে দেখিয়ে বলে, ” আমি তো শুধু এই বারিধারায় সিক্ত হতে চাই ।” যেই বলা সেই বারি রুকুর হাত ধরে সিড়ির দিকে যেতে থাকে। রুকু ভেবেছিলো বেডরুমে নিয়ে যাবে কিন্তু বারি রুকুকে নিয়ে সোজা ছাদে চলে আসে। ছাদের মাঝবরাবর রুকুকে দাড় করিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে, ” তুমি তোমার বারিধারাতেই সিক্ত হচ্ছো রুকু। ” সেদিন টানা দেড় ঘন্টা সেভাবে দাঁড়িয়ে ছিলো দুজন। যা রয়ে গেছে স্মৃতির পাতায়। বারিধারা চলে যাবার পর এসব স্মৃতি মনে করে খুব কাদতো রুকু। কিন্তু এখন আর কান্না পায়না। অনুভূতি গুলো ফিকে হয়ে গেছে। মনে হয় এইটাও কোন উপন্যাসের বইয়ের পাতায় পড়েছিলো সে যা আজো মনে আছে।

রাস্তার লোক খারাপভাবে তাকাচ্ছে রুকুর দিকে। তার সাদা জামা ভিজে সাদা শরীরে লেপ্টে গেছে। খুব আবেদনময়ী লাগছে তাকে। এতোক্ষণ ভাবনায় ঢুবে থাকলেও হুস ফিরে একজনের খারাপ মন্তব্যে। নিজেকে গুটিয়ে হেটেও লাভ হচ্ছে না। বৃষ্টির তোড় বেড়েই চলছে। কোথাও যে দাঁড়াবে তার জায়গাটুকুও নেই। লজ্জায় চোখ বন্ধ করে হাটতে ইচ্ছে করছে। নিজের নির্বুদ্ধিতার জন্য নিজের প্রতিই রাগ হচ্ছে। একের পর এক গাড়ি রাস্তাদিয়ে চলেই যাচ্ছে। ঝুম বৃষ্টিতে কার কাছেই বা হেল্প চাইবে? চিৎকার করে ডাকলেও মনে হয় শুনবেনা। কিছুদুর এগোনোর পর হটাৎ একটা চলমান গাড়ি থেকে একটা ছাতা রুকুর পায়ের সামনে এসে পড়ে। নীল রংয়ের চলমান গাড়ি থেকে একটা হাত নাড়ায় কেউ। রুকু ছাতা টি তুলে মাথায় দেয়। মনে মনে বলে, ” আপনাকে নো থ্যাংকস পরোপকারী ছাতাওয়ালা। ছাতা যখন দিবেন ই তখন আমি ভেজার আগে কেনো দিলেন না? আপনি এবং আপনার ছাতা এন্ট্রি ট্রু লেট। এটার কোন প্রয়োজন অনুভব করছি না। ”
কিছুদূর গিয়ে রাস্তার পাশে বসে থাকা দুজন বৃদ্ধকে দেখতে পায় রুকু। রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নিচেই এদের বাসস্থান । রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজেই তাদের জীবন। ছাতাটা তাদের উপকারে আসতে পারে ভেবে হাসিমুখে রুকু ছাতাটা বৃদ্ধার হাতে তুলে দিয়ে নিজের পথে হাটতে থাকে।

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here