বাসন্তী
পর্ব-১৫
লিমু

——–” থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আর টি-শার্ট দুটোই উল্টো করে পরেছে প্রণয়। আর সেটা দেখেই কলি ঘরকাপিয়ে হাসি শুরু করেছে। কলি প্রণয়কে বললো,

-” হ্যায় হিরো, এটা কি নিউ ফ্যাশন?”

-” প্রণয় ভ্রু কুচকে তাকালো একবার কলির দিকে,আরেকবার নিজের দিকে। তারপর আবার পুষ্পর দিকে। পুষ্প হাসার চেষ্টা করছে,তবে হাসছেনা। মানে হাসি চেপে রেখেছে,তবে ওর মুখ দেখে সেটা বুঝা যাচ্ছে স্পষ্ট। এইভাবে দেখতে বেশ লাগছে, প্রণয় আবার হারিয়ে ফেললো নিজেকে তার বাসন্তীর মায়ায়। পুষ্প অন্যদিকে তাকিয়ে রয়েছে,তাই প্রণয় যে ওকে দেখছে সেটা বুঝতে পারেনি হয়তো।
প্রণয়ের বিশ্বাসই হচ্ছে না, যে পুষ্প ওর বাসায়, ওর সামনেই বসে আছে। মনে হচ্ছে এটা ওর মনের ভুল। কারন মায়াচন্ডীর মন এতো সহজে গলার কথা না।
—-“উফফ এই কঠিন রূপটাকেই ভালোবাসতে না গিয়েও, ভালোবাসতে বাধ্য হয়েছি। ঐ চোখ তার কঠিন মায়ায় আমার হৃদযন্ত্রকে আবদ্ধ করেছে। আমি চাইলেও সে মায়া কাটাতে পারবনা। এ যে মায়াচন্ডীর মায়া,এত সহজ নাকি সে মায়া থেকে নিজেকে ফিরানো। একবার যে এই মায়ায় জড়িয়েছে, সে মরেছে।

-“মায়াচন্ডীর মায়ায়, জড়ালো এ মন,
তার মায়ায় আবিষ্ট হৃদয়,
করে উচাটন সারাক্ষণ।
সে যে আমার অভ্যাস নয়,
হৃদয়ের শিহরণ।
বাসন্তী হয়ে এলো
রাঙাতে আমার ভুবন।”

——” হঠাৎ ওর হাতে কেউ চিমটি কাটায় ওর ঘোর কাটলো।”

-” জেগে জেগে স্বপ্ন দেখলে হবে?

-” প্রণয় মাথা চুলকালো কলির কথা শুনে।
তারপর সামনে তাকিয়ে দেখে পুষ্প সোফায় নেই, কোথায় গেল?

-” হ্যালো মিস্টার,আবার কোথায় হারালেন?

-” নাহ,কোথাও না,বলো কি বলছিলে।

-” বলছি এখনি এতো হারালে পুষবে?
এখনো তো প্রথম স্টেপটাই পার হতে পারলেন না।

-” প্রণয় হতাশ হয়ে তাকালো কলির দিকে।

-” আরে এমন বাপ্পারাজের মতো মুখ করে রেখেছেন কেন? মনে হচ্ছে একশো এক নাম্বার সিরিয়ালের ছ্যাকা খেয়েছেন।

-” এখন গান শুরু করবেন,তোমরা সবাই থাকো সুখে,আগুন জ্বলুক আমার বুকে…… মনটাকে বলি তুমি কেঁদোনা….প্রেমের নাম বেদনা….এটা বলে কলি আবার হাসা শুরু করলো। প্রণয় কি বলবে বুঝতে পারছেনা,তাই কলির হাসির সাথে তাল মেলালো।

-“কি রান্না করছেন খালা?

-” আরে আফামণি আফনে রান্নাঘরে আসছেন ক্যারে?

-” কেন আসতে পারিনা,নাকি রান্নাঘরে আসা নিষেধ আছে?

-” তওবা আফা,কি যে কইন। নিষেধ থাকবো ক্যান। তয় গোস্ট রা তো আর রান্নাঘরে আহে না,হের লাইগা আর কি।

-” পুষ্প ঠিক বুঝতে পারলোনা গোস্ট বলতে কি বুঝালো। তবে যেহেতু ওকে বলেছে তার মানে গেস্ট কে গোস্ট বলেছে। হয়তো বলতে শুনেছে কাউকে,কিন্তুু ঠিকভাবে তো আর বলতে পারে না। কলির কাছে যতটুকু শুনেছে প্রণয়ের বাবা মা আমেরিকা থাকে,প্রণয় আর ওর ছোটভাই এখানে থাকে। তারমানে এই খালাই ওদের বাসার দেখাশোনা করে। উনার বয়স মে বি ফিফটি প্লাস, পান খায় মনে হয় অনেক। কারন উনার দাঁত,মুখ সব লাল হয়ে আছে। হঠাৎ উনার কথার পুষ্পর ভাবনায় ছেদ পড়লো,

-” আফা আফনার চুলডা না মেলা সুন্দর। কি জানি কয় টিভিতে হেইডারে,সিলক না কি।

-” পুষ্প হেসে বললো সিলকি বলে এটাকে মানে মসৃণ, নরম।

-” হ,ঐডাই সিলক। সিলক চুল আমার বহুত ভালা লাগে। তয় আমার চুল কুকড়াইন্না,আর এহন পাকতে শুরু করছে। বয়সতো আর কম হইলোনা,হঞ্চাশ ধরে ধরে। মাইয়া মানুষতো কুড়িতেই বুড়ি।

-” পুষ্পর বেশ মজা লাগছে উনার কথাগুলো। তাই উনার কথার রেশ ধরে বললো,তার মানে তো খালা আমিও বুড়ি। কারন আমার বয়স কুড়ি চলে।

-” আরে না আফা,ঐডাতো কথার কথা। আফনি মাশাআল্লাহ মেলা সুন্দর। আফনারে যে বুড়ি কইবো,হে বুড়ি। হের বেবাক গুষ্টি বুইড়া। আর যে ব্যাডায় ঐ কথাডা কইছে নিশ্চিত তারে বিশ বছরের কোন মাইয়া ছ্যাকা দিছিল। হের লাইগা এই কথাডা কইয়া জিদ উসল করছে।

-” পুষ্প এবার জোরে হেসে দিল উনার কথা শুনে। তারপর হাসি থামিয়ে বললো,আচ্ছা খালা আপনি প্রেম করছিলেন কোনদিন?

-” তওবা তওবা,এগ্লুান ভালা না। আমরার টাইমো এতো পেরেম পিরিতি আছিন না। এহনতো পুলাপান হাই ইস্কুলে উডোনের আগে পাইক্কা যায়। কি যে যুগ আইলো,লজ্জাশরম উইট্টা গেছে।
আমরারে তো হাইস্কুলে উডোনের আগেই বিয়া দিয়া দিতো।

-” আপনার স্বামী কি করে খালা?
-” হ্যায় আমারে ফাকি দিয়া পলাইছে।

-” পুষ্প প্রথমে বুঝতে পারে নি কথাটার মানে। তারপর হঠাৎ খালার চোখে পানি দেখে বুঝতে পারলো বিষয়টা,তাই প্রসঙ্গ পাল্টানোর চেষ্টা করলো।

আচ্ছা খালা কি রান্না করছেন এটা?

-” চিকন ফ্রাই,খালা চোখ মুছতে মুছতে উত্তর দিল।

-” তাহলে মোটাফ্রাই কোনটা! পুষ্পর হাসিতে পেট ফেটে যাচ্ছিল, কিন্তুু হাসাটা ঠিক হবে না। কারন কারো দুর্বলতা নিয়ে হাসার কিছু নেই। দুর্বলতা সবার কমবেশি আছে,তাই কারো দুর্বলতা নিয়ে মজা উড়ানোর মাঝে কোন ক্রেডিট নেই। আর পুষ্প দেখেছে উনি চিকেন ফ্রাই রান্না করছে। তখন জাস্ট কথা ঘুরানোর জন্য জিজ্ঞেস করেছিল কথাটা। কিন্তুু পুষ্পর বেশ লাগছে উনার সাথে কথা বলতে। এরা অনেক মিশুক আর সহজ সরল টাইপের হয়। যত প্যাচ তো শিক্ষিত মানুষের মাথায়!”

-” হঠাৎ খালা বললেন,এসব রান্না আমি হারতাম না,বড় ভাইজান শিহাইছে।

-” উনি রান্নাও পারে?

-” হ আফামণি,উনার বউয়ের কোন টিনশন নাইক্কা। যে মাইয়া বড় ভাইজানের বউ হইবো,হ্যায় বড় লকি। এক্কেবারে রাজরানী কইরা রাখবো। বড় ভাইজানের লাগান ভালা পোলা এ জামানায় হাওন বহুত কঠিন। তয় কি জানেন,ভালা পোলাগোরে মাইয়ারা চিনেনা। হ্যারা ঘুরে খালি বাদাইম্মা পোলাগোর পিছনে। হেরপর দোষ দিবো পুরুষ জাতটাই খারাপ। আরে মাইয়া পোলা বেবাকের মধ্যে ভালা খারাপ আছে। হের লাইগা একজনের কারণে বেবাক রে দায়ী করা তো ঠিক কাম না।

-” পুষ্প অবাক হয়ে উনার কথাগুলো শুনছিল। অনেক দামী কথা বলে ফেললেন উনি। সত্যিই আমরা এমনই,একজনকে দিয়ে সবাইকে যাচাই করতে চায়,অথচ এটা বোকামি ছাড়া কিছুই নয়।

-” একটা গোফন কথা হুনবান আফা?

-” পুষ্প অবাক হয়ে তাকালো উনার দিকে। উনি পুষ্পর একদম কাছে এসে বলতে লাগলেন,বড় ভাইজান না মনে হয় কোন মাইয়ার পেরেমে পড়ছে।

-” আপনি কি করে বুঝলেন খালা?

-” আমি দেখছি।

-” কি দেখছেন?” পুষ্প একটু কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞাস করলো এবার।

-” ভাইজান না ঘরে একা একা কথা বলে। এইডা দুইডা রোগের লক্ষন।”

-” কি কি?

-” হয় উনি পাবনা যাওনের পেলেন করতাছে,আর নাইলে পেরেমে পড়ছে।

-” পুষ্প এবার হেসে দিল একটু জোরেই।

-” হাইসেন না আফামণি, আমি হান্ড্রেড পারসেন সুউর ভাইজান কোন মাইয়ার পেরেমে পড়ছে।

-” তাহলে কি ছেলের প্রেমে পড়বে খালা?

-” তওবা, কি যে কন না আফামণি। তয় ভাইজানের এইবার বিয়াশাদী করোন উচিত। বয়সতো আর কম হইছেনা,কোনদিন জানি উনার ছোটডা বউ নিয়া চইল্যা আহে। হের যে ভাবসাব,কোন মাইয়ারে যে হে ভালাবাসে হে নিজেই বুঝবার পারে না মনে কয়।

-” পুষ্প হালকা হাসলো এ কথা শুনে।

-” আফনে যান আফা,বাসাডা ঘুইরা দেহুন। এইহানে গরম বহুত।

-” পুষ্প পিছনে ঘুরতে নিলেই কে যেন দরজার সামনে থেকে সরে গেল,পুষ্প এতটা গুরুত্ব দিলো না সেটা।

—–“পুষ্প হাটতে হাটতে ছাদে চলে গেল। ছাদে গিয়ে পুষ্প বেশ খানিকটা অবাকই হলো। ছেলেরাও এতোটা ফুলপ্রেমী হয় নাকি! কি নেই বাগানে, পুষ্পর মনে হচ্ছে ভুল করে কোন ফুলের রাজ্যে ঢুকে পড়েছে। এতো ফুল দেখে পুষ্পর মনটা খুশিতে ভরে গেল। ফুলের এ এক অদ্ভুত ক্ষমতা,তার সৌন্দর্যে যে কারো মন ভালো হতে বাধ্য। মন প্রফুল্ল রাখার জন্য হলেও এরকম একটা বাগান সবার বাসায় রাখা উচিত।

-” পুষ্প বড় টবগুলোর মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালো। ঐখানে বেশ কয়েকটা রঙ্গন ফুলের গাছ,তার পাশে ডালিয়া,বেলি,সাদা গোলাপ,হলুদ গোলাপ। ছাদের একপাশের দেয়াল জোড়ে কুঞ্জলতার সমাহার। ঐটার টবটা এক কর্ণারে রাখা হয়েছে,আর গাছটা মনে হয় তিন ফুট দেয়ালটার উপর তুলে দেয়া হয়েছে,যেন বেয়ে উঠতে পারে। কুঞ্জলতা ফুলটা যদিও অতি ক্ষুদ্র,কিন্তুু এর গাছটাই মারাত্নক সুন্দর। পুষ্প ঘুরে ঘুরে অবাক নয়নে পুরো ছাদটা ঘুরলো। বেশ কয়েক রংয়ের অর্কিড দেখতে পেল,ক্যাকটাস গাছও আছে। পুষ্প নিচে নেমে আসছিল তখন আবার ওর মনে হলো ছাদের দরজায় কেউ ছিলো। হচ্ছেটা কি ওর সাথে,বাসায় ভূত আছে নাকি!
পুষ্প ভয়ে ভয়ে সিড়ি দিয়ে নামছিল,তখন কলি ছাদের দিকে আসলো। কলি এসেই বললো,

-” মানলাম এটা তোমার হতে পারে শ্বশুরবাড়ী, তাই বলে আমাকে রেখে একা একাই পুরো বাড়ি ঘুরে দেখে ফেলবে? দিস ইজ নট ফেয়ার বু।

-” পুষ্প এই মুহুর্তে কলিকে কিছু বলতে চাচ্ছে না, যা বলার বাসায় গিয়ে বলবে। তাই কলির হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে চলে গেল। কলি বেশ অবাক হলো পুষ্পর আচরণে, সামথিং রঙ!
আর নয়তো আমি এতো বড় একটা কথা বলে ফেললাম,তবুও ওর তেমন রিএকশানই নেই। এটাতো স্বাভাবিক বিষয় না,একটু দেখতে হচ্ছে ব্যাপারটা।

——” এদিকে ছাদের দরজার পিছনে একদম চুপ করে লুকিয়ে থেকে, প্রণয় একটু জোরে নিঃশ্বাস ফেললো বের হয়ে। উফফ….নিজের বাসায় নিজেকেই চোরের মতো লুকিয়ে থাকতে হচ্ছে!

-” কিন্তুু কি করার,এছাড়া যে আর কোন অপশন ছিলো না। যদি দেখতো তাহলে তো ঐ মায়াবী চোখের আগুনে প্রণয়কে
ভস্ম করে দিতে,প্রণয় যে কাজটা করেছে পুষ্পর আড়ালে।
তারপর মাথা চুলকিয়ে প্রণয় মনে মনে বললো,ঐ চোখের আগুনে ভস্ম হতেও রাজি। একবার পুড়েছি মনের অনলে,আরেকবার না হয় পুড়লাম চোখের অনলে। ভালোবাসার মানুষের জন্য যে পুড়তেও সুখ। শতবার পুড়তে চায়,বাসন্তীর মায়ায়।

একজীবনে এ মায়ার শুরু আছে,শেষ নেই। সে যে এক অন্তহীন টান,ভালোবাসার টান। সে কি বুঝে তা?
হৃদয়টা যে তার নামে লিখে দিলাম, তার অনুমতি ব্যাতীত। হৃদয় কি আর হিসাব বুঝে,সে তো বেহিসাবি।

-“আমার নিঃশ্বাসের সাথে জড়িয়ে গেছে সে,চাইলেই কি আলাদা করা যাবে!”

-” সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায়, তাই প্রণয় ওদের দুজনকে ড্রপ করে দিতে গেল। প্রণয় হোয়াইট প্যান্ট আর ব্লু টি-শার্ট পরলো। ডান হাতে একটা ব্লু ব্রেসলেট, বামহাতে সিলভার রংয়ের ওয়াচ।

-” পুষ্প একটু অবাক হলো কারন বাসায় প্রণয় ওর সাথে তেমন কথা বলেনি বললেই চলে। হুট করে কেউ তার ক্যারেক্টারের বাইরে চলে গেলে সেটা আমাদের কাছে সন্দেহজনক লাগে। পুষ্পরও ঠিক তেমনই লাগছে।

-” কলি প্রণয়ের সাথে সামনের সিটে বসেছে, আর পুষ্প একা পিছনে। ওদের দুজনের মাথায় যে কি ঘুরছে সেটার কিছুই পুষ্প বুঝতে পারছেনা।

-“বাসার সামনে এসেই কলি আগে নেমে গেল। প্রণয়কে বাই বলে দৌড়ে আগে উপরে চলে গেল। পুষ্প ঠিক বুঝতে পারলনা কলির ওকে রেখে এতো আগে নেমে যাওয়ার কারন।
প্রণয় গাড়ির দরজাটা খুলে দিলে পুষ্পও কলির মতো বাই বলে চলে যাচ্ছিল। তখন প্রণয় পিছন থেকে ডাক দিল,

——” মিস আফরা পুষ্প…..

প্রথমবারের মতো প্রণয়ের মুখে পুষ্প নিজের নাম শুনে চুপ করে যেখানে দাঁড়ানো ছিল সেখানেই দাঁড়িয়ে রইলো,কোন কথা বললোনা।
ওর বুক কেমন ধুকপুক ধুকপুক করছে,কি যেন একটা ভয়,সংকোচ,অস্থিরতা ওকে গ্রাস করছে। প্রণয়ের মুখে নিজের নামটা শুনে এমন অদ্ভুত লাগছে কেন পুষ্পর,আর কারো মুখ থেকে শুনে তো এমন হয় নি। কেমন যেন একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে,সেটা কি তা পুষ্প জানেনা।

-” প্রণয় পুষ্পর সামনে এসে দাঁড়ালো,এবার মনে হচ্ছে পুষ্পর কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যাবে। পুষ্প যথাসম্ভব নিজেকে নরমাল রাখার চেষ্টা করছে,কিন্তুু সে গুড়ে বালি।

-” আমি কি আমার তরফ থেকে বিষয়টা আগাতে পারি?

-” পুষ্প ঠিক বুঝলনা প্রণয় কি বলতে চাইছে। তাই অবাক নয়নে তাকালো প্রণয়ের দিকে,কিন্তুু বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারলনা,চোখ সরিয়ে নিলো।

-” প্রণয় আবার বললো,আমি তোমার মায়ের সাথে সরাসরি কথা বলতে চাই।
হ্যা আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই,আর এটা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। আমি সম্পুর্ণ ভেবেচিন্তে এই ডিশিসান নিয়েছি।
আর এভাবে কোন মেয়ের পিছনে ঘুরাটা আমারও পছন্দ নয়। যদি তুমি অনুমতি দাও,তবেই আমি তোমার মায়ের সাথে কথা বলবো।

তিনি যদি রাজি থাকেন,তাহলে কি তোমার কোন আপত্তি থাকবে?

-” পুষ্পর মনে হচ্ছে ওর কান দিয়ে ধোঁয়া বের হচ্ছে। কি বলবে ও,কি বলা উচিত!
পুষ্প শাড়ির আঁচল হাতের আঙ্গুলে নিয়ে পেঁচাতে লাগলো, কি বলবে কিছু বুঝতে পারছেনা। কারন সেও যে নিজের অজান্তেই নিজেকে হারিয়ে ফেলেছে,না চাইতেও। ভালোবাসা জিনিসটাই কি এমন,না চাইলে আরো বেশি ঝেঁকে বসে। শত কঠিন মনকেও কোমল করে দেয়,শত না কেও হ্যা তে পরিণত করে দেয়। কি অদ্ভুত এক শক্তি এ ভালোবাসার।
পুষ্প কি তবে হার মেনে নিল প্রণয়ের হৃদয়ের কাছে?

-“সে কি বাঁধা পড়ে গেল প্রণয়ের প্রণয়ে!”

লজ্জায় পুষ্প কোন কথাই বলতে পারছেনা। একটা লাজুক হাসি দিয়ে প্রণয়ের দিকে একবার তাকিয়ে একটা দৌড় দিলো মোটামুটি।
-” প্রণয় বোকার মত দাঁড়িয়ে রইলো,তবে ওর উত্তর ও পেয়ে গেছে। ঐ মিষ্টি লাজুক হাসিই সব না বলা কথা বলে দিয়েছে। প্রণয়ের খুশিতে আকাশে উড়তে মন চাইছে। ও কি করবে কিছুই বুঝতে পারছেনা,খুশিতে পাগলের মতো আচরণ করছে।
বাসায় এসে ল্যাপটপে আজকে রান্নাঘরে,ছাদে পুষ্পর যে ছবিগুলো তুলেছে তা দেখতে লাগলো। আর গাইতে লাগলো,

-” কিন্না সুনা তেনু রাবনে বানায়া,
জি কার দেখতা রাওয়া…..

#চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here