#ফিরে_আসা_সিক্রেট_মাফিয়া (Politics_02)
#লেখকঃরবিউল_হাসান।
#পর্বঃ০৮

রবির কথার মাঝখান থেকে একজন বলে ওঠল…
–জ্বি ভাই ঐ এমপি আমাদের এরিয়ার অনেক মেয়েকে পাচার করে দিছে আবার অনেকে তার ধর্ষণের স্বীকার হয়েছে।

রবিঃহ্যাঁ এসব আমরা জেনে বুঝি এমপির মতো লোকদের করে দেওয়ার সুযোগ করে দিছি।কিন্তু আমরা সে ভুল আজ আবার করব না।হ্যাঁ আমরা এমপির থেকে টাকা নিয়েছি তার মানে এই নয় তার কথাই শুনতে হবে।মনে রাখবে সবাই এমপি যে টাকা গুলো আমাদের দিছে সবগুলো টাকা গরীব মানুষের।

আজ সঠিক নির্বাচনের মাধ্যমে আমরা এমপিকে পথ থেকে সরিয়ে আনব।আর আমরা জানি বিরোধী দলের এমপির প্রার্থী মানুষ হিসেবে অনেক ভালো। পুরো অতীত ঘেঁটে দেখছি আমি।অতীতে কোনো বেআইনি কাজের সাথে সে জড়িত ছিল না। তাই আমি চিন্তা করলাম ওনাকে আমরা এমপি করব।

আর বর্তমান এমপির অনেক ভিডিও ভাইরাল হচ্ছে আরো হবে সামনে।তার সব আকার কুকামের ভিডিও আমরা দেখতে পাচ্ছি। তাহলে আজকের মিশন এমপিকে ভোট দেওয়া নয় বরং সাধারণ মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে তাদের অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার। আমরা ভোট ছিনিয়ে নিতে যাব কিন্তু নিব না আর না কাউকে নিতে দিব।

১৯৭০ সালের নির্বাচনের সময়ও এত ভোট চুরির ঘটনা ঘটে নি।পাকিস্তানের অত্যাচারে সাধারণ মানুষের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছিল।তখন রাতের বেলায় ভোট হয়ে যায় নি।কিন্তু বর্তমানে এমন পরিস্থিতিতে চলে আসছি দিনের ভোট, ভোটের আগের রাতে হয়ে যায়। তার মানে পশ্চিম পাকিস্তান মানে বর্তমান পাকিস্তান থেকেও মারাত্মক বর্তমান রাজনৈতিক দল।

রবি এতটুকু বলে থেমে গেল।দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে আবার বলা শুরু করল, এই এমপি যদি আবারো তাঁর পদ টিকিয়ে রাখতে পারে তাহলে ভবিষ্যতে অনেক বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। পরের বার হয়তো আমাদের আপনজনের উপর তার অত্যাচার শুরু হবে।আজ এখানে সবাই শপথ কর যাতে আজ থেকে যতদিন বেচে আছ ন্যায়ের পক্ষে লড়াউ করবে।

সবাই মাথা নিচু করে আছে।রবি বুঝতে পারছে তাদের মনের করুন অবস্থা। রবি সবাইকে শপথ কারলো আজ থেকে কোনো অন্যায় করবে না।তারপর সবাইকে একটা করে কোড পড়িয়ে দিল।সাথে একটা করে গুলি।আজ রাতেই ভোট নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে তাই সবাইকে প্রতিটি কেন্দ্রে পাঠিয়ে দিল।

সবাই এক ড্রেসে ঘুরাঘুরি করছে। রাতের বেলা এমপির আরো একটা ভিডিও আপলোড হলো যার মধ্যে মারামারি লাগানোর ফুটেজ ছিল।এমপির ভোট আরো কমতে শুরু করে।কে এই ভিডিও আপলোড করছে তা এমপি ভালো করে বুঝতে পারছে তাই ভিডিওর পেছনে লাগা বন্ধ করে দিছে।

রাতে এমপির ঘুম নেই রাত দুইটা এমপি রাফসান মানে রবিকে ফোন দিলো।রবি খুব আরামে ঘুমাচ্ছিল।ফোনের আওয়াজে ঘুম ভেঙে গেল।দেখে এমপি ফোন দিছে।মাথা নড়ে গেল রবি।না চেনার মতো করে বলল…
–কোন শালারে এত রাতে ফোন দিয়ে ডিসটার্ব করিস।
এমপিঃআমি এমপি বলছি।
–এত রাতে ফোন দিয়ে ডিসটার্ব করিস কেন রাখ ফোন।
এমপিঃঐ আমি এমপি বলছি।

এবার রবি ওঠে বসল।আর এমপিকে বলল তুই এমপি বল বা মন্ত্রী তাতে আমার কিছু আসে না রাখ ফোন।এমপি বুঝতে পারল পল্টি খাইছে।কিন্তু এখন এমপিরও রাগারাগি করলে তো চলবে না।তাই এমপি বলল…
এমপিঃভোট কতটুকু কাটা হলো?
–ভোট কি তোর বাপের নাকি যে তুই বলবি আর আমরা কেটে দেব?
এমপিঃএই মুখ সামলে কথা বল।
–তুই নিজেকে সামলা।আমি এখন যা বলব তুই শুনলে দেওয়ালে মাথা মারবি।
এমপিঃশেষ রাতে এসে উল্টে গেলি কত টাকা খইছিস তার দ্বিগুণ টাকা দেব আমি বল কত খাইছিস?
–ঐ শালা তোর মতো ফকিন্নি না আমি।পুরো আন্ডারগ্রাউন্ড চলে আমার নামে আর তুই আমাকে টাকার লোভ দেখাস।
এমপিঃতোকে আমি সামনে পেলে জবাই করে দেব।
–একবার তো মারতে চেয়েছিস কিন্তু পারিস নি না কখনো পারবি।সেদিন রাধিকার ছলনায় আমি নিজেলে সপে দিছিলাম কিন্তু আর তুই বাঁচতে পারবি না।
এমপিঃকে তুই?

রবি এবার হাসতে হাসতে বলল তোর মতো ধর্ষকদের হত্যাকারি রবি ওরফে R.K।রবির কথা শোনার সাথে সাথে এমপি লাফ দিয়ে বিছানা থেকে ওঠে বসল।এমপি ভাবছে রবিকে তো মেরে দিছিো তাহলে বেঁচে গেল কিভাবে।আর ও নিজেকে R.K কেন বলছে।ও যদি আসলে R.K হয় তাহলে তো সেদিন এমপির সামনে রবি আহত অবস্থায় ছিল।কিন্তু ঐ সময় R.K নাম নিয়ে কে মেইল করছিল তাহলে?

এমপির মাথায় হাজারো প্রশ্ন ঘুরছে।কি করবে বুঝতে পারছে না।এমপি রবিকে বলল তুই R.K নয়।
রবিঃতোকে প্রমাণ দেওয়ার সময় আমার নেই।হ্যাঁ এটা বলতে পারি আমিই সেই ভিপি রবি যাকে তুই মেরে নদীতে পেলে দিছিলি।ঐ ভিপির পদটা ছিল শুধু মানুষের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করার জন্য। আসলে তো আমি R.K।
এই বলে রবি হাসতে শুরু করল।এমপি রেকর্ডিং চালু করার চেষ্টা করছে কিন্তু কোনো ভাবে রেকর্ডিং চালু হচ্ছে না।এইদিকে রবির ফোনে একটা মেসেজ আসলো।সেটা দেখে রবি হাসতে হাসতে বলল…
রবিঃকিরে এমপি আমার কথা গুলো রেকর্ড করতে চাস?পারবি নারে তুই তো আমার চোখে সাধারণ একজন। তোকে দিয়ে এসব হবে না।শেষ বার একটা সুযোগ দিতে চাই তোকে সেটা আমি সবাইকে দিয়।
–কি সেটা?
রবিঃনিজের অপরাধ স্বীকার করে নিজেকে আইনের হাতে তুলে দেয়।তোর সাথে মেয়র ডিসি আর তোর সিক্রেট ডান হাত রাধিকাকেও আইনের কাছে নিজেদের সপে দিতে বল।নয়তো তাদের লাশ তো দূরের কথা শরীরের কোনো অঙ্গ কেউ খুঁজে পাবে না।
–রাফসান কোথায়?

রাফসানের কথা শোনে রবি এবার হাসতে হাসতে বলল,রাফসান?সে অনেক পাপ করেছে তার পাপ পূর্ণ হয়ে গেছে তাই তাই সে মাটির নিচে মানে কবরে শুয়ে আছে।তাঁকে তো আমি অনেক আগে মেরে দিছি তুই আমাকে মারার বছর খানেক পর আমার লোক রাফসানকে মেরে মাটি ছাপা দিয়ে দিছে।আর সবাইকে সঠিক পথে আনতে আমি রাফসানের জায়গায় বসি।আর দেখ সবার কাজের স্থান ঠিক করে দিলে ওরা সবাই ভালো হয়ে যায়।

–তাহলে সেদিন তো তুই আমার সামনে ছিলি তারপরও কিভাবে আমাকে মেইল করলি না অন্য কেউ করেছে?
রবিঃহাইরে বোকা ঐ মেইল তো আমি করেছি।কিন্তু সেখানে ছোট্ট একটা ট্রিকস ছিল মানে ওটা সাথে সাথে সেন্ট হয় নি।সময় ধরে দেওয়া ছিল।নির্দিষ্ট সময় শেষ হতে মেইলটা তোর কাছে গেছিল।আর ঐ সময় আমি তোর সামনে ছিলাম।কিন্তু তুই মেইল দেখে যে ভয়টা পাইছিলি আমি সেটা দেখে পৈশাচিক হাসি দিছিলাম।হা হা হা…..

–তুই এত বড় ধোঁকা দিলি আমাকে?
রবিঃতুই মানুষকে ধোঁকা দিয়ে এই পর্যন্ত এসেছিস।তোকে ধোঁকা দেওয়া ততটাও সহজ নয়।কিন্তু তোর লোকদের দিয়েই আমি তোর সব অপকর্ম আমার হাতে নিয়েছি।এখন পারলে একটু ঘুমা কাল থেকে জেলের ভেতর কিংবা পরশু থেকে মাটির ভেতর থাকতে হবে।কাল থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে তোরা সবাই নিজেদের অপকর্মের কথা মিডিয়ার সামনে বলবি।নয়তো…….হা হা হা…..
রবি আবারো পৈশাচিক হাসি দিয়ে ফোন কেটে।

এমপির ঘুম তো দূরের কথা দেশ ছেড়ে কিভাবে পালাবে তা চিন্তা করছে।কোনো রকম ভারতে হলেও পার হওয়ার চিন্তা করছে নয়তো নিশ্চিত মৃত্যু। এইদিকে সকালে ঘুম থেকে ওঠে রবি রাহীকে নিয়ে চলে যায় হসপিটালে রবির মুখ থেকে রাফসানের চেহারা সরিয়ে আবারো নিজের চেহারা বসিয়ে দেয়।প্লাস্টিক সার্জারী শেষ করে রবি রাশেদকে ফোন দিল।
রাশেদ নির্বাচন নিয়ে অনেক বিজি।প্রথম রিং হতে ফোন তুললো না।দ্বিতীয় বার রিং হতে ফোন ধরল।
রবিঃএত প্যারা নেওয়ার কিছু নেই তোর লোকই জীতবে।

চীরচেনা কন্ঠ শোনে রাশেদ আকস্মিকভাবে চমকে ওঠে।রবি বলে ওঠে ভয় পেতে হবে না।ভোট দিয়ে তোর বাসায় চলে আয়।ঐ দিকে আমার পোলাপান আছে তারা সামলে নিবে।
–তুই এত বছর পর কোথথেকে?
রবিঃছিলাম তো একটু আড়ালে বাসায় আয় সব বলছি।

রাশেদ রবিকে এত দিন পর দেখবে তাই দেরি না করে বাসায় চলে এলো। দেরি না করে রবি আর রাহীও রাশেদের বাসায় গেল।এতদিন পর রবিকে দেখে রাশেদ জড়িয়ে ধরল। এত দিন না দেখায় খানেকটা ইমোশনাল হয়ে গেছে রাশেদ।রবির সাথে রাধিকা আর এমপির এই পর্যন্ত যা যা হল রাশেদকে সব বলল।আর রাশেদের সেই শুভাকাঙ্ক্ষী যে রবি সেটাও বলল।

সারাদিন কোনো রকম ঝামেলা ছাড়া নির্বাচন শেষ হলো।রাত নয়টার মতো সময় লাগলো ফলাফল ঘোষণা করতে।রাশেদের নির্বাচিত লোক ৯৮.৪ ভাগ ভোট পেয়েছে।যা সবার চোখে তাক লাগিয়ে দিল।

এইদিকে ভোটের ফলাফল ভালো হবে না জেনে সবার অগোচরে এমপি মালয়েশিয়াতে চলে গেল।

#To_be_continue…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here